প্রধান শিক্ষক ও পিয়ন মিলে আমাকে ফাঁসিয়েছেন: শিক্ষিকা পেয়ারী বেগম
সুভাষ বিশ্ববাস, নিজস্ব প্রতিবেদক, রংপুর অঞ্চলঃ বিদ্যালয় চলাকালে শিক্ষার্থীদের দিয়ে হাতপাখায় বাতাস করিয়ে নেওয়া ও শ্রেণিকক্ষে বিছানা পেতে শুয়ে থাকার বিষয়ে মুখ খুলেছেন সহকারী শিক্ষিকা পেয়ারী বেগম। তিনি নীলফামারীর কিশোরগঞ্জের গাড়াগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা। সম্প্রতি ওই স্কুল শিক্ষিকার বিদ্যালয় চলাকালে শ্রেণিকক্ষে বিছানা পেতে শুয়ে থাকা ও শিক্ষার্থীদের দিয়ে হাতপাখায় বাতাস করিয়ে নেওয়ার কয়েকটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ছবিগুলোর কোনোটিতে শিক্ষিকা পেয়ারী বেগম বিছানা পেতে ঘুমাচ্ছেন। কোনোটিতে তিনি ক্লাসে বসে খাতায় কিছু লিখছেন আর হাতপাখা দিয়ে বাতাস করছে এক শিক্ষার্থী। কোনোটিতে তিনি ঘুমাচ্ছেন পাশে এক শিশু স্মার্ট ফোনে গেম খেলছে। শিক্ষিকার পাশে হাতপাখা, টিফিন বাটি, তার ভ্যানিটি ব্যাগ সবই রয়েছে।
এ নিয়ে গত বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) শিক্ষাবার্তায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর মুখ খুলেন সেই স্কুল শিক্ষিকা পেয়ারী বেগম। তবে সংবাদ প্রকাশের আগে তার সঙ্গে কথা বলতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। এমনকি তার সঙ্গে কথা বলতে বিদ্যালয়ে গেলে অফিস কক্ষে প্রবেশে বাধা সৃষ্টি করেন প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদুল করিম।
স্কুলশিক্ষিকা পেয়ারী বেগম তার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষাবার্তা'র কাছে দাবি করেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদুল করিমের বিরুদ্ধে গত বছরের ১৭ জুলাই উপজেলা শিক্ষা অফিসার বরাবর লাঞ্ছিতের লিখিত অভিযোগ করেন তিনি। এরপর থেকে তার বিরুদ্ধে নানা ষড়যন্ত্র শুরু করেছেন প্রধান শিক্ষক।
তিনি বলেন, স্কুল ছুটির ৫ মিনিট আগে আমি হঠাৎ প্রেসার বাড়ার কারণে অসুস্থ হয়ে মাথা ঘুরে পড়ে যাই আমাদের ম্যাডামরা পরিত্যক্তর রুম আছে সেখানে আমাকে ধরে শুয়ে দিয়ে মাথার কাপড় সরিয়ে দিয়ে মাথায় পানি দেয় এবং আমাকে শুইয়ে দেয়। এই সুযোগ বুঝে প্রধান শিক্ষক মিনারুল পিয়ন কে বলেছে এই ছবিটা উঠিয়ে নেও মিনারুল ছবি উঠিয়ে নিলে স্কুল সভাপতির ভাগিনা কে দিয়ে এটা ভাইরাল করায়। শিক্ষিকা মোছা: পেয়ারি বেগম আরো বলেন ১ বছর আগে আমাকে অনুপস্থিত বাচ্চাকে বিস্কুট বিতরণ আগে করতে বলে আর আমি পরে করতে চেয়েছি এতে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক আমার গায়ে হাত তোলার চেষ্টা করে ও আমার বুকে ভ্যানিটি ব্যাগ ছুড়ে মারে। এ ছাড়া প্রধান শিক্ষকের ভয়ে লিজারের সময় বাহিরে বারান্দায় বসে থাকি আমরা। এসব বিষয় সহ প্রধান শিক্ষকের কাছে নির্যাতিত হয়েছি কোন বিচার পাইনি। সহকারী শিক্ষা অফিসার আতাউর রহমান ক্লাস্টার অভিযোগ সম্পর্কে জানেন কিন্তু কোন বিচার করেননি। প্রধান শিক্ষক হুমকি দেন শিক্ষা অফিস কিনে নিব। সেই ১ বছর আগের ২ টি অভিযোগে করে ছিলাম৷ শোধ তুললো প্রধান শিক্ষক।
সত্যি বেরিয়ে আসবে বলে সেদিন সাংবাদিকদের স্কুলে ঢুকতে দেয়নি এবং আমার সাথে কথা বলতে দেয়নি প্রধান শিক্ষক। এর আগে দুইবার প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দরখাস্ত করেছিলাম শিক্ষা অফিসে কোনরকম বিচার করেনি। অভিযোগটি ছিল মহিলা টিচারদের সাথে মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও আরো অনেক কিছু।
সহকারী শিক্ষা অফিসার ক্লাস্টার মো: আতাউর রহমান গতকাল শিক্ষাবার্তা'কে বলেন, আমি বৃহস্পতিবার ১৩ জুলাই তাকে শোকজ করেছি তিনি কাগজ হাতে পাননি রবিবার ১৬ জুলাই কাগজ হাতে পেয়ে যাবেন ওই শিক্ষিকা। উনি জবাব দিলে তদন্ত করে দেখা হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৭/০৭/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়