নিত্যপণ্যে নাভিশ্বাস স্বল্প ও মধ্যম আয়ের মানুষের
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
করোনা সংক্রমণ ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এলেও অনিয়ন্ত্রিতই থাকছে নিত্যপণ্যের দামে। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। চাল, ডাল ও তেলের বাড়তি দামের পাশাপাশি নতুন যুক্ত হয়েছে আটা, ময়দা, মুরগি, ডিমসহ আরো কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। নিম্ন আয়ের মানুষের সবজিও এখন নাগালের বাইরে চলে গেছে। শুক্রবার রাজধানীর বাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
শুক্রবার রাজধানীর বাসাবো বাজারের ক্রেতা আরিফুর রহমান বলেন, মাছ-গোশত এখন আর কিনতে পারি না। বেঁচে থাকার জন্য সবজি আর ডিমের ওপর ভরসা রেখেছিলাম। এখন এই দু’টি পণ্যের দামও অনেক বেড়েছে। প্রয়োজনীয় সব পণ্য কিনতে পারছি না। এভাবে চলতে থাকলে গ্রামে চলে যেতে হবে। কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় সব সবজি কেজিপ্রতি ৫ থেকে ১০ টাকা দাম বেড়েছে।
বাজারে লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৮০ টাকা দরে, কচুর লতি ৬০ টাকা, করলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়, মিষ্টি কুমড়ার পিস ৪০ টাকা। ৫০০ গ্রাম ওজনের ছোট পাতা কপির পিস ৫০ টাকা, ঝিঙে ৭০, চিচিঙ্গা ৭০, পটোল ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুলা বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। কাঁচাকলার হালি ৪০ টাকা, পেঁপে ২৫ থেকে ৩০ টাকা। লম্বা বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা। গোলবেগুন বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি।
গত সপ্তাহে ঢেঁড়স ছিল ৬০ টাকা, গতকাল তা ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কাঁকরোলে কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা। বরবটির কেজি থ৮০ টাকা, ধুন্দুলের কেজি ৬০ টাকা। শসা প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৩০ টাকা। বাজারে শিমের কেজি ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আলুর কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায়। বাজারে কাঁচামরিচের প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। শুকনা মরিচের কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা।
সবজির সাথে সাথে বেড়েছে শাকের দামও। পাটশাকের জোড়া আঁটি ২৫ টাকা, কলমি শাক জোড়া আঁটি ২০ টাকা, কচুর শাক দুই আঁটি ২০ টাকা, মুলার শাক দুই আঁটি ৩০ টাকা, লাল শাকের জোড়া আঁটি ৩০ টাকা, পুঁইশাক ৪০ টাকা, শাপলা ডাঁটা ১৫ টাকা।
বাজারে প্রতি কেজি চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকায়। এ ছাড়া প্যাকেট চিনি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯৫ টাকায়। এ ছাড়া এসব বাজারে দেশী মসুরের ডালের কেজি ১৩০ টাকা। ভারতীয় মসুরের ডাল বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। এ ছাড়া ভোজ্যতেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকা।
খুচরা বাজারে ডজনপ্রতি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ টাকায়। এর আগে গত মাসের মাঝামাঝি সময়ে অস্থিতিশীল ছিল ডিমের বাজার। সে সময় ডিমের ডজন ১৬০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এর আগে দেশে কখনো ডিমের দামের এতটা বৃদ্ধি দেখা যায়নি।
মাছবাজার ঘুরে দেখা গেছে, রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙ্গাশ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকা। শিং মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪৬০ টাকা। কৈ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। পাবদা মাছের কেজি ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে এসব মাছের দামে পরিবর্তন আসেনি।
চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে চিংড়ি ও ইলিশ। চিংড়ির কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০০-১৪০০ টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ৯০০-১০০০ টাকা। আর ৪০০-৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৭০০ টাকা। প্রতি কেজি গরুর গোশত ৭০০ টাকা আর খাসির গোশত বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকা দরে। ব্রয়লার মুরগির কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে হয়েছে ১৮০ টাকা। এ ছাড়া লেয়ার মুরগি ৩০০ টাকা কেজি এবং সোনালি মুরগি ৩২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।