ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করা হবে দেশে
নিউজ ডেস্ক।।
প্রধানমন্ত্রী ও সংসদ নেতা শেখ হাসিনা বলেছেন, কাঠামোগত রূপান্তরের মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় গত এক যুগে ঘটে গিয়েছে এক নীরব বিপ্লব। বিগত এক যুগে সাধারণ মানুষের জীবনমান ও মানব সম্পদের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নতি পেয়েছে এক নতুন মাত্রা।
স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বুধবার জাতীয় সংসদে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে একাধিক প্রশ্নের লিখিত জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, বর্তমান সরকারের আমলে অর্থনীতির ক্ষেত্রে ঘটেছে ব্যাপক কাঠামোগত রূপান্তর। কৃষির পাশাপাশি শিল্পের হয়েছে ব্যাপক প্রসার, রফতানি আয় বেড়েছে প্রায় আড়াই গুণ, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অতিক্রম করেছে আট শতাংশ। এর পেছনে রয়েছে গত একযুগে উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বর্তমান সরকারের বিভিন্ন সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা, কর্মসূচী ও বাস্তবায়ন কৌশল।
সরকারী দলের সংসদ সদস্য আনোয়ার খানের প্রশ্নের লিখিত জবাবে সংসদ নেতা জানান, যে কোন সংক্রামক রোগের আক্রমণ থেকে বাঁচতে টিকা বা ভ্যাকসিনের গুরুত্ব বিশ্বব্যাপী সুপ্রতিষ্ঠিত। ভ্যাকসিন দেয়ার কারণে প্রতিবছর বিশ্বে লাখ লাখ শিশুর প্রাণ রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে। ভ্যাকসিন শরীরে এ্যান্টিবডি তৈরির মাধ্যমে মানবদেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে।
তিনি জানান, মহামারী করোনা আবির্ভাবের পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভ্যাকসিন আবিষ্কার ও উৎপাদনের গুরুত্ব বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে। বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ভ্যাকসিন নিয়ে অধিকতর গবেষণা ও উৎপাদনের প্রয়োজনীয়তা আরও বেশি অনুভূত হচ্ছে। তিনি বলেন, এ প্রেক্ষিতে মহামারী করোনাসহ বিভিন্ন ভাইরাস প্রতিরোধকল্পে ভ্যাকসিন উৎপাদনের লক্ষ্যে দেশে একটি আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন ভ্যাকসিন ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা এবং ভ্যাকসিন নীতিমালা প্রণয়নের পরিকল্পনা বর্তমান সরকারের রয়েছে।
সরকারী দলের সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের লিখিত জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকারের কৃষিবান্ধব নীতি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে একদিকে প্রচুর কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে, অন্যদিকে প্রবৃদ্ধির হার আরও গতিশীল হয়েছে। অর্থনীতিতে কৃষির আনুপাতিক অবদান কমলেও কৃষি উৎপাদন বেড়েছে অনেক। খাদ্য উৎপাদনে বাংলাদেশ আজ স্বয়ংসম্পূর্ণ। করোনাকালে ইন্দোনেশিয়াকে টপকে বাংলাদেশ বিশ্বে চাল উৎপাদনে তৃতীয় স্থানে উন্নীত হয়েছে।
তিনি বলেন, এ সময়ে কৃষির অন্যান্য ক্ষেত্রেও ঘটে গেছে নীরব বিপ্লব। আমরা আজ মাছ-মাংস, ডিম, শাকসবজি উৎপাদনেও স্বয়ংসম্পূর্ণ। বর্তমানে বাংলাদেশ বিশ্বে সবজি উৎপাদনে তৃতীয়, পেঁয়াজ উৎপাদনে তৃতীয়, পাট উৎপাদনে দ্বিতীয়, চা উৎপাদনে চতুর্থ এবং আলু ও আম উৎপাদনে সপ্তম স্থানে রয়েছে। অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয়ে মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির হারে বাংলাদেশ দ্বিতীয় স্থানে এবং ইলিশ উৎপাদনকারী ১১ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান প্রথম।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এত দ্রুত সময়ে এরূপ অবকাঠামোগত রূপান্তর খুব কম দেশেই সম্ভব হয়েছে। বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত দেশ হতে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের যোগ্যতা অর্জন করেছে। বর্তমান সরকারের উৎপাদন নির্ভর কর্মকৌশল বাস্তবায়নের ফলে ২০৩১ সালে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালে একটি জ্ঞানভিত্তিক উন্নত রাষ্ট্রের মর্যাদায় আসীন হবে বলে দৃঢ়ভাবে আশা করি।