শিক্ষাবার্তা ডেস্ক, ঢাকাঃ রাজধানীসহ মেট্রোপলিটন সিটির মধ্যে যেসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আর্থিকভাবে সচ্ছল তাদের এমপিও বন্ধ করে যাদের জরুরি প্রয়োজন তাদের এমপিওভুক্ত করার উদ্যোগ নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে এসব প্রতিষ্ঠানের আর্থিক বিষয় খতিয়ে দেখতেও ব্যবস্থা নেবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, যেসব প্রতিষ্ঠান আর্থিকভাবে সচ্ছল তাদের এমপিও আমরা কেন রাখবো। যেসব প্রতিষ্ঠানের এটা জরুরি তাদের এমপিওভুক্ত করার ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাছাড়া অনেক প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত থাকতে চায় না, অধিক লাভের কারণে। সে বিষয়টিও ভাবা জরুরি।
প্রতিষ্ঠান ও ম্যানেজিং কমিটির দুর্নীতি
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি হলে প্রতিষ্ঠান-প্রধানের এমপিও বন্ধের ব্যবস্থা নেওয়া হয়। কিন্তু তাতেও দুর্নীতি কমছে না। আর এই দুর্নীতি বন্ধ করতে গেলে আদালতে মামলা করে সময়ক্ষেপণ করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান-প্রধান এবং ম্যানেজিং কমিটি। আর সে কারণে দুর্নীতি প্রমাণ হলেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এমপিও বন্ধ করার ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা বলেন, বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনার সার্বিক দায়িত্ব থাকে ম্যানেজিং কমিটি বা গভর্নিং কমিটির হাতে। সরকারি অর্থে প্রতিষ্ঠানের প্রায় সবটাই পরিচালিত হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যায় না। ফলে প্রতিষ্ঠানের এমপিও বন্ধ করলে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে।
শিক্ষার মানোন্নয়ন ও নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়ন
শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানায়, পরীক্ষায় কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না করলে এমপিও স্থগিত করা হয়। এই পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয় সেজন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করার উদ্যোগ শিগগিরই নেওয়া হবে। আর যেসব প্রতিষ্ঠান নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নে গাফিলতি দেখাবে, তাদের বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দেশের নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষা উন্নয়নে নতুন পরিকল্পনা করছে সরকার। পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শিগগিরই সরকারি ও বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা হবে।
জানতে চাইলে শিক্ষামন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, ‘শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনবল সবচেয়ে বেশি বিকেন্দ্রীকরণ করা। ৩০ হাজার মাধ্যমিক ও নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে মাত্র ৭ হাজার সরকারি। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানই বেসরকারি। আমরা টাকা দেই কিন্তু ব্যবস্থাপনার মধ্যে আমরা হাত ঢোকাতে পারি না। কিছু করলেই মামলা করা হয়। এখানে টেকনিক্যাল প্রবলেম (সমস্যা) আছে। টাকা সরকারের, দায় মন্ত্রণালয়ের, দোষ মন্ত্রণালয়ের অথচ পরিচালনায় সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই। বাস্তবতা হচ্ছে—শিক্ষা মন্ত্রণালয় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ডিরেক্ট পলিসি ইমপোজ করতে পারে না, যতক্ষণ তারা নিজেরা না করে। এখানে কাঠামোগত পরিবর্তন প্রয়োজন। যেসব প্রতিষ্ঠানের এমপিও প্রয়োজন নেই সেসব প্রতিষ্ঠানে তা বন্ধ করে দিতে হবে। আর যাদের এমপিও প্রয়োজন তাদের তা দিতে হবে।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/১৩/০২/২০২৪