নূন্যতম মূল্যায়নে উত্তীর্ণ হোক প্রাথমিক শিক্ষার্থীরা
কাজী আবু মোহাম্মদ খালেদ নিজাম।।
করোনার কারণে প্রাথমিক ও জুনিয়র সমাপনি এবং এইচ এস সি পরীক্ষা বাতিলের পর মাধ্যমিক পর্যায়ে এ্যাসাইনমেন্টের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের যাচাই করা হচ্ছে।
কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদেরকে জন্য কী ব্যবস্থা নেয়া হবে তা সুষ্পষ্ট হয়নি। যদিও মাননীয় মন্ত্রী মহোদয় বলেছেন স্কুল খুললে স্ব স্ব প্রতিষ্ঠান নিজেদের মতো করে সংক্ষিপ্ত মূল্যায়ন করবে। মূল্যায়নের ধরণটি কী হবে চাইলে কর্তৃপক্ষ তা আরো ষ্পষ্ট করতে পারেন।
আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি, প্রাথমিকে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করেই পরবর্তী শ্রেণিতে প্রমোশন দেওয়াটা বেটার হবে। এক্ষেত্রে, এতদিন টিভি ও অনলাইন মাধ্যমে যতটুকু ক্লাশ করা সম্ভব হয়েছে তার উপর ভিত্তি করে একটি সংক্ষিপ্ত সিলেবাস (যেখানে পরবর্তি ক্লাসের পাঠ্যপুস্তকের অধ্যায় থেকেও কিছু পাঠ যুক্ত করা যায় যা মিল থাকবে বা ধারণা পাওয়া যায়) প্রণয়ন করা যেতে পারে।
এই সিলেবাসে যখনই স্কুল খুলুক তখনই মূল্যায়ন করা সম্ভব হতে পারে। যদিও সকল শিক্ষার্থীর পক্ষে অনলাইন মাধ্যমে ক্লাশ করা সম্ভব হয়নি। যারা অনলাইন ক্লাশে অংশ নিতে পারেনি বা পারবেনা তাদেরকে সম্ভব সব উপায় অবলম্বনের মাধ্যমে পরবর্তি ক্লাসে প্রমোশনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। যাদের মূল্যায়নে অংশ নেওয়া সম্ভব হবে তাদেরকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে শ্রেণিতে প্রথমদিকে রেখে বাকিদেরও যুক্ত করা যায়। সব বিষয়কে একত্রিত করে সংক্ষিপ্ত মূল্যায়ন নেওয়াই যুক্তিযুক্ত হবে।
সাধারণ শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে কর্তৃপক্ষ হয়তো বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। এটা হতেই পারে। তবে মেধাবি শিক্ষার্থীদের কথাও মাথায় রাখা দরকার বলে মনে করি। দেখা গেছে, বহু মেধাবি শিক্ষার্থী করোনাকালেও যতটুকু পেরেছে তাদের পড়ালেখা চালিয়ে গেছে।
নিয়মিত অনলাইন ও টিভির ক্লাশগুলোতে অংশ নিয়েছে। এখন একেবারে পরীক্ষা না হলে বা কোন ধরণের মূল্যায়নের ব্যবস্থা না থাকলে তারা হতাশ হবে। সেজন্য মনে করি, অন্তত মূল্যায়নটা তাদের ক্ষেত্রে হওয়াটা প্রয়োজন। বাকি শিক্ষার্থীদের দরকার হলে অটোপ্রমোশন দিন।
এটা অবশ্যই সঠিক, করোনার কারণে বিশ্বব্যাপী শিক্ষাব্যবস্থায় বিপর্যয় ঘটেছে। তছনছ হয়েছে সবকিছু। এরপরও সীমাবদ্ধতার মাঝে যতটুকু সম্ভব করতে পারলে সেটাই হবে স্বার্থকতা।
শিক্ষার্থীদের ঝুঁকিতে না ফেলেও কীভাবে মূল্যায়ন করা যায় তা বিশেষজ্ঞ ও শিক্ষাবিদদের সাথে বসে আলোচনার ভিত্তিতে একটা উপায় বের করা যেতে পারে। নূন্যতম একটা মূল্যায়ন হওয়াটা সময়ের দাবি।
প্রাথমিকসহ সকল শিক্ষাব্যবস্থা আগের অবস্থায় ফিরুক, করোনামুক্ত হয়ে স্বস্তি আসুক গোটা বিশ্বে।
★লেখক : শিক্ষক ও প্রাবন্ধিক