তুচ্ছ ঘটনায় কলেজ শিক্ষককে শাসালেন ছাত্রলীগ নেতা
জামালপুরঃ জেলার সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজে তদবির করা নিয়ে ছাত্রলীগ নেতার হাতে এক শিক্ষককে লাঞ্ছনার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় কলেজ কাম্পাসে উত্তেজনা দেখা দেয়। তবে পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে কলেজ কর্তৃপক্ষ। আজ মঙ্গলবার বেলা ১২টার দিকে কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগে এই লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটে।
উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক সৈয়দ নিয়ামুল হক ও আশেক মাহমুদ কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তন্ময়ের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে।
কলেজ সূত্রে জানা গেছে, কলেজের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের অনার্স প্রথমবর্ষের দুই সাধারণ ছাত্রের অনুপস্থিতির কারণে ৫০০ টাকা করে জরিমানা করা হয়। মঙ্গলবার ওই দুই ছাত্রের জরিমানার টাকা দেওয়ার কথা ছিল। একই বর্ষের শিক্ষার্থী মো. নিজামুল দুই সহপাঠীকে নিয়ে ওই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সৈয়দ নিয়ামুল হকের কাছে যান। সেখানে ওই শিক্ষকের সঙ্গে নিজামুলের তর্কাতর্কি হয়। বিষয়টি নিজামুল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলামকে (তন্ময়) জানান। পরে তন্ময়সহ ৪০ থেকে ৫০ জন ছাত্রলীগ নেতা-কর্মী ওই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সৈয়দ নিয়ামুল হকের কাছে যান। এসময় ছাত্রলীগ নেতারা শিক্ষক নিয়ামুলের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। পরে ছাত্রদের সঙ্গে খারাপ আচরণের অভিযোগ তুলে ওই শিক্ষককে তারা শাসায় ও তার অপসারণ দাবি করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ সময় কলেজের ছুটির ঘণ্টা বাজিয়ে দেয় এক ছাত্রলীগ কর্মী।
এ ব্যাপারে শিক্ষক সৈয়দ নিয়ামুল হক বলেন, ‘আমি আমার বিভাগে পরীক্ষার খাতা দেখছিলাম। এই সময় হঠাৎ করে তারা (ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীরা) কক্ষে প্রবেশ করে। পরে আমি তাদের কথা শুনি। আমি জরিমানা মওকুফে অস্বীকৃতি জানালে তারা উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং আমার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। আমাকে লাঞ্ছিত করে।’
অভিযোগের বিষয়ে উল্টো দাবি করে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তন্ময় বলেন, ‘একজন ছাত্রের জরিমানা মওকুফের জন্য নেতা–কর্মীরা গেলে স্যার তাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। পরে আমি গেলে আমার সঙ্গেও খারাপ আচরণ করে। আমাকে লাঞ্ছিত করে। আমরা এর বিচার চাই, না হলে আন্দোলন আরও বাড়বে।’
জামালপুর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি খাবীরুল ইসলাম বাবু বলেন, ‘আমি ঘটনাটি সম্পর্কে জেনেছি। শিক্ষক ও ছাত্রলীগ নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
এ ব্যাপারে সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ হারুন উর রশিদ বলেন, ‘তাদের (ছাত্রলীগের) কোনো অভিযোগ থাকলে, আমার কাছে এসে বলতে পারত। এভাবে ওই বিভাগে গিয়ে শিক্ষকের সঙ্গে তর্কে জড়ানো ঠিক হয়নি। আবার একজন শিক্ষকের এমন ব্যবহার করাও ঠিক হয়নি। শুধু তাই নয়, সামান্য ঘটনাকে কেন্দ্র করে তারা (ছাত্রলীগ নেতারা) কলেজের ছুটির ঘণ্টাও বাজিয়েছে। সকল শিক্ষকদের সঙ্গে নিয়ে বসেছি। বিষয়টি উভয়পক্ষের সঙ্গে কথা বলে, দ্রুত সময়ের মধ্যে সমাধান করা হবে।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৯/০৩/২০২৪