সহিদুল ইসলাম।।
দেশ যখন উন্নয়নে ব্রত ও অর্থনীতি চাকা গতিশীল, প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকারের অন্যতম একটি হচ্ছে শিক্ষা। যুগের পর যুগ সকল ক্ষেত্রেই পরিবর্তন আনা হলেও শিক্ষাব্যবস্থা যেন আগের অবস্থতার চেয়েও আরো ভয়াবহ, গণতান্ত্রিক স্বাধীন দেশে সরকারি ও বেসরকারি নামে দ্বৈতনীতি চলছে যা শিক্ষাব্যবস্থা কে হুমকির দিকে ঠেলে দিচ্ছে অথচ একই বই একই সিলেবাস একই পরীক্ষা পদ্ধতি অর্থাৎ সবই যখন এক তবে দ্বৈতনীতি কেন? সরকারি ও বেসরকারি নামে শিক্ষকদের পরিচয় কেন দুইটি হবে।
তাছাড়া সরকারি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক যেমন আর্থিক স্বচ্ছলতা ভোগ করেন তেমনি শিক্ষার্থীরাও বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা পেয়ে থাকেন অথচ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা অর্থের অভাবে লেখাপড়া বেশিদূর চালিয়ে যেতে পারে না, এমনকি শিক্ষকরাও আর্থিক অস্বচ্ছলতা কারণে মানুষিক যন্ত্রণায় বিপদগ্রস্ত হোন। ২৫% উৎসব বোনাস, ১০০০/- বাড়িভাড়া, ৫০০/- চিকিৎসা ভাতা দিয়ে একজন শিক্ষক কখনোই মানুষিক সুস্থতা থাকতে পারে না, এরপরে আবার অতিরিক্ত ৪% কর্তন ফলে শিক্ষকরা আজ অসহায় মানবতার জীবনযাপন করছেন।
যেখানে সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীগণ উন্নত জীবন যাপন করছেন, কোটি টাকার গাড়ি চড়ে বেড়াচ্ছেন সেখানে শিক্ষকদের মুল বেতনের উপর অতিরিক্ত ৪% কর্তন যেন শিক্ষকদের পরিবারের উপর চরম আঘাত হানা। একজন ৮ম শ্রেনি পাশ সরকারি পিয়ন বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন ২৫,০০০/- টাকার উপরে আর একজন বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাস্টার্স পাশ ধারী শিক্ষকের বেতন ১২,৪০০/- যা শিক্ষাগত যোগ্যতাকে অপমান করা ছাড়া কিছু নয়।যার ফলে কোন মেধাবী শিক্ষার্থী বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করতে অনীহা প্রকাশ করবে।
আমি প্রধানমন্ত্রী কে অনুরোধ করব, আপনি দীর্ঘ সময় ধরে ক্ষমতায় আছেন, সময় এসেছে, প্রতিষ্ঠানের সকল আয় নিয়ে এমপিওভূক্ত সকল প্রতিষ্ঠান এক সাথে জাতীয়করণ ঘোষণা করেন। ৫ লক্ষ শিক্ষক আপনার জন্য সারাজীবন দোয়া করবে, আপনি বঙ্গবন্ধু কন্যা, আপনি ন্যায়পরায়ণ, আপনি মানবতা মা, আপনি ক্ষমতা থাকাকালীন বঙ্গবন্ধু সোনার বাংলায় শিক্ষাক্ষেত্রে দ্বৈতনীতি চলতে পারে না।
শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ হলে সরকারি কোষাগারে অতিরিক্ত টাকা ফান্ড জমা হবে। সরকারকে অতিরিক্ত কোন টাকা দিতে হবে না। দেশে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোটি কোটি টাকা আয় হয় যা কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন খাত দেখিয়ে লুটপাট করে খাচ্ছে। আমরা সাধারণ শিক্ষকরা এর কোন সুবিধা ভোগ করতে পারি না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে সবিনয় নিবেদন করছি শিক্ষাব্যবস্থায় আপনার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
লেখক-
সহকারি শিক্ষক(গনিত)
বুড়িচং হাজী ফজর আলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়,
বুড়িচং, কুমিল্লা।