রবিবার, ১৯শে মে ২০২৪

অনলাইন ডেস্ক:

মেয়াদ শেষ হওয়ার পর অব্যবহৃত মোবাইল ডাটা ফেরত দিচ্ছে মোবাইল ফোন অপারেটররা। এর আগে মেয়াদ শেষে অব্যবহৃত মোবাইল ইন্টারনেট ডাটা পরবর্তী সময়ে কেনা ডাটা প্যাকেজের সঙ্গে ফিরিয়ে দিতে মোবাইল অপারেটরগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।

তবে ডাটা ফেরত দেয়ার ক্ষেত্রে শর্ত রয়েছে-একই মেয়াদের ডাটা প্যাকেজ কিনলে এটা ফেরত পাওয়া যাবে এবং তা ওই প্যাকেজের মেয়াদের মধ্যেই ব্যবহার করতে হবে। গ্রামীণফোন ও বাংলালিংকের ক্ষেত্রে গ্রাহকদের জন্য এই শর্তযুক্ত সুবিধা মিলছে। কিন্তু এতে গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে কি না, তা বিটিআরসি খতিয়ে দেখবে।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিটিআরসিকে এ বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছি। বিটিআরসিও দ্রুত ব্যবস্থা নিতে কমিটি গঠন করেছে।

মোবাইল ফোন অপারেটরদের মধ্যে যারা গ্রাহকদের অব্যবহৃত ডাটা ফেরত দিচ্ছে তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই। তবে এই ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়াটি কতটা স্বচ্ছ, তাতে গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষা হচ্ছে কি না, তা যাচাই করা হবে। আর যেসব অপারেটর সাত দিনের কম মেয়াদে ডাটা প্যাকেজ বিক্রি করছে তাদেরও জবাবদিহির সম্মুখীন করা হবে।’

মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘এটা তারা আগে ফেরত দিত। আমি নিজেও এই ডাটা ফেরত পেয়েছি। কলড্রপ হলেও তার ক্ষতিপূরণ পেয়েছি। কিন্তু এখন তা পাওয়া যাবে না কেন? গ্রাহকরা যাতে তাদের কেনা ডাটা প্রয়োজন অনুসারে পরিপূর্ণভাবে ব্যবহার করার সুযোগ পায়, সে কারণে ডাটা প্যাকেজগুলোর মেয়াদ কমপক্ষে সাত দিন করারও নির্দেশনা ছিল। কিন্তু এখনো সেই নির্দেশনা বাস্তবায়ন কেন হচ্ছে না, সেটাও খতিয়ে দেখা হবে।’

তিনি বলেন, মোবাইল অপারেটদের সেবার গুণগত মান নিয়ে মানুষের মনে প্রশ্ন আছে। গুণগত মান রক্ষার কথা ছিল, আমরা সেগুলো মনিটরিং করে আসছি। কিন্তু প্রযুক্তির সহায়তা ছাড়া এই কাজটি সম্পাদন করা অসম্ভব। সেজন্য আমরা এক্ষেত্রেও প্রযুক্তিকে অবলম্বন করছি।

গত সোমবার কানাডা ভিত্তিক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান টিকেসি টেলিকমের সাথে বিটিআরসির টেলিকম মনিটরিং সিস্টেম ক্রয় সংক্রান্ত একটি চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানটিকে চুক্তি স্বাক্ষরের ১৮০ দিনের মধ্যে টেলিকম মনিটরিং সিস্টেম স্থাপনের কাজ সম্পন্ন করতে হবে।

নিউজ ডেস্ক।।

আরো তিনটি কারিগরি কলেজকে সরকারিকরণ করা হয়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে স্থাপিত এ প্রতিষ্ঠানগুলো চলতি বছরের ২২ জুলাই থেকে সরকারি ঘোষণা করে শোকের মাস আগস্টে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে এ বিষয়ে আলাদা আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
বুধবার (৪ আগস্ট) দুপুরে কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগের উপসচিব কাইজার মোহাম্মদ ফারাবী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সরকারি হওয়া কারিগরি কলেজগুলো হলোঃ ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডু উপজেলার বঙ্গবন্ধু বিজ্ঞান ও ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা কলেজ, কুমিল্লা জেলার নাঙ্গলকোট উপজেলার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব টেকনিক্যাল এন্ড কমার্স কলেজ এবং নাটোরের সিংড়া উপজেলার বঙ্গবন্ধু কমার্স এন্ড টেকনিক্যাল কলেজ। আগস্টের ২ তারিখে  প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও ২২ জুলাই থেকে কলেজগুলোকে সরকারি ঘোষণা করা হয়েছে।

অনলাইন ডেস্ক।।

বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার ফরম পূরণে নির্ধারিত ফির বাইরে অতিরিক্ত অর্থ আদায় বন্ধ করতে প্রতি বছর নানা নির্দেশনা দেওয়া হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন শিক্ষা বোর্ড থেকে। তবে অনেক ক্ষেত্রে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এসব নির্দেশনা উপেক্ষা করে। তারা শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে। সর্বশেষ করোনাকালেও এসএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেছে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
তবে এবার ভিন্ন পথে হাঁটছে শিক্ষাবোর্ড। অতিরিক্ত অর্থ আদায় ঠেকাতে একটি সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে একজন পরীক্ষার্থী ফরম পূরণসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের পাওনা পরিশোধ করতে পারবে। প্রমাণ হিসেবে থাকবে সফটওয়্যারের মাধ্যমে পাওয়া এসএমএস। তাই চাইলেও প্রতিষ্ঠান আগের মতো অতিরিক্ত অর্থ নিয়ে তা অস্বীকার করতে পারবে না। প্রতিষ্ঠান চাইলেও নামে-বেনামে নানা খাত দেখিয়ে অতিরিক্ত ফি আদায় করতে পারবে না।
শিক্ষাবোর্ডের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, আগামী ১২ আগস্ট থেকে শুরু হতে যাওয়া এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের ফরম পূরণ হবে এই সফটওয়্যারের মাধ্যমে। সংশ্লিষ্ট কলেজ এ সফটওয়্যারের মাধ্যমে পরীক্ষার্থী বা তার অভিভাবকের সচল একটি মোবাইল নম্বর দিয়ে রেজিস্ট্রেশনের কাজ শুরু করবে। প্রতিষ্ঠান, বোর্ড ফি ও কেন্দ্র ফি সফটওয়্যারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সেট করা থাকবে। পরীক্ষার্থীর কাছে কত টাকা পাওনা, কলেজ শুধু সফটওয়্যারে সেই টাকার পরিমাণ এন্ট্রি দেবে। তারপর পরীক্ষার্থী বা অভিভাবকের নিবন্ধিত ফোন নম্বরে চলে যাবে একটি এসএমএস, যাতে টাকার পরিমাণ উল্লেখ থাকবে।
কোনো পরিক্ষার্থী যদি মনে করে, তার কাছে অতিরিক্ত অর্থ চাওয়া হয়েছে, সেক্ষেত্রে সে প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবে। সেখানে সমাধান না পেলে বোর্ডের কন্ট্রোল রুমে ফোন করে অভিযোগ জানাতে পারবে। তাৎক্ষণিক তা যাচাই-বাছাই করবে বোর্ড। প্রমাণ পেলে অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের ফরম পূরণের প্যানেল তাৎক্ষণিক বন্ধ করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে বোর্ড।
জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষাবোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক নেহাল আহমেদ বলেন, এতদিন বোর্ড ফির বাইরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নানা খাত দেখিয়ে অর্থ আদায় করত, যার কোনো ডকুমেন্ট থাকত না। এখন একজন পরীক্ষার্থীর কাছ থেকে প্রতিষ্ঠান টিউশন ফিসহ কোন খাতে কত টাকা নেবে তা আমাদের কাছে দৃশ্যমান হবে। পরীক্ষার্থীরাও জানতে পারবে এবং ডকুমেন্ট পাবে। তাই চাইলেই একটি প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত ফি আদায় করতে পারবে না।
সফটওয়ারের মাধ্যমে যেভাবে হবে ফরম পূরণ করোনার কারণে এবার এইচএসসির ফরম পূরণের পুরো কাজটি হবে অনলাইনে। কোনো অবস্থাতেই পরীক্ষার্থী বা অভিভাবকদের কলেজে ডাকা যাবে না। সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বোর্ডের ওয়েবসাইটে পরীক্ষার্থীদের তালিকা প্রিন্ট করে হার্ড কপিতে লাল কালি ব্যবহার করে টিক চিহ্ন দিয়ে পরীক্ষার্থী নির্ধারণ করবে। তারপর প্রতিষ্ঠানের বকেয়া পাওনার খালি ঘরে সঠিকভাবে হিসাব-নিকাশ করে নির্বাচিত প্রত্যেক পরীক্ষার্থীর প্রতিষ্ঠানের বকেয়া পাওনা (পাওনা না থাকলে ‘শূন্য’ টাকা) লিখবে। ফোন নম্বরের ঘরে পরীক্ষার্থী বা তার অভিভাবকের নম্বরটি লিখতে হবে।

মোবাইল নম্বর সঠিকভাবে লেখার পর বকেয়া পাওনা প্রদান, মোবাইল নম্বর সংগ্রহ বা অন্য কোনো কারণে পরীক্ষার্থী বা তার অভিভাবককে সশরীরে প্রতিষ্ঠানে আসতে বলা যাবে না। প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠানকে একাধিকবার তথ্য যাচাই করতে হবে।
সব যাচাই-বাছাই হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানের মোট বকেয়া পাওনা এন্ট্রি করতে হবে। এখানে বোর্ড ফি ও কেন্দ্র ফি অটো সেট থাকবে। প্রতিষ্ঠানের এ দুটি খাতে টাকা এন্ট্রি দিতে হবে না। সবকিছু সঠিকভাবে এন্ট্রি দেওয়ার পর সেন্ড বাটনে ক্লিক করার পর পরীক্ষার্থীর মোবাইলে টাকার পরিমাণ উল্লেখ করা একটি এসএমএস চলে যাবে।
পাওনা বা মোবাইল নম্বর এন্ট্রিতে ভুল ধরা পড়লে সংশ্লিষ্ট পরীক্ষার্থী পেমেন্ট না করা পর্যন্ত এডিট বাটনে ক্লিক করে প্রতিষ্ঠান, পাওনা বা মোবাইল নম্বর সংশোধন করতে পারবে। সেক্ষেত্রে সংশোধন করার পর অবশ্যই পুনরায় সেন্ট এসএমএস বাটনে ক্লিক করতে হবে। তবে কোনো পরীক্ষার্থী পেমেন্ট সম্পন্ন করলে আর সংশোধনের সুযোগ থাকবে না নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো পরীক্ষার্থী ফি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে তার ফরম পূরণ সম্পন্ন হয়নি বলে গণ্য হবে। তবে যে পরীক্ষার্থীরা পেমেন্ট নিশ্চিত করেছে, তাদের নামের পাশে প্রতিষ্ঠান ‘পেইড’ দেখাতে পারবে। বাকিগুলো পেন্ডিং দেখাবে। প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠান ‘আনপেইড স্টুডেন্ট লিস্ট’ বাটনে ক্লিক করে ফরম পূরণের নির্ধারিত শেষ তারিখের পূর্বে যে পরীক্ষার্থীরা পেমেন্ট করেনি, তা দেখাতে পারবে। যারা পেমেন্ট করেনি, ফোনে যোগাযোগ করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ফরম পূরণ করতে পারবে। ফরম চূড়ান্ত হওয়ার পর সেখানে পরীক্ষার্থীদের স্বাক্ষর নেওয়া প্রয়োজন নেই বলে বোর্ড থেকে জানানো হয়েছে।
বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, একজন পরীক্ষার্থী চাইলে এসএমএসের মাধ্যমে তার নাম, রোল নম্বর ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর, কেন্দ্র নাম, বোর্ড ও কেন্দ্র ফি এবং প্রতিষ্ঠানের পাওনার পরিমাণ জানতে পারবে।
কোন বিভাগে কত ফি করোনা পরিস্থিতির কারণে এবার সব বিষয়ে পরীক্ষা হবে না। তাই অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার ফরম পূরণের ফি কমানো হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে চলতি বছর ডিসেম্বর মাসে এ পরীক্ষা নেওয়া হবে। চলতি বছর বিজ্ঞান বিভাগের ১ হাজার ১৬০ টাকা, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগের ১ হাজার ৭০ টাকা ফি ধার্য করা হয়েছে। নির্ধারিত ফির বাইরে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা যাবে না।
পরীক্ষার ফি পরিশোধের পদ্ধতি ফরম পূরণের পর শিক্ষার্থী এসএমএসে টাকা পরিশোধ করার একটি লিংক পাবে। সেটি ব্যবহার করে অথবা সোনালী ব্যাংকের সোনালী ই-সেবা অ্যাপ ব্যবহার করে পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে পরীক্ষার সর্বমোট ফি পরিশোধ করতে পারবে। এছাড়া বোর্ডের ওয়েবসাইটের স্টুডেন্ট প্যানেল থেকেও ‘সোনালী সেবা’ পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে পরীক্ষার ফি পরিশোধ করা যাবে।
মোবাইল ব্যাংকিং সেবা নগদ, বিকাশ, রকেট, ইউপে ও সোনালী ই-ওয়ালেট যে কোন একটির মাধ্যমে পরীক্ষার ফি প্রদান করতে পারবে। তাছাড়া যে কোনো ভিসা কার্ড, মাস্টার কার্ড, আমেরিকান এক্সপ্রেস, ডাচ বাংলা ব্যাংকের নেক্সাস প্রভৃতি ব্যবহার করেও পরীক্ষার ফি প্রদান করা যাবে। অনলাইন পেমেন্টের ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ কাটা হবে।
টাকা পাঠানোর আগে প্রতিষ্ঠানের পাওনা এবং সার্ভিস চার্জসহ সর্বমোট টাকার ন্যূনতম অংক অ্যাকাউন্টে থাকতে হবে। টাকা পরিশোধ করার পর পরীক্ষার্থীকে তার ফরম পূরণ সম্পন্ন হয়েছে মর্মে একটি এসএমএসের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হবে। কারিগরি ত্রুটির কারণে পরীক্ষার্থী এসএমএস না পেলে বোর্ডের ওয়েবসাইটে স্টুডেন্ট প্যানেলে তার ফরম পূরণের স্ট্যাটাস দেখতে পারবে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো পরীক্ষার্থী ফি পরিশোধ করতে ব্যর্থ হলে তার ফরম পূরণ সম্পন্ন হয়নি বলে গণ্য হবে।
অভিযোগ শুনবে কন্ট্রোল রুম এইচএসসির ফরম পূরণ সংক্রান্ত কোনো সমস্যা বা অতিরিক্ত অর্থ আদায় করলে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের কন্ট্রোল রুমের নিম্নোক্ত ফোন নম্বরে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। নম্বরগুলো হলো- ০২-৯৬৬৯৮১৫, ০২-৫৬৬১১০১৮১, ০২-৫৮৬১০২৪৮, ০১৬১০৭১১৩০৭, ০১৬২৫৬৩৮৫০৮, ০১৭২২৭৯৭৯৬৩।

 

অনলাইন ডেস্ক।।

চলমান করোনা মহামারি উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) গার্হস্থ্য অর্থনীতি ইউনিটের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে প্রথম বর্ষ স্নাতক (সম্মান) শ্রেণিতে ভর্তির আবেদনের সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে। মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীরা পূর্বঘোষিত ৩১ জুলাইয়ের বদলে আগামী ১৪ আগস্ট পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন।

নিউজ ডেস্ক।।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত সরকারি কলেজে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার সক্ষমতা যাচাই করা হচ্ছে। মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা এই সাত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রমে সৃষ্টি হয়েছে অচলাবস্থা। সৃষ্টি হয়েছে সেশনজট। এ সমস্যা সমাধানে অনলাইনে চূড়ান্ত পরীক্ষা নিতে শিক্ষার্থীদের সক্ষমতা যাচাইয়ের উদ্যোগ নিয়েছে সাত কলেজ প্রশাসন।
মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) এই সাত কলেজের সমন্বয়ক (ফোকাল পয়েন্ট) ও ঢাকা কলেজ অধ্যক্ষ অধ্যাপক আই কে সেলিম উল্লাহ খোন্দকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, সব কলেজকে অনলাইনে পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মতামত জানতে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সংশ্নিষ্ট কলেজ প্রশাসন শিক্ষার্থীদের মত নিয়ে আমাদের জানাবে। এরপর কলেজের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠাব।
অধ্যাপক সেলিম উল্লাহ আরও বলেন, সাতটি কলেজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়ায় একক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে পরীক্ষা নেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমাদের একাডেমিক অথরিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পরীক্ষা নেওয়ার পদ্ধতিও ঠিক করবে তারাই। অনলাইনে
পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক কাউন্সিলের। এখন সেটা কার্যকরের বিষয়।

নিউজ ডেস্ক।।

রাজধানীসহ সারাদেশে ছোটবড় অন্তত ৬০ লাখ দোকান রয়েছে। প্রতিদিন কয়েক হাজার কোটি টাকার লেনদেন করছেন তারা। এদের প্রায় ৮৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠান সারাবছর ভালো বেচাকেনা করেও দিচ্ছে না কোনও ভ্যাট। এমন প্রতিষ্ঠানও আছে যাদের প্রতিদিন লাখ টাকার বেশি বেচাকেনা হচ্ছে, কিন্তু ভ্যাট নিবন্ধন নেই।
বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) কয়েক বছর আগের তথ্য অনুযায়ী সারা দেশে ছোটবড় দোকান আছে ৫৬ লাখের বেশি। গত চার-পাঁচ বছরে কী পরিমাণ দোকান বেড়েছে তার প্রকৃত পরিসংখ্যান নেই। তবে দোকান মালিক সমিতির নেতারা বলছেন, মহানগরগুলোতে অন্তত দুই কোটি পরিবার এখন দোকানের ওপর নির্ভরশীল। সেই হিসাবে দোকান মালিক আছেন ৭০ লাখেরও বেশি।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘শহরের সব দোকান মালিকদের যদি ভ্যাট নিবন্ধন নিশ্চিত করে ইলেকট্রনিক ফিসকেল ডিভাইস (ইএফডি) দেওয়া হতো, তবে সরকার অন্তত ১ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব বেশি পাবে। ইউনিয়ন বা গ্রামপর্যায়ে মেশিন দেওয়া সম্ভব হলে বছরে এর দ্বিগুণ ভ্যাট আদায় করা সম্ভব হতো।’
তার মতে, ‘কোনও দোকান মালিক চুলচেরা ভ্যাট দিচ্ছে না। এমনকি রিটার্নও জমা দিচ্ছে না অনেকে। আগে প্যাকেজ ভ্যাটের আওতায় সরকার তাদের কাছ থেকে কিছু রাজস্ব পেতো। এখন সেটাও পাচ্ছে না।’
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ভ্যাট গোয়েন্দাদের এক জরিপে দেখা গেছে, যারা দিনে লাখ টাকার বেশি লেনদেন করছে তাদের প্রতি পাঁচটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চারটিরই বিআইএন বা ভ্যাট নিবন্ধন নেই। ২৪ থেকে ৩১ মে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ ও নরসিংদীর নামকরা ১৭টি বিপণিবিতানে এ জরিপ চালায় ভ্যাট গোয়েন্দাদের চারটি দল।
এনবিআর সূত্র জানায়, দেশে ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান মাত্র আট লাখ। এদের মধ্যে অনলাইনে নিয়মিত রিটার্ন দাখিল করে ৯৬ হাজার প্রতিষ্ঠান। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে রিটার্ন দাখিল করে ২০-২২ হাজার প্রতিষ্ঠান। সে্ই হিসাবে প্রায় ৫৯-৬০ লাখ দোকান মালিক বছরের পর বছর ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে যাচ্ছেন।
উল্লেখ্য, যাদের বার্ষিক লেনদেন ৫০ লাখ টাকার কম, তাদের ভ্যাট দিতে হবে না। অর্থাৎ গড়ে দিনে ১৪ হাজার টাকার বেশি লেনদেন হলেই ভ্যাট দিতে হবে।
মূলত ভ্যাট যোগ করেই পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয়। ক্রেতা পণ্য কিনতে গিয়ে নিজের অজান্তে ভ্যাটও পরিশোধ করেন। কিন্তু সরকারি কোষাগারে তা জমা না দিয়ে ব্যবসায়ীরা ঢোকান নিজের পকেটে।
জানা গেছে, রাজধানী ছাড়াও অন্যান্য বিভাগীয় শহর, জেলা, ও উপজেলা শহরের প্রায় শতভাগ দোকানে দিনে গড়ে লেনদেন হয় ২০ হাজার টাকার বেশি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রধান শহরগুলোর অধিকাংশ দোকানে দিনে ৫০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে লাখ টাকার উপরেও লেনদেন হয়। অথচ সরকার এ খাত থেকে রাজস্ব পাচ্ছে না। জানা গেছে, দিনে ১০ থেকে ২০ লাখ টাকা লেনদেন হয় এমন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও আছে কয়েক হাজার। তারাও ভ্যাট দেয় না।
কত টাকার রাজস্ব পাওয়া সম্ভব?
প্রত্যেক ব্যবসায়ী (৭০ লাখ) যদি মাসে গড়ে ১৫ হাজার টাকা ভ্যাট দেয় তা হলে দোকান মালিকদের কাছ থেকে মাসে দশ হাজার পাঁচ শ’ টাকা পাবে সরকার। বছরে পাবে এক লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকা। আর বড় বড় দোকানির বড় ভ্যাট মিলিয়ে নিলে সংখ্যাটা দ্বিগুণ হবে বলে ধারণা করা হয়।

বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির সভাপতি হেলাল উদ্দিনও মনে করেন দোকান মালিকদের একটি বড় অংশ সরকারকে ভ্যাট দেয় না। তিনি বলেন, ‘দোকানিরা ভ্যাট নিবন্ধন নিতে চায়। হিসাব-নিকাশ রাখার জন্য ইএফডি দেওয়া হলে সবাই ভ্যাট দেবো। তখন ভুল বোঝাবুঝি থাকবে না।’রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (মূসক বাস্তবায়ন ও আইটি) ড. আবদুল মান্নান শিকদার বলেন, ‘ভ্যাট ফাঁকি বন্ধে ২০০৮ সালে ব্যবসায়ীদের নিজখরচে ইসিআর স্থাপন করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু ব্যবসায়ীরা তা মানেনি। তাই এনবিআর থেকেই ইএফডি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ভ্যাট আইনের আওতায়ই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ইএফডি দেওয়া হচ্ছে। আইনের কারণেই তারা মেশিন রাখতে বাধ্য।’
আইন অমান্য করে বা জোর করে কাউকে এই মেশিন দেওয়া হচ্ছে না বলে জানান তিনি।

ফাঁকি দিচ্ছে প্রত্যেকেই

এনবিআরের ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের এক জরিপ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, ৮৮ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের নামে ভ্যাট নিবন্ধন নেই।
গত মে’র শেষের দিকে ঢাকাসহ নারায়ণগঞ্জ ও সাভারে ১০২৪টি দোকানে জরিপ চালিয়ে দেখা যায়, মাত্র ১২ শতাংশ প্রতিষ্ঠানের ভ্যাট নিবন্ধন আছে। সেসব ব্যবসায়ীর দেওয়া ভ্যাটও বাস্তবতার সঙ্গে ‘সঙ্গতিপূর্ণ নয়’। অর্থাৎ প্রায় শতভাগ দোকান মালিক কোনও না কোনোভাবে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েই যাচ্ছেন। জরিপসূত্রে জানা গেছে, প্রসিদ্ধ এলাকা বলেই ১২ শতাংশ নিবন্ধন পাওয়া গেছে, সারা দেশ বিবেচনায় আনলে এ শতাংশ অনেক নিচে নেমে আসবে।
প্রসঙ্গত, মে মাসে ভ্যাট গোয়েন্দা অধিদফতরের তিনটি দলের ৪২ জন গোয়েন্দা আটটি মার্কেটে আরেকটি জরিপ চালিয়েছিলেন। তাতে দেখা গেছে, বিপণিবিতানগুলোর ২ হাজার ১৩৩টি দোকানের মধ্যে ১ হাজার ৬৫১টি প্রতিষ্ঠান ভ্যাট নিবন্ধন ছাড়া ১০ বছরেরও বেশি সময় ব্যবসা করছেন।
জরিপে মাত্র ৪৫টি দোকান পাওয়া গেছে যারা কিনা মাসে পাঁচ হাজার টাকার বেশি ভ্যাট দিচ্ছে। ৭৫টি দোকান পাওয়া গেছে যারা এর কম ভ্যাট দেয়। তথাপি ওই ভ্যাটের অঙ্ক তাদের দোকান ভাড়া, কর্মচারীর বেতন, বিদ্যুৎ ও অন্যান্য খরচ এবং মুনাফার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয় বলে মনে করছে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর।

এ প্রসঙ্গে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘সরকারকে ভ্যাট দেওয়ার ক্ষেত্রে দোকান মালিকদের মধ্যে এক ধরনের অনীহা দেখা যায়। বিশেষ করে ঢাকার বাইরের ব্যবসায়ীদের অনীহা বেশি।’
উল্লেখ্য, নব্বইয়ের দশকে পরোক্ষ কর ভ্যাট ব্যবস্থার প্রচলন শুরু হয়। রাজস্ব আদায়ের এই পদ্ধতি বাতিলে সাধারণ মানুষ রাস্তায় নামলেও তৎকালীন সরকার রাজস্ব আদায় বাড়াতে এই পদ্ধতি কঠোরভাবে প্রণয়ন করে।
মালিক সমিতির তথ্য অনুযায়ী, বিভাগীয় শহরগুলোর মধ্যে ঢাকাতেই বড় বড় দোকান ব্যবসায়ী আছেন ৬ থেকে ৭ লাখ। যাদের অধিকাংশেরই দিনে লেনদেন লাখ টাকার বেশি।
খুলনায় আছে দুই লাখের মতো বড় দোকান মালিক। দিনে লাখ টাকার কাছাকাছি লেনদেন হয় তাদের। একইভাবে রাজশাহীতে এক লাখ, চট্টগ্রামে চার লাখ। এ ছাড়া জেলা শহরগুলোতে ৪০ থেকে ৫০ হাজার দোকান ব্যবসায়ী আছেন। কোনও উপজেলায় দোকান ব্যবসায়ী রয়েছেন এক হাজার থেকে ১০ হাজার।
এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, বিদায়ী অর্থবছরের সারা দেশ থেকে ৯৩ হাজার ৬০ কোটি টাকা ভ্যাট আদায় হয়েছে। এই টাকার অর্ধেক দিয়েছে দেশের ১১০টি বড় কোম্পানি। আগেরবার সব মিলিয়ে ভ্যাট আদায় হয়েছিল ৮৪ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে আগেরবারের চেয়ে ৯ হাজার কোটি টাকা বেশি আদায় হয়েছে।

অনলাইন ডেস্ক।।

 দ্বিতীয় ওভার বল করতে এসে নাসুমের ফাঁদে পড়ে মুস্তাফিজের হাতে ক্যাচ দিয়ে মাঠ ছাড়েন অধিনায়ক ম্যাথু ওয়েড।

ইনিংসের প্রথম বলেই উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। মেহেদি হাসানের বল ডিপেন্স করতে গিয়ে বোল্ড হন অ্যালেক্স ক্যারি। এর পর নাসুম আহমেদের বল এক স্টেপ এগিয়ে এসে খেলতে স্ট্যাম্পিং হন জস ফিলিপ্পে। বোলিংয়ে এসেই সাফল্য এনে দেন সাকিব আল হাসান। তার প্রথম বলেই ফিরে যান মোয়াসেস হেনরিক।
বিস্তারিত আসছে.....

সোনালী ব্যাংক লিমিটেড সাতক্ষীরা শাখার অ্যাসিসটেন্ট জেনারেল ম্যানেজার (এজিএম) মনোতোষ সরকার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে এমন একটি সাম্প্রদায়িক পোস্ট ব্যক্তিগত ফেসবুকে শেয়ার করে চাকরিচ্যুত হলেন তিনি।
চাকরিচ্যুত মানোতোষ সরকার সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বিঞ্চুপুর ইউনিয়নের কোমরপুর গ্রামের রমেশ কুমার কর্মকারের ছেলে। বর্তমানে তিনি সাতক্ষীরা পৌরসভার উত্তর কাটিয়ায় একটি ভাড়া বাসায় বসবাস করেন।
সোনালী ব্যাংক লিমিটেড প্রধান কার্যালয়, ঢাকার স্মারক নম্বর এইচআরএমডি/ওএমডি/সেকশন-১/৫৬৯০, তাং-২৬ জুলাই ২০২১ ইং তারিখে ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. শওকত জামান স্বাক্ষরিত একপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মনোতোষ সরকার (জি-৩৫৯৪০) অ্যাসিস্টেন্ট জেনারেল ম্যানেজার, সোনালী ব্যাংক লিমিটেড, সাতক্ষীরা শাখা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডি ব্যবহার করে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানতে পারে এমন একটি সাম্প্রদায়িক পোস্ট শেয়ার করেছেন। যা ব্যাংকের সুনাম ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টে সুযোগ সৃষ্টি করেন।
এর প্রেক্ষিতে সোনালী ব্যাংক লিমিটেড কর্মচারী চাকরি প্রবিধানমালা ২০০৮ এর ৪৪ (১) ধারা অনুযায়ী কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে আপনাকে (মনোতোষ সরকার) স্মারকজারীর তারিখ হতে এ ব্যাংকের চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো। এ ব্যাপারে চাকরিচ্যুত মনোতোষ সরকারের সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, বাইরে আছি, পরে কথা হবে।

নিউজ ডেস্ক।।

প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) এর আওতায় ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের স্কুল লেভেল ইনফরমেশন প্লান (স্লিপ) কার্যক্রম বাস্তবায়নের জন্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীর তথ্য চেয়েছে সরকার। আগামী ১০ আগস্টের মধ্যে জেলা শিক্ষা অফিসারদের এ তথ্য পাঠাতে নির্দেশ দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের উপপরিচালক নুরুল আমিন ড. নুরুল আমিন চৌধুরীর (১ আগস্ট) স্বাক্ষরিত আদেশটি সোমবার (২ আগস্ট) প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরের পরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) বরাবর হার্ড কপি ও ইমেইলে [email protected] আগামী ১০ আগস্টের মধ্যে পাঠাতে হবে।
কোনও ভুল তথ্য দেওয়ার ফলে জটিলতা সৃষ্টি হলে ভুল তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা দায়ী থাকবেন। উল্লেখ্য,  পিটিআই সংলগ্ন পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের তথ্য সংশ্লিষ্ট উপজেলার সঙ্গে যুক্ত করে পাঠাতে হবে।
আদেশে নির্ধারিত ছকে উপজেলার নাম, শিক্ষার্থীর ভিত্তিতে বিদ্যালয়ের সংখ্যার তথ্য পাঠাতে হবে। ২০০ শিক্ষার্থী পর্যন্ত বিদ্যালয়ের সংখ্যা, ২০১ থেকে ৫০০ পর্যন্ত বিদ্যালয়ের সংখ্যা এবং এক হাজারের ঊর্ধ্বে শিক্ষার্থীর সংখ্যার ভিত্তিতে নির্ধারিত ছকে তথ্য পাঠাতে নির্দেশ দেওয়া হয়।

অনলাইন ডেস্ক।।

গত রবিবার (০১ আগস্ট) রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আব্দুল হামিদ এক সরকারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ড. মোহাম্মদ আশিক মোসাদ্দিককে ৪ বছরের জন্য নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।
এর পূর্বে তিনি ১৫ ডিসেম্বর ২০১২ থেকে ১৪ আগস্ট ২০১৬ পর্যন্ত বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ে ফার্মেসী বিভাগের কো-অর্ডিনেটর হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
প্রফেসর ড. আশিক মোসাদ্দিক রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের প্রথম ব্যাচের ছাত্র ছিলেন। তিনি ১৯৯৩ সালে বি ফার্ম এবং ১৯৯৪ সালে এম ফার্ম ড্রিগ্রি অর্জন করেন। ২৫ অক্টোবর ১৯৯৮ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদানের মধ্যে দিয়ে তার কর্মজীবন শুরু হয়। অস্ট্রেলিয়ার সাউদার্ন ক্রস ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন।
এরপর ২০০৮-২০১০ পর্যন্ত তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় পোস্ট ডক্টারাল গবেষণা কাজ সম্পন্ন করেন। ১৬ জুন ২০১১ থেকে ২৫ জুন ২০১২ পর্যন্ত তিনি ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের চেয়ারম্যান ছিলেন। তিনি সৌদি আরবের দাম্মাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লিনিকাল ফার্মেসী বিভাগে রিসার্চ প্রফেসর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ থেকে ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ পর্যন্ত।
২০১১ সালে তিনি উন্নয়নশীল দেশ ও বাংলাদেশ বিজ্ঞান একাডেমি থেকে গবেষণায় অবদানের জন্য তরুণ বিজ্ঞানী গোল্ড মেডেল অর্জন করেন। ন্যাচারাল প্রডাক্ট ও ন্যানো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ হিসেবে ইতোমধ্যেই তার ১৩৫ টি প্রবন্ধ আন্তজার্তিক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। এলসিডার সায়েন্স ও একাডেমিক প্রেস তার ৩টি বই প্রকাশ করেছে।

অনলাইন ডেস্ক:

আমাদের অনেকেরই একটা অভ্যাসে পরিনত হয়েছে ঘুম থেকে উঠলেই চা খেতে হবে। যেন চা ছাড়া দিন চলেই না। আর চা সবারই অনেক পছন্দের। সারাদিন কাজের ফাঁকে আরমা অকেন চা খেয়ে থাকি। কিন্তু আমরা অনেকেই হয়তো জানিই না যে আমাদের শরীরের পক্ষে এই চা কতটা উপকারী। এমনকি কোন চা আমাদের খাওয়া দরকার। যদি স্বাস্থ্যের কথা ধরা যায় তাহলে গ্রিন টি বা লিকার চায়ের কথাই সবাই বলবে। প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডান্ট চায়ে থাকার ফলে শরীরকে ভিতর থেকে সুস্থ হয়ে উঠে।
অনেকেই জানে না চা স্বাস্থ্যের পক্ষে অনেক উপকারী। তবে বেশ কিছু গবেষণায় প্রমাণিত,যারা নিয়মিত চা খান তাঁরা সুস্থ থাকেন দীর্ঘ সময়ের জন্য। চা ওজন কমাতেও সাহায্য করে কারন চায়ে অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা কফির থেকে কম ক্যাফিন রয়েছে।
আদা চাঃ
আদা চা প্রথমে ধরা যাক আদা চায়ের কথা। এটি নিয়মিত খেলে হার্ট ভালো রাখার পাশাপাশি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। যাদের সর্দি কাশির সমস্যা আছে তারা বেশ উপকার পাবেন। রক্ত জমাট বাঁধা নিয়ন্ত্রণ করে রক্ত সঞ্চালনকে বৃদ্ধি করে। তবে স্বাদ এবং গুণের দিক থেকে আদা অনেক উপকারী। আদাতে ভিটামিন, খনিজ ও অ্যামিনো অ্যাসিড আছে যা রক্ত সঞ্চালন-প্রক্রিয়া উন্নত করে হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখে। যে কোন চায়ের সাথেও আদা মিশিয়ে খেলে অনেক উপকার পাওয়া যায়। এর সাথে আদার রস ধমনিতে চর্বি জমতে দেয় না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন প্রতিদিন যারা আদা-চা পান করে তাদের হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই কম।
গ্রিন টিঃ
আমরা অনেকেই ওজন কমানোর জন্যে গ্রিন টি খেয়ে থাকি। তবে অনেকেই হয়তো জানে না স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী গ্রিন টি। এই চা ওজন কমানো থেকে শুরু করে রক্তে শর্করার নিয়ন্ত্রণ, কোলেস্টেরল কমাতে ও হজমশক্তি উন্নতি করতে গ্রিন টি অনেক ভূমিকা রাখে। প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে থাকায় ত্বক, চুল জন্য ভালো গ্রিন টি। তবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন স্বাস্থ্যের জন্য অতন্ত্য উপকারী প্রতিদিন ১-২ কাপ গ্রিন টি খাওয়া।

ক্যামোমাইল টিঃ
আমাদের অনেকের এই চা সম্পর্কে এখনো তেমন জানা নেই। কিন্তু এই চা খাওয়ার জনপ্রিয়তা রয়েছে বিদেশে। এটি তৈরি হয় একরকম ফুল থেকে। ক্যামোমাইল টি ভেষজ যে সব চা রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম। এই চা খেলে ঘুম হয় ভালো। আর এই চায়ে কোনওরকম ক্ষতিকর ক্যাফেন নেই।ক্যামোমাইল চা ব্যবহার করা হয় সাধারণত দুই রকমের- রোমান ও জার্মান। তবে বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়েছেন- যারা গর্ভবতী তারা যেন এই চা এড়িয়ে চলে।
পুদিনা পাতার চা ঃ
পুদিনা পাতা মূলত একটি ভেষজ গাছ। যা আগা গোড়া পুরোটাই ওষধি গুণে পরিপূর্ণ। পাতা থেকে কান্ড-সহ সব কিছুতে রয়েছে ওষধি গুণ। সাধারণত সুগন্ধি জন্য রান্নায় ব্যবহার করা হয় যেমন- কাবাব, চাটনি, মশলায়। বিশেষজ্ঞদের মতে – পুদিনার মধ্যে রয়েছে মেন্থল যা লিকার চায়ের মধ্যে মিশিয়ে খানিকক্ষণ ঢেকে রেখে খেলে ভালো উপকার পাওয়া যায়।

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

মূল স্থাপত্যের পুরোটাই লাল ইট দিয়ে তৈরি। তাই স্থানীয় মানুষেরা আদর করে একে ডাকে 'লাল গির্জা' নামে। তবে এর আঙিনার পরতে পরতে আবার সবুজের সমারোহ। কম্পাউন্ডের ভিতরে ছোট-বড় মিলিয়ে ১৩টি পুকুর। দক্ষিণ দিকে শানবাঁধানো একটি বড় পুকুর। সেই পুকুরের স্বচ্ছ-স্নিগ্ধ জলে প্রতিফলিত হয় গির্জার প্রতিবিম্ব। সে বড় মনোরম এক দৃশ্য।
এই গির্জার সাথে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে বাংলার অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবির নাম। বলছি রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের কথা।
লোকমুখে শোনা যায়, কবির সাথে তাঁর প্রথম প্রেমিকা মনিয়ার দেখা হয়েছিল এই গির্জাতেই। কেননা এখানেই সেবিকা হিসেবে কাজ করতেন মনিয়ার মা। তাছাড়া এই গির্জা থেকে কবির নিজ বসতবাড়ির দূরত্বও খুব কম, মাত্র কয়েক কদমের।
এত কথা যে গির্জা নিয়ে, সেটি প্রাচ্যের ভেনিস খ্যাত, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভাগীয় শহর বরিশালের বগুড়া রোডে (জীবনানন্দ সড়ক) অবস্থিত অক্সফোর্ড মিশন গির্জা। সুরম্য প্রাচীন এই স্থাপনার আরেকটি কেতাবি নামও আছে, যা মূল ফটকের উপরই বড় করে লেখা: এপিফানি গির্জা, বাংলাদেশ। তবে ওই যে শুরুতেই বলেছি, অন্য সব নামকে ছাপিয়ে 'লাল গির্জা' নামটিই পেয়েছে বেশি পরিচিতি।
উচ্চতায় এশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম গির্জা
নানা বৈচিত্র্য ও শিল্পসৌকর্যে নির্মিত এই গির্জাটি উচ্চতার বিচারে এশিয়া মহাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম গির্জা। শুধু কি তা-ই? এশিয়ার সবচেয়ে বড় ঘণ্টাটিও রয়েছে এখানেই, যা প্রতিদিন সাত বার প্রার্থনার পূর্বে বেজে ওঠে।
৪০টি খিলানের উপর দাঁড়িয়ে আছে গির্জাটি। ৩৫ একর জমির উপর উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘেরা কম্পাউন্ডের ভিতর পুকুরগুলো ছাড়াও আরো রয়েছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়, হোস্টেল, ফাদার ও সিস্টারদের আবাসন, লাইব্রেরি ও হাসপাতাল। চারদিকের সীমানাকে ঘিরে রয়েছে সুদৃশ্য পামগাছের সারি। ভেতরে আরো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে গাঢ় সবুজ আঙিনা, বৃক্ষশোভিত উদ্যান, মাঠ, ফুল ও ঔষধি বাগান।
কবি জীবনানন্দ দাশ এই অক্সফোর্ড মিশনের হোস্টেলেই থাকতেন ছাত্রাবস্থায়। সে সুবাদে এখানকার ফাদার ও মাদারদের সঙ্গে তাঁর গড়ে উঠেছিল দারুণ ঘনিষ্ঠতা। গির্জা প্রাঙ্গনের পামগাছের ফাঁক গলে আসা রোদ্দুর আর বাতাসে পাতার দোল খাওয়ার দৃশ্য দেখে আলোড়িত হতেন কবি। সুতরাং বুঝতেই পারছেন, কবির স্মৃতিকে অনুভবের উদ্দেশে যারা ছুটে যায় বরিশালে, তাদের কাছে ঠিক কতটা তাৎপর্যপূর্ণ এই গির্জা!
গির্জার চারদিকের সীমানাকে ঘিরে রয়েছে সুদৃশ্য পামগাছের সারি
নিশ্চয়ই জানতে মন চাইছে, কীভাবে গড়ে উঠল এই গির্জা। সেজন্য আমাদের ফিরে যেতে হবে উনবিংশ শতকের শেষ দিকে। প্রাচীন নদী-বন্দর শহরটির আকর্ষণে তখন এখানে এসে ভিড় জমাতে শুরু করেছে ইউরোপীয় বহু খ্রিস্টান মিশনারি। তেমনই একটি মিশনারি হলো অক্সফোর্ড মিশন। তাঁদের উদ্যোগেই নির্মিত হয় গির্জাটি।
গির্জাটির নকশা ঠিক কেমন হবে, তা নিয়ে প্রতিষ্ঠার অনেক আগে থেকেই ভাবনাচিন্তা করছিলেন ফাদার স্ট্রং এবং সিস্টার এডিথ। এক পর্যায়ে মূল নকশাটি করেন ফাদার স্ট্রং, এবং সেটিকে স্কেচের মাধ্যমে কাগজের উপর ফুটিয়ে তোলেন সিস্টার এডিথ। সেই স্কেচ অনুসরণ করেই বরিশাল নগরীর প্রাণকেন্দ্রে গির্জাটি গড়ে তোলার কাজ শুরু করেন ইংল্যান্ডের স্থপতি ফিলিপ থিকনেস ও প্রকৌশলী ফ্রেডরিক ডগলাস।
প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হয় ১৯০৩ সালে। ১৯০৩ সালের ২৬ জানুয়ারি উদ্বোধন করা হয় গির্জাটি। ওই দিনই প্রতিষ্ঠিত হয় 'এপিফানি গির্জা ভগ্নী সমাজ'-ও। কিন্তু সেখানেই শেষ নয়। ফাদার স্ট্রংয়ের তদারকিতে গির্জার দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ চলতে থাকে, এবং তা পূর্ণাঙ্গভাবে শেষ হয় ১৯০৭ সালের দিকে।
গ্রিক স্থাপত্যশৈলীর আদলে নকশা করা মূল গির্জা ভবনটিকে বাইরে থেকে দেখলে মনে হয় বুঝি এটি চার বা পাঁচ তলা ভবনের সমান (প্রায় ৫০ ফুট)। কিন্তু বাস্তবিক এটি মাত্র এক তলা। এর প্রধান আকর্ষণ হলো বিশাল ও নান্দনিক প্রার্থনা কক্ষটি। প্রার্থনা কক্ষটির ভেতরের ছাদ কাঠ দিয়ে আচ্ছাদিত, আর তার মেঝেতে সুদৃশ্য মার্বেলের টালি। মূল বেদির উপর রয়েছে একটি বড় ক্রুশ।
গির্জার মূল আকর্ষণ এর নান্দনিক প্রার্থনা কক্ষটি
গির্জার ভেতরে আরো আছে পাথরের তৈরি চৌবাচ্চা, ব্যাপ্টিজম বাথ বেসিন। মূল দরজাটি দক্ষিণমুখী হলেও তিন দিকে আরো অনেক গুলো দরজা রয়েছে। ভবনের উপরে পূর্ব দিকে আছে কালো গম্বুজ। ভবনের কাঠামোকে মজবুত করার লক্ষ্যে রয়েছে ৪০টি খিলান, এবং সেই সুবাদে অনেকগুলো করিডোরও।
গর্বের বিষয় হলো, এই গির্জার নির্মাণকাজে ব্যবহৃত প্রায় সকল উপাদানই বাংলাদেশের নিজস্ব। দেশীয় মাটি দিয়ে তৈরি আস্তনে পোড়া লাল শক্ত ইট দিয়ে নির্মিত হয়েছিল ভবনটি। সেই সঙ্গে রড, বালু, সিমেন্ট ও কাঠের মালিকানা যেমন ছিল বাংলাদেশের, তেমনই নির্মাণ শ্রমিকরাও সকলে ছিলেন এই দেশেরই। শুধু ভিতরের চারটি বেদির মার্বেল পাথর আর বড় ক্রুশটি আনা হয়েছিল বাইরে থেকে। মার্বেল পাথরগুলো আনা হয়েছিল কলকাতা থেকে, আর ক্রুশটির প্রাপ্তিস্থান বেথেলহাম।
১১৬ বছর বয়সী গির্জাটি এখনো দারুণ ঝকঝকে তকতকে। দেখে অনেকেই ভাবতে পারেন, হয়তো সাম্প্রতিক সময়ে এটির সংস্কার করা হয়েছে, করা হয়েছে নতুন করে রঙ। কিন্তু আসলে তা না। যা দেখবেন, তার পুরোটাই গির্জার আদি ও অকৃত্রিম রূপ। কেননা এটি নির্মাণ করাই হয়েছিল এমনভাবে যেন কোনো প্রলয়ংকরী প্রাকৃতিক দুর্যোগেও এর স্থাপত্যশৈলীর তিলমাত্র ক্ষতি না হয়। তাই তো ১৯৬০ ও ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে বরিশাল অঞ্চলের ১০ লাখ মানুষের মৃত্যুর পাশাপাশি অসংখ্য ভবন ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলেও, ঠিকই অক্ষত অবস্থায় মাথা তুলে দাঁড়িয়ে ছিল গির্জাটি।

গির্জা কম্পাউন্ডের মধ্যে রয়েছে ছোট-বড় ১৩টি পুকুর। মূল গির্জার পাশে ঠিক এর আদলেই গড়ে তোলা হয়েছে একটি টাওয়ার, যার নাম বেল টাওয়ার। সেখানে গির্জার অফিস কক্ষ ছাড়াও রয়েছে সেই সুদৃশ্য ঘণ্টাটি, যা দিনে সাতবার বেজে ওঠে। এবং এই ঘণ্টাধ্বনি শুনেই ভক্তরা এসে সমবেত হন প্রার্থনার জন্য। কথিত আছে, ঘণ্টাটি স্থাপনের যাবতীয় খরচ একাই বহন করেছিলেন ফাদার স্ট্রং। তিনি ছিলেন সেকালের একজন বিখ্যাত ক্রীড়াবিদ। বিভিন্ন খেলায় সম্মানী হিসেবে যেসব পুরস্কার পেতেন, সেগুলোর অর্থ দিয়েই তিনি স্থাপন করেছিলেন ঘণ্টাটি।
একজন বিশেষ মানুষের নাম না বললেই বরিশালের লাল গির্জার বৃত্তান্ত পূর্ণতা পাবে না। তিনি লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট। ৮৯ বছর বয়সী এই মানবদরদী ব্রিটিশ নাগরিকের জন্ম যুক্তরাজ্যের সেন্ট হ্যালেন্সে, ১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর। ৩০ বছর বয়সে তিনি অক্সফোর্ড মিশন গির্জায় যোগ দেন, এবং তারপর থেকে প্রায় ছয় দশক বাংলাদেশেই বাস করছেন তিনি।
লুসি হল্টকে ছাড়া লাল গির্জার ইতিহাস অসম্পূর্ণ।
১৯৬০ সালে মিশনের কাজে বাংলাদেশে আসার পর একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি। কথা ছিল দুই বছর বাদেই নিজ মাতৃভূমিতে ফিরে যাবেন। কিন্তু বাংলাদেশের প্রাকৃতিক রূপবৈচিত্র্য ও এখানকার মানুষকে এতটাই ভালোবেসে ফেলেন যে, তাদের ছেড়ে দেশে আর ফেরা হয় না তাঁর। বিগত ৫৯ বছর ধরে তিনি ঘুরে ঘুরে কাজ করেছেন যশোর, খুলনা, নওগাঁ, ঢাকা ও গোপালগঞ্জে। তবে জীবনের সবচেয়ে বেশি সময় তিনি কাটিয়েছেন অক্সফোর্ড মিশন গির্জাতেই।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যক্ষ সাক্ষী সিস্টার হল্ট। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে গির্জা বন্ধ হয়ে যায় এবং সেখান থেকে লোকজনকে বের করে দেওয়া হয়। কিন্তু সিস্টার হল্ট চলে যেতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি আহত মুক্তিযোদ্ধা আর সাধারণ মানুষদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া শুরু করেন।  এ কাজের জন্য মুক্তিযুদ্ধের পুরোটা সময় তিনি যশোরের ফাতেমা হাসপাতালে অবস্থান করেন।
২০০৪ সালে অবসর গ্রহণ করা সিস্টার হল্টের ইচ্ছা, বরিশালের মাটিতেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করবেন তিনি। ২০১৮ সাল পর্যন্তও মনে হচ্ছিল তাঁর এই শেষ ইচ্ছা বুঝি পূরণ হবার নয়। কেননা বাংলাদেশে অবস্থানের জন্য প্রতি বছর ভিসার মেয়াদ বাড়াতে ৩৮ হাজার টাকা ব্যয় করতে হতো তাঁকে। প্রতি মাসে অবসর ভাতা হিসেবে যে ৭৫ পাউন্ড (সাড়ে সাত হাজার টাকা) পেতেন, তা থেকে একটু একটু করে জমিয়ে ভিসা নবায়নের অর্থ জোগাড় করতে হিমশিম খেতেন তিনি। তাই সরকারের কাছে বারবার তিনি অনুরোধ জানাতেন তাঁকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব প্রদানের। অবশেষে ২০১৮ সালের মার্চ মাসে বাংলাদেশের নাগরিত্ব লাভ করেন তিনি।
ধর্মীয় সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত লাল গির্জা
বরিশালের লাল গির্জা শুধু যে একটি ঐতিহাসিক নিদর্শন, তা কিন্তু নয়। এটি ধর্মীয় সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্তও বটে। এখানকার দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ২৫০। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে রয়েছে আরো ৩০০ জন। ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই পড়াশোনার সুযোগ পায় এখানে। এছাড়া এখানকার ছাত্রীনিবাসে বাস করছে বিভিন্ন কলেজে পাঠরত ২৫ জন শিক্ষার্থী। মা ও শিশুরা বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা পেতে পারে মিশনের চিকিৎসাকেন্দ্রে।
পরিশেষে এ কথা বললে এতটুকুও অত্যুক্তি হবে না যে, বরিশালের এই লাল গির্জা স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে গোটা বাংলাদেশেরই সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন পুরাকীর্তিগুলোর একটি। এদেশে আরো অনেক ঐতিহ্যবাহী নিদর্শন রয়েছে যেগুলো প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে তাদের প্রকৃত সৌন্দর্য ও মর্যাদা হারাতে বসেছে। সেদিক থেকে বরিশালের লাল গির্জা এক উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। গির্জা কর্তৃপক্ষ যেভাবে যথাযথ সংরক্ষণের মাধ্যমে আজো এর আদি-অকৃত্রিম রূপ অটুট রেখেছে, সেজন্য তাঁরা বড়সড় ধন্যবাদের দাবিদার।

magnifiermenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram