নিবন্ধিত শিক্ষকদের হাহাকার, ৮০ হাজার পদ শূণ্য
নিজস্ব প্রতিনিধি।।
বেসরকারী শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) সারাদেশের বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকের শূণ্যপদের চাহিদা নেওয়ার বিপরীতে প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার মাধ্যমে উপযুক্ত শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে থাকে।
এ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির হাতে প্রায় ৮০ হাজার শিক্ষকের পদ শূণ্য থাকার তথ্য আছে অথচ ২০১৮ সালের পর শিক্ষক নিয়োগের আর কোন গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে পারেনি। এদিকে ১-১৫তম শিক্ষক নিবন্ধনে উত্তীর্ণ প্রায় লক্ষাধিক নিবন্ধনধারী নিয়োগের আশায় নানা দুশ্চিন্তা ও হতাশায় দিন কাটাচ্ছে। দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি না হওয়ায় শিক্ষক হতে পারছে না এসব মেধাবী তরুন নিবন্ধিতরা।
দীর্ঘদিন থেকেই এনটিআরসিএ এর নিয়োগ জটিলতা বা গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে প্রেস ক্লাবে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করে আসছে নিয়োগ প্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষকেরা। বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে একাধিক নিউজ প্রকাশ হওয়া সত্তে¡ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও মন্ত্রণালয়ের এখনো কোন পদক্ষেপ দৃশ্যমান হচ্ছে না। এ নিয়ে নিয়োগ প্রত্যাশী নিবন্ধিত শিক্ষকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। তারা দ্রæত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
“শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ ও শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম না করতে পারলে শিক্ষা ব্যবস্থা স্বাভাবিক করবে কিভাবে? এটা নিয়ে শিক্ষামন্ত্রণালয় চুপ কেন” - প্রশ্ন তুলেছেন নিবন্ধিত এক প্রার্থী।
১৫তম নিবন্ধিত একজন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “ প্রিলিমিনারী, লিখিত, ভাইভা ও মেধা তালিকায় স্থান করে নিবন্ধিত বেকার শিক্ষক হিসেবে ০১ বছর ধরে গণবিজ্ঞপ্তির অপেক্ষা করছি। আমাদের মতো বেকার নিবন্ধিত শিক্ষকদের কষ্ট ও যন্ত্রনা দেখার কি কেউ নেই? শিক্ষক হয়ে শিক্ষিত ও দক্ষ জাতি গঠনে নিজেকে উৎসর্গ করার স্বপ্ন দেখাটা কি আমাদের অপরাধ? এনটিআরসিএ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে বিনীত অনুরোধ আর আমাদেরকে হতাশ করবেন না। দ্রæত গণবিজ্ঞপ্তি দিয়ে ভয়াল বেকারত্বের দুর্দশা থেকে মুক্তি দিন।”
৩য় গণবিজ্ঞপ্তি প্রত্যাশী শিক্ষক ফোরামের সান্ত বলেন, “প্রতিনিয়ত আমাদের কাছে বেকার অসহায় নিবন্ধিতরা ফোন করে কান্নাকাটি করছে। অবাক বিষয় হচ্ছে কতটা কষ্টে ও দুর্বিষহ অবস্থায় থাকলে উচ্চ শিক্ষিত এসব নিবন্ধিতরা কান্নাকাটি করে তা সংশ্লিষ্ট সকলের বোঝা উচিত। আমরা এ পর্যন্ত একুশবার এনটিআরসিএতে গেছি সকলের কষ্টের কথা কর্মকর্তাদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি।
জানুয়ারী মাসেই আমরা বহুল কাঙ্খিত গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের জোড় দাবী জানাচ্ছি।”
অপরদিকে, ২য় গণবিজ্ঞপ্তিতে নিয়োগ পেয়েও প্যাটার্ন ও কোটা জটিলতায় নিয়োগ বঞ্চিত হয়ে দুবির্ষহ জীবন কাটাচ্ছে প্রায় ১২৬০ জন নিবন্ধিত শিক্ষক। তাদের বিষয়েও এখন পর্যন্ত কোন সমাধান হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এনটিআরসিএ এর বিদায়ী চেয়ারম্যান দক্ষতার অভাবে নিয়োগের প্যাটার্ন বহিভূর্ত ও কোটা জটিলতা বাড়িয়ে দিয়ে গেছে। এ নিয়ে এসব ভুক্তভোগীদের মধ্যে বিদায়ী চেয়ারম্যানের উপর যথেষ্ট ক্ষোভ দেখা গেছে।
নিয়োগ সংক্রান্ত সকল সমস্যার দ্রুত সমাধান চেয়েছেন ১-১৫তম নিবন্ধিত শিক্ষকেরা। করোনা পরবর্তী শিক্ষা ব্যবস্থা মান বজায় রাখতে ও স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম চালাতে শূণ্যপদ গুলো দ্রুত পূরণের পক্ষেই মত দিয়েছেন শিক্ষাবিদগণ।