ফাটলসহ বিদ্যালয়ের ভবন হস্তান্তর ঠিকাদারের
নিজস্ব প্রতিবেদক, গাইবান্ধাঃ সংযোগস্থলের ফাটল অবস্থায় জেলার সুন্দরগঞ্জের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশব্লক ভবন হস্তান্তর করার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে। দ্বিতলবিশিষ্ট ওয়াশব্লকটিতে উপর থেকে নিচ পর্যন্ত বড় ধরনের ফাটল ধরায় দেখা দিয়েছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র বলছে, ২০২০-২১ অর্থবছরে উপজেলায় ১০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ওয়াশব্লক নির্মাণের কাজ শেষ হয় গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে। একেকটি ওয়াশব্লকের নির্মাণ ব্যয় ধরা হয় ১৪ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। নির্মাণের দায়িত্ব পায় ড্রিম ঢাকা প্রোপ্রাইটার লিমিটেড নামে একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। আর বাস্তবায়ন করেন মো. সাব্বির আহমেদ নামের এক স্থানীয় ঠিকাদার। বিদ্যালয় ভবনের সঙ্গে সংযুক্ত করে নির্মাণ করা হয় দ্বিতলবিশিষ্ট ওয়াশব্লকগুলো। কিন্তু কাজের মান নিম্ন হওয়ায় নির্মাণকালেই বেকাটারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ওয়াশব্লকের বিভিন্ন অংশে দেখা দেয় ফাটল।
সরেজমিন দেখা যায়, বিদ্যালয়টির দ্বিতল ভবনের সঙ্গে সংযুক্ত ওয়াশব্লকটির সংযোগস্থলের মেঝে, ছাদ এবং সানসেটের সব জায়গায় উপর থেকে নিচ পর্যন্ত বড় ধরনের ফাটল ধরেছে। ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে ওপরের সানসেট।
স্থানীয়দের অভিযোগ, করোনাকালে স্কুল বন্ধ থাকায় এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিয়মিত তদারকির অভাবে কাজের মান খারাপ করেছেন ঠিকাদার।
বিদ্যালয়ের সভাপতি বলছেন, ‘কাজের মান নিম্ন ও পানি দিয়ে কিউরিং না করায় ওই সময়েই ফাটল দেখা দিয়েছিল। কিন্তু কোনো কথাই আমলে নেননি সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার ও উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লাইজু বেগম বলছেন, ‘কাজ অত্যন্ত নিম্নমানের হয়েছে। কিউরিং করাও হয়নি। পানি দিতে বললে ঠিকাদার নাকি বলেছিলেন, তারা এমন মানের সিমেন্ট ব্যবহার করছেন যে, যাতে পানি দেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এ অবস্থায় হস্তান্তরের আগেই ওয়াশব্লকের সংযোগসহ মেঝে, ছাদ ও সানসেটে ফাটল ধরেছিল। হস্তান্তরপত্রে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করায় জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী ও ঠিকাদার বলেছেন, স্বাক্ষর করলে করেন না করলে নাই! কিন্তু দুর্ঘটনা ঘটলে এবং শিক্ষার্থীর কোনো ক্ষতি হলে এর দায় কে নেবেন? সেই প্রশ্নও রাখেন তিনি।’
কাজের মান নিম্ন হয়েছে–এমন অভিযোগ অস্বীকার করে সাব-ঠিকাদার সাব্বির আহমেদ জানিয়েছেন, ‘কলমের সঙ্গে ইটের গাঁথুনি অ্যাডজাস্ট হবে না। ওই জায়গাটা পুকুর ছিল, আমরা ভরাট করতে বলি, বলার ৬ মাস হলেও মাটি ভরাট করেনি, কাজ শুরু করার পরে তারা মাটি ভরাট করে দেয়।’
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সুন্দরগঞ্জের প্রকৌশলী খোকন রানার সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, ‘ওয়াশব্লক এবং বিদ্যালয়ের ভবন দুটো আলাদা হওয়ায় হস্তান্তরের সময়ই অবশ্য দুই ভবনের সংযোগে ফাটল দেখা দিয়েছিল। ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলেছি, তিনি দ্রুতই ফাটল মেরামত করে দেবেন।’
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/২৬/০২/২৩
দেশ বিদেশের শিক্ষা, পড়ালেখা সম্পর্কিত সর্বশেষ সংবাদ শিরোনাম, ছবি, ভিডিও প্রতিবেদন সবার আগে দেখতে চোখ রাখুন শিক্ষাবার্তায়