শ্রীনগরে মাদ্রাসার সুপারের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক, মুন্সিগঞ্জঃ জেলার শ্রীনগরে দয়হাটা গাউসুল আযম জিলানীয়া দাখিল মাদ্রাসার দাখিল পরিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফরম পূরণ ফি বাবদ অতিরিক্ত টাকা নেয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রতিষ্ঠানের সুপারিনটেনডেন্ট মোহাম্মদ সোহরাব হোসেনের বিরুদ্ধে। অকৃতকার্য হওয়া শর্তেও হাজার হাজার টাকা নিয়ে দাখিল পরীক্ষার সুযোগ তৈরি করে দেয়াসহ নিজ অফিস কক্ষে আলাদাভাবে খাস কামরা তৈরির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
কিছুদিন আগে পরীক্ষার ফরম ফিলাপের দাবিকৃত টাকা প্রসঙ্গে এক ছাত্রীর কথোপকথনের একটি অডিও রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়। এতে শোনা যায় সুপারিনটেনডেন্ট সোহরাব হোসেন এক ছাত্রীকে দাখিল পরীক্ষার সুযোগ করে দেয়ার জন্য সাড়ে ৬ হাজার টাকা হাকাচ্ছেন। বলছেন আগে যোগাযোগ রাখলে তো ফেল করতা না। সোহরাব হোসেন নিজের ফোন নম্বর দিয়ে বলছেন কেউ যাতে না জানে ফোন করে আসবা। ছাত্রী বলছেন আপনি আমাকে যা বলবেন আমি কাউকে বলবো না।
স্থানীয়রা জানায়, সোহরাব হোসেন ঠিকমত কর্মস্থলে আসেন না। অতিরিক্ত টাকা পেলেই অকৃতকার্য ছাত্র-ছাত্রীদের পরীক্ষা দেয়া সুযোগ করে দেন। এর মধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার অডিও বার্তা ভাইরাল হলে জনমনে প্রশ্ন উঠে।
এক ছাত্রী জানান, দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে মাদ্রাসা সুপার সোহরাব হোসেন তাকে একা দেখা করতে বলেন।
অপর একটি সূত্র জানায়, সোহরাব হোসেনের বাড়ি বরিশালে। এক স্ত্রীকে নিয়ে শ্রীনগর সদর ইউনিয়নের একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস করেন। কয়েক বছর আগে দুই স্ত্রীর বিরোধের জেরে সোহরাব হোসেন জেল হাজতে যায়। দীর্ঘদিন ধরে এই প্রতিষ্ঠানে সোহরাব হোসেন নানা অনিয়ম করে আসছেন। গোপনে বই বিক্রি করা, অতিরিক্ত ফি বানিজ্য, মাদ্রাসা ফান্ডের টাকা লেনদেনে অস্বচ্ছলতা ইত্যাদি অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট মোহাম্মদ সোহরাব হোসেনের অফিস কক্ষে তালা ঝুলছে। এ সময় সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট মাওলানা মো. নেছারউদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সুপারিনটেনডেন্টের কোন খাস কামরা নেই। আলাদাভাবে একটি খাট পাতা হয়েছে।
খাট রাখার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে হল পরির্দশকগণ এখানে বিশ্রাম নেন। ফরম ফি বাবদ অতিরিক্ত টাকা নেয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ৩ শিক্ষককে নিয়ে মাদ্রাসার দাখিল পরীক্ষার ফরম ফিলাপ কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারাই বলতে পারবেন।
মোট কতজন শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রী আছেন এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এটা আমার জানা নেই। একজন সহকারী সুপারিনটেনডেন্ট হিসেবে আপনার প্রতিষ্ঠানের এসব তথ্য জানা নেই এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোনো সুদত্তোর দিতে পারেননি।
দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণ কমিটির অন্যতম সদস্য সহকারী শিক্ষক কাজী আব্দুর সুকুরের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কিছুই জানি না। এ বিষয়ে জানতে মাদ্রাসার সুপারিনটেনডেন্ট মোহাম্মদ সোহরাব হোসেনের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি মোবাইল ফোন রিসিভ করেনি।
মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও শ্রীনগর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোখলেছুর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কেউ আমার কাছে সুনিদিষ্ট কোন অভিযোগ করেনি। এ বিষয়ে শনিবার বিকালে জরুরী সভা ডাকানো হয়েছে।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৯/০৪/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়