আতঙ্কে মনিরামপুরের জাল সনদধারী শিক্ষকরা!

যশোরঃ জাল সনদে চাকরি নেয়া বেসরকারি শিক্ষকদের মাঝে এবার চাকরি হারানোর আতঙ্ক বিরাজ করছে। মনিরামপুরের একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বছরের পর বছর ধরে অনেকেই জাল সনদে (নিবন্ধন) চাকরি পেয়ে শিক্ষকতা করছেন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা এবং বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ ভুয়া নিবন্ধনধারীদের বিষয়ে অবগত থাকলেও কোনো পদক্ষেপ নেননি।

গত মঙ্গলবার শিক্ষাবার্তা’কে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে ‘চাকরি হারাচ্ছেন জাল সনদধারী ৬৭৮ শিক্ষক’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ হলে টনক নড়ে অনেকের। জাল সনদধারী তালিকায় ৬৭৮ জন শিক্ষকের মধ্যে মনিরামপুরের কাজল কুমার পাল, অর্পণা মণ্ডল এবং ইলিয়াস কাঞ্চনের নাম উঠে আসে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার সুবলকাটি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে জাল সনদে (নিবন্ধন) সহকারী শিক্ষক হিসেবে বহালতবিয়তে চাকরি করছেন তিন শিক্ষক। তারা হলেন- সহকারী শিক্ষক কল্যাণ কুমার রায়, সন্ধ্যা মণ্ডল ও শিমুল রায়। গণিত শিক্ষক কল্যাণ কুমার রায় ২০১০ সালের ১ জুলাইয়ে চাকরিতে যোগদান করেন। ওই বছর ১ নভেম্বর থেকে তিনি সরকারিভাবে বেতনভাতা তুলে আসছেন।

শরিরচর্চা শিক্ষক সন্ধ্যা মণ্ডল ওই বিদ্যালয়ে যোগদান করেন ১ জুলাই ২০১০ তারিখে। ওই বছরের ১ নভেম্বর থেকে সরকারি বেতন ভাতা গ্রহণ করছেন তিনি। ২০১৬ সালের ১৬ এপ্রিল ওই বিদ্যালয়ে কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে চাকরি নেন শিমুল রায়।

জাল সনদে চাকরি নেয়ার অভিযোগ রয়েছে উত্তম কুমার পালিত নামে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধেও। তিনি পাঁচবাড়িয়া-পাঁচকাটিয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত। তার বিষয়ে প্রধান শিক্ষক আশিস কুমার বলেন, জাল সনদ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না। জাল সনদে চাকরি করার অভিযোগ রয়েছে শৈলী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক (হিন্দু ধর্ম) প্রশান্ত কুমার মণ্ডলের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল ইসলাম বলেন, সরকার যখন ধরবে, তখন তিনি বাড়ি যাবেন।

শ্রীপুর আলিম মাদরাসায় নূর-জাহান খাতুন জাল সনদে সহকারী শিক্ষক (গণিত) হিসেবে চাকরি করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। তার ভাই আমিন হোসেনও জাল সনদের মাধ্যমে কাশিপুর আলিম মাদরাসার এবতেদায়ী সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরি করছেন। জাল সনদে মনিরামপুর মহিলা আলিম মাদরাসায় শিক্ষক হিসেবে চাকরি করছেন শরিফা খাতুন।

মাদরাসার অধ্যক্ষ মহাসিন হোসেন বলেন, আমি সম্প্রতি দায়িত্ব নিয়েছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অবৈধ পন্থায় কেউ বেশি দিন টিকে থাকতে পারবে না। এসব বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বিকাশ চন্দ্র সরকার বলেন, অবৈধভাবে নিয়োগপ্রাপ্তরা একদিন অবশ্যই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ধরা পড়লে চাকরি হারাবেন, সরকারের অর্থ ফেরত দেয়া ছাড়াও ফৌজদারি মামলায় জেল-জরিমানা হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৫/০৫/২০২৩ 

দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তা’য়