সরকারি নিয়োগে গতি ফেরাতে উদ্যোগ
নিউজ ডেস্ক।।
সরকারি চাকরির শূন্য পদে নিয়োগ চলছে ঢিমেতালে। ফলে ছাড়পত্র নিয়ে নির্ধারিত সময়েও নিয়োগ সম্পন্ন করতে পারছে না সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধীনস্থ দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত, আধা স্বায়ত্তশাসিত ও সংবিধিবদ্ধ সংস্থা। ফলে এসব শূন্য পদ পূরণে ছাড়পত্রের মেয়াদ বাড়াতে হয় বারবার। ইতিপূর্বে ছাড়পত্র নিয়ে নিয়োগ সম্পন্ন করতে না পারায় বৃহস্পতিবার ( ১১ ফেব্রুয়ারি) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ঐ সব নিয়োগ সম্পন্ন করতে ছাড়পত্রের মেয়াদ সর্বোচ্চ এক থেকে দুই বছর বাড়িয়ে আদেশ জারি করেছে।
আদেশে বলা হয়েছে, প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগের পূর্বানুমোদন অথবা ছাড়পত্রপ্রাপ্ত সরাসরি নিয়োগের মাধ্যমে পূরণযোগ্য শূন্য পদ বর্ণিত সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পর পূরণ করা হলে তা বিধিসম্মত হবে না। এ ধরনের বিধিবহির্ভূতভাবে নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ না করতে সংশ্লিষ্ট প্রধান হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা, জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা ও উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তাদের আদেশ দেওয়া হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সরকারি নিয়োগ কার্যক্রম চলছে ঢিমেতালে। একাধিক প্রতিষ্ঠানের নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বলছে, করোনা অতিমারিসহ অন্যান্য কারণে যথাযময়ে নিয়োগ সম্পন্ন করা যাচ্ছে না। অনেক জায়গায় লিখিত পরীক্ষার ফল দেওয়া হচ্ছে না। অনেক জায়গায় নিয়োগের চূড়ান্ত ফল দেওয়া হচ্ছে না, আবার মামলা-মোকদ্দমাসহ নানা কারণে নিয়োগগুলো যথাসময়ে সম্ভব হচ্ছে না।
তবে ভিন্নমতাবলম্বীরা বলছেন, ক্ষেত্রবিশেষে তদ্বিরের চাপ, নিয়োগকারীদের দুর্নীতির মাধ্যমে প্রার্থী নিয়োগের খায়েশও নিয়োগ প্রলম্বিত হওয়ার উল্লেখযোগ্য কারণ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের সব শূন্য পদ দ্রুততার সঙ্গে পূরণের জন্য একাধিকবার তাগিদ দিলেও অজানা কারণে সেই নির্দেশনা কার্যকর হচ্ছে না।
সর্বশেষ জনপ্রশাসনের জারি করা আদেশে বলা হয়েছে, মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ও অধীনস্থ দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা এবং করপোরেশনে বিদ্যমান রাজস্ব খাতভুক্ত সরাসরি নিয়োগযোগ্য শূন্য পদ পূরণের আগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে ছাড়পত্র গ্রহণের বিধান প্রচলিত ছিল। তবে ২০১০ সালের ২৪ নভেম্বর জারিকৃত পরিপত্রের মাধ্যমে রাজস্ব খাতের শূন্য পদগুলো দ্রুত পূরণের জন্য শর্তসাপেক্ষে ছাড়পত্র দেওয়ার ক্ষমতা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পাশাপাশি সরাসরি নিয়োগযোগ্য শূন্য পদের ১০ শতাংশ পদ সংরক্ষণ করার নির্দেশনাও দেওয়া হয়।
কিন্তু এ ব্যবস্থা নেওয়ার পরও শূন্য পদ পূরণে অহেতুক বিলম্ব হওয়ায় শিক্ষিত বেকার যুবকদের মধ্যে হতাশা তৈরি হয়ে সরকারের প্রতি বিরূপ ধারণা সৃষ্টির শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। এরকম বাস্তবতায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এই জটিলতা এড়িয়ে প্রশাসনকে গতিশীল করার স্বার্থে রাজস্ব খাতভুক্ত সরাসরি নিয়োগযোগ্য শূন্য পদ পূরণের জন্য ছাড়পত্র আদেশ সংগ্রহের পর নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে নিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকারি কর্মকমিশন সচিবালয়ের মাধ্যমে পূরণীয় পদগুলোর ক্ষেত্রে ছাড়পত্রের বৈধতার মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ দুই বছর।
এছাড়া মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ও অধীন দপ্তর, অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত বা আধা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থায় সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে ছাড়পত্রের বৈধতার মেয়াদ হবে সর্বোচ্চ এক বছর। এই সময়কালের মধ্যে নিয়োগ দিতে সব ধরনের আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে চূডান্ত নিয়োগ দিতে হবে। নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে শূন্য পদ পূরণে ব্যর্থ হলে নতুন করে ছাড়পত্র নিতে হবে। ছাড়পত্র দেওয়ার নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে পদ পূরণ না করতে পারলে এবং নিয়োগ প্রক্রিয়া চলমান থাকলে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে চলমান নিয়োগ কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য ছাড়পত্রের মেয়াদ ছয় মাস পর্যন্ত বাড়াতে পারবে।