বৃহস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪

আর্থিক খাতে সাইবার হামলার আশঙ্কায় ব্যাংকগুলোতে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা হয়েছে। একই সঙ্গে সীমিত করা হয়েছে অনলাইন লেনদেন ও এটিএম বুথের সেবা। বাড়ানো হয়েছে গোয়েন্দা নজরদারি।

প্রতিটি ব্যাংকের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের কর্মকর্তারাও সতর্ক রয়েছেন। যে কোনো প্রয়োজনে যোগাযোগ করছেন সরকারের ই-গভর্নমেন্ট কম্পিউটার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিমের (সার্ট) সঙ্গে। সার্টের কর্মকর্তারাও তাদের সাইবার ল্যাবে সার্বক্ষণিকভাবে ‘ক্যাসাব্ল্যাঙ্কা’ নামের ম্যালওয়্যার ভাইরাসের ওপর নজর রাখছেন। এখন পর্যন্ত ভাইরাসটি পুরোপুরি সরিয়ে ফেলা সম্ভব না হলেও এটি কোনো অঘটন ঘটাতে পারেনি। তবে কিছু প্রতিষ্ঠানের ডাটা চুরি করেছে।

সূত্র জানায়, বাংলাদেশের আর্থিক ও সরকারি খাতের ১৯টি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবপেইজে ‘ক্যাসাব্ল্যাঙ্কা’ নামের একটি ম্যালওয়্যারের সন্ধান পাওয়ার পরই এর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে। একই সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে।

সার্টের এই বার্তা পাওয়ার পরই ব্যাংকগুলো তাদের প্রতিটি শাখা ও এটিএম বুথের প্রধানকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়ে চিঠি দিয়েছে। একই সঙ্গে অনলাইন লেনদেনে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে। এ নির্দেশনা পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাত ১১টার পর থেকে কয়েকটি ব্যাংক তাদের এটিএম বুথের সার্ভার বন্ধ রাখে। ফলে ওই দিন টাকা তুলতে পারেননি গ্রাহকরা।

ধানমন্ডি এলাকার কয়েকজন গ্রাহকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার পর থেকে ধানমন্ডি এলাকার একটি ব্যাংকের কোনো এটিএম বুথ থেকেই টাকা তোলা সম্ভব হয়নি। পরে তিনি শুক্রবার সকালে টাকা তুলেছেন। বেশির ভাগ এটিএম বুথ সন্ধ্যার পর থেকে একটি মেশিন চালু রেখে বাকিগুলো বন্ধ রাখছেন। যেটি চালু থাকছে সেটির ওপর কড়া নজরদারি রাখা হচ্ছে। কারা এটিএম বুথ ব্যবহার করছেন সেগুলোর রেকর্ডও রাখা হচ্ছে। কুড়িল এলাকায় একটি ব্যাংকের এটিএম বুথেও সন্ধ্যা ৭টার পর একটি মেশিন ছাড়া বাকি সব বন্ধ রাখতে দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি এটিএম বুথের নেটওয়ার্ক রয়েছে এমন তিনটি ব্যাংক ব্যাপক সতর্কতা অবলম্বন করেছে।

এ প্রসঙ্গে সার্ট প্রকল্প পরিচালক তারেক এম বরকতউল্লাহ বলেন, ভাইরাসটি কিভাবে ক্লিন করতে হবে সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে গাইডলাইন দেওয়া হয়েছে। তারা সেভাবে কাজ করছে। কোনো সমস্যা হলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে।

সূত্র জানায়, সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থাকেও সাইবার হামলার আশঙ্কার বিষয়টি জানানো হয়েছে। ফলে তারাও সতর্ক রয়েছেন। এটিএম বুথগুলোতেও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোয় কর্মরত প্রধান তথ্যপ্রযুক্তি কর্মকর্তাদের সংগঠন সিটিও ফোরামের আহ্বায়ক তপন কান্তি সরকার বলেন, ব্যাংকিং খাত এখন প্রযুক্তিনির্ভর হয়ে পড়েছে। বোতাম টিপেই সব সেবা পাওয়া যাচ্ছে। বোতাম টিপেই টাকা তোলা যাচ্ছে, আবার স্থানান্তরও করা যাচ্ছে। আর্থিক খাতের সেবা সহজলভ্য হওয়ায় ঝুঁকির মাত্রাও বেড়েছে। অনলাইনে সব সময়ই নানা ধরনের ভাইরাস ঘুরে বেড়ায়। এগুলো প্রতিরোধ করতে ব্যাংকগুলোতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ যেমন বাড়াতে হবে, তেমনি দক্ষ জনবল নিয়োগ করতে হবে।সূত্রঃ যুগান্তর

ক্যাম্পাসের বাইরের শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব আমি নেব না’- শুক্রবার (২০ ফেব্রুয়ারি) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার সময় ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসান এমন বক্তব্য দিয়েছেন অভিযোগ করে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে পূর্বের তিন দফা দাবির সঙ্গে প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিটি যুক্ত করার কথা সাংবাদিকদের জানান শিক্ষার্থীরা। বলেন, ‘প্রক্টরকে তার বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। অন্যথায় তার পদত্যাগ করতে হবে।’
গতকাল শুক্রবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন গেরুয়া বাজার এলাকায় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর এমন বক্তব্য দেন। একই সুরে উপচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামও সাংবাদিকদের সাথে মুঠোফোনে কথা বলেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকরা।

এ বিষয়ে জানতে প্রক্টর আ স ম ফিরোজ উল হাসানের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এমন কোনো বক্তব্য দেননি বলে জানান। বলেন, ‘আমি সাংবাদিকদের সামনে এমন কোনো বক্তব্য দিইনি। তবে, আমরা তো আনঅফিসিয়ালি অনেক কথাই বলেছি। আমি বলেছি, আমরা গেটের ওইপাশে গেলে তো কিছু করতে পারব না। আমাকে তো বাইরের এলাকার কেউ প্রক্টর হিসেবে মানবে না। তাই আমি বলেছি, ওপাশের পরিস্থিতি তো আমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না। আমরা চেষ্টা করেছি গেটের ভিতরে থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে।’ কিন্তু আমার এই কথাকে কেউ কেউ ভুলভাবে উপস্থাপন করেছে বলেও দাবি করেন তিনি।
ফিরোজ উল হাসান বলেন, ‘আমি যদি শিক্ষার্থীদের দায়িত্ব না-ই নিতাম তাহলে সন্ধ্যা ৬টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত ওই স্থানে দাঁড়িয়ে থাকতাম না। তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতাম না।’
প্রক্টর বলেন, গতকালের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে। মামলার বিষয়ে প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এছাড়া, উদ্ধুদ্ধ পরিস্থিতিতে করণীয় ঠিক করতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা চলছে বলেও জানান তিনি।
এদিকে, সিন্ডিকেট সভা শেষে বিকেলে শিক্ষামন্ত্রী ও ইউজিসির সাথে বৈঠকে বসবেন উপাচার্য। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল খুলে দেওয়া হবে কি হবে না- এ বিষয়ে আলোচনা হবে বলেও জানান ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর ফিরোজ উল হাসান।
কিন্তু সেখানে হল খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত না আসলে হলে প্রবেশ করা শিক্ষার্থীদের কি হবে- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘আমরা বার বার শিক্ষার্থীদের অনুরোধ করব যাতে তারা হল ছেড়ে দেয়। আমরা আশা করব, তারা রাষ্ট্রের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাবে।’
ক্যাম্পাস সংলগ্ন এলাকা শিক্ষার্থীদের জন্য এখন নিরাপদ না। তাহলে হলে উঠা শিক্ষার্থীরা বের হয়ে কোথায় যাবে- এমন প্রশ্নে সবার সম্মিলিত চেষ্টায় ভালো সমাধান আসবে বলেই মনে করেন তিনি। বলেন, ‘আমরা এখনও কোনো সিদ্ধান্তে যাই নি। আগে আলোচনা হোক, দেখা যাক সেখানে কি সিদ্ধান্ত আসে। তারপর সবার জন্য যেটা ভালো, আমরা সেটাই করব।’
এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে প্রবেশের চেষ্টা করছে পুলিশ, তবে শিক্ষার্থীরা পুলিশের প্রবেশে বাধা দিচ্ছেন।

কারিগরি মুক্ত নার্সিংসহ ৩ দফা দাবিতে ভোলায় শিক্ষানবিশ নার্সদের মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার সকালে ভোলা সদর হাসপাতালের সামনে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা স্টুডেন্ট নার্সেস ইউনিয়ন ভোলা জেলা শাখার আয়োজনে শিক্ষানবিশ নার্সরা ঘণ্টাব্যাপী এই কর্মসূচি পালন করেন।

শিক্ষানবিশ নার্সরা প্রথমে হাসপাতাল থেকে শহরে একটি বিক্ষোভ মিছিল করে। মিছিল শেষে হাসপাতাল চত্বরে মানববন্ধনসহ সমাবেশ করেন।

