পাঠ্যবইয়ে ‘হিজড়া বিষয়’ অন্তর্ভুক্তি নিয়ে রয়টার্সের প্রতিবেদন
শিক্ষাবার্তা ডেস্কঃ বাংলাদেশের বেশিরভাগ ট্রান্সজেন্ডার তাদের জীবিকা নির্বাহ করে ট্রাফিক জ্যামে আটকে থাকা মানুষ থেকে ভিক্ষাবৃত্তি করে। এছাড়া দোকানদাররা হিজড়াদের আশীর্বাদের পরিবর্তে কমমূল্যে পণ্য দেয়।
বাংলাদেশ সরকার ২০১৩ সালে হিজড়াদের 'তৃতীয় লিঙ্গ' হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। তারা এমন একটি দেশে বসবাস করে, যেখানে সমলিঙ্গের মানুষের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক অবৈধ। বেশিরাভাগ তৃতীয় লিঙ্গের মানুষরা দারিদ্রতার মধ্যে বসবাস করে। এমনকী তারা শিক্ষার জন্য যথাযথ সুযোগ-সুবিধাও পায় না। এদের মধ্যে খুব কম সংখ্যক মানুষই চাকুরি করতে পারে। বেশিরভাগই ভিক্ষাবৃত্তি করে অথবা যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করে। কিন্তু চলতি বছরের জানুয়ারিতে ১১ থেকে ১৩ বছরের শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবইয়ে ট্রান্সজেন্ডার বিষয়টি যুক্ত করা হয়েছে।
তবে পাঠ্যবইয়ে ট্রান্সজেন্ডারদের বিভিন্ন সম্মানজনক কাজে দেখানো হয়েছে। যেমন-বিউটিশিয়ান, উন্নয়নকর্মী, নির্বাচিত মেয়র। এই বইগুলো যারা লিখেছেন তারা মনে করে, এই ধরনের বিষয়বস্তু অন্তর্ভূক্ত করার ফলে মানুষের মধ্যে গ্রহণযোগ্যতা পাবে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সদস্য মুহাম্মদ মশিউজ্জামান বলেন, ‘আমরা এটিকে খুব ছোট এরিয়াজুড়ে পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছি এবং আমরা একটি খুব ইতিবাচক ফলাফল পেয়েছি। আমাদের শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া পেয়েছি, কারণ এটি তাদের কাছে সম্পূর্ণ অজানা বিষয় ছিল। এটা তাদের জন্য নতুন জ্ঞান এবং তারা এটাকে খুব ভালোভাবে গ্রহণ করেছে।’
তবে পাঠ্যপুস্তকের এই বিষয়টিকে সবাই স্বাগত জানায়নি। হিজড়াদের অন্তর্ভুক্ত করায় ক্ষুব্ধ একটি বিশাল জনতা সম্প্রতি ঢাকার একটি মসজিদে পাঠ্যপুস্তক প্রত্যাহার করার আহ্বান জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে। তা সত্ত্বেও ট্রান্সজেন্ডার সম্প্রদায় এবং তাদের সমর্থকরা আশাবাদী যে পাঠ্যপুস্তকগুলি সচেতনতা ছড়িয়ে দেবে এবং ফলস্বরূপ সমাজে তাদের অবস্থান উন্নত করতে সহায়তা করবে।
বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে হিজড়া সম্প্রদায়ের নেতা জোনাক জানান, ‘আমাদের গল্প যদি মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এবং তারা আমাদের কষ্টের কথা মনে রাখে, তাহলে সেটা আমাদের জন্য ভালো হবে। যারা আমাদের সম্পর্কে আরও জানবে তারা আশা করি বুঝতে পারবে এবং তারপর ভবিষ্যতে আমাদের উন্নয়নে কাজ করবে।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৬/০২/২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়