মেট্রোরেলে প্রথম যাত্রী হিসেবে চড়বেন প্রধানমন্ত্রী
স্বপ্নের মেট্রোরেল চালু হবে আগামী ২৮ ডিসেম্বর থেকে। তবে উদ্বোধনের পরদিন থেকে সাধারণ যাত্রীরা এতে চলাচল করার সুযোগ পাবেন । ‘বাঁচবে সময় বাঁচবে তেল, জ্যাম কমাবে মেট্রোরেল’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে মেট্রো যাত্রায় উদ্বোধনের দিন টিকেট কেটে প্রথম যাত্রী হিসেবে মেট্রোরেলে চড়বেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এই তথ্য জানা গেছে, মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) সূত্রে । সূত্র আরো জানিয়েছে, শেরেবাংলা নগরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দুই হাজার অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হবে। ওইদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম টিকেট কেটে মেট্রোরেলে চড়বেন।
এদিকে মেট্রোরেল উদ্বোধনের পরে প্রথমে কিছুদিনের জন্য দিনে চার ঘণ্টা করে চলবে মেট্রোরেল। জাপানের আন্তর্জাতিক সংস্থা জাইকার প্রতিনিধি, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও পরামর্শকদের নিয়ে বৈঠক হয় গত রবিবার। উক্ত বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয়।
সকাল আটটা থেকে মেট্রোরেল চলার কথা থাকলেও প্রথমদিকে চলাচলকৃত চারঘণ্টা সকাল নাকি বিকাল হবে তা এখনো জানা যায়নি।
শুরুর দিকে মেট্রোরেল কীভাবে এবং কত সময় পরিচালনা করা হবে; যাত্রীদের কীভাবে ব্যবহারের সুযোগ দেওয়া হবে—এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় বৈঠকে।
বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন শুরুতে মেট্রোরেল কম সময় চালানো এবং কম যাত্রীকে সুযোগ দেওয়ার জন্য। অন্যদিকে ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক বলেছেন, মেট্রোরেল চালু হলেও এটিতে যারা চলাচল করবেন তাদের সচেতনতার প্রয়োজন আছে। দরজা খোলা, টিকিট কাটার জন্যও কিছুটা সময় দিতে হবে। তাই শুরুতে ট্রেন চলাচলের সময় ও যাত্রীসংখ্যা সীমিত হবে। আস্তে আস্তে ট্রেনের চলাচল বাড়বে, যাত্রীও বেশি করে তোলা যাবে।
জানা গেছে সাধারণ যাত্রীদের কাছে টিকিট বিক্রি শুরু হবে মেট্রোরেল উদ্বোধনের দিন কিংবা পরদিন থেকে । ২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর সরকার মেট্রোরেল প্রকল্প অনুমোদন করে। তখন মেয়াদকাল ছিল ২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত।
২০১৬ সালের ২৬ জুন নির্মাণকাজ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫৯ লাখ টাকার এই প্রকল্পে ১৬ হাজার ৫৯৪ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে জাপানি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা- জাইকা। আর পাঁচ হাজার ৩৯৫ কোটি টাকা ব্যয় করছে সরকার।
আগামী ২৮ ডিসেম্বর, নির্মাণকাজের উদ্বোধনের প্রায় সাড়ে ৬ বছর পর মেট্রোরেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী।
উত্তরা থেকে আগারগাঁও অংশের সব কাজ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। ১২টি ট্রেন চলাচলের জন্য প্রস্তুত করা হলেও শুরুতে ১০টিতে সরাসরি যাত্রী পরিবহন করা হবে। বাকি দুটি যেকোনো সময়ে চলাচলের জন্য ব্যাকআপ হিসেবে ডিপোতে প্রস্তুত থাকবে। ট্রেন দুটি পরিচালনার জন্য কর্মকর্তারাও প্রস্তুত থাকবেন। এসব তথ্য জানিয়েছেনঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এম এ এন ছিদ্দিক।
এম এ এন ছিদ্দিক আরো বলেন, অন্যান্য দেশের মত আমাদের দেশেও উদ্বোধনের পর প্রথম দিন থেকেই মেট্রোরেলে পরিপূর্ণভাবে যাত্রী পরিবহন করা হবে না। শুরুতে কয়েক মাস কম যাত্রী পরিবহন করা হবে। উদ্বোধনের দুই থেকে তিন মাস পর শতভাগ যাত্রী পরিবহন করা যাবে।