শিক্ষকদের গাফলতিতে অনিশ্চিত ২৩ শিক্ষার্থীর পরীক্ষা
রাজশাহীঃ সুপার ও শিক্ষকদের গাফিলতির কারণে বগুড়ার শেরপুর এবং নাটোরের মোট ২৩ জন পরীক্ষার্থীর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। পরীক্ষাসংক্রান্ত দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন না হওয়ায় এমন সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে বলে জানা গেছে।
সঠিক সময়ে রেজিস্ট্রেশন ও ফরম পূরণ বাবদ ফি ও তথ্য জমা নেওয়ার পরেও শেরপুরের মধ্যভাগ মাদ্রাসার ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আকবর আলী মাদ্রাসা বোর্ডের দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন করেননি, যার পরিপ্রেক্ষিতে রোববার (৩০ এপ্রিল) থেকে অনুষ্ঠিতব্য দাখিল পরীক্ষার প্রবেশপত্র এখনও হাতে পায়নি ওই প্রতিষ্ঠানের ২০ শিক্ষার্থী। অথচ পরীক্ষার বাকি আর মাত্র একদিন। এমন পরিস্থিতিতে পরীক্ষার প্রবেশপত্র না পেয়ে চরম দুশ্চিন্তায় পড়েছেন ওইসব শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ- সঠিক সময়ে ফরম পূরণ করা হয়েছে। তবে এখনও তাদের প্রবেশপত্র আসেনি। এর কারণ জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। এজন্য মাদ্রাসা সুপারসহ প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্টদের দায়ী করে তারা।
আয়েশা খাতুন নামে এক পরীক্ষার্থী বলে, ‘শিক্ষকেরা যখন যে টাকা ও তথ্য চেয়েছেন তাই দিয়েছি। তারপরও আমরা পরীক্ষার প্রবেশপত্র হাতে পেলাম না। সময়ও নেই। এখন খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছে।’
জানতে চাইলে মধ্যভাগ মাদ্রাসার সুপার আকবর আলী বলেন, ‘আমি এখন (মাদ্রাসা বোর্ড) ঢাকায় আছি। বোর্ডের নির্দেশনা মতো, মাদ্রাসার শিক্ষকদের অবহেলার কথা উল্লেখ করে (শিক্ষার্থীদের নাম, পিতা-মাতার নামসহ) অঙ্গীকারনামা দিয়েছি। মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড আমাদের গাফিলতির বিষয়টি ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। সেই সঙ্গে শনিবারের (২৯ এপ্রিল) মধ্যে প্রবেশপত্রগুলো আমরা পেয়ে যাব বলে আশা করছি।’ এ সময় ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দিতে পারবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে গাফিলতির কথা স্বীকার করে মাদ্রাসা সুপার জানান, মাদ্রাসাটি এমপিওভুক্ত না হওয়ায় অধিকাংশ শিক্ষক পরিবারের খরচ মেটাতে নানা ধরনের কাজে ব্যস্ত থাকেন, যার কারণে ভুল হয়ে গেছে।
এদিকে নাটোরের বড়াইগ্রামে প্রতিষ্ঠানপ্রধান আহমাদুল্লাহর ভুলে ফরম পূরণ না হওয়ায় দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিতে পারছে না উপজেলার নগর ইউনিয়নের কুমারখালী দাখিল মাদ্রাসার দুই ছাত্র। এমনটাই অভিযোগ করেছে কুমারখালীর আশিকুর রহমান ও নগর গ্রামের জিহাদ আলী নামে ওই দুই শিক্ষার্থী ও তাদের পরিবার।
আশিকুর রহমান জানায়, প্রায় তিন মাস আগে ফরম পূরণের টাকা ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সুপারের কাছে জমা দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার মাদ্রাসা অফিসে প্রবেশপত্র ও রেজিস্ট্রেশন কার্ড সংগ্রহ করতে গেলে জানতে পারে যে তার ফরম পূরণ হয়নি। পরে সুপারের কাছে গেলে তিনি এক বছর অপেক্ষা করতে বলেন।
আরেক শিক্ষার্থী জিহাদ আলী বলে, ‘প্রবেশপত্র নিতে গিয়ে জানলাম আমাদের রেজিস্ট্রেশনে সমস্যা হয়েছে। তাহলে ফরম পূরণের টাকা কেন নিলেন সুপার? আগে কেন প্রতিষ্ঠান থেকে জানানো হয়নি?’
মাদ্রাসা সুপার আহমাদুল্লাহ জানান, করোনাকালীন সব শিক্ষার্থীর কাগজপত্র না পাওয়ায় ২০২৩ সালের পরীক্ষায় তাদের রেজিস্ট্রেশন হয়নি। তাই ওই দুই শিক্ষার্থীকে ২০২৪ সালে পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।
ইউএনও মারিয়াম খাতুন জানান, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একই কারণে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার খগা বড়বাড়ি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া হচ্ছে না বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মারুফা আক্তার লিজার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছেন শিক্ষার্থীর বাবা।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৯/০৪/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়