অমর নায়ক সালমানকে হারানোর ২৩ বছর
ইমরুল নুর :
বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে নব্বই দশকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও সুদর্শন নায়কের নাম সালমান শাহ। ঢাকাই ছবিতে যার আগমন ঘটেছিল অনেকটা ধূমকেতুর মত। মাত্র তিনবছরের ক্যারিয়ারে উপহার দিয়েছিলেন ২৭টি ছবি। স্টাইল আর অভিনয় দিয়ে বাংলা চলচ্চিত্রে নিজেকে নিয়ে গিয়েছিলেন এক অনন্য উচ্চতায়। মৃত্যুর আগে ও পরে সবগুলো ছবিই হয়েছিল সুপারহিট। চলচ্চিত্রের কথা বলতে গিয়ে আজও স্মৃতি হাতরে বেড়ান সালমান যুুগের মানুষরা।
রহস্যজনক এক মৃত্যুর মধ্য দিয়ে পতন হয়ে যায় সালমান নামের ধূমকেতুর। ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর সবাইকে কাঁদিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এই নায়ক। এত বছরে একটুও ম্লান হয়নি তার আলোর। আজও ঢাকাই ছবিতে রোমান্টিক, সফল নায়কদের উদাহরণ সালমান শাহ্।
সালমান শাহকে হারানোর ২৩ বছর হয়ে গেছে। আজ এই নায়কের মৃত্যুবার্ষিকী। খুব অল্প সময়ের ক্যারিয়ারেই তিনি জয় করেছিলেন অসংখ্য ভক্তের হৃদয়। আবার হারিয়েও গেছেন অল্প সময়ের মধ্যেই। সালমান যুগের না হয়েও এ প্রজন্মের সিনেমাপ্রেমীরাও সালমানকে মানেন নায়কের আদর্শ হিসেবে। অনুরাগীদের ভালোবাসায় তিনি 'অমর নায়ক' হিসেবেই বেঁচে রয়েছেন সকলের হৃদয়ে। দেশের বিভিন্ন হলে সালমানের পুরনো ছবিগুলো মুক্তি পেলে দর্শক উপস্থিতি তারই প্রমাণ দেয়।
সালমান শাহের অভিনয় শুরুটা ছিল গান ভিডিওতে অভিনয়ের মাধ্যমে। ১৯৮৫-৮৬ সালের দিকে জনপ্রিয় উপস্থাপক হানিফ সংকেতের গ্রন্থনায় ‘কথার কথা’ নামে একটি ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান প্রচারিত হতো। এই অনুষ্ঠানের একটি পর্বের জন্য হানিফ সংকেত নিজের কণ্ঠে ‘নামটি ছিল তার অপূর্ব’ শিরোনামে একটি গান রেকর্ড করেন। একজন সম্ভাবনাময় সদ্য তরুণ তার পরিবারের নানা ধরনের ঝামেলার কারণে মাদকাসক্ত হয়ে মারা যায়- এমন থিম নিয়ে বিশেষভাবে একটি ভিডিও নির্মাণ করেন। এই গান ভিডিওতে অভিনয়ের মাধ্যমেই প্রথম মিডিয়ায় আসেন সালমান শাহ। গানের গল্পে প্রধান চরিত্র অপূর্বর ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি। তখন অবশ্য ইমন নামেই পরিচিত ছিলেন তিনি। সে সময় মিউজিক ভিডিওটি তুমুল জনপ্রিয়তা পেলেও নিয়মিত টিভি পর্দায় দেখা না যাওয়ার কারণে ইমনকে ভুলে যান দর্শকরা।
এরপর তিনি কাজ করেন বেশকিছু বিজ্ঞাপন ও নাটকে। এরমধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘মিল্কভিটা’, ‘জাগুরার কেডস’, ‘গোল্ড স্টার টি’, ‘কোকাকোলা’, ‘ফানটা’ ইত্যাদি। দুটি ধারাবাহিক নাটক ‘পাথর সময়’, ‘ইতিকথা’ এবং একক নাটক ‘আকাশ ছোঁয়া’, ‘দোয়েল’, ‘সব পাখি ঘরে ফেরে’, ‘সৈকতে সারস’, ‘নয়ন’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’তে অভিনয় করেছিলেন সালমান শাহ্।
১৯৯২ সালের ১২ আগস্ট বিয়ে করেন তিনি। তার স্ত্রীর নাম সামিরা।
১৯৯৩ সালে সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে সালমানের। প্রথম ছবিতেই নায়িকা হিসেবে জুটি বেঁধেছিলেন মৌসুমির সাথে। তিন বছরের ক্যারিয়ারে সর্বাধিক ছবিতে জুটি বেঁধেছিলেন শাবনূরের সঙ্গে।