দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়
চমেক ছাত্রাবাসে টর্চার সেল
শিক্ষাবার্তা ডেস্কঃ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ চমেকে গত বছরের অক্টোবর মাসে এক শিক্ষার্থীকে লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে মাথার হাড় ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এবার চার শিক্ষার্থীকে টর্চার সেলে নিয়ে পাইপ, স্ট্যাম্প ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে শরীর থেঁতলে দেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে দুজন বর্তমানে চমেক হাসপাতালে আইসিইউতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। বাকি দুজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ না দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত বুধবার রাতে চমেকের প্রধান ছাত্রাবাসের এক কক্ষে এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে।
গত ২০২১ সালের ৩ অক্টোবর মেডিক্যালের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আকিবকে লোহার রড ও ছুরি দিয়ে আঘাত করে মাথার হাড় ভেঙে দেওয়া হয়। পরে তাকে চমেক হাসপাতালে আইসিইউতে রেখে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করা হয়। মেধাবী আকিবের মাথার আঘাত এতই গুরুতর ছিল যে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড দীর্ঘদিন চিকিৎসা প্রদান করে। এই ঘটনার রেশ না কাটতেই গত বুধবার রাতে প্রধান ছাত্রাবাসে পুনরায় চার শিক্ষার্থীকে কক্ষে আটকে রেখে অমানবিক শারীরিক নির্যাতন করে প্রতিপক্ষ গ্রুপের শিক্ষার্থীরা। আহত সবাই এমবিবিএস ৬২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। আহতদের মধ্যে জাহিদ হোসেন ও সাকিব হোসেন হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন আছেন। আহত বাকি এম রায়হান ও মোবাশ্বির হোসেনকে ঘটনার পর নিজ গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ছাত্রাবাসের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রিজোয়ার রায়হান বলেন, আহত চার জনই ছাত্রাবাসের বৈধ ছাত্র। আমরা খবর শোনার পর ছাত্রাবাসে গিয়ে আহত দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেছি। আহত আর কাউকে পায়নি।’
ঘটনার সূত্রপাত বিষয়ে যতটুকু জানা গেছে গত বুধবার রাতে চার ছাত্রকে ছাত্রলীগের একাংশের কয়েক জন ছাত্রাবাসের একটি কক্ষে নিয়ে যায়। পরে তাদের ছাত্রশিবির আখ্যা দিয়ে নির্যাতন করা হয়। পাইপ, স্ট্যাম্প ও লাঠি দিয়ে তাদের পেটানো হয়। পরে তাদের মধ্যে দুজনকে চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। আঘাতে তাদের শরীর থেঁতলে গেছে। ছাত্রাবাসের যে কক্ষে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে সেখানে পাইপ, লোহার রড, লাঠিসহ নির্যাতন কাজে ব্যবহৃত অনেক কিছু রয়েছে। কক্ষটিতে নির্যাতনকারী শিক্ষার্থীরা থাকেন বলে হোস্টেল তত্ত্বাবধায়ক জানিয়েছেন। আইসিইউর চিকিৎসকরা জানান, তাদের সারা শরীরে আঘাত করা হয়েছে। তাদের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল। চিকিৎসা চলছে। কিন্তু এই ঘটনায় এখনো পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।
চমেকে আধিপত্যের নেপথ্যে
গত প্রায় ১০ বছর যাবত চমেকে ছাত্রলীগ ছাড়া অন্য কোনো ছাত্র সংগঠনের প্রকাশ্যে রাজনৈতিক তৎপরতা নেই। তার পরও ছাত্রলীগের বিবাদমান দুই গ্রুপ ক্যাম্পাসে একক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে প্রায় সময় মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। দেশের সব মেডিক্যালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সংগঠন একটি থাকলেও চমেক হাসপাতালে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দুটি সংগঠন রয়েছে। এখানে ছাত্রলীগ, ইন্টার্ন চিকিৎসক, কলেজের শিক্ষক দুই নেতার অনুসারী হিসেবে বিভক্ত। ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারের পেছনে রয়েছে অনেকগুলো স্বার্থ। নির্মাণকাজের টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ, হাসপাতালের কেনাকাটায় টেন্ডার বাগানো, রোগী পরিবহনের বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে চাঁদাবাজি, ওয়ার্ডে রোগীদের ওষুধ কেনার স্লিপ নিয়ন্ত্রণ ও হাসপাতালের আশপাশের বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে চাঁদাবাজি। মেডিক্যালের গুটিকয়েক শিক্ষার্থী এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত। তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ডে মেডিক্যালের সাধারণ শিক্ষার্থী ও রোগীরা উদ্বিগ্ন থাকেন।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১২/০২/২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা, ক্যারিয়ার এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে পেজে লাইক দিয়ে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়।
সর্বশেষ
জনপ্রিয়
এই বিভাগের আরও খবর