এমপিওভুক্তির পর হটাৎ আবির্ভাব কোরিয়ান প্রবাসী প্রধান শিক্ষকের!

কুষ্টিয়াঃ এলাকার মানুষ তাকে চেনেন না, জানেনও না। বিদ্যালয়টির অন্যান্য শিক্ষকরাও তাকে কখনোই দেখেননি। তবুও তিনি প্রধান শিক্ষক। ছিলেন তিনি দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী।

এই নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়েছে। কথিত প্রধান শিক্ষক অমল কুমার বিশ্বাসের বিরুদ্ধে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে অভিযোগও দিয়েছেন মুনজিল হোসেন নামে এক ব্যক্তি।

কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের কবরবাড়িয়ার, সড়াবাড়িয়াা ও সাতগাছি তিন গ্রামের কেএসএস নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ঘটনা এটি। এ বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী হয়েও কিভাবে প্রধান শিক্ষক বনে গেছেন এই নিয়ে জেলাজুড়ে সমালোচনা তুঙ্গে।

জানা গেছে, কেএসএস নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় যার নিবন্ধন নং-১১৭৮৬৩। ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত কেএসএস নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি অনিয়ম-দুর্নীতির মধ্যে দিয়ে চলছে।

সম্প্রতি মন্ত্রণালয় কর্তৃক সুপারিশকৃত কেএসএস নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি তিন গ্রামের মানুষের সহযোগিতায় এই প্রতিষ্ঠানটির যাত্রা শুরু হয়।

আর্থিক সংকটের কারণে বিদ্যালয়টির শিক্ষক সংকটসহ নানা টানাপোড়েনের মধ্যে পড়লে এলাকাসীর অনুরোধে ওই গ্রামের সন্তান অবসরপ্রাপ্ত সমাজসেবার উপ-পরিচালক মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম এই প্রতিষ্ঠানটির সভাপতিত্বে ও প্রত্যক্ষভাবে দিশা এনজিও সংস্থার আর্থিক সহযোগিতায় মৌখিকভাবে ওই গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সত্যচরণ বিশ্বাসকে বিদ্যালয়টির পরিচালনার দায়িত্ব দেয় ওই পরিচালনা পরিষদ। প্রধান শিক্ষক সত্যচরণ বিশ্বাস নিজে দায়িত্ব পালন করলেও সুকৌশলে ক্ষমতা বহির্ভূতভাবে তার ভাতিজা দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী অমল কুমার বিশ্বাসকে কাগজে কলমে প্রধান শিক্ষক হিসেবে দেখিয়ে নিজেকে অমল কুমার বিশ্বাস হিসেবে পরিচয় দিতে থাকেন।

প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্ত না হওয়ায় বিষয়টি শিক্ষা অফিস ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমলে নেয়নি। কিন্তু বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি এমপিওভুক্তি ঘোষণার পর থেকে বিষয়টি সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করে বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলামসহ অন্যদের। প্রবাস ফেরত অমল কুমার বিশ্বাসকে কেউ তাকে চেনেন না, তার সম্পর্কে জানেনও না। বিদ্যালয়টির অন্য শিক্ষকরাও তাকে কখনোই দেখেননি।

হঠাৎ করে প্রধান শিক্ষক বনে যাওয়া শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা তাকে মেনে নিতে পারছেন না।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়টির সাবেক প্রধান শিক্ষক সত্যচরণ বিশ্বাসের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি কলটি রিসিভ করেননি।

অভিযুক্ত বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক অমল কুমার বিশ্বাস বলেন, আমি প্রবাসে ছিলাম ঘটনা সত্য। তবে আমিই এই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক হিসেবে ছিলাম। এর বাইরে কিছুই বলতে পারবো না।

এ বিষয়ে মিরপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জয়নাল আবেদীন বলেন, বিষয়টি আমিও শুনেছি। শিক্ষা অধিদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নিবেন এ ব্যাপারে।

মিরপুর উপজেলা নির্বাহী (ভারপ্রাপ্ত) কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশীদ বলেন, খোঁজ খবর নিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৬/০৫/২০২৩  

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তা’য়