নতুন শিক্ষাক্রম:লিখিত পরীক্ষা দিয়ে মূল্যায়নের সুযোগ নেই
নিজস্ব প্রতিবেদক।।
গত বছর চালু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রমে ‘মূল্যায়ন পদ্ধতি’ এখনও চূড়ান্ত হয়নি। পাবলিক পরীক্ষাসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় মূল্যায়ন পদ্ধতি কেমন হবে– তা নিয়ে গত ৫ মার্চ ১৪ সদস্যের একটি কমিটি গঠন হয়। সেই কমিটির কাজেও গতি নেই। ফলে মূল্যায়ন পদ্ধতি নিয়ে ধোঁয়াশার মধ্যে দিন পার করছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
অভিভাবকরা বলছেন, আগে তিন ঘণ্টার পরীক্ষা হতো। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার অগ্রগতি তারা বুঝতে পারতেন, এখন সেটি পারছেন না। অন্যদিকে শিক্ষা গবেষকরা শ্রেণিভিত্তিক মূল্যায়নের পাশাপাশি সীমিত পরিসরে লিখিত পরীক্ষা রাখা উচিত বলে মনে করছেন।
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন শিক্ষাক্রমে গত বছর যে পদ্ধতিতে মূল্যায়ন হয়েছে, তার পক্ষে-বিপক্ষে কথা থাকলেও পুরোনো পরীক্ষা পদ্ধতিতে যেতে চান না তারা। কারণ নতুন শিক্ষাক্রম যোগ্যতাভিত্তিক শিক্ষার একটি পদ্ধতি। এতে লিখিত পরীক্ষা দিয়ে মূল্যায়নের সুযোগ নেই। তারা বলছেন, এই শিক্ষাক্রমে পাবলিক পরীক্ষা কোন পদ্ধতিতে হবে, তা ঠিক করতে কমিটি হয়েছে। তবে আগের মতো লিখিত পরীক্ষা বিবেচনায় আনা হচ্ছে না।
নতুন শিক্ষাক্রমে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত কোনো পরীক্ষা না রাখা, এসএসসির আগে পাবলিক পরীক্ষা না নেওয়া, নবম-দশম শ্রেণিতে বিভাগভিত্তিক বিভাজন তুলে দেওয়াসহ একগুচ্ছ পরিবর্তন আনা হয়েছে। নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতিতে ছাত্রছাত্রীদের ওপর চাপ কমাতে বছর শেষে সামষ্টিক মূল্যায়নের আগে শিক্ষাবর্ষজুড়ে চলে শিখনকালীন মূল্যায়ন। বেশ কিছু বিষয়ে শিখনকালীন মূল্যায়ন হয় শতভাগ।
অভিভাবকরা বলছেন, নতুন পদ্ধতিতে শিক্ষকরা সঠিক মূল্যায়ন করলেন কিনা, তা বোঝার উপায় নেই। নির্ধারিত পাঠের মূল্যায়ন ক্লাসেই হওয়ায় শিক্ষার্থীরা সেটি পরে আর পড়ার প্রয়োজন মনে করছে না। আবার সামষ্টিক মূল্যায়ন দলীয় হওয়ায় শিক্ষার্থীর ব্যক্তিগত উৎকর্ষ যাচাই হচ্ছে না। সর্বোপরি, শিক্ষার্থীদের লেখার দক্ষতা হারিয়ে যাচ্ছে। অন্তত এ জন্য হলেও লিখিত পরীক্ষা থাকা দরকার।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, ‘অভিভাবকরা যাতে সহজে বুঝতে পারেন, সে জন্য মূল্যায়ন পদ্ধতি সহজ করা হবে। এ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন।’ এনসিটিবির কর্মকর্তারা বলছেন, নতুন শিক্ষাক্রমে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন হবে বছরজুড়ে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিখনকালীন মূল্যায়নের মধ্য দিয়ে। বছর শেষে পরীক্ষার মাধ্যমে হবে সামষ্টিক মূল্যায়ন। নম্বরের পরিবর্তে ‘ত্রিভুজ’, ‘চতুর্ভুজ’, ‘বৃত্তের’ মতো চিহ্ন ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের ফল তুলে ধরা হবে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/জামান/১৮/০৪/২০২৪