রাষ্ট্রদ্রোহী কার্যকলাপ করেও স্বপদে বহাল প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল
আল আমিন হোসেন মৃধা, শিক্ষাবার্তা, ঢাকাঃ রাজধানীর ফরিদাবাদের বাংলাদেশ ব্যাংক আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোস্তফা কামাল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে রাষ্ট্রদ্রোহী কার্যকলাপ করলেও কোন ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি তার বিরুদ্ধে। এমনকি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ড এমপিও বাতিলের সুপারিশ করলেও তা আমলে নেয়নি প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা কমিটি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননায় গত মার্চ মাসের ১ তারিখে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড বিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি বরাবর কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রদান করেন। নোটিশে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রমাণিত হওয়ায় তার বেতন-ভাতা (এমপিও) কেন বন্ধ করা হবে না মর্মে এক সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়। সেই এক সপ্তাহ নয় এক মাস অতিবাহিত হলেও কোন ধরণের ব্যবস্থা নেয়নি বিদ্যালয়টির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের (এইচআরডি-১) পরিচালক মোঃ সিরাজুল ইসলাম।
গত ২২ মার্চ ২০২৩ তারিখে "এই পাঠ্যপুস্তক-সরকার মানেন না বাংলাদেশ ব্যাংক আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক" শিরোনামে শিক্ষাবার্তা'য় সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পরে বিষয়টি নিয়ে নানা আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হলেও কোন ধরণের ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এমনকি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একাধিক রাষ্ট্রবিরোধী পোস্ট করলে এবং তা প্রশাসনের দৃষ্টি গোচর হলেও তার বিরুদ্ধে নূন্যতম কারণ দর্শানোর নোটিশ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে এবং বাংলাদেশ ব্যাংক পরিচালিত একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক হয়ে সরকারের এমপিও অংশ ভোগ করে মাধ্যমিক ও শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) দেওয়া বেসরকারি শিক্ষকদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের জরুরী নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সরকার এবং শিক্ষা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে একের পর এক প্রোপাগান্ডা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শ্যামপুর থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শাপলা খানম শিক্ষাবার্তা’কে বলেন, বিষয়টি নিয়ে তাকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে। সেই সাথে ফেসবুক থেকে তাকে তার সেই স্ট্যাটাসগুলো মুছে ফেলতে বলা হয়েছে। রাষ্ট্রবিরোধী ক্রিয়াকলাপ মুছে ফেললেই বিষয়টি সমাধান জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, বিষয়টি জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা স্যার দেখছেন আপনি তার সাথে কথা বলতে পারেন।
জানতে চাইলে ঢাকা জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ শিক্ষাবার্তা'কে বলেন, বিষয়টি দেখার জন্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বলা হয়েছে এবং তাকে মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়েছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংক উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের (এইচআরডি-১) পরিচালক মোঃ সিরাজুল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
এ বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, বোর্ডের তদন্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির সভাপতির কাছে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে এবং কেন এমপিও বাতিল হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে। কিন্তু তাঁরা কোন জবাব দেননি। অচিরেই বোর্ড এটা নিয়ে পুনরায় সিদ্ধান্ত নিবে।
জানতে চাইলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা ঢাকা আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ পরিচালক এ,এস,এম, আব্দুল খালেক শিক্ষাবার্তা'কে বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে জানতাম না। আমি এখনই জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলছি।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২২/০৩/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়