রবিবার, ১৯শে মে ২০২৪

শবে বরাত বা মধ্য-শা’বান (আরবি: নিসফে শাবান‎) বা লাইলাতুল বরাত হচ্ছে হিজরী শা’বান মাসের ১৪ ও ১৫ তারিখের মধ্যবর্তী রাত যা মুসলমানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ রাত। হিজরি সালের শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতটিই হচ্ছে মহিমান্বিত এই পবিত্র শবে বরাত। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের কাছে এই রাতটি বিশেষভাবে তাৎপর্যমণ্ডিত।

শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতকে ‘শবে বরাত’ বলা হয়। শবে বরাত কথাটি ফারসি থেকে এসেছে। ‘শব’ মানে রাত, ‘বরাত’ মানে মুক্তি। শবে বরাত অর্থ মুক্তির রাত। শবে বরাতের আরবি হলো ‘লাইলাতুল বারাআত’। হাদিস শরিফে যাকে ‘নিসফ শাবান’ বা ‘শাবান মাসের মধ্য দিবসের রজনী’ বলা হয়েছে। ভারতীয় উপমহাদেশ, পারস্যসহ পৃথিবীর অনেক দেশের ফারসি, উর্দু, বাংলা, হিন্দিসহ নানা ভাষায় যা ‘শবে বরাত’ নামেই অধিক পরিচিত।

কোরআনুল কারিমে এসেছে, ‘হা-মিম! শপথ! উজ্জ্বল কিতাবের, নিশ্চয়ই আমি তা নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে; নিশ্চয়ই আমি ছিলাম সতর্ককারী। যাতে সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নির্ধারিত হয়। এ নির্দেশ আমার তরফ থেকে, নিশ্চয়ই আমিই দূত পাঠিয়ে থাকি।’ (সুরা-৪৪ দুখান, আয়াত: ১-৫)।
মুফাসসিরিনগণ বলেন: এখানে ‘লাইলাতুম মুবারাকা’ বা বরকতময় রজনী বলে শাবান মাসে পূর্ণিমা রাতকেই বোঝানো হয়েছে। (তাফসিরে মাজহারি, রুহুল মাআনি ও রুহুল বায়ান)।
রাসূল (সা.) এর হাদিসে এবং আলেম-ওলামা ও তাফসীরকারকদের বর্ণনায় শবেবরাতের বহু তাৎপর্য এবং এ রাতের মহিমার কথা উল্লেখ করেছেন।
হযরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত. মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, যখন শা’বানের ১৫ তারিখ রাত্রি উপস্থিত হবে তখন তোমরা উক্ত রাতে নামায আদায় করবে এবং দিনে রোযা রাখবে। কেননা নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক উক্ত রাত্রিতে সূর্যাস্তের সময় পৃথিবীর আকাশে আসেন অর্থাৎ রহমতে খাস নাযিল করেন। অতঃপর ঘোষণা করেন, ‘কোনো ক্ষমা প্র্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে ক্ষমা করে দেব। কোনো রিযিক প্রার্থনাকারী আছো কি? আমি তাকে রিযিক দান করব। কোনো মুসিবত গ্রস্ত ব্যক্তি আছো কি? আমি তার মুসিবত দূর করে দেব। এভাবে ফজর পর্যন্ত ঘোষণা করতে থাকেন।’ (ইবনে মাজাহ, মিশকাত)

এ ছাড়া প্রতি মাসের ৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ আইয়ামেবিদের নফল রোজা তো আছেই, যা হজরত আদম (আ.) পালন করেছিলেন এবং আমাদের প্রিয় নবী (সা.)ও পালন করতেন, যা মূলত সুন্নাত। বিখ্যাত মুহাদ্দিস ফকিহ হাফিজ ইবনে রজব (রা.) বলেন, এদিনের রোজা আইয়ামেবিদের রোজার অন্তর্ভুক্ত। (লাতায়িফুল মাআরিফ, পৃষ্ঠা: ১৫১)।
এ ছাড়া মাসের প্রথম তারিখ, মধ্য তারিখ ও শেষ তারিখ নফল রোজা গুরুত্বপূর্ণ। শবে বরাতের রোজা এর আওতায়ও পড়ে। সওমে দাউদি পদ্ধতিতে এক দিন পর এক দিন রোজা পালন করলেও প্রতিটি বিজোড় তারিখ রোজা হয় এবং শবে বরাতের রোজার শামিল হয়ে যায়। সর্বোপরি রাসুল (সা.) রমজান মাসের পর রজব-শাবান মাসে বেশি নফল নামাজ ও নফল রোজা পালন করতেন, শাবান মাসে কখনো ১০টি, কখনো ১৫টি, কখনো ২০টি নফল রোজা, কখনো আরও বেশি রাখতেন। এমনকি উম্মুহাতুল মুমিনিনগণ বর্ণনা করেছেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) শাবান মাসে এভাবে নফল রোজা রাখা শুরু করতেন, মনে হতো, তিনি আর কখনো রোজা ছাড়বেন না। (মুসলিম)।

হাদীসে আরো এসেছে, হযরত আয়েশা (রা.) বলেন- এক রাতে রাসূল (সা.) কে না পেয়ে খুঁজতে বের হলাম। খুঁজতে খুঁজতে জান্নাতুল বাকীতে গিয়ে আমি তাকে দেখতে পেলাম। মহানবী (সা.) বললেন- কি ব্যাপার আয়েশা? তোমার কি মনে হয় আল্লাহ এবং তার রাসূল তোমার উপর কোনো অবিচার করবেন? হযরত আয়েশা (রা.) বললেন- আমার ধারণা হয়েছিল আপনি অন্য কোন বিবির ঘরে গিয়েছেন। রাসূল (সা.) তখন বললেন- যখন শাবান মাসের ১৫তম রাত আসে তখন আল্লাহ পাক এ রাতে প্রথম আসমানে নেমে আসেন। তারপর বনু কালব গোত্রের বকরীর পশমের চেয়ে বেশি সংখ্যক বান্দাদেরকে ক্ষমা করে দেন। (সুনানে তিরমিযী)
মহানবী (সা.) আরো বলেন- রজব আল্লাহর মাস, শাবান আমার মাস, আর রমযান আল্লাহর সকল বান্দাদের মাস। (মা‘সাবাতা বিস সুন্নাহ)
ইসলামে যে পাঁচটি রাতে বিশেষভাবে দোয়া কবুল হওয়ার ওয়াদা করা হয়েছে তার মধ্যে শবে বরাতের রাত একটি। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয়ই পাঁচ রাত্রিতে দোয়া নিশ্চিতভাবে কবুল হয়ে থাকে। (১) রজব মাসের প্রথম রাতে, (২) শবে বরাতের রাতে, (৩) ক্বদরের রাতে, (৪) ঈদুল ফিতরের রাতে, (৫) ঈদুল আযহার রাতে।’ (মা-ছাবাতা বিসসুন্নাহ)

শবে বরাতের এ রাতটিকে পবিত্র রমজানুল মোবারকের মাত্র দুই সপ্তাহ আগে যেন রমজানের অভ্যর্থনার জন্যই রাখা হয়েছে। মাত্র দুই সপ্তাহ পর যে রহমত, মাগফিরাত ও মুক্তির মহান মাস আসন্ন, তাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য এ শবে বরাত। আল্লাহ তায়ালা পবিত্র রমজানের মাধ্যমে তার যে রহমতের দ্বার খুলে দেবেন, তার আগে একটি রাত রেখেছেন।
রাসুলে আকরাম (সা.) এর হাদিস অনুযায়ী, শবেবরাত উপলক্ষে করণীয় দুটি। এক. রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগি করা। যেমন নফল নামাজ, পবিত্র কোরআন তিলাওয়াত, তাসবিহ-তাহলিল, দোয়া-দুরুদ, তওবা-ইস্তেগফার ইত্যাদি। দুই. পরদিন রোজা রাখা। এমনিতে সারা শাবান মাসেই অধিক হারে রোজা রাখা উত্তম। হজরত মুহাম্মদ (সা.) প্রায় সারা শাবান মাসেই রোজা রাখতেন।
শবে বরাতের রজনীর ইবাদতের ফজিলত ও তাৎপর্য বিষয়ে নির্দেশনা-ইঙ্গিত পাওয়া যায় এমন আরেকটি হাদিস হচ্ছে- আলা ইবনুল হারিস (রহ.) থেকে বর্ণিত, হযরত আয়েশা (রা.) বলেন, একবার রাসূলুল্লাহ (সা.) রাতে নামাজে দাঁড়ান এবং এত দীর্ঘ সেজদা করেন যে, আমার ধারণা হল তিনি হয়তো মৃত্যুবরণ করেছেন। আমি তখন উঠে তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলাম। তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নড়ল। যখন তিনি সেজদা থেকে উঠলেন এবং নামাজ শেষ করলেন তখন আমাকে লক্ষ্য করে বললেন, হে আয়েশা! অথবা বলেছেন, ও হুমাইরা, তোমার কি এই আশঙ্কা হয়েছে যে, আল্লাহর রাসূল তোমার হক নষ্ট করবেন? আমি উত্তরে বললাম, না, ইয়া রাসূলুল্লাহ। আপনার দীর্ঘ সেজদা থেকে আমার এই আশঙ্কা হয়েছিল, আপনি মৃত্যুবরণ করেছেন কিনা। নবিজি জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি জান এটা কোন রাত? আমি বললাম, আল্লাহ ও তার রাসূলই ভাল জানেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) তখন ইরশাদ করলেন, ‘এটা হল অর্ধ শাবানের রাত।
আল্লাহতাআলা অর্ধ-শাবানের রাতে তার বান্দার প্রতি মনযোগ দেন এবং ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন এবং অনুগ্রহ প্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন আর বিদ্বেষ পোষণকারীদের ছেড়ে দেন তাদের অবস্থাতেই। (বাইহাকি)

এ রাতে বর্জনীয়:
> মসজিদে জড়ো হয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে দোয়া করা, ভিড় করা, এক কথায় আনুষ্ঠানিক সকল কাজ এ রাতে অবশ্যই বর্জন করা উচিত।
> লাইটিং করা, হালুয়া রুটি খাওয়া, আতশবাজি ফুটানো, বিশেষ রজনী হিসেবে দলে দলে আনন্দের সঙ্গে উদযাপন অবশ্যই বর্জনীয়।
> শবে বরাতকে কবর জিয়ারতের জন্য বিশেষভাবে গ্রহণ করা।
> ইসলাম স্বীকৃত নয়, এমন প্রত্যেকটি কাজ সম্পর্কে সচেতন হওয়া ও তা বর্জন করা।
> শিরক থেকে নিজেকে বাঁচাতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করা। পাশাপাশি হিংসা-বিদ্বেষ থেকে নিজেকে পুরোপুরি মুক্ত রাখা।
> ফজরের জামায়াতের সময় ঘুমানো।
তাছাড়া শবে বরাত পালন বলতে আতশবাজি করা, হালুয়া-রুটির আয়োজন করা, বিশেষ পদ্ধতির নামায পড়াকে জরুরি মনে করা, এ রাতে গোসল করা ফযিলতপূর্ণ মনে করা, এ রাতে মসজিদে গিয়েই ইবাদত করাটা বাধ্যতামূলক মনে করা ইত্যাদি বিদআত। এসব করা জায়েজ নয়। পবিত্র শাবান মাস ও শবেবরাত অধিক ইবাদতের উর্বর মৌসুম। শবেবরাত কোনো আনন্দ-উৎসবের সময় নয়। উৎসব প্রবণতায় শাবান ও শবেবরাতের প্রকৃত আবেদন এবং পবিত্রতা নষ্ট হয়।
১৮ মার্চ শুক্রবার (১৪ শাবান ১৪৪৩, ০৪ চৈত্র ১৪২৮) দিবাগত রাতে পবিত্র শবে বরাত উদ্যাপিত হবে।

মাওলানা মো. নূরুজ্জামান
সিনিয়র শিক্ষক
খায়রুল্লাহ সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়
গফরগাঁও, ময়মনসিংহ।

শিক্ষক নিয়োগে অর্থ লেনদেনের ফোনালাপ ফাঁস হওয়ার ঘটনায় চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) উপাচার্যের সহকারীখালেদ মিসবাহুল মোকর রবীন ও হিসাব নিয়ামক শাখার কর্মচারী আহমদ হোসেনকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। বুধবার (১৬ মার্চ) অভিযুক্ত দুইজন শোকজের জবাব দেওয়ার পর তাদের বহিষ্কার করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক এসএম মনিরুল হাসান বলেন, তাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিলো।তারা শোকজের জবাব দেওয়ার পর তদন্তের স্বার্থে তাদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এছাড়া তদন্ত কমিটিও পুরো বিষয়টি তদন্ত করছে।

উল্লেখ্য, গত ৩ মার্চ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষক নিয়োগে অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত ৫টি ফোনালাপ ফাঁস হয়। এ ঘটনায় ৫ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৩৭তম সিন্ডিকেট সভায় ওই বিভাগের নিয়োগ বোর্ড বাতিল করা হয়।

এছাড়া ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিকে তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হলেও গত ১০ দিনে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে পারেনি সিন্ডিকেট মনোনীত উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন এ তদন্ত কমিটি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেট অর্গানাইজেশনের (জেইউডিও) আয়োজনে 'মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন’ এর সহযোগিতায় তৃতীয় বারের মতো শুরু হয়েছে ৫ দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক বিতর্ক প্রতিযোগিতা।

বুধবার (১৬ মার্চ) বিকাল সাড়ে ৫টায় ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রের কনফারেন্স কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান আয়োজকরা।

এবারের প্রতিযোগিতার প্রতিপাদ্য বিষয় ‘নেতৃত্বে নারী: কোভিড-১৯ বিশ্বে সমান ভবিষ্যৎ অর্জন।’ আজ থেকে শুরু হয়ে প্রতিযোগিতাটি চলবে আগামী ২০ মার্চ পর্যন্ত।

আয়োজন সম্পর্কে জেইউডিও-র সভাপতি ফারহান আনজুম করিম বলেন, 'আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এই বিতর্ক প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নারী-পুরুষের সমতার বিধানে অবদান রাখতে পারবো বলে আমরা বিশ্বাস করি।'

তিনি আরও জানান, এবারের প্রতিযোগিতাটি দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিযোগিতার প্রথম ভাগে অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় বিতর্ক প্রতিযোগিতা। যা অনুষ্ঠিত হবে ১৮ এবং ১৯ মার্চ। এ প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ১৬টি দেশের প্রায় ২০০ জনের বেশি বিতার্কিক এবং বিচারক অংশগ্রহণ করবে। প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় ভাগে অনুষ্ঠিত হবে ‘জাতীয় পাবলিক স্পিকিং প্রতিযোগিতা’। যা অনুষ্ঠিত হবে ১৭ মার্চ।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক জিল্লাল হোসাইন সৌরভ, প্রতিযোগিতার আহ্বায়ক নূর আহম্মদ হোসেন, সহ-আহ্বায়ক তাপসী দে প্রাপ্তি, রাতুল হোসেন এবং প্রেস এন্ড মিডিয়া সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম নাবিল।

ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে(রাবি) বিশ্ব সমাজকর্ম দিবস পালিত হয়েছে। দিবসটি পালনে নানা উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির সমাজকর্ম বিভাগ।

এইবছরে প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে "একটি নতুন ইকো সামাজিক বিশ্ব গড়ে তুলি: কাউকে পিছিয়ে না রেখে''

এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে মঙ্গলবার (১৫ মার্চ) সকাল ১০ টায় দিবসটি উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মমতাজ উদ্দিন আহমেদ একাডেমিক ভবন থেকে সমাজকর্ম বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত একটি র‍্যালি শুরু হয়। র‍্যালিটি ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিভাগের গ্যালারি কক্ষে এসে এক আলোচনা সভায় সমবেত হয়।

সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: জামিরুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিভাগের জেষ্ঠ্য শিক্ষক অধ্যাপক ড. আশরাফুজ্জামান।

এ সময় অধ্যাপক আশরাফুজ্জামান বলেন, সমাজকর্ম হচ্ছে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিনির্ভর একটি সাহায্যকারী ও সক্ষমকারী পেশা , যা সমস্যাগ্রস্ত ব্যক্তি তথা মানুষকে এমনভাবে সাহায্য করে যাতে মানুষ তার বস্তুগত ও অবস্তুগত সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে নিজেই নিজেদের সমস্যা সমাধানে সক্ষম হয়ে উঠে । তিনি আরো বলেন, সমাজকর্ম ব্যক্তি , দল ও সমষ্টির সম্পদ ও অন্তর্নিহিত শক্তিকে জাগ্রত করে এবং সমস্যা সমাধান প্রক্রিয়ায় তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে । এছাড়াও আধুনিক শিল্পসমাজের বহুমুখী ও জটিল সমস্যাধানে সমাজকর্মের গুরুত্ব অপরীসীম। এক কথায়, বিজ্ঞানিরা যন্ত্র আবিস্কার করেন আর সমাজকর্মীরা নির্ধারণ করেন এই যন্ত্রটা কোন স্থানে, কোথায়, কখন, কিভাবে কাজে লাগাতে হয়।

এসময় বর্তমান প্রেক্ষাপটে সমাজকর্মের প্রয়োজনীয়তা ও অদূর ভবিষ্যতে এর সম্ভাবনা নিয়ে অন্যান্যদের মধ্যে আলোকপাত করেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক ডিন ও সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ফখরুল ইসলাম, বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. রবিউল করিম, অধ্যাপক ড. শরিফুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. তানজিমা জোহরা হাবিব, অধ্যাপক ড. আকতার হোসেন মজুমদার প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বিভাগের অন্যান্য শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং চার শতাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, প্রতিবছর মার্চ মাসের তৃতীয় মঙ্গলবার বিশ্বব্যাপী সমাজকর্ম দিবস পালিত হয়ে থাকে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) প্রথমবারের মতো ছেলে ও মেয়েদের ১৭টি হলে একসাথে সম্বলিত হল সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। যা আগে খখনো এক সাথে হয়নি। এর আগে ২০১৫ সালের ২২ নভেম্বরের পর দীর্ঘ ছয় বছরের অপেক্ষা পালা শেষে আবার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শাখা ছাত্রলীগের সমন্বিত হল সম্মেলন শুরু হয়েছে আজ। এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ অপেক্ষার পর নতুন নেতৃত্ব পেতে যাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের আবাসিক হল ইউনিট।

শামসুজ্জোহা হলের সাধারণ সম্পাদক বোরজাহানের সঞ্চালনায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি নাহিয়ান খান জয় বলেন, সম্মেলনের মাধ্যমে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যাবে যারা আগামী বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে দেখ । যারা নিজের পকেটে টাকা না থাকলেও তার শিক্ষার্থী বন্ধুদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করার চেষ্টা করে। যারা তাদের অসহায় বন্ধুর মুমূর্ষু অবস্থায় পাশে থেকে সহযোগিতা করার জন্য সব সময় প্রস্তুত থাকে। আজ তাদের জন্য হল সম্মেলন। এই হল সম্মেলনে সেই নেতৃত্ব উঠে আসবে যেই নেতৃত্ব নিঃস্বার্থভাবে শিক্ষার্থীদের জন্য কাজ করবে। নিজের চিন্তা না করে জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করবে। আমরা সেই নেতৃত্ব প্রত্যাশা করছি।

ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে বলতে চাই বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক সংগ্রাম ইতিহাসে ছাত্রলীগ যেভাবে ওতোপ্রোতভাবে জড়িত রয়েছে। বাংলাদেশের সকল উন্নয়ন কর্মকান্ডে নিজেদের প্রান উৎস্বর্গ করে হলেও নিজেরকে অবদান রাখতে হবে। রাবির ইতিহাস রক্তে রঞ্জিত। এখানে এমন কোন জায়গা নেই যেখানে ওই স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি জামাত-শিবির ছাত্রলীগের ভাইদের রক্তে রঞ্জিত করেনি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মাটি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের রক্তে রঞ্জিত করা মাটি। রাবি সব সময় সকল আন্দোলনে অনুপ্রেরণা যুগিয়ে থাকে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামলীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার পরেও শিবিরেরা ছাত্রলীগের উপর অত্যাচার কোনভাবেই বন্ধ করেনি। একটি সময় পর্যন্ত তারা সংগঠিত হয়ে বিভিন্ন জায়গায় তাদের কূটকৌশল এবং পাকিস্তানি মদদদাতা ও জঙ্গি সংগঠন তাদের কাছ থেকে অস্ত্র নিয়ে অন্য জনের কাছ থেকে ট্রেনিং নিয়ে ছাত্রলীগের উপর তারা আক্রমণ করে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে যেনো জামাত শিবির একবিন্দু দাড়াতে না পারে তার জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগ করে এই মাটি থেকে তাদেরকে বিতাড়িত করবেন। সেজন্য সকল ধরনের সহযোগিতা ছাত্রলীগ থেকে দেয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাস বাংলাদেশ মাঠে শুরু হওয়া ১৭টি হলের সমন্বিত এ সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এ.এইচ.এম খায়রুজ্জামান লিটন। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া এবং প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রুনু।

এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস.এম কামাল হোসেন, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল সরকার ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াদুদ দারা, রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. ডাবলু সরকার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ড. আনিকা ফারিহা জামান অর্ণা।

হল সম্মেলন উপলক্ষে সোমবার বিকাল ৪টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে মঞ্চ মাতাবেন জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ইমরান মাহমুদুল, আঁখি আলমগীর এবং জনপ্রিয় ব্যান্ড ওয়ারফেজ।

মাত্র ৫ মাসে পুরো কুরআন শরীফ হিফজ করার অনন্য গৌরব অর্জন করেছে আল রাহাত নামে এক শিশু।

বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) আনুষ্ঠানিকভাবে ১০ বছর বয়সী এই শিশুর হিফজ সম্পন্ন হয়। সে মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান থানার ঘনশ্যামপুর গ্রামের আযহার মৃধার ছেলে।

আল রাহাত রাজধানীর মিরপুরের উত্তর পীরেরবাগের জামিয়া মোহাম্মাদিয়া নুরুল কুরআন মাদ্রাসার হিফজ বিভাগের ছাত্র।

রাহাতের সমাপনী পড়া শোনেন রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী ইসলামী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া ইসলামিয়া লালমাটিয়ার ইফতা বিভাগের প্রধান মুফতি নুরুল আমিন কাসেমি।

এ সময় জামিয়া মোহাম্মাদিয়া নুরুল কুরআন মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি নুরুজ্জামান কাসেমীসহ অন্য শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

মুফতি নুরুজ্জামান কাসেসি বলেন, আল্লাহর অশেষ মেহেরবানী ও হিফজ বিভাগের শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও রাহাতের আন্তরিক প্রচেষ্টায় খুব কম সময়ে হিফজ সমাপ্ত করতে পেরেছে সে।

আল রাহাতের বাবা-মা ও চাচা হাফেজ কারী ইমরান হুসাইনসহ অন্য স্বজনেরা আশা করেন, তাদের ছোট্ট রাহাত একসময় বড় আলেম হবে এবং বিশ্বব্যাপী ইসলামের খেদমত করবে।

লাগলো হাওয়া এই মনে,যাই বসন্ত পার্বণে" এই প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে(চবি) শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে বসন্ত বরণ উৎসব উদযাপিত হয়েছে।

রোববার ( ১৩ মার্চ)বেলা ১১ টায় ইন্সটিটিউট প্রাঙ্গণে এই উৎসবের আয়োজন করা হয়। উদ্ভোধন করেন ইন্সটিটিউটের পরিচালক ড. গোলাম মহিউদ্দিন এসময় উপস্থিত ছিলেন ইন্সটিটিউটের অন্যান্য শিক্ষকরাও।

শুরুতেই ইন্সটিটিউটের শিক্ষকদের রিক্সায় করে করতালির মাধ্যমে উৎসবে প্রবেশ চিরায়ত বাঙালিয়ানা আমেজ তৈরি করে। এরপর পরিবেশিত হয় মনোঙ্গ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। ফাল্গুনী গান,ক্লাসিকাল ও উপজাতিয় নাচের তালে মঞ্চ মাতান ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা।এছাড়াও ছিলো কবিতা আবৃত্তি, নজরুলগীতি,রবিন্দ্র সংগীত,মূকাভিনয়।

উৎসবের অন্যতম আকর্ষণ ছিলো বিভিন্ন পিঠার স্টল। "আলপলনি","উৎসবের রঙ্গে,পিঠার সঙ্গে"," তৃনিশ" "পিঠার খোঁজে নবোত্তমে" ইত্যাদি বাহারি নাম ছিলো স্টলের। স্টলে ছিলো হরেক রকমের শতাধিক পিঠা। পিঠার মধ্যে ডিমসুন্দরী,চিকেন পুরি, পোয়া, সুজি রসবড়া, ব্যাঙপিঠা, পাটিসাপটা, পোয়া, মুগপাকন, খেজুরের পিঠা, কাবাব, নারিকেলেরনাড়ু, মাংশপুলি, কাঁঠালখিলিপিঠা, শাহীমালাই, ফুলঝুরি, ডালপাকন, পাকুড়া, চকোলেট পুডিং ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।

পিঠা স্টলের বিক্রেতা শিক্ষার্থী সাদিয়া মুবাশশিরা জানান,"আমরা ২৫ আইটেমের পিঠার আয়োজন করি। উৎসব শুরু হতেই অর্ধেক পিঠার বিক্রি শেষ। বিক্রিও করছি,উদযাপনও করছি"।

উৎসবের অন্যতম প্রধান আকর্ষণ ছিলো শিক্ষকদের বালিশ খেলা। ইন্সটিটিউটের পরিচালকসহ সকল শিক্ষক এই খেলায় অংশগ্রহণ করে। তাছাড়া উৎসবে ছিলো চিত্র প্রদর্শনী। ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীদের হাতে তোলা অসংখ্য জীবন্ত চিত্র এখানে প্রদর্শিত হয়। উৎসবে আগত দর্শকদের জন্য ছিলো মার্বেল খেলা।

উৎসবে আগত দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী জাফর আহসান জানান," খুব বেশি উপভোগ করছি। আইইয়ার উৎসব আয়োজনের দিক থেকে সবসময়ই ব্যাতিক্রম। চিরায়ত বসন্ত উৎসবের বাইরে তাদের আয়োজন দর্শকদের আকৃষ্ট করছে। অনেকগুলো পিঠা খেয়েছি। পাশাপাশি ফটো গ্যালারিতে ছবি তুলে আনন্দ ভাগ করে নিচ্ছি।"

জীববিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষার্থী রাইমা তাবাসসুম জানান,"সাংস্কৃতিক আয়োজনগুলো খুবই চমৎকার লেগেছে। বিশেষ করে উপজাতিয় নাচগুলো উপভোগ করেছি। আর আইইয়ারের শিক্ষার্থীদের আতিথিয়েতাও চমৎকার। আমার মনে হচ্ছে নিজের অনুষদেই অনুষ্ঠান উপভোগ করছি"

ইন্সটিটিউটের পরিচালক ড. গোলাম মহিউদ্দিন বলেন,"শিক্ষার্থীদের এমন আয়োজন আমাদের আনন্দিত করে। বাঙ্গালী সাংস্কৃতিক জাতি। আর সংস্কৃতি আমাদের প্রাণ। এখানে এসে আমি আমার ছেলেবেলায় হারিয়ে যাচ্ছি। তোমাদের প্রাণবন্ত আয়োজন সাফল্যমণ্ডিত হোক। এমন সৃজনশীল কাজের সাথে আমরা সবসময়ই আছি"।

গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোরাদ হোসেনের বিরুদ্ধে ভুয়া শিক্ষা ও অভিজ্ঞতার সনদে দীর্ঘদিন চাকরি করার অভিযোগ উঠেছে।

সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হওয়ায় পর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও ক্যাম্পাসের বাইরে এ নিয়ে আলোচনা চলছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অফিসসূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালের ২ এপ্রিল সহকারী রেজিস্ট্রার হিসেবে অস্থায়ী ভিত্তিতে মো. মোরাদ হোসেন বশেমুরবিপ্রবিতে যোগ দেন।

পরে ২০১১ সালের ৪ মে বশেমুরবিপ্রবি/নিয়োগ/২৭/৮৫(৫) স্মারকে একটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়। ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে একই বছরের ১ আগস্ট তিনি সহকারী রেজিস্ট্রারের স্থায়ী পদে যোগদান করেন।

ওই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ৪নং শর্তে উল্লিখিত অভিজ্ঞতার সনদের পরিবর্তে এ সময় তিনি দারুল এহসান বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরির নিয়োগের অফিস আদেশের ফটোকপি আবেদনের সঙ্গে দাখিল করেন।

এ ছাড়া শিক্ষা সনদ হিসেবে তিনি দারুল এহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২০০৮ সালে এমবিএ পাশ করার সনদ দাখিল করেন।

বশেমুরবিপ্রবিতে তার দাখিল করা অফিস আদেশে দেখা যায়, তিনি দারুল এহসান বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০০২ সালের ১৯ মে অ্যাডহক ভিত্তিতে সেকশন অফিসার পদে যোগ দেন।

এর পর ২০০৬ সালের ১৯ জুন সিনিয়র অফিসার এবং ২০০৯ সালের ৮ এপ্রিল একই বিশ্ববিদ্যালয়ে সহকারী রেজিস্ট্রার পদে চাকরি করেন।

অন্যদিকে রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোরাদ হোসেনের দাখিল করা এমবিএ পাশের সনদটিও জাল। কারণ ওই সনদে রোল, রেজিস্ট্রেশন, ক্রমিক নম্বর ও শিক্ষাবর্ষের কোনো উল্লেখ নেই।

এ ছাড়া ২০০৬ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় দারুল এহসান বিশ্ববিদ্যালয়কে অবৈধ ঘোষণা করে। ওই সময়ে অর্থাৎ ২০০৬ সালের ১ জুন তিনি সিনিয়র অফিসার হিসেবে ও তার পূর্বে ২০০২ সালের ২৯ মে তিনি অ্যাডহক ভিত্তিতে সেকশন অফিসার হিসেবে দারুল এহসান বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত ছিলেন।

পরবর্তী সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের চার মালিক হাইকোর্টে রিট করে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ২৫ জুলাই হাইকোর্ট তাদের চূড়ান্ত রায়ে জানান, ‘২০০৬ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক বিশ্ববিদ্যালয়টিকে অবৈধ ঘোষণা করাকে সঠিক সিদ্ধান্ত হিসেবে গুরুত্বারোপ করে ২০০৬ সালের পরে চালিয়ে যাওয়া সব কার্যক্রমকে অবৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

ফলে হাইকোর্টের চূড়ান্ত রায় অনুযায়ী মো. মুরাদ হোসেনের এবিএ সনদ ও অভিজ্ঞার সনদ বাতিল ও অবৈধ বলে গণ্য হওয়ার কথা।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) একটি সূত্র নাম না প্রকাশের শর্তে জানায়, তৎকালীন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম খায়রুল আলম তার ছোট বোনের স্বামী মো. মোরাদ হোসেনকে ভুয়া ও বাতিল শিক্ষা এবং অভিজ্ঞতার সনদে সহকারী রেজিস্ট্রার পদে চাকরি দেন, যা অবৈধ ও ফৌজদারি অপরাধের শামিল।

অন্যদিকে বশেমুরবিপ্রবির ওই সময়ের নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির ৬নং শর্তে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয় সহকারী রেজিস্ট্রার পদে প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা কোনো অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয়/ইনস্টিটিউট হতে মাস্টার্স/চার বছর মেয়াদি স্নাতক সম্মান/বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রি থাকতে হবে।

একই সঙ্গে প্রশাসনিক কাজে বিশ্ববিদ্যালয়, ডিগ্রি প্রদানকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, সরকারি, বেসরকারি, আধাসরকারি ও স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা হিসেবে কমপক্ষে ৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। যার মধ্যে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে অন্তত দুই বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

এ ক্ষেত্রে একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করার অভিজ্ঞতা কীভাবে প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা পদমর্যদা হিসেবে বিবেচিত হবে— এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোরাদ হোসেন বলেন, আমি ২০০৮ সালে দারুল এহসান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পরীক্ষা দিয়ে সনদ নিয়েছি।
উচ্চ আদালত ২০০৬ সাল থেকে দারুল এহসান বিশ্ববিদ্যালয়ের সব ধরনের কার্যক্রম ও সনদ অবৈধ ঘোষণা করেছে তা হলে আপনি ২০০৮ সালে ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ শেষ করেছেন এবং ওই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত আপনার সনদ কেন অবৈধ হবে না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আদালত কী রায় ঘোষণা করেছে তা আমি জানি না। আমি পরিপূর্ণ কাগজ দিয়েই চাকরি নিয়েছি।

বশেমুরবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. একিউএম মাহবুব বলেন, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. মোরাদ হোসেন একজন যোগ্য কর্মকর্তা হওয়ায় তাকে এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তার এমবিএ পাশের সনদ বাদে অন্যান্য সব সনদ ঠিক আছে। আর যখন তিনি এমবিএ করেছেন তখন ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের বৈধতা ছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের কিছু মানুষ বিষয়টি নিয়ে পানি ঘোলা করছেন।সূত্র:যুগান্তর

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নবীন শিক্ষার্থীকে র‌্যাগিংয়ের ঘটনা ঘটেছে। শনিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অগ্নিবীণা হলের একটি কক্ষে ঘটে এ ঘটনা।

জানা যায়, ঐ হলের ২০৪ নম্বর কক্ষে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের নবীন এক শিক্ষার্থীকে র‌্যাগিং করেছে এক ব্যাচ সিনিয়র তিন শিক্ষার্থী। র‌্যাগিংয়ের শিকার শিক্ষার্থী সাগর চন্দ্র দে নতুন শিক্ষাবর্ষে সঙ্গীত বিভাগে ভর্তি হয়েছেন।

পরিচয় পর্বের নামে ডেকে তাকে অমানবিক নির্যাতন করা হয় বলে জানায় সাগরের সহপাঠীরা। এতে তাকে মাথা, গলাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুরুতর আঘাত করে রক্তাক্ত করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক তপন কুমার সরকার জানান, ‘আহত শিক্ষার্থী সাগর বর্তমানে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। যেহেতু সে আহত অবস্থায় আছে তাই বর্তমানে আমরা তার সুস্থতার দিকটি চিন্তা করছি। পরবর্তীতে হল প্রশাসন ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অবশ্যই তাদের মত করে সিদ্ধান্ত নিবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান জানান, ‘নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর বন্ধু আমাদের বিষয়টি জানিয়েছে। সে যেহেতু মেডিকেলে আছে, আমাদের প্রক্টরিয়াল বডি তার খোঁজ নিচ্ছে এবং সেখানে যাচ্ছে। ওই শিক্ষার্থীর পক্ষ থেকে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে আমরা সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেব।

ক্রিকেটকে বলা হয় অনিশ্চয়তার খেলা। কখন কি হয় বলা যায় না। মূহুর্তে মূহুর্তে ঘটতে পারে নতুন নতুন ঘটনা। যে কোনো সময় ঘটত পারে অঘটন।

তবে অঘটনের তো একটা সীমা আছে! সেই সীমা যেন এবার পার করে ফেললেন ভারতের কলকাতার বোলার অরিত্র চট্টোপাধ্যায়।

ভারতের দিল্লিতে চলমান সর্বভারতীয় সিভিল সার্ভিস ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় আরএসবি কলকাতার অরিত্র চট্টোপাধ্যায় এমন কীর্তি গড়েছেন যা ক্রিকেটের ইতিহাসে কখনো ঘটেনি।

আর সেটি হলো কোনো রান না দিয়ে, শূণ্য রানে ৭টি উইকেট নেওয়া। এই ৭ উইকেটের মধ্যে আবার একটি হ্যাটট্রিকও করেন অরিত্র। মাত্র ২.৪ ওভার করেই এমন কীর্তি গড়ে ফেলেন তিনি।

তার বোলিং দাপটে মাত্র ১৯ রানে গুটিয়ে যায় তার প্রতিপক্ষ দল। যে রান খুব সহজেই টপকে যায় অরিত্রের দল আরএসবি কলকাতা।

ঘরোয়া ক্রিকেট বা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, কোথাও এমন নজির গড়তে পারেননি কেউ।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দক্ষিণ আফ্রিকার নারী দলের ক্রিকেটার ডেন ভ্যান নিয়েকার্ক পাঁচ বছর আগে শূণ্য রানে ৪টি উইকেট নেন। যা সবচেয়ে সেরা বোলিং ফিগার।

সূত্র: আনন্দবাজার

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৬ শিক্ষার্থী ‘পিটার হোর অ্যান্ড মোস্তাক রহমান স্কলারশিপ অ্যাওয়ার্ড-২০২১’ পেয়েছেন।

বুধবার দুপুরে নৃবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আ ফ ম জাকারিয়া কক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তাদের হাতে এ অ্যাওয়ার্ড তুলে দেওয়া হয়।

অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্তদের মধ্যে রয়েছেন, স্নাতক শেষ বর্ষ থেকে ফিমেল ক্যাটাগরিতে তাসপিয়া মোহান্মদ মেরিনা, মেল ক্যাটাগরিতে যৌথভাবে তাওফিকুর রহমান নিহাল ও মাসুম বিল্লাহ। স্নাতক প্রথম বর্ষ থেকে ফিমেল ক্যাটাগরিতে চৌধুরী আনিকা ফারাহ, মেল ক্যাটাগরিতে যৌথভাবে সাদিকুর রাহমান ও সম্রাজ পল।

অ্যাওয়ার্ড প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন, নৃবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক এ কে এম মাজহারুল ইসলাম, বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আ ফ ম জাকারিয়া, সহযোগী অধ্যাপক ড. চৌধুরী ফারহানা ঝুমা, সহকারী অধ্যাপক মনযুর-উল হায়দার, প্রভাষক নাবিলা কাউসার প্রমুখ।

এ বিষয়ে বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক আ ফ ম জাকারিয়া বলেন, এবারের অ্যাওয়ার্ড অনুষ্ঠানে পিটার ও মোস্তাক এর উপস্থিত থাকার কথা ছিল কিন্তু পিটার এর অকাল মৃত্যু ও করোনা পরিস্থিতির কারণে ট্রাস্টিদের কেউ আসতে পারেনি। নৃবিজ্ঞান বিভাগ এজন্যে কৃতজ্ঞ। আমাদের কিছু প্রচেষ্টা আছে যাতে শিক্ষার্থীদের উৎসাহ বৃদ্দির জন্যে আরো কয়েকটি স্কলারশিপ এর ব্যবস্থা করা যায়। এ ব্যাপারে আমাদের এল্যুম্নিরা এগিয়ে আসবেন বলে প্রত্যাশা করছি।

পেশাদার কূটনীতিক মেহ্দী হাসানকে সুইডেনে বাংলাদেশের পরবর্তী রাষ্ট্রদূত নিযুক্ত করেছে সরকার। মেহ্দী বর্তমানে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে মহাপরিচালক (প্রশাসন) পদে কর্মরত আছেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা দিয়েছে।

মেহ্দী হাসান বিসিএস (পররাষ্ট্র বিষয়ক) ক্যাডারের ১৭তম ব্যাচের কর্মকর্তা। কূটনীতিক হিসেবে বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারে তিনি হংকংয়ে কনসাল জেনারেল এবং মানামায় কাউন্সিলর হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি মস্কো ও নয়াদিল্লি­তে বাংলাদেশ দূতাবাসে বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেছেন।

মেহ্দী বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে পুরকৌশল বিভাগে স্নাতক এবং পানি সম্পদ প্রকৌশল বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি প্যারিসে ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি বাংলা ভাষা ছাড়াও ফরাসি ভাষা ও ইংরেজিতে পারদর্শী।

ব্যক্তিগত জীবনে বিবাহিত এবং দুই সন্তানের জনক এই কূটনীতিক।

magnifiermenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram