জাতীয়করণ না হলে ‘ঘরে ফিরবেন না’ শিক্ষকরা
শিক্ষাবার্তা ডেস্ক, ঢাকাঃ মাধ্যমিক শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে বৃহস্পতিবার দশম দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন শিক্ষকরা।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ডাকে ১১ জুলাই থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করছেন সারা দেশ থেকে আসা শিক্ষকেরা।
আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা বলছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা ঘরে ফিরবেন না। তাদের অভিযোগ, সরকারি স্কুলে তাদের সমকক্ষ শিক্ষকরা একই কাজ করে যে উৎসব ভাতা, বাড়ি ভাড়াসহ আনুষঙ্গিক সুযোগ-সুবিধা পান, তার অর্ধেকও বেসরকারি স্কুলের শিক্ষকদের দেয়া হয় না।
বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির ব্যানারে লাগাতার এ কর্মসূচিতে ঢাকাসহ বিভিন্ন জেলা থেকে আসা বিপুলসংখ্যক শিক্ষক অংশ নেন।
এর আগে বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে আন্দোলনরত শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী। সেখানে তিনি বলেন, জাতীয়করণের বিষয়ে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ নেই, তবে জাতীয়করণের যৌক্তিকতা আছে কি না, সেটিসহ শিক্ষা ও শিক্ষকদের সার্বিক মানোন্নয়নের লক্ষ্যে দুটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। কমিটিগুলো আগস্টের শেষের দিকে গঠন করা হবে। গবেষণাভিত্তিক এ দুই কমিটির প্রতিবেদনের পর এ নিয়ে পরবর্তী সময়ে করণীয় ঠিক করা হবে।
এদিকে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে দেখা যায়, সারা দেশের বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকরা অবস্থান কমর্সূচি পালন করছেন। সকালের দিকে শিক্ষকদের উপস্থিতি কিছুটা কম হলেও দুপুর নাগাদ তাদের উপস্থিতিতে ওই এলাকা জনারণ্যে পরিণত হয়। জাতীয়করণের দাবিতে স্লোগান ও বক্তব্য দিতে থাকেন শিক্ষকরা।
কর্মসূচির কারণে প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কের দক্ষিণ অংশ দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, তবে বিপরীত পাশের যানবাহন চলছিল।
গোপালগঞ্জের রামদিয়া শ্রী কৃষ্ণ শশীকমল বিদ্যাপীঠের সহকারী প্রধান শিক্ষক সজল কান্তি বিশ্বাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা মাত্র ২৫ শতাংশ উৎসব ভাতা, নামমাত্র এক হাজার টাকা বাড়ি ভাড়া ও ৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা পান।’
তিনি বলেন, ‘একই কারিকুলামের অধীন একই সিলেবাস, একই একাডেমিক সময়সূচি, একইভাবে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও উত্তরপত্র মূল্যায়নের কাজে নিয়োজিত থেকেও আর্থিক সুবিধার ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে বৈষম্য রয়েছে। এবার দাবি আদায় না করে আমরা ফিরব না।’
একই স্কুলের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক বিপুল চন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে আমরা এমপিওভুক্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবিতে আন্দোলন করছি। এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ হলে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে গ্রামের প্রান্তিক জনগোষ্ঠী।
‘স্বল্প খরচে সব নাগরিক একই মানের মানসম্মত শিক্ষা পাবে, শিক্ষার্থী ঝরে পড়া হ্রাস পাবে, প্রতিষ্ঠানের ফান্ডে থাকা অর্থের অপচয় রোধ হবে। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না।’
আন্দোলনকারী শিক্ষক সংগঠন বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শেখ কাওছার আহমেদ বলেন, ‘শিক্ষকরা মনে করেন, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠক ফলপ্রসূ হয়নি। তাই আমাদের কর্মসূচি চলছে। আমাদের দাবি না মানা পর্যন্ত কর্মসূচি চলবে।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২০/০৭/২০২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়