উচ্চশিক্ষায় শিক্ষা কোথায়?
মোনালিসা মুজিব মিমঃ বিশ্ববিদ্যালয়কে মনে করা হয়ে থাকে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ। উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা শেষ করার পরে বেশির ভাগ শিক্ষার্থীর শয়নেস্বপনে কেবল একটাই শব্দ—বিশ্ববিদ্যালয়। যে কোনো মূল্যে একটা সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হবে। এই যাত্রায় ব্যর্থ হলে যেন জীবনই বৃথা! উচ্চশিক্ষা ছাড়া ভবিষ্যত্ অন্ধকার। এত সংগ্রাম আর পরিশ্রমের পরে যেখানে আসা, সেখানে এসে আসলে শিক্ষা কতটুকু অর্জন করছে শিক্ষার্থীরা? বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা একত্র করলে মস্তিষ্কে একটা কম্পন যে কেউ অনুভব করবেন।
বিশ্ববিদ্যালয় উচ্চশিক্ষার সূতিকাগার। সেখানে চায়ের দোকানগুলো কেন সিগারেটের ধোঁয়ায় বসার অযোগ্য হয়ে থাকবে? সামান্য নির্জন জায়গা পেলেই কেন সেই জায়গাকে বানিয়ে ফেলতে হবে মাদকসেবনের আবাসস্থল? এই সব কি উচ্চশিক্ষার উপজাত দ্রব্য? বহিরাগতরা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঘুরতে এসে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্রদের দ্বারা ধর্ষিত হয়। উচ্চশিক্ষার এই আলো কোথায় লুকাব? কী দিয়ে ঢাকব এই লজ্জা? যে উচ্চশিক্ষা এই পশুত্ব দমিয়ে রাখতে পারল না, সেই উচ্চশিক্ষাকেই বা কীভাবে উচ্চশিক্ষা বলি? ক্যাম্পাসের শিঙাড়ার দোকানদার মামা কেন বাকির হাজার টাকা ফেরত পান না? উচ্চশিক্ষিত মানুষ হয়ে খেটেখাওয়া মানুষের এই টাকা লোকসান করে দিয়ে কোন উচ্চতর শিক্ষার পরিচয় দিচ্ছি আমরা?
এরকম শত শত গল্পের অবতারণা করা যেতে পারে। সব গল্পের উপসংহারে এই প্রশ্নটা কানে বাজবে, ‘শিক্ষা কোথায়?’ উচ্চশিক্ষিত হতে এসে পশুর চেয়েও নিচে নেমে গেলে কি শিক্ষা অর্জিত হলো? সার্টিফিকেট দিয়ে কী হবে? মানুষ হিসেবে তো কোনো সনদ পেলাম না আমরা! তাহলে দেশের সাধারণ মানুষের করের টাকায় চলা এসব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দেশের প্রকৃত লাভটা হলো কোথায়? এই ব্যর্থতার দ্বায়ভার কার?
লেখক : শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়