মোহাম্মদ কবীর হোসেন।।
করোনা ভাইরাসের সম্ভাব্য আক্রমণ প্রতিহত করতে সরকার কর্তৃক সারা দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। পরবর্তীতে ২৬ মার্চ হতে সরকারি এবং বেসরকারি অফিসসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয়। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরে থাকতে বলা হয় এবং বাইরে বের হতে নিষেধ করা হয়। এমতাবস্থায়, ঘরে সময় ভালো কাটাবার উপায় নিয়ে শিক্ষাবিদ, পুষ্টিবিদ, মনোবিদ এবং স্বাস্থ্যবিদগণ চমত্কার পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হচ্ছে শিক্ষায়তনের সাথে যুক্ত সন্তানদের নিয়ে। প্রতিদিনের একাডেমিক ব্যস্ততা, ছোটা-ছুটি, খেলাধুলা, গান শেখা, নাচ শেখা, হোমওয়ার্ক করা এক তুড়িতেই হারিয়ে গেল।
ফলে একদিকে বাসায় অস্থির হয়ে উঠছে অন্যদিকে বাত্সরিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যহত হচ্ছে। বিষয়টি অনুভব করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এটুআইয়ের কারিগরি সহযোগিতায় শিক্ষার্থীদের পাঠে ধরে রাখার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সংসদ টেলিভিশনে প্রচারিত হচ্ছে বিষয়ভিত্তিক শ্রেণি কার্যক্রম। স্বল্প সময়ের প্রস্তুতিতে শুরু করা এই কার্যক্রমে কিছু ভুলত্রুটি থাকলেও শিক্ষার্থীরা উপকৃত হচ্ছে, পড়ায় ব্যস্ত থাকছে, হোমওয়ার্ক করছে এবং ভালো সময় কাটাচ্ছে। মিডিয়ার রিপোর্টে দেখা যায় আমাদের সন্তানেরা এত অল্পতে খুশি নয়, তাদের আরো চাই কিংবা অভিভাবকগণও চাচ্ছেন এ ধরনের কার্যক্রমের পরিসর বৃদ্ধি পাক এবং অব্যাহত থাকুক।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমরা যদি বিশ্বের দিকে তাকাই শিক্ষার্থীদের পাঠে ধরে রাখার জন্য, ঘরে শিক্ষার্থীদের সময় ভালো কাটাবার জন্য এবং একাডেমিক কার্যক্রমের ক্ষতি পুষিয়ে নেবার জন্য প্রযুক্তির সহায়তায় বিভিন্ন উপায় অবলম্বন করছেন। আমাদের দেশে সরকারের এই উদ্যোগটুকু বাদ দিলে যেটুকু দেখা যায় অ্যাম্বাসেডর শিক্ষক কর্তৃক জেলাভিত্তিক অনলাইন স্কুল ও গ্রুপ খুলে (ফেসবুক ও অন্যান্য মিডিয়ায়) শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছেন। কিন্তু খুবই অবাক হচ্ছি আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর (প্রাথমিক হতে উচ্চমাধ্যমিক) নির্লিপ্ত নিরবতা দেখে।
সরকার ছুটি ঘোষণা করছে সুতরাং তাদের চোখ-কান বন্ধ করে, নাকে তেল দিয়ে এখন ঘুমাবার সময়। কে বাসায় অলস সময় কাটাচ্ছে, কার শিক্ষা পুঞ্জিকা ব্যাহত হচ্ছে, কোন অভিভাবক সন্তান নিয়ে উদ্বিগ্ন সময় পার করছেন, কোন শিক্ষার্থী স্কুল মিস করছে তা দেখার, জানার এবং অনুভব করার প্রয়োজন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর একেবারেই নেই। প্রতিষ্ঠানগুলো শুধু বাছাই করে শিক্ষার্থী ভর্তি করবে, পাস-ফেলের তকমা লাগাবে, অগ্রসর ও অনগ্রসর শিক্ষার্থীর পার্থক্য তৈরি করবে এবং সার্টিফিকেট পাবার রাস্তা তৈরি করে দেবে। এমন কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলার দায়িত্ব শুধু মন্ত্রণালয় এবং অধিদপ্তরের। অথচ এই শিক্ষার্থীদের অভিভাবকের ঘামের পয়সায় চলে প্রতিষ্ঠানগুলো।
তথ্য প্রযুক্তির এই সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো খুব সহজেই ঘরে বসে ফ্রি বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে কিংবা স্কুল ভিত্তিক অ্যাপের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে পারে। অপারেটরদের কাছ থেকে স্বল্প মূল্যে এসএমএস কেনা যায়, যা অ্যাপের মাধ্যমে সমন্বয় করে শিক্ষার্থীদের নির্দেশনা দেয়া যায়, তাদের পড়াশোনা অব্যাহত রাখা যায় এবং শিক্ষার্থীদের ফিডব্যক জানা যায়। শিক্ষার্থীদের বলবো, তোমরা স্ব-শিখনকে কাজে লাগাও।
অনলাইনে সার্চ করে তোমার সমস্যার সমাধান কর। অনেক অভিজ্ঞ শিক্ষক তোমাকে সাহায্য করতে অনলাইনে যুক্ত রয়েছেন, তাঁকে প্রশ্ন কর। কিশোর বাতায়নে প্রবেশ করো (www.konnect.edu.bd) তোমাদের জন্য অনেক একটিভিটি রয়েছে এখানে। ঘরে থাক, ঘরে খেলা যায় এমন খেলাধূলা কর, শরীর চর্চা কর, বই পড়, সিনেমা দেখ সর্বোপরি ভালো সময় কাটাও। সম্মানিত অভিভাবক এই দু:সময়ে সন্তানকে সময় দিন, অনলাইনে তার সমস্যা সমাধান করতে সহায়তা করুন এবং তার উপযোগী অনলাইন প্ল্যাটফর্মগুলোর সাথে সন্তানকে যুক্ত করে দিন। শিক্ষকগণ ব্যক্তিগতভাবে কিংবা স্কুলকে সাথে নিয়ে শ্রেণিভিত্তিক গ্রুপে শিক্ষার্থীদের সহায়তায় এগিয়ে আসতে পারেন। নিশ্চয়ই মেঘ কেটে যাবে, আমাদের শিক্ষাঙ্গন মুখরিত হবে শিক্ষার্থীদের কলকাকলিতে।
সহযোগী অধ্যাপক ও সংযুক্ত কর্মকর্তা, এটুআই
নিজস্ব প্রতিনিধি।।
ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক হিসেবে নিজেকে পরিচয় দেন ২২ বছরের তরুণী মীর মনিরা। জেলা প্রশাসকের পরিচয় ব্যবহার করে তৈরি করেন বিভিন্ন ডকুমেন্ট। পরে ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মাধ্যমে তা প্রচার করেন। মনিরা ও তার ৭ বন্ধু মিলে এমন পরিকল্পনা করে একটি ম্যাসেঞ্জারে ফটোশপের মাধ্যমে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্য দেন। নিজের ফেসবুক আইডি থেকে ইলেকট্রনিক ডিভাইস ব্যবহার করে নিজেকে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক হিসেবে পরিচয় দেন।
শুক্রবার রাতে কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেনের বাসভবনে জিজ্ঞাসাবাদে এসব কথা স্বীকার করেন মীর মনিরা। এ ঘটনায় কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার এনডিসি মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একটি মামলা করেছেন। রাতেই আসামি মীর মনিরাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। মনিরা কুষ্টিয়া শহরের কোর্টপাড়া এলাকার মীর মিজানুর ইসলামের মেয়ে ও ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন।
কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট লুৎফুন্নাহার জানান, মীর মনিরা জানিয়েছেন তারা ৭ বন্ধু মিলে এ পরিকল্পনা করেন। কুষ্টিয়ার ডিসি পরিচয়ে মনিরা নিজের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে বিভিন্ন বিভ্রান্তিকর তথ্য দেন। কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, আইসিটি আইনে মামলায় ওই তরুণীকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
নিজস্ব প্রতিনিধি।।
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি সত্ত্বেও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির জুবায়ের আহমেদ আনসারীর জানাজায় লোক সমাগমের বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে না পারায় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাহাদাত হোসেন টিটুকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। জেলার ২ উপজেলার ৭টি গ্রামের বাসিন্দাদের ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইন বাধ্যতামূলক করতে ৭ গ্রামকে লকডাউনের নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। শনিবার সন্ধ্যায় গ্রামগুলোতে নির্দেশনার বিষয়ে মাইকিং করে জানিয়ে দেয়া হয়।
শনিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে পুলিশ সদরদফতরের এক আদেশে তাকে প্রত্যাহার করে চট্টগ্রাম রেঞ্জে সংযুক্ত করা হয়েছে। পুলিশ সদরদফতরের সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি-মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) মো. সোহেল রানা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
লাকডাউন গ্রামগুলো হল- আশুগঞ্জ উপজেলার খড়িয়ালা, বৈগইর, মৈশাইর, সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়নের শান্তিনগর, সীতাহরণ, বড়ইবাড়ি ও বেড়তলা। এই গ্রামের কেউ আগামী ১৪দিন বাড়ি থেকে বের হলেই আইন শৃঙ্খলাবাহীনি কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার সরাইল (সার্কেল) মাসুদ রানা জানান, প্রশাসনের নির্দেশে গ্রামের বাসিন্দাদের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে এবং তা বাস্তবায়নে ৭ গ্রামকে লক ডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করতে এলাকাগুলোতে সার্বক্ষণিক পুলিশের টহল থাকবে। সেই সাথে এই গ্রামের কাউকে গ্রাম থেকে বের হতে দেয়া হবে না। খোলা থাকবে না কোন কোন দোকানপাট। যে কোন প্রয়োজনে জনপ্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন।
প্রসঙ্গত, শনিবার সকাল ১০টায় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ইসলামী চিন্তাবিদ ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা জুবায়ের আহমদ আনসারীর নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হয়। মাদ্রাসার প্রান্তর ছাড়িয়ে জানাযার সারি দীর্ঘ হয় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বিস্তৃর্ণ এলাকায়। এতে দেশের বিভিন্ন স্থান এবং জেলার শীর্ষ আলেমরা ছাড়াও মাদ্রাসা ছাত্র এবং সাধারণ মানুষ যোগ দেন।
নিজস্ব প্রতিনিধি।।
করোনা রোগীর তথ্য সংগ্রহে দুষ্কৃতকারী সাধারণ মানুষের বাড়িতে গিয়ে অপরাধ সংঘটনের সুযোগ নিচ্ছে। এ অবস্থায় কেউ করোনা রোগীর তথ্য সংগ্রহ কিংবা জরুরি সেবার নামে বাড়িতে এলে ৯৯৯ বা নিকটস্থ থানায় ফোন করে পরিচয় নিশ্চিত হতে পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ সদর দফতর।
পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মিডিয়া) সোহেল রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার (১৮ এপ্রিল) রাতে তিনি বলেন, ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে, করোনা রোগীর তথ্য সংগ্রহ ও জরুরি সেবার নামে কিছু দুষ্কৃতকারী সাধারণ মানুষের বাড়িতে গিয়ে অপরাধ সংঘটনের সুযোগ নিচ্ছে।
এমতাবস্থায়, সন্মানিত নাগরিকদের আহ্বান জানানো যাচ্ছে যে, আপনারা কোনো অবস্থাতেই আগন্তুকের পরিচয় নিশ্চিত না হয়ে অথবা তার বা তাদের কার্যক্রমের বৈধতা সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে তাকে বা তাদেরকে গৃহে প্রবেশ করতে দিবেন না। এ বিষয়ে সন্দেহ হলে, নিকটস্থ থানাকে অবহিত করুন অথবা ৯৯৯ এ ফোন করে নিশ্চিত হোন।
বাংলাদেশ পুলিশ সব সময় জনগণের পাশে রয়েছে। একই সঙ্গে, এ ধরনের দুষ্কৃতকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করছে বাংলাদেশ পুলিশ।
নিউজ ডেস্ক।।
কুমিল্লার দেবিদ্বারে মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা আজিজুর রহমানকে অমানবিক, নিষ্ঠুর ও বর্বরোচিতভাবে পেটানোর ঘটনায় অভিযুক্ত ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি ও গ্রেফতারের দাবি করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে শিক্ষক সুরক্ষা ফোরাম।
শিক্ষক সুরক্ষা ফোরাম এর সভাপতি মোঃ ফয়সল শামীম বলেন- মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা আজিজুর রহমান একজন খ্যাতিমান আলেম। একজন আলেম শিক্ষককে পেটানোর অধিকার চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীরকে কে দিয়েছেন ? উনি যদি অন্যায় করে থাকেন তাহলে দেশের প্রচলিত আইনে বিচার হবে কিন্তু চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমের বর্বরোচিত, নিষ্ঠুরতম নির্যাতন শিক্ষক সুরক্ষা ফোরাম মেনে নেয়নি এবং এ ব্যাপারে যা যা করণীয় শিক্ষক সুরক্ষা ফোরাম এ শিক্ষকের পাশে থেকে করবে।
শিক্ষক সুরক্ষা ফোরাম এর সভাপতি মোঃ ফয়সল শামীম মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা আজিজুর রহমানের খোঁজ খবর নেন এবং সব সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
জানা যায়,কুমিল্লা দেবীদ্বার উপজেলার মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা আজিজুর রহমানকে বেধড়ক মারধর করে ক্ষত-বিক্ষত করেছে ঐ উপজেলার রাজামেহার ইউপি চেয়ারম্যান মো.জাহাঙ্গীর আলম সরকার।
গত ০৯ এপ্রিল ২০২০ চেয়ারম্যানের নিজ বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নির্যাতিত শিক্ষকের স্ত্রী ‘র মৌখিক অভিযোগের ভিত্তিতে উক্ত চেয়ারম্যান নিজ বাড়িতে ডেকে এনে বর্ণিত শিক্ষককে আত্মপক্ষ সমর্থনের কোন প্রকার সুযোগ না দিয়ে,কোন ধরনের তদন্ত ছাড়াই নিজ গৃহে রাখা লোহার রড দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন, এতে শিক্ষক ক্ষত-বিক্ষত হয়ে আহত অবস্থায় চান্দিনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন এবং উক্ত চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় জিডি করেন।
মতিউর রহমান চৌধুরী।।
উড়োজাহাজ ভর্তি করে দলে দলে বিদেশীরা ঢাকা ছাড়ছেন। এরমধ্যে রয়েছেন শতাধিক কূটনীতিকও। এটা নতুন কোন খবর নয়। বাসি হয়ে গেছে অনেক আগেই। কিন্তু আমরা কি একবারও তলিয়ে দেখেছি তারা কেন বেহেস্ত ছেড়ে দোযখে যাচ্ছেন? দোযখ বলছি এই কারণে, যেসব দেশে তারা যাচ্ছেন সেসব দেশে মৃত্যুর মিছিল এখন অনেক লম্বা। প্রতিদিন কম করে হলেও দুই হাজার লোক মারা যাচ্ছে। আর আমাদের দেশে গত এক মাসে মারা গেছে মাত্র ষাট জন। আক্রান্ত দুই হাজারেরও কম।
আমার মনে হয়, আমরা এটা জানার চেষ্টা করিনি তাদের কাছ থেকে। সম্প্রতি ঢাকা ছেড়ে গেলেন এমন একজন বিদেশী কূটনীতিকের সঙ্গে কথা হয়েছিল। যিনি বাংলাদেশকে নিয়ে কথায় কথায় উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। বলেন এদেশের মানুষ বন্ধুবৎসল। শুনেছি পোস্টিং শেষে দেশে ফেরার সময় কার্গো করে উপহার সামগ্রী নিয়ে যেতে হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বললেন, যেহেতু একজন সাংবাদিকের সঙ্গে কথা বলছি। তাই কূটনীতিকের মতই বলবো।
আপত্তি নেই। কিন্তু আসল রহস্য কি? কেন চলে যাচ্ছেন? বললেন, যে দেশে টেস্ট নিয়ে এত অনীহা, সে দেশের বাস্তব চিত্র কি তা জানার সুযোগ আছে কি? স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বুলেটিন পর্যালোচনা করলে যে কেউ বুঝতে পারবেন কোথাও যেন সত্যটা লুকিয়ে রয়েছে। এদেশে টেস্ট কম, আক্রান্ত বেশি। বিশ্বের যেকোনো দেশের তুলনায় শীর্ষে বলতে পারেন। তাতে কী? আমরাতো নিয়ন্ত্রণ করে ফেলেছি। বিপদটা এখানেই। চারপাশে ভাইরাস রেখে আপনি কিভাবে বলেন নিয়ন্ত্রণ হয়ে গেছে সবকিছু। বেশীরভাগ জেলায় টেস্টের সুবিধাই নেই। কীটও পৌঁছেনি। সেখানে কি করে বলা হচ্ছে সব ঠিক, বিলকুল ঠিক! এ কারণে ঢাকা ছাড়ার প্রয়োজন আছে কি? আছে, অবশ্যই আছে।
প্রসঙ্গক্রমে আবারও বললেন, যে দিন যায় ভালই যায়। সামনের দিনগুলো ভয়ংকর। কিসের ভিত্তিতে এটা বলছেন? সবকিছু কি বলা যায়! তবে এটুকো বলতে পারি, আগামী মে মাস পর্যন্ত বাংলাদেশের জন্য বিপদজনক সময়। জাতিসংঘের রিপোর্ট আপনি মানতে পারেন কিংবা নাও মানতে পারেন। তাতে কি যায় আসে। তবে এই রিপোর্টকে এক কথায় উড়িয়ে দেয়ার মধ্যে আবেগ আছে, বাস্তবতা নেই। জাতিসংঘের ফাঁস হওয়া রিপোর্ট দেখার পর এমন ধারণা দেয়া হলো এটা আজগুবি, চাঞ্চল্য সৃষ্টির প্রয়াশ। এখন কি দেখা যাচ্ছে? এখন প্রতিদিনই দেশটা লকডাউনে চলে যাচ্ছে। দৌড়ে দৌড়ে বেড়ে চলেছে আক্রান্তের সংখ্যা। কূটনীতিকের প্রশ্ন- মৃত্যুর প্রকৃত সংখ্যা আপনি কি বলতে পারবেন?
অনেক দেশই সত্য প্রকাশ করছেনা। এতে কি বিপদ কমেছে, বা কমবে? বরং বাড়বে। কারণ মানুষ সচেতন না হলে এই প্রাণঘাতী ভাইরাস থেকে আপনি মুক্তি পাবেন না। এরপর কি?
মি. চৌধুরী, আপনিতো দেখছি আমার সাক্ষাৎকার নিতে শুরু করলেন। সরি, আমি তা করছিনা। জানার কৌতূহল থেকে প্রশ্ন করছি। আচ্ছা বলুনতো সতের কোটি মানুষের জন্য কয়টা ভেন্টিলেটর রয়েছে? শুনেছি সতেরশ ষাটটির কথা। মিডিয়া রিপোর্ট যদি সত্যি হয় তাহলে বিপদটা কোথায় বুঝতে পারছেন নিশ্চয়ই। অনেক উন্নত দেশ তাদের দেশের বড় ছোট হাসপাতালগুলো সরকারের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে গেছে। এখানে তা দেখছি না। দেশে ফিরে যাচ্ছি এই ভেবে, আমার অন্তত চিকিৎসাটা হবে। ডাকলে এ্যাম্বুলেন্স আসবে। মারা গেলে আমার ভবিষ্যৎ বংশধররা জানতে পারবে কিভাবে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছিলাম। তাহলে কি একারণেই চলে যাচ্ছেন? নিশ্চুপ কূটনীতিক বললেন, খবর নিয়ে দেখেন কোথায় যেন গোলমাল হয়ে গেছে। জেনেশুনেতো নদীতে ঝাঁপ দিতে পারিনা। দেশে ফিরছি কপালে যা আছে তাই হবে। অনেক দেশই ভুল করেছে, কাজ করলে ভুল অনিবার্য। ভুল থেকে শিক্ষা না নিলে আরও ভুল হবে। যে ভুলের মাসুল দিতে হবে যুগযুগ ধরে। রাখছি, গুডবাই। বেঁচে থাকলে আবারও দেখা হবে।
বাস্তব অবস্থা বোধ করি এরকমই। আমরা প্রতিদিনই নতুন সংকটের মুখোমুখি হচ্ছি। এই সংকটকে আমরা শুরুতে পাত্তাই দিতে চাইনি। হাসপাতালগুলোকে প্রস্তুত করিনি। দু মাস তিন মাস পর কি হতে পারে সে নিয়ে আগাম চিন্তাও করিনি। যেমন ধরুন লকডাউন। আমরা কি সরকারিভাবে লকডাউন বলেছি? আমরা বলেছি ছুটি। তাই ভাল। কিন্তু এখন কেন বলছি লোকজন মানছে না। ছুটি হলেতো মানুষজন ছুটির মেজাজেই থাকবে। যতসব আজগুবি পরামর্শ বা সিদ্ধান্ত। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র আমাদেরকে প্রতিদিনই বোকা বানিয়েছেন। বলেছেন সব ঠিক। কোন সমস্যা আমরা দেখছি না। মিডিয়ার খবরকেও তারা উড়িয়ে দিয়েছেন একবাক্যে। টেস্টের প্রয়োজন নেই এমন ধারণাও দিয়েছেন। এখন কেন তারা বলছেন গোটা দেশই ঝুঁকির মধ্যে। আসলেই ওসব ছিল মেকি।
আমরা সবাই কথায় কথায় হিটলারের সমালোচনা করি। কথা না শুনলে বলি এ তো দেখি হিটলারের ভাষায় কথা বলছে। কিন্তু সেই হিটলারের একটা অদ্ভুত গুন ছিল। সংবাদপত্রের প্রতিটি সংবাদকে তিনি অত্যান্ত মনোযোগ দিয়ে পড়তেন এবং ওইসব রিপোর্টের গুরুত্ব সম্পর্কে সহকর্মীদের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা তর্ক-বিতর্ক করতেন। খবরে দেখলাম কাওরান বাজারের একটা অংশ লকডাউন হয়ে গেছে। এটা সুখকর কোন বার্তা নয়। কাওরান বাজারের মত ঢাকার বাজারগুলো যদি সচল না থাকে তাহলে দেশে আরও বড় সংকট তৈরি হতে পারে। যা আমরা কেউই চাইনা।
খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি।।
খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়িতে বজ্রপাতে এক স্কুল শিক্ষিকার মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার (১৭ এপ্রিল) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার উত্তর গবামারায় এলাকায় নিজ ঘরে বজ্রপাত হলে খাদিজা বেগম (৩৭) মারা যায়।নিহত খাদিজা বেগম (৪০) উপজেলার গবামারা এলাকার নূর মোহাম্মদের স্ত্রী ও পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের একটি স্কুলের শিক্ষিকা। নিহত খাদিজার ১ ছেলে ও ২ মেয়ে রয়েছে।
জানা যায়, শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে হঠাৎ ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়। বৃষ্টির সাথে সাথে আকাশে বজ্রপাত হতে থাকে। এসময় খাদিজা গোয়াল ঘরে গরু বেঁধে নিজ ঘরে ফেরার সময় তার ওপর বজ্রপাত হয়।
তাৎক্ষণিক ভাবে প্রতিবেশিরা খাদিজাকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে কর্তব্যরত চিকিৎসক খাদিজাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।
নিহতের স্বামী নুর মোহাম্মদ জানান, আমরা সবাই ঘরেই ছিলাম। হঠাৎ বজ্রপাত ঘটলে অচেতন অবস্থায় সঙ্গে সঙ্গে তাকে মানিকছড়ি হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মানিকছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আমির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। বজ্রপাতের কারণে ওই মহিলা মারা গেছেন বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
নিউজ ডেস্ক ।।এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার উত্তরপত্রের মূল্যায়ন শেষ করেছেন পরীক্ষকরা। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক না হওয়ায় সেই খাতা বা নম্বরপত্র বোর্ডে জমা দিতে পারছেন না তারা। অন্য দিকে করোনার কারণে পরীক্ষার উত্তরপত্রের ওএমআর শিট স্ক্যানিংয়ের কাজও স্থগিত করেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। এ অবস্থায় এবারের এসএসসি ও সমমানের রেজাল্ট প্রকাশে আরো বিলম্বের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে ঢাকা শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানিয়েছে, যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হলে শিক্ষকরা খাতা বা নম্বরপত্র বোর্ডে জমা দেয়ার ১৫ দিনের মধ্যেই ফলাফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে।
এসএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্রের মূল্যায়নের সাথে জড়িত এমন কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা গেল, এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার শুরুর প্রথম দিকের কিছু উত্তরপত্র মূল্যায়ন ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই শেষ হয়েছিল। সেইসব উত্তরপত্রের নম্বরশিট বোর্ডে পাঠিয়ে দিয়েছেন অনেক পরীক্ষক। কিন্তু পরের দিকে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার উত্তরপত্রের মূল্যায়ন শেষ হলেও করোনার কারণে তারা সেগুলো বোর্ডে পাঠাতে পারেননি। তবে সব উত্তরপত্রের মূল্যায়নের কাজ শেষ হয়েছে বলেও তারা জানান।
ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের এসএসসির উত্তরপত্র মূল্যায়নের সাথে সম্পৃক্ত জিল্লুর রহমান ও আনোয়ার হোসেন নামে সাভারের গুমাইল উচ্চবিদ্যালয়ের দু’জন পরীক্ষক গতকাল শুক্রবারা এই প্রতিবেদককে জানান, এ বছর পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ৩ ফেব্রুয়ারি। পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিকের কিছু খাতা দেখে আমরা ২৫ ফেব্রুয়ারি মধ্যেই সেগুলোর নম্বর শিট বোর্ডে পাঠাতে পেরেছিলাম। কিন্তু পরের দিকের পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন শেষে সেগুলো আর বোর্ডে পাঠাতে পারিনি। করোনার কারণে এখন সেইসব খাতার মূল্যায়ন শেষ হলেও এখন তো বোর্ডে পাঠাতে পারছি না।
উল্লেখ্য, এ বছর ৩ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ২৭ ফেব্রয়ারি শেষ হয়েছে এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালের লিখিত পরীক্ষা। আর ২৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ এসএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। আর ২৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ মধ্যে এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালের ব্যবহারিক পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। পরের দিকে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার উত্তরপত্রের মূল্যায়ন শেষে সেই খাতা বা নম্বরপত্র বোর্ডে পাঠাতে পারছেন না অনেক পরীক্ষক।
এ দিকে করোনাভাইরাস আতঙ্কে শুরু থেকেই এসএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্রের ওএমআর শিট স্ক্যানিং স্থগিত রেখেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। ফলে যথাসময়ে পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। শুধু ঢাকা বোর্ড নয়, একই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে অন্যান্য শিক্ষা বোর্ডেও। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অবশ্য দাবি করছেন আতঙ্ক কেটে গেলে ডাবল শিফটে কাজ করে এই গ্যাপ পূরণ করে নেয়া হবে।
গতকাল শুক্রবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর জিয়াউল হক জানান, সব পরীক্ষার উত্তরপত্রের মূল্যায়ন ইতোমধ্যে শেষ করেছেন সংশ্লিষ্ট পরীক্ষকরা। কিছু খাতা বোর্ডে জমাও হয়েছে। তবে করোনার কারণে অনেকে উত্তরপত্র বা নম্বর শিট বোর্ডে এসে জমা দিতে পারছেন না। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা আশা করছি ১৫ দিনের মধ্যেই এসএসসি ও সমমানের রেজাল্ট প্রকাশ করতে পারবো।
উল্লেখ্য, দেশে করোনা পরিস্থিত জটিল আকার ধারণ করার পর প্রত্যেক সেক্টরেই নতুন করে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কার্যক্রমও সীমিত করে আনা হচ্ছে। দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় এসএসসি পরীক্ষার খাতার ওএমআর শিট স্ক্যানিং কার্যক্রম স্থগিত করেছে ঢাকা বোর্ড। একই সাথে মূল্যায়নকৃত খাতা নিয়ে বোর্ডে আসতেও পরীক্ষকদের নিষেধ করা হয়েছে।
নিউজ ডেস্ক ।।
বুয়েট থেকে পাস করা ইঞ্জিনিয়ার, নারী নেত্রী এবং নারীর অধিকার আদায়ে রাজপথে মিছিল করেন তিনি; অথচ ঘরে গৃহপরিচারিকাকে নির্দয়ভাবে পেটান। পাপিয়া আক্তার মিম নামের গৃহপরিচারিকাকে নির্দয় প্রহারের পর তিনি এখন রীতিমতো ভাইরাল। তোলপাড় চলছে বামপন্থীদের মধ্যে। শাহবাগের আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়া সেই নারী নেত্রীর নাম সাইয়েদা সুলতানা এ্যানি। ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক নেত্রী, বুয়েটিয়ান ইঞ্জিনিয়ার এই নেত্রীর বিরুদ্ধে রাজধানীর উত্তরায় এক গৃহপরিচারিকাকে জিনিস নষ্টের অপবাদ ও জখম-নির্যাতনের পর বাসা থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। নির্যাতনের শিকার হওয়া ওই তরুণী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অমানবিক ঘটনার বর্ণনা দিয়েছেন।
নির্যাতনকারী এ্যানি ছাত্র ইউনিয়নের সাবেক নেত্রী, বুয়েটিয়ান ইঞ্জিনিয়ার ও বুয়েটের একটি হলের সাবেক ভিপি। তিনি নারীর অধিকার ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে শাহবাগের রাজপথ থেকে টেলিভিশন টকশোতে জ্বালাময়ী বক্তব্য দিয়ে থাকেন। গৃহপরিচারিকাকে নির্যাতনের ঘটনায় ওই এ্যানির শাস্তি দাবি করেছেন তার সহকর্মীরাই।
গৃহপরিচারিকা মিম নির্যাতনের বর্ণনা দিয়ে বলেন, উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের ৭ নম্বর রোডের ৩৩ নম্বর বাসার ষষ্ঠ তলায় কাজ করতাম। অপর এক গৃহকর্মী কাজ করার সময় ফ্রিজে দাগ ফেলে দেয়। এতে বাসার মালিক আমার ওপর অপবাদ দেয় এবং আমাকে অনেক মারধর করে। একপর্যায়ে আমি প্রাণভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে চাইলে তিনি আমাকে গেট লাগিেেয় আবার মারধর করেন। পরে অনেক কষ্ট করে কোনোরকম সেখান থেকে বের হয়ে আমি পুলিশের কাছে যাই।
নির্যাতিত তরুণীর পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা গেছে, সাইয়েদা সুলতানা এ্যানি অকথ্য ভাষায় গালাগাল ও চড়াও হচ্ছেন ওই গৃহপরিচারিকার ওপর।
নির্যাতনের শিকার তরুণী ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেছেন, ‘এই করোনার মহামারীতে মানুষ এমন হিংস্র কিভাবে হতে পারে। গরীব হয়ে জন্ম নিয়েছি বলে, বড় লোকদের হাতে মার খেয়ে চুপ থাকতে হচ্ছে। কারণ পুলিশ শুধু বড়লোকদের, আমি মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে ছোট একটা জবে ঢুকেছিলাম। এর মধ্যে করোনার জন্য চাকরি শেষ পর্যন্ত করতে পারিনি। ভাবলাম বসে থেকে কি হবে, এক পরিচিত ভাইয়ের মাধ্যমে এক বড়লোকের বাড়িতে একটা প্রতিবন্ধী মেয়ে দেখাশোনা করার জন্য যাই। সমান্য একটা ভুলের কারণে, যেই ভুলটা আমি করিনি, ফ্রিজ পরিষ্কার করা নিয়ে একটু দাগ হওয়ার কারণে, কাল থেকে আজ সকাল পর্যন্ত আমাকে আটকে রেখে এমন নির্যাতন করে। আমি বার বার বলছি ম্যাম আমাকে যেতে দেন। উনি পরে আমার একটা ভিডিও ধারণ করে, যেখানে আমাকে জোরপূর্বক বলতে বলে যে আমি উনার বাসা থেকে ইচ্ছাকৃত চলে যাচ্ছি। আমি মারের ভয়ে বলতে বাধ্য হয়েছি, তার পর আমি থানায় যাই। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি, পুলিশ আমার সাথে আসছে ঠিক কিন্তু, উনার সাথে ফোনে কথা বলে, আমাকে বলছে আপনি বাসায় যান। আমরা দেখছি বেপারটা। ---’।
ঘটনার প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ছাত্রমৈত্রীর সভাপতি ও গণজাগরণ মঞ্চের অন্যতম সংগঠক বাপ্পাদিত্য বসু ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ফ্রিজে দাগ লাগানোর অজুহাতে মিমকে জঘন্যভাবে মারধর করেন কমরেড এ্যানী। মিম কৌশলে কিছুটা ভিডিও করতে সক্ষম হয় তার সেলফোনে। মারধরের ছবিগুলো সব ওঠেনি, কিন্তু আর্তনাদ ও মারধরের শব্দগুলো পরিষ্কার। এক পর্যায়ে মিম চলে যেতে চান সে ফ্ল্যাট থেকে। কিন্তু দরজা আটকে রেখে আবার মারধর করেন কমরেড এ্যানী। এমনকি মিম চলে যাবার আগে, তাকে জোর করে বলতে বাধ্য করেন তেজস্বী কমরেড যে তিনি স্বেচ্ছায় চলে যাচ্ছেন। পাপিয়া আক্তার মিম এর ভিডিও ও ছবিতে কমরেড এ্যানীর ছবি পরিষ্কার। আহারে সুশীল, আহারে তার বামপন্থা, আহারে নারী অধিকার!!! আসুন, নির্যাতিতা মিমের পাশে দাঁড়াই। সোচ্চার হই। নাকি এবারও আপনি বামপন্থী গায়িকা কমরেড কৃষ্ণকলির বাসায় গৃহকর্মী জান্নাত আক্তার শিল্পী হত্যার সময় যেমন নিরব ছিলেন, তেমনই নিরব থাকবেন? আপনি কি প্রতিবাদটাও করবেন বেছে বেছে?’ মুন্না আমজাদ নামের একজন রাজপথের নারীর অধিকার আন্দোলনের নেত্রী এ্যানির মুখোশ উন্মোচন করার কথা বলেছেন। মিমের নির্যাতনের প্রতিবাদে আরো অনেকেই নানান মন্তব্য করেছেন এবং এ্যানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
নিউজ ডেস্ক ।।
বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস সংক্রমণরোধে আবারও সরকারি ছুটি বাড়ানো হতে পারে বলে আভাস মিলেছে। আগামী ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি বাড়তে পারে। আর সাপ্তাহিক ছুটি শুক্র ও শনিবার অর্থাৎ ১ ও ২ মে দুদিন ছুটির পর ৩ মে সরকারি-বেসরকারি অফিস খোলার সম্ভাবনার কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এর আগে চতুর্থ ধাপে বাড়ানো সাধারণ ছুটি আগামী ২৫ এপ্রিল শেষ হবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র জানায়, বিশ্বব্যাপী করোনা পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে। বাংলাদেশেও আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়ছে। বৃদ্ধি পাচ্ছে মৃত্যুর সংখ্যাও। গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৮৩৮ জনে। মারা গেছেন মোট ৭৫ জন।
আর বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫৯৩ জন। আক্রান্ত প্রায় ২২ লাখ। এমন অবস্থায় এখনই অফিস আদালত খুলে কোনো ধরনের ঝুঁকি নেবে না সরকার। তাই পুনরায় সাধারণ ছুটি বাড়ানোর বিষয়টি সরকারের ভাবনায় আছে। দু-একদিনের মধ্যেই হয়তো প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি নিয়ে ছুটি বাড়াবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। কারণ গত বৃহস্পতিবার সারাদেশকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। ফলে ছুটি বাড়ানোর কোনো বিকল্প নেই।
কোভিড-১৯ মহামারী মোকাবিলায় প্রথম দফায় ২৬ মার্চ থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি দেওয়া হয়েছিল। এর পর ছুটি বাড়িয়ে তা ১১ এপ্রিল করা হয়। এর পর আবারও তৃতীয় দফা ছুটি বাড়িয়ে করা হয় ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় চতুর্থ ধাপে ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি বাড়ানো হয়।
নতুন করে ছুটি বাড়ানোর কোনো চিন্তা আছে কিনা-এমন প্রশ্নে জনপ্রশাসন সচিব শেখ ইউসুফ হারুণ গতকাল শুক্রবার বলেন, পরিস্থিতি তো এখনো স্বাভাবিক হলো না। ছুটি বাড়লেও বাড়তে পারে। তবে এ মুহূর্তে কিছু বলতে পারছি না। এ বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।
তবে দায়িত্বশীল অনেক কর্মকর্তাই জানিয়েছেন, ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি বাড়বে। এটা অনেকটা নিশ্চিত। পরিস্থিতি বিবেচনায় এর পরও ছুটি বাড়ানো হতে পারে। কেউ কেউ এ-ও বলছেন, দেশ স্থবির হয়ে গেছে। দেশের অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে। তবু ছুটি বাড়বে। কারণ মানুষকে বাঁচানোই সরকারের প্রথম চ্যালেঞ্জ। প্রয়োজনে ঈদুল ফিতর পর্যন্ত বাড়তে পারে সাধারণ ছুটি।
করোনা ভাইরোস মোকাবিলায় মসজিদগুলোয় ওয়াক্তিয়া নামাজে পাঁচজনের বেশি মুসল্লি জামাত করতে পারছেন না। এ ছাড়া জুমার নামাজেও সর্বোচ্চ ১০ জনকে নিয়ে জামাত করার নির্দেশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়। করোনা রোধে এবার পহেলা বৈশাখের সরকারি আয়োজনও বাতিল করা হয়েছে। দেশের কোথাও উন্মুক্ত স্থানে বৈশাখের অনুষ্ঠান হয়নি।
এর আগে ১৭ মার্চ থেকে বাংলাদেশে সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বন্ধ এখনো চলছে। এমনকি এবার ১ এপ্রিল থেকে শুরু হওয়ার কথা থাকলেও এইচএসসির পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। এসএসসির রেজাল্টও আটকে গেছে।
গত ১০ এপ্রিল (শুক্রবার) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব (বিধি-৪) কাজী মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত চতুর্থ দফা ছুটি বাড়ানোর প্রজ্ঞাপনে করোনা মোকাবিলায় সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে কয়েকটি নির্দেশনা দেওয়া হয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো সারাদেশে সন্ধ্যা ৬টার পর বাইরে বের হওয়া যাবে না। বের হলেই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের মতাবলে দেশব্যাপী করোনা ভাইরাস মোকাবিলা এবং এর বিস্তাররোধে অধিকতর সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে আগামী ১৫ ও ১৬ এপ্রিল এবং ১৯ থেকে ২৩ এপ্রিল পর্যন্ত সাধারণ ছুটি ঘোষণা করা হলো। এর সঙ্গে ১৭-১৮ এবং ২৪-২৫ এপ্রিল সাপ্তাহিক ছুটি সংযুক্ত থাকবে।
এই ছুটি সাধারণ ছুটির মতো বিবেচিত হবে না উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপনে কয়েকটি শর্ত দিয়ে সেগুলো কঠোরভাবে মেনে চলতে বলা হয়েছে।
শর্তগুলো হলো, করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ প্রশমনে জনগণকে অবশ্যই ঘরে অবস্থান করতে হবে। অতিজরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হতে অনুরোধ করা হয়েছে। সন্ধ্যা ৬টার পর কেউ বাড়ির বাইরে বের হতে পারবেন না। এই নির্দেশ অমান্য করলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় চলাচল কঠোরভাবে সীমিত থাকবে। আর বিভাগ, জেলা, উপজেলা, ইউনিয়ন পর্যায়ে কর্মরত সব কর্মকর্তা-কর্মচারীকে দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে নিজ নিজ কর্মস্থলে অবস্থান করতে হবে।
নিউজ ডেস্ক ।।
করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা যদি না কমে তাহলে তারাবিহ ও ঈদুল ফিতরের নামাজ বাড়িতেই পড়ার আহবান জানিয়েছেন সৌদি আরবের গ্রান্ড মুফতি শাইখ আব্দুলআজিজ বিন আল-শাইখ। সৌদি প্রেস এজেন্সি শুক্রবার এ তথ্য জানায়।
দেশটির ইসলাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের কাছে বর্তমান পরিস্থিতিতে তারাবিহ ও ঈদের নামাজ কিভাবে আদায় করবে তা জানতে চেয়ে অনেকে প্রশ্ন করেন। মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে গ্রান্ড মুফতির নির্দেশনা জানতে চাইলে তিনি একথা বলেন।
গ্রান্ড মুফতি বলেন, যেহেতু করোনাভাইরাস প্রতিরোধ ব্যবস্থা গ্রহণের কারণে এ বছর মসজিদে তাদের যাওয়া সম্ভব নয় তাই নিজ বাড়িতেই এই পবিত্র মাসের ইবাদত বন্দেগীর করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, এটা প্রমাণিত হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ বাড়িতে কিয়ামুল লাইল বা তাহাজ্জুদের নামাজ আদায় করেছেন আর তারাবিহর নামাজ ফরজ নয় এটা সুন্নাত।
ঈদের নামাজের বিষয়ে মতামত দিতে গিয়ে সৌদি গ্রান্ড মুফতি বলেন, যদি বিরাজমান পরিস্থিতি অব্যাহত থাকে এবং ঈদের মাঠ বা মসজিদে নামাজ সম্ভব না হয় তবে নিজ বাড়িতেই খুতবা ছাড়াই নামাজ আদায় করা যাবে।
করোনা ভাইরাসে সৌদি আরবে ৭ হাজার ১৪২ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু বরণ করেছেন ৮৭ জন। সৌদি গেজেট।
নিউজ ডেস্ক ।।
এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার উত্তরপত্রের মূল্যায়ন শেষ করেছেন পরীক্ষকরা। তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক না হওয়ায় সেই খাতা বা নম্বরপত্র বোর্ডে জমা দিতে পারছেন না তারা। অন্য দিকে করোনার কারণে পরীক্ষার উত্তরপত্রের ওএমআর শিট স্ক্যানিংয়ের কাজও স্থগিত করেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। এ অবস্থায় এবারের এসএসসি ও সমমানের রেজাল্ট প্রকাশে আরো বিলম্বের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তবে ঢাকা শিক্ষাবোর্ড সূত্র জানিয়েছে, যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হলে শিক্ষকরা খাতা বা নম্বরপত্র বোর্ডে জমা দেয়ার ১৫ দিনের মধ্যেই ফলাফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে।
এসএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্রের মূল্যায়নের সাথে জড়িত এমন কয়েকজন শিক্ষকের সাথে কথা বলে জানা গেল, এ বছর এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার শুরুর প্রথম দিকের কিছু উত্তরপত্র মূল্যায়ন ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যেই শেষ হয়েছিল। সেইসব উত্তরপত্রের নম্বরশিট বোর্ডে পাঠিয়ে দিয়েছেন অনেক পরীক্ষক। কিন্তু পরের দিকে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার উত্তরপত্রের মূল্যায়ন শেষ হলেও করোনার কারণে তারা সেগুলো বোর্ডে পাঠাতে পারেননি। তবে সব উত্তরপত্রের মূল্যায়নের কাজ শেষ হয়েছে বলেও তারা জানান।
ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের এসএসসির উত্তরপত্র মূল্যায়নের সাথে সম্পৃক্ত জিল্লুর রহমান ও আনোয়ার হোসেন নামে সাভারের গুমাইল উচ্চবিদ্যালয়ের দু’জন পরীক্ষক গতকাল শুক্রবারা এই প্রতিবেদককে জানান, এ বছর পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ৩ ফেব্রুয়ারি। পরীক্ষা শুরুর প্রথম দিকের কিছু খাতা দেখে আমরা ২৫ ফেব্রুয়ারি মধ্যেই সেগুলোর নম্বর শিট বোর্ডে পাঠাতে পেরেছিলাম। কিন্তু পরের দিকের পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন শেষে সেগুলো আর বোর্ডে পাঠাতে পারিনি। করোনার কারণে এখন সেইসব খাতার মূল্যায়ন শেষ হলেও এখন তো বোর্ডে পাঠাতে পারছি না।
উল্লেখ্য, এ বছর ৩ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়ে ২৭ ফেব্রয়ারি শেষ হয়েছে এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালের লিখিত পরীক্ষা। আর ২৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ এসএসসির ব্যবহারিক পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। আর ২৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চ মধ্যে এসএসসি ও দাখিল ভোকেশনালের ব্যবহারিক পরীক্ষা নেয়া হয়েছে। পরের দিকে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার উত্তরপত্রের মূল্যায়ন শেষে সেই খাতা বা নম্বরপত্র বোর্ডে পাঠাতে পারছেন না অনেক পরীক্ষক।
এ দিকে করোনাভাইরাস আতঙ্কে শুরু থেকেই এসএসসি পরীক্ষার উত্তরপত্রের ওএমআর শিট স্ক্যানিং স্থগিত রেখেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড। ফলে যথাসময়ে পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। শুধু ঢাকা বোর্ড নয়, একই ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে অন্যান্য শিক্ষা বোর্ডেও। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অবশ্য দাবি করছেন আতঙ্ক কেটে গেলে ডাবল শিফটে কাজ করে এই গ্যাপ পূরণ করে নেয়া হবে।
গতকাল শুক্রবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর জিয়াউল হক নয়া দিগন্তকে জানান, সব পরীক্ষার উত্তরপত্রের মূল্যায়ন ইতোমধ্যে শেষ করেছেন সংশ্লিষ্ট পরীক্ষকরা। কিছু খাতা বোর্ডে জমাও হয়েছে। তবে করোনার কারণে অনেকে উত্তরপত্র বা নম্বর শিট বোর্ডে এসে জমা দিতে পারছেন না। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে আমরা আশা করছি ১৫ দিনের মধ্যেই এসএসসি ও সমমানের রেজাল্ট প্রকাশ করতে পারবো।
উল্লেখ্য, দেশে করোনা পরিস্থিত জটিল আকার ধারণ করার পর প্রত্যেক সেক্টরেই নতুন করে সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ইতোমধ্যে দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও আগামী ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কার্যক্রমও সীমিত করে আনা হচ্ছে। দেশে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় এসএসসি পরীক্ষার খাতার ওএমআর শিট স্ক্যানিং কার্যক্রম স্থগিত করেছে ঢাকা বোর্ড। একই সাথে মূল্যায়নকৃত খাতা নিয়ে বোর্ডে আসতেও পরীক্ষকদের নিষেধ করা হয়েছে।