এইচএসসির উত্তরপত্র মূল্যায়ন কোচিংয়ের শিক্ষার্থীদের দিয়ে
শিক্ষাবার্তা ডেস্ক, ঢাকাঃ চলতি বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার (এইচএসসি) উত্তরপত্র নিজের কোচিংয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের দিয়ে মূল্যায়ন করার অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর একটি কলেজের একজন শিক্ষকের (বোর্ড নির্ধারিত পরীক্ষক) বিরুদ্ধে। উত্তরপত্র মূল্যায়নের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অধীন এইচএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়নে এ জালিয়াতির ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক হলেন রাজধানীর বাড্ডায় অবস্থিত ন্যাশনাল কলেজের প্রভাষক মো. আবু তাহের।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড এই অভিযোগ পেয়ে এবং ভিডিও যাচাই করে ওই শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। একই সঙ্গে তাঁর কাছে থাকা উত্তরপত্রগুলো জব্দ করে অন্য শিক্ষককে দিয়ে পুনর্মূল্যায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, কারণ দর্শানোর নোটিশের পর শিক্ষককে কালোতালিকাভুক্ত করে আজীবনের জন্য বোর্ডের উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিষিদ্ধ করা হতে পারে। এ ছাড়া কলেজ কর্তৃপক্ষকেও তাঁর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে বলা হতে পারে।
প্রসঙ্গত, নিয়মানুযায়ী কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আগে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়ার নিয়ম রয়েছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ন্যাশনাল কলেজের প্রভাষক আবু তাহের এ বছরের এইচএসসি পরীক্ষার ইংরেজি (আবশ্যিক) প্রথম পত্রের একজন পরীক্ষক ছিলেন। তিনি ৪৫০টি উত্তরপত্র মূল্যায়নের দায়িত্ব পান। অভিযোগ উঠেছে, তাঁর কাছে কোচিং করতে আসা রাজধানীর একটি নামকরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উচ্চমাধ্যমিক স্তরের একদল শিক্ষার্থীকে দিয়ে তিনি উত্তরপত্রগুলো মূল্যায়ন করান। এভাবে উত্তরপত্র মূল্যায়নের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। উত্তরপত্রগুলো ঢাকার আরেকটি নামকরা কলেজের পরীক্ষার্থীদের বলে আলোচনা রয়েছে। এ নিয়ে সমালোচনা চলছে।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের দুজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবলেন, অভিযুক্ত শিক্ষককে তাঁরা বোর্ডে ডেকেছিলেন। সেখানে ওই শিক্ষক দাবি করেন, তিনি তাঁর কাছে কোচিং করতে আসা শিক্ষার্থীদের দিয়ে শুধু বৃত্ত ভরাট করিয়েছিলেন, উত্তরপত্র মূল্যায়ন করাননি।
শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, পাবলিক পরীক্ষার উত্তরপত্র মূল্যায়ন একটি গোপনীয় বিষয়। উত্তরপত্র কোনোভাবেই অন্যকে দেখানোর সুযোগ নেই; কিন্তু এই শিক্ষক যা করেছেন, তা তিনি করতে পারেন না।
১৯ সেপ্টেম্বর তারিখে অভিযুক্ত শিক্ষককে যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে ঢাকা বোর্ড, তাতে বলা হয়, যে ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, তাতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের লিখিত উত্তরপত্র দেখা গেছে। যে কোড নম্বর দেখা গেছে, সেটি শিক্ষক আবু তাহেরের। এই কাজ চরম দায়িত্বহীনতার ও পরীক্ষা পরিচালনা নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তাই কেন তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, সে বিষয়ে তিন কর্মদিবসের মধ্যে জবাব দিতে
বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে ওই শিক্ষকের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। পরে আবার কল করা হলে ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের একজন কর্মকর্তা বলেন, ওই শিক্ষক এমপিওভুক্ত নন। এর মানে, সরকার থেকে তিনি বেতন-ভাতা পান না। তাই তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে কলেজ কর্তৃপক্ষকে বলা হবে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৩/০৯/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়