প্রতিবেশীকে কোপালেন মাদরাসা শিক্ষক
ময়মনসিংহঃ কয়েক দিন আগে মাদরাসা শিক্ষকের ভাইয়ের মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করে প্রতিবেশী এক তরুণ। আর এর জেদ মেটাতে ওই শিক্ষক বাড়ির সামনের সড়ক দিয়ে যাওয়ার সময় ওই তরুণের এক স্বজনকে কুপিয়ে আহত করেছেন।
সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের নান্দাইলের আচাগাঁও গ্রামের টঙ্গীরচর এলাকায়। ওই মাদরাসা শিক্ষকের নাম মো. আবুল কালাম আজাদ ওরফে হিরন মাস্টার। তিনি মৃত আবদুল বারেকের ছেলে এবং আউলিয়াপাড়া দাখিল মাদরাসার কৃষি বিষয়ের শিক্ষক বলে গ্রামের লোকজন জানিয়েছেন।
জানা যায়, আহত ওই তরুণকে হাসপাতালে নেওয়া হলে মৃত্যুর গুজবে অভিযুক্ত মাদরাসা শিক্ষকের বাড়িতে হামলা ও বাড়ির ভেতরে থাকা খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। জনরোষ থেকে বাঁচতে ওই সময় নিজের ঘরে গিয়ে পরিবারসহ ভেতর থেকে তালা লাগিয়ে আত্মরক্ষার চেষ্টা করেন অভিযুক্ত মাদরাসা শিক্ষক। পরে পুলিশ গিয়ে জনরোষ থেকে তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
অন্যদিকে গুরুতর আহত তরুণের নাম মো. আমিনুল ইসলাম (২২)। তিনি একই গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে। ঢাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন তিনি। ঈদের ছুটিতে তিনি বাড়ি এসেছিলেন। আজ সোমবার তিনি কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন। মাদরাসা শিক্ষকের বাড়ির সামনের রাস্তা দিয়ে গ্রাম ছাড়ার সময় তাকে বুকে কোপানো হয়। আহত তরুণকে নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
নান্দাইল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক জানান, ধারালো কিছুর আঘাতে ওই তরুণের বুকের বা পাশে গভীর ক্ষত হয়েছে। তিনি জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মাদরাসা শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ নিজেকে উচ্চশিক্ষিত লোক বলে ভাবেন। প্রতিবেশী ও গ্রামবাসীদের তিনি তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেন। নানা ছুতোয় তিনি মানুষের সাথে খারাপ আচরণ করে থাকেন। চার দিন আগে মাদরাসা শিক্ষকের বড় ভাইয়ের মেয়ে তুহিন নামের এক তরুণের সাথে পালিয়ে যান। পরে তাকে বিয়ে করেন। মাদরাসা শিক্ষক সেই বিয়ে মেনে নিতে পারছিলেন না। এ কারণে তিনি বিয়ে করা তরুণের প্রতি ক্ষুব্ধ ছিলেন। বিয়ে করা তরুণ হচ্ছেন ছুরিকাঘাতে আহত আমিনুল ইসলামের প্রতিবেশী। বিয়ের ঘটনায় আমিনুল জড়িত বলে সন্দেহ করেন শিক্ষক আবুল কালাম।
এলাকার নাঈম নামের এক যুবক বলেন, 'আমিনুল অত্যন্ত নিরীহ যুবক। তার বাবা নেই। তিনি ঢাকায় চাকরি করেন। ছুটিছাঁটা পেলে বাড়িতে আসেন। তিনি নিজ গ্রামের কোনো ঘটনার সাথে জড়িত নন। অথচ মাদরাসা শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ নির্দোষ একটি ছেলেকে ছুরিকাঘাত করে তার প্রাণ সংশয়ের মুখে ফেলে দিয়েছেন। এতে গ্রামের শত শত বাসিন্দা ওই শিক্ষকের প্রতি ক্ষুব্ধ হয়ে পড়ে। পরে পুলিশ এসে জনরোষ থেকে তাকে হাতকড়া পরিয়ে থানায় নিয়ে যায়। ওই শিক্ষককে নিয়ে পুলিশ চলে যাওয়ার পর বিক্ষুব্ধ জনতা শিক্ষকের বাড়িতে থাকা একটি খড়ের গাদায় আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে আবার পুলিশ এসে গ্রামবাসীকে ছত্রভঙ্গ করে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।'
নান্দাইল থানার ওসি মিজানুর রহমান আকন্দ জানান, সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। লিখিত অভিযোগ পেরে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০২/০৫/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়