ঝরে পড়ছেন নবীন লেখকরা
নিউজ ডেস্ক।।
প্রতি বছর বইমেলায় নতুন লেখকদের বই এলেও পরবর্তী বছর না আসতেই ঝরে পড়ছেন নবীনরা। একাধিক লেখক জানান, নিজের টাকা দিয়ে বই ছাপার পর তা বিক্রি হয় না। বিক্রি হলেও তার টাকা ফেরত আসে না। এসব নানান কারণে প্রতি বছর এ অঙ্গন থেকে বিদায় নিচ্ছেন অনেকে। পরবর্তী সময়ে লোকসান আর তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে তারা আর বই বের করতে চান না। ফলে একসময় সম্ভাবনাময় লেখক হয়ে ওঠার প্লাটফর্মটি থেকে ছিটকে পড়েন তারা।
গতকাল মেলার ১৬তম দিনে নতুন বই এসেছে ১১৪টি। মেলা চলে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় রশীদ হায়দার ও ফরহাদ খান শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মোজাফ্ফর হোসেন। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন ইমতিয়ার শামীম এবং মনি হায়দার। সভাপতিত্ব করেন আনোয়ারা সৈয়দ হক।
আলোচকবৃন্দ বলেন, শিল্প, সাহিত্য ও জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা জটিল বিষয়কে সহজ ও সাবলীল ভাষায় পাঠকের সামনে হাজির করেছেন লেখক রশীদ হায়দার ও ফরহাদ খান। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা-শাণিত একটি অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন তাদের লেখনীর মধ্যে দিয়ে উঠে এসেছে। তাদের কর্মের ভেতর দিয়েই তারা আমাদের হৃদয়ে বেঁচে থাকবেন।
প্রাবন্ধিক বলেন, উদার ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ার চেতনাই ছিল আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম প্রেরণা; কিন্তু পঁচাত্তরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসচর্চাকে নানাভাবে দমিয়ে রাখা হয়। অসাম্প্রদায়িক ও সমতাভিত্তিক সমাজ গঠনের আদর্শ থেকে সরে আসতে থাকে শাসকগোষ্ঠী। এ সময় আবারো কলমযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে হয় আমাদের লেখকদের। এ পর্যায়ে দু’জন গুরুত্বপূর্ণ লেখক হলেন রশীদ হায়দার ও ফরহাদ খান। রশীদ হায়দারের যুদ্ধটা ছিল মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসচর্চা ও এর চেতনা প্রতিষ্ঠার। অন্য দিকে ফরহাদ খান কাজ করেছিলেন বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির শুদ্ধতা নিশ্চিত করে একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গঠনের জন্য।
লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের বই নিয়ে আলোচনা করেন ইসহাক খান ও মাসুম রেজা। কবিতা পাঠ করেন কবি মাসুদ পথিক এবং গিয়াসউদ্দীন চাষা। আবৃত্তি পরিবেশন করেন আবৃত্তিশিল্পী নাঈমা রুম্মান, পলি পারভীন এবং মিসবাহিল মোকাররাবিন। সাংস্কৃতিক পর্বে ছিল শাহাবুদ্দিন আহমেদ দোলনের পরিচালনায় সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘সুর সুধা সঙ্গীতায়ন’-এর শিল্পীদের পরিবেশনা। সঙ্গীত পরিবেশন করেন চন্দনা মজুমদার, শফি মণ্ডল, আবদুল লতিফ শাহ, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, কৌশিক মজুমদার, সুমন চন্দ্র দাস, শেখ মিলন এবং শ্যামল কুমার পাল।
আজ বৃহস্পতিবার অমর একুশে বইমেলার ১৭তম দিন। মেলা চলবে বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে মোহাম্মদ আবদুল কাইউম ও বশীর আল্হেলাল শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন হাসান হাফিজ। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন মো: মুমিত আল রশিদ এবং পারভেজ হোসেন। সভাপতিত্ব করবেন মোরশেদ শফিউল হাসান। সন্ধ্যায় রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
মেলায় এসেছে সর্বোচ্চ বিক্রয় হওয়া বইয়ের অন্যতম শাহদীন মালিকের বেপরোয়া রাজনীতি বেহাল গণতন্ত্র। প্রথমা নিয়ে এসেছে মহিউদ্দিন আহমদের পার্বত্য চট্টগ্রাম : শান্তিবাহিনী জিয়া হত্যা মনজুর খুন। লেখালেখি প্রকাশনী নিয়ে এসেছে ‘ফররুখ আহমদের পাখির ছড়া’। ‘নতুন ধারা’ এনেছে সাহিত্যিক ও গবেষক মুহাম্মদ মিজানুর রহমানের ‘বন্ধু আমার’ বইটি। রকমারি ডট কম-সহ বিভিন্ন অনলাইন বুকশপেও বইটি পাওয়া যাচ্ছে। ভিন্ন স্বাদের মজার মজার বেশ কিছু গল্প নিয়ে চমৎকার এই বইটি। যার প্রতিটি গল্প শিশু-কিশোরদের জন্য শিক্ষণীয় দিকগুলো তুলে ধরেছে।