১২-১৭ বছরের শিক্ষার্থীদের টিকা শিগগিরই : স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানালেন
অনলাইন ডেস্ক।।
১২ থেকে ১৭ বছরের শিক্ষার্থীরা শিগগিরই করোনা ভাইরাসের টিকা পাবে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেছেন, এসব শিক্ষার্থীকে ফাইজার ও মডার্নার টিকা দেওয়া হবে। টিকা পাওয়ার ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন অথবা স্কুল থেকে মনোনীত হতে হবে।
গতকাল রবিবার মহাখালীর বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিশিয়ান অ্যান্ড সার্জনসের গাড়ি গ্যারেজে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। কোভিড-১৯ টিকা ও সমসাময়িক বিষয়ে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলমের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিঞা। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়–য়া উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি জেনেভা সফর করে এসেছি। সেখানে শিক্ষার্থীদের টিকা দেওয়ার বিষয়ে
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা সংক্রমণ রোধে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের (১২ থেকে ১৭ বছর) ফাইজার ও মডার্নার টিকা দেওয়ার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে। আমাদের কাছে এ মুহূর্তে ফাইজারের ৬০ লাখ টিকা মজুদ রয়েছে। দ্বিতীয় ডোজ সংরক্ষণ করে ৬০ লাখ টিকা ৩০ লাখ শিক্ষার্থীকে দেওয়া হবে। চলতি মাসে কোভ্যাক্স সুবিধা থেকে আরও ৭০ লাখ টিকা আসার কথা। এ ছাড়া গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস-গ্যাভির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। ১৮ বছরের নিচের শিশুদের জন্য তারাও টিকা দেবে বলে জানিয়েছে। এসব মাধ্যম থেকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী টিকা এলে শিক্ষার্থীদের কার্যক্রমে কোনো ঘাটতি পড়বে না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী ডিসেম্বর ও জানুয়ারির মধ্যে দেশে আট কোটি মানুষকে টিকা দেওয়া সম্ভব হবে। আমরা এ পর্যন্ত সাত কোটি ২২ লাখ টিকা পেয়েছি। এর মধ্যে তিন কোটি ৬১ লাখ মানুষকে প্রথম ডোজ এবং এক কোটি ৭৯ লাখ মানুষকে দ্বিতীয় ডোজ টিকা দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে টিকা দেওয়া হয়েছে ৫ কোটি ৪১ লাখ। এখন হাতে এক কোটি ৮৮ লাখ ডোজ টিকা রয়েছে। সুরক্ষা অ্যাপে এ পর্যন্ত নিবন্ধন করেছেন পাঁচ কোটি ২০ লাখ মানুষ।
জাহিদ মালেক বলেন, চলতি মাসে আরও প্রায় সাড়ে তিন কোটি টিকা আসবে। যেগুলো এ মাসেই দিতে বিভিন্ন পরিকল্পনা করা হয়েছে। আগামী নভেম্বরে আসবে পৌনে চার কোটি ডোজ। সবচেয়ে বেশি টিকা আসবে আগামী ডিসেম্বরে প্রায় পাঁচ কোটি ডোজ। এ ছাড়া আগামী জানুয়ারিতে আসবে পৌনে ৪ কোটি টিকা। বর্তমানে প্রতিদিন সারাদেশে চার থেকে ছয় লাখ টিকা দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনে ৮০ লাখ টিকা দেওয়া হয়েছে। দৈনন্দিন টিকাদানের হার আরও বাড়িয়ে ১০ থেকে ১৫ লাখে উন্নিত করা হবে। আগামী জানুয়ারির মধ্যে ৮ কোটি মানুষকে দুই ডোজ টিকা দেওয়া সম্ভব হবে। সব মিলিয়ে আগামী মার্চের মধ্যে দেশে ১২ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় নিয়ে আসতে পারব। যা দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৭০ শতাংশ।
তিনি বলেন, দেশের করোনা পরিস্থিতি এখন অনেকটা স্বাভাবিক। মৃত্যুহার কমে এসেছে। মাত্র কয়েকদিন আগেও যেখানে মৃত্যুহার ছিল ৩৩ শতাংশ, সেখানে বর্তমানে নেমে এসেছে ২ শতাংশে। অথচ আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর অবস্থা এখনো খারাপ।
তিনি আরও বলেন, দেশের করোনা পরিস্থিতি উন্নতি দৃশ্যত লক্ষণীয়। দেশের হাসপাতালগুলোর ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ সাধারণ এবং আইসিইউ (নিবিড় পরিচার্য কেন্দ্র) শয্যা খালি পড়ে আছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো আংশিকভাবে খুলেছে। মেডিক্যাল শিক্ষা কার্যক্রম চালু হয়েছে। ধীর ধীরে পূর্ণাঙ্গ লেখাপড়া চালু হয়ে যাবে। সামগ্রিক জীবনযাত্রা অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। তবে এতে তৃপ্ত হলে চলবে না। কারণ করোনাকে কোনো বিশ্বাস নেই। যে কোনো সময় ঢেউ উঠতে পারে। তাই সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।