মাদরাসায় এক পদে দুইজনকে নিয়োগ, অবৈধ দাবি করে মামলা
অবৈধ দাবি করে একই পদের শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল চেয়ে প্রতিষ্ঠান প্রধান, পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে।
সম্প্রতি নীলফামারীর যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলাটি করেন জলঢাকা উপজেলার ধর্মপাল ইউনিয়নের গড় ধর্মপাল এলাকার মৃত কৃষ্ণ প্রসাদ রায়ের ছেলে নারায়ন রায়।
মামলায় জলঢাকা উপজেলার বাঁশদহ এমদাদিয়া দারুস সুন্নত দাখিল মাদরাসার সুপার মিজানুর রহমান, পরিচালনা কমিটির সভাপতি লাজু ইসলাম ও সহকারী শিক্ষক (কৃষি) পদে নিয়োগ পাওয়া মাহাবুবুর রশিদকে বিবাদী করা হয়েছে।
মামলায় উল্লেখ করা হয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রথম হওয়ায় মাদরাসা কর্তৃপক্ষ ২০১১ সালের ১৮ অক্টোবর নিয়োগপত্র প্রদান করে এবং একই মাসের ২৩ তারিখে সহকারী শিক্ষক (কৃষি) পদে যোগদান করেন নারায়ন রায়।
২০১৪ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানের সুপার মাদরাসার প্যাডে এমপিও’র জন্য মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর আবেদন করেন।
বিধি মোতাবেক দ্বিতীয় বারের মতো নারায়ন আবেদন করলে আবেদনটি প্রত্যাখ্যান হওয়ায় পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযোজন করে পুনরায় আবেদন করেন নারায়ন।
নারায়ন রায় অভিযোগ করে বলেন, প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযোজন করে এমপিও’র জন্য আবেদন করার পর থেকে আমার সাথে খারাপ ও অসৌজন্যমূলক আচরণ শুরু করেন সুপার। পরে জানতে পারি সহকারী শিক্ষক (কৃষি) পদে মাহাবুবুর রশিদ নামে একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তার নামে এমপিও এসেছে ২০২০ সালের জুলাই মাসে। অথচ শুরু থেকে ২০২০ সালের ২০ মার্চ পর্যন্ত আমি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত ছিলাম। আমি পদত্যাগ করিনি কিংবা বরখাস্ত করা হয়নি প্রতিষ্ঠান থেকে।
তিনি আরও জানান, মাদরাসা সুপার গোপনে ও জালিয়াতির মাধ্যমে সহকারী শিক্ষক (কৃষি) পদে আরেকজনকে নিয়োগ দিয়েছেন।
এ নিয়ে সুপার ও সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা আমার নিয়োগ অস্বীকার করেন এবং সে সময়ের নিয়োগ মানেন না বলে জানিয়ে দেন। বাধ্য হয়ে আমি আদালতের আশ্রয় নিয়েছি। যাতে করে একই পদে নিয়োগ পাওয়া অপরজনের নিয়োগ অবৈধ ঘোষণা করা হয়।
জানতে চাইলে সুপার মিজানুর রহমান বলেন, নারায়ন রায়ের নিয়োগবিধি সম্মত না হওয়ায় এমপিও পাঠানো হয়নি। ৩২ প্রকার কাগজ লাগে এমপিও’র জন্য তার ছিল মাত্র একটি। আমার স্বাক্ষর নকল করে সে এমপিও’র জন্য আবেদন করে। যথাযথভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন না হওয়ায় পরিচালনা কমিটি তার নিয়োগ বাতিল করে আরেকজনকে দিয়েছে।
তিনি বলেন, নারায়নের নিয়োগের সময় আমি সুপার হিসেবে ছিলাম না। ২০১৪ সালে যোগদান করেছি। তখনকার সভাপতিও এখন আর নেই। নতুন সভাপতি হয়েছেন। আমার যোগদানের পর থেকে নারায়ন নামে কাউকে প্রতিষ্ঠানে পাইনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, যেহেতু আদালতে মামলা হয়েছে সে কারণে আদালত যেসব বিষয় জানতে চাইবে আমি সেগুলো তদন্ত করে দেখে রিপোর্ট দিবো। এক্ষেত্রে অনিয়ম কিছু হলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের সুপার ও সভাপতির ওপর দায় বর্তাবে।
মামলায় মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, উপ-পরিচালক রংপুর, নীলফামারী জেলা শিক্ষা অফিসার ও জলঢাকা উপজেলা শিক্ষা অফিসারকে মামলায় বিবাদী করা হয়েছে।সূত্র:সময় নিউজ