কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের উদ্যোগে কারিগরি শিক্ষা সম্পর্কে সচেতনতামূলক একটি প্রচার কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এর লক্ষ্য দুটো- উচ্চশিক্ষার উপযোগী হিসেবে কারিগরি শিক্ষাকে সম্ভাব্য শিক্ষার্থীদের কাছে জনপ্রিয় করে তোলা; এবং কারিগরি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ নিয়ে যাদের নেতিবাচক ধারণা আছে, তাদের মধ্যে এর সাফল্যেনর গল্প বা কাঙ্ক্ষিত ফলাফল তুলে ধরে মনোভাব পরিবর্তন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) স্কিলস-২১ প্রকল্প এ কর্মসূচির কর্মকৌশল, পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে সহায়তা দিচ্ছে। ‘কারিগরি দক্ষতায় সমৃদ্ধি’ শীর্ষক এ কর্মসূচি প্রথমে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় প্রকল্প সহযোগী কারিগরি শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠানে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে এরপর তা বিভাগীয় পর্যায়ে বাস্তবায়নের কাজ শুরু হয়েছে। পরবর্তীতে এটি দেশের সবগুলো কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাস্তবায়ন করার পরিকল্পনা রয়েছে।

স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে উদ্বুদ্ধকরণ, প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকাণ্ড ও ডিজিটাল প্ল্যাটফরম- এই তিনটি স্তরে এই কর্মসূচি সফলভাবে বাস্তবায়ন করেছে রংপুর পলিটেকনিক ইন্সটিটিউট। স্থানীয় পর্যায়ে কর্মকাণ্ডের মধ্যে ছিল হটস্পট কর্মসূচি ও মাইকিং ইত্যাদি। কারিগরি শিক্ষা সম্পর্কে সরাসরি তথ্য ও বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে অন্তত ছয় থেকে সাতশ মানুষের কাছে। পোস্টার, বুকলেট, তথ্য বোর্ড ও নানা ধরনের ঘোষণার মাধ্যমে সংযুক্ত করা গেছে আরও বিভাগের আরও অসংখ্য জনগোষ্ঠীকে।

টিভেট সচেতনতা কর্মসূচির অংশ হিসেবে গত ১৯ জানুয়ারি রাজশাহী মহিলা পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে একটি ক্যাম্পাস ওপেন ডে আয়োজন করা হয়। সেখানে ছিল ক্যা রিয়ার ওয়ার্কশপ, দক্ষতা উন্নয়নের জন্য ওয়ার্কশপ, দক্ষতার প্রদর্শনী ও প্রতিযোগিতা, জব ফেয়ারের মতো নানা অয়োজন।

প্রায় ১০০ জন শিক্ষার্থী ক্যাপাসিটি বিল্ডিং ওয়ার্কশপে স্বতস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেন। ক্যারিয়ার ওয়ার্কশপে অংশ নেন আরও প্রায় ১০০ শিক্ষার্থী। বিভাগীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে ফিতা কেটে বিভাগীয় কমিশনার জিএস জাফরউল্লাহ ক্যাম্পাস ডে উদ্বোধন করেন। আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে বিশেষ অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জয়া মারিয়া পেরেরা, রাজশাহী জেলা চেম্বার অব কমার্স এর সভাপতি মো. মাসুদুর রহমান রিংকু। ক্যাম্পাস ডে আয়োজনে কারিগরি শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের নিয়ে সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করে বিভিন্ন কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক এবং ছাত্রছাত্রী বৃন্দ।

সবার জন্য উন্মুক্ত এই মেলায় শিক্ষার্থীরা তাদের দক্ষতার নানা দিক তুলে ধরেন। শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের মাধমে দক্ষতা প্রতিযোগিতায় ১৫ জন বিজয়ীকে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। সাবেক শিক্ষার্থীদের সাফল্যের অভিজ্ঞতা শুনে অনেকেই অনুপ্রাণিত হন কারিগরি শিক্ষায়। ক্যারিয়ার ওয়ার্কশপে কীভাবে টিভেট শিক্ষা পরবর্তী ক্যারিয়ার গঠন করতে হবে সে বিষয়ে আলোচনা হয়। স্থানীয় ১৯টি শিল্প-কারখানা ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরাও মেলায় এসে আগ্রহীদের জীবনবৃত্তান্ত সংগ্রহ এবং চাকরির লিখিত পরীক্ষা ও সাক্ষাৎকার গ্রহণ করেন। নিয়োগপত্র দিয়ে আটজন টিভেট গ্র্যাজুয়েটকে চাকরি দেন নিয়োগকর্তারা। আরও আটজনকে চাকরি কনফার্ম করে প্রতিষ্ঠানগুলো।