সুভাষ বিশ্বাস, নিজস্ব প্রতিবেদক: নীলফামারী কুন্দপুকুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে সরকারী নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে কোন প্রকার নিয়োগ ছাড়াই ৮ বছর ধরে জালিয়াতির মাধ্যমে বেতন তুলছেন (এমপিও)ভুক্ত সহকারী শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র রায়, তার বিরুদ্ধে রয়েছে স্বাধীনতা দিবস অবমাননা ও পালনে কটুক্তি করার অভিযোগ।
শিক্ষাবার্তা'র অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য, ২০১৬ সালের ১৪ জুলাই কুন্দুপুকুর উচ্চ বিদ্যালয় এর সহকারী শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র রায় (বিজ্ঞান) পদে চাকরি ছেড়ে নীলফামারী সদর উপজেলার আরাজি রাম কলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ১৪/৭/২০১৬ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন।
বিকাশ চন্দ্র রায়ের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদানের কারণে কুন্দপুকুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো: শাজাহান আলী চৌধুরী সভাপতিত্বে ২০১৬ সালের ২৪ জুলাই জরুরী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় সভায় ৪ নং আলোচ্য বিষয়ে উঠে আসে সহকারী শিক্ষক( বিজ্ঞান) বিকাশ চন্দ্র রায় ১৪/৭/১৬ ইং তারিখে সহকারী শিক্ষক হিসেবে প্রাথমিক বিদ্যালয় যোগদান করায় নতুন শিক্ষক না আসা পর্যন্ত মাসিক ২০০০ টাকা বেতনে শংকর কুমার রায় কে খন্ডকালীন শিক্ষক নিয়োগ করা র সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
১৫ দিনের মাথায় (৭আগস্ট ২০১৬) ম্যানেজিং কমিটির আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় সভায় ৩ নং আলোচ্য বিষয়ে মোঃ আশরাফুল ইসলাম প্রস্তাব করেন যে সহকারী শিক্ষক( বিজ্ঞান) পদে বিকাশ চন্দ্র রায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করায় তাহার পদ শুন্য ঘোষণা করা হয়।
উক্ত প্রস্তাবটি শিক্ষক প্রতিনিধি স্বপ্না রানীর সমর্থনে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। পাশাপাশি সিদ্ধান্ত হয় যে এই পথটি শূন্য করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেয়া হয় প্রধান শিক্ষক খোকারাম রায় কে।
কয়েক মাস পর কোন প্রকার নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ছাড়াই সরকারি বিধি কে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিকাশ চন্দ্র রায় কে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে আবার গোপনে বিদ্যালয়ে নিয়োগ দেয়া হয়। দীর্ঘ আট বছর ধরে বৈধ নিয়োগ ছাড়াই নিয়োগ জালিয়াতির মাধ্যমে সহকারী শিক্ষক পদে চাকুরী করছেন বিকাশ চন্দ্র রায়।
কুন্দপুকুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিকাশ চন্দ্র রায়ের কাছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দেন নি।
সাবেক প্রধান শিক্ষক খোকারাম রায় এর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান এরকম ঘটনা তার জানা নেই তবে সে অসুস্থতার কারণে মেডিকেল সার্টিফিকেট দিয়ে ছুটিতে ছিলেন।
সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো: শাজাহান আলী চৌধুরী ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
কুন্দপুকুর দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় এর প্রধান শিক্ষক দ্বিজেন্দ্র নাথ রায় জানান, এই বিদ্যালয়ে আমার প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ হওয়ার আড়াই বছরের মতো হলো আমি এসব কিছু জানি না। এ সংক্রান্ত কোনো নথিও আমার কাছে নেই।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো: আইবুল ইসলাম জানান, বিষয় টি জানার পরে প্রধান শিক্ষকে দ্বিজেন্দ্রনাথ রায় এর কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়েছি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো:মেহেদী হাসান জানান, তদন্ত কমিটি করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো: হাফিজুর রহমান জানিয়েছেন অনিয়মের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তবে একাধিক শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা অভিযোগ করেন যে বিকাশ চন্দ্র রায় ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের বিদ্যালয়ের পাশে থেকেও উপস্থিত হননি তার উপস্থিতি নিশ্চিতের জন্য তাকে ডাকা হলে। তিনি স্বাধীনতা দিবস ও শিক্ষকদের সম্পর্কে কটুক্তি করেন। এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সকল সদস্য সিদ্ধান্ত নিলেও তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৬/০৫/২০২৪
জাবিঃ ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলকারী মৌমিতা পরিবহনের একটি বাসের হেলপারের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) এক ছাত্রীকে মানসিক ও শারীরিক হেনস্থার অভিযোগ উঠেছে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার (১৫ মে) সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন মহাসড়কে মৌমিতা পরিবহনের ১৬টি বাস আটক করে রেখেছে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর সহপাঠীসহ একদল শিক্ষার্থী ।
মঙ্গলবার (১৪ মে) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীসহ তার একাধিক সহপাঠী সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মৌমিতা পরিবহনের একটি বাসে সাভার থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরছিলেন ওই শিক্ষার্থী। ওই ছাত্রী বাসের হেলপার ভাড়া চাইলে ওই ছাত্রী তাকে ১০০ টাকার একটি নোট দেন। খুচরা নেই বলে বাকি টাকা পরে ফেরত দেবেন বলে জানান তিনি। এরপর বাস সাভারের রেডিও কলোনি এলাকায় পৌঁছালে বাস থামিয়ে বাসের হেলপার যাত্রীদের নামতে বলেন। বাসের যাত্রী সবাই নেমে গেলে ভুক্তভোগী ছাত্রী বাকি টাকা ফেরত চাইলে হনস্তার শিকার হন।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর বরাবর একটি লিখিত অভিযাগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী । অভিযাগপত্রে ওই ছাত্রী উল্লেখ করেন, আমি মঙ্গলবার সন্ধ্যা সোয়া ৬টার দিকে ব্যাংক টাউন থেকে টিউশন করিয়ে মৌমিতা বাসে করে ক্যাম্পাসে আসছিলাম। বাস চালকের সহকারী (হেলপার) ভাড়া চাইলে আমি টাকা দেই। হেলপার বলে তার কাছ ভাংতি নাই, পরবর্তীতে আমাকে ভাংতি টাকা ফেরত দিবে। বাস রেডিও কলোনির কাছাকাছি আসার পর হেলপার জানায় বাস আর সামনে যাবে না। বাসের যাত্রীরা সবাই তখন নেমে চলে যায়। আমি তখন ভাংতি টাকা ফেরত দেয়ার জন্য বললে হেলপার বলে, ‘চলেন আপনাকে ঢাকা নিয়ে যাই।’
ভুক্তভাগী তার অভিযাগপত্রে আরও উল্লেখ করনে, ‘বাসে মাত্র তিনজন লোক ছিল। বাসের চালক, হেলপার এবং ওদের সঙ্গের একজন। ঢাকা নিয়ে যাব বলেই তারা আমাক বাজেভাবে ইঙ্গিত দেয়। আমি খুব ভয় পেয়ে যাই। তাড়াহুড়া করে বাস থেকে নামতে চষ্টা করলে বাস ছেড়ে দেয়। আমি কিছু না ভেবে বাস থেকে লাফ দেই এবং হাঁটুতে প্রচুর ব্যথা পাই। এই ঘটনার পর আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছি। আমার বসহপাঠীদেরকে বিষয়টি জানালে ওরা আমাকে হাসপাতাল নিয়ে যায়।’
ভুক্তভাগী শিক্ষার্থীর বন্ধু প্রাণ রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী সোহেল রানা জানান, ‘গতকাল আমাদের বান্ধবীর সাথে একটি খারাপ ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবাদে আমরা মৌমিতা পরিবহনের বাস আটকিয়েছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর স্যার ও আশুলিয়া থানার পুলিশকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ছিলাম। = ওই এলাকার সব সিসিটিভি ফুটেজ থাকলেও ৬টা ১০মিনিট থেকে ৬টা ১৮মিনিট পর্যন্ত সময়ের কোনো ফুটেজ পাওয়া যায়নি। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি।’
আটক করে রাখা একটি বাসর চালক মোজাম্মল ও হেল্পার বাবলু জানান, সকাল সাড়ে আটটা থেকে বাসগুলো ছাত্ররা আটক করতে শুরু করে। কি কারণে আটকানো হয়েছে তা জানতেন না তারা। এসময় ছাত্ররা বাস আটক করে তাদের কাছ থেকে মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ নিয়ে নেওয়ার অভিযাগ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থক নিরাপত্তা কর্মকর্তা সুদীপ্ত শাহীন বাদী হয়ে মামলা করবেন। তিনি জানান, ঘটনা সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত বাসগুলা এখানেই থাকবে। তবে মোবাইল ছিনিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, ‘উত্তজিত অবস্থায় ছাত্ররা এ কাজ করছে। পর আমি উপস্থিত হয়ে এক ঘণ্টার মধ্য মোবাইলগুলো ফিরিয়ে দিয়ছি।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ আলমগীর কবির বলেন, ‘ছাত্ররা ও আশুলিয়া থানার পুলিশসহ আমরা ঘটনাস্থলে গিয়েছি। সিসিটিভি ফুটেজ দেখে আমরা কিছু শনাক্ত করতে পারিনি। আমরা বাস কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি দ্রুত ওই বাসের হেলপার ও চালককে শনাক্ত করে আমাদেকে জানাতে। পুলিশও চেষ্টা করছে তাদেরকে শনাক্ত করার জন্য।’
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৫/০৫/২০২৪
সিলেটঃ জেলার জৈন্তাপুরে বলাৎকারে অতিষ্ঠ হয়ে গৃহশিক্ষককে খুন করেছিলেন বলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এক তরুণ। হত্যাকাণ্ডের দেড় বছর পর গত সোমবার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ঘটনার রহস্য উদঘাটন করে মূল আসামিকে গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তারের পর পিবিআইয়ের জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দেন ইফতেখার রশিদ মাহি (২২)। গতকাল মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করে কারাগারে পাঠানো হয়।
জানা যায়, ইফতেখার রশিদ মাহিকে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে প্রাইভেট পড়াতেন গৃহশিক্ষক মুক্তারুল হক। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ভয়ভীতি দেখিয়ে মাহিকে বলাৎকার করেন মুক্তারুল। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে মাহিকে বলাৎকার করে আসছিলেন তিনি। তরুণ বয়সে এসেও মাহিকে বলাৎকারের চেষ্টা করেন ওই গৃহশিক্ষক। এতে রাজি না হওয়ায় মাহির ছোট বোনকে ধর্ষণের হুমকি দেন মুক্তারুল। এর প্রতিশোধ নিতেই মাথায় আঘাত করে গৃহশিক্ষক মুক্তারুলকে হত্যা করেন মাহি। নিহত মুক্তারুল হক জৈন্তাপুরের তেলীজুরী গ্রামের বাসিন্দা। অভিযুক্ত মাহি একই গ্রামের বাসিন্দা।
২০২২ সালের ৪ ডিসেম্বর সকালে জৈন্তাপুর উপজেলার তেলীজুরী এলাকায় সিলেট-তামাবিল সড়কের পাশ থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় মুক্তারুল হকের (৩৬) মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এই ঘটনায় নিহতের বাবা রহমত আলী বাদী হয়ে ৬ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৪/৫ জনের বিরুদ্ধে জৈন্তাপুর মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। জৈন্তাপুর থানা পুলিশ কিছুদিন তদন্তের পর তদন্তভার গ্রহণ করে পিবিআই সিলেট জেলা।
পিবিআই জানায়, ঘটনার রহস্য উদঘাটনের পর গত সোমবার অভিযান চালিয়ে ঢাকার মালিবাগ চৌধুরী পাড়ার একটি পোশাক কারখানা থেকে মূল আসামি ইফতেখার রশিদ মাহিকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তিনি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
জিজ্ঞাসাবাদে মাহি পিবিআইকে জানিয়েছেন, মুক্তারুল তাকে দ্বিতীয় শ্রেণি থেকে প্রাইভেট পড়াতেন। তিনি যখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়তেন তখন থেকে মুক্তারুল তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে বলাৎকার শুরু করেন। পাশাপাশি ঘনিষ্ঠ দৃশ্য মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে রাখেন। বিভিন্ন সময় বাধা দিলে তাকে ব্লেড দিয়ে দুই উরুতে অসংখ্য জখম করেন। অশালীন দৃশ্য অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে এবং স্কুলের পরীক্ষায় ফেল করানোর ভয় দেখিয়ে তাকে দীর্ঘ দিন বলাৎকার করে আসছিলেন গৃহশিক্ষক মুক্তারুল।
জিজ্ঞাসাবাদে মাহি আরও জানান, তরুণ বয়সে এসেও তাকে বলাৎকার করতে চাইলে তিনি বাধা দেন। এ সময় মুক্তারুল মাহির নবম শ্রেণি পড়ুয়া ছোট বোনকে ধর্ষণের হুমকি দেন। সেটি সহ্য করতে না পেরে মুক্তারুলকে খুন করার পরিকল্পনা করেন মাহি। ২০২২ সালের ৩ ডিসেম্বর অতীতের মতো মুক্তারুল মাহিকে তাদের বাড়ির পেছনে বলাৎকারের উদ্দেশে ডাকলে মাহি সন্ধ্যার পর সেখানে যান এবং সেখানে থাকা কাঠ দিয়ে মুক্তারুলের মাথায় উপর্যুপরি আঘাত করে হত্যা করেন। এরপর মরদেহ রাস্তার পাশের জমিতে টেনে নিয়ে ফেলে দেন। পরদিন তিনি রামপ্রসাদ গ্রামে তার নানা বাড়িতে চলে যান। এর কিছুদিন পর খালার বাড়ি থেকে ঢাকায় গিয়ে একটি গার্মেন্টসে চাকরি নেন। এরপর আর এলাকায় আসেননি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআইর উপ—পরিদর্শক ঝলক মোহন্ত বলেন, ‘ঘটনার তদন্তভার পেয়ে অনুসন্ধান শুরু করা হয়। এক পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগিতায় ঘটনার রহস্য উদঘাটন করা হয়। গত সোমবার অভিযান চালিয়ে ঢাকার মালিবাগ চৌধুরী পাড়ার একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি থেকে আসামি ইফতেখার রশিদ মাহিকে (২২) গ্রেপ্তার করা হয়।’
তিনি আরও বলেন, গ্রেপ্তারের পর মাহি স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার তাকে আদালতে হাজির করা হলে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেন। পরে আদালতের নির্দেশে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৫/০৫/২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ কালবৈশাখী শেষে আবারও শুরু হয়েছে তাপপ্রবাহ। আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে হিট এলার্টও জারি করা হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টার জন্য রাজশাহী, রংপুর, খুলনা, বরিশাল ও ঢাকার জন্য এই হিট এলার্ট জারি করা হয়েছে। তবে আগামী শুক্রবার ও শনিবার ঢাকায় গরম বেশি পড়বে। আর সোমবার থেকে সারা দেশে শুরু হবে কালবৈশাখীর প্রভাবে বৃষ্টি।
গতকাল মঙ্গলবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল সৈয়দপুরে, একইদিনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছিল ঈশ্বরদীতে। আজ বুধবার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড হয়েছে দিনাজপুরে। আগামীকাল বৃহস্পতিবারও একই এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকতে পারে। শুক্র ও শনিবারে ঢাকাতেও তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছেন আবহাওয়াবিদ শাহীনুল ইসলাম।
তিনি দেশ রূপান্তরের সঙ্গে আলাপচারিতায় বলেন, ‘এবার তাপপ্রবাহ প্রবেশ করছে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগ দিয়ে। আর তা প্রবেশের পর ঢাকা পর্যন্ত আসার পর তাপমাত্রার পারদ কমে যায়। তবে আগামী শুক্র ও শনিবার ঢাকায় তাপমাত্রা বেশি থাকতে পারে।’
এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রংপুর ও দিনাজপুর দিয়ে প্রবাহিত অতিরিক্ত তাপের প্রবাহটি মধ্যাঞ্চলের ওপর যখন চলে আসবে তখন উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তাপমাত্রা কমে যেতে পারে। তবে সোমবার থেকে সারা দেশেই তাপমাত্রা কমতে থাকবে।’
এবার আর তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহের দুর্ভোগে পড়তে হবে না। মাঝারি তাপ প্রবাহের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকতে পারে আগামী ১৯ মে (রবিবার) পর্যন্ত চলমান এই তাপপ্রবাহ। ২০ থেকে শুরু হতে যাওয়া কালবৈশাখীতে নেমে আসবে তাপমাত্রার পারদ।
এবারের তাপপ্রবাহ দেশের পশ্চিম দিক দিয়ে প্রবেশ করছে জানিয়ে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক সমরেন্দ্র কর্মকার বলেন, ‘বছরের এসময়ে রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ ও মধ্য প্রদেশ থেকে আসা তাপপ্রবাহ রংপুর ও রাজশাহী অঞ্চল দিয়ে প্রবেশ করে। এর আগে দক্ষিণ-পশ্চিমের যশোর, চুয়াডাঙ্গা ও খুলনা এলাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বেশি রেকর্ড হয়েছিল।’
সমরেন্দ্র কর্মকারের উপাত্তের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, ভারতীয় আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে আগামী কয়েকদিন রাজস্থান, উত্তর প্রদেশ ও মধ্যপ্রদেশ এলাকায় তাপমাত্রা ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত উঠতে পারে। গতকালও (বুধবার) এসব এলাকার তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত রেকর্ড করা হয়েছে।
দেশে পুরো এপ্রিল মাসে তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। ২ মে চট্টগ্রাম অঞ্চলে বৃষ্টির পর ৬ মে থেকে শুরু হয় সারা দেশে কালবৈশাখীর প্রভাব। এর আগে ৩০ এপ্রিল যশোরে রেকর্ড হয়েছিল ৪৩ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ ছাড়া এপ্রিলর শেষার্ধে টানা তীব্র থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। সাধারণত কোনো অঞ্চলের তাপমাত্রা ৩৬ থকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি হলে মাঝারি ও ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যায়। আর ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হলে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ হয়ে থাকে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৫/০৫/২০২৪
জাবিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) দীর্ঘ ৮ বছর পর ডিন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচনে শিক্ষকদের ভোটে আগামী দুই বছরের জন্য চার অনুষদে চারজন ও দুই অনুষদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় দুইজনসহ মোট ছয়জন নতুন ডিন নির্বাচিত হয়েছেন।
নব-নির্বাচিত ডিনদের মধ্যে-কলা ও মানবিক অনুষদে অধ্যাপক মোজাম্মেল হক, সমাজবিজ্ঞান অনুষদে অধ্যাপক বশির আহমেদ, জীববিজ্ঞান অনুষদে অধ্যাপক ন হু আলম, গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদে অধ্যাপক আব্দুর রব। এছাড়াও প্রতিদ্বন্দী প্রার্থী না থাকায় এর আগে আইন অনুষদে সহযোগী অধ্যাপক তাপস কুমার দাস ও ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদে অধ্যাপক নিগার সুলতানা বিনা প্রতিদ্বন্দিতায় জয়ী হয়েছেন।
বুধবার (১৫ মে) সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ক্লাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে ৪ টি অনুষদে মোট ৫২৩ জন ভোটারের মধ্যে ৫০৫ জন ভোট প্রদান করেন। বিকেল ৪টায় নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার ও বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হাসান ফলাফল ঘোষণা করেন।
নির্বাচনে মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে বিনাপ্রতিদ্বন্দীতায় নির্বাচিত ২ জনসহ সমাজবিজ্ঞান অনুষদ এবং জীববিজ্ঞান অনুষদের বিজয়ীরা উপাচার্যপন্থী বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের মনোনীত প্রার্থী ছিলেন। এছাড়া শিক্ষক ঐক্য পরিষদের মনোনীত প্রার্থীদের মধ্যে বিএনপিপন্থী শিক্ষক আব্দুর রব গাণিতিক ও পদার্থ বিষয়ক অনুষদে এবং কলা ও মানবিকী অনুষদে অধ্যাপক মোজাম্মেল হক বিজয়ী হয়েছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ ডিন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১৬ সালে। বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচিত ডিনদের মেয়াদ দুই বছর থাকলেও ২০১৬ সালের পর আর কোন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়নি।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৫/০৫/২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ জেলার গোপালপুরের সূতী ভি.এম. পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়থেকে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে জমজ দুই ভাই ইমতিয়াজ রহমান তমাল ও ইশতিয়াক রহমান হিমেল।
দুই ভাই বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র। ইমতিয়াজ রহমান তমলের প্রাপ্ত নম্বর-১১৪৮ আর ইশতিয়াক রহমান হিমেলের প্রাপ্ত নম্বর-১১৫৭।
তারা গোপালপুর উপজেলার মেইনরোড সংলগ্ন লাফী টেলিফোন এলাকার মতিয়ার রহমান ও তাহমিনা আকতার দম্পতির সন্তান। বাবা মতিয়ার রহমান একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরি করেন, মা তাহমিনা আকতার শিক্ষকতা করেন।
জানা গেছে, জমজ দুই ভাই ইমতিয়াজ রহমান তমাল ও ইশতিয়াক রহমান হিমেল ছোট বেলা থেকেই মেধাবী শিক্ষার্থী। তারা পিএসসিতেও জিপিএ ৫ প্রাপ্ত এবং সরকারী বৃত্তি পেয়েছিলেন।
দুই ভাইয়ের স্বপ্ন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করার। মানবিক মানুষ হয়ে দেশ সেবা করতে চায় তারা। দুই যমজ ভাই তার বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
জমজ দুই ছেলের বাবা মতিয়ার রহমানবলেন, আমি চাই আমার ছেলেরা মানুষের মতো মানুষ যেন হয়। তাদের স্বপ্ন ও আশা পূরণে আমি সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো। তারা যেন দেশ ও জাতির কল্যাণে নিজেদের নিয়োজিত রাখতে পারে এটিই আমার প্রত্যাশা।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৫/০৫/২০২৪
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ এ বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল গত রবিবার (১২ মে) প্রকাশিত হয়েছে। প্রতি বছরের মতো এবারও ফলের ভিত্তিতে অনলাইনে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি নেওয়া হবে। একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির নীতিমালা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
বুধবার মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের উপসচিব মোছাঃ রেবেকা সুলতানা স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে এই নীতিমালা প্রকাশ করা হয়।
এতে বলা হয়, পূর্ববর্তী ০৩ (তিন) বছরে দেশের যে কোন শিক্ষা বোর্ড এবং বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে এস.এস.সি. বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীগণ নীতিমালার অন্যান্য বিধানাবলি সাপেক্ষে কোন কলেজ/সমমানের প্রতিষ্ঠানে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইনে ভর্তির যোগ্য বিবেচিত হবে। এছাড়া উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উত্তীর্ণসহ অন্যান্য বছরের শিক্ষার্থীরাও ভর্তির জন্য বোর্ডে ম্যানুয়ালি আবেদন করতে পারবে।
বিদেশি কোন বোর্ড বা অনুরূপ কোন প্রতিষ্ঠান হতে সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীগণ মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা কর্তৃক তার সনদের মান নির্ধারণের পর উপনীতি (২.১) এর অধীনে ভর্তির যোগ্য বিবেচিত হবে।
ভর্তির আবেদনে একজন প্রার্থী নিম্নরূপ গ্রুপ নির্বাচন করতে পারবে:
- বিজ্ঞান গ্রুপ হতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপ এর যে কোনটি ;
- মানবিক গ্রুপ হতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপ এর যে কোনটি এবং
- ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপ হতে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ব্যবসায় শিক্ষা ও মানবিক গ্রুপ এর যে কোনটি;
- যে কোন গ্রুপ (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা) থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী ইসলামী শিক্ষা, গার্হস্থ্য বিজ্ঞান ও সংগীত গ্রুপ এর যে কোনটি
- মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে বিজ্ঞান গ্রুপে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা গ্রুপ এর যে কোনটি এবং সাধারণ ও মুজাব্বিদ মাহির গ্রুপ থেকে উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী বিজ্ঞান গ্রুপ ব্যাতীত যে কোনটি।
- কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে এসএসসি (ভোকেশনাল) ও দাখিল (ভোকেশনাল) পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীগণ সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের যেকোন গ্রুপে ভর্তির আবেদন করতে পারবে।
বিস্তারিত দেখুন...
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৫/০৫/২০২৪
ঢাকা: বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) বলছে, ১৮তম নিবন্ধনের যে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ফল নিয়ে তাঁরা ব্যস্ত সময় পার করছে। ফল আজ বুধবার যে কোন সময়ে প্রকাশিত হতে পারে।
১৮তম নিবন্ধনের যে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা নিয়েছে, সেটির ফল নিয়ে উৎকণ্ঠায় আছেন চাকরিপ্রার্থীরা। অনেকেই ফোন করে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়েছেন। পরে এনটিআরসিএতে যোগাযোগ করা হয়েছে। ফল কবে হতে পারে জানতে চাইলে এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান মো. সাইফুল্লাহিল আজম বলেন, ‘আমরা ফল প্রকাশের বিষয়ে কাজ করছি। এ নিয়ে ব্যস্ত আছি। আজই ফল প্রকাশিত হবে।’
এর আগে গত ১৫ মার্চ ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের স্কুল/সমপর্যায় ও স্কুল পর্যায়-২–এর প্রিলিমিনারি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এদিন সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত দেশের ৮টি বিভাগের ২৪ জেলা শহরে এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। একই দিন বেলা সাড়ে ৩টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত কলেজ পর্যায়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন করেছেন ১৮ লাখ ৬৫ হাজার প্রার্থী।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৫/০৫/২০২৪
জয়পুরহাটঃ জেলার ক্ষেতলালে ১৬ দিন ও ২ মাসের নবজাতক নিয়ে এসএসসি (ভোকেশনাল) ২০২৪ পরীক্ষায় অংশ নেয় শান্তনা আক্তার স্মৃতি ও মহসিনা আক্তার নামের দুই মা। এতে দুজনের ভালো ফলাফলে খুশি শিক্ষক ও এলাকাবাসী।
রবিবার (১২ মে) সারাদেশে একযোগে এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ পেলে আনন্দ ধরা দেয় উভয়ের বাড়িতে।
ফলাফলে মহসিনা আক্তার পেয়েছেন জিপিএ ৫ এবং শান্তনা আক্তার স্মৃতি পেয়েছেন ৪.৬১। তাদের এ ফলাফলে খুশি বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও এলাকাবাসী।
নবজাতক শিশুকে নিয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এমন সাফল্যমণ্ডিত ফলাফল করায় শিক্ষকরা সাধুবাদ জানিয়েছেন ওই দুই মা পরীক্ষার্থীকে।
এর আগে গত ১৫ ফেব্রুয়ারি ‘নবজাতককে বাইরে রেখে পরীক্ষার হলে মা’ শিরোনামে দৈনিক কালবেলায় সংবাদ প্রকাশ হলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
২ মাস বয়সী শিশুর মা মহসিনা আক্তার আখলাস শিবপুর শ্যামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখা থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। সে উপজেলার শিবপুর গ্রামের গোলাম মোস্তফা মন্ডলের মেয়ে।
১৬ দিন বয়সী শিশুটির মা শান্তনা আক্তার স্মৃতি ক্ষেতলাল পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল শাখা থেকে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। সে পার্শ্ববর্তী কালাই উপজেলার চক গাদুকা গ্রামের সানাউল ইসলামের মেয়ে।
শান্তনা আক্তার স্মৃতি বলেন, পরীক্ষার ১৬ দিন আগে আমার বাচ্চা জন্মগ্রহণ করেছে। বাচ্চাকে কেন্দ্রের পাশে আমার বাবার বাড়িতে রেখেই পরীক্ষা দিয়েছিলাম। এমন ফলাফল করতে পেরে অনেক ভালো লাগছে। আমার পরিবারও অনেক খুশি। আমার পড়াশোনা চলমান রাখব ইনশাআল্লাহ।
অপরদিকে মহসিনা আক্তার বলেন, ছোট শিশুকে নিয়ে পরীক্ষা দেওয়া প্রায় অসম্ভব। একদিকে নবজাতক কষ্ট পায় অন্যদিকে সন্তানের চিন্তায় আমিও পরীক্ষায় মন দিতে পারি না। এরপরও যা ফলাফল হয়েছে আলহামদুলিল্লাহ অনেক ভালো হয়েছে।
কেন্দ্র সচিব ও ক্ষেতলাল সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) এমিলি আক্তার বানু বলেন, আমার কেন্দ্রে শান্তনা আক্তার স্মৃতি ও মহসিনা আক্তার নামের দুই পরিক্ষার্থী ২ জন শিশু সন্তান নিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছিল। তাদের একজন জিপিএ ৫ পেয়েছে, আর অন্যজন ৪.৮১। এ রকম প্রতিকূলতাকে উপেক্ষা করে এমন ফলাফল সত্যিই প্রশংসনীয়।
উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার বাবুল কুমার মন্ডল বলেন, কেন্দ্র সচিবের মাধ্যমে ঘটনাটি আমি শুনেছিলাম। ১৬ দিন ও দুই মাসের ২ জন শিশুকে রেখেও ২ জন মেয়ে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। ফলাফলের কথা আপনার থেকে শুনলাম। যদিও অনেকে তাদের বাল্যবিবাহ ভাবতে পারে, তবে প্রকৃতপক্ষে তাদের বয়স ১৯ প্লাস। তারা ভোকেশনাল শাখা থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৫/০৫/২০২৪
শিক্ষাবার্তা ক্যারিয়ার ডেস্ক, ঢাকাঃ জনবল নিয়োগে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠানটি ‘প্রভাষক’ পদে একাধিক কর্মকর্তা নিয়োগ দেবে। আগ্রহী যোগ্য প্রার্থীরা ডাকযোগে আবেদন করতে পারবেন আগামী ২৯ মে পর্যন্ত।
প্রতিষ্ঠানের নাম : খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, খুলনা
চাকরির ধরন : স্থায়ী
প্রার্থীর ধরন : নারী-পুরুষ (উভয়)
খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ
নবীনদের চাকরির সুযোগ দিচ্ছে আখতার গ্রুপ
কর্মস্থল : খুলনা
আবেদন শুরুর তারিখ : ০৯ মে, ২০২৪
আবেদনের শেষ তারিখ : ২৯ মে, ২০২৪ (রাত ১২টা) পর্যন্ত
১. বিভাগের নাম : বায়োকেমিস্ট্রি অ্যান্ড মলিকুলার বায়োলজি
পদের নাম : প্রভাষক
অনুষদ : কৃষি
বেতন স্কেল : ২২০০০-৫৩০৬০/- (গ্রেড-৯)
২. পদ নাম : প্রভাষক
বিভাগের নাম : একোয়াকালচার
অনুষদ : ফিশারিজ অ্যান্ড ওশান সায়েন্সেস
বেতন স্কেল : ২২০০০-৫৩০৬০/- (গ্রেড-৯)
শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা : ১) সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ০৪ (চার) বছর মেয়াদি স্নাতক (সম্মান) এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি থাকতে হবে।
২) সংশ্লিষ্ট অনুষদ/বিভাগের প্রার্থীদের ক্ষেত্রে স্নাতক (সম্মান) ও স্নাতকোত্তর উভয় পরীক্ষায় সিজিপিএ ৪.০০ এর মধ্যে ন্যূনতম সিজিপিএ ৩.৫০ থাকতে হবে।
৩) সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ০৪ (চার) বছর মেয়াদি স্নাতক (সম্মান) অথবা সমমান পরীক্ষায় মেধাভিত্তিক শীর্ষ ১০% ছাত্র/ছাত্রী প্রভাষক পদে আবেদন করার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
বি.দ্র. নিয়োগ প্রার্থীদের জন্য শর্তাবলী ও জ্ঞাতব্য বিষয়সমূহ ক্ষেত্র বিশেষ প্রযোজ্য হবে।
যেভাবে আবেদন করবেন : আগ্রহীরা বিস্তারিত বিজ্ঞপ্তিটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন।
আবেদনের ঠিকানা : রেজিস্ট্রার, খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (অস্থায়ী অফিস : বাড়ি নং- ২০০, রোড নং-১২, ১ম ফেইজ, সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকা, খুলনা- ৯১০০)
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৫/০৫/২০২৪
কিশোরগঞ্জঃ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার আগরপুর জিসি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রায় ৫৫ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে প্রায় সাড়ে ছয় ধরে তিনি ব্যাংকবহির্ভূত লেনদেনের মাধ্যমে অর্থ পকেটে ভরেছেন বলে অভিযোগ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের। তবে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মুজিবুর রহমান।
বিদ্যালয় সূত্র জানায়, ২০১৭ থেকে ২০২৩ সালের ১৬ মে পর্যন্ত বিদ্যালয়ে কোনো পরিচালনা পর্ষদ ছিল না। অ্যাডহক কমিটির সদস্য সচিব হিসেবে প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান এ সময়ে খেয়ালখুশি মতো বিদ্যালয়ের অর্থ খরচ করেন। বিদ্যালয়ের কোনো আয়ই তিনি নির্ধারিত ব্যাংক হিসাবে জমা দেননি। বর্তমান পর্ষদ দায়িত্ব নেওয়ার পর তদন্তে প্রধান শিক্ষকের অর্থ নয়ছয়ের প্রমাণ পায়। এরপর তার কাছে চার বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব চাইলে গত বছরের ডিসেম্বরে জমা দেন মুজিবুর রহমান। এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে তিনি মাসিক সমন্বয় সভায় আর্থিক প্রতিবেদন পেশ করেন, যেখানে উদ্বৃত্ত ৫৪ লাখ ৮৪ হাজার ১৪৯ টাকা প্রধান শিক্ষকের কাছে রয়েছে উল্লেখ করেন। কিন্তু সম্প্রতি মুজিবুর রহমান বলে বেড়াচ্ছেন মাসিক সভার রেজল্যুশনে উদ্বৃত্ত প্রায় ৫৫ লাখ টাকার যে হিসাব, তাতে স্বাক্ষর জোর করে নেওয়া হয়েছে।
বিদ্যালয়ের নামে ১৭টি দোকান ও জমি রয়েছে। পাঁচ বছরের দোকান ভাড়া বাবদ গত বছর এককালীন ২৪ লাখ টাকা তোলেন প্রধান শিক্ষক। তা ছাড়া প্রতি বছর জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে রেজিস্ট্রেশন, ফরম ফিলাপ, কোচিং ফি, মাসিক বেতনসহ নানা খাত থেকে আসা বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যাংক হিসাবে জমা না দিয়ে খরচ করেছেন প্রধান শিক্ষক।
যোগাযোগ করা হলে প্রধান শিক্ষক মুজিবুর রহমান সমকালকে বলেন, ‘আমার কাছে মোটা অঙ্কের টাকা নেই। ৭ লাখের কিছু বেশি আছে, ম্যানেজিং কমিটি চাইলে যে কোনো সময় দিয়ে দেব।’ রেজল্যুশনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘জোর করে রেজল্যুশনে আমার স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে।’
তবে তাঁর এ দাবি মিথ্যা বলছেন পরিচালনা পর্ষদের বিদ্যোৎসাহী ও অর্থ কমিটির সদস্য হাবিবুর রহমান এবং অভিভাবক প্রতিনিধি আবুল কালাম। তারা বলেন, প্রধান শিক্ষক স্কুলের মিটিংয়ে সব সদস্যের উপস্থিতিতে হিসাব বিবরণী দেন। তাঁর দেওয়া হিসাব রেজল্যুশন করা হয়। সেখানে সবাই সই করেন। জোর করে কারও স্বাক্ষর নেওয়া হয়নি। প্রধান শিক্ষক হয়ে এ ধরনের মিথ্যা তিনি কীভাবে বলছেন, ভেবে অবাক হচ্ছি।
বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন বলেন, প্রধান শিক্ষকের দেওয়া হিসাব বিবরণী অনুযায়ী রেজল্যুশন হয়। প্রায় ৫৫ লাখ টাকা উদ্বৃত্ত রয়েছে জানিয়ে মুজিবুর রহমান নিজে রেজল্যুশনে স্বাক্ষর করেন। যদিও বাস্তবে প্রায় কোটি টাকা নয়ছয় করেছেন তিনি। শিগগিরই আমরা তাঁর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
স্থানীয় সূত্রের দাবি, ২০১৮ সালে কুলিয়ারচরের তৎকালীন ইউএনও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ পেয়ে মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার মুহাম্মদ মুশফিকুর রহমানকে তদন্তের দায়িত্ব দেন। এ বিষয়ে মুশফিকুর রহমান জানান, তদন্ত শেষে প্রতিবেদন দেন তিনি। ব্যাংক ছাড়া বিদ্যালয়ের টাকা খরচ করায় প্রধান শিক্ষককে সতর্ক করা হয়েছিল। এমনকি প্রধান শিক্ষকের বেতনও বন্ধ রেখেছিল কর্তৃপক্ষ।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শামছুন নাহার মাকছুদা বলেন, ‘আমার কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। তবে ম্যানেজিং কমিটি চাইলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারে। বিদ্যালয়ের আয়-ব্যয় শতভাগ ব্যাংকের মাধ্যমে হতে হবে, এটাই নিয়ম।’
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৫/০৫/২০২৪
ঢাকাঃ মো. মামুনুর রশিদ, মো. সুমন আলী ও মো. নাঈম হোসেন তিন বন্ধু। ক্যাম্পাসে তাঁদের মানিকজোড় বলতেন সহপাঠীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর থেকে যা কিছু করতেন সব সময় তিনজন মিলেই করতেন। একই সঙ্গে পড়াশোনা করা, থিসিস পেপার করা ও বিদেশে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতিও নেন। তিনজনের চিন্তাভাবনা ও পড়াশোনায় অনেক মিল। সবচেয়ে মজার বিষয় হলো বিবিএ ও এমবিএতে তিনজনের সিজিপিএ একই। এমনকি এসএসসি ও এইচএসসিতেও তাঁদের জিপিএ একই। বিবিএ ও এমবিএতে ভালো ফল করে যুক্তরাষ্ট্রে পিএইচডি পেতে শুরু করেন প্রস্তুতি। এ বছর তিনজনই যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বৃত্তিসহ পিএইচডি করার সুযোগ পেয়েছেন। আসছে আগস্টে যুক্তরাষ্ট্রে যাবেন তাঁরা।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগ থেকে বিবিএ ও এমবিএ করেছেন তিন বন্ধু। তিনজনের সিজিপিএ বিবিএতে ৩.৮৪ ও এমবিএতে ৩.৯৩।
মো. মামুনুর রশিদ ফিন্যান্স বিষয়ে ফুল ফান্ড নিয়ে পিএইচডি করতে যাচ্ছেন ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট সান আন্তোনিওতে। মো. সুমন আলী ইউনিভার্সিটি অব টেক্সাস অ্যাট এল পাসোতে ফিন্যান্স বিষয়ে বৃত্তিসহ পিএইচডির সুযোগ পেয়েছেন এবং মো. নাঈম হোসেন ইউনিভার্সিটি অব নিউ অরলিন্সে ফিন্যান্সিয়াল ইকোনমিকসে পিএইচডি করতে যাচ্ছেন।
মো. সুমন আলী একটি পিএইচডি ও একটি মাস্টার্সের ভর্তির বৃত্তিসহ অফার পেয়েছিলেন, নাঈম হোসেন মাস্টার্স, পিএইচডিসহ মোট চারটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চারটি অফার পেয়েছেন এবং মামুনুর রশিদ বৃত্তিসহ পাঁচটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি করার সুযোগ পেয়েছেন। এর মধ্যে একটি বেছে নিয়েছেন।
মো. মামুনুর রশিদ বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে ফুল স্কলারশিপে উচ্চশিক্ষায় সুযোগ পাওয়ার জন্য অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে লেগে থাকতে হয়। শুধু মেধাবী হলেই হয় না, ধৈর্য ধরে লেগে থাকার মানসিকতা আগে প্রয়োজন। আমাদের তিনজনের কথা যদি বলি, প্রত্যেককেই একাধিকবার আইইএলটিএস ও জিআরই পরীক্ষা দিতে হয়েছিল। কারণ, প্রথমবার আবেদনের জন্য আমরা কাঙ্ক্ষিত স্কোর পাইনি।’
মো: নাঈম হোসেন বলেন, ‘বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় প্রতিযোগিতামূলক অ্যাডমিশনে সুযোগ পেতে হলে দরকার সামষ্টিক একটা প্রোফাইল। বিশেষ করে বিজনেসের শিক্ষার্থীদের জন্য এটি আরও জরুরি। কোনো ফ্যাক্টরই কম গুরুত্বপূর্ণ নয়, যেমন সিজিপিএ, পাবলিকেশন, জিআরই, প্রাসঙ্গিক কাজের অভিজ্ঞতা, আইইএলটিএস, রিকমেন্ডেশন লেটার, স্টেটমেন্ট অব পারপাস ইত্যাদি। যাঁরা উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী, তাঁদের উচিত অনার্স দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় বর্ষ থেকেই এসব বিষয় নিয়ে কাজ শুরু করা। প্রথম বর্ষ থেকে শুরু করলে আরও ভালো হয়। নিজের প্রোফাইল অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা করা উচিত। দেখা গেল আপনার প্রোফাইল মডারেট লেভেলের, সে ক্ষেত্রে আপনি হার্ভার্ড বা এমআইটিতে আবেদন করলেন, আপনার আবেদন রিজেকশনের হার অনেক বেশি থাকবে।’
যুক্তরাষ্ট্রের বিজনেস পিএইচডি প্রোগ্রামগুলো তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ হয়, ফিন্যান্স প্রোগ্রামগুলো আরও বেশি প্রতিযোগিতাপূর্ণ। কারণ, তারা বছরে একবারই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে স্টুডেন্ট নেয়, তা–ও আবার মাত্র ২-৩ জন, কিছু কিছু প্রোগ্রামে একজনও নেয়, যেখানে বিশ্বের নামীদামি সব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আবেদন করে থাকেন। এই তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ বিজনেস ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে যুক্তরাষ্ট্রে স্কলারশিপ পেতে কীভাবে প্রস্তুতি নিয়েছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে মো. মামুনুর রশিদ বলেন, ‘আমাদের তিনজনের উচ্চ জিআরই ও আইইএলটিএস স্কোর ছিল না। তবুও আমরা মনোবল হারায়নি। আমরা আমাদের গবেষণাপত্রগুলোকে ভালোভাবে ফোকাস করার চেষ্টা করেছি। আমাদের সিজিপিএ নিয়েও কোনো ঝামেলা ছিল না। কারণ, তিনজনের সিজিপিএই ভালো। আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হচ্ছে রিকমেন্ডেশন লেটার ও স্টেটমেন্ট অব পারপাস (এসওপি)। বিশ্বের বিভিন্ন নামীদামি গবেষকের সঙ্গে কাজ করার সুবাদে তাঁদের সঙ্গে ভালো একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আমেরিকা, অস্ট্রেলিয়া, সুইডেন এবং আরও কিছু দেশের গবেষকের কাছ থেকে আমরা রিকমেন্ডেশন লেটার নিতে পারি। এসওপিতে আমরা যথেষ্ট সময় দিয়েছি। আমরা নিজেরা লিখেছি, তারপর আমেরিকাতে যাঁরা পিএইচডি করতেছেন, তাঁদের কাছ থেকে আমাদের এসওপি রিভিউ করিয়ে নিয়েছি।’
মো. মামুনুর রশিদ বলেন, ‘আমার জন্য এ সাকসেসটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, বাংলাদেশ থেকে খুব কম শিক্ষার্থী আমেরিকায় ফিন্যান্সে পিএইচডিতে সুযোগ পান। ফিন্যান্সের পিএইচডি প্রোগ্রামগুলো খুবই প্রতিযোগিতাপূর্ণ হয়, সেখানে একই বিশ্ববিদ্যালয়, একই বিভাগ ও তিন বন্ধু একসঙ্গে পিএইচডিতে সুযোগ পাওয়া অনেক গর্বের। সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয় হলো তিন বন্ধু একসঙ্গে পিএইচডি শুরু করা, যেখানে আমরা তিনজনই একসঙ্গে অনার্স চতুর্থ বর্ষ থেকেই গবেষণা শুরু করি। এখানে আমাদের তিনজনের সুপারভাইজার বখতিয়ার হাসান স্যারের অবদান বলে শেষ করা যাবে না। উনি না থাকলে হয়তো আমরা এই স্বপ্ন দেখার সাহস পেতাম না। মায়ের দোয়াও সব সময় সঙ্গে ছিল।’
বিজনেস ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে যাঁরা নতুন করে যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাঁদের জন্য পরামর্শও দিয়েছেন এই তিন শিক্ষার্থী। তাঁরা বলেন, ব্যবসা অনুষদের পিএইচডি প্রোগ্রামগুলো খুবই প্রতিযোগিতাপূর্ণ হয়। প্রতিবছর সর্বোচ্চ দুই-তিন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করা হয়। আইইএলটিএস স্কোরের কথা যদি বলি, চেষ্টা করবেন ৭ ব্যান্ড তোলার। কারণ, এতে আপনার অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদনের সুযোগ তৈরি হবে। ৬.৫ হলেও সমস্যা নেই। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় ৬.৫–এ গ্রহণ করে। জিআরইর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। বিজনেস ফ্যাকাল্টিতে এর গুরুত্ব সবচেয়ে বেশি। এখানে ৩১০–এর ওপরে তুলতে পারলে আপনি প্রতিযোগিতা করার যোগ্যতা রাখেন। এর পাশাপাশি যদি সিজিপিএ ভালো হয়, তাহলে আপনার সুযোগ অনেকাংশে বেড়ে যাবে। প্রথম আলো
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৫/০৫/২০২৪