যশোরের শার্শা উপজেলার অগ্রভুলোট সীমান্ত থেকে ৫ কেজি ওজনের ৪৩টি স্বর্ণের বার জব্দ করেছে বিজিবি সদস্যরা। এসব স্বর্ণের মূল্য প্রায় সাড়ে ৩ কোটি টাকা। ভারতে পাচারের সময় শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে অভিযান চালিয়ে এসব স্বর্ণের বার জব্দ করা হয়।
বিজিবি জানায়, গোপন সূত্রে খবর আসে অগ্রভুলোট সীমান্ত দিয়ে ৩ পাচারকারী বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ ভারতে পাচার করছে। এমন ধরনের গোপন খবর পেয়ে বিজিবির একটি টহলদল সেখানে অবস্থান নেয়। বিজিবি তাদের ধাওয়া করলে একটি কালো রং এর ব্যাগ ফেলে পালিয়ে যায় তারা। পরে ব্যাগ তল্লাশি করে ৫ কেজি ওজনের ৪৩টি স্বর্ণের বার জব্দ করা হয়।
২১ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল তানভীর আহমেদ জানান, ভারতে পাচারের সময় অগ্রভুলোট সীমান্ত থেকে বিজিবির সদস্যরা ৫ কেজি ওজনের ৪৩টি স্বর্ণের বার জব্দ করেছে। এসব স্বর্ণের মূল্য সাড়ে ৩ কোটি টাকা। তবে পাচারকারীরা ভারতে পালিয়ে যাওয়ায় কাউকে আটক করা যায়নি।
'সবার জন্য মানসিক স্বাস্থ্য ও ভালো থাকাটাই হোক বৈশ্বিক অঙ্গীকার’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) দিনব্যাপী বিনামূল্যে মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও কাউন্সেলিং কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের টুকিটাকিতে চত্তরে ‘মনের বন্ধু’ বিশ্ব মানসিক স্বাস্থ্য দিবস উপলক্ষে এই কার্যক্রম পরিচালনা করেন। এসময় তারা বিভিন্ন লেখা প্রদর্শনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কে মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন করতে থাকেন।
মানসিক স্বাস্থ্য কাউন্সিলর মো: আবদুল লতিফ সম্রাট বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে আমরা বিভিন্ন ধরনের কাজ করে থাকি। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনামূল্যে মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও কাউন্সেলিং এর আয়োজন করেছি। আমরা অফলাইন এবং অনলাই দুই মাধ্যমেই সেবা প্রদান করে থাকি। শুরু থেকেই আমরা শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থের বিষয়ে বেশ সচেতন তাই আমাদের পেইড সার্ভিসে বিশেষ ছাড়ের ব্যবস্থা আছে। আপনাদের মনের যত্নে মনের বন্ধু সবসময় আপনাদের পাশে আছে।
প্রোগ্রাম সহকারী আশফিয়া বলেন, সকাল থেকে আমারা যথেষ্ট পরিমান সাড়া পাচ্ছি। এখন পর্যন্ত প্রায় শতাধিক শিক্ষাথী তাদের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছে। আমরা জানতে পেরেছি যারা এই সেবাটা নিচ্ছে তাদেরও ভালো লাগছে। এখানে রেজিস্টেশন করে টেস্ট করার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং যদি তাদের টেস্ট দেখে মনে হয় তাদের কাউন্সেলিং দরকার তাদেরকে আমারা তিনটার পর থেকে কাউন্সেলিং কার্যক্রম পরিচালনা করাবো। সবাই তাদের মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে সন্তুষ্ট বলেও জানান তিনি।
মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করতে আসা শিক্ষার্থী আবু সাঈদ বলেন, আমি বেশ কিছু দিন ধরে হতাশায় আছি তাই ভাবলাম আমার মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা দরকার । তবে পরীক্ষা করে বুঝতে পারলাম আমার তেমন কোনো সমস্যা নেই। তাদের এই কার্যক্রম অনেক ভালো লাছে। এমন উদ্যোগ সত্যি প্রসংশনীয়।
প্রসঙ্গত, "মনের বন্ধু, মানসিক স্বাস্থ্য সেবাকেন্দ্র। সব ধরনের মানসিক-সামাজিক-পারিবারিক সমস্যা-সংকোচ-দ্বিধায় মানসিক সেবা দিয়ে থাকে 'মনের বন্ধু'। ২০১৬ সাল থেকে প্রশিক্ষিত অভিজ্ঞ মনোবিদেরা সব ধরনের গোপনীয়তা বজায় রেখে সেবা দিয়ে আসছে এই প্রতিষ্ঠানটি। মনের বন্ধু যা করে: ওয়ান টু ওয়ান কাউন্সিলিং, মোবাইল ও ভিডিও কাউন্সিলিং, কর্মশালা, ফেসবুক পাতার মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে থাকে।"
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বর্তমানে সভাপতির দায়িত্বে থাকা সাবেরা সুলতানার দুইটি গবেষণা প্রবন্ধে জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে একটি গবেষণা প্রবন্ধ ব্যবহার করে ২০১৭ সালে তিনি সহকারী অধ্যাপক থেকে সহযোগী অধ্যাপকে পদোন্নতি পেয়েছেন।
ভারতের একটি আন্তর্জাতিক জার্নালে (IOHR-JHSS) ২০১৬ সালে প্রকাশিত ‘Investigating American Romanticism: A Comparative Study’ (Volume 21, Issue 4, Ver.4 Apr.2016, PP 58-65) শিরোনামে ঐ প্রবন্ধটির সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব টেম্পা’র অধ্যাপক ক্যাথরিন ভ্যান স্প্যাংকেরেনের লেখা “Outline of American Literature” বইয়ের বেশ কিছু অংশের মিল থাকার প্রমাণ আমার বার্তার অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। এই গবেষণা প্রবন্ধটি সাবেরা সুলতানা এবং বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজির ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক মো. মহিউল ইসলামের যৌথ গবেষণা। মহিউল ইসলাম জাবির ৩৬তম ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র ছিলেন।
প্রবন্ধটি বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, তাদের প্রবন্ধের শুরুর একটি বড় অংশের সাথে ক্যাথরিন ভ্যান স্প্যাংকেরেনের বইয়ের তৃতীয় পরিচ্ছেদ ‘The Romantic Period, 1820-1860: Essayists and Poets’ শিরোনামে আমেরিকান সাহিত্যের রোমান্টিক পিরিয়ডের প্রাবন্ধিক ও কবিদের নিয়ে লিখা অংশের হুবহু মিল রয়েছে। এই পরিচ্ছেদের পরিচিতি অংশ থেকে সাবেরা সুলতানা সেগুলো নিয়েছেন কিন্তু এজন্য তিনি কোনও রেফারেন্স বা উদ্ধৃতি চিহ্ন ব্যবহার করেননি।
এ ব্যাপারে মহিউল ইসলাম এর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায় নি।
এছাড়া, ২০১২ সালের জুন মাসে দর্শন বিভাগের কপুলা জার্নালের ৪৭-৫৪ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত সাবেরা সুলতানার ‘BIM, The Protagonist, in Anita Desai’s Clear Light of Day: An Embodiment of Emancipation’ নামে আরেকটি গবেষণা প্রবন্ধের বিভিন্ন অংশে চারজন ভারতীয় লেখকের বই থেকে লেখা চুরির প্রমাণও আমার বার্তার হাতে এসেছে।
প্রবন্ধটির ৪৮, ৫৪ এবং ৫৬ পৃষ্ঠার কয়েকটি লাইন ভারতের নিরু টেন্ডনের ‘Anita Desai and Her Fictional World’ নামক গ্রন্থ থেকে নেয়া হয়েছে। এছাড়াও ৪৮, ৫১ ও ৫২তম পৃষ্ঠার কয়েকটি লাইন ভারতের মহিত কে রায়ের ‘Indian Writing in English’ গ্রন্থ থেকে কপি করা হয়েছে।
এরপরে প্রবন্ধের ৫০ ও ৫৩ পৃষ্ঠার বেশ কিছু অংশ নেওয়া হয়েছে মনমোহন কে ভত্মাগর ও মিত্তপল্লী রাজেশ্বরের ‘The Novels of Anita Desai: A Critical Study’ থেকে। মনমোহন কে ভত্মাগরের ‘Feminist English Literature’ গ্রন্থের সঙ্গে সাবেরা সুলতানার প্রবন্ধের ৪৯ ও ৫২তম পৃষ্ঠার কিছু অংশের হুবহু মিল পাওয়া গেছে। এই সবগুলি বই ২০০০ থেকে ২০০৮ সালের বিভিন্ন সময়ে ভারতের আটলান্টিক পাবলিশার্স অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউটর থেকে প্রকাশিত হয় যেগুলি থেকে অনেক বাক্য/পরিচ্ছেদ গ্রহণ করা হয় যার উল্লেখ সাবেরা সুলতানার প্রবন্ধের তথ্যপুঞ্জি বা পাদটীকায় করা হয় নি। উদ্ধৃতি বা উল্লেখ ছাড়া নিজের জবানিতে অন্যের ভাষার সরাসরি ব্যবহার চৌর্যবৃত্তি হিসেবেই চিহ্নিত এবং এর মাধ্যমে গবেষকের নৈতিক অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন উঠে।
এ প্রসঙ্গে সাবেরা সুলতানাকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘এটা তো আমি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে ক্ল্যারিফাই করেছিলাম যখন অভিযোগ উঠেছিল। এখন যে অভিযোগ আসছে সেটা মিথ্যা।’
২০১৫-২১০৮ পর্যন্ত দর্শন বিভাগের দায়িত্ব পালন করা সভাপতি অধ্যাপক তারেক চৌধুরী জানান, ‘আমি সে সময় কমিটি করে দিয়েছলাম। এরপরে কমিটি যদি রিপোর্ট জমা দিয়ে থাকে তাহলে তা অবশ্যই বিভাগের রেজিস্ট্রারে সংরক্ষণ করার কথা। তবে এই প্লেজিয়ারিজম খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। এই ব্যাপারে অভিযোগ প্রমাণিত হলে অবশ্যই শাস্তি হওয়া দরকার সে যেই হোক না কেন।’
এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক কামরুল আহসানের সাথে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করে হলেও তাকে পাওয়া যায় নি।
দর্শন বিভাগের বর্তমান সভাপতি অধ্যাপক এ এস এম আনোয়ারুল্লাহ ভূঁইয়া বলেন, ‘তদন্ত কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে রিপোর্ট জমা দিয়েছিল শুনেছি। কিন্তু প্লেজিয়ারিজম হয়ে থাকলে তার দায় গবেষকের। অবশ্য সম্পাদককেও সচেতন হওয়া দরকার।’
রেজিস্ট্রার অফিসের তথ্যমতে, ২০১৭ সালের ২০ জুলাই পদোন্নতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সংশ্লিষ্ট শাখায় আবেদন করেন সাবেরা সুলতানা। নিয়ম অনুযায়ী, এজন্য তিনি তিনটি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। সে বছরের ২রা অক্টোবর সিলেকশন বোর্ড প্রবন্ধগুলো মূল্যায়ন ও সাক্ষাৎকার নিয়ে তার পদোন্নতির জন্য সুপারিশ করে।
বিশ্বস্তসূত্রে জানা যায়, এর মধ্যেই গবেষণা প্রবন্ধে জালিয়াতির একটি অভিযোগ পান উপাচার্য। পরে ২০১৭ সালের ৫ই অক্টোবর অনুষ্ঠিত বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় জালিয়াতির বিষয়টি উঠলে সেদিনের মতো তাকে পদোন্নতি দেওয়া থেকে বিরত থাকে সিন্ডিকেট। কিন্তু ২৯ নভেম্বর আরেকটি বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় তাকে পদোন্নতি দেওয়া হয়। আর এই সিদ্ধান্ত আগের সিন্ডিকেটের তারিখ থেকে কার্যকর হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘দক্ষতা ও শৃঙ্খলা অধ্যাদেশ এর ৩ নং ধারায় বলা আছে, “কোনও শিক্ষক শিক্ষকতা-গবেষণাকর্মে উদাসীন কিংবা অবহেলাকারী হিসেবে গণ্য হলে তাকে লঘু শাস্তি হিসেবে সতর্কীকরণ/তিরস্কার এবং গুরু শাস্তি হিসেবে পদাবনতি/বরখাস্ত করা হতে পারে। পাশাপাশি এক বা একাধিক শাস্তিও আরোপ করা যেতে পারে।”
এর আগে ২০১৮ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারিতে বাংলা ট্রিবিউন অনলাইনে একটি রিপোর্ট প্রকাশিত হলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো তদন্ত বা ব্যবস্থা গ্রহণ করে নি।
এ বিষয়ে তৎকালীন উপ-উপাচার্য(শিক্ষা) এবং বর্তমান মাননীয় উপাচার্য অধ্যাপক মোঃ নূরুল আলম বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে অবগত ছিলাম না। আনুষ্ঠানিক কোনো অভিযোগ না পেলে তো কোনো ব্যবস্থা নেয়া যাবে না। ’
যদি আনুষ্ঠানিক অভিযোগ না দেয়াই হয়, তাহলে সাবেরা সুলতানা কিসের ভিত্তিতে কার কাছে প্লেজিয়ারিজম নিয়ে ক্ল্যারিফাই করলো সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। এ ব্যাপারে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেন নি।
ইংরেজি বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক অধ্যাপক মোঃ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘আমরা যেহেতু প্রশাসনের সাথে যেহেতু জড়িত না সেহেতু কিছু বলার বা করার সামর্থ রাখি না। আমরা যারা বিভাগের সিনিয়র অধ্যাপক আছি, আমাদের কিছু নৈতিক দায়িত্ব থাকে একাডেমিক দিক থেকে। সেই দায়িত্ববোধ থেকেই আমরা প্রমাণ সহকারে তৎকালীন মাননীয় উপাচার্য মহোদয়কে জানিয়েছিলাম। উনি দেখে বলেছিলেন এই ব্যাপারে দেখবেন। কিন্তু দুঃখজনক হলো তিনি আমাদের এই কথা আমলে নেন নাই। যথারীতি পদোন্নতি দেয়া হয়। আমরা সব সময় চৌর্যবৃত্তির ব্যাপারে সতর্ক থাকি, প্রথমত এটা কাম্য নয়, সাথে লিগ্যালি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এখানে এই বিভাগটা হচ্ছে একটা পরিবারের মতো। তবে এখানে যদি কেউ ক্রাইম করে থাকেন সেটার দায় দায়িত্ব তো বিভাগ নেবে না। এটা উনার একান্তই ব্যক্তিগত বিষয়, ক্রাইম করে থাকলে পানিশমেন্ট পেতে হবে। আমার মনে হয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি জানে তাহলে উচিৎ প্রচলিত আইনে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইংরেজি বিভাগের একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘সাবেরা সুলতানার বিষয়ে অভিযোগের শেষ নেই। সে কখনই ঠিকমত ক্লাস নেয় না, ক্লাসে এসে ৫-১০ মিনিট ক্লাস করিয়ে চলে যায়। আমাদের প্রথম বর্ষে সে টানা ৮-৯ মাস কোন ক্লাসই নেয় নি। এছাড়াও তিনি প্রায়ই ক্লাসে এসে অসংলগ্ন আচরণ করতেন। একাধিক ক্লাসে এসে তিনি আমাদের ‘এই তোমরা কারা?’ ‘কত ব্যাচ তোমরা?’ ‘আমি কোনো কোর্স নেই তোমাদের?’ এধরনের কথাবার্তা বলতেন । তার বিরুদ্ধে প্রতিটি ব্যাচেই একই অভিযোগ রয়েছে।’ সূত্র:দৈনিক আমার বার্তা
২০২৩-২৫ মেয়াদে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য পদে ১৬০ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছে বাংলাদেশ। এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল থেকে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছে বাংলাদেশ।
মঙ্গলবার জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের ভোটে সদস্য নির্বাচিত হয় বাংলাদেশ।
ভোটের ফলাফল মানবাধিকার কাউন্সিলের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।
জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল জানায়, ২০২৩-২৫ মেয়াদে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলে বাংলাদেশসহ মোট ১৪টি দেশ সদস্য নির্বাচিত হয়েছে।দেশগুলো হলো- আলজেরিয়া, বাংলাদেশ, বেলজিয়াম, চিলি, কোস্টারিকা, জর্জিয়া, জার্মানি, কিরগিস্তান, মালদ্বীপ, মরক্কো, রোমানিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, সুদান ও ভিয়েতনাম।
মানবাধিকার কাউন্সিলের সদস্য পদে বাংলাদেশ ১৮৯টি ভোটের মধ্যে ১৬০টি ভোট পেয়েছে, যা এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল থেকে সর্বোচ্চ। এ অঞ্চলে বাংলাদেশসহ মোট ৭টি দেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে।প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো হলো- দক্ষিণ কোরিয়া, মালদ্বীপ, ভিয়েতনাম, আফগানিস্তান, কিরগিজস্তান ও বাহরাইন।
এ অঞ্চল থেকে বাংলাদেশ ছাড়া অন্য তিনটি নির্বাচিত সদস্য হলো- মালদ্বীপ (প্রাপ্ত ভোট ১৫৪), ভিয়েতনাম (প্রাপ্ত ভোট ১৪৫) এবং কিরগিস্তান পেয়েছে ১২৬টি ভোট।
উল্লেখ্য, ৪৭ সদস্যবিশিষ্ট এই মানবাধিকার পরিষদে এর আগে দুই মেয়াদে (২০১৫ থেকে ২০২১ পর্যন্ত) সদস্য ছিল বাংলাদেশ।
রাজধানী ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজে কোনো শিক্ষার্থীকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করার সত্যতা পায়নি তদন্ত কমিটি।
বৃহস্পতিবার ইডেন মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য্য স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে একথা জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গত ২৪ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে ইডেন মহিলা কলেজ ক্যাম্পাসে সংঘঠিত অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ও তৎপরবর্তীকালে অন্যান্য বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির ঘটনাগুলো এবং বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত কিছু শিক্ষার্থীর বক্তব্যের প্রেক্ষিতে কলেজের সিনিয়র শিক্ষক প্রফেসর মােহাম্মদ জিয়াউল হক, প্রফেসর কাজী আতিকুজ্জামান, প্রফেসর সুফিয়া আখতার এবং প্রফেসর মেহেরুন্নেসা মেরীর সমন্বয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। প্রতিবেদনে কোনো শিক্ষার্থীকে অনৈতিক কাজে বাধ্য করার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি বলে তদন্ত কমিটি জানিয়েছেন।’
এ ছাড়া সিট বাণিজ্য ও মারামারির ঘটনাসহ অন্যান্য অভিযােগের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কলেজ প্রশাসন বিধি অনুসারে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগ আয়োজিত ইংলিশ অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ ২০২২-এর চূড়ান্ত পর্ব এবং পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠান আগামী ০৭ অক্টোবর, ২০২২ তারিখে ড্যাফোডিল স্মার্ট সিটিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হবে। "আপনার ইংরেজি প্রতিভা দেখান, আরও বড় চ্যালেঞ্জের জন্য এগিয়ে যান" এ প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে দেশের তরুনদের আন্তর্জাতিক কর্মকান্ডে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য যোগ্য বৈশ্বিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ইংরেজি বিভাগ তৃতীয় বারের মত আয়োজন করছে ইংলিশ অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ ২০২২।
দেশের সব প্রান্ত থেকে মাধ্যমিক (জুনিয়র ক্যাটাগরি ক্লাস ৯-১০ থেকে ৫৭৫) এবং উচ্চ মাধ্যমিক (সিনিয়র ক্যাটাগরি ক্লাস ১১-১২ থেকে ৪০২) সহ ৭০ টিরও বেশি প্রতিষ্ঠান থেকে ৯৭৭জন প্রতিযোগী নিবন্ধন করে। বাছাই রাউন্ডের পর, আয়োজক কমিটি ৫০১ জন প্রতিযোগীকে থিয়েটার এবং ফাইনাল রাউন্ডে অংশ গ্রহণের সুযোগ দিচ্ছে। ০২ অক্টোবর, ২০২২ তারিখে রাজধানীর ধানমন্ডিতে ড্যাফোডিল এডুকেশন নেটওয়ার্কের ৭১ মিলনায়তনে আয়োজিত ‘মিট দ্য প্রেস’ অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানানো হয়।
ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ট্রাস্টি বোর্ডেও চেয়ারম্যান ডঃ মোঃ সবুর খান প্রধান অতিথি হিসেবে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। গ্র্যান্ড ফিনালে বিজয়ীরা উভয় বিভাগে শীর্ষ তিনটি অবস্থানের জন্য যথাক্রমে ৫০,০০০ হাজার টাকা, ৩০,০০০ হাজার টাকা এবং ১০,০০০ হাজার টাকা পুরস্কার হিসেবে পাবে। বিভিন্ন টারশিয়ারি ইনস্টিটিউটের বিশিষ্ট অধ্যাপকগণ নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের সাথে বিচারক ও অতিথি হিসেবে যোগদান করবেন। সামগ্রিকভাবে, এটি আগামীকালের শিক্ষাবিদ এবং উদীয়মান তারকাদের একটি প্রীতি সমাবেশ হবে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মানবিক ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. এ এম এম হামিদুর রহমান, ইংরেজি বিভাগের প্রধান, ড. লিজা শারমিন, ইংলিশ অলিম্পিয়াড বাংলাদেশ ২০২২-এর আহ্বায়ক মিস নাহিদ কায়সার, সহ-আহ্বায়ক রাবেয়া বিনতে হাবিব ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির সিনিয়র সহকারী পরিচালক (জনসংযোগ) মোঃ আনোয়ার হাবিব কাজল প্রমুখ।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বিষয়ক পরিচালকের (ডিএসএ) দপ্তর ও শিক্ষার্থীদের স্বেচ্ছায় রক্তদান সংগঠন বাঁধন এর আয়োজনে উপাচার্য প্রফেসর ড. মাহমুদ হোসেন এর নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে মাদকবিরোধী শোভাযাত্রা বের করা হয়।
সোমবার(২৬ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় শোভাযাত্রাটি হাদী চত্বর থেকে শুরু হয়ে প্রশাসনিক ভবন ঘুরে অদম্য বাংলা চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপচার্য বলেন, মাদক হচ্ছে সভ্যতার অন্তরায়। নানা রকম হতাশা, এডভেঞ্চার থেকে মাদকাসক্ত হয়। মাদক একটি দেশের তরুণ-যুবসমাজকে ধ্বংসের মাধ্যমে দেশের উন্নতি-অগ্রগতিকে পিছিয়ে দিতে পারে। এজন্য সম্মিলিতভাবে মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। তিনি বলেন, আমাদের দেশের একটি অমিত সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দক্ষ জনশক্তি তৈরি করতে হবে। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের ভূমিকা অগ্রগণ্য।
তিনি আরও বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস মাদকমুক্ত রাখতে ইতোমধ্যে একটি মাদকবিরোধী কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে ডোপ টেস্টের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ভর্তির চিন্তা-ভাবনা রয়েছে। শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের প্রাক্কালে তাদেরকে ডোপ টেস্টের প্রত্যয়ন বাধ্যতামূলক করার বিষয়টিও ভাবা হচ্ছে। গঠিত সংশ্লিষ্ট কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের সভায় বিষয়টি উপস্থাপন করা হবে।
উপাচার্য বলেন, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক দপ্তর ও রক্তদাতা বাঁধন এর এই শোভাযাত্রা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তাদের এই কর্মসূচি আমাদের চিন্তা-ভাবনাকে আরও ত্বরান্বিত করেছে। এক্ষেত্রে তিনি সব ছাত্র সংগঠনকে এভাবে এগিয়ে এসে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় ক্যাম্পাসকে মাদকমুক্ত রাখার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ট্রেজারার অমিত রায় চৌধুরী, রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর খান গোলাম কুদ্দুস, ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর মো. শরীফ হাসান লিমন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাঁধন এর সভাপতি ডানা শিকদার। ছাত্র বিষয়ক পরিচালক ঘোষণা দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো সংগঠনের সদস্যের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেলে তাঁর দপ্তর থেকে কোনো প্রত্যয়নপত্র দেওয়া হবে না। বাঁধনের সভাপতি পঠিত ইশতেহারে উল্লেখ করেন যে, মাদক সংশ্লিষ্টতা থাকলে কেউ এই সংগঠনের সদস্য হতে পারবে না, কারও বিরুদ্ধে মাদকে জড়ানোর প্রমাণ পেলে তার সদস্যপদ বাতিল করা হবে। এসব কর্মসূচিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্কুলের ডিন, ডিসিপ্লিন প্রধানসহ শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।
অতীতে নেপালের সঙ্গে ৮ বারের সাক্ষাতে ছয়বার হারে বাংলাদেশ। দুবার ড্র করার সুযোগ পায় লাল-সবুজের দলটি।
সোমবার নেপালকে তাদের ঘরের মাঠ কাঠমান্ডুর দশরথ স্টেডিয়ামে ৩-১ গোলে হারিয়ে সাফ চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল।
টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত পারফর্ম করে সব পুরস্কার নিজেদের করে নেয় বাংলাদেশ। চ্যাম্পিয়ন ট্রফির পাশাপাশি ফেয়ার প্লে ট্রফিও জিতে নেয় বাংলাদেশ।
সেরা গোলকিপার নির্বাচিত হন রুপনা চাকমা। দুটি হ্যাটট্রিকসহ সর্বোচ্চ (৮ গোল করে) গোলদাতার পুরস্কার জিতে নেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন।
টুর্নামেন্টের শুরু থেকে দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করে গোল্ডেন বুটও জিতে নেন সাবিনা।
করোনা প্রতিরোধে ৫-১১ বছরের শিশুদের জেলা-উপজেলা পর্যায়ে টিকাদান কর্মসূচি আগামী ১১ অক্টোবর থেকে শুরু হবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব ড. মো. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার।
শনিবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর হোটেল রেডিসনে আয়োজিত ‘৫-১১ বছরের শিশুদের কোভিড-১৯ টিকা কার্যক্রমবিষয়ক জাতীয় অ্যাডভোকেসি ওয়ার্কশপ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি জানান, সব মিলিয়ে দেশে ২ কোটি ২৬ লাখ ৩৮ হাজার ৭৩৭ জন শিশুকে এ টিকার আওতায় আনা হবে।
সচিব বলেন, আগামী ১১ অক্টোবর থেকে পৌরসভা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে টিকাদান শুরু করব। এতে কমিউনিটি পর্যায়ে আমাদের শিশুদের কাছে টিকা পৌঁছে যাবে। এর মাধ্যমে টিকা না পাওয়া বাকি শিশুরা আমাদের কাভারেজে চলে আসবে।
তিনি বলেন, অনেক দেশেই বাচ্চাদের টিকাদান শুরু হয়নি, আমরা শুরু করেছি। প্রথম থেকেই টিকা প্রয়োগে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বরাবর আবেদন করে রেখেছিলাম, আমরা অনুমোদন পাওয়ার পর পরই কার্যকর শুরু করেছি। এর আগে থেকেই আমরা টিকার সোর্স নিশ্চিত করে রেখেছি।
আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাদের মানুষের মধ্যে একটা অভ্যাস গড়ে উঠেছে, করোনা প্রকোপ বেড়ে গেলেই তাদের মধ্যে টিকা নেওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়। এমন মানসিকতার পরিবর্তন দরকার।
টিকাদানের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত করোনায় যারা মারা যাচ্ছেন, তারা টিকা নেননি। এমনকি টিকা না নিয়ে কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন, তারা অনেকটাই ঝুঁকিতে পড়ে যাচ্ছেন।
সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী আর নেই।(ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।তার বয়স হয়েছিল ৮৭ বছর।
রোববার রাত ১১টা ৪০ মিনিটে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মারা যান বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদ।সাজেদা চৌধুরী বেশ কিছুদিন ধরেই ডিমেনসিয়া রোগে ভুগছিলেন।তিনি নিকটাত্মীয়সহ পরিচিত কাউকেই চিনতে পারতেন না। উচ্চরক্তচাপসহ বার্ধক্যজনিত সমস্যা নিয়ে গত ২৮ আগস্ট সিএমএইচে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।
তিনি ৩ ছেলে ও এক মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।
সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মৃত্যুতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গভীর শোক জানিয়েছেন।এ ছাড়া বর্ষীয়ান এ রাজনীতিবিদের মৃত্যুতে রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমেছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর মরদেহ রাতে সিএমএইচেই রাখা হবে।সোমবার সকাল ১১টায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় সাজেদা চৌধুরীর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।এরপর বাদ জোহর তার নির্বাচনী এলাকা নগরকান্দায় হবে দ্বিতীয় জানাজা। বাদ আসর রাজধানীর বনানী কবরস্থানে দাফন করা হবে।
ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য সাজেদা চৌধুরী ১৯৩৫ সালের ৮ মে মাগুরা জেলাতে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম সৈয়দ শাহ হামিদ উল্লাহ এবং মা সৈয়দা আছিয়া খাতুন। শিক্ষাজীবনে তিনি স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। তার স্বামী রাজনীতিবিদ এবং সমাজকর্মী গোলাম আকবর চৌধুরী।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর বিপর্যয়ের মুখে পড়ে আওয়ামী লীগ।সেই সংকটময় মুহূর্তে আওয়ামী লীগকে সংগঠিত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন সাজেদা চৌধুরী। ১৯৭৬ সালে সাজেদা চৌধুরী আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পান।
১৯৮৬ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। ১৯৯২ থেকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নির্বাচিত হয়ে আসছেন। এর আগে ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৫ পর্যন্ত সাজেদা চৌধুরী মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
সাজেদা চৌধুরী একাধিবার জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর সাজেদা চৌধুরীকে প্রথমবার জাতীয় সংসদের উপনেতা করা হয়। এরপর দশম ও একাদশ সংসদেও তিনি উপনেতার দায়িত্ব পান।
তিনি ১৯৭৪ সালে গ্রামীণ উন্নয়ন ও শিক্ষায় বিশেষ অবদানের জন্য ইউনেস্কো ফেলোশিপপ্রাপ্ত হন এবং একই সময়ে তিনি বাংলাদেশ গার্ল-গাইড অ্যাসোসিয়েশনের জাতীয় কমিশনার হিসেবে সর্বোচ্চ সম্মানসূচক সনদ সিলভার এলিফ্যান্ট পদক লাভ করেন। তিনি ২০০০ সালে আমেরিকান বায়োগ্রাফিক্যাল ইনস্টিটিউট কর্তৃক ওমেন অব দি ইয়ার নির্বাচিত হন। ২০১০ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করে।
সন্তান জন্মের পরই পিতা-মাতার মাথায় নানা স্বপ্ন আকুলি-বিকুলি করতে থাকে। মধ্যবিত্ত বা নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের প্রত্যেক পিতা-মাতা বিশেষ একটি বিষয়ের ওপর বেশি চিন্তিত থাকেন- আর তা হলো সন্তানের ভবিষ্যৎ। তাদের সন্তান ভালো স্কুলে পড়বে; ভালো বিদ্যালয় থেকে ভালো ডিগ্রি নিয়ে তাদের মুখ উজ্জ্বল করবে- এমন স্বপ্ন লালন করতে থাকেন সন্তান জন্মের পর থেকেই।
এ স্বপ্ন বাস্তবায়নে চিন্তার অন্ত থাকে না বাবা-মায়ের। আর সন্তানের প্রি-স্কুল থেকেই শুরু হয় যুদ্ধ। ভালো স্কুলে ভর্তির যুদ্ধ; লেখাপড়ার জন্য ভালো মাস্টার খোঁজের যুদ্ধ। আর যুদ্ধক্ষেত্রের ক্রীড়নক হলো তাদের সন্তান। শহর ও গ্রামের মধ্যবিত্ত বা নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের বাবা-মায়ের মধ্যে চিন্তা-চেতনার কিছুটা তফাত থাকলেও উদ্দেশ্যে ও লক্ষ্য সবার একটাই। উচ্চ-মধ্যবিত্ত ও ধনিক শ্রেণির পিতা-মাতা এত চিন্তিত না হলেও সন্তানের ভবিষ্যতের স্বপ্ন তারাও দেখেন।
এদিকে স্কুল-কলেজ শেষ। বাবা-মায়ের যুদ্ধের বিজয়ী সৈনিকরা যেন কিছুটা হাফ ছেড়ে বাঁচে। কিন্তু আসলেই কি যুদ্ধ শেষ? না, বরং চূড়ান্ত যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে তারা। এবার ভবিষ্যৎ গড়ার স্বপ্ন দেখেন অভিভাবকরা; আর যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন সন্তানরা। অনেকেই ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেলেনও। কিন্তু তারপর...।
তারপর স্বপ্নজয়ী বাবা-মায়ের মনে জন্মাতে থাকে ভয়; সন্তানের নিরাপত্তার ভয়। যারা একদিন সন্তানদের ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর স্বপ্ন দেখতেন তারাই এখন ভয়ে কুঁকড়ে থাকেন। সন্তানের ভবিষ্যত নয়, সন্তানের নিরাপত্তার ভয়! তাদের মনে সব সময় একটা প্রশ্নই জাগতে থাকে- ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সন্তানরা নিরাপদ তো?’ এই প্রশ্নটা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া সব সন্তানদের বাবা-মায়ের।
বর্তমান সময়ে এ প্রশ্ন জন্মানোটা স্বাভাবিক। বিশ্ববিদ্যালয়ের চৌকাঠে পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় র্যাগিং। এই শুরু র্যাগিং মাঝে মাঝে মারাত্মক ভয়াবহ হয়ে ওঠে। আনন্দের আতিশয্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে পা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘোর অমানিশা নেমে আসে কথিত ‘বড় ভাই’দের পরিচিতি পর্বে অর্থাৎ র্যাগিংয়ের মাধ্যমে। এই র্যাগিং যে কত ভয়াবহ- তা ভুক্তভোগী ছাড়া কেউ বলতে পারবে না। উচ্চশিক্ষার জীবনে প্রথম পদক্ষেপেই মন ভেঙে যায় তাদের। আর এই ভাঙা মন নিয়েই চলতে হয় সারা জীবন।
শুধু র্যাগিং নয়; হোস্টেলে থাকতে হলে সিট-বাণিজ্যের চাঁদাবাজি, ছাত্র রাজনীতির দলন-পীড়ন, পদে পদে কথিত ‘বড় ভাই’দের চোখ রাঙানিতে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠেন তারা; কিন্তু কিছুই করার থাকে না। নিজের মধ্যে সব কষ্ট জমা করে রাখে তারা। বাবা-মা চিন্তা করবে ভেবে তাদের কিছুই জানান না; বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের ভালো গল্পগুলো অবারিত হলেও র্যাগিং নামক যন্ত্রণা, চাঁদাবাজি মনের ঘরে অর্গল লাগানোই থাকে।
র্যাগিং সব সময় খারাপ না। ভালো উদ্দেশ্য নিয়েই শুরু হয়েছিল র্যাগ দেওয়া। এক কথায় র্যাগিং (Ragging) অর্থ পরিচিত হওয়া বা পরিচয় পর্ব। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুরাতন শিক্ষার্থীদের একটা সখ্যতা গড়ে তোলার জন্য যে পরিচিতি প্রথা সেটাকে র্যাগিং বলে অভিহিত করা হয়। এতে সবার সঙ্গে সম্পর্ক ভালো হয়। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে র্যাগিংয়ে অপব্যবহারে এটি এখন ভীতিকর অবস্থানে পৌঁছে গেছে।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র ছাত্ররা নতুন ছাত্রদের কাছে নিজেদের বড়াই করার জন্য অত্যন্ত অবমাননাকর আচরণ করে, অশ্লীল কাজ এবং অশালীন পদ্ধতির প্রদর্শন করতে বলে। তাদের কথা মতো না চললে এটি কখনো কখনো ভয়ঙ্কর রূপ নেয়। নতুন ছাত্ররা মানসিক বা শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়। আর এর প্রভাব পড়ে শিক্ষাজীবনে। অনেকে হতাশ হয়ে পড়েন। আবার অনেক সময় এমন কিছু ঘটে যা সারাজীবন মানসিক অস্থিরতায় ভুগতে হয়। এই র্যাগিংয়ের কারণে ভারতের এক মেডিকেল কলেজছাত্রী আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।
এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে ছাত্র রাজনীতি, সিট বাণিজ্য, চাঁদাবাজি তো আছেই। ছাত্র রাজনীতির কারণে বাংলাদেশের প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে জীবন দিতে হয়েছে। সারা রাত নির্যাতনের পর পিটিয়ে হত্যা করা হয় তাকে। এছাড়া প্রতিনিয়তই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রদের নির্যাতনের কথা শোনা যায়। মাঝে মাঝে এমন ঘটনা ঘটে, যা শুনলে ভয়ে শিউরে উঠতে হয়।
সম্প্রতি দেশের একটি নাম করা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক শিক্ষার্থীর কাছে ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। চাঁদা দিতে দেরি করায় ফোন দিয়ে হলের কক্ষে ডেকে নিয়ে লোহার রড এবং স্ট্যাম্প দিয়ে ৩ ঘণ্টা ধরে পেটান ছাত্র রাজনীতির নেতারা। এছাড়া ওই ছাত্রের কাছ থেকে জোরপূর্বক কেড়ে নেওয়া হয় ২০ হাজার টাকা। আরেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজনৈতিক প্রোগ্রামে না যাওয়াকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিককে মারধরের হুমকির পর হলের সিট থেকে বিছানা ফেলে দেওয়া হয়। এমনকি থাপ্পড় দিয়ে কান ফাটাতে চান নেতারা। এমন হাজারও উদাহরণ আছে।
দেশের নামকরা সব বিশ্ববিদ্যালয়ের এমন ঘটনা প্রতিনিয়তই আমাদের সামনে আসছে। এতে সাধারণ মানুষও বিচলিত হয়ে পড়েন। আর যাদের সন্তানরা সেখানে পড়াশোনা করেন, তাদের মনের ওপর কত প্রভাব পড়ে সেটা অবশ্যই অনুমেয়। আর স্বাভাবিকভাবেই তাদের মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে- ‘বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের সন্তানরা নিরাপদ তো!?’ সূত্র:যুগান্তর
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নতুন দলগুলোকে নিবন্ধন নেওয়ার জন্য আরও দু’মাস আবেদনের সময় বাড়াল নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
বুধবার ইসির যুগ্ম সচিব এস এম আসাদুজ্জামান এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বলেন, গণবিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী ২৯ আগস্ট পর্যন্ত আবেদনের সময় ছিল। তবে দুই মাস বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে আগামী ২৯ অক্টোবর পর্যন্ত আবেদন করা যাবে।
এ সিদ্ধান্ত জানানোর আগে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ও ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে সময় বাড়ানোর দাবি জানান।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, প্রতি সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন দলগুলোকে নিবন্ধন দেওয়ার জন্য আবেদন আহ্বান করার বিধান আছে। সে মোতাবেক ২৬ মে দলগুলোর কাছে আবেদন আহ্বান করে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
এখন পর্যন্ত ১০টির মতো দল আবেদনপত্র তুলেছে। এদের মধ্যে আবেদনপত্র জমা দিয়েছে দু’টি দল। এদের একটি হলো বাংলাদেশ ন্যাশনাল রিপাবলিকান পার্টি, অন্যটির নাম বঙ্গবন্ধু দুস্থ ও প্রতিবন্ধী উন্নয়ন পরিষদ।
সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ড. এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০০৮ সালে দেশে প্রথমবারের মতো দলগুলোকে নিবন্ধন দেয়। সে সময় ১১৭টি দল আবেদন করেছিল। যাচাই-বাছাইয়ের পর নিবন্ধন পায় ৩৯টি দল।
সবশেষ দল নিবন্ধনের জন্য ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল ইসি। তখন সময় দেওয়া হয়েছিল ওই বছর ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। এতে নিবন্ধন পেতে আবেদন করেছিল ৭৬টি রাজনৈতিক দল।
কে এম নুরুল হুদা কমিশন নানা কারণে সবার আবেদন বাতিল করেছিল। পরবর্তীতে আদালতের আদেশে নিবন্ধন পায় জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম ও বাংলাদেশ কংগ্রেস। সবমিলিয়ে গত ১৪ বছরে মোট ৪৪টি দলকে নিবন্ধন দিয়েছে ইসি।
এর মধ্যে শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় ও আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিলও করা হয়। ফলে বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে ৩৯টি।