শনিবার, ৪ঠা মে ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক :

ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে  ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) বিল-২০২০’ উত্থাপন করা হয়েছে। রোববার (০৮ নভেম্বর) জাতীয় সংসদে এই বিল উত্থাপন করেন  মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বেগম ফজিলাতুন নেসা।  এরপর বিল পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে এক সপ্তাহের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।

বিল উত্থাপনের আগে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ-২০২০’ সংসদে উত্থাপন করেন। ওই অধ্যাদেশের আলোকে সংসদে সংশোধনী বিলটি আনা হয়।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ অক্টোবর ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধিত) আইন, ২০২০’-এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় মন্ত্রিসভা।

এর আগে, গত ১২ অক্টোবর মন্ত্রিসভায় অনুমোদন হওয়ার পর ১৩ অক্টোবর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ‘নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২০’ জারি করেন।

নতুন  সংশোধিত আইনের ৯ (১) উপধারায় ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ শব্দগুলোর পরিবর্তে ‘মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপন করা হয়েছে।

আইনের ৯(৪)(ক) উপধারায় ছিল, ‘যদি কোনো ব্যক্তি কোনো নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করে মৃত্যু ঘটানোর বা আহত করার চেষ্টা করেন, তাহলে ওই ব্যক্তি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। পাশাপাশি অতিরিক্ত অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।

সংশোধিত আইনে ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে’-এর পরিবর্তে ‘মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ করা হয়েছে।

অনলাইন ডেস্ক :

সব ইন্টারনেট কোম্পানি যেমন গুগল-ফেসবুক, ইউটিউব, অ্যামাজন কোম্পানিগুলোকে পরিশোধিত অর্থ থেকে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সব ধরনের ট্যাক্স, ভ্যাট এবং অন্যান্য রাজস্ব আদায় করতে নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

রোববার (৮ নভেম্বর) এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল এবং বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব।

পরে ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব জানান, গুগল-ফেসবুক ও অন্যান্য ইন্টারনেট কোম্পানির বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার বিষয় এবং বাংলাদেশের রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধনের লক্ষ্যে জনস্বার্থে দায়ের করা রিট পিটিশনের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিবাদীদের প্রতি পাঁচটি নির্দেশনা জারি করেছেন।

এক. অনতিবিলম্বে সব ইন্টারনেটভিত্তিক কোম্পানি যেমন গুগল-ফেসবুক, ইউটিউব, অ্যামাজন কোম্পানিগুলোকে পরিশোধিত অর্থ থেকে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সব প্রকার ট্যাক্স, ভ্যাট এবং অন্যান্য রাজস্ব আদায় করতে হবে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিটিআরসিসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলোকে এ আদেশ দেওয়া হয়েছে।

দুই. ইন্টারনেট ভিত্তিক কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশ থেকে বিগত পাঁচ বছরে পরিশোধিত অর্থের বিপরীতে আনুপাতিক হারে বকেয়া রাজস্ব আদায় করতে হবে।

তিন. ওই রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর হলফনামা আকারে অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করবে।

চার. এ রায়টি একটি চলমান আদেশ বা কন্টিনিউয়াস ম্যানডেমাস হিসেবে বলবৎ থাকবে।

পাঁচ. এ রায়ের বাস্তবায়নে কোন ধরনের ব্যত্যয় ঘটলে বাংলাদেশের যেকোনো নাগরিক যেকোনো সময় আদালতে আবেদন দাখিল করে প্রতিকার চাইতে পারবেন।

২০১৮ সালে একটি পত্রিকার প্রতিবেদন সংযুক্ত করে ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়ার বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরে ব্যারিস্টার মো. হুমায়ন কবির পল্লব, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ কাওছার, ব্যারিস্টার মোহাম্মদ মাজেদুল কাদের, ব্যারিস্টার মো. সাজ্জাদুল ইসলামসহ ৬ জন আইনজীবী রিটটি দায়ের করেছিলেন।

অনলাইন ডেস্ক :

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, ১৯৬৯ সালে পৃথিবীতে শুরু হওয়া তৃতীয় শিল্প বিপ্লবে সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশকে শরীক করার দূরদর্শী পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে আইটিইউ ও ইউপিইউ এর সদস্য পদ গ্রহণ করে ও বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র স্থাপন করে ডিজিটালাইজেশনের বীজ বপন করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর নামে প্রতিষ্ঠিত সংগঠনসমূহের মূল কাজ হওয়া উচিৎ তার সোনার বাংলার স্বপ্ন বাস্তবায়নে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার চলমান সংগ্রাম এগিয়ে নেওয়া এবং তার আদর্শকে প্রসারিত করা।

রবিবার ওয়েবিনারে বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ, টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড শাখার নব নির্বাচিত কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ সব কথা বলেন।

বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ টেলিটক শাখার সভাপতি প্রকৌশলী মো. রনক আহসানের সভাপতিত্বে এবং বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ টেলিটক শাখার সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী আতিকুল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর, টেলিটক ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ টেলিটক শাখার প্রধান উপদেষ্টা মো. সাহাব উদ্দিন, বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. হাবিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান. আইইবির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু)।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী ডিজিটাল প্রযুক্তিকে এগিয়ে নিতে প্রকৌশলীদের ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা অত্যন্ত মেধাবী। আমরা অনেক ক্ষেত্রেই বিদেশি প্রকৌশলীদের উপর এখন আর নির্ভরশীল নই। আমাদের মেধাবী সন্তানরা আন্তর্জাতিক রোবটিকস প্রতিযোগিতায় বিশ্বের ১৭৪টি দেশকে হারিয়ে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সেতু পদ্মা সেতুসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় তারা দক্ষতার সাথে কাজ করছে।

মন্ত্রী বলেন, বিশ্বে টেলিকম প্রযুক্তি হচ্ছে শ্বাস প্রশ্বাসের মত। এটি ছাড়া মানুষের জীবনযাপন প্রায় অচল। এছাড়া গ্রামের দ্বিতীয় শ্রেণি পড়ুয়া শিশুটিও এখন ইন্টারনেট চায়। অনলাইনে ক্লাশ করার জন্য প্রতিটি শিক্ষার্থীর জন্য ইন্টারনেট এখন আবশ্যক একটি উপাদান। তিনি বলেন, টেলিটক প্রকৌশলীদের প্রধান কাজ হবে তাদের মেধাকে কাজে লাগিয়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে অংশ গ্রহণের উপযোগী করে টেলিটককে গড়ে তোলা।

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুই মেয়াদে তার ১৬ বছরের শাসনামলে অতীতের সকল পশ্চাদপদতা অতিক্রম করে বাংলাদেশকে বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করছেন। তিনি বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের নেতৃবৃন্দকে ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রূপকল্প বাস্তবায়নে নিজ নিজ দায়িত্ব নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে পালনের আহ্বান জানান।

মন্ত্রী জন-মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী টেলিটককে গড়ে তুলতে গৃহীত কর্মপরিকল্পনা তুলে ধরে বলেন, টেলিটককে মানুষের প্রত্যাশার জায়গায় নিয়ে যেতে আমরা কাজ শুরু করেছি এবং সেদিন বেশি দূরে নয় যে দিন টেলিটক হবে মানুষের প্রথম পছন্দ। দুর্গম পার্বত্য অঞ্চল এবং সুন্দরবনসহ হাওর, দ্বীপ ও চরাঞ্চলে ইতোমধ্যে মানুষ টেলিটকের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে পারছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশকে আধুনিক ও উন্নত বিশ্বের একটি দেশে পরিণত করা। তিনি জানতেন যেভাবে পৃথিবী পরিবর্তিত হচ্ছে এবং নতুন নতুন তথ্য-প্রযুক্তির উদ্ভাবন হচ্ছে, বাংলাদেশকেও সমান তালে এগিয়ে যেতে হবে। তাই তিনি চেয়েছিলেন বাংলাদেশকে প্রযুক্তিগত দিক থেকে উন্নত করতে। সেই অনুযায়ী বাংলাদেশ স্বাধীন করার পরপরই তিনি বহুবিধ পদক্ষেপ নিয়েছিলেন বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত উন্নতি সাধনের লক্ষ্যে। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুন বেতবুনিয়ায় উপগ্রহ ভূকেন্দ্র উদ্বোধনের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু ডিজিটাল বাংলাদেশের যে বীজ বপন করেছিলেন, তার সুযোগ্যকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তা আজ বাস্তবায়ন হচ্ছে। এর স্থপতি হিসেবে রয়েছেন তারই দৌহিত্র প্রকৌশলী সজীব ওয়াজেদ জয়।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর সফল উৎক্ষেপণ, ফোরজি মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহারসহ নানা কর্মযজ্ঞ এবং দেশের আইসিটি খাতে বাস্তবমুখী ও কার্যকরী বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়নের ফলে করোনাভাইরাস মোকাবেলায়ও বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে প্রশংসিত হয়েছেন। এই করোনা মহামারির মধ্যেও দেশের জিডিপি অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে অন্যান্য দেশের তুলনায়। এটি সম্ভব হয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের কারণে।

তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতিতেও শিক্ষার্থীরা যেন বিনামূল্যে অনলাইন এডুকেশন রিসোর্স ব্যবহার করতে পারেন সে লক্ষ্যে টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড নামমাত্র মূল্যে দেশের পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ প্রদানের যে প্রকল্প গ্রহণ করেছে সেটা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার। আমি আশা করি আমাদের এই প্রকৌশলীদের দ্বারা টেলিটক দেশের নাম্বার ওয়ান টেলিকমে উন্নীত হবে।

বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মো. হাবিবুর রহমান বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু তার স্বল্প শাসন আমলে প্রযুক্তি ও শিল্প বিকাশে অনেক অবদান রেখে গেছেন। তিনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উৎকর্ষ সাধনে অসংখ্য কাজ করে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশিত পথে যদি বাংলাদেশ চলতে পারতো তাহলে আমার অনেক আগেই উন্নত বাংলাদেশ পেতাম। বর্তমানে বঙ্গবন্ধুর কন্যা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা আশা করি প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বেই ২০৪১ সালের আগে আমরা উন্নত দেশে পদার্পণ করবো।

বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. নুরুজ্জামান বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। দেশে আজ ডিজিটাল হয়েছে বলেই করোনা মহামারির মধ্যেও সকল কিছু চালু রয়েছে। দেশের অর্থনীতিও সচল রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন এভাবে নিতে পারলে বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ে উঠবে খুব অচিরেই।

ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশ (আইইবি)’র সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী মো. শাহাদাৎ হোসেন (শীবলু) বলেন, টেলিটকের যত সাফ্যল্য আছে তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীর নেতৃত্বে টেলিটকের এমডি ইঞ্জিনিয়ার মো. শাহাবুদ্দিনের তত্ত্বাবধায়নে মেধাবী প্রকৌশলীরা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। নবীন ও প্রবীণদের সমন্বয়ে বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদ টেলিটক শাখার নতুন নেতৃত্ব বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে কাজ করে যাবেন এই আশা রাখি।

টেলিটকের বাংলাদেশ লি. এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মো. সাহাব উদ্দিন বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে প্রকৌশলীদের দুর্নীতি মুক্ত হতে হবে। কারণ প্রকৌশলীরাই ডিজিটাল বাংলাদেশ এগিয়ে নিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি মুক্ত দেশ গড়তে কাজ করে যাচ্ছেন। টেলিকম সেক্টরে টেলিটককে একটি মডেল হিসেব গড়ে তুলতে হবে। সরকারের চাহিদা অনুযায়ী ২০২৩ সালের মধ্যে ৫-জি চালু করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে।

অনলাইন ডেস্ক :

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সংসদের বিশেষ অধিবেশন শুরু হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে রোববার সন্ধ্যা ৬টায় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সংসদের বৈঠক শুরু হয়। এটি চলমান একাদশ সংসদের দশম অধিবেশন। চলবে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত।

বিশেষ অধিবেশন উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আগামীকাল সোমবার ভাষণ দেবেন। এজন্য সংসদ ভবন এলাকা সাজানো হয়েছে নতুন সাজে।

বরাবরের মতো এবারও করোনা পরিস্থিতির মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অধিবেশন চলবে। অধিবেশনে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনা ছাড়াও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাস হওয়ার কথা রয়েছে।

অধিবেশনের প্রথম দিন আজ শোকপ্রস্তাব ও অধ্যাদেশ উত্থাপন করা হবে। পরদিন ৯ অক্টোবর সন্ধ্যা ৬টায় বিশেষ অধিবেশনের কার্যক্রম শুরু হবে।

বঙ্গবন্ধুর বর্ণাঢ্য ও কর্মময় রাজনৈতিক জীবন নিয়ে রাষ্ট্রপতির স্মারক বক্তৃতার পর তা নিয়ে আলোচনার জন্য একটি সাধারণ প্রস্তাব আনা হবে। ওই প্রস্তাবের ওপর সরকার ও বিরোধীদলীয় সদস্যদের আলোচনা শেষে তা পাস হবে।

করোনাকালীন বিগত তিনটি অধিবেশনের মতো আগামী অধিবেশনেও সংসদ সদস্যরা রোস্টারভিত্তিতে অংশ নেবেন। রাষ্ট্রপতির স্মারক বক্তৃতার দিন ৯ নভেম্বর করোনা নেগেটিভ সব সংসদ সদস্য অধিবেশনে যোগ দিতে পারবেন।

এদিন প্রধান বিচারপতি, তিন বাহিনীর প্রধান, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টারা, বিদেশি কূটনীতিক, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য ও সমাজের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ আমন্ত্রিত অতিথিরা সংসদ গ্যালারিতে উপস্থিত থাকবেন।

মুজিববর্ষ উপলক্ষে গত ২২ মার্চ সংসদের বিশেষ অধিবেশন (সপ্তম অধিবেশন) আহ্বান করা হলেও দেশে করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি বেড়ে যাওয়ায় তা স্থগিত করেন রাষ্ট্রপতি।

ডাঃ এবিএম আবদুল্লাহঃ

 >> শীতে বিভিন্ন অসুখের প্রকোপ বাড়ে। তার মধ্যে অ্যাজমা চর্মরোগ ও নাক-কান-গলার অসুখও দেখা দেয়।  এ সময়ে সুস্থ থাকতে শরীরের বাড়তি যত্নের পাশাপাশি সর্তক থাকতে হবে।

আসুন জেনে নিই এসব রোগ থেকে সুস্থ থাকতে করণীয়–

অ্যাজমাঃ

হাঁপানি বা অ্যাজমাজাতীয় শ্বাসকষ্টের রোগ শুধু শীতকালীন রোগ নয়। তবে শীতের প্রকোপ অনেকাংশে বেড়ে যায়। অ্যাজমা একবার হলে এর ঝুঁকি মোকাবেলা করতে হয় সারা জীবনই।

তবে অ্যাজমাকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারলে জটিলতা বা ঝুঁকি থাকে না বললেই চলে।

করণীয়ঃ

অ্যাজমার রোগীরা শীতে পর্যাপ্ত গরম জামা-কাপড়ের বন্দোবস্ত করুন। ঘরে পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা করুন। বিশেষ করে শোবারঘরটি উষ্ণ রাখার চেষ্টা করুন।

অ্যাজমার ট্রিগারগুলো জেনে সতর্কভাবে চলুন। শীতের আগেই চিকিৎসককে দেখিয়ে ইনহেলার বা অন্যান্য ওষুধের ডোজ সমন্বয় করে নিন।

চর্মরোগঃ

শীতকালে বাতাসের আর্দ্রতা কম থাকে। শুষ্ক বাতাস ত্বক থেকে শুষে নেয় পানি। ফলে ত্বক হয়ে পড়ে দুর্বল। ত্বকের ঘর্মগ্রন্থি ও তেলগ্রন্থি ঠিকমতো ঘাম বা তৈলাক্ত পদার্থ তৈরি করতে পারে না।

এতে ত্বক আস্তে আস্তে আরও শুষ্ক, ফাটল ধরে ও দুর্বল হয়। একসময় ত্বক ফেটে যায়।

শীতের সময় নানা ধরনের চর্মরোগ হতে পারে। বিশেষ করে ঠোঁট, হাত ও পায়ের ত্বকে দেখা দেয় চুলকানি, একজিমা, স্ক্যাবিস, চর্মরোগ প্রভৃতি। এছাড়া মাথায় প্রচুর খুশকি দেখা যায়।

এসব থেকে পরিত্রাণ পেতে করণীয়ঃ

অলিভ অয়েল ত্বকে আলাদা আস্তর তৈরি করে বলে ঠাণ্ডাজনিত সমস্যা থেকে রেহাই পাওয়া যায়। শীতের সময় তাই অলিভ অয়েল বা লুব্রিকেন্টজাতীয় কিছু ব্যবহার করুন।

খুশকি দূর করতে অন্য সময়ের চেয়ে শীতে বেশি করে চুল শ্যাম্পু করুন। হাত ও পায়ের তালু এবং ঠোঁটে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগাতে দিন।

# ত্বকের সুরক্ষায় ময়েশ্চারাইজার যেমন : ভ্যাসলিন, গ্লিসারিন, অলিভ অয়েল ও সরিষার তেল ব্যবহার করুন।

বেশিক্ষণ রোদে থাকবেন না বা কড়া আগুনে তাপ পোহাবেন না। এতে চামড়ায় সমস্যা তৈরি হতে পারে।

নাক-কান-গলার অসুখ

এসব সমস্যাও শীতে বাড়ে। এসব রোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় নবজাতক, শিশু, বৃদ্ধ ও ধূমপায়ীর। শীতকালে নাকের দুই পাশের সাইনাসে ইনফেকশন দেখা দেয়, একে বলে সাইনোসাইটিস।

কারও সাইনোসাইটিস দেখা দিলে নাকের দুই পাশে ব্যথা ও মাথাব্যথা হতে পারে। অ্যালার্জি, ঠাণ্ডা এবং ইনফ্লুয়েঞ্জার মতো সমস্যাগুলো থেকে এই রোগের প্রকোপ দেখা দেয়।

কারও যদি অ্যালার্জি থাকে, সে ক্ষেত্রে জেনে নিতে হবে অ্যালার্জির কারণ। যাতে সতর্ক হয়ে তিনি নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।

পাশাপাশি ধূমায়িত এবং দূষিত পরিবেশ পরিত্যাগ করে চলা, ধূমপান পরিত্যাগ করা, ঘুমানোর সময় মাথা উঁচু রাখা (যাতে সাইনাস নিজে থেকেই পরিষ্কার হতে পারে), নাকে খুব জোরে আঘাত লাগতে না দেয়া ইত্যাদি বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে।

যাদের গলা ব্যথা, স্বরভঙ্গ, কণ্ঠনালির নানা সমস্যাসহ টনসিলের প্রদাহ বা টনসিলাইটিস রয়েছে, তারা লবণ মেশানো হালকা গরম পানি দিয়ে গরগর করলে আরাম পাবেন।

ঠাণ্ডা পানি পরিহার করে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করুন এবং গলায় গরম কাপড় বা মাফলার জড়িয়ে রাখুন।

লেখক : সাবেক ডিন, মেডিসিন অনুষদ, বিএসএমএমইউ

শিক্ষাবার্তা / B.A 

(more…)

ডাঃ মো. শফিকুল ইসলাম ঃ  

  > স্ট্রোক মস্তিষ্কের রক্তনালীর মারাত্মক রোগ। এই রোগে আক্রান্ত হওয়া মানেই মৃত্যুবরণ করা কিংবা আমৃত্যু পঙ্গু হয়ে পরিবার ও সমাজের হয়ে বোঝা হয়ে বেঁচে থাকা– কথাটি হয়তো কয়েক বছর আগেও সত্যি ছিল।

প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা  ও সংক্রামক রোগ চিকিৎসায় উদ্ভাবনে বাংলাদেশ বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করার পাশাপাশি জটিল, অ্যাকিউট ও ক্রোনিক নন কমিউনিকেবল রোগসমূহের উন্নত চিকিৎসা নিশ্চিতকরণে মাননীয় প্রধাণমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুগোপযোগী নেতৃত্বে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার গুরুত্বারোপ করছে।

২০২০ সালে করোনা মহামারী মোকাবেলার পাশাপাশি, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিউরোসার্জারি বিভাগের অধীনে অত্যাধুনিক নিউরো-ক্যাথল্যাব স্থাপন করা হয়েছে যেখানে স্ট্রোক সহ মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডের গুরুতর রক্তনালির রোগসমূহের ডায়াগনোসিস ও চিকিৎসা প্রদান করা সম্ভব। 

স্ট্রোক কী?

মস্তিষ্কের রক্তনালি বাধাপ্রাপ্ত হলে কিংবা ছিড়ে রক্তক্ষরণ হলে স্নায়ুকোষে রক্ত চলাচল ব্যাহত হয়।  এটিই স্ট্রোক বা ব্রেইন অ্যাটাক!
রক্তনালিতে চর্বি বা থ্রম্বাস জমে সরু হয়ে যে স্ট্রোক হয়  সেটি ইসকেমিক স্ট্রোক । আর রক্তনালি ফেটে রক্তক্ষরণ হলে সেটাকে হেমোরেজিক স্ট্রোক বলে। দ্বিতীয়টির মৃত্যু ঝুঁকি বেশি হলেও আমেরিকান স্ট্রোক অ্যাসোসিয়েশন এর জরিপ অনুযায়ী,  ৮৭ ভাগ স্ট্রোকই ইসকেমিক ধরনের হয়ে থাকে।  তাৎক্ষণিক চিকিৎসার অভাবে দীর্ঘমেয়াদি পঙ্গুত্বের  বিশ্বব্যাপী প্রধান কারণ- স্ট্রোক!

এছাড়াও ট্রান্সিয়েন্ট ইসকেমিক স্ট্রোক (TIA) বা ওয়ার্নিং স্ট্রোক নামে কিছুক্ষণ বা ২৪ ঘন্টার কম সময়ের জন্য রোগি স্ট্রোকের মত উপসর্গে ভুগে যেটা মাইল্ড স্ট্রোক নামে পরিচিত। যথাযথ চিকিৎসা না নিলে এদের ১০ জনে ১ জন ৩ মাসের মধ্যে মেজর স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়।

হার্ট অ্যাটাক বা হৃদরোগ মৃত্যুর প্রধান কারণ হলেও স্ট্রোকের  মৃত্যুহার রোগ হিসেবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ এবং সামগ্রিক জীবনমান ও আর্থসামাজিক ক্ষতি অপরিমেয়। ওয়ার্ল্ড স্ট্রোক অর্গানাইজেশন এর পরিসংখ্যান অনুযায়ী -  প্রতি ১ মিনিটে ১০ জন মানুষ স্ট্রোকে আক্রান্ত হন।  তাদের ২০ শতাংশের বয়স ৪০ বছরের নিচে।  প্রতি ৪ জনের মধ্যে ১ জন জীবদ্দশায় স্ট্রোকে আক্রান্ত হবেন।
(তথ্য সূত্রঃ WHO & WSO)
আপনিই সেই একজন নন তো?

অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন, ধুমপান, উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, ৫৫ বছরের বেশি বয়স্কদের ব্রেন স্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি। তবে শিশু থেকে শুরু করে যে কেউ এ রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।

এছাড়া সম্প্রতি গবেষণায় মহিলাদের স্ট্রোক হওয়ার হার বেশি পরিলক্ষিত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) এর মতে ৯০ ভাগ স্ট্রোকই অনিয়ন্ত্রিত ও ঝুঁকি পূর্ণ জীবনযাপনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।  অথচ ১০ টি অভ্যাস  পরিবর্তন করে স্বাস্থকর জীবন যাপন করলে  স্ট্রোক থেকে আপনি নিজেকে রক্ষা করতে পারেন।

কিভাবে বুঝবেন স্ট্রোক হয়েছে?

যদি আচমকা হাত, পা, বা শরীরের কোনো এক দিক অবশ লাগে বা চোখে দেখতে বা কথা বলতে অসুবিধা হয়, কিংবা তীব্র মাথা ব্যাথা হয় ও হঠাৎ ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যান – এমন কোনো একটি লক্ষণ দেখার সাথে সাথে দ্রুত হাসপাতালে চিকিৎসক এর শরণাপন্ন হোন। এগুলো BE FAST ( Balance, Eye, Face, Arm, Speech & Time)  হিসেবে পরিচিত।

হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা- শ্বাসপ্রশ্বাস ও রক্ত সন্ঞ্চালন নিশ্চিত করার পর দ্রুত মাথার সিটি স্ক্যান করে স্ট্রোকের ধরণ নির্ণয় করবেন চিকিৎসক গণ। রোগীর সজনদের উচিৎ এসময় রোগিকে মুখে কিছু না খাওয়ানোর চেষ্টা করা এবং এক দিকে কাত করে, বালিশ ছাড়া মাথা নিচু করে শোয়াতে হবে। ঔষধ ও পথ্য নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনে নাকে নল দিতে হতে পারে।

তাৎক্ষণিক  চিকিৎসার সুবর্ণ সময়

সিটি স্ক্যানে ইসকেমিক স্ট্রোক নির্ণয় হলে এন্টিপ্লেটলেট ও এন্টিকোয়াগুলেন্ট ঔষধ এর পাশাপাশি সম্প্রতি “অ্যালটিপ্লেজ” নামক থ্রোম্বোলাইটিক থেরাপি যা দ্রুত জমাট বাধা রক্ত গলিয়ে দেয় - প্রয়োগের মাধ্যমে সাড়ে চার ঘন্টা পর্যন্ত মস্তিষ্কের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি বা প্যারালাইসিস রোধ করা সম্ভব।

এটি স্ট্রোক চিকিৎসার গোল্ডেন আওয়ার বা সুবর্ণ ঘন্টা নামে জনপ্রিয়। পরবর্তীতে এমআরআই ইমেজ এর ওপর ভিত্তি করে ৬-১৬ ঘন্টা পর্যন্ত সময়ে এন্ডোভাস্কুলার নিউরোসার্জনগন না কেটে  সরু নলের সহায়তায় জমাট বাধা রক্ত বা চর্বির দলা বের করে আনতে পারেন। এছাড়াও গলায় অবস্থিত ক্যারোটিড ধমনী বেশি সংকুচিত হয়ে গেলে রিট্রাইভার মেশিনের সহায়তায় স্টেনটিং ও বেলুন এনজিওপ্লাস্টি করে মস্তিষ্কের রক্তসঞ্চালন পুনরায় ফিরিয়ে দিতে সক্ষম।  উন্নত বিশ্বে প্রায় ২৪  ঘন্টা পর্যন্ত মেকানিকাল থ্রম্বেক্টমির চেষ্টা করা হয়- যা এখন ঢাকাতেই  সম্ভব। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে  টাইম ইজ ব্রেইন- স্ট্রোকের পর প্রতি মিনিটে ২ মিলিয়ন স্নায়ু কোষ চিরতরে মারা যায়।

হেমরেজিক বা রক্তক্ষরণজনিত স্ট্রোক হলে থ্রোম্বোলাইটিক

ঔষধ প্রয়োগে আরও বিপত্তি হবে। রক্তক্ষরণের কারণ নির্ণয় করে -এন্ডোভাস্কুলার নিউরোসার্জনদের দক্ষ টিম এনিউরিজম(রক্তনালির ফোস্কা) ক্লিপিং ও কয়েলিং করতে পারেন। ক্ষেত্র বিশেষে শিশু ও কিশোরদের বিরল রক্তনালির জন্মগত ত্রুটিপূর্ণ গঠন দেখা দিলে তা স্ট্রোকের মত উপসর্গ হিসেবে দেখা দেয়।

এসব জটিল ক্ষেত্রে একই সংগে ক্যাথল্যাব এ এন্ডোভাস্কুলার অ্যাপ্রোচের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করে পরে মাথার খুলি হাইস্পিড ড্রিলের মাধ্যমে কেটে বিকৃত রক্তনালি সম্পূর্ণরূপে অপসারণ সম্ভব। নতুন এই দ্বৈত শল্যচিকিৎসা পদ্ধতিকে হাইব্রিড পদ্ধতি বলা হয়। বাংলাদেশে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিউসার্জারি বিভাগে এই সেবা সম্প্রতি চালু হয়েছে।

তাৎক্ষণিক চিকিৎসার প্রধান উদ্দেশ্য মৃত্যুঝুঁকি কমানোর পাশাপাশি কর্মক্ষমতা ফিরিয়ে আনা এবং পরবর্তী স্ট্রোকের ঝুকি হ্রাস করা৷সময় মতো যথাযথ চিকিৎসা পেলে শতকরা ৩০ ভাগ রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে কর্মময় জীবনযাপনে ফিরে যেতে পারবেন।  অনেকের স্ট্রোক পরবর্তী পুনর্বাসন প্রোগ্রাম পালন করতে হতে পারে।

লেখক: ডা. মো. শফিকুল ইসলাম

এন্ডোভাস্কুলার নিউরোসার্জন, সহযোগী অধ্যাপক, নিউরোসার্জারি বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল। 

শিক্ষাবার্তা/ B.A 

  • অনলাইন ডেস্কঃ  

    আপনি ডাক্তার দেখাতে যাবেন বা কাউকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবেন? হাসপাতালে বা চেম্বারে? কিছু নিয়ম মানুন।  দেখবেন ডাক্তার বিরক্ত হবেন না, আপনার চিকিৎসাও দ্রুত হবে। ডাক্তারের কাছে যাওয়ার আগে আপনার আগের চিকিৎসা সংক্রান্ত সকল কাগজপত্র দ্রুত নিয়ে নিন। প্রায়ই দেখি রোগীরা আগের কাগজপত্র আনেননি।

    জিজ্ঞেস করলে বলেন তাড়াহুড়ো করে আসছি, বা এগুলোতো অনেক আগের বা আগেরটা বাদ, আপনি নতুন করে চিকিৎসা করুন।

    এগুলো খুবই লেইম অজুহাত এবং বিপজ্জনক।  কেন? ব্যাখ্যা দেই- প্রথমত প্রায়সই রোগীরা ১০দিন, ২০ দিনের সিম্পটম নিয়ে আসেন, তাহলে কিভাবে তাড়াহুড়ো হল? আবার এত তাড়াহুড়ো করে এলেও কেউ কাথা, বালিশ, থালা, গ্লাস আনতে ভুলেন না, অথচ এগুলোর চেয়ে চিকিৎসার জন্য রোগীর আগের কাগজপত্র বেশি জরুরি।

    আর কাগজ ২/৩ বছর বা তারো আগের হলেও তা গুরুত্বপূর্ণ। একবার ভেবে দেখুন, আপনি ৩০/৪০ বছরের পুরোনো দলিল কিন্তু হারান না, কারণ সেটা খুব গুরুত্বপূর্ণ, তাহলে আপনি আপনার নিজের জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাগজ কেন হারাবেন? জমির মূল্য কি জীবনের চেয়েও বেশি? আবার অনেকেই যে বলেন আগের কাগজ বাদ, এটা খুবই হাস্যকর।

    আপনি যদি আগে কোন কোয়াক থেকে ভুল ওষুধ খেয়েও থাকেন, সেটা তো আপনার শরীরেই গেছে, এখন আপনি বাদ বললেই তো আর বাদ হয়না, আর কিছু ওষুধের ক্ষেত্রে আগে কী খেয়েছেন জানাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসার জন্য, যেমন- এন্টিবায়োটিক, উচ্চ রক্তচাপ কমার ওষুধ, যে কোন স্টেরয়েড জাতীয়ওষুধ ইত্যাদি। আবার অনেক ক্ষেত্রে আমরা আগের রিপোর্টের সাথে বর্তমান রিপোর্ট তুলনা করি দ্রুত ডিসিশন নিতে, যেমন আগের এক্সরে, আগের ইসিজি ইত্যাদি। সুতরাং আপনার সব চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র আলাদা ফাইলে রাখুন এবং ডাক্তারের কাছে যাওয়ার আগে প্রথমেই সাথে রাখুন।

    আজ দ্বিতীয় যে বিষয়টা বলব, তা হলো চিকিৎসককে আপনার সমস্যা কিভাবে বলবেন। দয়া করে কখনোই ডাক্তারকে বলবেন না, আমার হার্টে সমস্যা, লিভার এ সমস্যা, স্ট্রোক করছে, পেটে , বুকে পানি জমছে ইত্যাদি। কেননা আপনার মুখের কথায় এগুলো চিকিৎসক বিশ্বাস করেন না , বরং আপনার রোগ কী সেটা বের করাই ডাক্তারের কাজ, সুতরাং রোগের নাম বলা বাদ দিয়ে সমস্যা বলুন।  যেমন- আমার জ্বর ৫ দিন ধরে, আমার পেটে ব্যাথা, আমার শ্বাস কষ্ট ইত্যাদি।  আপনাকে ডাক্তার লক্ষণ কত দিনের সেটি জিজ্ঞেস করবেন।  সুতরাং সেটি আগেই ভেবে রাখুন। দয়া করে - অনেক দিন, ওই তো রোগ যতদিন ততদিন, ওই তো ডাক্তার দেখাইলাম তখন থেকে এমন ননস্পেসিফিক কথা বলবেন না।  আপনি আনুমানিক কাছের সংখ্যা বলুন।  যেমন- ১০-১২ দিন,মাস দুয়েক ইত্যাদি।  অমুককে দেখাইছি তমুক বলছে, এরপর তমুক বলছে অমুক হইছে এগুলো বলা থেকে বিরত থাকুন।

    ডাক্তার যা বলেন তা তার প্রেসক্রিপশনেই রয়েছে।  সুতরাং আপনার বর্তমান ডাক্তারকে তা পড়তে দিন, তিনি কিছু জানতে চাইলে বলুন।  প্রশ্নের পরিষ্কার জবাব দিন। যেমন- আপনার পায়খানা কেমন হয়? উত্তর প্রায়শই শুনতে হয়, খানাদানা নাই, পায়খানা কিভাবে হবে? এটা কিন্তু প্রশ্নের উত্তরে প্রশ্ন হয়ে গেল।  আপনার উত্তর হওয়া উচিত- পায়খানা স্বাভাবিক আছে, আগের মতই আছে, আগে দিনে একবার হত, এখন তিনদিনে একবার হচ্ছে ইত্যাদি।  আপনার গুছানো উত্তর আপনার দ্রুত রোগ নির্ণয়ে চিকিৎসককে সাহায্য করবে এবং প্রয়োজনীয় টেস্ট নির্ধারণে সাহায্য করবে, এতে টেস্টের সংখ্যাও কমতে পারে কোনো কোনো ক্ষেত্রে।

    লেখক: ডা. রিজওয়ানুল ইসলাম মাকসুদ

    মেডিকেল অফিসার, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ, সিলেট।

    শিক্ষাবার্তা/ B.A

অনলাইন ডেস্কঃ

প্রযুক্তি জায়ান্ট মাইক্রোসফট তাদের ব্রাউজার ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার-১১-এর পরিষেবা বন্ধ করতে চলেছে।

পুরনো ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার বদলে তাদের নতুন এজ ব্রাউজারের ওপর জোর দিচ্ছে। গত সপ্তাহে মাইক্রোসফ্ট ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ১১ বা আইই১১ ইউজারদের এজ ব্রাউজারের লেটেস্ট ভার্সনে রিডিরেক্ট করতে শুরু করে দিয়েছে। সেই সঙ্গে ওয়েবসাইটে জারি করা হয়েছে যেখান থেকে ইউজারদের এজ ব্রাউজারে রিডিরেক্ট করবে। যেই ওয়েবসাইটগুলোতে মাইক্রোসফ্টের দল শীর্ষস্থানে অবস্থান করে।

গত আগস্ট মাসেই মাইক্রোসফ্ট জানিয়েছিল, ৩০ নভেম্বর থেকে ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার-১১-এর পরিষেবা বন্ধ করে দেবে। প্রক্রিয়াটি চলতি মাস থেকে আগামী বছর অর্থাৎ ২০২১ সালের আগস্ট মাসের মধ্যে পুরোপুরি সম্পন্ন হবে।

 

অনলাইন ডেস্কঃ

আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচটির পরিবর্তে তিনটি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। ফলে ‘ঘ (সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ)’ ও ‘চ (চারুকলা অনুষদ)’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা হবে না।

রবিবার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিনস কমিটির সভায় এ সুপারিশ করা হয়। সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপেক্ষমান তালিকা থেকে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থী ভর্তির বিষয়টিও আলোচিত হয়েছে।

ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. হাসানুজ্জামান জানান, আগামী বছর থেকে খ, ঘ ও চ ইউনিট একত্র হয়ে যাবে। কারণ 'আর্টস'(কলা) থেকে আসা শিক্ষার্থীদের বারবার বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞানে পরীক্ষা নেওয়ার প্রয়োজন নাই। তারা খ-ইউনিট থেকে পরীক্ষা দেবে। একই সাথে সায়েন্স (বিজ্ঞান) বা কমার্স (বাণিজ্য) এর শিক্ষার্থীরা আগের মত ক ও গ ইউনিটে পরীক্ষা দেবে। তবে 'মাইগ্রেশন' পদ্ধতি থাকবে। অর্থাৎ সায়েন্স (বিজ্ঞান) বা কমার্স (বাণিজ্য) থেকে আসা শিক্ষার্থীরা চাইলে কলা, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের বিভাগগুলোতে পড়তে পারবেন।

তিনি জানান, আরেকটি বিষয়ে কথা হয়েছে। অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপেক্ষমান তালিকা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারবে।

একাধিক সূত্রে জানা যায়, এ সব সিদ্ধান্তের বিষয়ে ডিনরা সম্মতি দিয়েছেন। এরপর এটি একাডেমিক কাউন্সিলে যাবে। সেখানে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শিক্ষাবার্তা/ B.A
অনলাইন ডেস্কঃ  

  >> অনেক সময় স্বাভাবিকের চেয়ে ফোন চার্জ হতে বেশি সময় লাগে। কী কারণে ধীর গতিতে ফোন চার্জ হয় তা অনেকেই বুঝতে পারেন না। আবার অনেক সময় রাতভর ফোন চার্জে রেখেও শতভাগ না হওয়ার ‘যন্ত্রণায়’ ভোগেন। আবার কারো কারো ফোনে এক ঘণ্টার ভেতরেই চার্জ হয়। কেন দেরিতে ফোন চার্জ হয় তার কয়েকটি কারণ হলো-

১. খারাপ ক্যাবল: ফোনে ধীরে চার্জ হলে প্রথম কাজ হবে ক্যাবল পরীক্ষা করে দেখা। অনেকে এক ক্যাবল সব ডিভাইসে ব্যবহার করেন। এটি ঠিক নয়। এভাবে অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে ক্যাবলের ভেতরে ছোট যে কাটা থাকে, সেগুলো বেঁকে যায়। তাই চার্জ ঠিকমতো না হলে ক্যাবল পাল্টে ফেলুন।

চার্জার বা ক্যাবল পাল্টানোর জন্য দোকানে গিয়ে অপেক্ষা করতে হবে। যেটি কিনছেন সেটি দোকানে বসেই পরীক্ষা করে দেখবেন, দ্রুত চার্জ নিচ্ছে কি না। কয়েকটা পরীক্ষা করলে আপনার ফোনের জন্য সবচেয়ে কার্যকরীটি পেয়ে যাবেন।

২. দুর্বল পাওয়ার সোর্স: পিসির মাধ্যমে ফোন চার্জ দিলে খুব ধীরে চার্জ হবে। তাই এটি নিয়ে হা-হুতাশ করার কিছু নেই। চার্জের জন্য ওয়্যারলেস চার্জার ব্যবহার না করাই ভালো। একটি ডিভাইসের জন্য একটি চার্জার রাখবেন। এরপরেও যদি চার্জ ধীরে হয়, তাহলে আপনার বাড়ির বিদ্যুৎ ব্যবস্থায় (হোম-ওয়ারিং) সমস্যা থাকতে পারে।

৩. ব্যাটারির সমস্যা: চার্জার কিংবা ক্যাবল ঠিক থাকলেও অনেক সময় ব্যাটারির সমস্যার কারণে চার্জ ধীর গতিতে হতে পারে। তবে এক্ষেত্রে চার্জ দ্রুত ফুরিয়ে যাওয়া, স্মার্টফোন গরম হওয়া কিংবা অস্বাভাবিক হারে চার্জের পরিমাণ বাড়া-কমার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এসব ক্ষেত্রে ব্যাটারি পরিবর্তন করলে সমস্যার সমাধান হয়।

৪. শত্রু যখন নিজে: সারাদিন ফেইসবুক চালান ভালো কথা। তাই বলে চার্জে দিয়েও চালাতে হবে? সারা দিন গেম খেলেন ভালো কথা। তাই বলে চার্জে দিয়েও খেলতে হবে? আপনার এসব অভ্যাসের কারণে ফোন ধীরে ধীরে চার্জ নেয়। চার্জের সময় ফোনের ডিসপ্লে অন থাকলেও চার্জের গতি কমে যায়। বেশি রেজ্যুলেশনে ইউটিউব দেখলেও এমনটি হয়। ফোনে দ্রুত চার্জ পেতে হলে ডিভাইসটিকে বিশ্রাম দিতে হবে।

৫. চার্জিং পোর্টে সমস্যা: অনেক সময় চার্জিং পোর্টে সমস্যা হতে পারে। এক্ষেত্রে চার্জার ঠিকভাবে সংযোগ না পাওয়ার কারণে চার্জিং প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। এ কারণে ফোন ধীর গতিতে চার্জ হলে অনুমোদিত সার্ভিস সেন্টার থেকে চার্জিং পোর্ট সারিয়ে নিতে হবে।

শিক্ষাবার্তা/B.A

শিক্ষাবার্তা ডেস্কঃ

করোনাকালে সেশনজটহীন মেডিকেল শিক্ষাবর্ষের দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করেছে সরকারি-বেসরকারি, সাধারণ মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের শিক্ষার্থীদের একটি অংশ৷

আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শাহবাগ মোড়ের রাস্তা আটকে অবস্থান নেন মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজগুলোর শতাধিক শিক্ষার্থী৷ এতে শাহবাগ মোড় হয়ে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে৷ দেখা দিয়েছে দীঘ যানজট।

২৮ অক্টোবর এক বিজ্ঞপ্তিতে মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজের (এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্স) দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষ এবং পর্যায়ক্রমে প্রথম ও শেষ পর্ষের পরীক্ষার সম্ভাব্য তারিখ আগামী ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে নির্ধারণ করেছে স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিদপ্তর ৷ করোনার কারণে প্রায় ৮ মাস ধরে মেডিকেল কলেজগুলোর শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ আছে৷ শিক্ষার্থীরা বলছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে পরীক্ষা হলে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি রয়েছে৷ তা ছাড়া কোনো শিক্ষার্থী করোনায় সংক্রমিত হলে, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারলে তাঁরা অন্যদের চেয়ে পিছিয়ে পড়বেন৷ পরীক্ষা দিতে গিয়ে কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে তার দায় কর্তৃপক্ষককে নিতে হবে৷

শাহবাগ মোড়ে মেডিকেল ও ডেন্টাল শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবির পক্ষে নানা স্লোগান দিচ্ছেন৷ শিক্ষার্থীদের দাবির মধ্যে আছে—করোনা মহামারিতে প্রফের (পরীক্ষা) বিকল্প, অনতিবিলম্বে সেশনজট দূর করতে পরবর্তী পর্যায়ের অনলাইন ক্লাস শুরুর নির্দেশনা দেওয়া, পরীক্ষা ও ক্লাসবিষয়ক সব আদেশের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকির কথা বিবেচনা করা এবং বেসরকারি মেডিকেল-ডেন্টাল বন্ধ থাকাকালে নিয়মিত-অনিয়মিত শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত বেতন নেওয়া যাবে না৷

আন্দোলনে অংশ নেওয়া রাজধানীর বেসরকারি আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা সেশনজটে পড়ে যাচ্ছি৷ করোনার মধ্যে আমরা পরীক্ষায় বসতে চাই না৷ তাই এবার বিকল্প পদ্ধতিতে মূল্যায়ন চাইছি৷ ১৯০টি আইটেম পরীক্ষা দেওয়ার পর আমরা কার্ডে বসার সুযোগ পাই৷ ১৮টি কার্ড দেওয়ার পর আমরা প্রফে বসার সুযোগ পাই৷ চলতি বর্ষে আমরা এ পর্যন্ত যেসব পরীক্ষা দিয়েছি, সেগুলোর ওপর মূল্যায়ন করে আমাদের প্রমোশন দিয়ে পরবর্তী ধাপের অনলাইন ক্লাস শুরুর নির্দেশনা দেওয়া হোক৷

শিক্ষাবার্তা/B.A

।। আমিরুল আলম খান।।
তাঁর ক্ষমতা অনেক, বলতে গেলে অসীম ক্ষমতা। অন্তত তিনি তা–ই ভাবেন। কারও সঙ্গে কথাও বলতে তাঁর ভীষণ অনীহা। কারণ, তাঁর কাছে যাঁদের যেতে হয়, তাঁরা পেশায় সরকারি শিক্ষক। শিক্ষকদের সঙ্গেই না ক্ষমতার দাপট দেখানো যায়!

সেই অসীম ক্ষমতার কাছে হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টের আদেশও কোনো কাজে লাগে। ভুক্তভোগী শিক্ষকের সংখ্যা ৫৬৩ জন। এর মধ্যে অন্তত ১৫ জন ইতিমধ্যেই ধরাধাম ত্যাগ করেছেন। একজন শিক্ষকের পাওনা কয়েক লাখ টাকা। হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছেন এসব শিক্ষকের পাওনা পরিশোধ করতে। অর্থ মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় বাজেট ন্যস্ত করেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় আদেশ জারি করেছে। কিন্তু প্রবীণ এই ৫৬৩ জন শিক্ষক তাঁদের ন্যায্য পাওনা পাচ্ছেন না।

শিক্ষকদের ওপর ছড়ি ঘোরাতে এ দেশে সবাই তিন পায়ে খাড়া থাকেন। তারই ফলে এ বিপত্তির উদ্ভব। শুরুও প্রায় তিন দশক আগে। তখন যাঁরা সহকারী অধ্যাপক ছিলেন, তাঁরা অধ্যাপক হয়ে অবসরে তো গেছেনই। অনেকে আর এই পৃথিবীতে নেই। তাঁদের বঞ্চিত করা হয়েছিল। বঞ্চিত করা হয়েছিল আইন মোতাবেক টাইম স্কেল না দিয়ে।

অনেক দেনদরবার করেছেন তাঁরা। শিক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয়ে। কোনো কাজে আসেনি। তাঁরা যখন অধ্যাপক, তখন তাঁরা কেউ কেউ বেতন পেতেন তাঁরই অধীনস্থ সহযোগী অধ্যাপকের চেয়েও কম। বিষয়টা শেষমেশ আদালতে গড়ায়। হাইকোর্টে রিট হয়। রিট নিষ্পত্তি হয় বঞ্চিত শিক্ষকদের পাওনা পরিশোধের হুকুম দিয়ে। তা–ই নিয়ে আপিল। আপিল বিভাগে হাইকোর্টের রায় বহাল থাকে। কিন্তু অর্থ মন্ত্রণালয়ের অধীন পুরানা পল্টনের অফিস টালবাহানা শুরু করে। শিক্ষকদের কোনো আবেদন–নিবেদনেই কোনো কাজ হয়নি। এমনকি জমা দেওয়া আবেদনগুলোর ভিত্তিতে ফিক্সেশন পর্যন্ত করেনি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ওই প্রধান হিসাবরক্ষণ অফিস।

বাংলাদেশে এমন ক্ষমতাধর অফিস আছে। সেখানে বসেন আদালতের চেয়ে লম্বা হাতওয়ালা কর্মকর্তারা। তাঁরা সুযোগ পেলেই শিক্ষকদের ওপর এমন ছড়ি ঘোরান। আইনি-বেআইনি কাগজ চান। তাঁদের খাই মেটায়, এমন সাধ্য অন্তত শিক্ষকদের নেই। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে শিক্ষকেরা প্রতিদিন এ অফিসে ধরনা দেন। এ টেবিল–ও টেবিলে, এর কাছে ওর কাছে দৌড়ান। কিন্তু কাজ কিছুই হয় না। নিরীহ শিক্ষকদের পাওনা পরিশোধে তাঁদের বাহানার অন্ত থাকে না।

হায় বাংলাদেশ! একটি স্বাধীন দেশে শিক্ষকদের এমন অবমাননা সর্বত্র। জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গেলেই তা খানিক বোঝা যায়। প্রতিদিন সেখানে কোনো না কোনো বঞ্চিত শিক্ষকদের কোনো না কোনো গ্রুপ আন্দোলন করছে। মানববন্ধন, অনশন লেগেই আছে। কিন্তু বধির রাষ্ট্রের কানে সে আর্তনাদ পৌঁছে না। অথচ হক না-হক সুবিধা দিয়ে বশে রাখার কৌশল জারি আছে একশ্রেণির আমলাদের জন্য।

কিন্তু শিক্ষকদের জন্য খাজাঞ্চিতে বড় টান পড়ে। লাখ লাখ শিক্ষক নামের শ্রমদাস আছেন এ দেশে। তাঁরা কেউ ২৫, কেউ ৩০ বছর ‘মাস্টারি’ করছেন। কোনো মজুরি পান না। তাঁদের শ্রম শোষণ করে চার কোটি পড়ুয়ার বড়াই দেশে-বিদেশে। এমপিও হয় না। চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদেরও নিচে থাকে ‘মাস্টারের মজুরি’। এ এক অদ্ভুত দেশ। কেউ টাকা রাখার জায়গা পান না, কেউ বেঁচে থাকার মতো মজুরি পান না। এ রাষ্ট্রে ক্ষমতাবানরাই উইনার। আর উইনার টেকস অল। এভাবেই চলছে। বছরের পর বছর। সরকার আসে, সরকার যায়, মাস্টারের কপাল খোলে না।

বঞ্চিত শিক্ষকদের পক্ষ থেকে কন্ট্রোলার অব অ্যাকাউন্টস বরাবর ২ অক্টোবর অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী শিক্ষকেরা। সে অভিযোগের না হয়েছে কোনো তদন্ত, না কোনো সুরাহা। তারা নাকি জবাব তৈরি করছে। কবে সেটা পাওয়া যাবে তা আল্লাহ মাবুদ জানেন।

মনে হয়, এসব বঞ্চিত শিক্ষক ইহজগতে থাকতে পাওনার টাকার মুখ দেখবেন না।
এ দেশে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী হস্তক্ষেপ না করা পর্যন্ত কোনো কর্মকর্তা কী করতে হবে, তা ঠিক করতে পারেন না। এখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ ছাড়া বোধ করি তিন দশকের এ পুরোনো পাওনা পরিশোধ করার লোক অ্যাকাউন্টস অফিসে জন্মাবেন না।

লেখক- আমিরুল আলম খান, যশোর শিক্ষা বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান।
শিক্ষাবার্তা/B.A

magnifiermenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram