শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উপদেষ্টা ও পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সিলর ডেরেক এইচ শোলে বলেছেন, নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে- এ বিষয়টিতে জনগণের আস্থা আসতে হবে। জনগণ বললেই নির্বাচন গ্রহণযোগ্য বলা যায়। এটিই আমাদের অবাধ, মুক্ত ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের ব্যাখ্যা। নির্বাচন বিষয়ে আমাদের প্রত্যাশার কথা আমরা সরকারকে জানিয়ে যাব।

গতকাল বুধবার বিকেলে গণমাধ্যমের সম্পাদকদের সঙ্গে মতবিনিময়ে এ কথা বলেন তিনি। দুই দিনের সফরে গত মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা আসে ডেরেক শোলের নেতৃত্বে মার্কিন বিভিন্ন দপ্তর ও সংস্থার প্রতিনিধি দল। গতকাল সকালে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেনের সঙ্গে বৈঠক দিয়ে দিনের কর্মসূচি শুরু করে প্রতিনিধি দলটি। এর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তাঁরা। এ সময় ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গণমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময়ে বাংলাদেশ কেন যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হলো- প্রশ্ন করা হলে ডেরেক শোলে বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রাখতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। করোনার কারণে কিছুটা ঝিমিয়ে পড়েছিল। শুধু বাংলাদেশ নয়; এ অঞ্চলের সব দেশে উপস্থিতি নিশ্চিতে কাজ করছি। বাইডেন প্রশাসন ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় কৌশলকে (আইপিএস) গুরুত্ব দেয়। বাংলাদেশের প্রতি আগ্রহ বাড়ছে- এ বিষয়ে কোনো প্রশ্ন নেই।

সরকার থেকে বারবার অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি ব্যাখ্যার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাখ্যার অভিন্নতা নিয়ে তিনি বলেন, বাংলাদেশের সরকারের হয়ে আমি বলতে পারব না। তবে সরকারের কাছে আমরা আমাদের অবাধ, মুক্ত ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের প্রত্যাশার কথা জানিয়ে যাব। বিশ্বের যে কোনো স্থানে নির্বাচন অবাধ ও স্বচ্ছ হওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়েছে- এ বিষয়টি জনগণের আস্থায় আসতে হবে। আর এ নিয়ে সংলাপের বিষয়ে মত দেন মার্কিন এ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
সরকারের নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আশ্বস্ত হওয়ার বিষয়ে ডেরেক শোলে বলেন, সরকার বলেছে, তারা অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন করতে চায়- এ বিষয়ে আমি আশ্বস্ত। তবে সুশীল সমাজকে চাপে রাখা, মানবাধিকার ও পূর্ববর্তী নির্বাচন নিয়ে আমাদের কিছুটা উদ্বেগ রয়েছে। আমরা উদ্বেগের বিষয়গুলো জানিয়ে যাব। সরকার তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন করবে বলে আমরা আত্মবিশ্বাসী।

নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনে কারচুপি নিয়ে ভবিষ্যতের কোনো মন্তব্য করতে চাই না। তবে নির্বাচনের ফল বিরোধীপক্ষেরও বিশ্বাস হতে হবে।
বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা নিয়ে পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সিলর বলেন, বন্ধুত্ব ও সহযোগিতার জায়গা থেকে আমরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করি। আমরা যুক্তরাষ্ট্রও নিখুঁত নই। কিন্তু আমরা আমাদের ত্রুটিগুলো শুধরে নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা আমরা অন্য অংশীদারদের থেকেও আশা করি।

র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার বিষয়ে তিনি বলেন, ২০২১ সালে র‌্যাব নিয়ে আমরা আমাদের উদ্বেগের কথা তুলে ধরেছি। এটি ভালো বিষয়, গত বছর পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। তবে আমরা র‌্যাবের টেকসই সংস্কার ও জবাবদিহি দেখতে চাই। আর এ বিষয়ে আমরা সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যতক্ষণ টেকসই সংস্কার ও জবাবদিহি না দেখব, ততক্ষণ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সম্ভব নয়।

গণতন্ত্র সম্মেলনে বাংলাদেশের আমন্ত্রণ না পাওয়া নিয়ে মার্কিন এ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, প্রথম সম্মেলনের পর গত বছর গণতন্ত্র সম্মেলনে যোগ দিতে আমরা সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। যারা সম্মেলনে যোগ দিয়েছিল, তারা সবাই গণতন্ত্র উন্নয়নে পরিকল্পনা দিয়েছে। সম্মেলনে যারা যোগ দিতে পারেনি, তাদের কাছে একই পরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ গণতন্ত্র উন্নয়নে পরিকল্পনা দিয়ে এখানে যোগ দিতে চায়নি। ভবিষ্যতে পরিকল্পনা দিয়ে এতে যোগ দেওয়ার সুযোগ রয়েছে।

বাংলাদেশে যদি অবাধ ও স্বচ্ছ নির্বাচন না হয়, তার পরিণতি নিয়ে প্রশ্নে তিনি বলেন, নির্বাচন অবাধ ও স্বচ্ছ না হওয়ার বিষয়ে আমি অগ্রিম কোনো ধারণা করব না। তবে যেটি বলতে পারি, যদি কোথাও গণতন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে আমাদেরও সহযোগিতার একটি সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আমরা বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের সম্ভাবনা দেখছি। কারণ কয়েকটি ক্রমাগত সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে। চ্যালেঞ্জের মধ্যেও আমরা ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী। শক্তিশালী গণতন্ত্র হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের শক্তিশালী বন্ধু। দেশগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর আস্থা অর্জনে প্রয়োজন আইনের শাসন ও জবাবদিহি বলে জানান ডেরেক শোলে।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র তার দায়িত্ব পালনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। রোহিঙ্গা সংকটের কারণে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। তুরস্ক-সিরিয়ায় ভূমিকম্প, পাকিস্তানে বন্যা, ইউক্রেন সংকটসহ বর্তমানে বিশ্বের শত চ্যালেঞ্জের মধ্যেও রোহিঙ্গা সংকট যুক্তরাষ্ট্রের অগ্রাধিকারে থাকবে।

চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বেছে নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র কখনোই দুই দেশের মধ্যে কাউকে বেছে নিতে বলবে না। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের নিজেরও চীনের সঙ্গে সম্পর্ক রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র চায়, বাংলাদেশ সঠিক বিষয়ের পক্ষে থাকুক।
মতবিনিময়ে উপস্থিত ছিলেন ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন, সমকালের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের নির্বাহী পরিচালক তালাত মামুন, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের সম্পাদক ইনাম আহমেদ, যমুনা টিভির নির্বাহী পরিচালক ফাহিম আহমেদ এবং এএফপির ব্যুরোপ্রধান শফিকুল আলম।

বৈঠক সূত্র জানায়, সকালে পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকে ডেরেক শোলে জাতিসংঘে ইউক্রেনের পক্ষে বাংলাদেশকে থাকার অনুরোধ করেছেন। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ জানিয়েছে, কোনো একক দেশের বিরুদ্ধে যদি কোনো রেজুলেশন আনা হয়, সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তাতে ভোটদানে বিরত থাকে। তবে অখণ্ডতা প্রশ্নে সেটি যে দেশের বিরুদ্ধেই যাক না কেন, তাতে বাংলাদেশ ভোট দেবে। আর যদি কোথাও ভয়াবহ মানবতাবিরোধী অপরাধ বা চরম মানবাধিকার লঙ্ঘিত হয়ে থাকে, তাহলে তার বিপক্ষে দাঁড়াবে ঢাকা।
নির্বাচন ঘিরে বিএনপির 'অগ্নিসন্ত্রাসের তথ্যপ্রমাণ' যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের কাউন্সিলরের কাছে তুলে ধরেছে বাংলাদেশ। এ কথা জানিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, আমরা তথ্যভিত্তিক প্রমাণাদি দিয়েছি। আমরা অগ্নিসন্ত্রাসের কাহিনিগুলো বলেছি। তিনি আরও বলেন, আমরা কোনো সন্ত্রাস চাই না। আমরা কোনো অগ্নিসন্ত্রাস চাই না।

বৈঠকে উপস্থিত এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে বৈঠকে মূলত রোহিঙ্গা ও ইউক্রেন সংকট নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেই সঙ্গে বাংলাদেশের মানবাধিকার সুরক্ষা, নির্বাচন, বিচারবহির্ভূত হত্যা, গুমের মতো বিষয়গুলোতে আলোচনা হয়। বৈঠকে সামরিক চুক্তি জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন এগ্রিমেন্ট (জিএসওএমআইএ) নিয়ে কাজ চলছে বলে বাংলাদেশ জানিয়েছে।

ঢাকার মার্কিন দূতাবাস এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, বৈঠকগুলোতে শোলে রোহিঙ্গা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অব্যাহত রাখার পাশাপাশি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন এবং মানবাধিকার সুরক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরেন। পাশাপাশি জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনে সহযোগিতা, একটি অবাধ ও উন্মুক্ত ইন্দো-প্যাসিফিক গড়ে তোলার ওপর জোর দেন।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, র‌্যাবের কার্যক্রমের ইতিবাচক পরিবর্তন বিষয়ে সাধুবাদ জানিয়ে টেকসই সংস্কারের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। পররাষ্ট্রমন্ত্রী রথ্যাবের দক্ষতা বৃদ্ধিতে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পৃক্ততা ও সহায়তা কামনা করেন। বৈঠকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, জাতীয় নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।

 

কুড়িগ্রাম জেলায় সাড়ে তিন শতাধিক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য রয়েছে। ফলে ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষা কার্যক্রম।জেলা স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বলছেন, প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর প্রধান শিক্ষক সংকটের কারণের ওইসব প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা ব্যবস্থা হুমকিতে পড়েছে। সংকটের কথা স্বীকার করে সমস্যার দ্রুত সমাধানের কথা জানিয়েছেন কুড়িগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, “বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে জানা যায়, কুড়িগ্রামের নয়টি উপজেলায় মোট এক হাজার ২৪০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আছে। এসব বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৬৬টিতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য আছে। এর মধ্যে ২৩৪টি বিদ্যালয়ে একজন করে সহকারী শিক্ষককে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে বসানো হয়েছে।

সহকারী শিক্ষকরা প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে থাকলেও তাদের আলাদা কোনো সুযোগ-সুবিধার বিষয়ে সরকারি কোনো নির্দেশনা নেই বলে জানা গেছে।কুড়িগ্রাম সদরের করিমের খামার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককের চলতি দায়িত্বে আছেন নুরজাহান বেগম।আলাদা কোনো সুযোগ-সুবিধা না পাওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, “আমরা হতাশা নিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা করে আসছি। দ্রুত সরকারি গেজেট প্রকাশ করে আমাদের সম্মান রক্ষা করা হোক।” 

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মুক্তারাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক গত ২ বছর আগে মারা গেলেও পদটি শূন্য আছে বলে জানা গেছে।বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি একজন জ্যেষ্ঠ শিক্ষককে দায়িত্ব দিয়েছে। যদিও নয়জন শিক্ষকের জায়গায় ওই বিদ্যালয়ে এখন পাঁচজন শিক্ষক দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানান সহকারী শিক্ষক নাজনীন রেবেকা সুলতানা।

তার ভাষ্য, “সহকারী শিক্ষক সংকট কারণে বিঘ্নিত হয়ে পড়েছে বিদ্যালয়টির পাঠদান কার্যক্রম।”

কোমলমতি শিশুদের পড়াশোনা নিশ্চিত করতে শিক্ষক পদায়নসহ প্রধান শিক্ষক পদটির সমাধানের দাবি জানান ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মনোয়ারা খাতুন।

বিদ্যালয়টির পরিচালনা কমিটির সভাপতি আনোয়ারুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রধান শিক্ষকসহ সহকারী শিক্ষকের পদ পূরণের বারবার আবেদন করেও কোনো কাজ হয়নি।”

জেলা স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সালাউদ্দিন রুবেলের অভিযোগ, জেলা সদরের চেয়ে আরও নাজুক পরিস্থিতিতে আছে চরাঞ্চল সহ দুর্গম এলাকার বিদ্যালয়গুলোতে। কুড়িগ্রাম জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি সামিউল হক নান্টু। 

তিনি জানান, জেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান নিশ্চিত করতে দ্রুত প্রধান শিক্ষক ও সহকারী শিক্ষকের শূন্য পদ পূরণে সরকার কার্যকর ব্যবস্থা নেবে এমনটা প্রত্যাশা আমাদের। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সুশিক্ষিত আলোকিত মানুষ গড়ে তুলতে হলে প্রাথমিক স্তরে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. বাহলুল হক চৌধুরীর মৌখিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ৪২ জন কর্মচারীর নিয়োগ স্থগিত করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এটিকে ‘অমানবিক সিদ্ধান্ত’ দাবি করে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেছেন বঞ্চিতরা। বুধবার দুপুর দুইটার দিকে তারা অবস্থান শুরু করেন।এ দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান  জানিয়েছেন, নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজের সুযোগ নেই।

গত ৯ ফেব্রুয়ারি এক কর্মকর্তার মৃত্যুর জানাযায় উপাচার্য ও দুই উপ-উপাচার্য অংশ না নেওয়ায় উপাচার্যের বাসভবনে গিয়ে ‘প্রতিবাদী মোনাজাত’ করে আলোচনার জন্ম দেন বাহলুল হক। এরপর তার পরিবার থেকে জানানো হয় তিনি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার ‘অনুপস্থিতিতে’ উপ-পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ছানাউল্লাহকে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব প্রদান করে কর্তৃপক্ষ। এর পর আজ মৌখিকভাবে নিয়োগপ্রাপ্তদের নিয়োগ স্থগিত করা হয়।

আন্দোলনরত মৌখিক নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারী মো. সুমন মিয়া   বলেন, আমরা মৌখিকভাবে ৫৩ জন নিয়োগ পেয়েছিলাম। গত পাঁচ বছর যাবত বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করে যাচ্ছি। এর মধ্যে ১১ জনের নিয়োগ স্থায়ী হয়েছে, আমাদেরও প্রত্যাশা ছিল আমাদের নিয়োগ স্থায়ী হবে। মঙ্গলবার অফিস শেষে আমাদেরকে জানানো হয়, আমাদের দায়িত্ব হস্তান্তর করতে। হঠাৎ করে আমরা কোথায় যাব? এখন আমাদের অন্য কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। আমরা এ সিদ্ধান্ত মানি না।

আকিব রায়হান নামে আরেক চাকরিবঞ্চিত বলেন, আমাদের ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. ছানাউল্লাহ জানিয়েছেন একমাস পর আমাদের পুনরায় নিয়োগের বিষয়ে জানানো হবে। তবে আমাদের লিখিতভাবে সেটি জানাতে হবে। মৌখিক কথার ভিত্তি নেই।   

ফাতিহা আহমেদ নামে আরেক অবস্থানকারী বলেন, আমাদের একটাই দাবি আমাদের ‘নো ওয়ার্ক, নো পে’, অর্থাৎ আমরা কাজ করলে বেতন পাব, না হলে পাব না—এই ভিত্তিতে রাখা হোক।  অবস্থানের বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক একেএম গোলাম রব্বানীকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রককে জানিয়েছি, তাদের দাবিদাওয়া শুনে কর্তৃপক্ষকে জানাতে। তিনি দেখছেন।’

এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. ছানাউল্লাহ বলেন, ‘আমাদের কন্ট্রোলার স্যার (বাহালুল) মৌখিকভাবে তাদের নিয়োগ দিয়েছিল, বিভিন্ন কাজে সহযোগিতার জন্য। আমি দায়িত্ব পাওয়ার পর তাদের বলছি, আপনাদের আপাতত কাজ করা লাগবে না, নিয়মমাফিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যখন নিয়োগের কাজ শুরু হবে তখন আপনাদের বিষয়টি বিবেচনায় রাখব।’

উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, আমাদের জনবল লাগলে সেটি নিয়মের মধ্যে সম্পন্ন করতে হবে। অননুমোদিতভাবে কিছু করা যাবে না। আমাদের লোকবলের চাহিদা আছে, তবে সেটি যথাযথভাবে দেখেশুনে নিয়মনীতি মেনে করতে হবে। এর বাইরে যাওয়ার কারণ নেই।

প্রসঙ্গত, বাজারদরের চেয়ে কম দামে পছন্দের ব্যক্তির কাছে পুরোনো কাগজ বিক্রি, অধিভুক্ত কলেজের প্রবেশপত্র ফি নগদে গ্রহণ ও লেনদেনে অস্বচ্ছতাসহ অনিয়মের অনেকগুলো অভিযোগ রয়েছে মো. বাহালুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে। এর প্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে চিঠি দিয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের বিষয়ে তথ্য চেয়েছিল। এর পর কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল বাহালুল হককে

অনলাইন ডেস্ক।।

বাংলাদেশ পুলিশের উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) পদমর্যাদার ৭ কর্মকর্তাকে বদলি ও পদায়ন করা হয়েছে। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে উপ-সচিব নূর-এ-মাহবুবা জয়া স্বাক্ষরিত বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে এক প্রজ্ঞাপনে এ বদলি করা হয়।

পুলিশের সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি মফিজ উদ্দিন আহম্মেদকে বদলি করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) উপ-মহাপরিদর্শক করা হয়েছে। আর সিলেট রেঞ্জের নতুন ডিআইজি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অ্যান্টি টেররিজম ইউনিটের শাহ মিজান শফিউর রহমান।

বদলি হওয়া অন্য কর্মকর্তারা হলেন- পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারের কমানড্যান্ট মহা. আশরাফুজ্জামানকে ডিএমপিতে, পুলিশ অধিদপ্তরের উপমহাপরিদর্শক মো. মাহবুবুর রহমান ভুইয়াকে রেলওয়ে পুলিশে, সিলেট মহানগরীর পুলিশ কমিশনার মো. নিশারুল আরিফকে খুলনা পুলিশ ট্রেনিং সেন্টারে, রেলওয়ে পুলিশের উপমহাপরিদর্শক জয়দেব কুমার ভদ্রকে পুলিশ অধিদপ্তরে ও ট্যুরিস্ট পুলিশের উপমহাপরিদর্শক মো. ইলিয়াছ শরীফকে সিলেট মহানগরীর পুলিশ কমিশনার হিসেবে বদলি করা হয়েছে।

অনলাইন ডেস্ক।।

কানাডার টরেন্টোর হাইওয়ে ৪২৭–এর দুনদাস স্ট্রিট ওয়েস্টে গাড়িটি দুর্ঘটনার শিকার হয়ছবি: সংগৃহীত

কানাডার টরেন্টোয় মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় তিন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও একজন। স্থানীয় সময় গত সোমবার রাত সাড়ে ১১ টায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। খবর সিবিসি নিউজ

অন্টারিও প্রাদেশিক পুলিশ (ওপিপি) জানায়, টরেন্টোর হাইওয়ে ৪২৭–এর দুনদাস স্ট্রিট ওয়েস্টে একটি গাড়ি দুর্ঘটনার শিকার হয়। এ সময় গাড়িটি অতিরিক্ত গতিতে চলছিল। সড়ক বিভাজকে ধাক্কা খেয়ে গাড়িটি উল্টে আগুন ধরে যায়।

দুর্ঘটনার সময় গাড়িতে চারজন আরোহী ছিলেন। তাঁরা সবাই বাংলাদেশি। শিক্ষার্থী ভিসায় টরেন্টোয় অবস্থান করছিলেন বলে সেখানকার পুলিশ জানিয়েছে।

এ দুর্ঘটনায় গাড়িতে থাকা তিন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। গুরুতর আহত একজন স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।

চেনা আঙিনায় বেশিরভাগ সময় বড্ড অচেনা হয়ে রইল পিএসজি। ম্যাচ জুড়ে দাপট দেখাল বায়ার্ন মিউনিখ। দারুণ জয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের কোয়ার্টার-ফাইনালের পথে এক ধাপ এগিয়ে গেল ইউলিয়ান নাগেলসমানের দল।প্যারিসে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) লিওনেল মেসি, নেইমার জুনিয়র ও কিলিয়ান এমবাপের মতো ত্রয়ীকে নিয়েও বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে হার বরণ করল পিএসজি।

শেষ ষোলোর প্রথম লেগে ১-০ গোলে জিতেছে জার্মান চ্যাম্পিয়নরা। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্যবধান গড়ে দেওয়া গোলটি করেছেন কিংসলে কোমান

সাম্প্রতিক সময়ে নিজেদের হারিয়ে খোঁজা পিএসজি সব প্রতিযোগিতা মিলিয়ে টানা তিন ম্যাচে হারের তেতো স্বাদ পেল।শুরু থেকে বল দখলের পাশাপাশি আক্রমণেও এগিয়ে ছিল বায়ার্ন। যদিও প্রথম উল্লেখযোগ্য পায় তারা ৩০তম মিনিটে। কোমানের ক্রসে দূরের পোস্টে এরিক মাক্সিম চুপো-মোটিংয়ের হেড লক্ষ্যে থাকেনি।

প্রথমার্ধের সেরা সুযোগটি বায়ার্ন পায় ৪৩তম মিনিটে। জসুয়া কিমিখের জোরাল নিচু শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক জানলুইজি দোন্নারুম্মা। বিরতির আগে বক্সের সামনে থেকে লিওনেল মেসির ফ্রি-কিক প্রতিহত হয় রক্ষণে। প্রথমার্ধে গোলের জন্য এই একটি শটই কেবল নিতে পারে পিএসজি। যেখানে এই সময়ে বায়ার্নের ১০ শটের দুটি লক্ষ্যে ছিল।

দ্বিতীয়ার্ধের অষ্টম মিনিটে গোলটি পায় বায়ার্ন। আলফুঁস ডেভিসের ক্রসে ডি-বক্সে কোমানের ভলি ঠেকানোর মতোই ছিল, ঝাঁপিয়ে পড়া দোন্নারুম্মার হাত ছুঁয়ে বল জালে জড়ায়। গোল হজমের একটু পর কার্লোস সলেরকে তুলে কিলিয়ান এমবাপেকে নামান পিএসজি কোচ। চোটের কারণে দলের সবশেষ তিন ম্যাচে খেলতে পারেননি ফরাসি তারকা।

৬২তম মিনিটে চুপো-মোটিংয়ের ওভারহেড কিক ফিরিয়ে ব্যবধান বাড়তে দেননি দোন্নারুম্মা। পরের মিনিটে ক্যামেরুনের এই ফরোয়ার্ডের আরেকটি প্রচেষ্টা ইতালিয়ান গোলরক্ষকের হাত ছুঁয়ে পোস্টে লেগে কর্নার হয়। সেই কর্নারে বাঁজামাঁ পাভার্দের জোরাল হেডও ঠেকান তিনি।

এরপর বায়ার্নের ওপর চাপ বাড়ায় পিএসজি। ৭৩তম মিনিটে এমবাপে জালে বল পাঠালেও অফসাইডের কারণে গোল মেলেনি। চার মিনিট পর মার্কিনিয়োসের হেড ঠেকান গোলরক্ষক ইয়ান সমের। ৮২তম মিনিটে আবার জালে বল পাঠান এমবাপে, তবে আক্রমণের শুরুতে সামান্য ব্যবধানে অফসাইডে ছিলেন নুনো মেন্দেস। দুই মিনিট পর মেসির প্রচেষ্টা প্রতিহত হয় ডিফেন্ডার পাভার্দের পায়ে।

যোগ করা সময়ে বক্সের বাইরে মেসিকে ফাউল করে দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়েন পাভার্দ। কোনো বিপদ যদিও হয়নি সফরকারীদের। আগামী ৮ মার্চ বায়ার্নের মাঠে হবে ফিরতি লেগ।

 

শিক্ষাবার্তা ডেস্কঃ বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে বঙ্গভবনে পৌঁছেছেন নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনে যান নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি।

বঙ্গভবন সূত্রে জানা গেছে, বিদায়ী রাষ্ট্রপতির সঙ্গে নতুন রাষ্ট্রপতির এই সাক্ষাতের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট বোন শেখ রেহানা উপস্থিত থাকবেন।

গত রবিবার (১২ ফেব্রুয়ারি) দেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি পদে দুদকের সাবেক কমিশনার মো. সাহাবুদ্দিনকে মনোনয়ন দেয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) তাকে রাষ্ট্রপতি হিসেবে নির্বাচিত ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এদিনই গেজেট প্রকাশিত হয়।প্রসঙ্গত, বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৩ এপ্রিল। পরদিন ২৪ এপ্রিল থেকে নতুন রাষ্ট্রপতি হিসেবে অভিষেক হবে মো. সাহাবুদ্দিনের।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৪/০২/২৩     

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের দেড় বছরের ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড) কোর্স থাকছে না। নতুন করে চালু করা হচ্ছে প্রাইমারি টিচার বেসিক ট্রেনিং (পিটিবিটি) নামের ১০ মাসের কোর্স।

ঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ।

প্রাথমিক শিক্ষার উদ্যোগ ও অর্জন নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

দীর্ঘ সময় ধরে পরিচালিত প্রাথমিক শিক্ষকদের এক বছরের মৌলিক প্রশিক্ষক সার্টিফিকেট ইন এডুকেশন (সিইনএড) বাদ দিয়ে দেড় বছরের ডিপ্লোমা ইন প্রাইমারি এডুকেশন (ডিপিএড) কোর্স চালু করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

প্রথমে এই কোর্স দেশের সাতটি প্রাইমারি ট্রেনিং ইনস্টিটিটিউটে (পিটিআই) চালু করার পর সমালোচনার মুখে পড়ে কোর্সটি।এরপর থেকে ১০ বছরের বেশি সময় পরীক্ষামূলকভাবেই পরিচালিত হয় কোর্সটি।

সমালোচনার মুখে অবশেষে কোর্সটি পরিবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হয়। নতুন কারিকুলামকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন করে পিটিবিটি নামের ১০ মাসের প্রশিক্ষণ চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, ২০১১ সাল পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রশিক্ষক সিইনএড ছিল। পরে যুগের চাহিদা ও নতুন পাঠক্রম বিবেচনায় ২০১২ সালে দেশের সাতটি পিটিআইয়ে পরীক্ষামূলকভাবে ডিপিএড কোর্স চালু হয়েছিল।  এখন পর্যন্ত এটি পাইলটিং হচ্ছে।

তিনি বলেন, পাইলটিং চলার পর কী সুবিধা হয়েছে কী অসুবিধা হয়েছে, যুগের চাহিদা মিটআপ করতে পারছি কি না, এর জন্য জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় পিডিপি-৪ এর আলোকে এক বছর যাবত মাঠ পর্যায়ে মতামত নিয়ে মূল্যায়ন করা হয়েছে।

তিনি জানান, বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মশালা করে মাঠ পর্যায়ের মতামত নেওয়া হয়েছে। স্টেকহোল্ডারদের মতামত নেওয়া হয়েছে। এসব মতামতের ভিত্তিতে চূড়ান্ত ফলাফল এসেছে, ডিপিএডটি পরিচালিত হচ্ছে এডুকেশনাল মুডে। কিন্তু চাকরিতে প্রবেশের পর ইনসার্ভিস ট্রেনিং এডুকেশন মুডে পরিচালিত হয় না। এটি হয় মৌলিক প্রশিক্ষণ।

সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, যে শিক্ষকদের নিয়োগ করছি, তারা ছোট ছোট শিশুদের স্কুলে গিয়ে পড়াবেন। আমরা চাই শিক্ষকরা গুড মেন্টর হবেন। এ কারণেই এটিকে এডুকেশন মুড থেকে বের করে একেবারে চাহিদাভিত্তিক মৌলিক প্রশিক্ষণে রূপান্তর করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

তিনি বলেন, আমাদের এখন যে কোর্স কারিকুলাম চালু রয়েছে, দেড় বছরের মধ্যে ছয় মাস শিক্ষকদের স্কুলে অ্যাটাচমেন্ট ছিল। দেড় বছরের মধ্যে থিওরিটিক্যাল যা রয়েছে, তা সম্পন্ন করতে চার থেকে পাঁচ মাস সময় লাগবে। অ্যাটাচমেন্টে যে ছয় মাস শিক্ষকরা থাকেন সেখানে কোনো রকম মনিটরিং নেই, ইভ্যালুয়েশন নেই, এটি কোনো মূল্যায়নের আওতায় আসে না, শিক্ষকরা ফ্রি স্টাইলে চলে যান। এটি প্রশিক্ষণের অংশ হতে পারে না।

সচিব বলেন, শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছি বাচ্চাদের ভালো মেন্টরিং করার জন্য। ভালো মেন্টরিংয়ের জন্য গুরুত্ব দেওয়া উচিত প্যাডাগোজির ওপর। বর্তমান ডিপিএডে তাত্ত্বিক বিষয়ের ওপর গুরুত্ব বেশি দেওয়া হচ্ছে। সেই কারণে সবার মতামত নিয়ে প্যাডাগোজি ও মোটিভেশনাল আসপেক্টেকে গুরুত্ব দিয়ে কোর্স কারিকুলামকে পরিবর্তন করা হয়েছে। শিক্ষকদের এই অ্যাটাচমেন্ট হবে মূল্যায়নের আওবিটির আওতায়।

তিনি বলেন, অ্যাটাচমেন্ট পিরিয়ডটাকে আমরা মূল্যায়নের আওতায় এনে ১০ মাসের কোর্স কারিকুলাম নতুনভাবে সাজিয়েছি। এটি যুগের চাহিদা মেটাবে, বাচ্চাদের মেন্টরিং করার জন্য যথাযথভাবে বিবেচিত হবে। আগের যে কোর্স কারিকুলাম রয়েছে, তার চেয়ে বেশি বিষয় যুক্ত করা হয়েছে। এই প্রশিক্ষণটি আগে বাধ্যতামূলক আবাসিক ছিল না। এটি বাধ্যতামূলক আবাসিক প্রশিক্ষণ হবে। শিক্ষক যোগদান করার পর যদি সাত বছর আট বছর পর মৌলিক প্রশিক্ষণ পান, তাহলে প্রশিক্ষণ কোনো কাজে লাগে না। সে কারণে আমরা ১০ মাসের পিটিবিটি কোর্স চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৪/০২/২৩     

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষার ফল আগামী ২৫ থেকে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ।

মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ তথ্য জানান। এ সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।সচিব বলেন, এ মাসের ২৫ থেকে ২৮ তারিখের মধ্যে আমরা চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করতে পারব বলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ডিজি জানিয়েছেন।

এবার প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা গ্রহণ না করায় সরাসরি বৃত্তি পরীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। বৃত্তি পরীক্ষায় প্রায় ৬ লাখ শিক্ষার্থী অংশ নিয়েছে। পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে ৮০ হাজার শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেওয়া হবে। এর অর্ধেক ছাত্র, বাকি অর্ধেক ছাত্রী।পঞ্চম শ্রেণির বৃত্তি পরীক্ষা ৩০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। ২ ঘণ্টার মধ্যে চার বিষয়ের মোট ১০০ নম্বরের বৃত্তি পরীক্ষা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিপ্রাপ্তরা ৩০০ টাকা ও সাধারণ গ্রেডে বৃত্তিপ্রাপ্তরা ২২৫ টাকা হারে মাসিক বৃত্তি পেয়ে থাকে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৪/০২/২৩     

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ দেশের যেসব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম শ্রুতিকটু ও নেতিবাচক, সেগুলোর নাম পরিবর্তন করে সুন্দর, রুচিশীল ও শ্রুতিমধুর রাখার উদ্যোগ নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।

আগামী ছয় মাসের মধ্যে এসব বিদ্যালয়ের নাম পরিবর্তন করা হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেন।মঙ্গলবার সকালে সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রণালয়ের সচিব ফরিদ আহাম্মদ উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, শ্রুতিকটু ও নেতিবাচক নাম পরিবর্তন করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নাম সুন্দর, রুচিশীল, শ্রুতিমধুর এবং স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি, বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ স্থানীয় ইতিহাস, সংস্কৃতির সঙ্গে মিল রেখে রাখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। গত বছর ২৩ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত নীতিমালা জারি করা হয়েছে। ছয় মাসের মধ্যে পরিবর্তিত নামসমূহের গেজেট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জাকির হোসেন বলেন, পাইলটিং করে প্রায় চার লাখ শিক্ষককে দ্রুততম সময়ে বদলির জন্য গত বছরের ২২ ডিসেম্বর সংশোধিত অনলাইন বদলি নীতিমালা জারি করা হয়েছে।

প্রথম পর্যায়ে মাত্র সাত দিনের মধ্যে অনলাইনে বদলির জন্য আবেদনকৃত ২৫ হাজার আবেদনের বিষয়ে নিষ্পত্তিমূলক সিদ্ধান্ত প্রদান করা হয়েছে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ধাপের কার্যক্রম গ্রহণের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।পাঠ্যপুস্তকের বিষয়ে তিনি বলেন, পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষায় শুধু প্রথম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তক প্রণীত হয়েছে। অন্যান্য শ্রেণির পাঠ্যবই পর্যায়ক্রমে বিদ্যালয়ে দেওয়া হবে।

এ কারণে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ইতোমধ্যে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষাক্রম ৪+ ও ৫+ কে বিবেচনা করে দুই বছর মেয়াদি প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা পাইলটিং হিসেবে ৩২১৪টি স্কুলে এ বছর শুরু করা হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী আরও জানান, শিশুর বিকাশ ও খেলাভিত্তিক শিখনের ওপর ছয় দিনব্যাপী প্রাক-প্রাথমিকের শিক্ষকদের তৈরি করার লক্ষ্যে ৭০০ প্রশিক্ষক তৈরি করা হয়েছে। এ প্রশিক্ষণটিও মাঠ পর্যায়ের সব শিক্ষক সরাসরি ও অনলাইন পদ্ধতিতে পাবেন। এনসিটিবি এরমধ্যে এ বিষয়ে প্রাক-প্রাথমিক বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ শিক্ষাক্রমের ওপর একটি বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ দেশব্যাপী পরিচালনা করবে। চলতি বছরের মার্চের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ের সব শিক্ষকের পাঠ্যক্রম বিস্তরণ সংক্রান্ত এবং বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত যাবতীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।

শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৪/০২/২৩     

বর্তমান চিকিৎসা বিজ্ঞান তার স্বর্ণ শিখরে পদার্পণ করেছে। এখন এমন উপায়ে চিকিৎসা করা হয় যা পূর্বেকার যুগে কল্পনাও করা যেত না। 

যেমন কারো কিডনি নষ্ট হয়ে গেল অথবা চক্ষুদৃষ্টি হারিয়ে ফেললে আরেকজন মৃত ব্যক্তি থেকে কিডনি অথবা চক্ষু স্থানান্তর করে তার মধ্যে প্রতিস্থাপন করে। এতে অসুস্থ লোকটি সুস্থতা লাভ করে।

উন্নত দেশগুলোতে মরণোত্তর অঙ্গদানের বিষয়টি বহুল প্রচলিত। আমাদের দেশেও ইদানীং কিছুটা হচ্ছে তবে ব্যাপক নয়।  যেমন কিছুদিন পূর্বে সারাহ ইসলাম নামের এক নারী মরণোত্তর তার কিডনি এবং চক্ষু দান করেছিল। এখন জানার বিষয় হলো- এভাবে মরণোত্তর অঙ্গদান ইসলামের দৃষ্টিতে কি জায়েজ?

ইসলাম একটি শাশ্বত,সার্বজনীন, যুগোপযোগী ও বাস্তবভিত্তিক ধর্ম। পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থার নাম। জীবনের সকল ক্ষেত্রে তার সুস্পষ্ট নীতিমালা ও দিক- নির্দেশনা রয়েছে।

মানুষের সুস্থতা, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার ক্ষেত্রেও রয়েছে ইসলামের সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা ও নীতিমালা। মহান আল্লাহ ইরশাদ করেন, তোমরা  নিজেদেরকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিও না। (সুরা বাকারা : আয়াত ১৯৫)

অন্যত্র বলেন, ‘আর যে কারো প্রাণ রক্ষা করে সে যেন সকল মানুষের প্রাণ রক্ষা করে।' (সূরা মায়েদা ৩২)

হযরত উসামা (রা.) থেকে বর্ণিত, জনৈক বেদুইন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, আমরা কি চিকিৎসা  গ্রহণ করব? উত্তরে তিনি বললেন, হ্যাঁ। কেননা আল্লাহ এমন কোন রোগ সৃষ্টি করেননি যার চিকিৎসার ব্যবস্থা রাখেননি। সুতরাং যে তা জানল সে জানল। আর যে জানলো না সে জানলো না।  (মুসনাদে আহমদ; হাদিস নং ১৮৪৫৪)

এসব আয়াত এবং হাদিসের নির্দেশনা হলো- মানুষ তার সুস্থতা লাভের জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে এবং তার সাধ্যের ভেতর যত ব্যবস্থাপনা সম্ভব হয় তা অবলম্বন করবে এবং অসুস্থ ব্যক্তির সুস্থতা লাভের জন্য অন্যরাও এগিয়ে আসবে, সব ধরনের সহযোগিতা করবে। যারা এরূপ করবে নিঃসন্দেহে তা মানব সেবা বলে গণ্য হবে। এবং তারা অশেষ নেকি লাভ করবে।

প্রশ্নের মূল উত্তর:

মরণোত্তর অঙ্গদানের বিষয়টি নিয়ে আলেমদের বেশ মতানৈক্য রয়েছে। পূর্বেকার যুগে চিকিৎসার এ পদ্ধতি ছিল না, বর্তমানে তা আবিষ্কৃত হয়েছে।  যেহেতু সরাসরি কুরআন-হাদিসে এ বিষয়ের স্পষ্ট কোনো উল্লেখ নেই তাই এ ব্যাপারে সমকালীন ও নিকট অতীতের ফুকাহায়ে কেরামের মধ্যে মতানৈক্য পরিলক্ষিত  হয়।

সৌদি আরব, মিসর, কুয়েত জর্ডানসহ গোটা আরব বিশ্বের ওলামায়ে কেরাম বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-পর্যালোচনা করেছেন এবং নির্দিষ্ট কিছু শর্তের ভিত্তিতে জায়েজ হওয়ার স্বপক্ষে ব্যক্তি মতামত দিয়েছেন এবং ফিকহী বোর্ড কেন্দ্রিক সম্মিলিত ফতোয়াও প্রকাশ করেছেন।

যেমন শায়খে আজহার জাদুল হক আলি জাদুল হক, সাইয়েদ মুহাম্মদ তানতাবী, ইউসুফ কারযাভী, মুস্তাফা জারকা, নাসের ফরিদ ওয়াসেল, আলী জুমআ, আতিয়া সকর, মুহাম্মদ নাঈম ইয়াসিন, ইকরামা সাবরি, আব্দুর রহমান ইবনে নাসির সাদী ও ইব্রাহিম দাহকুবীসহ বহু বিখ্যাত আরব ইসলামিক স্কলাররা বিষয়টি জায়েজ হওয়ার ফতোয়া দিয়েছেন।

১৯৮৮ সালে জেদ্দায় অনুষ্ঠিত মাজমাউল ফিকহিল ইসলামী থেকে জায়েজ হওয়ার স্বপক্ষে সম্মিলিত ফতোয়া প্রকাশিত হয়েছে। এমনিভাবে সৌদি আরবের অন্যান্য ফিকহী বোর্ড, এবং মিসর, কুয়েত ও জর্দানের বিভিন্ন ফিকহী বোর্ড থেকেও সম্মিলিত ফতোয়া প্রকাশ করেছে।

১৯৬৯ সালে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক ইসলামিক কনফারেন্স থেকে ও জায়েজ হওয়ার ফতোয়া প্রদান করা হয়েছে।

ভারত উপমহাদেশের অধিকাংশ মুফতিয়ানে কেরাম নাজায়েজ হওয়ার ফতোয়াই প্রদান করেছেন। তবে কিছু সংখ্যক মুফতিয়ানে কেরাম যুগের চাহিদা, মানুষের প্রয়োজন এবং সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় জায়েজের ফতোয়া দিয়েছেন।

আমাদের বাংলাদেশের বিজ্ঞ মুফতি ও প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন মুফতি দিলাওয়ার হোসাইন (হাফিযাহুল্লাহু) তার অনবদ্য সংকলন ‘ইসলাম ও আধুনিক চিকিৎসা’য় এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন এবং জায়েজ হওয়ার কথা বলেছেন।

উল্লেখ্য যে, যারা জায়েজ বলেছেন তারাও ব্যাপকভাবে নয় এবং সীমিত পরিসরে বিশেষ প্রয়োজনে নির্দিষ্ট শর্ত সাপেক্ষে জায়েজের কথা বলেছেন। সাথে সাথে এ বিষয়েও কঠোর সতর্ক বাণী উচ্চারণ করেছেন যে, এই ফতোয়াকে পুঁজি করে মানবাঙ্গের ক্রয়-বিক্রয়ে জড়িত হওয়া, একে বাণিজ্যিক রূপ দেওয়া, মানব পাচার ও লাশ চুরির মতো জঘন্য ও গর্হিত কাজে লিপ্ত হওয়া সম্পূর্ণ হারাম হবে।

যে চক্র এ কাজে জড়িত হবে পরকালে তাদের মহান আল্লাহর দরবারে কঠিন জবাবদিহিতা করতে হবে। তাই এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মহলকে সর্বোচ্চ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে কঠোর আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।

যেসব শর্তে মরণোত্তর অঙ্গ ট্রান্সপ্লান্টেশন জায়েজ:

১.যথাসাধ্য চেষ্টা করবে, যেন মুসলমানের অঙ্গ মুসলমানদের শরীরে প্রতিস্থাপিত হয়।
২. কোনো মুসলমানের অঙ্গ কোন কাফেরকে কিছুতেই দেওয়া যাবে না।
৩. অভিজ্ঞ এবং নির্ভরযোগ্য ডাক্তাররা এ কথা বলেন- রোগীর  অকেজো ও বিকল অঙ্গটির স্থানে অন্য কারোর সুস্থ অঙ্গ প্রতিস্থাপন ছাড়া তার পক্ষে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়।

৪. যার জন্য অঙ্গটি ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা হচ্ছে, তার ক্ষেত্রে নিশ্চিত হতে হবে যে, এর দ্বারা লোকটি সুস্থ হয়ে যাবে।
৫. যার থেকে অঙ্গটি ট্রান্সপ্লান্ট করা হচ্ছে তার মৃত্যুর ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া। এক্ষেত্রে অন্তত তিনজন অভিজ্ঞ দ্বীনদার ডাক্তার তার ডেথ সার্টিফিকেট প্রদান করা।

৬. অঙ্গদানকারী মৃত্যুর পূর্বে সুস্থ থাকা অবস্থায় কোন প্রকারের বাধ্যবাধকতা ছাড়া স্বতঃস্ফূর্ত অঙ্গদানের ওসিয়ত করা।
৭. মৃত্যুর পর অঙ্গ স্থানান্তরের  ব্যাপারে ওয়ারিশগণের পূর্ণ সমর্থন থাকা।

৮. ওসিয়তকৃত অঙ্গটি এমন না হওয়া যার দ্বারা বংশ পরিচিতি মিশ্রণ হয়ে যায়। যেমন পুরুষাঙ্গ কিংবা গর্ভাশয় দান করার ওসিয়ত করা।

৯.অঙ্গ ট্রান্সপ্ল্যান্টশন রাষ্ট্র কর্তৃক অনুমোদিত ও নির্বাচিত অভিজ্ঞ ডাক্তারদের একটি টিমের তত্ত্বাবধানে হওয়া।
১০. কোনো প্রকার আর্থিক লেনদেন না হওয়া।

১১. যদি কোনো মৃত লাওয়ারিশ হয়, তাহলে তার অঙ্গ কিছুতেই ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা যাবে না ইত্যাদি।

সূত্র: (ফাতাওয়া উসমানী-৪/২২৩-২২৬) ইসলাম ও আধুনিক চিকিৎসা;১৬৩-১৭৪, ক্বারারাতু মাজাল্লাতি মাজমাইল ফিকহিল ইসলামী, জিদ্দা, সংখ্যা, ৪, খ.১, পৃ.৫০৭, ক্বারার নং (১) ৪/০৮/৮৮,পৃ.৯-১০)

চট্টগ্রামের সাইফুল খানের সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয়, তারপর অনলাইনের মাধ্যমে চার বছরের প্রেম করেন কলকাতার কলেজছাত্রী কবিতা সরকার। প্রেমের টানে আসলেও পরে তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। অবশেষে আজ সোমবার সকালে শূন্য হাতে কলকাতা ফিরে গেছেন কবিতা সরকার।কলকাতা রানাঘাট এলাকার নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু কলেজের ছাত্রী কবিতা সরকার। রানাঘাট নন্দীঘাট বৃদ্ধাকূল এলাকার এক রাজমিস্ত্রির মেয়ে তিনি। পরিবারে বাবা-মা এবং ছোট একটি বোন রয়েছে তার।

কবিতা সরকার সাংবাদিকদের জানান, চার বছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয় চট্টগ্রামের অলংকার মোড়ের সাইফুল খানের সঙ্গে। এরপর অনলাইনে চলে প্রেম। চাকরির টাকা জমিয়ে তিনি কলেজে লেখাপড়ার পাশাপাশি পাসপোর্ট ও ভিসা খরচ যোগান। এরপর সাইফুলের সঙ্গে দেখা করার জন্য বাড়ি থেকে পালিয়ে গত ৩ ডিসেম্বর সাতক্ষীরার ভোমরা সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে আসেন। ওই সময় তার সঙ্গে খুলনা নগরীর রায়েরমহল এলাকার শেফালী সরকারের সঙ্গে পরিচয় হয়। শেফালীর সহযোগিতায় কবিতা বাসে করে চট্টগ্রাম যান। এরপর প্রায় দুই মাস চট্টগ্রামে সাইফুলের কাছে ছিলেন। কিন্তু সাইফুল তার সঙ্গে প্রতারণা করেছেন।

পরবর্তীতে গত ১ ফেব্রুয়ারি কবিতা সরকার খুলনার রায়েরমহল এলাকায় শেফালী সরকারের কাছে এসে তার বিপদের কথা জানান। পাশাপাশি তার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় ভারতে ফেরত যাওয়ার বিষয়ে সহযোগিতা চান। শেফালী তাকে খুলনার ভারতীয় সহকারী হাইকমিশনার অফিসে নিয়ে যান। পরে খুলনার বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসে ভিসার জন্য আবেদন করেন কবিতা। গত রোববার তাকে ভিসা দেওয়া হলেও মেয়াদ দেওয়া হয়েছে ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

কবিতা সাংবাদিকদের জানান, প্রেমের টানে বাংলাদেশে আসলেও তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। সাইফুলের সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। ফেসবুকে চার বছর প্রেম করার পর এমন প্রতারণার শিকার হবেন, তা বুঝতে পারেননি তিনি। বাংলাদেশে এসে বড় ভুল করেছেন।

শেফালী সরকার বলেন, ‌গত ৩ ডিসেম্বর ভারত থেকে বাংলাদেশে আসার সময় ওই ছাত্রীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তিনি চট্টগ্রামে যাওয়ার জন্য সহযোগিতা চাইলে তাকে একটি বাসে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেই। এরপর গত ১ ফেব্রুয়ারি তিনি আবার আমার কাছে আসেন।

তিনি বলেন, ওই ছাত্রী আমাকে ‌'মা' বলে ডেকেছেন। এছাড়া ভারতীয় একটি মেয়ে বাংলাদেশে এসে যেন বিপদগ্রস্ত না হয় এবং দেশের যেন দুর্নাম না হয়, তাই তার পাশে দাঁড়িয়েছি। ওই ছেলেটি তার সঙ্গে প্রতারণা করেছে। এমনকি তিনি চেইন আংটিসহ যে স্বর্ণালংকার নিয়ে এসেছিলেন, তাও ওই ছেলে রেখে দিয়েছে। কবিতা আজ (সোমবার) সকালে ভোমরা সীমান্ত দিয়ে কলকাতায় ফিরে গেছে।

magnifiermenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram