শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪

অনলাইন ডেস্কঃ

জমি নিয়ে ঝামেলা কমাতে জমি রেজিস্ট্রেশন ও নামজারি কার্যক্রম সমন্বয় সাধনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এর ফলে জমি রেজিস্ট্রেশনের ৮ দিনের মধ্যে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নামজারি হয়ে যাবে। সোমবার দুপুরে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সচিবালয়ে সীমিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম এ কথা জানান।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে এবং মন্ত্রিপরিষদের অন্য সদস্যরা সচিবালয় থেকে ভার্চুয়াল এই সভায় যোগ দেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, জমি রেজিস্ট্রেশন ও নামজারি কার্যক্রম সমন্বয় সাধনের প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এর ফলে দেশের মানুষ, সর্বসাধারণ, ইনভেস্টর সবার জন্য নতুন একটি অধ্যায় সৃষ্টি হলো। এর ফলে মামলা মোকাদ্দমাও কমে আসবে। চলতি বছরের প্রথমদিকেই কিভাবে জমি রেজিস্ট্রেশন ও নামজারি এগুলোকে আরও কমফোর্ট করা যায় সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছিলেন। মানুষের যাতে হয়রানি না হয়, সময় যেন না লাগে। এখনকার সিস্টেমটি হলো ভূমি রেজিস্ট্রেশন ও নামজারি আইন মন্ত্রণালয়ের অধীনে সাব রেজিস্ট্রার অফিস ও ভূমি মন্ত্রণালয়ের অধীন উপজেলা সার্কেল ভূমি অফিস থেকে সম্পন্ন হতো। দুইটি মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকার ফলে সব সময় কমিউনিকেশন করা ডিফিকাল্ট ছিলো। এ কারণে দীর্ঘসূত্রিতা ছিলো এবং রেজিস্ট্রেশনেও অস্পষ্টতা ছিলো, যেকোনো জমি যে কেউ রেজিস্ট্রেশন করতে পারত।

তিনি জানান, এখন থেকে সাব রেজিস্ট্রার অফিস ও এসিল্যান্ড অফিসের মধ্যে একটা ইন্টারনাল সফটওয়্যার থাকবে। বাংলাদেশের সব এসিল্যান্ড অফিসে ৪ কোটি ৩০ লাখ রেকর্ড অনলাইনে চলে এসেছে। এখন থেকে সাব রেজিস্ট্রার অফিস ও এসিল্যান্ড অফিস একজন অপরজনের সার্ভারে ঢুকতে পারবে। যখন কারো কাছে জমি রেজিস্ট্রেশনের জন্য যাবে, তখন সাব রিজেস্ট্রার সাথে সাথে রেজিস্ট্রি করে দেবে না, তিনি অনলাইনে এসিল্যান্ডের অফিস থেকে রেকর্ড-অব-রাইটস বা স্বত্বলিপি (খতিয়ান) জানবেন।

এতোদিন দুইটি দলিল করতে হতো। এখন থেকে তিনটি দলিল করতে হবে। বাড়তি একটা এসিল্যান্ড অফিসও পাবে। যেহেতু এসিল্যান্ড দলিল অনলাইনে পেয়ে যাচ্ছে এবং তার কাছ থেকেই জমির ভেরিফিকেশন করে রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে সুতরাং এসিল্যান্ডের আর বাড়তি কিছুই লাগবে না। তিনি অটোমেটিক সফটওয়্যার ম্যানেজমেন্টের মাধ্যমেই মিউটেশন (নামজারি) কমপ্লিট করবে। এক্ষেত্রে কাউকে ডাকতে হবে না। এটা ম্যাক্সিমাম আটদিন সময় দেয়া হয়েছে, তবে ৮ দিনও লাগবে না। এই ৮ দিনের মধ্যে অটোমেটিক নামজারি হয়ে যাবে। ১৭টি উপজেলায় ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে।

খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, অনেকে জমি রেজিস্ট্রেশন করেন, মিউটেশন করেন কিন্তু রেকর্ড করেন না। এখন থেকে রেকর্ডটাও করতে হবে। এসিল্যান্ডের দায়িত্ব থাকবে মাসিক রিপোর্ট দেবেন কতোটা মিউটেশন হলো এবং কতটা রেকর্ড হলো। নইলে খাজনা দিতে গেলে সমস্যা হয় এবং অন্যন্যা অনেক সমস্যা হয়।

তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ যাতে জমির সমান ভাগ পায় সেটি নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছেন জানিয়ে তিনি বলেন, সেটি নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। আমরা দেখবো তারা যেন বাবা মায়ের সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত না হন। প্রধানমন্ত্রী বিষয়টিতে বার বার গুরুত্ব দিয়েছেন। কেউ তৃতীয় লিঙ্গের হলে তিনি কিভাবে জমির ভাগ পাবেন সেটি মুসলিম আইনে উত্তরাধিকারে বলা আছে। কিন্তু অন্য ধর্মের ক্ষেত্রে সেটি বলা নেই, সে বিষয়েই প্রধানমন্ত্রী অনুশাসন দিয়েছেন যাতে কেউ বঞ্চিত না হন।

তিনি জানান, এছাড়াও আজকের বৈঠকে `টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট: বাংলাদেশে অগ্রগতি প্রতিবেদন-২০২০ সম্পর্কে অবহিতকরণ, বাংলাদেশ গ্লোবাল সেন্টার অন অ্যাডাপটেশন-এর আঞ্চলিক অফিস স্থাপন সম্পর্কে মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়।'

শিক্ষাবার্তা ডেস্কঃ

করোনাকালে সুস্থ থাকাটাই বড় কথা। আর সুস্থ থাকতে হলে আপনাকে বাড়াতে হবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। নিশ্চয়ই এতদিন ধরে শুনে আসছেন ভিটামিন সি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এই ভিটামিন সি’র বড় যোগানদাতা কিন্তু লেবু।
লেবু সাধারণত মানুষ খাবারদাবারের সঙ্গে খায়। তাতে আর কতটুকু ভিটামিন সি শরীরে ঢোকে। শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হলে লেবু খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে হবে। তা কীভাবে বাড়াবেন? এর সর্বোত্তম পন্থা হলো পানিতে লেবু চিপে সরবত করে খাওয়া। তবে এই সরবতে চিনি না নিলেই বেশি উপকার।

লেবুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি। তাই লেবুপানি তৈরিতে ছোট হলে একটা লেবুর রস ৮ আউন্স উষ্ণ বা স্বাভাবিক পানিতে মেশান। স্বাস্থ্যকর পানীয় তৈরির জন্য ফিল্টারের পানি এবং টাটকা লেবু ব্যবহার করা জরুরি।
নিচে লেবুপানি পানের সাতটি উপকারিতা তুলে ধরা হলো :
শরীর আর্দ্র রাখে:
শরীর আর্দ্র রাখার সর্বোত্তম উপায় পানি পান করা। কিন্তু অনেকের পানি পানে অনীহা রয়েছে। তাদের জন্য পরামর্শ- পানির সঙ্গে লেবুর রস মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে পর্যাপ্ত পানি পান করা হবে এবং শরীর আর্দ্র থাকবে। সেই সঙ্গে লেবু শরীরের টক্সিক পদার্থ বার করে দেয়। তাই যেকোনো অসুখে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে। শরীরের অনেক জীবাণুকে ধ্বংস করতে পারে লেবুপানি।
ভিটামিন সি’র ভালো উৎস
লেবুতে প্রচুর ভিটামিন সি রয়েছে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের কোষগুলোকে ফ্রি রেডিকেলের ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। ভিটামিন সি ঠান্ডা, সর্দি থেকে মুক্তি দেয়। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক মানুষের দৈনিক ভিটামিন সি এর চাহিদা ৬৫-৯০ মিলিগ্রাম। একটি লেবু থেকে ১৮ মিলিগ্রাম ভিটামিন সি পাওয়া যায়। দিনে দুই থেকে তিন বার লেবুপানি আপনি খেতেই পারেন। তাতে দেহে ভিটামিন সি’র চাহিদা পূর্ণ হবে।
ওজন কমায়
গবেষণায় দেখা গেছে যে, পলিফেনল অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এর ভালো উৎস লেবু। এটি ওজন বাড়তে দেয় না এবং স্থূলতা কমাতে সাহায্য করে। তাই পুষ্টিবিদরা বলেন, যারা ওজন কমাতে চান, তাদেরকে লেবুর রস হালকা গরম পানির সঙ্গে খেতে হবে।
ত্বক সুরক্ষা করে
লেবুতে থাকা ভিটামিন সি ত্বকে বলিরেখা পড়তে দেয় না। সূর্যের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করে ত্বকে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না।

হজমে সহায়ক
প্রতিদিন সকালে কুসুম গরম পানিতে লেবুর রস মিশিয়ে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। গরম বা উষ্ণ লেবু পানি পান করলে হজম প্রক্রিয়াকে চাঙ্গা করতে সাহায্য করে। আর খালি পেটে লেবুপানি পানের ফলে লিভার পরিষ্কার থাকে। এতে পরবর্তীতে খাবারগুলো ভালোভাবে হজম হয়। কারও কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে, তা থেকেও পরিত্রাণ পেতে পারেন।

নিশ্বাসে সজীবতা আনে
খাওয়ার পর অনেক সময় মসলা- পেঁয়াজ, রসুন বা মাছের গন্ধ মুখে লেগে থাকে। মুখের দুর্গন্ধ বা নিশ্বাসের দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পেতে খাওয়ার পর এক গ্লাস লেবুর পানি পান করতে পারেন। এক্ষেত্রে সকালে পান করলেও ফল পাওয়া যায়। এছাড়া লেবু পানিতে কুলকুচি করলেও মুখ সতেজ ও সুস্থ থাকে।

কিডনির পাথর প্রতিরোধ করে
লেবুতে থাকা সাইট্রিক অ্যাসিড কিডনিতে পাথর জমা প্রতিরোধ করে। এই সাইট্রিক অ্যাসিড কিডনিতে পাথর প্রতিরোধের পাশাপাশি জমে থাকা পাথর বের করতেও সাহায্য করে।
লেবুপানি খেতে পারেন দিনের যে কোনো সময়, খালি পেটেও। তবে লেবুর অ্যাসিডিক মাত্রা বেশি বলে অনেক চিকিৎসকই খালি পেটে খেতে নিষেধ করেন। সেক্ষেত্রে হালকা গরম পানিতে লেবু মিশিয়ে খেলে অ্যাসিডিটি আক্রমণ করতে পারে না। লেবুর মধ্যে থাকা ভিটামিন সি ও তার অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট আপনাকে বাঁচাতে পারে অনেক অসুখ থেকেও।

শিক্ষাবার্তা/ B.A

শিক্ষাবার্তা ডেস্কঃ

সামরিক সরকারের সময়ে প্রণীত মাদ্রাসা শিক্ষা অধ্যাদশকে নতুন করে আইনে পরিণত করতে ‘বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বিল-২০২০’ জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বরিবার বিলটি সংসদে উত্থাপন করলে এটি পরীক্ষা করে ৭ দিনের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। এতদিন ১৯৭৮ সালের অধ্যাদেশ অনুসারে মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ড চলছিল। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুসারে সামরিক শাসন আমলে প্রণীত যেসব আইন বা অধ্যাদেশের এখনও প্রয়োজন রয়েছে, সেগুলোকে পরিমার্জন করে বাংলায় রূপান্তরের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। নতুন আইনে অন্য শিক্ষা বোর্ডের মতো মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অবসরের বয়সসীমাও ৬০ বছর হবে।

শিক্ষাবার্তা/ B.A

অনলাইন ডেস্কঃ

অনেক সুস্বাদু ফল আনারস। অন্যদিকে পুষ্টিকর খাবার দুধ। আর এই দুই খাবার একসঙ্গে খেতে চান না অনেকেই। কারণ মৃত্যু ভয়। আসলে কি দুধ-আনারস একসঙ্গে খেলে মৃত্যু হয়?

আনারস আর দুধ একসঙ্গে খেলে মানুষ বিষক্রিয়া হয়ে মারা যায়-এ রকম একটি ধারণা প্রচলিত আছে। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইউজিসি অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, আনারস ও দুধ একসঙ্গে খেলে বিষক্রিয়া হয়ে মানুষ মারা যান এই ধারণা ভুল। এগুলো এক ধরনের ফুড ট্যাবু বা খাদ্য কুসংস্কার। আনারস একটি এসিডিক ও টকজাতীয় ফল।

দুধের মধ্যে যেকোনো টকজাতীয় জিনিস দিলে দুধ ছানা হয়ে যেতে পারে বা ফেটে যেতে পারে। এটা কমলা ও দুধের বেলায় বা লেবু ও দুধের বেলাতেও ঘটে। ফেটে যাওয়া দুধ খেলে খুব বেশি হলে বদ হজম, পেট ফাঁপা, পেট খারাপ– এ ধরনের সমস্যা হতে পারে, তবে বিষক্রিয়ার কোনো আশঙ্কা নেই।

তিনি বলেন, যাদের গ্যাসট্রিকের সমস্যা রয়েছে, খালি পেটে আনারস খেলে তাদের সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। আনারস আর দুধ বিরতি দিয়ে খাওয়াই ভালো। দুই থেকে তিন ঘণ্টা বিরতি দিয়ে খাওয়া যেতে পারে। নয়তো অনেক সময় পেটে গিয়ে হজমের সমস্যা হতে পারে। তবে যদি সঠিক নিয়মে খাবার বানানো হয় এবং সঠিক খাদ্যের সমন্বয় থাকে তাহলে কোনো সমস্যা হবে না।

শিক্ষাবার্তা/ B.A

নুর মোহাম্মদঃ  
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঠেকাতে চলতি বছরের ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত বার্ষিক পরীক্ষা বাতিল করা হয়েছে। পরবর্তী ক্লাসে অটো উত্তীর্ণ ঘোষণা করা হলেও শিক্ষার্থীদের ঘাটতিগুলো চিহ্নিত করতে এক মাসের সংক্ষিপ্ত অ্যাসাইনমেন্টভিত্তিক মূল্যায়ন করা হবে। যা ১ নভেম্বর থেকে শুরু হয়েছে। এ মূল্যায়নকে ঘিরে বাণিজ্য শুরু করেছেন দেশের বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকরা। এটিকেই সুযোগ হিসেবে নিয়ে বাড়তি অর্থ আয় করছেন প্রধান শিক্ষকরাও। কোথাও কোথাও শিক্ষার্থীদের স্কুলে ডেকে নিয়ে বকেয়া বেতন-ভাতা আদায়ের চেষ্টা করছেন। না দিলে অ্যাসাইমেন্ট নেওয়া হচ্ছে না। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ এবং মাউশির সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ভুক্তভোগীরা জানান, অ্যাসাইমেন্ট অনলাইনে নেওয়ার কথা থাকলেও কোথাও কোথাও স্কুলে যেতেও বাধ্য করা হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। এমনকি অভিভাবকদের ফোন করে মূল্যায়নে ভালো নম্বর দেওয়া হবে এমন আশ্বাস দিয়ে টাকা চাচ্ছেন শিক্ষকরা। কমিশনে ফটোকপি দোকানে বিক্রি করছেন। বেশ কয়েকজন অভিভাবক মাউশিতে এসব অভিযোগ করেছেন। এসব অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (মাধ্যমিক) প্রফেসর বেলাল হোসেন যায়যায়দিনকে বলেন, অ্যাসাইনমেন্ট করানোর নামে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে শিক্ষকরা টাকা নিচ্ছেন এমন কিছু অভিযোগ এসেছে। এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে মাউশি। জেলা ও উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের অ্যাসাইমেন্ট কঠোরভাবে মনিটরিং করতে বলেছি। কোনো শিক্ষক টাকা চাইলে শিক্ষার্থী-অভিভাবরা যেন সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসনকে জানায় সে পরামর্শও দেন তিনি। রাজধানীর দনিয়ার একটি স্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়েন তাবাসুম ফারিয়া। তার বাবা মাসুম আরিফ মাউশিতে অভিযোগ করে বলেন, ওই স্কুলের একজন শিক্ষক তার সন্তানের মূল্যায়ন ভালোভাবে করে দেবেন বলে ১ হাজার টাকা দাবি করেন। ওই শিক্ষক তাকে বুঝান, মূল্যায়নে ভালো নম্বর দিলে পরবর্তী ক্লাসে উত্তীর্ণ হতে সহায়ক হবে। ওই অভিভাবক মাউশিতে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন মূল্যায়ন হবে মূলত তার সন্তানের ঘাটতিগুলো চিহ্নিত করতে। এটা পরবর্তী ক্লাসে উঠতে কোনো সহায়তা করবে না এবং এটা সম্পূর্ণ ফি'তে করবেন শিক্ষকরা। এরপর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন তিনি। এদিকে দেশে বিভিন্ন জায়গা থেকে এ ধরনের অভিযোগ এসেছে মাউশিতে। অভিযোগে বাড়তি টাকা দাবি না দিলে পরের ক্লাসে উঠতে না দেওয়ার মতো হুমকিও দিয়েছেন শিক্ষকরা। ময়মনসিংহ জেলার ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার আঠারবাড়ি এমসি উচ্চ বিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীপ্রতি অবৈধভাবে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। টাকা না দিলে শিক্ষার্থীকে অষ্টম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করা হবে না বলে হুমকি দিয়েছিলেন একজন শিক্ষক। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ওই এলাকার দিনমজুর শহীদ ও বিলকিস আক্তারের মেয়ে রিতু আক্তার আঠারবাড়ি এমসি উচ্চ বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে। গত বৃহস্পতিবার সে বিদ্যালয়ে যায় অ্যাসাইনমেন্ট আনতে। এ সময় তার সহপাঠীরা শ্রেণি শিক্ষক মো. আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে অ্যাসাইনমেন্ট নিয়ে যাচ্ছে দেখে রিতুও এগিয়ে যায়। রিতু তাকে অ্যাসাইনমেন্ট দিতে বললে আনোয়ার হোসেন তিন পাতার প্রশ্ন (অ্যাসাইনমেন্ট), দুটি কলম ও এক পাতার সাজেশন দিয়ে ৩৪০ টাকা দাবি করেন। সে বাবার দেওয়া ১০০ টাকার একটি নোট দিলে তাকে ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দেন আনোয়ার। সে সঙ্গে ৩৪০ টাকাই আনতে বলেন। অন্যথায় সে অষ্টম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হতে পারবে না বলে শাসিয়ে দেন। এতে সে অপমাণিত হয়ে কান্নাকাটি করে বাড়িতে গিয়ে ঘটনা মাকে জানায়। এ অভিযোগ অস্বীকার করে শিক্ষক আনোয়ার হোসেন বলেন, আমি কোনো টাকা চাইনি। এলাকার কোচিংবাজ কিছু শিক্ষক আমার বিরুদ্ধে এসব কুৎসা রটাচ্ছেন। সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলায় হাতেম হাসিল ভাতহাড়িয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক শামীম হোসেন তালুকদার অ্যাসাইনমেন্ট দোকানে বিক্রি করছেন বলে অনেকে অভিযোগ করেছেন। ৩০ টাকার বিনিময়ে বাজারের কম্পিউটারের দোকানে এসব অ্যাসাইনমেন্ট পাওয়া যাচ্ছে। সেখান থেকে শিক্ষার্থীরা অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করতে বাধ্য হচ্ছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, স্কুলের শ্রেণি শিক্ষকের নির্দেশে আমরা দোকান থেকে অ্যাসাইনমেন্ট সংগ্রহ করছি। একেকটির দাম ৩০ টাকা। এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শিক্ষক শামীম হোসেন তালুকদার। তিনি বলেন, আমি কোনো নির্দেশনা দিইনি। বরিশাল বিভাগীয় শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট বুঝিয়ে দেওয়ার নামে তাদের স্কুলে ডেকে আনা হচ্ছে। এরপর তাদের কাছে যে বকেয়া বেতন রয়েছে তা নেওয়ার চাপ দেওয়া হচ্ছে। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্তে এ বেতন তোলা হচ্ছে বলে শিক্ষকরা কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন। এ ব্যাপারে বরিশাল জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান বলেন, অনলাইন থেকে অ্যাসাইনমেন্ট নিতে পারবে। তারপর সেটা না পারা গেলে স্কুল থেকে সংগ্রহ করবে। কিন্তু শিক্ষার্থীদের স্কুলে যেতে কেউ বাধ্য করতে পারবে না এবং টাকা চাইতে পারবে না। যদি কেউ চায় সঙ্গে সঙ্গে প্রশাসনকে জানাবেন। অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।
শিক্ষাবার্তা/
অনলাইন ডেস্কঃ  

অনতিবিলম্বে সব ইন্টারনেট ভিত্তিক কোম্পানি যেমন গুগল-ফেসবুক, ইউটিউব, অ্যামাজন কোম্পানিগুলোকে পরিশোধিত অর্থ থেকে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সব ধরনের ট্যাক্স, ভ্যাট এবং অন্যান্য রাজস্ব আদায় করতে নির্দেশ দিয়ে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এ বিষয়ে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে রোববার বিচারপতি  মো. আশরাফুল কামাল এবং বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার  মোহাম্মদ  হুমায়ন কবির পল্লব। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার  মোহাম্মদ কাওছার, ব্যারিস্টার মো. মাজেদুল কাদের, ব্যারিস্টার মোজাম্মেল হক ও ব্যারিস্টার সাজ্জাদুল ইসলাম।

পরে ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব সাংবাদিকদের জানান, গুগল- ফেসবুক এবং অন্যান্য ইন্টারনেট ভিত্তিক কোম্পানির বিরুদ্ধে রাজস্ব ফাঁকি  দেয়ার বিষয় এবং বাংলাদেশের রাজস্ব আদায়ের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধনের লক্ষে জনস্বার্থে দায়ের করা রিট পিটিশন এর চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিবাদীদের প্রতি পাঁচটি নির্দেশনা জারি করেছেন।

তা হলো-

এক. অনতিবিলম্বে সব ইন্টারনেট ভিত্তিক  কোম্পানি যেমন গুগল-ফেসবুক,  ইউটিউব, অ্যামাজন  কোম্পানিগুলোকে পরিশোধিত অর্থ থেকে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী সব ধরনের ট্যাক্স, ভ্যাট এবং অন্যান্য রাজস্ব আদায় করতে হবে।  জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ ব্যাংক, বিটিআরসিসহ সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলোকে এ আদেশ দেয়া হয়েছে।

দুই. ইন্টারনেট ভিত্তিক কোম্পানিগুলোকে বাংলাদেশ থেকে বিগত পাঁচ বছরে পরিশোধিত অর্থের বিপরীতে আনুপাতিক হারে বকেয়া রাজস্ব আদায় করতে হবে।

তিন. উক্ত রাজস্ব আদায়ের বিষয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড প্রতি ছয় মাস অন্তর অন্তর হলফনামা আকারে অগ্রগতি প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করবে।

চার. এ রায়টি একটি চলমান আদেশ বা কন্টিনিউয়াস ম্যানডেমাস হিসেবে বলবৎ থাকবে।

পাঁচ. এ রায় বাস্তবায়নে কোনো ধরনের ব্যত্যয় ঘটলে বাংলাদেশের  যেকোনো নাগরিক যেকোনো সময় আদালতে আবেদন দাখিল করে প্রতিকার চাইতে পারবেন।

২০১৮ সালে একটি পত্রিকার প্রতিবেদন সংযুক্ত করে ট্যাক্স ফাঁকি দেয়ার বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেন ব্যারিস্টার  মো. হুমায়ন কবির পল্লব, ব্যারিস্টার  মোহাম্মদ কাওছার, ব্যারিস্টার  মোহাম্মদ মাজেদুল কাদের, ব্যারিস্টার  মো. সাজ্জাদুল ইসলামসহ ছয় জন আইনজীবী। তারা জনস্বার্থে রিট পিটিশন দাখিল করেছিলেন।

শিক্ষাবার্তা/ B.A

অধ্যাপক আবিদ হোসেন মোল্লাঃ

মানুষের জীবনের অমূল্য সম্পদ হলো চোখ। শিশুর পরিপূর্ণ বিকাশে দৃষ্টিশক্তির গুরুত্ব অনেক। দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিশুর মানসিক বিকাশও বাধাগ্রস্ত হয়। তাই শিশুদের চোখের সার্বিক পরিচর্যায় সচেতন হওয়া দরকার।

শিশুর দৃষ্টিশক্তি বাধাগ্রস্ত হতে পারে যেসব কারণে

  • চোখের জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্মালে
  • অপরিণত বয়সে জন্ম হলে। বিশেষ করে যেসব শিশুর জন্মের পর লম্বা সময় ধরে অক্সিজেন দিতে হয়, তাদের চোখের রেটিনায় জটিল সমস্যা হতে পারে। এটি অনেক শিশুর অন্ধত্বের বড় কারণ।
  • চোখে আঘাত লাগলে
  • বারবার চোখে ব্যাকটেরিয়া অথবা ভাইরাসের সংক্রমণ হলে
  • দীর্ঘ সময় ধরে ভিটামিন ‘এ’র ঘাটতি। এতে শিশুর দৃষ্টিশক্তির ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। কারণ, ভিটামিন এ চোখের শুষ্কতা প্রতিরোধ করে, চোখের সামগ্রিক সুস্থতা বজায় রাখে এবং চোখের জ্যোতি ঠিক রাখে।
  • লম্বা সময় ধরে টেলিভিশন, কম্পিউটার বা মুঠোফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকলে। এতে চোখের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। যেমন চোখ শুষ্ক হয়ে যায়, চোখ জ্বালাপোড়া করে। অনেক শিশুর মায়োপিয়া বা দূরের জিনিস দেখতে কষ্ট হয়।

করণীয়

  • জন্মের পরপরই শিশুর চোখের কোনো সমস্যা আছে কি না, তা পরীক্ষা করাতে হবে। বিশেষ করে যেসব শিশুর জন্মের সময় ওজন কম থাকে, মায়ের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস অথবা সংক্রমণের ইতিহাস থাকে, তাদের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
  • যেসব শিশুর অপরিণত বয়সে অথবা কম ওজন নিয়ে জন্ম হয় এবং যাদের জন্মের পরপর শ্বাসকষ্ট ও রক্তে অক্সিজেনের ঘাটতি পূরণে দীর্ঘ সময় অক্সিজেন দিতে হয়, তাদের জন্মের এক মাসের মধ্যেই পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
  • জন্মের পরপরই শিশুকে শালদুধ দেওয়া নিশ্চিত করতে হবে। দুই বছর বয়স পর্যন্ত বুকের দুধ দিয়ে যেতে হবে। কারণ, শালদুধ শিশুর রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হয়। এ ছাড়া বুকের দুধে ভিটামিন এ–এর পরিমাণ অনেক বেশি।
  • শিশুর বয়স ৬ মাস পূর্ণ হওয়ার পর ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার যেমন সবুজ শাকসবজি, গাজর, পালংশাক, মিষ্টিকুমড়া, ছোট মাছ, ডিম ইত্যাদি একটু বেশি তেল দিয়ে রান্না করে খাওয়াতে হবে। কোনো অবস্থাতেই টিনের দুধ বা টিনের খাবার দেওয়া ঠিক হবে না।
  • শিশুর চোখের যেকোনো ধরনের সংক্রমণে দেরি না করে চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধ দিতে হবে। কিছুতেই নিজে নিজে দোকান থেকে ওষুধ কিনে তা ব্যবহার করা যাবে না।
  • শিশু লেখাপড়ায় ভালো না করলে, অমনোযোগী হলে বা মাথাব্যথায় ভুগলে অবশ্যই দৃষ্টিশক্তি পরীক্ষা করাতে হবে।
  • শিশুর ৬ মাস বয়স থেকে ৫ বছর পর্যন্ত প্রতি ৬ মাস পরপর ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়াতে হবে।
  • একনাগাড়ে লম্বা সময় টেলিভিশন, কম্পিউটার বা মুঠোফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে থাকা বন্ধ করতে হবে।
  • ছোট শিশুদের চোখে সুরমা বা কাজল লাগানো ঠিক নয়।
  • দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় শিশুকে বাইরের আলোয় খেলাধুলা করার সুযোগ দিতে হবে। কারণ, দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সূর্যের আলোর ভূমিকা আছে। তা ছাড়া খেলাধুলার ব্যায়ামে চোখের রক্তসঞ্চালন, অক্সিজেন সরবরাহ ভালো থাকে।
  • অতিরিক্ত রোদে যাওয়ার আগে সানগ্লাস ব্যবহার করতে হবে।
  • শিশুদের পড়ার ঘরে পর্যাপ্ত আলো থাকতে হবে।
  • অধ্যাপক আবিদ হোসেন মোল্লা, বিভাগীয় প্রধান, শিশুরোগ বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল
অনলাইন ডেস্কঃ

  প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (ডিপিই) অধীন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি গত মাসে প্রকাশিত হয়েছে। বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৩২ হাজারের বেশি সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, ‘সহকারী শিক্ষকেরা’ জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫–এর ১৩তম গ্রেডে নিয়োগ পাবেন। তবে তিন পার্বত্য জেলা রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের প্রার্থীরা এতে আবেদন করতে পারবেন না। প্রাথমিকের ইতিহাসে এটাই সবচেয়ে বড় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বলে জানা গেছে। নতুন নিয়োগ নীতিমালা অনুযায়ী, প্রথমবারের মতো নারী প্রার্থীরা স্নাতক পাস ছাড়া আবেদন করতে পারবেন না। আর পুরুষ প্রার্থীদের আবেদনের যোগ্যতা আগের মতোই স্নাতক পাস থাকছে।

আবেদন করবেন যেভাবে

প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৫ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে http://dpe.telelalk.com.bd অনলাইনে আবেদন গ্রহণ শুরু হয়েছে। আবেদন গ্রহণ শেষ হবে ২৪ নভেম্বর রাত ১১টা ৫৯ মিনিটে। এ পদে প্রার্থীদের অনলাইনের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। ওয়েবসাইটে অনলাইনে আবেদনের ফরম পূরণের নির্দেশনা পাওয়া যাবে। নির্দেশনা অনুযায়ী অনলাইন আবেদনপত্র পূরণ করতে হবে।

অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণ করে জমা করার পর অ্যাপ্লিকেশন কপি প্রিন্ট নিতে হবে। সঠিকভাবে পূরণকৃত অ্যাপ্লিকেশন কপির ইউজার আইডি দিয়ে আবেদন ফি জমা দিতে হবে। একবার আবেদন ফি জমা দেওয়ার পর অ্যাপ্লিকেশন ফরম কোনো অবস্থায়ই সংশোধন বা প্রত্যাহার করা যাবে না। শুধু ইউজার আইডিপ্রাপ্ত প্রার্থীরা এই সময় পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত এসএমএসের মাধ্যমে ফি প্রদান করতে পারবেন।

আবেদনকারী একটি ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড পাবেন। ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড সব সময়ের জন্য প্রার্থীকে সংরক্ষণ করতে হবে। প্রার্থীকে পরীক্ষার ফি বাবদ সার্ভিস চার্জসহ ১১০ টাকা পরিশোধ করতে হবে। আবেদনকারীকে যেকোনো টেলিটক প্রি-পেইড মোবাইল নম্বর থেকে এসএমএসের মাধ্যমে যথাসময়ে প্রেরণ করতে হবে।

বয়সসীমা

আবেদনকারী প্রার্থীদের বয়স ২০ অক্টোবর তারিখে সর্বনিম্ন ২১ বছর এবং ২৫ মার্চ পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৩০ বছর হতে হবে। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে এ বয়সসীমা হবে ৩২ বছর। প্রাথমিকের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে ৩০ বছর পূর্ণ হওয়া প্রার্থীরাও আবেদনের সুযোগ পাচ্ছেন। কারণ, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে এ বছর ২৫ মার্চ যাঁদের ৩০ বছর পূর্ণ হয়েছে, সরকারি চাকরিতে তাঁদের আবেদনের সুযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। এ নিয়ে প্রজ্ঞাপনও জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ওই প্রজ্ঞাপনের আলোকে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এ বছরের ২০ অক্টোবরে বয়স সর্বনিম্ন ২১ বছর এবং ২৫ মার্চ ২০২০ তারিখে প্রার্থীর বয়স সর্বোচ্চ ৩০ বছর হতে হবে। তবে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও শারীরিক প্রতিবন্ধী আবেদনকারীর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ বয়সসীমা ২৫ মার্চে ৩২ বছর।

শিক্ষাগত যোগ্যতা

আবেদনকারীকে যেকোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএসহ স্নাতক বা সম্মান বা সমমানের ডিগ্রি থাকতে হবে।

আবেদন ফি

মোট আবেদন ফি ১১০ টাকা। যার মধ্যে অফেরতযোগ্য ১০০ টাকা আবেদন ফি ও ১০ টাকা টেলিটকের সার্ভিস চার্জ।

যেসব কাগজপত্র লাগবে

প্রার্থী লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পর আবেদনপত্রের সঙ্গে অনলাইনে দাখিল করা আবেদনের ফটোকপি, পাসপোর্ট সাইজের দুই কপি ছবি, প্রথম শ্রেণির গেজেটেড সরকারি কর্মকর্তা কর্তৃক সত্যায়িত শিক্ষাগত যোগ্যতা সম্পর্কিত সব মূল বা সাময়িক সনদপত্র এবং সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান/পৌরসভার মেয়র/সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর কর্তৃক প্রদত্ত নাগরিকত্ব সনদপত্রসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে জমা দিতে হবে।

বেতন

সহকারী শিক্ষক পদে বেতন ১১০০০-২৬৫৯০ টাকা (গ্রেড-১৩) (জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫ অনুযায়ী)।

ডিপিই সূত্রে জানা গেছে, এবারের বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সারা দেশে ২৫ হাজার ৬৩০ জন প্রাক্‌-প্রাথমিক শিক্ষক এবং ৬ হাজার ৯৪৭ শূন্য পদে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে।

শিক্ষাবার্তা/B.A

বিনোদন ডেস্ক :

আমেরিকার নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হলেন জো বাইডেন। পুরো বিশ্ব পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্টকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। কিন্তু এসবের মাঝেই সোশ্যাল মিডিয়ায় বাইডেনকে নিয়ে একটি পোস্ট দিয়েছেন বলিউডের বিতর্কের রানী খ্যাত অভিনেত্রী কঙ্গনা রানাওয়াত। যা রীতিমতো রীতিমতো অবাক করেছে নেটিজেনদের। ৭৮ বছর বয়সি আমেরিকার পরবর্তী প্রেসিডেন্টকে ‘গজনি’ ছবির আমির খানের সঙ্গে তুলনা করেছেন এই অভিনেত্রী!

উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে মুক্তি পেয়েছিল আমির খান অভিনীত ‘গজনি’ছবিটি। বক্স অফিসে রীতিমতো ঝড় তুলেছিল সেই সিনেমা। যে ছবিতে একজন বিজনেস টাইকুনের ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল আমির খানকে। যার একটি দুর্ঘটনার পর স্মৃতিশক্তি দুর্বল হয়ে গিয়েছিল। অল্প সময়ের মধ্যেই আগের কথা ভুলে যেত সে। সেই ‘গজনি’র সঙ্গেই জো বাইডেনের তুলনা টানলেন বলিউডের কন্ট্রোভার্সি ক্যুইন।

বাইডেনকে ‘গজনী’র সাথে তুলনা করলেন কঙ্গনা!

বিজ্ঞাপন

ঘটনার কেন্দ্রবিন্দু মূলত কমলা হ্যারিস। জো বাইডেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতেই কমলা হ্যারিস হয়ে যান প্রথম নির্বাচিত ভাইস-প্রেসিডেন্ট। জয়ের পর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন উচ্ছ্বসিত দক্ষিণ এশিয়ার বংশোদ্ভূত কমলা। আর সে ভাষনে কমলা বলেন, ‘আমি এই অফিসের প্রথম মহিলা হতে পারি। কিন্তু শেষ নই। কারণ যে সমস্ত খুদে মেয়েরা এই মুহূর্তের সাক্ষী থাকছে, তারা জানবে যে এই দেশে কোনও সম্ভাবনাই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। সবকিছুই সম্ভব।’

কমলা হ্যারিসের সেই বক্তব্যের ভিডিওটি শেয়ার করে তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কঙ্গনা রানাওয়াত। আর সেই পোস্টে বাইডেনকে ‘গজনি’ বলে সম্বোধন করেছেন তিনি। লিখেছেন, ‘গজনি বাইডেনের ডেটা প্রতি পাঁচ মিনিটেই ক্র্যাশ করে যায়। যা ওষধুই দেওয়া হোক, এক বছরের বেশি টিকবে না। তাই খুবই স্পষ্ট যে কমলা হ্যারিসই এই শো’টা চালাবেন। একজন মহিলা মাথাচাড়া দিলে, তিনি অন্যদেরও টেনে তুলতে সাহায্য করেন। এই ঐতিহাসিক দিনের জন্য অনেক অভিনন্দন।’

বাইডেনকে ‘গজনী’র সাথে তুলনা করলেন কঙ্গনা!

কঙ্গনার এমন তুলনায় বিস্মিত হয়েছেন অনেকেই। আবার অনেকেই বলছেন, এমনটা লেখা কঙ্গনার পক্ষেই সম্ভব। তবে এটা ঠিক যে, সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু তদন্ত হোক কিংবা মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন- সর্বদা শিরোনামে সেই কঙ্গনাই।

দেহঘড়ী ডেস্ক :

এতো দিন পর্যন্ত সকালের হালকা রোদ থেকে যে পরিমাণ ভিটামিন ডি পাওয়া যেত তা দিয়েই আমরা সুস্থ থাকতাম। কিন্তু মহামারি করোনা আমাদের জানিয়ে দিয়েছে, এই মরণ ভাইরাসকে রুখতে সবচেয়ে কার্যকর ভিটামিন ডি।

সম্পতি হাভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথের তথ্যমতে, বিশ্বব্যাপী প্রায় একশ কোটি লোক ভিটামিন ডি এর অভাবে ভুগছে।

দেহের মোট চাহিদার ৮০ শতাংশ ভিটামিন ডি পাওয়া যায় সূর্যের আলো থেকে। সূর্যের আলো পড়লে এর প্রভাবে ত্বক ভিটামিন ডি তৈরি করে। ফলে এটিই ভিটামিন ‘ডি’র অন্যতম প্রধান উৎস। এছাড়া বিভিন্ন খাবার থেকে বাকি ২০ শতাংশ ভিটামিন ‘ডি’ পাওয়া যায়।

দুপুরের ঠিক আগ মুহূর্তে সূর্য যখন আকাশের সবচেয়ে উঁচু স্থানে থাকে, তখনই শরীরের ত্বক সবচেয়ে বেশি ভিটামিন ‘ডি’ উৎপন্ন করে। তবে সানস্ক্রিন ছাড়া দীর্ঘ সময় প্রচণ্ড রোদে থাকা উচিত নয়।

দেহের যত বেশি অংশ খোলা রেখে রোদে থাকবে, তত বেশি ভিটামিন ‘ডি’ পাওয়া যাবে। যেমন: শুধু হাত-মুখ খোলা রেখে রোদে থাকার চেয়ে পিঠসহ শরীরের অন্যান্য অংশ খোলা রাখলে বেশি ভিটামিন ‘ডি’ পাওয়া যায়। সুস্থ থাকতে দৈনিক ১৫ মিনিট রোদে থাকা ভালো।

৮০ শতাংশ তো আমরা রোদ থেকে পেয়ে যাচ্ছি, আর বাকি ২০ শতাংশের জন্য আমাদের নির্ভর করতে হয় খাবারের ওপর। যেসব খাবারে ভিটামিন ডি পেতে পারি তার মধ্যে রয়েছে পনির। পনির একটি মজাদার খাবার। একই সঙ্গে পনিরে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন-ডি।
মাশরুম ভিটামিন-ডি'র একটি আদর্শ উৎস। বিভিন্ন তরকারির মধ্যে মাশরুম ব্যবহার করলে তা যেমন স্বাদে উন্নত হয়, একই সঙ্গে তরকারির পুষ্টিগুণও বাড়ে।

এছাড়া সব মাছেই ভিটামিন ডি বিদ্যমান। বিশেষ করে চর্বিযুক্ত মাছ, যেমন- স্যামন, সার্ডিনস, টুনা, ম্যাককেরেল ইত্যাদিতে ভিটামিন-ডি’র পরিমাণ বেশি। দৈনিক ভিটামিন-ডি চাহিদার ৫০ শতাংশ পূরণ হতে পারে একটি টুনা মাছের স্যান্ডউইচ।

মনে রাখতে হবে, আমাদের শরীরে ভিটামিন ডি কম থাকলে হাড়ের সমস্যা, হাড় ক্ষয়ে যাওয়া, বাতের ব্যথা, কিছু ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্বের মতো সমস্যা হতে পারে। কিন্তু আপনার শরীরে ঠিক কী মাত্রায় এই উপাদান রয়েছে, পরীক্ষা না করে ওষুধ খাওয়া কখনোই উচিত না।

বিশেষ সংবাদদাতা :

করোনাভাইরাসের কারণে স্থগিত হয়ে থাকা বাংলাদেশের বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচগুলো আবার চালু হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। প্রথম ধাপে কাতার আর বাংলাদেশ মৌখিকভাবে রাজী হয়েছে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রথম পর্বের ফিরতি লেগের ম্যাচটি খেলার ব্যাপারে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে, আগামী ৪ ডিসেম্বর কাতারের রাজধানী দোহায় অনুষ্ঠিত হবে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচ।

করোনাভাইরাসের কারণে ঘরোয়া এবং আন্তর্জাতিক সব খেলাই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। যদিও নানা পদ্ধতি বের করে, করোনামুক্ত পরিবেশে খেলা আয়োজনের চেষ্টা চলছে। ইউরোপিয়ান ফুটবল লিগগুলো শুরু হয়েছে গত জুন থেকে। গত মৌসুমের খেলা শেষ হওয়ার পর শুরু হয়েছে নতুন মৌসুমের খেলা।

ফুটবলের আন্তর্জাতিক সংস্থা ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইসহ সব ধরনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ স্থগিত করে দিয়েছিল। তবে দর্শকহীন স্টেডিয়ামে, বায়ো-বাবল বলয়ের মধ্যে থেকে আয়োজন করা হচ্ছে খেলাগুলো। ফিফার মত এএফসিও বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচগুলো স্থগিত করে দিয়েছিল। এখনও পর্যন্ত এশিয়ায় বিশ্বকাপ বাছাইয়ের ম্যাচগুলো শুরু করা হয়নি।

যদিও ফিফা এবং এএফসি বলে দিয়েছে, প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো চাইলে পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে খেলতে পারবে। সেই কথার ওপরই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন এবং কাতার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন মৌখিকভাবে সম্মতিতে পৌঁছেছে যে, তারা এই ম্যাচটি খেলবে এবং সেটার সম্ভাব্য তারিখ ৪ ডিসেম্বর।

তবে কাতার ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন ফিফা এবং এফসির অনুমতি চেয়েছে ম্যাচটি আয়োজনের। সেই অনুমতি চলে আসলেই আনুষ্ঠানিকভাবে তারিখ ঘোষনা করা হবে। বাফুফে সাধারণ সম্পাদক মোঃ আবু নাইম সোহাগ জাগো নিউজকে জানিয়েছেন, ‘এক সপ্তাহের মধ্যে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হবে।’

বিশ্বকাপ বাছাই পর্বেং বাংলাদেশের ফিরতি পর্বের ম্যাচ বাকি কাতার, ভারত, আফগানিস্তান এবং ওমানের বিপক্ষে। এর মধ্যে শুধু কাতারের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচ। বাকি তিনটি ম্যাচ হোমে, অর্থ্যাৎ ভারত, আফগানিস্তান এবং ওমান আসবে ঢাকায় খেলতে। গত বছর অক্টোবরে ঢাকার মাঠে কাতারের বিপক্ষে দুর্দান্ত খেলেছিল বাংলাদেশ। যদিও ওই ম্যাচে ২-০ গোলে হেরে গিয়েছিল জামাল ভূঁইয়ারা।

সাতসতেরো ডেস্ক :

হোয়াইট হাউজ। নামটি শুনলেই মনে পড়ে বিশ্বমোড়ল বাঘা সব মার্কিন প্রেসিডেন্টদের কথা। কারণ এই ভবনটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে দেশটির রাজনীতি, ইতিহাস এমনকি ঐতিহ্য। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি রাজনৈতিক দলের প্রত্যাশা থাকে হোয়াইট হাউজ যেন তাদের হয়। কিন্তু কাজটি সহজ নয়। ফলে চার বছর পরপর নির্বাচন এলেই বেজে ওঠে যেন যুদ্ধের দামামা।

পৃথিবীবাসীর আজ এ কথা অজানা নয়, ১৩২ কক্ষের ছয়তলার এই বাড়ি থেকেই নিয়ন্ত্রিত হয় বিশ্ব রাজনীতি। সুতরাং কৌতূহল তো থাকবেই। তবে অনেকেই হয়তো জানেন না হোয়াইট হাউজের মূল ইতিহাস। অনেকেরই এ কথা অজানা- হোয়াইট হাউজ তৈরি হয়েছিল দাসদের পরিশ্রমে। এনসাইক্লোপিডিয়া অব ব্রিটানিকা বলছে, হোয়াইট হাউজের নাম প্রথমে এমন ছিল না। ‘প্রেসিডেন্টস প্যালেস’, ‘প্রেসিডেন্টস হাউস এক্সিকিউটিভ ম্যানশন’ ইত্যাদি বহু নামে এই ভবনটিকে ডাকা হতো। তবে যে নামেই ডাকা হোক, ১৬০০, পেনসিলভেনিয়া অ্যাভিনিউ, ওয়াশিংটন ডিসির এই বাড়িটি বিশ্বের সর্বাধিক বিখ্যাত এবং স্বীকৃত একটি বাড়ি, যেটি রাষ্ট্রপতির বাড়ি, কর্মক্ষেত্র এবং রাষ্ট্রপতির প্রধান কর্মচারীদের সদর দপ্তর হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে।

হোয়াইট হাউজের নামকরণ

ইতিহাস বলছে, আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন হোয়াইট হাউজের জন্য জায়গাটি ১৭৯১ সালে নির্বাচন করেন। জন্মসূত্রে আয়ারল্যান্ডের অধিবাসী জেমস হোবানের নকশা অনুসারে ১৭৯২ সালের ১৩ অক্টোবর এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়। তখন বাড়িটি তৈরিতে ব্যবহার করা হয়েছিল ধূসর রঙের পাথর। দাস শ্রমিকেরা হোয়াইট হাউজ তৈরিতে সহায়তা করেছিল। ভিত্তিপ্রস্তরের পরবর্তী আট বছরে, বিনা পারিশ্রমিকে আফ্রিকান ক্রীতদাস শ্রমিক এবং আমেরিকান দক্ষ কারিগরদের পরিশ্রমে হোয়াইট হাউজ তৈরি হয় ১৮০০ সালে। যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে ব্যয়বহুল প্রাসাদ হিসেবে ভবনটিকে আখ্যায়িত করা হতো তখন। কেননা সে সময় ভবনটির নির্মাণ ব্যয় ছিল ২ লাখ ৩২ হাজার ডলারেরও বেশি। যা বর্তমানে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা।

নির্মাণ শেষ হওয়ার ১২ বছর পরের কথা। ১৮১২ সালে ইংল্যান্ডের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র। যুদ্ধ চলাকালে ১৮১৪ সালের ২৪ আগস্ট ব্রিটিশ সেনাবাহিনী হোয়াইট হাউজ জ্বালিয়ে দেয়। যুদ্ধ শেষে সেই ধ্বংসস্তূপের ওপর জেমস হোবানের পরামর্শ মতো আবার এটির নির্মাণ কাজ শুরু হয়। শেষ হয় ১৮১৭ সালে। এবার ভবনের বিভিন্ন জায়গায় আগুনের পোড়া দাগ ঢাকতে সাদা রং ব্যবহার করা হয়। বলা হয়ে থাকে, হোয়াইট হাউজের বাইরের দেয়াল সাদা রং করতে ৫৭০ গ্যালন রঙের প্রয়োজন হয়েছিল। ধবধবে সাদা এই ভবনটিকে এরপর থেকে অনেকেই ‘হোয়াইট হাউজ’ বলে ডাকতে শুরু করেন। যদিও সরকারিভাবে এই নামের প্রবর্তন হয় আরও পরে। ১৯০১ সালে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট থিওডোর রুজভেল্ট সরকারিভাবে বিভিন্ন কাগজপত্রে এই নামটি ব্যবহার শুরু করেন।

হোয়াইট হাউজে কী আছে?

বর্তমানে হোয়াইট হাউজে ১৩২টি কক্ষের পাশাপাশি ১৬টি পরিবার থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। কিচেন আছে তিন রকমের। একটি মূল রান্নাঘর, একটি ডায়েট কিচেন এবং অন্যটি পারিবারিক রান্নাঘর। এখান থেকে প্রতিদিন ১৪০ জন অতিথিকে আপ্যায়ন করা হয়। তবে যেসব বাবুর্চি ও পরিচারক আছেন তারা এক হাজারেরও বেশি অতিথিকে রাতের খাবার পরিবেশন করতে সক্ষম। হোয়াইট হাউজে ৪১২টি দরজা, ১৪৭টি জানালা, ২৮টি ফায়ার প্লেস, ৮টি সিঁড়ি, ৩টি লিফট এবং ৩৫টি বাথরুম রয়েছে। এখানে কাজ করেন ১৭ হাজার কর্মী এবং কর্মকর্তা। ভবনটিতে একটি সিনেমা থিয়েটার, ইনডোর এবং আউটডোর পুল, বিলিয়ার্ড এবং পিংপং টেবিলসহ একটি খেলার রুম, জগিং ট্র্যাক এবং টেনিস কোর্ট রয়েছে।

পৃথিবীর নানা প্রান্ত হতে প্রতি সপ্তাহে হোয়াইট হাউজে ৩০ হাজারেরও বেশি দর্শনার্থী আসেন। এ ছাড়া সপ্তাহব্যাপী ৬৫ হাজার চিঠি, প্রায় সাড়ে ৩ হাজার ফোনকল, ১ লাখ ই-মেইল এবং ১ হাজার ফ্যাক্স হোয়াইট হাউজের ঠিকানায় আসে। হোয়াইট হাউজের বেজমেন্টে প্রেসিডেন্ট পরিবারের দাঁতের চিকিৎসায় ব্যক্তিগত ডেন্টিস্টের জন্য রয়েছে অফিস। তবে সবচেয়ে মজার বিষয় হলো, হোয়াইট হাউজের ক্ষমতার পালাবদলে প্রেসিডেন্ট ও তার পরিবারকে এই ভবনটি ছেড়ে যেতে মাত্র ৬ ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়। এ জন্য ৯৩ জন কর্মী মালপত্র গুটিয়ে নিতে সাহায্য করেন।

হোয়াইট হাউজে ভূত

আধুনিক সভ্যতা যখন ভূত বিশ্বাস করছে না, তখন খোদ আমেরিকার প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঘুরে বেড়াচ্ছে ডজনখানেক ভূত! এমন বিশ্বাস কেবল ভৌতিক গল্পপ্রিয় সাধারণ আমেরিকানদেরই নয়, হোয়াইট হাউজের একাধিক বর্তমান ও সাবেক কর্মকর্তা-কর্মচারী এসব ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী বলে দাবি করেন। হোয়াইট হাউজের পূর্ব দিকের একটি কক্ষে প্রায়ই কাজে ব্যস্ত থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ফার্স্ট লেডি এবিগেইল অ্যাডামস। অথচ তিনি মারা গেছেন অনেক আগে। আবার মৃত্যুর পরও বাগানে কাজ করে যাচ্ছেন হোয়াইট হাউজের কর্মচারী ডলি ম্যাডিসন। শুধু তাই নয়, আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিঙ্কন, রুজভেল্ট, হ্যারিসন, রিগ্যান, অ্যান্ড্রু জ্যাকসনসহ আরও অনেকের প্রেতাত্মা এখনো দিব্যি ঘুরে বেড়ায় হোয়াইট হাউজে। হিস্ট্রি ডটকমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সাবেক ফার্স্ট লেডি লরা বুশ দাবি করেছিলেন- তিনি প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টকে অর্ধনগ্ন হয়ে হোয়াইট হাউজে ঘুরে বেড়াতে দেখেছেন!

হোয়াইট হাউজের নিরাপত্তা ব্যবস্থা

বিশ্বের পরাক্রমশালী প্রেসিডেন্টের বাসভবন বলে কথা! নিরাপত্তা ব্যবস্থা কঠোর হবে এটাই স্বাভাবিক। কেউ যদি হোয়াইট হাউজে ভ্রমণ করতে চান তবে কমপক্ষে ২১ কর্ম দিবস আগে আবেদন করতে হবে। এরপর সেই আবেদন যাচাই বাছাই করে ভ্রমণের অনুমতি দেয় হোয়াইট হাউজ প্রশাসন। ভবনে রয়েছে বুলেটপ্রুফ উইন্ডো। ভেতর থেকে সব দেখা গেলেও বাইরে থেকে দেখা সম্ভব নয়। ভবনের প্রতি ইঞ্চি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ইনফ্রারেড লেজার দ্বারা সুরক্ষিত। এর মাধ্যমে সহজেই অপরাধীকে সনাক্ত করা যায়। ভবনের আশপাশে অসংখ্য এয়ার মিসাইল স্থাপন করা আছে। যেহেতু ওয়াশিংটন ডিসির আকাশে প্রচুর বিমান ওড়ে। পাশেই রোনাল্ড রেগান জাতীয় বিমানবন্দরে প্রবেশের নির্ধারিত বা কঠোর পথ অনুসরণ না করা কোনো বিমানকে প্রথমে একটি সতর্ক সংকেত দেওয়া হয়। যদি তারা অবিলম্বে কোনো প্রতিউত্তর না দেয় তবে তাদের ক্ষেপণাস্ত্র ছুঁড়ে ধ্বংস করা হয়। এছাড়াও হোয়াইট হাউজের নিরাপত্তায় সর্বদা প্রস্তুত থাকে ড্রোনসহ নানা সর্বাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত সিক্রেট সার্ভিস। প্রেসিডেন্টকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য বিশেষ বাহিনী তো আছেই।

ঢাকা/তারা

magnifiermenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram