বুধবার, ১লা মে ২০২৪

অনলাইন ডেস্ক :

প্রাথমিকের ৫টি উপজেলার শিক্ষা অফিসারকে বদলি করা হয়েছে। ১৪ অক্টোবর প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এক অফিস আদেশে এ তথ্য জানিয়েছে।

এর মধ্য তিন উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে ৯ ডিসেম্বর (সংশোধিত) ও বাকি দুজনকে ১০ ডিসেম্বর বদলি করা হয়েছে। উভয় আদেশে স্বাক্ষর করেন সহকারী পরিচালক (প্রশাসন-) মো. আব্দুল আলীম।

৯ ডিসেম্বর স্বাক্ষরিত আদেশে টাঙ্গাইলের ভূয়াপুর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহনেওয়ার পারভীনকে সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ উপজেলা শিক্ষা অফিসে। সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলা শিক্ষা অফিসার সন্ধ্যা রানী সাহাকে তাড়াশ উপজেলায় এবং তাড়াশ উপজেলা শিক্ষা অফিসার আখতারুজ্জামানকে টাঙ্গাইলের ভূয়াপুরে বদলি করা হয়েছে।

১০ তারিখ স্বাক্ষরিত আদেশে বগুড়া কাহালু উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. রফিকুল আলমকে গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলা শিক্ষা অফিসার এবং সাঘাটা উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আজিজুল ইসলামকে বগুড়া কাহালু উপজেলায় পাঠানো হয়।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের আদেশে বলা হয়, কর্মকর্তাগণ তাদের বর্তমান কর্মস্থলের দায়িত্বভার ১৪ ডিসেম্বরের মধ্যে হস্তান্তর করবেন অন্যথায় ১৫ ডিসেম্বর থেকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত বলে গণ্য হবেন। জনস্বার্থে এ আদেশ জারি করা হয়েছে। এ বিষয়ে কর্তৃপক্ষের অনুমোদন আছে বলেও জানানো হয়।

অফিস আদেশ দেখতে ক্লিক করুন ১ক্লিক করুন ২

অনলাইন ডেস্ক ঃ
বাংলাদেশ রেলওয়ে ক্যাডার বহির্ভূত কর্মচারী নিয়োাগ বিধিমালা-২০২০ গেজেট আকারে প্রকাশ হয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশ রেলওয়ে লোকবল নিয়োগ সংক্রান্ত দীর্ঘদিনের সমস্যা অবসান হতে চলেছে। রবিবার (১৩ ডিসেম্বর) এ বিষয়ে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছেন লোকবল সঙ্কটে থাকা রেলওয়ের সেবার মান বাড়াতে দ্রুত লোকবল নিয়োগের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ।

তিনি আরও জানান, রেলে কর্মী নিয়োগ দেবার সীমা ছিল ৪০ হাজার, বর্তমানে তা বাড়িয়ে রাষ্ট্রপতি ৪৭ হাজার ৭০০ লোকবল নিয়োগের অনুমতি দিয়েছেন। এখন আমাদের ২৫-২৬ হাজারের মত কর্মী আছে। বাকি ২২ হাজারের মত কর্মী আমরা জরুরি ভিত্তিতে ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে প্রজ্ঞাপন দিয়ে পরীক্ষার মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করবো।

এতে লোকবল নিয়োগের ক্ষেত্রে লিখিত পরীক্ষা কোন কোন বিষয়ের উপর হবে, কত নাম্বার থাকবে এবং কত সময় ধরে হবে এগুলো সবই বিস্তারিতভাবে নিয়োগ বিধিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তাছাড়া কিভাবে পদন্নোতি হবে সেটাও বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ রেলওয়ের ১৯৮৫ সালের নিয়োগ বিধি বাতিল হওয়ার পর থেকেই সংস্থাটির সব ধরনের নিয়োগ স্থগিত হয়ে যায় । এর ফলে বাংলাদেশ রেলওয়ে জনবল সংকট দেখা দেয়।

শিক্ষাবার্তা/ বিআ

অনলাইন ডেস্ক ঃ

বিশ্বের শীতলতম স্কুল, মাইনাস ৫১ ডিগ্রিতেও শ্রেণিকক্ষে
পাঠদান চলে।
সাইবেরিয়াকে বিশ্বের অন্যতম শীতল স্থান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এখানেই রয়েছে বিশ্বের শীতলতম স্কুল। ক্লাসের তাপমাত্রা প্রায়ই থাকে মাইনাস ৫০ ডিগ্রির আশেপাশে। তবে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হল এই শীতেও ছোট শিশুরা স্কুলে আসছে।

তবে যখন তাপমাত্রা মাইনাস ৫২ ডিগ্রিরও নীচে চলে যায় তখন ১১ বছরের শিক্ষার্থী বা তারও কম বয়সীদের জন্য স্কুল বন্ধ থাকে।
এই স্কুলটি ওমায়াকন শহরে অবস্থিত। শুধু স্কুল না, পোস্ট অফিস এবং ব্যাংকের মতো কিছু প্রাথমিক সুবিধাও রয়েছে এখানে। জীবন ধারণের জন্য এই জায়গা মারাত্মক রকম চ্যালেঞ্জিং। এমনকি করোনাভাইরাসের ঝুঁকিও রয়েছে। স্কুলে আসা শিক্ষার্থী ও অভিভাবক এবং কর্মীদের নিয়মিত দেহের তাপমাত্রাও পরীক্ষা করা হয়।

১৯৩২ সালে স্ট্যালিনের সময়ে এই স্কুল নির্মাণ করা হয়েছিল। সাম্প্রতিক সময়ে গত ৪ ডিসেম্বরে সকাল ৯ টা নাগাদ সেখানকার তাপমাত্রা ছিল মাইনাস ৫১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

স্থানীয় সূত্র জানাচ্ছে, সেখানে গ্লাভস না পড়লে হাত কয়েক মুহূর্তের মধ্যে জমে যায়। এছাড়া তুষারপাতের সমস্যার জেরে আঙ্গুলের ক্ষতি হতে পারে। এখানকার আবহাওয়ায় শিশুদের পক্ষে স্কুল করা যে কতটা চ্যালেঞ্জিং তা সহজেই অনুমান করা যায়।
উল্লেখ্য, মাইনাস ৫০ ডিগ্রি তাপমাত্রায় হাইপোথার্মিয়া হওয়ার ঝুঁকিও বেড়ে যায়। এমন হলে দেহের তাপমাত্রা দ্রুত নামতে শুরু করে।

যারফলে দ্রুত হার্টবিট, নার্ভাসনেস এবং কিছু ক্ষেত্রে মৃত্যুও হতে পারে।

শিক্ষাবার্তা/ বিআ

নিজস্ব প্রতিবেদক ঃ
ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলার বলিদ্বাড়া গ্রামের দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান সালাউদ্দীন। তার স্বপ্ন ছিলো বড় হয়ে বিমানের পাইলট হবে। দারিদ্রতা দমিয়ে রাখতে পারেনি সালাউদ্দীনকে। বিমান আবিস্কারের পর আকাশে উড়িয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি করেছেন তিনি।

গ্রামের কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি বিভাগে ভর্তি হন। ২০১৭ সালে পরীক্ষামূলক ভাবে দূরপাল্লার চালক বিহীন বিমান তৈরির কাজ শুরু করেন। দীর্ঘ ৪ বছরের প্রচেষ্টায় চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে বিমান উদয়ন করতে সক্ষম হন সালাউদ্দীন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে কৃষি বিভাগে অধ্যায়ন করলেও দৃষ্টিটা ছিলো বিজ্ঞানের দিকে। বন্ধুদের নিয়ে ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠাতা করেন বশেমুরবিপ্রবি বিজ্ঞান ক্লাব। শুরু করেন ড্রোন বানানোর কাজ। পরে বাঁশ, কাঠ, কর্কশীট, ফোমশীট ব্যবহার করে ছোট আকারের ড্রোন বানানোর চেষ্টা করলে দীর্ঘ প্রচেষ্টায় ড্রোন বানাতে সক্ষম হন তিনি। যার ওজন ১ কেজি।

পরীক্ষামূলক এই বিমানটি পাঁচ কি: মি: নিয়ন্ত্রণ রেখার ভিতরে সর্বোচ্চ ২ হাজার ফুট উচ্চতায় এবং ১শ কি:মি: গতিতে ২০ মিনিট উড্ডয়ন করতে পারে। তবে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা পেলে বিজ্ঞান প্রযুক্তিকে এগিয়ে নেয়া সম্ভব বলে জানান সালাউদ্দিন।

বিমান উদয়ন দেখতে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ছাদে এবং ঠাকুরগাঁও জিলা মাঠে (বড় মাঠ) ভিড় জমাতে শুরু করেছে স্থানীয়রা।

স্থানীয়রা জানান, সালাউদ্দীনের হাতে তৈরি করা বিমান আকাশে উড়ছে দেখে আমরা মুগ্ধ হয়েছি।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. কে এম কামরুজ্জামান সেলিম জানান, কোন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছাড়াই তার উদ্ভাবনী অসাধারণ।

সে চেষ্টা করে সফল হয়েছে। আমরা চেষ্টা করবো তার পাশে থেকে সহযোগিতা করার।
শিক্ষাবার্তা/ বিআ

অনলাইন ডেস্ক ঃ
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাণহানির আশঙ্কা করছে রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল। রোববার সে আশঙ্কার কথা প্রকাশ্যে এনেছেন পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তারপর থেকেই তোলপাড় রাজ্য রাজনীতিতে। আজ তিনি বলেছেন, ‘ভোটে সাফল্য না পেলেই মমতাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করতে পারে বিজেপি।’

দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে দলীয় সভায় বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতা সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘ভোটে হারলেই মমতাকে সরাতে ছক করবে বিজেপি। গোপনে হয়তো লোক ভাড়া করার কাজ চলছে। রাজ্যে অশান্তি ছড়াতে বহিরাগতদের আনা হচ্ছে। তবে আমরা সব নজরে রাখছি। ওদের পরিকল্পনা বানচাল করবোই।’

এই দক্ষিণ ২৪ পরগানার ডায়মন্ড হারবার যাওয়ার পথেই গত বৃহস্পতিবার হামলা চলে সর্বভারতীয় বিজেপি সভাপতি জে পি নাড্ডার গাড়িতে।

এই বিষয় বিজেপি শিবিরকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন সুব্রতবাবু। তার কথায়, ‘বিজেপি দলের সভাপতির গাড়িতে পাথর ছোঁড়ার জন্য নিজেরাই লোক নিয়োগ করেছিল। তদন্তের পর এই তথ্য নিশ্চিৎ হয়েছে।’

পঞ্চায়েতমন্ত্রীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘মানুষের সমর্থন হারিয়েই এখন ডাহা মিথ্যা বলছেন তৃণমূল নেতারা।’ বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং বলেছেন, ‘মারামারি আর খুনোখুনি তৃণমূলের কাজ। দলের অন্দরেই মমতার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। একের পর এক নেতা, বিধায়ক, সাংসদ মুখ খুলছেন। ওদের দলের লোকরাই এখন মমতার আতঙ্ক।’

এ প্রসঙ্গে রাজ্যসভার সাংসদ রূপা গাঙ্গুলী বলেছেন, ‘গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই জয়ে বিশ্বাসী বিজেপি। মানুষের সহানুভূতি পেতেই সুব্রত মুখোপাধ্যায় মমতাকে হত্যার ষড়যন্ত্রের মতো অভিযোগ তুলছেন।

সূত্র ঃঃ মানবজমিন
শিক্ষাবার্তা/ বিআ

অনলাইন ডেস্ক ঃ
বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। এর জন্য মানতে হবে পাঁচটি শর্ত। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ভর্তি কার্যক্রম হবে লটারির মাধ্যমে।
ভর্তির বিজ্ঞপ্তি গতকাল জারি করে মাউশি। এতে বলা হয় আবেদনের তারিখ নিজেদের মতো ঠিক করবে প্রতিষ্ঠানগুলো। আর আবেদন ফি ধরা হয়েছে ১৫০ টাকা।
ভর্তির জন্য শর্তগুলো হচ্ছে- জনসমাগম এড়াতে লটারি প্রক্রিয়াটি ফেসবুক লাইভে অথবা অন্য যেকোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরাসরি প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। লটারি কার্যক্রমে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে সরকারের ভর্তি তদারকি ও পরিবীক্ষণ কমিটি, বিদ্যালয়ের ভর্তি পরিচালনা কমিটি, অভিভাবক প্রতিনিধি, ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রতিনিধি ও শিক্ষক প্রতিনিধির উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। লটারির তারিখ নির্ধারণ করে ভর্তি তদারকি ও পরিবীক্ষণ কমিটিকে অবহিত করতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে লটারি কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে।

সর্বোপরি লটারির মাধ্যমে শিক্ষার্থী নির্বাচন প্রক্রিয়াটি যেন কোনোভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ না হয়, তা নিশ্চিত করতে হবে।
এর আগে গত শুক্রবার দেশের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০২১ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির বিজ্ঞপ্তি জারি করে মাউশি।
শিক্ষাবার্তা/ বিআ

নিউজ ডেস্ক ঃ
শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) সকাল ৭টা ১০ মিনিটে রাজধানীর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল এস এম শামিম উজ জামান এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তাঁর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমদ চৌধুরী।

আজ শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। পৃথিবীর ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাঙালি বুদ্ধিজীবী নিধন বাংলাদেশের ইতিহাসে নৃশংসতম ও বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ। জাতি যখন বিজয়ের খুব কাছে সেই সময় পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগিতায় রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের ধরে ধরে হত্যা করে। ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড চালায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। বাঙালি শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদগণ এই সুপরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হন।

শিক্ষাবার্তা/ বিআ

শেখ আনোয়ার :

বিজয় দিবস আমাদের জাতীয় দিবসসমূহের মধ্যে অন্যতম। এ বিজয় অর্জনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে দেশবাসীকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মুখোমুখি হতে হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর আমরা দেশকে পুরোপুরি শত্রুমুক্ত করে বিজয় অর্জন করি। আমরা পাই হাজার বছরের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা, স্বাধীন মানচিত্র ও স্বাধীন পতাকা। বিজয় দিবস উদযাপিত হয় মহাসমারোহে। এদিন সারাদেশ ছেয়ে যায় লাল-সবুজের সাজে। বাড়ির ছাদে, দোকানে, রাস্তার পাশে, গাড়ির সামনে, এমনকি রিকশার সামনের ডান হ্যান্ডেলে পতপত করে ওড়ে লাল-সবুজ রঙের জাতীয় পতাকা।

সবার ধারণা, যেকোনো জাতীয় দিবসে পতাকা উত্তোলন করা যায়। কোন কোন দিবসে, কিভাবে পতাকা উত্তোলন করতে হয়, এসব নিয়ম-কানুন অনেকেই জানি না। আবার যারা পতাকা তৈরি করেন; তারাও ঠিকঠাক জানেন না, আইনে পতাকার আকার ও রঙের ব্যাপারে কী বলা হয়েছে? অনেকেই সচেতন না হওয়ায় জাতীয় পতাকার অবমাননা হয়ে যায়। তাই জাতীয় পতাকার ব্যাপারে সবার সচেতন হওয়া একান্ত দরকার।

জাতীয় পতাকা: জাতীয় পতাকা শুধু একটি কাপড় নয়। এটি দেশের স্বাধীনতার প্রতীক। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ইতিহাস আবেগের। পাকিস্তানিরা রাইফেল তাক করে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলতে বলেছে। সেই মুহূর্তে ওপাশের মানুষটি মৃত্যুমুখে দাঁড়িয়ে বুকের ওপর রক্ত দিয়ে জাতীয় পতাকার লাল বৃত্ত অঙ্কন করে বলেছেন ‘জয় বাংলা’। মুক্তিযুদ্ধের সময় এমনটা বহুবার ঘটেছে। আমাদের জাতীয় পতাকা এতোটাই শক্তিশালী যে, তখন মৃত্যুর আগ মুহূর্তে শেষ আশ্রয় ছিল লাল-সবুজ পতাকা! লাল-সবুজে মিশে রয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ। এ পতাকা পুরো দেশকে ধারণ করেছে তার বুকে। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার ইতিহাসের সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধ জড়িয়ে রয়েছে বলেই এর প্রতি আমাদের আবেগটাও অন্যরকম।

jagonews24

যেভাবে বানাবেন: ১৯৭২ সালে প্রণীত ৩ ধারায় গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের পতাকা বিধিমালা অনুযায়ী জাতীয় পতাকার মাপ কেমন? রং কেমন হবে? সে সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে। বাংলাদেশের জাতীয় পতাকার অনুপাত- ১০:৬ বা ৫:৩। দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের আয়তাকার ক্ষেত্রের গাঢ় সবুজ রঙের মাঝে লাল বৃত্ত থাকবে। ধরা যাক, পতাকার দৈর্ঘ্য ১০ ফুট। তাহলে প্রস্থ হবে ৬ ফুট। লাল বৃত্তের ব্যাসার্ধ হবে ২ ফুট। পতাকার দৈর্ঘ্যর বিশ ভাগের বাম দিকের নয় ভাগের শেষ বিন্দুর ওপর অঙ্কিত লম্ব এবং প্রস্থের দিকে মাঝখান বরাবর অঙ্কিত সরল রেখার ছেদ বিন্দু হলো লাল বৃত্তের কেন্দ্র। পতাকার লাল বৃত্তের মাপ- পতাকার ৫ ভাগের ১ অংশ বা বৃত্তটি দৈর্ঘ্যর এক-পঞ্চমাংশ ব্যসার্ধ বিশিষ্ট হবে। ভবনে ব্যবহারের জন্য পতাকার বিভিন্ন মাপ হলো- ১০ বাই ৬ ফুট (৩.০ বাই ১.৮ মিটার), ৫ বাই ৩ ফুট (১.৫২ বাই ০.৯১ মিটার), ২.৫ বাই ১.৫ ফুট (৭৬০ বাই ৪৬০ মিলিমিটার) ইত্যাদি। জাতীয় পতাকায় গাঢ় সবুজ রং বাংলাদেশের সবুজ প্রকৃতি ও তারুণ্যের প্রতীক। আর মাঝের লাল বৃত্তটি উদীয়মান সূর্যের প্রতীক ও মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষের দেওয়া রক্ত ও আত্মত্যাগকে নির্দেশ করে।

উত্তোলন করবেন কখন: বাংলাদেশ পতাকা রুলস, ১৯৭২-এর ৪ ধারায় কোন কোন দিন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা যাবে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে। যেমন- আমাদের মহানবী হজরত মুহাম্মদের (স.) জন্মদিনে (ঈদে মিলাদুন্নবী), ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে, ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা যাবে। এ ছাড়া ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, জাতীয় শোক দিবস ও সরকার কর্তৃক প্রজ্ঞাপিত অন্য যেকোনো দিবসে পতাকা অর্ধনমিত রাখতে হবে। অর্ধনমিত পতাকা উত্তোলনের নিয়ম হলো, অর্ধনমিত অবস্থায় উত্তোলনের সময় পতাকাটি পুরোপুরি উত্তোলন করে অর্ধনমিত অবস্থানে আনতে হবে। ঠিক একইভাবে পতাকা নামানোর সময়ও পতাকাটি শীর্ষে উত্তোলন করে তারপর নামাতে হবে।

jagonews24

কোথায় প্রদর্শন করা যায়: জাতীয় পতাকা সর্বত্র প্রদর্শন করা যায় না। জাতীয় পতাকা প্রদর্শনের একটা নিয়ম রয়েছে। ইচ্ছে করলেই যে কেউ গাড়িতে পতাকা ব্যবহার করতে পারেন না। কেননা আইনে বলা হয়েছে, কোনো অবস্থায়ই গাড়ি কিংবা কোনো যান, রেল কিংবা নৌকার খোলে, উপরিভাগে বা পেছনে পতাকা ওড়ানো যাবে না। বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ভবন ও দফতর, যেমন- রাষ্ট্রপতি ভবন, প্রধানমন্ত্রীর ভবন, জাতীয় সংসদ ভবন, বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময় এবং কিছু নির্ধারিত ভবনসমূহে সব কর্মদিবসে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলিত হয়। এসব ক্ষেত্রে শুধু সূর্যোদয়-সূর্যাস্ত পর্যন্ত পতাকা উত্তোলিত রাখতে হবে। এটাই নিয়ম।

তবে বিশেষ কারণে রাতে ভবনসমূহে পতাকা উত্তোলিত রাখা যেতে পারে। যেমন- সংসদের রাতের অধিবেশন, রাষ্ট্রপতি বা মন্ত্রীগণের শপথ অনুষ্ঠান চলাকালীন। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর গাড়িতে, নৌযানে ও বিমানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা যাবে। এ ছাড়া স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রী, চিফ হুইপ, ডেপুটি স্পিকার, জাতীয় সংসদের বিরোধী দলের নেতা, মন্ত্রী সমমর্যাদার ব্যক্তি, বিদেশে অবস্থিত কূটনৈতিক মিশনের অফিস ও কনস্যুলার পোস্টসমূহে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে হয়। বিদেশে বাংলাদেশি মিশনের প্রধানের গাড়িতে ও তাদের নৌযানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে পারবেন। প্রতিমন্ত্রীর মর্যাদাপ্রাপ্ত ব্যক্তি, উপমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর মর্যাদাপ্রাপ্ত ব্যক্তি রাজধানীর বাইরে ভ্রমণকালে গাড়িতে ও নৌযানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করতে পারবেন।

যেভাবে উত্তোলন করবেন: মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশের পতাকার ওপরে অন্য কোনো পতাকা বা রঙিন পতাকা ওড়ানো যাবে না। অন্য দেশের পতাকার সঙ্গে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করতে হলে প্রথমে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করতে হবে। নামানোর সময়ও বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা সর্বশেষে নামাতে হবে। মিছিলে পতাকা বহনের বিধান হচ্ছে, পতাকা মিছিলের কেন্দ্রে অথবা মিছিলের অগ্রগমন পথের ডানদিকে বহন করতে হবে। জাতীয় পতাকার ওপর কোনো কিছু লেখা বা মুদ্রিত করা যাবে না অথবা কোনো অনুষ্ঠান বা উপলক্ষে কোনো চিহ্ন অঙ্কন করা যাবে না। এমনকি জাতীয় পতাকাকে পোশাক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না এবং গায়ে জড়িয়ে রাখা যাবে না। পতাকা উত্তোলন ও নামানোর সময় প্যারেড ও পরিদর্শনের সময় উপস্থিত সবাই পতাকার দিকে মুখ করে সোজা হয়ে দাঁড়াতে হবে। আনুষ্ঠানিকভাবে পতাকা উত্তোলনের সময় একসঙ্গে জাতীয় সংগীত গাইতে হবে অথবা বাজাতে হবে। পতাকা ব্যবহারের অনুপযোগী হলে তা মর্যাদাপূর্ণভাবে সমাধিস্থ করে নিষ্পত্তি করতে হবে।

jagonews24

যেভাবে ব্যবহার করবেন না: কবরস্থানে জাতীয় পতাকা নিচু করা যাবে না বা ভূমি স্পর্শ করানো যাবে না। পতাকা কোনো ব্যক্তি বা জড়বস্তুর দিকে নিম্নমুখী করা যাবে না। পতাকা কখনোই আনুভূমিকভাবে বা সমতলে বহন করা যাবে না। সব সময় ঊর্ধ্ব এবং মুক্তভাবে থাকবে। বাংলাদেশের পতাকা কোনো কিছুর আচ্ছাদন হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না। তবে শর্ত থাকে যে, কোনো বিশিষ্ট ব্যক্তি পূর্ণ সামরিক মর্যাদা বা আনুষ্ঠানিতাসহ সমাধিস্থ করা হলে তার শব যানে পতাকা আচ্ছাদনের অনুমোদন করা যেতে পারে। কোনো কিছু গ্রহণ, ধারণ বহন বা বিলি করার নিমিত্তে পতাকা ব্যবহার করা যাবে না। মনে রাখতে হবে, জাতীয় পতাকার প্রতি অবমাননা প্রদর্শন করা বা জাতীয় পতাকার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন না করলে ওই ব্যক্তিকে ২০১০ সালের ২০ জুলাই প্রণীত আইন অনুযায়ী ৫ হাজার টাকা জরিমানা বা এক বছরের কারাদণ্ড কিংবা উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে।

জাতীয় পতাকার অবমাননা করার অর্থ হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা। স্বাধীন বাংলাদেশকে অস্বীকার করা। আবেগের বসে জাতীয় পতাকা ব্যবহার করতে গিয়ে অনেক কষ্টে অর্জিত এ পতাকার প্রতি যদি অবমূল্যায়ন করা হয়, তাহলে মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মা কষ্ট পাবে। অনেক কষ্ট ও ত্যাগের বিনিময়ে মুক্তিযোদ্ধারা দেশ স্বাধীন করেছেন। তাই জাতীয় পতাকার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করা আপনার, আমার, সবার নৈতিক দায়িত্ব।

লেখক: বিজ্ঞান লেখক ও গবেষক, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।

অনলাইন ডেস্ক :

আগামী বছরের জানুয়ারির যেকোনো সময় যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড-অ্যাস্টেজেনেকার তৈরি করোনা ভাইরাসের টিকা বাংলাদেশে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি জানিয়েছেন, ৩ কোটি ডোজ টিকার মধ্য থেকে জানুয়ারিতে প্রথম ধাপে আসবে ৫০ লাখ ডোজ। এরপর প্রতি ধাপে ৫০ লাখ করে টিকা আসবে।

গতকাল রবিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউট, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের সঙ্গে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ক্রয়চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব তথ্য জানান।বেলা ১১টায় মহাখালীর স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপির উপস্থিতিতে সরকার ও বেক্সিমকো ফার্মার মাধ্যমে ভারতের সিরাম ইন্সটিটিউটের সঙ্গে করোনা ভ্যাকসিন ক্রয়সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।

চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকার ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটের কাছ থেকে আগামী ছয় মাসে (প্রতি মাসে ৫০ লাখ করে) মোট তিন কোটি ভ্যাক্সিন আমদানি করবে। চুক্তিতে সরকারের পক্ষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম ও বেক্সিমকো ফার্মার পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল হাসান পাপন এমপি স্বাক্ষর করেন। স্বাক্ষরিত চুক্তিটি গতকাল ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের দায়িত্বশীল অথরিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভারতের সেরাম ইন্সটিটিউটের অথরিটি চুক্তিপত্রটিতে স্বাক্ষর করে আগামী ১৫ ডিসেম্বরের মধ্যেই পুনরায় দেশে পাঠিয়ে দেবে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি বলেন, ‘ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে যে ভ্যাক্সিন সরকার নিচ্ছে সেটি হচ্ছে অক্সফোর্ডের এস্ট্রেজেনেকা ভ্যাকসিন। এই ভ্যাক্সিন বিভিন্ন দেশের ট্রায়ালে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ মনে হয়েছে এবং এই ভ্যাক্সিন আমাদের দেশের আবহাওয়া উপযোগী।

অনলাইন ডেস্ক:

শহীদ বুদ্ধিজীবীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের রেখে যাওয়া আদর্শ ও পথকে অনুসরণ করতে হবে।  অসাম্প্রদায়িক ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়তে পারলেই তাঁদের আত্মত্যাগ সার্থক হবে।

সোমবার (১৪ ডিসেম্বর) শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রোববার দেওয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন তিনি।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, বুদ্ধিজীবীরা দেশ ও জাতির উন্নয়ন ও অগ্রগতির রূপকার। তাঁদের উদ্ভাবনী ক্ষমতা, সৃজনশীল কর্মকাণ্ড, উদার ও গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনা জাতীয় অগ্রগতির সহায়ক। জাতির বিবেক হিসেবে খ্যাত আমাদের বুদ্ধিজীবীরা তাঁদের ক্ষুরধার লেখনীর মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত সৃষ্টি, যুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারকে পরামর্শ দেওয়াসহ বুদ্ধিবৃত্তিক চেতনা দিয়ে মহান মুক্তিযুদ্ধকে সাফল্যের পথে এগিয়ে নিতে বিপুল অবদান রাখেন।

তিনি বলেন, জাতির দুর্ভাগ্য, বিজয়ের প্রাক্কালে হানাদারবাহিনী পরিকল্পিতভাবে এ দেশের খ্যাতনামা বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে হত্যা করে। জাতির জন্য এই এক অপূরণীয় ক্ষতি।

বুদ্ধিজীবী হত্যা ইতিহাসের কলঙ্কজনক অধ্যায় হিসেবে উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, হানাদারবাহিনী তাদের নিশ্চিত পরাজয় আঁচ করতে পেরে জাতিকে মেধাশূন্য করার হীন উদ্দেশ্যে স্বাধীনতাবিরোধী রাজাকার-আলবদর-আল শামস বাহিনীর সহযোগিতায় ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর দেশের প্রথিতযশা শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক, শিল্পীসহ বহু গুণীজনকে নির্মমভাবে হত্যা করে। জাতি হারায় তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের। আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসে এ এক কলঙ্কজনক অধ্যায়।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বাঙালির জাতির অবিসংবাদিত নেতা, স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধাপে ধাপে বহু আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতিকে মুক্তিসংগ্রামের জন্য প্রস্তুত করেন। নানা চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ তিনি স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। তাঁরই আহ্বানে গোটা জাতি মুক্তিসংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ে। দীর্ঘ নয় মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ছিনিয়ে আনে চূড়ান্ত বিজয়।

১৯৭১ সালে বিজয়ের ঠিক আগে পাক হানাদারবাহিনীর হাতে নির্মমভাবে শাহাদত বরণকারী বুদ্ধিজীবীদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত ও শান্তি কামনা করেন রাষ্ট্রপতি। শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান তিনি।

নিজস্ব প্রতিবেদক :

আজ ১৪ ডিসেম্বর, শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। পৃথিবীর ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে বাঙালি বুদ্ধিজীবী নিধন বাংলাদেশের ইতিহাসে নৃশংসতম ও বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ। জাতি যখন বিজয়ের খুব কাছে সেই সময় পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগিতায় রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনী দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের ধরে ধরে হত্যা করে। ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড চালায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। বাঙালি শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, আইনজীবী, শিল্পী, দার্শনিক ও রাজনৈতিক চিন্তাবিদগণ এই সুপরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞের শিকার হন।

ডিসেম্বর ১২, ১৯৭১। আর্মি সদর দফতর। প্রাদেশিক সরকারের উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী বসে আছেন। তার ডাকে উপস্থিত হয়েছেন আলবদর ও আলশামসের কেন্দ্রীয় অধিনায়করা। তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয় গোপন শলা-পরামর্শ। এই বৈঠকে চূড়ান্ত তালিকা তুলে দেওয়া হয়। প্রণয়ন করা হয় বুদ্ধিজীবী হত্যার মূল পরিকল্পনা। এই হত্যাকাণ্ড যে সংঘটিত হবে অনেক আগে থেকেই তার নীলনকশা চলছিল। পরাজয় নিশ্চিত জেনে এদিনই চূড়ান্ত আঘাত হানার পরিকল্পনা করে পাকবাহিনী। তাদের অস্ত্র নিয়ে সে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মাঠে নামে আলবদর, আলশামস বাহিনী।

যদিও এর আগেই সারা দেশেই শুরু হয়ে গেছে বুদ্ধিজীবী নিধনযজ্ঞ। ১০ ডিসেম্বর এই আলবদর বাহিনীর সদস্যরা তুলে নিয়ে যায় দৈনিক ইত্তেফাকের কার্যনির্বাহী সম্পাদক সিরাজুদ্দীন হোসেন ও পিপিআই-এর চিফ রিপোর্টার সৈয়দ নাজমুল হককে।

১৪ ডিসেম্বর পৃথিবীর ইতিহাসের এক কালো অধ্যায়। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর নির্দেশনা ও মদতে একশ্রেণির দালালরা এই হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত করে। পূর্ব পাকিস্তানে বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের নিশ্চিহ্ন করার এই নীলনকশা প্রণয়ন করে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী। পাকবাহিনীর অস্ত্র সহায়তা নিয়ে তাদেরই ছত্রছায়ায় আধাসামরিক বাহিনী আলবদরের ক্যাডাররা এই বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত করে।

বুদ্ধিজীবীদের প্রকৃত সংখ্যা আজ পর্যন্ত গণনা করা হয়নি। ১৯৭২ সালে প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ’ শীর্ষক গ্রন্থ থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, এদের মধ্যে ৯৯১ জন ছিলেন শিক্ষাবিদ, ৪৯ জন চিকিত্সক, ৪২ জন আইনজীবী এবং ১৬ জন সাহিত্যিক, শিল্পী ও প্রকৌশলী। বুদ্ধিজীবী নিধনের এ তালিকায় ঢাকা বিভাগে ২০২ জন শিক্ষক ও ১০ জন আইনজীবীকে হত্যা করা হয় । চট্টগ্রাম বিভাগে ২২৪ জন শিক্ষক ও ১০ জন আইনজীবীকে হত্যা করা হয়। খুলনা বিভাগে ২৮০ জন শিক্ষক ও ছয়জন আইনজীবীকে হত্যা করা হয়। রাজশাহী বিভাগে ২৬২ জন শিক্ষক ও ১৫ জন আইনজীবীকে হত্যা করা হয়। তবে এ তালিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নাম ছিল না।

যাদের হত্যা করা হয়েছিল তাদের মধ্যে অন্যতম হলেন—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মধ্যে ছিলেন এ এন এম মুনীর চৌধুরী, ড. জিসি দেব, মোফাজ্জল হায়দার চৌধুরী, আনোয়ার পাশা, ড. জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা, আবদুল মুকতাদির, এস এম রাশীদুল হাসান, ড. এন এম ফয়জুল মাহী, ফজলুর রহমান খান, এ এন এম মুনীরুজ্জামান, ড. সিরাজুল হক খান, ড. শাহাদাত আলী, ড. এম এ খায়ের, এ আর খান খাদিম, মো. সাদেক, শরাফত আলী, গিয়াসউদ্দিন আহমেদ, অনুদ্বৈপায়ন ভট্টাচার্য। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন অধ্যাপক মীর আবদুল কাইয়ুম, হবিবর রহমান, সুখরঞ্জন সমাদ্দার, ড. আবুল কালাম আজাদ। সাংবাদিক ছিলেন সিরাজুদ্দীন হোসেন, শহীদুল্লাহ কায়সার, খোন্দকার আবু তালেব, নিজামুদ্দীন আহমদ, আ ন ম গোলাম মোস্তফা, শহীদ সাবের, শেখ আবদুল মান্নান (লাডু), সৈয়দ নজমুল হক, এম আখতার, আবুল বাসার, চিশতী হেলালুর রহমান, শিবসদন চক্রবর্তী, সেলিনা পারভীন। এছাড়া শিল্পী আলতাফ মাহমুদ, সাহিত্যিক পূর্ণেন্দু দস্তিদার, মেহেরুন্নেসা, দানবীর রণদাপ্রসাদ সাহাসহ আরো অসংখ্য নাম।

বছর ঘুরে আবারও এসেছে ১৪ ডিসেম্বর—শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। নানা অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে জাতি আজ স্মরণ করবে একাত্তরে অকালে প্রাণ হারানো জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের।

অনলাইন ডেস্ক ঃ
শরীর সুস্থ রাখতে ফুসফুসের সুরক্ষা খুবই জরুরি। কোনো কারণে ফুসফুসের সমস্যা হলে শ্বাসযন্ত্রের নানা জটিলতা দেখা দেয়। এর মধ্যে অ্যাজমা, সিওপিডি (ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ) ও নিউমোনিয়া অন্যতম।

স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন পদ্ধতি মেনে চলা , সঠিক খাদ্যাভাস এবং নিয়মিত ব্যায়াম শরীর সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। অনেকেই নিয়মিত ব্যায়াম করার সময় পান না। সেক্ষেত্রে প্রতিদিন নির্দিষ্ট খাদ্যতালিকা মেনে চললেও সুস্থ থাকা যায়। কিছু কিছু খাবার আছে যে গুলো ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে। যেমন-

আপেল : নিয়মিত আপেল খেলে শ্বাসযন্ত্রের অনেক জটিলতা কমে। আপেলে থাকা ভিটামিন ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান অ্যাজমা ও ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। এছাড়া যারা ধূমপান ছেড়ে দিয়েছেন তাদের ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়াতেও এই ফল বেশ উপকারী।

ব্লুবেরি : ব্লুবেরিতে পিউনিডিন, পেটুনিডিন, মালভিডিন, সায়ানিডিন এবং ডেলফিনিডিনের মতো অ্যান্টোসায়ানিন উপাদান থাকায় এ গুলো ফুসফুসের টিস্যু ক্ষতিগস্ত হওয়া প্রতিরোধ করে। ফুসফুস ভালো লাখতে এই ফলটি নিয়মিত খাদ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন।

অলিভ অয়েল : অলিভ অয়েলে অ্যান্টি -ইনফ্ল্যামেটরী, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন ই থাকায় এটি অ্যাজমা ও শ্বাসযন্ত্রের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে ভূমিকা রাখে। সালাদ তৈরি বা রান্নায় এ তেলটি ব্যবহার করলে উপকার পাবেন।

কোকো : চকলেটে তৈরিতে কোকো ব্যবহার করা হয়। এতে থাকা উচ্চ পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান ফুসফুস সুস্থ রাখতে ভূমিকা রাখে। এটি অ্যালার্জিজনিত সমস্যা ও ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমায়।

মসুর ডাল : মসুরের ডালে পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাসিয়াম, আয়রন, কপার, ম্যাগনেসিয়াম ও ফাইবার থাকায় এটি শ্বাসযন্ত্রের নানা জটিলতা এবং ফুসফুসের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।

কাঁচা হলুদ : কাঁচা হলুদে থাকা কারকুমিন উপাদান যেকোন ধরনের প্রদাহ কমায়। সেই সঙ্গে ফুসফুস পরিষ্কার করে এর কার্যকারিতা বাড়ায়। ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়াতে প্রতিদিন একটু টুকরা কাঁচা হলুদ চিবিয়ে কিংবা দুধের সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন।

গ্রিন টি : গ্রিন টি প্রাকৃতিকভাবে ফুসফুস পরিষ্কার করতে সাহায্য করে। এতে থাকা পলিফেনল, অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরী উপাদান ফুসফুসের প্রদাহ কমায় ও এর কার্যকারিতা বাড়ায়।

আদা : অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরী উপাদান সমৃদ্ধ আদা ঠান্ডা, কাশি সারাতে ভূমিকা রাখে। এটি শ্বাসনালীতে জমে থাকা টক্সিনও দূর করে। এ কারণে নিয়মিত আদা খেলে ফুসফুসের কার্যকারিতা বাড়ে।

মধু : মধুতে থাকা অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল উপাদান শ্বাসতন্ত্রের নানা অস্বস্তি কমায়। নিয়মিত মধু খেলে শ্বাসতন্ত্রের নানা জটিলতা কমে।

শিক্ষাবার্তা/ বিআ

magnifiermenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram