রবিবার, ১৯শে মে ২০২৪

নাজমুল হোসেন।।

আমার কাছে চিকিৎসক আর শিক্ষক দেবতাতুল্য। কারণ এই দুই পেশার মানুষের সমাজে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখার সুযোগ আছে। কিন্তু বাংলাদেশে দলাদলিতে শ্রদ্ধার আসন হারাচ্ছেন ডাক্তার আর মাস্টার মশাই। তাদের ক্যাডারভুক্ত করে স্বৈরাচার এরশাদ বারোটা বাজিয়েছেন।

ক্লাসের সেরা মেধাবীর প্রথম পছন্দ থাকে মেডিকেল কিংবা বুয়েট। অথচ চাকুরী জীবনে এসে দেখে মাথার ওপর ছড়ি ঘুরাচ্ছেন ভিন্নকেউ। তখন মানতে কষ্ট হয় তৈরী হয় মনোবেদনা আর সিস্টেম লস।`

করোনা আক্রান্ত ৬০ জন মৃত বাংলাদেশির মধ্যে দুইজনের নাম সবাই জেনেছেন বেশি। দুইজন ২২তম বিসিএস ক্যাডারের অফিসার, দুদকের পরিচালক জালাল সাইফুর রহমান এবং ডাঃ মঈন। এখন সরকারী চিকিৎসকেরা তাদের প্রতি রাষ্ট্রের অবহেলার অভিযোগ করছেন। তাদের ক্ষোভ এডমিন ক্যাডারের ওপর। কারণ একজন এসিল্যান্ড সড়কে মারাত্মক আহত হলে তাকে হেলিকপ্টারে নিয়ে আসার হয় আর পিপিই ছাড়া চিকিৎসা দিয়ে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ডাক্তারকে ভাড়া করা এ্যাম্বুলেন্সে আনতে হয় ঢাকা। অথচ এটাও সত্য ওসমানী মেডিকেলে সহকর্মিরাই ডাঃ মঈনের পাশে ছিলেন না। এই দোষারোপ চলতেই থাকবে।

এবার মূল প্রসঙ্গে আসি। বাংলাদেশের দুইটি খাতে এনজিওদের দাপট বেশি। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাত। কারণ দাতাগোষ্ঠী খুব ভালো করেই জানে, এই দুই খাতের উন্নয়ন মানেই বাংলাদেশ স্বাবলম্বী হয়ে যাবে। তাই উন্নয়নের বদলে বাংলাদেশকে গরীব দেখতেই তারা পছন্দ করে। আর একশ্রেণীর বাংলাদেশি আছেন যারা বিদেশী ভিক্ষায় বেঁচে থাকতে পছন্দ করেন। এনজিওগুলোর বেশিরভাগই নিয়ন্ত্রণ করেন সাবেক বাম নেতারা।মুখে সুন্দর বুলি আর স্বার্থের প্রশ্নে সবাই একাট্টা।

দেশের বেসরকারি হাসপাতাল ও প্রাইভেট ই্উনির্ভাসিটি লাভজনক। তাই মালিকেরা এই সেক্টরের সুরক্ষার জন্য রাজনীতিতে জড়িয়ে যান। আর নিজেদের ফায়দা রক্ষা করেন।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন বেসরকারি হাসপাতাল নামক কসাইদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাবেন তখন বেসরকারি একটি হাসপাতালের মালিকরা একহয়ে সরকারের কাছে লোকদেখানো নাকে খত দিচ্ছেন। এসবকিছুর নেতৃত্ব দিচ্ছেন সরকারের এক ডাক্তার প্রতিমন্ত্রী। যার নামেই একটা বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে।

অনেক বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় করোনার সময় অনলাইনে ক্লাস-পরীক্ষা নিচ্ছেন। কারণ সেমিস্টার ফি মওকুফ করতে তারা নারাজ। অথচ এসব শিক্ষা ব্যবসায়ীরা করোনা অজুহাতে শিক্ষকদের বেতন কম দিচ্ছেন। করোনা সংকটের সময় কোন বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা হাসপাতাল নিজেরাই স্বউদ্যোগে গবেষণা করতে নারাজ। বরং ফেসবুকে ত্রাণের নামে শিক্ষক সমিতি, বিএমএ, স্বাচিপ নেতারা ব্যস্ত সময় পার করছেন।

শিক্ষা ও স্বাস্থ্যখাতে নৈরাজ্যের কারণে প্রতিবছর অসংখ্য মেধাবী জনগণের ট্যাক্সের টাকায় প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা মেডিকেলে পড়ালেখা শেষ করেই উন্নত ভবিষ্যতের জন্য বিদেশ চলে যান। সেখানেই স্থায়ী আবাস গড়ে তুলেন। বাংলাদেশি কমিউনিটি শক্তপোক্ত হয়। এরপর বৃদ্ধ বাবা-মাকে বিদেশে নিতে টানাটানি শুরু হয়।

মাত্র বিশ লাখ টাকার শিক্ষাবৃত্তি দিয়ে অস্ট্রেলিয়া, ব্রিটেন, আমেরিকা, নেদারল্যান্ড, জার্মানি কিংবা জাপান বাংলাদেশের মেধাবীদের নিজেদের আজীবনের সম্পদ বানিয়ে নেয়। আর কিছুদিন পরপর পত্রিকায় হেডলাইন দেখি, অমুক আবিস্কার করেছেন বাংলাদেশি বংশোদ্ভুত বিজ্ঞানী কিংবা চিকিৎসক। আমরা খুশিতে আত্মহারা হই। তৃপ্ত হই। অথচ গরীব দেশের টাকা খরচ করে এসব মেধাবীরা বিদেশেই স্থায়ী হচ্ছেন বাধ্য হয়ে। সরকার সুযোগ করে দিলে এই রত্মগুলো বাংলাদেশে ফিরে আসতো। কিন্তু সেই ব্যবস্থা বাংলাদেশে নেই।

ধরা যাক, পাটের জন্মরহস্য আবিস্কারক ড. মাকসুদূল আলমের কথা। বাংলাদেশি বংশদ্ভেূাত বলেই উনি জীবন সায়াহ্নে দেশকে প্রতিদান দিয়ে গিয়েছেন। কারণ তাঁকে সরাসরি সহযোগিতা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নইলে আমলাতান্ত্রিক ম্যারপাঁচে ভদ্রলোকের জীবন কাহিল হয়ে যেত। অনেক প্রবাসী মেধাবী বাংলাদেশি মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চান কিন্তু রাষ্ট্রযন্ত্রের সিস্টেম তাঁকে স্বাগত জানায় না।

বঙ্গবন্ধু আমলাতন্ত্রকে ভাঙতে চেয়েছিলেন বলেই বাকশাল পদ্ধতি চালু করেছিলেন। কিন্তু বাকশাল সফল করার আগেই তাঁকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। পাকিস্তান আমলে প্রতাপশালী ছিলো আর্মি অফিসাররা। আর বেশিরভাগ সিএসপি অফিসার আর্মিদের কাছ থেকে ফায়দা নিতো কিন্তু বাঙালির উন্নয়নে কিছুই করেনি । সামরিক বেসামরিক আমলাতন্ত্রের কারণে সবসময় অবহেলিত ছিলো গোটা পূব পাকিস্তান। বাঙালি সিএসপি অফিসারদের কিছু ছিলেন দেশপ্রেমিক।

শোষণ আর বঞ্চণার বিষটি বুঝতে পেরে ১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দে বঙ্গবন্ধু দিয়েছিলেন ছয় দফা প্রস্তাব। বঙ্গবন্ধুর মত রাজনীতিবিদদের কাছে ছয়দফা প্রস্তাবের বিষয়টি তুলে ধরেছিলেন বাঙালি শিক্ষক এবং আমলারা। বঙ্গবন্ধুর সাথে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় ফাঁসির মঞ্চে যেতে প্রস্তুত ছিলেন বাঙালি সেনা আর আমলারা। অথচ স্বাধীনতার পর সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশে আমলাতান্ত্রিক দৌরাত্বের অবসান হয়নি ।

বঙ্গবন্ধু সরকারের শিক্ষাসচিব হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক ড. কবীর চৌধুরীকে।কিছু আমলা সেই সিদ্ধান্ত মানতে পারেননি। তারা মাস্টার মশাইকে ফেল করাতে ষড়যন্ত্র শুরু করেন। দশজন আমলা গিয়ে ছলে বলে ড. কবীর চৌধুরীর বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর কাছে নালিশ জানাতে শুরু করেন।পরবর্তীতে তাঁকে সরিয়ে নিয়মিত আমলাকেই শিক্ষা সচিবের দায়িত্ব দেয়া হয়।

১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে পররাষ্ট্র, প্রশাসন এবং পুলিশ ক্যাডারদের নিয়োগ দেন বঙ্গবন্ধু। মুক্তিযোদ্ধা এই ব্যাচের লৌকিক নাম সেভেনটিথ্রি ব্যাচ। আমলাতান্ত্রিক ম্যারপাঁচ বন্ধ করতেই বঙ্গবন্ধু বাকশাল গঠন করেন। সেনা, এডমিন, পুলিশ, শিক্ষক সবাইকে তিনি একাতারে নিয়ে আসেন। কিন্তু সফল হতে পারেননি। তাইতো বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের পর আমলাদের চরিত্র বদলাতে সময় লাগেনি।

জিয়া এবং এরশাদের আমলে সিভিল আমলাদের গায়ে টোকা লাগেনি। কারণ অন্য আমলারা শুধু এডমিন ক্যাডারকেই ভয় পান। একারণেই ক্ষমতা পোক্ত রাখতে সাবেক সেনা অফিসারদের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রী কিংবা উপদেষ্টা পদে বসালেও সচিব পদে হাত দেননি।

জিয়াউর রহমান আমলাতান্ত্রিক বিভাজন তৈরী করতে একটা ছক কষেন। বাস্তবায়নের শুরুতেই নিহত হন তিনি। স্বৈরাচার এরশাদ জিয়ার নেয়া প্রায় সব কিছু এগিয়ে নিয়ে যান। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে ২৭টি ক্যাডার তৈরী করেন। যেই বিধান এখনও চলমান। এরপর শিক্ষা, স্বাস্থ্য, প্রকৌশলসহ বিভিন্ন ক্যাডারের অফিসাররা এডমিন ক্যাডারকে দোষারোপ করেই চলেন। আর নিজেদের বঞ্চিত ভেবে হতাশ হয়ে যান।

এরশাদ উপজেলা সিস্টেমকে সফল করতে ১৯৮৪ এবং ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নয় শতাধিক উপজেলা ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেন। এরপর শুরু হয় মাথাভারী প্রশাসনের যাত্রা। চেয়ার নেই কিন্তু অফিসার অনেক। অফিসারদের সাহেব বানাতে সাভারে লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র – বিপিএটিসি প্রতিষ্ঠা করা হয়। যেখানে একজন তরুণ-তরুণীকে মানুষ থেকে অফিসার বানানোর ট্রেনিং দেওয়ার রেওয়াজ চালু হয়।

শুধু সহকারী কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পাওয়া অফিসাররা পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন দপ্তরের চেয়ার দখল করা শুরু করেন। এই ধারা এখনও অব্যাহত আছে। যেমন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের শুরু থেকেই চেয়ারম্যান পদে শিক্ষকরাই আসীন ছিলেন। ওয়ান ইলেভেনের পর ড. সা’দত হোসাইন চেয়ারম্যান হওয়ার পর শিক্ষকেরা তাদের হারানো চেয়ারে আর বসতে পারেননি। একই অবস্থা সায়েন্স ল্যাবের চেয়ারম্যান পদেও। অদূর ভবিষ্যতে ইউজিসির চেয়ারও হয়তো হাতছাড়া হয়ে যাবে। কারণ সংস্থাটির সাংগঠনিক কাঠামো প্রশাসন ক্যাডারের আদলে করা হয়েছে।

চিকিৎসকদের একই অবস্থা। তাদের সর্বোচ্চ পদ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি। সরকারী হাসপাতালের পরিচালক এবং ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের বড় চেয়ারগুলো অনেক আগেই চিকিৎসকদের হাতছাড়া হয়ে গেছে। এরমধ্যে চিকিৎসকরা নিজেরাই সকাল আটটা থেকে দুপুর ২টা অফিস নিয়ম চালু করেছেন। যাতে প্রাইভেট প্র্যাকটিস করে অল্পদিনেই কোটিপতি হওয়া যায়। হাসপাতালের জুনিয়র অফিসাররা কলুর বদলের মত দায়িত্ব পালন করেন কিন্তু প্রফেসর সাহেব মাসে একটা অপারেশন করতে নারাজ। তিনি ব্যস্ত ব্যক্তিগত লাভের বিষয় নিয়ে। বিএমএ, স্বাচিপ, ড্যাব নামের সংগঠনগুলো আছে ডাক্তারদের দলবাজ বানাতে।

ক্লাসের মেধাবী ছেলে কিংবা মেয়েটি কিন্তু বুয়েট অথবা মেডিকেলে পড়ালেখার সুযোগ পায়। কিন্তু সার্ভিসে এসে দেখে তাদের সর্বোচ্চ পদ প্রধান প্রকৌশলী কিংবা ডিজি হেলথ। তখন একধরণের হতাশা তৈরী হয়। অনেকেই তখন নিজের সার্ভিসকে ভালোবাসার বদলে নিজের আখের গোছাতে ব্যস্ত থাকেন। একারণেই হতাশা তৈরী হয়। একারণে ইদানিং একজন বুয়েট স্নাতক কিংবা ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকের বিসিএস পরীক্ষায় প্রথম পছন্দ থাকে এডমিন কিংবা পুলিশ। কারণ হাসপাতালের পরিচালকের জন্য বরাদ্দ হাইস গাড়ি আর একজন ডিসি কিংবা এসপি পান পাজেরো গাড়িসহ অনেক সুযোগ সুবিধা।

আমাদের সমাজব্যবস্থা সরকারী আমলাদের ক্ষমতাকে কুর্নিশ করে। যেকারণেই একজন রাজনীতি করা ত্যাগী সৎ নেতার পাশে কেউই থাকে না। ছাত্ররাজনীতি করে মূল রাজনীতিতে আসা তৃণমূলের রাজনীতিবিদ মানুষটি অল্পতেই কোটিপতি হতে চান। কারণ তার কাছে মানি মানেই পাওয়ার। সেই পলিটিক্যাল পাওয়ারের কারণে পুচকা আমলারা ভালো পোস্টিং কিংবা সুবিধার রাজনীতিবিদের পেছনে ছোটেন। আর রাজনীতিবিদ কোনমতে গ্রুপিং সাইজ হলেই আমলাদেরও পল্টি নিতে সময় লাগে না।

একজন ডিসি কিংবা এসপি সাহেব মাঠ প্রশাসনে নিজেদের কর্তৃত্ব জাহির করতে ব্যস্ত থাকেন। কারণ তাদের হাতেই রাষ্ট্রের সব ক্ষমতা। এমন একটা বলয় তৈরী করেন যখন প্রধানমন্ত্রী বাধ্য হয়ে নিজ দলের নেতা-কর্মিদের পরিবর্তে ডিসি-এসপি সাহেবদের ওপর আস্থাশীল হতে হয় । সমালোচকেরা বলেন, ডিসি সাহেবরা এখন জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আর এসপি সাহেবরা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। ওসি সাহেব থানা আওয়ামী লীগের মা-বাপ।

অনেকে বলেন, এখন জেলায় হয় ডিসিমেলা আর উপজেলায় হয় ইউএনও মেলা। অমুক দিবস, তমুক দিবস, অমুক স্কুল কমিটির চেয়ারম্যান, তমুক কমিটির সভাপতি ইত্যাদি। অনেক অপ্রয়োজনীয় কাজে ব্যস্ত সময় পার করতে হয় মাঠ প্রশাসনের অফিসারদের। এর মধ্যে আছে প্রটোকল নামক জবরদস্তিমূলক সম্মান নেয়ার অসুস্থ প্রতিযোগিতা। মাঠ প্রশাসনের মূল কাজ বাদ দিয়ে অনিচ্ছা সত্ত্বেও ইউএনও কিংবা ওসি সাহেব হুকুম বাস্তবায়ন করতেই ব্যস্ত সময় পার করেন। অথচ এখন অনেক মানবিক ডিসি-এসপিদের আমরা দেখতে পারি। আবার উদ্ভাবনী ক্ষমতা নিয়ে অনেক ইউএনও-এসিল্যান্ড-ওসিরা বিভিন্ন উপজেলার চিত্র বদলে দিচ্ছেন।

আমি বিশ্বাস করি, ইদানিং মাঠ প্রশাসনের অফিসারদের সেবার মানসিকতাই বেশি। নইলে করোনা ভাইরাসের সময় উনারা যেভাবে জীবন বাজি রেখে দায়িত্ব পালন করছেন তাদের স্যালুট দেই। পুলিশ সদস্যরা একাত্তরের রাজারবাগের শহীদ পুলিশ সদস্যদের উত্তরসূরি হিসেবে কাজ করছেন। কারণ করোনা মহামারীতে পুলিশ নিয়ে মানুষের নেতিবাচক ধারণা বদলের পরীক্ষা। আমার বিশ্বাস, পুলিশ এই যুদ্ধে সফল হবেই।

আমার মতে, শিক্ষা ও চিকিৎসা দুই খাতকে ক্যাডার সার্ভিস থেকে বাদ দিয়ে স্বতন্ত্র কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসা সময়ের দাবি। তাহলে এডমিন-পুলিশ ক্যাডারের সাথে তুলনা করে শিক্ষক কিংবা চিকিৎসকেরা দ্বিধায় ভুগবেন না। ব্যাংকারা নিজেদের মত করেই চলতে পারলে মাস্টার-ডাক্তার মশাইও পারবেন। সমাজে চিকিৎসক এবং শিক্ষক দেবতাতুল্য। তাদের সেই সম্মানের আসনে বসানো উচিত।

আমার মতে, আমলাতন্ত্রের চাবিকাঠি এডমিন ক্যাডারের হাতেই থাকা উচিত। জুনিয়রদের স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়া উচিত। গাইবান্ধার ডিসি সাহেব সাদুল্লাপুরের ইউএনও নবীনেওয়াজের সাথে যেটা করেছেন তা খুবই দু:খজনক। সাহসী ইউএনও সাহেব ২২ মার্চ উপজেলা লকডাউন করলে ডিসি সাহেব তা অস্বীকার করে নিজেদের দৈন্য প্রকাশ করেছেন। আমার বিশ্বাস, ডিসি সাহেবকে কোনও সচিব হয়তো ধমক দিয়েছেন।

প্রশাসন কতটা চমৎকার হয় তার উদাহরণ প্রতিবেশি দেন ভারত। দেশটির মন্ত্রিপরিষদ সচিব রাজিব গাউবা করোনা ভাইরাস যুদ্ধের প্রধান সেনাপতি। তবে সেদেশের জুনিয়র অফিসাররা রাজনৈতিক দলাদলির মধ্যে নয়, নিরপেক্ষভাবে কাজ করার সুযোগ পান। বাংলাদেশেও নিশ্চয়ই আমতান্ত্রিক লালফিতার দৌরাত্ব বন্ধ হবে একদিন। উদ্যোমী অফিসাররা এগিয়ে নিয়ে যাবে মাঠ প্রশাসনকে।

আর চিকিৎসকদের মধ্যে সিনিয়রদের উপদেষ্টা রেখে পুরো স্বাস্থ্যখাতকে তরুণদের হাতে ছেড়ে দেন। সাফল্য আসবেই। কারণ এই করোনা পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকেরা।

তাই স্বাস্থ্য ও শিক্ষা ক্যাডার বিলুপ্ত করা উচিত। কারণ এই ক্যাডার প্রথার কারণে অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরী হচ্ছে। দেবতারা অসুর হয়ে যাচ্ছেন। তাদের জন্য সবচেয়ে বড় জনতার সম্মান আর আর্থিকভাবে স্বচ্ছল রাখলে বাংলাদেশ বদলে যাবে। ব্যাংকারদের মতই স্বতন্ত্র থাকুক আমাদের চিকিৎসক এবং শিক্ষকেরা।

এবার ভিন্ন অভিজ্ঞতা বলি। সেদিন এক ব্যাংকার ছোটভাইয়ের অভিজ্ঞতা শুনে তাজ্জব বনে গেলাম। লকডাউনের মধ্যে একজন গ্রাহক সাড়ে ছয় লক্ষ টাকার ব্যালান্স থাকলেও মাত্র দুই হাজার টাকা তুলতে এসেছেন। জিজ্ঞাসা করতেই সোজা উত্তর, ঘরে বোর ফিল করছিলাম, তাই পুলিশকে চেক দেখিয়ে ব্যাংকে এসেছি। পরেরদিন আসবেন এই দুই হাজার টাকা জমা দিতে।

কে বেশি সৌভাগ্যবান? বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী নাকি কানাডার প্রধানমন্ত্রী? নি:সন্দেহে কানাডার। কারণ, কানাডার জনগণ করোনা পরিস্থিতিতে সরকারের কথা মেনে চলেন। আর বাংলাদেশি আমজনতা প্রধানমন্ত্রীকে সহযোগিতা না করে নিজেদের খেয়ালখুশি মতোই চলতে পছন্দ করেন। যত কড়া নির্দেশেই দেয়া হোক না কেন তা না মানার মধ্যে যত কৃতিত্ব! আর দোষ সব সরকারের।

লেখক : গণমাধ্যমকর্মী।

নিজস্ব প্রতিনিধি।।

ড. সা’দত হুসাইন সাবেক মন্ত্রিপরিষদ ও শিক্ষাসচিব এবং পিএসসির চেয়ারম্যান রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি আছেন। গত সোমবার তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার বিকেলে এ তথ্য জানান তার ছেলে শাহজেব সা’দত। তিনি বলেন, বাবা ‘ক্রিটিক্যাল’ অবস্থায় হাসপাতালে আছেন।

ড. সা’দত হুসাইনের অসুস্থতার কথা জানতে পেরে তার অনেক সাবেক সহকর্মী ও ভক্তরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে আরোগ্য কামনা করছেন।

নিজস্ব প্রতিনিধি।।

দুর্বৃত্তরা বঙ্গবন্ধু ছাত্র পরিষদ জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক সাব্বির আহমেদ রাসেলকে (২৭) কুপিয়ে হত্যা ও তার ভাই আল-আমিনকে গুরুতর জখম করেছে। বুধবার মধ্যরাতে যশোর সদর উপজেলার আরবপুর ইউনিয়নের বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের সরদারপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত রাসেল আরবপুর ইউনিয়নের ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি বালিয়া ভেকুটিয়া গ্রামের আবু সালেক মৃধার ছেলে। আহত আল-আমিন রাসেলের বড়ভাই।

নিহতের বাবা জানান, বুধবার রাত দশটার দিকে তিনিসহ তার দুই ছেলে বাড়ির সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়েছিলেন। এ সময় এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী শামিনুর ও পিচ্চি বাবু দ্রম্নতগতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাচ্ছিল। বাইক আস্তে চালাতে বলায় তারা দাঁড়িয়ে যায় এবং হত্যার হুমকি দিয়ে চলে যায়। এর এক ঘণ্টা পর তারা আরও লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে

আসে এবং রাসেল ও আল আমিনকে কুপিয়ে জখম করে চলে যায়। স্থানীয়দের সহায়তায় তাদের দ্রম্নত হাসপাতালে পাঠানো হয়।

যশোর জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক এম আব্দুর রশিদ জানান, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে হাসপাতালে আনার পথেই রাসেলের মৃতু্য হয়। তার ভাইকে ভর্তি করে নেওয়া হয়েছে। তার অবস্থাও খুবই আশঙ্কাজনক। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়েছে।

আরবপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান শাহারুল ইসলাম জানান, হামলাকারীরা মাদক ব্যবসায়ী। এই দুর্বৃত্তদের অপকর্ম রুখতে তিনি দশদিন আগেও ইউনিয়ন পরিষদের প্যাডে পুলিশ প্রশাসনের কাছে আবেদন করেছেন। সেই দুর্বৃত্তরাই এই হত্যাকান্ড ঘটাল।

নিহত রাসেলের পিতা আবু সালেক মৃধার বরাত দিয়ে শাহারুল ইসলাম আরও জানান, আবু সালেক মৃধা দাবি করেছেন, একই এলাকার যুবলীগ নামধারী শহীদ এই সন্ত্রাসীদের নিয়ন্ত্রণ করে। শহীদের নির্দেশে তার বাড়িতে বসে পরিকল্পনা করেই এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এর আগেও শহীদ কয়েকবার রাসেলের ওপর হামলার চেষ্টা করেছে।

তিনি আরও জানান, মাদক ব্যবসায় বাধা দেয়ায় পূর্বশত্রম্নতার জের ধরে এই চক্রটি এর আগে ২০১৯ সালের ১২ জুন রাসেলকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার বাড়িতে বোমা হামলাও চালিয়েছিল।

যশোর কোতোয়ালি থানার ইনসপেক্টর (তদন্ত) তাসনিম আলম জানান, পূর্বশত্রম্নতার জের ধরে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জড়িতদের ধরতে অভিযান শুরু করেছে।

নিজস্ব প্রতিনিধি।।

খাবারের অভাবে থাকা শিক্ষার্থীদের তালিকা তৈরি করতে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। খাবারের সমস্যায় থাকা শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পাঠাতে বলা হয়েছে জেলা-উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং পিটিআই সুপারদের।

একই সাথে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ স্থাপন করে করোনা ভাইরাস বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে বলা হয়েছে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের। আর মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে অর্থাৎ দায়িত্বরত জেলা-উপজেলায় অবস্থান করতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত ৯ এপ্রিল প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপ-পরিচালকদের মাধ্যমে টেলিফোনে মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের এসব নির্দেশনা দিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।

রংপুর বিভাগীয় উপ পরিচালকের দপ্তর সূত্র জানায়, মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কথা জানিয়ে সব জেলা-উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও পিটিআই সুপারদের  বৃহস্পতিবার (১৬ এপ্রিল) চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ স্থাপন করে করোনা ভাইরাস বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি করতে বলা হয়েছে কর্মকর্তাদের। একইসাথে খাবারের সমস্যায় থাকা শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রস্তুত করে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের পাঠাতে বলা হয়েছে জেলা-উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এবং পিটিআই সুপারদের।

করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপী গরিব মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য জাতিসংঘ তহবিল গঠন না করলে ভয়াবহ পরিণতি হতে পারে। বিশ্ব খাদ্য সংস্থার (ডাব্লিউএফপি) প্রধান ডেভিড বেসলে বলেছেন, দরিদ্রদের মুখে খাবার তুলে দেয়ার ব্যবস্থা জাতিসংঘ করতে না পারলে অন্তত তিন কোটি মানুষ অনাহারে মারা যেতে পারে।

তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন দেশের সরকারের আর্থিক সহায়তায় বিশ্বে অন্তত একশ মিলিয়ন মানুষের মুখে খাবার তুলে দেয় ডাব্লিউএফপি। তার মধ্যে অন্তত ৩০ মিলিয়ন মানুষ খাবার না পেলে অনাহারে মারা যাওয়ার ঝুঁকিতে আছে। জীবন বাঁচাতে হলে তাদের মুখে খাবার তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।

করোনাভাইরাসের কারণে সারাবিশ্বের অর্থনীতি থমকে গেছে। ডেভিড বেসলে মনে করেন, এ ধরনের পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশ ডাব্লিউএফপিকে অর্থ সহায়তা বন্ধ করে দিতে পারে। আর এতে করে বিপর্যয় আরও বেড়ে যাবে।

তিনি শঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, যদি আমরা অর্থায়ন বন্ধের কবলে পড়ি, সর্বনিম্ন ৩০ মিলিয়ন মানুষ মারা যাবে। তিন মাসের বেশি সময় ধরে দিনে তিন লাখ মানুষের মৃত্যু হবে। সে কারণে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় গৃহীত পরিকল্পনার সঙ্গে অর্থনীতির বিষয়টি বিবেচনা করার কথাও বলেছেন তিনি।

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণে সমগ্র বাংলাদেশকে সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে সংক্রমিত এলাকাগুলোতে জনসাধারণের জন্য কিছু ‘কঠোর নির্দেশানা’ জারি করেছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার দিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ স্বাক্ষরিত ওই ঘোষণা পত্রটি প্রকাশ করা হয়।

ঘোষণায় বলা হয়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে সংক্রমক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৬১ নং আইন) এর ১১ (১) ধারার ক্ষমতাবলে সমগ্র বাংলাদেশকে সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়েছে।

ঘোষণা পত্রে বলা হয়, যেহেতু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে প্রতিয়মান হয়েছে যে, বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস মহামারী আকারে বিস্তার লাভ করায় লাখ লাখ লোক আক্রান্ত হয়েছে এবং লক্ষাধিক লোক মৃত্যুবরণ করেছে এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে। হাঁচি, কাশি ও পরস্পর মেলামেশার কারণে এ রোগের বিস্তার ঘটে। এখন পর্যন্ত বিশ্বে এ রোগের কোন প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী এ রোগের একমাত্র প্রতিষেধক হলো, পরস্পর হতে পরস্পরকে নির্দিষ্ট দূরত্বে অবস্থান করা।

জনসাধারণকে একে অপরের সাথে মেলামেশা নিষিদ্ধ করা ছাড়া সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব নয় উল্লেখ করে ঘোষণায় বলা হয়, ‘যেহেতু, বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় এ রোগের সংক্রমণ ঘটেছে। সেকারণে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে সংক্রমক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৬১ নং আইন) এর ১১ (১) ধারার ক্ষমতাবলে সমগ্র বাংলাদেশকে সংক্রমণের ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হলো।’

সংক্রমিত এলাকাগুলোর জনসাধারণের জন্য কিছু কঠোর নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

নির্দেশনাগুলো হল-

• করোনাভাইরাসের সংক্রমন প্রশমনে জনগণকে অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে। অতীব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হওয়া যাবে না।

• এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায় চলাচল কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হলো।

• সন্ধ্যা ৬টা হতে সকাল ৬টা পর্যন্ত কেউ ঘরের বাইরে যেতে পারবেন না। এ আদেশ অমান্যকারীর বিরুদ্ধে সংক্রমক রোগ (প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও নির্মূল) আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৬১ নং আইন) এর ১১ (১) ধারার ক্ষমতাবলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এছাড়া স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও কর্তৃপক্ষের সহায়তা নিয়ে আইনের সংশ্লিষ্ট অন্য ধারাগুলো প্রয়োগ করতে পারবে।

সারাদেশের প্রাথমিক শিক্ষকদের কাছে মডেল হয়েছে যশোর। যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ অহিদুল আলমের উদ্ভাবিত পেনশন এবং পিআরএল সিস্টেম শিক্ষকদের হাতে পৌঁছানোর কারণে এটি ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। যশোরের এই সিস্টেম বর্তমানে দেশের অন্য জায়গায় কাজে লাগানো হচ্ছে। যশোরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা পেনশন এবং পিআরএল জেলায় না এসে উপজেলায় বসে পাচ্ছেন। ইতোমধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ের কয়েকশ’ শিক্ষক কর্মচারী কোন রকম ঝুঁকি-ঝামেলা ছাড়াই উপজেলায় বসে এই সুবিধা পেয়েছেন। যা ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নজরে এসেছে।

প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, শিক্ষকরা চাকরি শেষে পেনশন এবং পিআরএল পাওয়া নিয়ে নানা ঝামেলা পোহান। এতদিন জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে তাদের এই সুবিধা নিতে হতো। আর এটি নিতে গিয়ে শিক্ষকরা মারাত্মক হয়রানির শিকার হতেন। দিনের পর দিন ঘুরতে হতো তাদেরকে।

সরকারি কর্মচারীরা অবসরে যাওয়ার পূর্বে ছুটি পাওনা সাপেক্ষে এক বছর পিআরএল ভোগ করেন। বিষয়টি সরকারি বিধি অনুযায়ী দাফতরিক হলেও নানা কারণে তা সহজে পাওয়া যায় না। জেলা এবং উপজেলা অফিসের কতিপয় কর্মকর্তার অনৈতিক আচরণের শিকার হন জীবনের বড় সময়টি সরকারি কাজে ব্যয় করা কর্মচারীদের। একইভাবে পেনশনের অর্থ পেতে বিলম্ব হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। এ কারণে জীবনের শেষ সময়ে এসে সরকারি কাজে নিয়োজিত থাকা ব্যক্তিটির মনোকষ্টে ভুগতে হয়।

এই অবস্থা থেকে মুক্তি দেয়ার উদ্যোগ নেয় যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। এ ধরনের উদ্যোগ বাংলাদেশে এটিই প্রথম ছিল। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ২০১৮ সালে প্রথম শুরু করে শিক্ষকদের হাতে পেনশন-পিআরএলের কাগজপত্র পৌঁছে দেয়ার কাজ।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে খোঁজ খবর নিয়ে জানা গেছে, যশোর জেলায় মোট ১২৯২টি স্কুলে আট হাজার শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন। এসব শিক্ষকের মধ্যে কারা পেনশন এবং পিআরএল পাবেন তার একটি তালিকা করা হয়েছে। তালিকা অনুযায়ী শিক্ষকদের জন্ম তারিখের ভিত্তিতে পেনশন এবং পিআরএল প্রদান ঠিক করা হয়। এরপর পেনশন কিংবা পিআরএলে যাওয়ার কমপক্ষে দু’ মাস পূর্বে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে তার পেনশন কিংবা পিআরএলের তারিখ জানিয়ে পত্র দেয় শিক্ষা অফিস।

একইসঙ্গে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সরবরাহ করা হয়। শিক্ষকদের দেয়া চিঠিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে আবেদন করতে অনুরোধ করা হয়। শিক্ষকদের কাছ থেকে আবেদন পাওয়ার পর উপজেলা শিক্ষা অফিস জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পেনশন কিংবা পিআরএল প্রদানের কার্যক্রম গ্রহণ করেন। সর্বশেষ, জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার প্রতি দু’মাস অন্তর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে উপস্থিত হয়ে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক-কর্মচারীকে পেনশন কিংবা পিআরএলের আদেশ সংক্রান্ত পত্র হস্তান্তর করেন। ফলে, জেলা অফিসে এসে অহেতুক হয়রানি থেকে রক্ষা পাচ্ছেন শিক্ষকরা।

এই পদ্ধতি ইতোমধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। হয়রানি এবং তদবিরের হাত থেকে রেহাই পাওয়ায় সংশ্লিষ্টরা খুব খুশি। সারাদেশের মধ্যে এই পদ্ধতি সর্বপ্রথম যশোরে শুরু হয়। বিষয়টি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অবহিত হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা পদ্ধতিটির প্রশংসাও করেছেন। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, যশোরের এই পদ্ধতিটি বিভিন্ন জেলায় কার্যকর করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় পেনশন এবং পিআরএল প্রদানের এই পদ্ধতিটি ইতিবাচক হিসেবে নিয়েছে। তাদের মতে, এভাবে পেনশন-পিআরএল প্রদান করলে শিক্ষক-কর্মচারীরা অহেতুক হয়রানি থেকে রক্ষা পাবেন। আর এটি হলে জীবনের শেষ সময়ে এসে স্বস্তি মিলবে শিক্ষক-কর্মচারীদের।

যশোরের কয়েকজন শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ৩০-৩৫ বছর এক নাগাড়ে শ্রম দেয়ার পর জীবনের শেষ বেলায় কেউই দুর্ভোগ চান না। তারপরও পেনশন এবং পিআরএল নিয়ে দুর্ভোগ থাকেই। বর্তমানে উপজেলা পর্যায়ে গিয়ে যেভাবে এগুলো দেয়া হচ্ছে তা অনেকাংশে ঝামেলাহীন। অন্ততপক্ষে জেলা অফিসে গিয়ে টেবিলে টেবিলে ঘুরতে হচ্ছে না। এভাবে দিলেও বৃদ্ধ বয়সে খানিকটা স্বস্তি পাওয়া যাবে।

এসব বিষয়ে যশোর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শেখ অহিদুল আলম বলেন, শিক্ষকরা দেশ গঠনে আন্তরিকভাবে শ্রম দেন। কিন্তু জীবনের শেষ সময়ে এসে পেনশন কিংবা পিআরএল পাওয়া নিয়ে নানা দুর্ভোগ পোহাতে হয় তাদের। এ কারণে দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে মূলত এ কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।সুত্র এডু.বা

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

করোনাভাইরাসে ক্ষতিগ্রস্ত সবশ্রেণির মানুষদের সহযোগিতার কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা ৫০ লাখ মানুষকে রেশন কার্ড দেব।

বৃহস্প‌তিবার শুরু হওয়া ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এ কথা বলেন। ঢাকা বিভাগের নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, নরসিংদী, ফরিদপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও গোপালগঞ্জ জেলার সরকারি কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে এই ভিডিও কনফারেন্স হ‌চ্ছে।

গণভবন থে‌কে সকাল ১০টায় কনফারেন্স শুরু হয়। অনুষ্ঠানটি বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার সরাসরি সম্প্রচার করছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে নানা কর্মসূচি নিয়েছিলাম কিন্তু করোনা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ার কারণে কিছুটা ধাক্কা আমাদের দেশে আসে আসে। এজন্য আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন এবং ২৬ মার্চের অনুষ্ঠান বাতিল করি। জনসমাগম বাদ দিতে এসব করেছি আমরা।

শেখ হাসিনা বলেন, ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জ জেলাসহ বেশ কয়েকটি জেলায সব থেকে বেশি আক্রান্ত। অন্যান্য জেলায়ও কিছু আছে কিন্তু ঢাকা এবং এর আশপাশে ভাইরাস কেন এত বেশি হলো। এটি নিয়ে আপনাদের সাথে আলোচনা করতে চাই। এ রোগে এ পর্যন্ত যারা মারা গেছেন তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি আমি। যারা এখন চিকিৎসারত আছেন তারাও দ্রুত আরোগ্য লাভ করুক, এটাই আমি চাই।

তিনি বলেন, যেহেতু সবকিছু এখন বন্ধ। অনেক মানুষের কষ্ট হচ্ছে। যারা দিনমজুর কৃষক-শ্রমিক-মেহনতী মানুষ, খেটে খাওয়া মানুষ, ছোট ব্যবসায়ী, এমনকি নিম্নবিত্তদের অনেক কষ্ট হচ্ছে। আমরা প্যাকেজ ঘোষণা করেছি। সবাইকে সহযোগিতা করব। এমনকি এটা আমরা শুরু করেছি। মানুষের কাছে হাত পাততে পারে না যারা, তাদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নিয়েছি। আমরা আরও ৫০ লাখ মানুষকে রেশন কার্ড করে দেব। ১০ টাকার ওএমএস চাল নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় এটা স্থগিত করি।

সরকারপ্রধান বলেন,আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, পুলিশ, কোস্টগার্ড যে যেখানে আছে প্রত্যেকে কিন্তু অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। চিকিৎসক ও নার্সরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন।

`এই করোনাভাইরাস এমন একটা জিনিস সারা বিশ্বে এ ধরনের ঘটনা আর কখনও দেখা যায়নি। সারাবিশ্বে ২৫০ কোটি মানুষ ঘরবন্দি। এটি একটি অদৃশ্য শক্তি, যা চোখে দেখা যায় না। এর প্রভাবে সারা বিশ্ব একটা জায়গায় চলে এসেছে। সারা বিশ্বের অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক মন্দা হবে। এভাবে চিন্তা করে আমরা ইতোমধ্যেই ৯২ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজ তৈরি করেছি।

মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রস্তুত করা হলেও নির্ধারিত সময়ে ফল প্রকাশ হচ্ছে না। তবে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে ফল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটি।

জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব কমিটির সভাপতি ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ফল দেওয়া যাবে না তা নয়, কিন্তু এখন কোনোভাবেই ফল ঘোষণা করা হবে না। গাড়ি-ঘোড়া চলাচল শুরু হলে, পরস্থিতি স্বাভাবিক হলে ফল প্রকাশ করা হবে। ’

শিক্ষা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকবছর ধরেই পাবলিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৬০ দিনের মধ্যেই ফল প্রকাশ করে আসছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। করোনাভাইরাসের প্রকোপের কারণে এবার তা হচ্ছে না।

করোনাভাইরাসের প্রকোপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব অফিস আদালত কয়েকদফায় ছুটি ঘোষণা করে সরকার। আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সব অফিস আদালত বন্ধ রয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে সীমিত আকারে ব্যাংক, আর জরুরি সেবাদনকারী প্রতিষ্ঠান খোলা রয়েছে।

এছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হয় ৩ ফেব্রুয়ারি। তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হয় ২৭ ফেব্রুয়ারি। আর ব্যবহারিক পরীক্ষা ২৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে শেষ হয় ৫ মার্চ। এবার মোট পরীক্ষার্থী ছিল ২০ লাখ ৪৭ হাজার ৭৭৯ জন। এসএসসিতে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১৪ লাখ ২২ হাজার ১৬৮ জন। এর মধ্যে অংশ নিয়েছে ১৪ লাখ ১৬ হাজার ৭২১ জন।

প্রযুক্তির প্রসারে ২০২৮ সালের মধ্যে ৮০০ মিলিয়নের বেশি লোক চাকরি হারাবে সারাবিশ্বে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোতে অগ্রসর প্রযুক্তির ফলে ৫০ শতাংশ চাকরি চিরকালের মতো হারিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। অন্যদিকে নতুন ধরনের কাজের সুযোগও তৈরি হবে। চ্যালেঞ্জ হলো একেবারে হারিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে কি করে রূপান্তরিত প্রযুক্তি দিয়ে আরও বেশি লাভজনক কর্মসুযোগ সৃষ্টি করা যায়।

করোনা ভাইরাসের (কোভিড-১৯) প্রভাবে বাংলাদেশের অর্থনীতি ভয়াবহ হুমকির মধ্যে রয়েছে ২০২৮ সালের আগেই। চলতি অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি এক ধাক্কায় ৮ দশমিক ১৩ শতাংশ থেকে ২ থেকে ৩ শতাংশ হবে। যা বিগত ৪০ বছরের মধ্যে সব থেকে কম। ফলে বাংলাদেশ ২০২৮ সালের আগেই চাকরি হারানোর ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে পারে।

রুপকল্প ২০৪১ বাস্তবায়ন রূপায়ন: বাংলাদেশের প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ২০২১-২০৪১ শীর্ষক চূড়ান্ত উন্নয়ন দলিলে এমন চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। মূলত ২০২১ থেকে ৪১ সাল নাগাদ বাংলাদেশ কি উন্নয়ন করতে চাই এবং কি ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়বে দেশের অর্থনীতিতে তা তুলে ধরা হয়েছে। পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ (জিইডি) এই চূড়ান্ত দলিল প্রস্তুত করেছে। ২০২৮ সালে ৫০ শতাংশ মানুষ চাকরি হারাবে সরকার যে তথ্য বিশ্লেষণ করেছিল তা আরও বাড়তে পারে। বর্তমানে করোনার প্রভাবে এই সংখ্যা বাড়লে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে বড় ধরনের ধস নামবে দেশে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, করোনা পরবর্তী বিশ্ব ও আগের বিশ্ব এক হবে না। লকডাউন কতদিন থাকবে কেউ জানে না। লকডাউন হঠাৎ করে উঠবে না। ভ্যাকসিন না ওঠা পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব থাকবেই। ফ্যাক্টরি খুলে দিলে সামাজিক দূরত্ব রাখতে শ্রমিকের সংখ্যা কমাতে হবে। সামাজিক দূরত্ব রেখেই অনেকে কিছু কাজ চালিয়ে নেবে। সেক্ষেত্রে লোক ছাঁটাই হবে, বেকারত্বের হার বাড়বে। আগে যেখানে ১০টা টেবিল ছিল এখন ৫টা থাকবে। আগে বাসে ১০০ জন উঠত এখন ২৫ জন উঠবে। ফলে বাংলাদেশে যেটা ২০২৮ সালে ঘটতো সেটা খুবই দ্রুত ঘটবে এবং ৫০ শতাংশ মানুষ চিরকালের জন্য চাকরি হারানোর শঙ্কা রয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশ আবাসিক মিশনের সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আমরা এখন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছি। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবটি হবে মূলত ডিজিটাল বিপ্লব। তখন কল কারখানাগুলোতে ব্যাপক হারে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার শুরু হবে। শুধু কলকারখানাই নয় যোগাযোগ ব্যবস্থায়ও আসবে আমূল পরিবর্তন। আগের শিল্প বিপ্লবগুলোর ক্ষেত্রে দেখা গেছে মানুষ যন্ত্রকে পরিচালনা করেছে। কিন্তু চতুর্থ বিপ্লবে যন্ত্রকে উন্নত করা হয়েছে। যার ফলে যন্ত্র নিজেই নিজেকে পরিচালনা করতে পারবে। করোনা পরবর্তী বিশ্বে এটা বাড়বে। তখন বেকারত্ব সরাসরি বাড়বে। করনো পরবর্তী বিশ্ব ও আগের বিশ্ব এক হবে না। ভ্যাকসিন না আবিষ্কার হওয়া পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব বাড়বে। সবখানে স্পেস বেশি লাগবে, লোক ছাঁটাই বেশি হবে। ভ্যাকসিন যতো দ্রুত আবিষ্কার করা যাবে ততোই মঙ্গল।

তিনি আরও বলেন, বেকারত্বের হার বাড়বে। শিল্পখাতে ও সেবা খাতে প্রবৃদ্ধির হার কমবে। লকডাউনের কারণে স্বাস্থ্যখাত, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বেচাকেনা ও যানবাহন ছাড়া বাকি সব খাতেই কর্যক্রম থেমে গেছে। অনেকে আয় শুন্য হয়ে পড়েছে। এমনকি ফরমাল খাত পোশাক শিল্প অনেক নেতিচাক খবর শোনা যাচ্ছে। ক্রেতাদের কাছ থেকে অর্ডার পাচ্ছে না। পুরাতন অর্ডার বাতিল করতে হচ্ছে। ১৬ কোটির মধ্যে ৮ কোটি মানুষ সমস্যায় পড়বে। অনেকে চাকরি হারাবে স্থায়ীভাবে।

করোনা যদি দীর্ঘায়িত হয় সেক্ষেত্রে প্রবৃদ্ধি আরও কমে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। যদি করোনা ভাইরাসের ভয়াবহতা চলতে থাকে তবে ২০২১ সালে ১ দশমিক ২ থেকে ২ দশমিক ২৯ প্রবৃদ্ধি হবে। ২০২২ সালে ২ দশমিক ৮ শতাংশ থেকে ৩ দশমিক ৯ শতাংশ হবে। ফলে করোনা ভাইরাসের কারণে অর্থনীতির বিভিন্ন খাত ক্ষতবিক্ষত। সবকিছু বন্ধ থাকায় অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের পাঁচ কোটির বেশি মানুষের জীবন-জীবিকা এখন হুমকির মুখে। ফলে দারিদ্র্যসীমার কিছুটা ওপরে থাকা লাখ লাখ নারী-পুরুষ আবারও গরীব হয়ে যেতে পারেন।

উন্নয়ন দলিলে আরও দেখা যায়, অনেক উন্নত দেশে বয়ষ্ক মানুষ বেশি হওয়ায় প্রবৃদ্ধির গতি কমে যাচ্ছিল। তখন প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে প্রযুক্তি আশির্বাদ মনে করা হয়। অটোমেশন এশিয়ার স্বল্প উন্নত দেশের জন্য হুমকি। জনসংখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে শ্রমঘন কাজগুলো বাংলাদেশের মতো দেশে হারিয়ে যাবে। তাই প্রযুক্তির বিস্তারে শঙ্কিত না হয়ে লাভজনকভাবে টিকে থাকার জন্য তৎপরতা, প্রযুক্তি ও কৌশল স্থির করতে হবে।

উন্নয়নশীল দেশগুলোতে শ্রমঘন কাজের ক্ষেত্রে রোবটিক্স ও অটোমেশন হুমকি সৃষ্টি করলেও নতুন নতুন প্রযুক্তি অশেষ সম্ভাবনাময় নতুন সুযোগও মেলে ধরবে। প্রবৃদ্ধিতে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ অবদান রাখতে পারে। উল্লেখ করা হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা কেন্দ্রিক নির্ভুল কৃষির সম্ভাবনা রয়েছে ১৫ থেকে ৬০ ফলন বাড়ানোর।

তবে প্রবৃদ্ধি যদি ভালো অর্জিত হয় তবে কর্মসংস্থান বাড়বে। প্রতি বছর ২ দশমিক ২৮ শতাংশ হারে শ্রমশক্তি যুক্ত হবে এবং প্রায় অর্ধ মিলিয়ন কর্মীর কর্মসংস্থান হবে বিদেশে। ২০৩০ থেকে ২০৪১ সাল পর্যন্ত প্রতি বছর যুক্ত হবে ১ দশমিক ৮ মিলিয়ন। প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত থাকলে বছরে প্রায় এক মিলিয়ন অভ্যন্তরীণ কর্মসংস্থানের চাহিদা রয়েছে।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, ২০১৯ সাল শেষে বাংলাদেশের জাতীয় দারিদ্র্যের হার ছিল সাড়ে ২০ শতাংশ। অতিদারিদ্র্যের হার সাড়ে ১০ শতাংশ। দেশের জনসংখ্যা ১৬ কোটি ৫৬ লাখ। সেই হিসাবে দেশে ৩ কোটি ৪০ লাখ গরীব মানুষ আছে। তাদের মধ্যে পৌনে দুই কোটি মানুষ হতদরিদ্র। করোনার ভ্যাকসিন তৈরি না হওয়া পর্যন্ত সামাজিক দূরত্ব কমবে না। ফলে দারিদ্রতা বাড়বে মানুষ স্থায়ীভাবে চাকরি হারাবে।সুত্র বাংলানিউজ

বিশ্বব্যাপী মহামারি আকার ধারণ করা করোনা ভাইরাসের সংক্রমণরোধে সরকার প্রথম পর্যায়ে ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল দেশব্যাপী সাধারণ ছুটি ঘোষণা করেন। পরবর্তীতে তা দুই দফা বাড়িয়ে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত সম্প্রসারণ করা হয়েছে। যার মূল কারণ করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সামাজিক দূরত্ব বাজায় নিশ্চিত করা। কিন্তু কে শোনে কার কথা। এই পরিস্থিতিতেও প্রতিদিন রীতিমত বাজারে ভিড় জমাচ্ছে মানুষ।

কেউ আসছেন বাজার করতে, আবার কেউ কেউ অকারণেই ভিড় করছেন বাজারে। একসঙ্গে জড়ো হয়ে কেউ কেউ খোশগল্পও করছেন। আর যারা বাজার করছেন তাদেরও মধ্যেও নেই কোনো ধরনের সচেতনতা। বলতে গেলে ক্রেতার সঙ্গে অন্য ক্রেতাদের, দোকানির স্পর্শ লাগছেই। কাঁচাবাজারসহ নিত্যপণ্যের দোকানে ক্রেতাদের ভিড় দিনদিন বাড়ছে। এক একটি দোকান ঘিরে রেখেছেন ৪/৫ জন ক্রেতা। এসব কারণে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত সম্ভব হচ্ছে না। ফলে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি।

পাশাপাশি স্বীকৃত কাঁচাবাজার ও সুপারশপগুলো প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত খোলা রাখার কতা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এছাড়া বিভিন্ন পাড়া ও মহল্লার নিত্যপণ্যের দোকানে প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত খোলা রাখার নিয়ম মানলেও মানুষের ভিড় কোনোভাবেই কমানো যাচ্ছে না। এতে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি।

বাড্ডার একটি কাঁচাবাজারে বৃহস্পতিবার দেখা গেছে, অন্য স্বাভাবিক সময়ের মতই বাজারে মানুষের উপস্থিতি। ভিড়াভিড়ি করে সবাই বাজার করছেন। যা দেখে বোঝার উপায় নেই যে করোনার কারণে দেশে সাধারণ ছুটি চলছে। সাধারণ মানুষও যেন বিষয়টি আমলেই নিচ্ছে না।

বাজার করতে আসা একজন শরিফ উদ্দিন বলেন, মাস্ক মুখে দিয়েই তো বাজারে এসেছি। আমাদের কি নিত্যপণ্য কিনতে হবে না? বাজারে তো একটু ঘোরাঘুরি, দরদাম করেই সদাই কিনতে হয়। যে কারণে সবাই একটু ঘুরছে। এছাড়া বাসায় থাকতে থাকতে সবাই অনেকটা ক্লান্ত। তাই বাইরে আসলে একটু বেশি সময় কাটাতে চায় সবাই। অহেতুক একটু ঘোরাঘুরিও হয়।

দোকানি এরশাদ আলী বলেন, একই ধরনের কথা। তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশ অনুযায়ীই আমরা দোকান খুলি এবং বন্ধ করি। ক্রেতারা বাজার করে, কিন্তু তারা যদি নিয়ম না মেনে বেশি ভিড় করে তাহলে আমরা কী করতে পারি। একাধিক কাস্টমার একসঙ্গে ভিড় করলেও তো আমারা বলতে পারছি না আপনারা চলে যান, এখানে ভিড় করবেন না। সবাইকে নিজ নিজ জায়গা থেকে সচেতন হতে হবে।

অন্যদিকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণরোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার সরকারি নির্দেশনা সত্ত্বেও অহেতুক, অকারণে বাইরে বের হওয়াদের জরিমানা করেছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। তবুও মানুষের বাহিরে বের হওয়া থামানোই যাচ্ছে না।

এছাড়া সারাদেশে সব প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার হয়েছে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতের জন্য। কিন্তু ত্রাণ নিতে, টিসিবি থেকে পণ্য কিনতে, ১০ টাকা কেজির চাল বিক্রিতে মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। রীতিমত ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়িয়ে কার আগে কে চাল নেবে সেই চেষ্টা সবার। সংশ্লিষ্টরা বার বার বলার পরেও ব্যর্থ হচ্ছেন সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে।

এদিকে, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে সঙ্কটময় পরিস্থিতিতে অনলাইনে যেসব নিত্যপণ্য নয় এমন পণ্যের বাজার থমকে গেলেও জমে উঠেছে নিত্যপণ্যের বাজার। এই পরিস্থিতিতে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস তুলনামূলক ভালো বেচা-কেনা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে মুদি পণ্যগুলো (নিত্যপ্রয়োজনীয়) ছাড়া অন্যান্য পণ্যের বিক্রি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এছাড়া বর্তমান পরিস্থিতিতে ডেলিভারি পদ্ধতি নানাভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে এবং ডেলিভারি ম্যানের কিছুটা সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে ডেলিভারিম্যান সঙ্কট থাকায় এবং সরকার ঘোষিত সাধারণ ছুটির মধ্যে ডাকসেবা বন্ধ থাকায় ডেলিভারি সেবা প্রায় বন্ধ আছে নিত্যপণ্য ছাড়া অন্যদের। ঢাকার বাইরে থেকে তারা অনেক ক্রয় অর্ডার পেয়ে থাকেন। কিন্তু ডাক ও পরিবহন সেবা বন্ধ থাকায় তারা গ্রাহকের কাছে পণ্যগুলো পৌঁছে দিতে পারছেন না। তবে অনলাইনে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসমাগ্রী বিক্রি কমেনি। ঢাকাসহ অন্য শহরে অনলাইনে নিত্যপণ্য কেনার চাহিদা বাড়ছে।

পাঁচটি কারণে কোনো মানুষের করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)।

ওই সংস্থার গবেষকরা এখন পর্যন্ত পাওয়া তথ্য এবং এই কয়েক মাসের অভিজ্ঞতার আলোকে এই পাঁচটি ঝুঁকিপূর্ণ বিষয়ের উল্লেখ করেছে। যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম মিরর-এর প্রতিবেদনে এই পাঁচটি বিষয় তুলে ধরা হয়েছে

১. বয়স

গবেষণায় দেখা গেছে, ৭০ বছরের বেশি বয়স্কদের করোনাভাইয়াসে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার হার বেশি। উহানে গবেষকরা সেখানকার দুটি হাসপাতালের করোনাভাইরাস আক্রান্ত ১৯১ জনের মধ্যে অধ্যায়ন করে বয়সভেদে মৃত্যুর একটি সম্পর্ক দেখেছেন। এমনকি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে গুরুতর পরিস্থিতি হবে কিনা, সেটাও নির্ভর করছে বয়সের ওপর।

বয়স্কদের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় হার্ট, ফুসফুস ও অন্যান্য অঙ্গ ক্ষতির হাত থেকে তারা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মাধ্যমে রক্ষা করতে পারছে না।

২. লিঙ্গ

পরিসংখ্যান বলছে, নারীদের তুলনায় পুরুষের মৃত্যু হচ্ছে বেশি। যদিও এর কারণ এখনো জানতে পারেননি গবেষকরা। ইতালিতে আক্রান্তদের মধ্যে ৫৩ শতাংশ পুরুষ হলেও মৃতদের মধ্যে পুরুষের শতাংশ ৬৮। গ্রিসে জনসংখ্যার ৫৫ শতাংশ পুরুষ হলেও করোনায় মৃতদের ৭২ শতাংশ পুরুষ।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, নারীরা বেশিরভাগ সময় পুরুষের চেয়ে ঘরে সময় পার করেন। এমনকি করোনাভাইরাসের বিষয়টিও নারীরা গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করছেন। কিন্তু পুরুষরা সেভাবে বিবেচনা না করে এখনো বাইরে বের হচ্ছেন। ফলে মৃত্যুর হারের দিক থেকেও পুরুষের সংখ্যাটা বেশি হচ্ছে।

৩. শারীরিকভাবে দুর্বল

যেসব মানুষ আগে থেকেই শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে আছেন; বিশেষ করে যারা ডায়াবেটিস, অ্যাজমা, উচ্চ রক্তচাপ, ফুসফুসে সমস্যা, হজমের সমস্যায় ভুগছেন- তাদের মৃত্যু হার বেশি।

নিউ ইংল্যান্ড জার্নালে প্রকাশিত একটি প্রবন্ধে বলা হয়েছে, উহান শহরে প্রথম এক হাজার জন আক্রান্ত হওয়ার পর যারা মারা গেছেন- তাদের বেশিরভাগেরই ডায়াবেটিস, ক্যানসার, হার্টে সমস্যা ও উচ্চ রক্তচাপ ছিল। হঠাৎ করেই সেসব রোগের উপসর্গ বেড়ে গিয়ে তাদের অনেকের মৃত্যু হয়েছে।

৪. ওজন

শারীরিকভাবে বেশি ওজনের মানুষদের করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটছে। ফ্রান্সের গবেষকরা মনে করেন, যুক্তরাষ্ট্রে এত বেশি মানুষ মারা যাওয়ার প্রধান কারণ হলো বাড়তি ওজন। মোটা মানুষজন করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার উচ্চ ঝুঁকিতে থাকার কথাও বলেছেন গবেষকরা।

৫. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা

করোনাভাইরাসের কোনো ভ্যাকসিন এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। সে ক্ষেত্রে রোগ প্রতিরোগ ক্ষমতা কেবল আক্রান্ত কোনো মানুষকে মৃত্যুর দুয়ার থেকে টেনে নিয়ে আসতে পারে। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, করোনা আক্রান্ত হলে তাদের লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে গুরুতরভাবে। এ ধরনের মানুষকে লাইফ সাপোর্টে পর্যন্ত নিতে হচ্ছে। পরে বেশি সংখ্যক এ ধরনের মানুষ মারা যাচ্ছে।

magnifiermenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram