মন্ত্রীসভা: শিক্ষায় পরিবর্তন না প্রত্যাবর্তন!
আল আমিন হোসেন মৃধা, ঢাকাঃ আগামী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৭টায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী বর্তমান ক্ষমতাসীন দল নতুন সরকার হিসেবে মন্ত্রীসভায় শপথ নেবে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। এর মাধ্যমে টানা চতুর্থবার সরকার গঠন করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারে ৪৫ জন মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রী আছেন। এর মধ্যে প্রধানমন্ত্রীসহ ২৪ জন পূর্ণ মন্ত্রী, ১৮ জন প্রতিমন্ত্রী ও তিনজন উপমন্ত্রী। এদিকে আগামীকাল বুধবার শপথ নেবেন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী সংসদ সদস্যরা।
নির্বাচন শেষে সবার চোখ এখন নতুন মন্ত্রিসভার দিকে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গঠন হতে যাওয়া এবারের মন্ত্রিসভায় নতুন মুখ আসছে কারা, কারাই বা পড়ছেন বাদ, কে পাচ্ছেন কোন দপ্তর- এসব নিয়ে চলছে আলোচনা। রদবদলে কেমন দাঁড়াবে নতুন মন্ত্রীসভার চেহারা, চলছে বিভিন্ন জল্পনা-কল্পনা।
সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, এবারের মন্ত্রীসভায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেতে পারেন সাবেক শিক্ষা সচিব ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাদিক। তিনি সুনামগঞ্জ-৪ আসন থেকে নৌকা প্রতীক নিয়ে বিজয়ী হন। তবে শিক্ষা মন্ত্রী ডাঃ দিপু মনিকে অন্য গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে রাখা হতে পারে বলে জানা গেছে। অন্যদিকে আলোচনায় আছেন সাবকে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদও।
মোহাম্মদ সাদিক ১৯৫৫ সালে সুনামগঞ্জ জেলার ধাড়ারগাঁও গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ২০১৬ সালের ২ মে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে যোগদান করেন। এর আগে তিনি এ কমিশনের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। মোহাম্মদ সাদিক সরকারের শিক্ষাসচিব ও বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট (বিয়াম) ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক এবং বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমির পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নজরুল ইনস্টিটিউটের প্রতিষ্ঠাতা সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
এদিকে বর্তমান মন্ত্রিসভার তিনজন প্রতিমন্ত্রী এবারের নির্বাচনে মনোনয়ন পাননি। আবার মনোনয়ন পেয়েও জয়ী হতে পারেননি আরও তিনজন। ফলে তাদের দপ্তরে নিশ্চিতভাবে দেখা যাবে নতুন মুখ। এছাড়া বর্তমান মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের কয়েকজনের প্রতিও বিরক্ত প্রধানমন্ত্রী। তাদের বিষয়ে নতুন করে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন তিনি।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, স্মার্ট মন্ত্রিসভা গঠন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। জানুয়ারি থেকেই এই মন্ত্রিসভার পথচলা শুরু হতে পারে। সব সময়ই নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের প্রাক্কালে অনেকেই বাদ পড়েন। এবারও সেই সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এবার অনেক নতুন মুখ আসবে।
সরকারের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান অর্থমন্ত্রী হতে পারেন। এ পদে তাঁর পাশাপাশি জামালপুর-৫ আসন থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদের নামও শোনা যাচ্ছে। তিনি অর্থমন্ত্রী না হলে বিদ্যুৎ ও জ্বালানিমন্ত্রী হতে পারেন, এমন আলোচনাও আছে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বর্তমানে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী। নতুন মন্ত্রিসভায় তিনি আরও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় পেতে পারেন। আরেক যুগ্ম সম্পাদক ডা. দীপু মনিও নতুন মন্ত্রিসভায় গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারেন।আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক মন্ত্রিসভায় থাকবেন কি না, তা নিয়েও গুঞ্জন আছে।
নতুন মন্ত্রিসভা কেমন হতে পারে জানতে চাইলে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে যে লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা আছে, তা পূরণে যাদের যোগ্য মনে করবেন, তাদের সমন্বয়েই মন্ত্রীসভা গঠন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০৯/০১/২০২৪