মাধ্যমিকে ২৩৪ জন শিক্ষকের পদোন্নতি

অনলাইন ডেস্ক।।

সরকারি মাধ্যমিকের ২৩৪ জন শিক্ষককে পদোন্নতি দিচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এর মধ্যে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী প্রধান শিক্ষক থেকেও প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি দেয়া হবে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পদোন্নতিযোগ্য ৪২৩ জন শিক্ষকের তথ্য মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) থেকে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। তবে অনেকের চাকরি জীবনে সমস্যা ও বার্ষিক গোপনীয় অনুবেদনে (এসিআর) সমস্যা থাকায় ডিপিসি সভায় অনেকেই পদোন্নতিযোগ্য হতে পারেননি। সর্বশেষ সভায় ২৩৪ জনের পদোন্নতি দেয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত হয়।

মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, শিক্ষকদের পদোন্নতির ফাইলটি শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির কাছে পাঠানো হয়েছে। তিনি ফাইলে স্বাক্ষর করলেই জিও জারি করা হবে। তবে সম্প্রতি শিক্ষামন্ত্রী দেশের বাইরে থাকায় ফাইলটি এখনো সই করা হয়নি।

জানতে চাইলে এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বিদেশ থেকেও শিক্ষামন্ত্রীর ফাইলে সই করার সুযোগ রয়েছে। কারণ ফাইলটি অনলাইনেই সাবমিট করা হয়েছে। বিদেশে তিনি ব্যস্ত থাকতে পারেন যেকারণে ফাইলটি তার নজরে আসেনি। আজ (মঙ্গলবার) সাইন করলে কালই জিও জারি করা হবে।

সারাদেশে মাধ্যমিক পর্যায়ে সরকারি বিদ্যালয় আছে ৩৫১টি। অধিকাংশ বিদ্যালয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক দিয়েই গোজামিলে চলছে কাজ। সম্প্রতি এই অচলাবস্থা দূর করতেই বিশেষ এ উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর আগে সরকার ফিডারপদ পূর্ণ না হওয়ায় এ পদে পদোন্নতি দেয়া যায়নি।নিয়ম অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক হতে হলে সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে পাঁচ বছর কর্মরত থাকার বিধান ছিল। সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে এমন অভিজ্ঞতা সম্পন্ন না থাকায় পদোন্নতি দেয়াও সম্ভব হচ্ছিলো না। কিন্ত ৫ বছরের চাকরির অভিজ্ঞতার যে নিয়ম ছিলো তা প্রমার্জন করে পদোন্নতি দিতে চলেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা বংলাদেশ জার্নালকে বলেন, দীর্ঘদিন সরকারি মাধ্যমিক চলছিলো ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষকদের উপর ভর করে। এছাড়াও জেলা পর্যায়ে ছিলো না জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা। আশা করা হচ্ছে সামনে নতুন শিক্ষকদের যোগদান ও এই পদোন্নতি সম্পন্ন হলে সরকারি মাধ্যমিকে গতি ফিরবে।

এ দিকে পদোন্নতিযোগ্য হওয়ার পরও অকারণেই অনেকেই পদোন্নতি পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের একজন তেজগাঁও সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক নাহিদ সুলতানা। সর্বশেষ ডিপিসি সভায় তাকে পদোন্নতি দেয়া হয়নি। কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, তার এসিআর খারাপ।

নাহিদ সুলতানা জানান, আমার বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষিকা রেবেকা সুলতানার বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম ও দুর্নীতির তদন্ত করে মাউশি। শিক্ষকদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এ তদন্ত করা হয়। এ তদন্তের সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা না থাকলেও সম্পূর্ণ আক্রোশের বশবর্তী হয়ে প্রধান শিক্ষিকা রেবেকা সুলতানা আমাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে এসিআর খারাপ দেন। বিষয়টি আমি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব, মাউশি মহাপরিচালক ও মাউশি উপ-পরিচালককে সাক্ষাৎ করে জানিয়েছি। এরপরও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।এই সহকারী প্রধান শিক্ষক আক্ষেপ করে বলেন, আমার চাকরি জীবন শেষের দিকে। হয়তো প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি ছাড়াই আমাকে অবসরে যেতে হবে।

জানতে চাইলে মাউশির উপ-পরিচালক আজিজ উদ্দিন  বলেন, কোনো শিক্ষক যদি তার অধিস্থন শিক্ষকের এসিআর খারাপ দেন সেক্ষেত্রে আরেকটি সুযোগ থাকে। সেটি হলো ওই এসিআরে যিনি প্রতিস্বাক্ষর করেছেন। আমার জানা মতে তার তিন বছরের এসিআরে দুজন ডিডির প্রতিস্বাক্ষর রয়েছে।