জাতীয়করণ: শিক্ষকদের কর্মসূচিতে লাঠিচার্জ, ক্ষোভে ফুঁসছেন শিক্ষকরা
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে গত ১১ জুলাই থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে সারাদেশের শিক্ষকরা। এতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো. বজলুর রহমান মিয়া ও সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ। শিক্ষকদের এ অবস্থান কর্মসূচিতে লাঠিচার্জের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
সোমবার (১৭ জুলাই) শিক্ষকদের লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির সপ্তম দিনে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ থাকলেও পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে বলে অভিযোগ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, গত ১১ জুলাই থেকেই আমরা মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। আন্দোলনের অংশ হিসেবে আমাদের শিক্ষকরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। তাদের দাবির কথা তুলে ধরেন। কিন্তু শিক্ষকদের এমন শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ অন্যায়ভাবে লাঠিচার্জ করেছে।
কাওছার আহমেদ বলেন, পুলিশ আমাদের ভাই। আমাদের দাবি-দাওয়া পূরণে তাদের সহযোগিতা কামনা করেছিলাম। কিন্তু তার পরিবর্তে তাদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে শিক্ষকরা। শিক্ষকদের এ শান্তিপূর্ণ অবস্থান কর্মসূচিতে আমাদের প্রায় অর্ধশত শিক্ষককে পেটানো হয়েছে। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন অনেক শিক্ষক রক্তাক্ত হয়ে পড়ে আছে। কয়েকজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, শিক্ষকরা জাতির মেরুদণ্ড। অথচ জাতির মেরুদণ্ডরা আজ রাস্তায় লাঠিপেটা খাচ্ছে। খেয়ে না খেয়ে আন্দোলন করছে। স্কুলে স্কুলে তালা ঝুলছে। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা প্রশাসনের উপর মহলের কেউই আমাদের কথা কানে নিচ্ছেন না। এ কেমন প্রহসন?
এ শিক্ষক নেতা বলেন, আমি পুলিশের কাছে অনুরোধ জানাবো আপনারা আমাদের পাশে থাকুন। আমাদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে সহায়তা করুন।
আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করে টাঙ্গাইলের দেওগঞ্জ থেকে আসা এক শিক্ষক বলেন, আমাদের শিক্ষকদের রক্তাক্ত করা হচ্ছে। মুহূর্তে মুহূর্তে ধাওয়া দেওয়া হচ্ছে। লাঠিচার্জ করা হচ্ছে। কয়েকজনকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। আমাদের কিল-ঘুসি মারা হচ্ছে।
ক্ষোভ প্রকাশ করে একাধিক শিক্ষক বলেন, শিক্ষকের উপর কিভাবে তাঁরা লাঠিচার্জ করেন ? তাঁরা কি কখনও ছাত্র ছিল না। এটা সমাজের জন্য লজ্জার। যে সমাজে শিক্ষকরা লাঠিপেটার শিকার হন সে সমাজে আর কিছু বাকি থাকে না। আমরা পুলিশকে সংযত হওয়ার আহ্বান জানাই। আমরা উস্কানিমূলক কোনো ধরণের স্লোগান বক্তব্য দেয়নি যে পুলিশ উত্তেজিত হয়ে পড়বে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গত কয়েকদিন ধরে প্রেস ক্লাবের গেট সংলগ্ন রাস্তা আটকিয়ে আন্দোলন করছিলেন শিক্ষকরা। এতে রাস্তার একদিক দিয়ে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে অন্যদিক দিয়ে যানচলাচল করছিল। কিন্তু আজ দুইদিকের রাস্তা বন্ধ করে দেন শিক্ষকরা। এতে রাস্তার উভয় দিক দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
তারা জানান, যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকেই ভোগান্তিতে পড়েন। আবার রাস্তা আটকে শিক্ষকরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এক পর্যায়ে দুপুর ১টার দিকে রাস্তা থেকে শিক্ষকদের সরিয়ে দিতে ধাওয়া দেয় পুলিশ। শিক্ষকদের ধাওয়া দিয়ে পল্টন মোড় পর্যন্ত নিয়ে যায় পুলিশ।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৭/০৭/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়