মেঝেতে আছাড় দিয়ে ছাত্রের দাঁত ভেঙে ফেললেন শিক্ষক
কুমিল্লাঃ শিক্ষকের মারধরের কারণে গভীর রাতে মাদরাসা থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিল ওমর ফারুক সিয়াম (১০) ও আবদুল্লাহ (১৩)। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে মাদরাসার মুহতামিম স্টিলের স্কেল দিয়ে তাদের পেটাতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি সিয়ামকে মাথার ওপরে তুলে মেঝেতে আছড়ে ফেলেন। এতে সিয়ামের ওপরের মাড়ির তিনটি দাঁত ভেঙে পড়ে যায়।
ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার লালমাই উপজেলার ভুশ্চি বাজারে জামিয়াতুল আশরাফ মাদরাসায়। গত মঙ্গলবার গভীর রাতে এই ঘটনা ঘটলেও বিষয়টি গোপন রাখে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। পরে খবর পেয়ে নির্যাতিত সিয়ামের মা রেখা আক্তার সন্তানকে উদ্ধার করে চিকিৎসা করান এবং থানায় মামলা করেন।
মামলার বিবরণ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উপজেলার চেঙ্গাহাটা গ্রামের মাওলানা হোসাইন বিন কোরবত তিন-চার বছর আগে কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই ভুশ্চি বাজারে ‘জামিয়াতুল আশরাফ মাদরাসা’ ও ‘জামিয়াতুল আশরাফ মহিলা মাদরাসা’ নামে দুটি প্রাইভেট মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেন।
বাইরে চাকচিক্য এবং শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে খরচ বেশি নিলেও মাদরাসায় থাকার পরিবেশ নিম্নমানের। কম বেতনে অনভিজ্ঞ শিক্ষক দিয়ে চলে পাঠদান।
গত মঙ্গলবার মাদরাসার নাজেরা বিভাগের শিক্ষক মারধর করেন শিক্ষার্থীদের। এটা সহ্য করতে না পেরে রাত ২টায় দারোয়ানের পকেট থেকে গেটের চাবি নিয়ে পালিয়ে বাড়িতে রওনা দেয় সিয়াম ও আবদুল্লাহ।
মাদরাসা থেকে একটু সামনে গেলেই ভুশ্চি বাজারের পাহারাদাররা তাদের ধরে এনে মাদরাসায় পৌঁছে দেন। এরপর ক্ষিপ্ত মোহতামিম এই নির্যাতন চালান।
আহত শিক্ষার্থী সিয়ামের মা রেখা আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলেকে পড়াতে দিয়েছি। আছাড় দিতে নয়। থানায় মামলা করেছি, আশা করি পুলিশ ব্যবস্থা নেবে।
অভিযুক্ত মোহতামিম হোসাইন বিন কোরবতের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি রিসিভ করেননি।
লালমাই থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মাহফুজ বলেন, ‘আছড়ে ফেলায় শিশুটির তিনটি দাঁত ভেঙে গেছে। তার মা মাদরাসার মোহতামিমের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৭/০৫/২০২৪