এ সময় তারা কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে পেশেন্ট কেয়ার টেকনোলজিস্টদের ডিপ্লোমা নার্সদের সমমান করার সিদ্ধান্ত, পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকাদের ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারিতে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত বাতিলসহ দ্রুত কারিগরি মুক্ত লাইসেন্সিং কম্প্রিহেনসিভ পরীক্ষা আয়োজনের দাবী জানান।
সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের অধীনে মাত্র ৬ থেকে ১২ মাস মেয়াদী কমপ্রেহেন্সিভ কোর্স করা শিক্ষার্থীদের নার্সিং লাইসেন্স প্রদান করা হলে চিকিৎসা ব্যবস্থা হুমকির সম্মুখীন হবে। ৫ ফেব্রুয়ারি নার্সিং এর পরীক্ষা ছিল কিন্তু তা বাতিল করা হয়েছে। যে যার বোর্ড থেকে পরীক্ষা দিবে আমরা আমাদের বোর্ডের পরীক্ষা দিব।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক নেয়া হঠকারী সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। অনতিবিলম্বে সিদ্ধান্ত বাতিল করা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেয়া হবে বলেও ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধন ও সমাবেশে বাংলাদেশ ডিপ্লোমা স্টুডেন্ট নার্সেস ইউনিয়নের সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশ নিয়ে ৩ দফা দাবি বাস্তবায়নে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।

ফের বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীরা। অবরোধের কারণে আটকে গেছে ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা ও কুয়াকাটাগামী যান চলাচল। আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে বরিশাল-পটুয়াখালী মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা।

এর আগে তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে শুক্রবার বিকেল ৫টা থেকে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ কর্মসূচি শুরু করে আজ সকাল ১০টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়ে অবরোধ তুলে নেন। শুক্রবার সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি আরিফ হোসেন, সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম ও প্রক্টর সুব্রত কুমার দাস শিক্ষার্থীদের আন্দোলনস্থলে যান। তাঁরা শিক্ষার্থীদের দাবি বাস্তবায়নে শনিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত সময় চান। এরপর শিক্ষার্থীরা সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তাঁদের মহাসড়ক অবরোধ স্থগিত করেন। আজ সকাল ১০টার মধ্যে দাবি আদায় না হলে পুনরায় মহাসড়ক অবরোধ করার ঘোষণা দিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি অমিত হাসান বলেন, ‘প্রশাসন অনেকটাই গা ছাড়া ভাব দেখিয়েছে, সে জন্য আমাদের মৌলিক অধিকারের জায়গা থেকে আন্দোলন করতে হচ্ছে। আর সড়ক অবরোধের কারণে সাধারণ মানুষের যে ভোগান্তি হচ্ছে, এ জন্য আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি। তবে এ ছাড়া আমাদের বিকল্প কোনো পথ নেই।’

আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেন, গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে তাঁদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আহতরা হামলাকারীদের নামের তালিকা দিলেও প্রশাসন তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা না করে অজ্ঞাতদের আসামি করে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়। আর মামলার বিবরণে ঘটনার ভয়াবহতা, নির্যাতনের ধরন উল্লেখ না করে কেবল মারধর ও জখমের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এটা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের প্রহসন ছাড়া কিছু না। এ জন্য শিক্ষার্থীরা যেনতেনভাবে দায়ের করা ওই মামলা প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।

গত মঙ্গলবার রাতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর পরিবহনশ্রমিকদের হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর গত বুধবার সকাল থেকে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেন। সেখান থেকে তিন দফা দাবি জানানো হয়। পরে ওই দিন বিকেল পাঁচটায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও নগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে প্রশাসন শিক্ষার্থীদের ওই দাবি ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে অবরোধ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। তবে শিক্ষার্থীরা তাঁদের অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন জানায়, শিক্ষার্থীদের দাবি অনুযায়ী বৃহস্পতিবার দুপুরে বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি মামলা করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুহা. মুহসিন উদ্দীন বাদী হয়ে একটি মামলা করেন। তবে ওই মামলায় কাউকে আসামি করা হয়নি। বৃহস্পতিবার বিকেলে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জানতে পেরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. ছাদেকুল আরেফিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং দায়ের করা ওই মামলা প্রত্যাখ্যান করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২০২১ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে আগামী মে মাসে। আগামী ২১ মে থেকে ৫ জুন পর্যন্ত পাঁচটি ইউনিটের অধীনে এই পরীক্ষা নেওয়া হবে। ভর্তির অনলাইন আবেদনপ্রক্রিয়া ৮ মার্চ থেকে শুরু হয়ে চলবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত।

বৃহস্পতিবার দুপুরে উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রথম বর্ষে ভর্তি বিষয়ক সাধারণ ভর্তি কমিটির সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে এ সভা হয়।

সভা শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২১ মে বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ক ইউনিট, ২২ মে কলা অনুষদভুক্ত খ ইউনিট, ২৭ মে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদভুক্ত গ ইউনিট, ২৮ মে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ঘ ইউনিট ও ৫ জুন চারুকলা অনুষদভুক্ত চ ইউনিটের তত্ত্বীয় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি ইউনিটের পরীক্ষা বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে। ক, খ, গ ও ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৬০ নম্বরের বহুনির্বাচনী ও ৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। বহুনির্বাচনী ও লিখিত উভয় অংশের জন্য ৪৫ মিনিট করে সময় থাকবে। তবে চ ইউনিটের তত্ত্বীয় পরীক্ষার জন্য ৩০ মিনিট আর লিখিত পরীক্ষার জন্য ৪৫ মিনিট সময় বরাদ্দ থাকবে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আবেদন করতে হলে ক ও গ ইউনিটে জিপিএ ৩ দশমিক ৫, খ ও ঘ ইউনিটে জিপিএ ৩ এবং চ ইউনিটে জিপিএ ৩ থাকতে হবে। অনলাইনের মাধ্যমে প্রার্থীদের ভর্তির আবেদনপ্রক্রিয়া ৮ মার্চ বিকেল চারটা থেকে শুরু হবে এবং ৩১ মার্চ রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে। টাকা জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১ এপ্রিল রাত ১১টা ৫৯মিনিট পর্যন্ত। আর এ বছরের ভর্তি পরীক্ষা হবে ঢাকাসহ দেশের ৮টি বিভাগীয় শহরে।

ভর্তিবিষয়ক বিস্তারিত নির্দেশনা ও তথ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট (http://admission.eis.du.ac.bd/) এবং পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শিগগিরই জানিয়ে দেওয়া হবে।

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন প্রো-ভিসি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) লোক প্রশাসন বিভাগের জ্যেষ্ঠ প্রফেসর ড. নাসিম বানু। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি আব্দুল হামিদের আদেশক্রমে সিনিয়র সহকারী সচিব নীলিমা আফরোজ স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। তাকে আগামী চার বছরের জন্য এ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তি সূত্রে, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ১৯৯২ এর ধারা ১৪ (১) অনুসারে প্রফেসর ড. নাসিম বানুকে বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় গাজীপুরের প্রো-ভিসি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ পদে তাকে বর্তমান পদের সম পরিমাণ বেতন ভাতা দেওয়া হবে এবং বিধি অনুসারে পদসংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন। এছাড়াও তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংবিধি ও আইন দ্বারা নির্ধারিত ক্ষমতা প্রয়োগ ও দায়িত্ব পালন করবেন।

বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য নিয়োগপ্রাপ্ত প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. নাসিম বানু বলেন,“বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেওয়ায় বাংলাদেশ সরকারের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং শিক্ষামন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমার সততা, দক্ষতা ও যোগ্যতা দিয়ে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মান রক্ষায় এবং উন্নয়নের জন্য কাজ করবো। অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা চাই।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে অনলাইনের মাধ্যমে প্রার্থীদের ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া শুরুর তারিখ আগামী ৮ মার্চ থেকে নির্ধারণ করা হয়েছে। ওইদিন বিকেল চারটা থেকে ভর্তির আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে ৩১ মার্চ রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত চলমান থাকবে। এর মধ্যে ভর্তিচ্ছুরা অনলাইনে আবেদন করতে পারবে। অনলাইনে আবেদন শেষে সরকারি ব্যাংগুলোর যেকোনো শাখায় ১ এপ্রিল রাত ১১ টা ৫৯মিনিটের মধ্যে টাকা জমা দিতে হবে। এ বছরের ভর্তি পরীক্ষায় ভর্তিচ্ছুদের জিপিএ’র শর্ত বাড়ানো হয়েছে। ইউনিট ভিত্তিক এবার দশমিক ৫ থেকে ১ বৃদ্ধি করা হয়েছে। এবারের ভর্তি ফি ৬৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা আগের বছর ছিলো ৪৫০টাকা।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা কমিটিতে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন মিলনায়তনে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তি বিষয়ক সাধারণ ভর্তি কমিটির সভায় এসব সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ক-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২১ মে, খ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২২ মে, গ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৭ মে, ঘ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা ২৮ মে এবং চ-ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা (সাধারণ জ্ঞান) ৫ জুন অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিটি ইউনিটের পরীক্ষা ঢাকাসহ আটটি বিভাগীয় শহরে সকাল ১১ টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২ পর্যন্ত ভর্তি অনুষ্ঠিত হবে।

সভার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, এর আগের বছরগুলোতে ভর্তি ফি নির্ধারিত ৪৫০টাকা নির্ধারিত ছিলো। এবার সেটি বাড়িয়ে ৬৫০টাকা করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, অন্যান্যবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সহ ঢাকার মধ্যে আশেপাশের কেন্দ্রগুলোতে পরীক্ষা হতো। এবার ঢাকার বাইরে কেন্দ্র পড়ায় ভর্তি পরীক্ষার খরচ কিছুটা বেড়েছে। ডিনবৃন্দ পর্যালোচনা করে ভর্তি ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।

বেড়েছে আবেদনের শর্ত

এছাড়াও ইউনিট ভিত্তিক আবেদনের নূন্যতম শর্তও বাড়ানো হয়েছে। করোনার কারণে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে এ শর্ত বাড়ানো হয়েছে। জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ভর্তিচ্ছু আবেদনকারীদের ন্যূনতম যোগ্যতা হিসেবে ‘ক’ ইউনিটের জন্য মাধ্যমিক ও সমমান এবং উচ্চ মাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষায় (৪র্থ বিষয়সহ) প্রাপ্ত জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৮.৫ (আলাদাভাবে জিপিএ ৩.৫), ‘খ’ ইউনিটের জন্য জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৮.০ (আলাদাভাবে ৩.০), ‘গ’ ইউনিটের জন্য জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৮.০ ( আলাদাভাবে ৩.৫), ‘ঘ’ ইউনিটের জন্য মানবিক শাখার ক্ষেত্রে জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৮.০ (আলাদাভাবে ৩.০) ও বিজ্ঞান শাখার ক্ষেত্রে জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৮.৫ (আলাদাভাবে ৩.৫) এবং ‘চ’ ইউনিটের জন্য জিপিএ-দ্বয়ের যোগফল ন্যূনতম ৭.০ (আলাদাভাবে জিপিএ ৩.০) থাকতে হবে।

আবেদনে পূর্বের শর্ত বহালের দাবি ভর্তিচ্ছুদের:

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির আবেদনে পূর্বের শর্ত বহালের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা। গতকাল সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বরাবর দেয়া এক স্মারকলিপিতে তারা এ দাবি জানান। তবে উপাচার্যের সঙ্গে তাদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তারা। শিক্ষার্থীরা বলেন, করোনার কারণে অটো প্রমোশনের কারণে এসএসসিতে ভালো ফল না থাকায় এইসএসসিতেও ভালো ফল হয়নি। অথচ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য আমাদের প্রস্তুতি ভালো ছিলো। কিন্তু দুঃখের বিষয়, কিছুদিন পূর্বে ভর্তি পরীক্ষায় আবেদনের পয়েন্ট বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়। যদি আবেদনকারীকে পূর্ব নির্ধারিত জিপিএ পয়েন্ট বাদ দিয়ে নতুন জিপিএ পয়েন্ট ধরা হয় তাহলে আমাদের জীবন হুমকির মুখে পড়বে।

এ বিষয়ে উপাচার্য আখতারুজ্জামান বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থীদের ফল পর্যালোনা করে বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে সবকিছু বিবেচনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটি পরিবর্তনের সুযোগ নেই।

পরীক্ষা পদ্ধতি

সভায় ‘ক’, ‘খ’, ‘গ’ ও ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ৬০ নম্বরের এমসিকিউ এবং ৪০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। শুধুমাত্র ‘চ’ ইউনিটের পরীক্ষায় ৪০ নম্বরের এমসিকিউ এবং ৬০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ‘ক’, ‘খ’, ‘গ’ ও ‘ঘ’ ইউনিটের এমসিকিউ পরীক্ষার জন্য ৪৫ মিনিট এবং লিখিত পরীক্ষার জন্য ৪৫ মিনিট সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। ‘চ’ ইউনিটের এমসিকিউ পরীক্ষার জন্য ৩০ মিনিট এবং লিখিত পরীক্ষার জন্য ৪৫ মিনিট সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মমতাজ উদ্দিন আহমেদ, অনলাইন ভর্তি কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মো. মোস্তাফিজুর রহমান, বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, বিভিন্ন ইনস্টিটিউটের পরিচালক, রেজিস্ট্রার এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

ভর্তি সংক্রান্ত বিস্তারিত নির্দেশনা ও তথ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট https://admission.eis.du.ac.bd এবং পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শিগগিরই জানিয়ে দেওয়া হবে।

নাইজেরিয়ায় ফের স্কুলে হামলা চালিয়ে শিক্ষার্থীদের অপহরণ করেছে দুর্বৃত্তরা। অপহৃত ৪০ জনের মধ্যে ছাত্র ও শিক্ষক সবাই আছেন।

নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট পুলিশ এবং নিরাপত্তা বাহিনীকে দ্রুত অপহৃতদের খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন। খবর ডয়েচে ভেলের।

স্থানীয় মানুষের বক্তব্য, ঘটনার পেছনে ক্রিমিনাল গ্যাংয়ের হাত রয়েছে। যদিও এখনও পর্যন্ত কোনো গোষ্ঠী এর দায় স্বীকার করেনি। মধ্য নাইজেরিয়ায় অবস্থিত স্কুলটির নাম গভর্নমেন্ট সায়েন্স কলেজ। প্রতিদিনের মতো বুধবারও সেখানে ক্লাস শুরু হয়েছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য– স্কুলের পেছনের জঙ্গল এলাকা দিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়ে আততায়ীরা। তাদের হাতে আধুনিক অস্ত্র ছিল। স্কুলের ছাত্র, শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীদের তারা পেছনের ঝোপে নিয়ে যায়। অপহরণের সময় ছাত্ররা বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় অস্ত্রধারীদের হামলায় অন্তত একজন ছাত্রের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

স্কুল সূত্রে জানানো হয়েছে, অপহৃতদের মধ্যে ২৬ জন ছাত্র রয়েছে। বাকি সবাই শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী।

ঘটনার পরেই এলাকার সব স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়। উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা স্কুলের সামনে জড়ো হন। প্রেসিডেন্ট স্বয়ং জানিয়েছেন, পুলিশ ও নিরাপত্তাকর্মীরা দ্রুত অপহৃতদের খুঁজে বের করবেন। সবাই যাতে সুস্থভাবে ফিরতে পারেন, সেদিকে নজর দেওয়া হবে। যত দ্রুত সম্ভব এ কাজ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।

গত কয়েক বছর ধরে নাইজেরিয়ায় স্কুল ছাত্রদের অপহরণের বিষয়টি উদ্বেজনক হারে বেড়েছে। এর আগেও একাধিকবার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এমন ঘটনা ঘটেছে। সাধারণত ছাত্রদের অপরহরণ করে বড়সড় মুক্তিপণ দাবি করে অপহরণকারীরা।

আজ ১৮ ফেব্রুয়ারি। ড. শহীদ সৈয়দ মহম্মদ শামসুজ্জোহা দিবস। ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থানের সময় এই দিনে পাকিস্তানি বাহিনীর গুলিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) মেইন গেটে শহীদ হন প্রক্টর সৈয়দ মহম্মদ শামসুজ্জোহা। তিনিই প্রথম বাঙালি শহীদ বুদ্ধিজীবী। তার আগে কোন বাঙালি বুদ্ধিজীবী এদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে শহীদ হওয়ার উদাহরণ নেই।

১৯৬৯ সাল। পূর্ব পাকিস্তানে চলছিল পাকিস্তানি স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে উত্তাল গণআন্দোলন। প্রবল আন্দোলনের মুখে নিহত হন ছাত্রনেতা আমানুল্লাহ আসাদুজ্জামান এবং সার্জেন্ট জহুরুল হক। সারাদেশে স্বৈরশাসক বিরোধী আন্দোলন এমন এক পর্যায়ে গিয়ে উপনীত হয় যে, আন্দোলনে যোগ দিতে থাকেন ছাত্র-শিক্ষক, কৃষক-শ্রমিক সর্বপরি সকল শ্রেণির মানুষজন। অবস্থা বেগতিক দেখে কেন্দ্রীয় সরকার সামরিক বাহিনীর মাধ্যমে পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করে। বিভিন্ন জায়গায় সান্ধ্যকালীন আইন ও ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। রাজশাহীতেও উঠেছিল আন্দোলনের ঝড়।
১৭ ফেব্রুয়ারি কারফিউ ছিল রাজশাহীতে। কিন্তু কারফিউ ভঙ্গ করে নেমে পড়ে রাজপথে প্রতিবাদী জনতা ও ছাত্রসমাজ। ড. শামসুজ্জোহা তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রক্টর। শহরে আন্দোলনে গিয়ে সামরিক সেনাদের হাতে আহত হয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন ছাত্র। সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তৎকালীন বাংলা বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মযহারুল ইসলামকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন ড. জোহা। আহত ছাত্রদের অবস্থা দেখে পরম স্নেহে কোলে তুলে নিয়ে তাদের ভর্তি করেন রাজশাহী মেডিকেলে। ছাত্রদের রক্তে তখন লাল হয়ে যায় পরনের কাপড়। ঐ অবস্থায় মেডিকেল থেকে ফিরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের একটি জরুরি সভা ডাকেন ড. জোহা।

সার্জেন্ট জহুরুল হককে হত্যার প্রতিবাদে ১৯৬৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস থেকে শহরে যাওয়ার চেষ্টা করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটে সেই মিছিলে গুলি করার প্রস্তুতি নেয় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। সে সময় ড. জোহা নিজের পরিচয় দিয়ে সেখান থেকে সরে যেতে বলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে। সেনা সদস্যরা তার সে দাবি মানতে অস্বীকার করলে তর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। একপর্যায়ে ড. জোহাকে গুলি করে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে বর্বর পাক সেনারা।
মৃত্যুর পর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবাশ বাংলাদেশ মাঠে জানাজা শেষে প্রশাসন ভবনের সামনে সমাধিস্থ করা হয় শহীদ শামসুজ্জোহাকে।
১৯৪৩ সালের পহেলা মে পশ্চিমবঙ্গের বাকুড়ায় জন্মগ্রহণ করেন ড. শামসুজ্জোহা। পিতা মুহম্মদ আব্দুর রশীদ। বাকুড়া জেলা স্কুলে ১৯৪০ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা করে কৃতিত্বের সঙ্গে ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। এরপর বাকুড়া ক্রিশিয়ান কলেজে দুই বছর পড়াশোনা করে অংশ নেন ইন্টারমিডিয়েট পরীক্ষায়। সেখানেও কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। এখানে আসার পর ড. জোহা ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগে। সেখান থেকে ১৯৫৩ সালে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন শেষে স্নাতকোত্তর ডিগ্রির জন্য গবেষণা শুরু করেন স্বনামধন্য রসায়নবিদ ড. মোকাররম হোসেন খন্দাকারের তত্ত্বাবধানে। ‘বিদ্যুতিক পদ্ধতিতে ক্রোমাইট খনিজের জারক প্রক্রিয়া' ছিল তার গবেষণা বিষয়। পরবর্তীতে ১৯৫৪ সালে ওই গবেষণা নিবন্ধ আকারে লন্ডনের ‘রসায়ন ও শিল্প' পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিল। ওই বছরই স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছিলেন ড. জোহা। ‘পাকিস্তান বিজ্ঞান গবেষণা' পত্রিকায় ১৯৫৫ সালে প্রকাশিত হয় তার ওই গবেষণার আরও একটি অংশ।
ড. জোহা প্রথমে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে খুবই স্বল্পকালের জন্য নিযুক্তি পান উন্নয়ন অফিসার হিসেবে। ফেব্রুয়ারি মাসের ২৩ তারিখ শিক্ষক হিসেবে রসায়ন বিভাগে যোগদান করেন তিনি। ড. জোহা ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৭ পর্যন্ত শাহ্ মখ্দুম হলের আবাসিক শিক্ষককের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬৮ সালের জানুয়ারি মাসে নরওয়ের অসলো বিশ্ববিদ্যালয়েরর এক বছর মেয়াদী উচ্চ গবেষণার জন্য স্কলারশিপ লাভ করেছিলেন তিনি। কিন্তু বিভাগ তাকে ছাড়েনি। ১৯৬৮ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে জীবনের শেষ সময় পালন করেন প্রক্টরের দায়িত্ব।

শহীদ ড. জোহা ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন। তখন তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যায়ের সলিমুল্লাহ্ মুসলিম হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। তার হাতে ছিল ‘রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই' লেখা প্ল্যাকার্ড। মিছিলে হেঁটেছিলেন সামনের সারিতে। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের সময়েও সক্রিয় সিভিল ডিফেন্স কর্মী হিসেবে দেখা যায় তাকে। এছাড়া ময়মনসিংহ বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিশি জুলুমের প্রতিবাদ মিছিলেও প্রথম সারিতে অংশ নিয়েছিলেন ডা. জোহা।
শহীদ ড. শামসুজ্জোহার স্মৃতি এখনও পরম শ্রদ্ধার সঙ্গে লালন করে আসছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিবছর ১৮ ফেব্রুয়ারি পালন করা হয় শহীদ শামসুজ্জোহা দিবস। তার সম্মানে বন্ধ রাখা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রম। যেখানে ড. জোহাকে হত্যা করা হয়েছিল সেখানে তৈরি করা হয়েছে স্মৃতিস্তম্ভ। আর আত্মোৎসর্গের মধ্য দিয়ে ড. জোহা হয়ে ওঠেন ইতিহাসের অংশ।

আগামী শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এ বছরের একুশে পদক দেওয়া হবে। ওইদিন বেলা ১১টায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে পদক হস্তান্তর অনুষ্ঠান হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হবেন।

বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এক সরকারি তথ্য বিবরণীতে এ কথা জানানো হয়েছে।
এর আগে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২১ সালের একুশে পদকপ্রাপ্তদের নাম ঘোষণা করা হয়। বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য ২১ জন বিশিষ্ট নাগরিককে এ বছর একুশে পদক দেওয়া হচ্ছে।

এ বছর ভাষা আন্দোলনে তিনজন, মুক্তিযুদ্ধ ক্যাটাগরিতে তিনজন, শিল্পকলায় সাতজন, ভাষা ও সাহিত্যে তিনজন, সাংবাদিকতা, শিক্ষা, গবেষণা ও অর্থনীতিতে একজনকে একুশে পদক দেওয়া হবে।

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, চলতি বছর মহান বিজয় দিবসে রাজধানীর আগারগাঁও থেকে উত্তরা রুটে মেট্রোরেল চলাচল করবে। বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর উত্তরা মেট্রোরেল ডিপো পরিদর্শনকালে তিনি এ কথা জানান।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, রাজধানীর আগারগাঁও থেকে উত্তরা পর্যন্ত অংশের মোট দৈর্ঘ্য ১১ দশমিক ৭৩ কিলোমিটার। এ পথে স্টেশন রয়েছে নয়টি। ১১ দশমিক চার কিলোমিটার ভায়াডাক্ট দৃশ্যমান। এ রুটে চলতি বছরে মহান বিজয় দিবসে মেট্রোরেল চলবে।

তিনি বলেন, আমরা আশা করছি মহান বিজয় দিবসে আগারগাঁও থেকে উত্তরা রুটে মেট্রোরেল চালু করতে পারবো। আমাদের দেশীয় ও বিদেশি এক্সপার্টরা অপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। করোনার মধ্যেও সবাই কাজ করে যাচ্ছেন। মেট্রোরেল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড (ডিএমটিসিএল)।

ডিএমটিসিএল’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাবেক সিনিয়র সচিব এম এ এন সিদ্দিক বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন বর্ষের ২০২১ সালে ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশে প্রথম মেট্রোরেল আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধনের পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে প্রকল্পের কাজ।

শিগগিরই ৫৬ হাজার শূন্য পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করতে যাচ্ছে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। কেননা আইন মন্ত্রণালয় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মূল বাধা ‘মামলার’ বিষয়ে মতামত দিয়েছে। বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যান আশরাফ উদ্দিন।

এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের ফলে প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকা বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক নিয়োগের জটিলতার অবসান ঘটতে যাচ্ছে।
এনটিআরসিএ’র চেয়ারম্যান জানিয়েছেন, আমরা আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পেয়েছি। এখন তা পাঠানো হবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে। এরপর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মতামতের ভিত্তিতে। মন্ত্রণালয়ের মতামত পর দ্রুততম সময়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলেও জানান তিনি।

এদিকে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, আমরা চাই মুজিববর্ষে ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে সব শূন্য পদ পূরণ করতে। সেজন্য এনটিআরসিএ মতামত এখনও মন্ত্রণালয়ে পাঠায়নি। পেলে দ্রুত সময়ে মতামত দিয়ে পাঠানো হবে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে শূন্য রয়েছে ৫৭ হাজারেরও বেশি পদ। নিয়োগে সুপারিশ করা হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভুলের কারণে নিযোগ না পাওয়া ১ হাজার ২৮৪ পদে আগের ভুক্তভোগীদের। সে বিবেচনায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হতে পারে ৫৬ হাজারের মতো শূন্য পদে।
প্রসঙ্গত, ১৩তম নিবন্ধনধারীরা রিট মামলা করেছিলেন বেসরকারি শিক্ষক পদে নিয়োগের সুযোগ পেতে। আদালতের নির্দেশনা আছে সেই রিট করা ২ হাজার প্রার্থীকে আবেদনের সুযোগ দিতে। এমনকি আদালত নির্দেশনা দেন যাদের বয়স ৩৫ বছর হয়ে গেছে তাদেরকেও আবেদনের সুযোগ দিতে।

magnifiermenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram