মঙ্গলবার, ২৪শে সেপ্টেম্বর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গাঃ জেলার দামুড়হুদায় সড়ক দুর্ঘটনায় কার্পাসডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজের শিক্ষক শফিকুল ইসলাম (৫০) নিহত হয়েছে। সে উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা কলোনীপাড়ার এরশাদ মাষ্টারের ছেলে।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল ৬ টার দিকে প্রতিদিনের ন্যায় দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গা-মুজিবনগর সড়কে সকালে হাটতে বের হয় । হাঁটতে হাঁটতে উপজেলার মুজিবনগর সড়কের ফকিরখালির নিকট পৌঁছালে একটি অজ্ঞাত গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগলে শিক্ষক শফিকুল পিচ রাস্তার ওপর ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যায়।

সকালে স্থানীয় লোকজন খবর পেয়ে দ্রুত ছুটে আসে ঘটনাস্থলে। শিক্ষক শফিকুলকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে নিজ বাড়িতে আনে। দূর্ঘটনায় তার মাথায় প্রচন্ড আঘাত পেলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যূ হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে। দুপুর ২ টার সময় জানাজা শেষে কার্পাসডাঙ্গা গ্রামের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর কবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, থানায় সড়ক পরিবহন আইনে একটি মামলা হয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২১/০৯/২০২৪

সিরাজগঞ্জঃ জেলার কাজিপুরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের এক দফা দাবিতে মানববন্ধন করেছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে দশটায় উপজেলার সরকারি প্রাথমিক সহকারী শিক্ষকদের ব্যানারে উপজেলা পরিষদের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

মানববন্ধনে উপজেলার ২৩৭ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা অংশগ্রহণ করেন। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগে যোগ্যতার প্রয়োজন হয় স্নাতক সমমান। অথচ বেতন গ্রেড ১৩তম।

অন্যদিকে সমযোগ্যতায় মাধ্যমিকের সহকারী শিক্ষক, পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টররা দশম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন। এইচএসসি সমমান ডিপ্লোমা পাসে নিয়োগপ্রাপ্ত নার্সদের বেতন ১০ম গ্রেডে। এসএসসি সমমানে কৃষি ডিপ্লোমায় নিয়োগপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি অফিসার বেতন পাচ্ছেন ১০ম গ্রেডে।

এছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা পদে নিয়োগ যোগ্যতা স্নাতক পাসে বেতন পাচ্ছেন ১০ম ও ৯ম গ্রেডে। অথচ সমযোগ্যতা সত্ত্বেও আমরা বৈষম্যের শিকার হচ্ছি। বক্তারা বৈষম্য নিরসনে অবিলম্বে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দশম গ্রেড বাস্তবায়নের দাবি জানান।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন- সহকারী শিক্ষক আজিজুর রহমান রাজু, হুমায়ুন কবীর বাবু, আব্দুল মমিন, তাহমিনা খাতুন, হেদায়তুল আলম, রাশেদুজ্জামান, লাইলী বেগম, মিজানুর রহমান, জাহাঙ্গীর আলম‌ প্রমুখ। এসময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলার ২৩৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২১/০৯/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, লালমনিরহাটঃ হত্যা মামলা থেকে খালাস পেয়ে দীর্ঘ ১৩ বছর পর চাকরি ফিরে পেলেন স্কুল শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক হিরু। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে লালমনিরহাটের আদিতমারীতে আদর্শপাড়া এম এইচ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন তিনি।

জানা যায় ২০১১ সালের ১৮ নভেম্বরে মন্তাজ আলীর মেয়ে রুমি বেগমের প্রেমিক জলধর বর্মণ মুসলিম পরিচয় দিয়ে প্রেম করেন। রাতে রুমি বেগমের সঙ্গে অসামাজিক কার্যকলাপ করতে এসে মন্তাজ আলীর কাছে ধরা পড়েন জলধর বর্মণ। তার পরের দিন শুক্রবার সকালে মন্তাজ গলা কেটে খুন করেন জলধরকে। এ ঘটনায় আদিতমারী থানায় ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন জলধরের বাবা শ্রী প্রেমানন্দ।

এ মামলায় চলতি বছরের গত ৯ জুন ১৪ জনকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। রায়ে ১ নম্বর আসামি মন্তাজ আলীর যাবজ্জীবন ও পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ মামলায় ওই এলাকার কয়েকজন শিক্ষক, ইউপি সদস্যকে আসামি করা হয়েছিল। যার মধ্যে প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক হিরু ও ছিলেন। আদালত তাকেও খালাস দেন।

মামলার আসামি হওয়ায় ৮৮ দিন জেলে থাকায় প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক হিরু ২০১২ সালে চাকুরী থেকে সামরিক বরখাস্ত হন। মামলা থেকে অব্যাহতি পাওয়ায় পর এ বছরের চলতি মাসের ১৯ সেপ্টেম্বর তিনি পুনরায় ওই বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদে বহাল হন।

আদিতমারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার এ.কে.এম আজিজুল হক বলেন, হত্যা মামলার আসামি থাকায় ২০১২ সালে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে সাময়িক বরখাস্ত হন আব্দুর রাজ্জাক হিরু। তার নামে আনিত অভিযোগ আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হওয়ায় পুনরায় তাকে তার পদে বহাল করা হয়েছে। তার ১৩ বছরের বকেয়া বেতন-ভাতা যেন তিনি পান সে ব্যবস্থা করা হবে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২১/০৯/২০২৪

রেজাউল ইসলাম: গত ১৭-ই সেপ্টেম্বর মাউশিতে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাগণ কর্তৃক সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনাটি দেশব্যাপী শিক্ষক লাঞ্ছনার মুকুটে আরো একটি পালক যোগ করেছে।৫-ই আগস্টের ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের পরে দেশের শিক্ষাখাতে সংস্কারের নামে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ব্যানারে কিছু শিক্ষার্থী বুঝেই হোক বা না বুঝেই হোক সারাদেশে শিক্ষক লাঞ্ছনার মতো ঘটনায় জড়িয়ে পড়েছিল। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে দুর্নীতিগ্রস্ত শিক্ষকদেরকে পদত্যাগে বাধ্য করার খবর আসছিল। কিন্তু সেই যাত্রায় শুধু দুর্নীতিগ্রস্ত শিক্ষকরাই মব জাস্টিসের শিকার হননি, তাদের সাথে অনেক নিরীহ ও নিরাপরাধ শিক্ষকও হয়রানি, অপমান ও লাঞ্ছনার শিকার হয়েছিলেন। ব্যাপারটা তখন এমন পর্যায়ে চলে গিয়েছিল যে, চাইলেই যে কেউ তখন শিক্ষকদেরকে অপমান ও হয়রানি করতে পারছিল। সেই ধারাবাহিকতায় এখন শিক্ষকদের উপর আরেক দফা হামলে পড়েছে দেশের উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাগণ। একবার ভেবে দেখুন, শিক্ষকদেরকে যারা বুকে আগলে রাখবেন, নিরাপত্তা দিবেন, তারাই শিক্ষকদের উপর শারীরিক আক্রমণ করছেন, তারাই শিক্ষকদের উপর উন্মত্ত জনতার মতো ঝাঁপিয়ে পড়ছেন!

আসলে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনা অন্য আর দশটি শ্রেণি-পেশার মানুষকে লাঞ্ছনা করার মতোই একটি সংক্রামক ব্যাধি। এটি দেশের যেকোনো একটি প্রান্তে ঘটলেই অতি দ্রুত তা দেশের অন্য প্রান্তেও একটি সংক্রামক রোগের মতো ছড়িয়ে পড়ে, যতক্ষণ না সেটির জন্য অপরাধী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি পায়। যেহেতু ক'দিন আগেই দেশের শত শত শিক্ষক এমন লাঞ্ছনা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছেন এবং অপরাধীরা তার জন্য শাস্তি পায়নি, সেহেতু আজ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাগণও শিক্ষকদের গায়ে হাত তোলার সাহস পেয়েছেন। কিন্তু, তখন যদি রাষ্ট্র শিক্ষক লাঞ্ছনাকারীদেরকে দেশের প্রচলিত আইনের আওতায় আনতে পারত, তবে আজ জাতিকে এমন লজ্জাজনক দৃশ্য দেখতে হতো না।

এখানে উল্লেখ করা দরকার যে, আজকে যেসকল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মাউশিতে জড়ো হয়ে সরকারি মাধ্যমিকের শ্রদ্ধেয় শিক্ষকদের গায়ে হাত তুলেছেন, তারা গত কয়েক দিন ধরেই সম্পুর্ণ বিধিবহির্ভূতভাবে 'জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা' পদে শতভাগ পদায়নের দাবিতে মাউশিতে হট্টগোল ও অরাজকতা সৃষ্টি করে আসছেন। তারা একপ্রকার মাউশির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে ও ভুল বুঝিয়ে সম্পূর্ণ বিধিবহির্ভূতভাবে এই পদগুলো তাদের করায়ত্তে আনার চেষ্টা করেছেন।

কিন্তু, দেশের মাধ্যমিক শিক্ষার বিধি অনুযায়ী, 'জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা' পদের ৮০ শতাংশ নিয়োগ পাবেন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ আর বাকী ২০ শতাংশ জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা নিয়োগ পাবেন সরাসরি পরীক্ষার মাধ্যমে।এই বিধি মোতাবেক, 'জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা' হিসেবে দেশের মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাগণের পদোন্নতি পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। বিধিতে তাদের পদোন্নতির বিষয়ে কোনো প্রকার কোনো উল্লেখও নেই। বস্তুত, 'উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা' নামক এই পদটি একটি ব্লক পোস্ট। এখানে এই কর্মকর্তাদের উপরের দিকে পদোন্নতির আর কোনো সুযোগ নেই। এখন,গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার পুলিশ-প্রশাসনের সাময়িক অসহযোগিতার কারণে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের দিক থেকে কিছুটা দুর্বল থাকায় সুযোগসন্ধানী এই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাগণ ঘোলা জলে মাছ শিকার করতে চেয়েছিলেন। তারা প্রশাসনের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে মাউশির কর্মকর্তাদের উপর চাপ প্রয়োগ করে 'জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা' নামক পদগুলো নিজেদের নামে বাগিয়ে নিতে চেয়েছিলেন যা অত্যন্ত দৃষ্টিকটু এবং বেআইনি।

এখানে আরো একটা বিষয় উল্লেখযোগ্য যে, আজকে যারা দেশের উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োজিত আছেন, তাদের বেশিরভাগই একসময় মাধ্যমিকে প্রকল্প কর্মকর্তা হিসেবে অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ পেয়েছিলেন। নিয়োগ বিধিতে উল্লেখ ছিল যে, প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলে এসকল কর্মকর্তার চাকরির মেয়াদও শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু, ১৯৯৬ সালে নিয়োগ পাওয়া এসকল কর্মকর্তার প্রকল্পের মেয়াদ অনেক আগে শেষ হয়ে গেলেও তারা প্রশাসনের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদেরকে মোটা অংকের উৎকোচ দিয়ে তাদের চাকরিকে স্থায়ী করে রাজস্ব খাতে ঢুকিয়ে নিয়েছেন। এটি আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ এবং একটি উন্নত ও মেধাভিত্তিক রাষ্ট্র গঠনের জাতীয় অভিলাষ ও আকাঙ্ক্ষার সাথে মশকরা করার শামিল।

অথচ, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণের নিয়োগ কোনো প্রকল্প থেকে হয় না। তাদের নিয়োগ দেয় স্বয়ং বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন। ২০১৭ সাল থেকে বিসিএস নন-ক্যাডাররাও সরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়ে আসছেন। অতএব, এখানে স্পষ্টভাবেই দেখা যাচ্ছে যে, সরকারি মাধ্যমিকের শিক্ষকগণ নূন্যতম যোগ্যতার স্বাক্ষর রেখেই এখানে চাকরিতে ঢুকছেন। তারা তাদের যোগ্যতা বলে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করতে যেমন দক্ষ , তেমনি তারা মাধ্যমিকের প্রশাসন চালাতেও সিদ্ধহস্ত। কিন্তু, সরাসরি প্রকল্প থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত এই উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাগণের নেই কোনো শ্রেণিকক্ষে পাঠদানের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতা। তারা না বোঝে শিক্ষকদের মনস্তত্ত্ব, না বোঝে বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া। তাহলে এই সমস্ত অযোগ্য ও অদক্ষ শিক্ষা কর্মকর্তাদের দিয়ে কীভাবে দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন সাধন করা সম্ভব হবে! কীভাবে তাদের হাত দিয়ে একটি উন্নত রাষ্ট্র বিনির্মাণ করা সম্ভব হবে! কীভাবে তারা দেশের মুখকে গোটা বিশ্বের কাছে উজ্জ্বল করবেন!

বাংলাদেশের সরকারি মাধ্যমিকের একজন সচেতন শিক্ষক হিসেবে আমি নিজেও বারবার এমন অযোগ্য ও অদক্ষ শিক্ষা কর্মকর্তাদের দ্বারা বৈষম্যের শিকার হয়ে আসছি। তারা না পারছেন আমার মেধার মূল্যায়ন করতে, না পারছেন শিক্ষক হিসেবে আমার প্রাপ্য সম্মানটুকু দিতে। তারা তাদের সীমাহীন অযোগ্যতার কারণে একজন উপযুক্ত শিক্ষকের নাম প্রশিক্ষণের তালিকায় ঢুকাতে পারেন না, তারা একজন যোগ্য শিক্ষকের নাম মাস্টার ট্রেইনারের তালিকায় ঢুকাতে পারেন না, তারা একজন যোগ্য শিক্ষককে বাছাই করতে পারেন না, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা সংক্রান্ত প্রোগ্রামগুলো যথাযথভাবে আয়োজন করতে পারেন না ইত্যাদি।

একটি দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় গতিশীলতা ও উন্নতি আনতে হলে সেদেশের শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের হতে হয় অনেক মেধাবী, সৃজনশীল, দক্ষ ও অভিজ্ঞ। শিক্ষকতা পেশার সাথে যারা জড়িত থাকেন না, তারা সাধারণত এই জায়গাগুলোতে ভালো করতে পারেন না। এজন্যই, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি, প্রোভিসি, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টর, প্রভোস্ট নামক পদগুলোতে এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বিভিন্ন পদে কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয় শিক্ষকদের মধ্য থেকেই। সরকার চাইলেই এসব পদে শিক্ষকদের বাইরে থেকে কর্মকর্তা নিয়োগ করতে পারে। কিন্তু ,সরকার তা করে না।কারণ, বাইরের কর্মকর্তারা এখানে কখনোই ভালো করতে পারেন না। এজন্য, বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতো শিক্ষা প্রশাসনের সকল স্তরে সাধারণত শিক্ষকরাই শিক্ষা প্রশাসনের দায়িত্ব পান। কিন্তু, বাংলাদেশের মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষায় ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির আড়ালে অনেক অযোগ্য ও অনভিজ্ঞ ব্যক্তি টাকার লেনদেন করে মাধ্যমিকের শিক্ষা প্রশাসনে ঢুকে পড়ে মাধ্যমিক শিক্ষার ভিত্তিকে আরো নড়বড়ে করে তুলছে।

লেখকঃ সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) পাইকগাছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, খুলনা

মতামত ও সাক্ষাৎকার কলামে প্রকাশিত নিবন্ধ লেখকের নিজস্ব। শিক্ষাবার্তা’র সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে মতামত ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক ও আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের;- শিক্ষাবার্তা কর্তৃপক্ষের নয়।”

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২১/০৯/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির আহ্বায়ক মো. সামশুল আলম  বলেন, এখনো প্রাথমিক শিক্ষকরা মানবেতর জীবনযাপন করে। এই শিক্ষকদের প্রতিদিন টিফিন ভাতা মাত্র ৬ টাকা। একজন শিক্ষককে প্রতিদিন ৬ থেকে ৭ টি ক্লাস নিতে হয়। ৬ টাকা টিফিন ভাতা হাস্যকর ও আমাদের সঙ্গে পরিহাসের শামিল।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশ (আইডিইবি) এ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিল অধিবেশনের সভাপতি ও বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির আহ্বায়ক মো. সামশুল আলম এ কথা বলেন।  এসময় বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতির কমিটি ঘোষণা করা হয়।

তিনি বলেন,  বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা এ্যাড. এম. রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুকে প্রধান উপদেষ্টা করে এগার সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা কমিটি ঘোষণা করা হয়। এ কমিটিতে সভাপতি দিদারুল ইসলাম, মহাসচিব এস. এম. আব্দুল গফুর ও কামাল হোসেন সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছে। এ কমিটির সদস্য ৭১ জন। আমরা শিক্ষকদের কল্যাণে এই কমিটি ঘোষণা করেছি।

এ কাউন্সিল অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রাথমিক শিক্ষক কল্যাণ সমিতি যুগ্ম আহ্বায়ক মোহাম্মদ এমদাদুল হক বাবলু, বিশেষ অতিথি ছিলেন সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মো. মতাহারুল ইসলাম, বাবু মৃগেন্দ্র মোহন সাহা প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করেন সাবেক দপ্তর সম্পাদক।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২১/০৯/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, পটুয়াখালীঃ ১০ম গ্রেড বাস্তবায়নে এক দফা দাবি নিয়ে সারাদেশের মতো পটুয়াখালীর গলাচিপায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছেন প্রাথমিকের সহকারি শিক্ষকরা।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টায় গলাচিপা সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে মানববন্ধনের আয়োজন করেন গলাচিপা উপজেলার প্রাথমিক সহকারি শিক্ষকরা।

মানববন্ধনে সহকারী শিক্ষকরা বলেন, প্রধান শিক্ষকের পরের ধাপেই সহকারী শিক্ষকদের বেতন নির্ধারণ করতে হবে। যতদিন পর্যন্ত আমাদের দাবি মেনে নেয়া না হবে, ততদিন আন্দোলন চলবে।

মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বোয়ালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মঈনুদ্দিন, রতনদীতালতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক উম্মে রুমান, সুহরি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. খবির হোসেন, বড়মুল্লাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. ফরহাদ তালুকদার, দক্ষিণ ছোটগাবুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো.আহসান প্রমুখ।

এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, সহকারি শিক্ষক -শিক্ষিকা মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২১/০৯/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ শেখ হাসিনা সরকারের আমলে বিচার বিভাগ থেকে অনেক অবিচার হয়েছে। বিচার বিভাগ থেকে যেন আর কোনো অবিচার না হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের ইনার গার্ডেনে নিম্ন আদালতের বিচারকদের উদ্দেশে প্রধান বিচারপতির অভিভাষণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ঢালাওভাবে মামলা দিয়ে হয়রানি করার সংস্কৃতি থেকে বের হতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকার মামলা দিয়ে মানুষকে হয়রানি সমর্থন করে না।

অন্তবর্তী সরকার মেধা, যোগ্যতা ও সততাকে মূল্যায়ন করে উল্লেখ করে আসিফ নজরুল বলেন, বর্তমান প্রধান বিচারপতি নিয়োগ তার বড় প্রমাণ।

বিচারবিভাগকে সবচেয়ে বেশি দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠান হওয়া উচিত উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আপনাদের দায়িত্ব নিতে হবে।’

আসিফ নজরুল বলেন, ‘গরিব দেশে সবচেয়ে বেশি থাকবে পাবলিক ট্রান্সপোর্ট। এখন যারা ব্যক্তিগত গাড়ি পাচ্ছে, আমি তা সমর্থন করি না। আমি নিজেও গাড়ি চাইনি। নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় গাড়িতে চড়তে আমাকে বাধ্য করা হয়েছে।’

অনুষ্ঠানে বিচার বিভাগের জন্য রোডম্যাপ ঘোষণা করবেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২১/০৯/২০২৪

তুহিন ওয়াদুদঃ বিসিএস ক্যাডারের পদোন্নতির নৈরাজ্য আজও দূর করা সম্ভব হয়নি। বিসিএসে এক ক্যাডারের সঙ্গে অন্য ক্যাডারের যে বৈষম্য, তা সরকারি চাকরির এক লজ্জাজনক অংশ। একই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, একই পরীক্ষা, একই সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে একই দিনে যোগদান করা কর্মকর্তাদের মধ্যে যে বৈষম্য, তাকে কোনোভাবে সুস্থ পদ্ধতি বলা যায় না। এই অসুস্থ পদ্ধতি দূর করার কোনো চেষ্টা আগের কোনো সরকার করেনি।

রাজনৈতিক সরকারগুলোর ক্ষেত্রে দেখা গেছে, ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য বা ভিন্নমত বন্ধ করতে সরকারকে যে ক্যাডারের কর্মকর্তারা যতটা সহায়তা করতে পারেন, সেই ক্যাডার সরকারের কাছে তত বেশি গুরুত্বপূর্ণ। বিসিএস প্রশাসন ও পুলিশ এই বাস্তবতায় রাজনৈতিক সরকারের সবচেয়ে প্রাধিকারভুক্ত দুই ক্যাডার।

এই দুই ক্যাডারের কর্মকর্তারা তরতর করে পদোন্নতি পান। কোনো কোনো ক্যাডারের সঙ্গে উল্লিখিত দুই ক্যাডারের এতটাই বৈষম্য করা হয় যে আত্মমর্যাদাসম্পন্ন কর্মকর্তারা নিজেদের পরিচয় দিতে লজ্জা বোধ করেন। লজ্জায়–অপমানে ক্ষেত্রবিশেষে এই বৈষম্য মানসিক বৈকল্যের কারণ হয়ে ওঠে। ২০ বছরে মাত্র একবার পদোন্নতি পাওয়ার রেকর্ড আছে। ১৭ বছরে পদোন্নতি হয়নি এমনও আছে। কোনো পদোন্নতি ছাড়াই অবসরে যাওয়ার মতো ঘটনাও পাওয়া যায়।

রাজনৈতিক সরকারের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্যাডার প্রশাসন। কিন্তু প্রায় ১৫ বছরে ক্ষেত্রবিশেষে এই ক্যাডারের চেয়ে পুলিশ ক্যাডার বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এরা সরকারের সব রকম অনিয়ম-দুর্নীতির রক্ষাকবচ হয়ে উঠেছিল। মাঠে যেকোনো বিরুদ্ধ মতকে দমানোর জন্য পুলিশ যথেষ্ট ছিল। বিনা ভোটে ক্ষমতায় আসীন হওয়ার জন্য নেওয়া হয়েছে পুলিশি সহায়তা। সরকারের পুলিশ–নির্ভরতা যেকোনো সময়ের চেয়ে গত ১৫ বছরে বেশি হয়েছে।

এই নির্ভরতার সুযোগ নিয়ে তারাও প্রশাসন ক্যাডারের মতো নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়ে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। পুলিশ আর প্রশাসন ক্যাডার সরকারের সঙ্গে থাকলে আর কোনো ক্যাডারের কথা না ভাবলেও চলে। এই ভাবনা যে চূড়ান্ত সত্য নয়, ২০২৪–এর ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থান তা প্রমাণ করেছে।

কেবল পদোন্নতির ক্ষেত্রে নয়, অন্য যেকোনো সুবিধার সর্বোচ্চটা দেওয়া হয় এই দুই ক্যাডারভুক্ত কর্মকর্তাদের। প্রয়োজনের অতিরিক্ত সুবিধাও চালু করা হয়েছে। যেমন প্রশাসন ক্যাডারের উপসচিবদের (পঞ্চম গ্রেডভুক্ত) ব্যক্তিগত গাড়ি কেনার জন্য সুদমুক্ত ৩০ লাখ টাকা ঋণ দেওয়া হয়। গাড়ির চালক, তেলের খরচ, গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ মাসিক আরও ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হচ্ছে। সুবিধা পেলে একই গ্রেডের সব কর্মকর্তার পাওয়া উচিত, নয়তো কারও নয়।

বর্তমান বৈষম্যবিরোধী সরকার দায়িত্ব নিয়েই এই দুই ক্যাডারের ভেতরের বৈষম্য দূরীকরণে হাত দিয়েছে। এই দুই ক্যাডারের সঙ্গে অন্য ক্যাডারের বৈষম্য দূরীকরণ কিংবা অন্য ক্যাডারের মধ্যে যে বৈষম্য আছে, সেটা নিরসনে উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।

বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারের হাতে অন্যান্য ক্যাডারের পদোন্নতি নির্ভর করার কারণেও বৈষম্য বাড়ছে। যেকোনো ক্যাডারের কর্মকর্তা সর্বোচ্চ পদোন্নতি পাওয়ার পর যে স্থানে উন্নীত হন, তার চেয়ে দুই থেকে চার ধাপ ওপরে যান প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা।

উদাহরণ দেওয়া যাক: শিক্ষা ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদোন্নতি অধ্যাপক ৪ নম্বর গ্রেড। স্বাস্থ্য ক্যাডারের সর্বোচ্চ পদোন্নতি অধ্যাপক ৩ নম্বর গ্রেড। শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তাদের চেয়ে চার ধাপ, স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের চেয়ে তিন ধাপ ওপরে প্রশাসন ক্যাডারের অবস্থান। অপরাপর ক্যাডারেও একই বৈষম্য। স্বাস্থ্য ক্যাডারের ৫ শতাংশ চিকিৎসকও ৩ নম্বর গ্রেডে যেতে পারেন না। শিক্ষা ক্যাডারের তো ৪ নম্বরের ওপরে যাওয়ার কোনো পথই নেই।

বর্তমানে বৈষম্য দূর করতে হলে অনেক ক্যাডারে এক বা একাধিক পদোন্নতি দিতে হবে। শতভাগ সমতা বিধান করা কঠিন। কারণ, সব ক্যাডারে সমসংখ্যক পদোন্নতি হয় না। তারপরও সব ক্যাডারের সমতা বিধানে সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব।

বিসিএস চাকরির একটি রীতি ব্যাচভিত্তিক জ্যেষ্ঠতা নির্ধারণ করা। যেমন ২৬তম বিসিএস ছিল বিশেষ বিসিএস। ২৫তম বিসিএসের আগে ২৬তম বিসিএসের নিয়োগ হয়েছিল। ২৫তম বিসিএসের নিয়োগ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ২৫তম বিসিএস কর্মকর্তারা জ্যেষ্ঠতা পেতে শুরু করেন। ২৬তম বিসিএস কর্মকর্তারা জুনিয়র হন। অর্থাৎ চাকরিতে বিসিএসের ক্রম গুরুত্বপূর্ণ। একই বিসিএসের সবার পদোন্নতির পরে পরবর্তী কর্মকর্তাদের পদোন্নতি দিতে হবে। পদশূন্য থাকার বিষয়টি যেমন এই দুই ক্যাডারে অনুসরণ করা হয় না, অন্যদের ক্ষেত্রেও তা–ই করতে হবে।

সব মন্ত্রণালয়ের সচিব হন প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তা, এটিও বন্ধ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাকে সর্বোচ্চ পদে আসীন করতে হবে। একই বিসিএসের কেউ অবসরে যাবেন চতুর্থ, পঞ্চম বা ষষ্ঠ গ্রেডে আর কেউ কয়েক গ্রেড ওপরে সচিব কিংবা সিনিয়র সচিব পদে। এই বৈষম্য কি দূর হবে না? একই বিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করে যাঁরা উত্তীর্ণ হয়ে একই দিনে ক্যাডারভুক্ত হয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেককে একই সঙ্গে পদোন্নতি দিতে হবে। এর জন্য প্রয়োজনে পদ্ধতি বদলাতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষেই তা সম্ভব।

লেখকঃ অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়

মতামত ও সাক্ষাৎকার কলামে প্রকাশিত নিবন্ধ লেখকের নিজস্ব। শিক্ষাবার্তা’র সম্পাদকীয় নীতির সঙ্গে মতামত ও সাক্ষাৎকারে প্রকাশিত মত সামঞ্জস্যপূর্ণ নাও হতে পারে। প্রকাশিত লেখাটির ব্যাখ্যা বা বিশ্লেষণ, তথ্য-উপাত্ত, রাজনৈতিক ও আইনগতসহ যাবতীয় বিষয়ের দায়ভার লেখকের;- শিক্ষাবার্তা কর্তৃপক্ষের নয়।”

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২১/০৯/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামেরযুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আট শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ছাড়া ওই হলের প্রাধ্যক্ষকে অপসারণ করা হয়েছে।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ অধিদপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ফজলুল হক মুসলিম হলের ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কারণে অভিযুক্ত আটজন ছাত্রের আবাসিক সিট হল প্রশাসন বাতিল করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়, 'ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শাহ্ মো. মাসুমকে পরিবর্তন করে ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. ইলিয়াস আল-মামুনকে হলটির নতুন প্রভোস্ট হিসেবে নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।'

এছাড়াও অভিযুক্ত ৮ শিক্ষার্থীকে বহিষ্কারের পর এ ঘটনায় আর কোন শিক্ষার্থী জড়িত আছে তা খতিয়ে দেখতে একটি কেন্দ্রীয় তদন্ত কমিটি গঠন করার উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। প্রক্টর অফিস থেকে 'গত ১৮.০৯.২০২৪ তারিখ ফজলুল হক মুসলিম হলে সংঘটিত দুঃখজনক ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক এখন পর্যন্ত গৃহীত পদক্ষেপসমূহ' শীর্ষক এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, 'ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শাহবাগ থানায় মামলা দায়ের করেছে। অভিযুক্ত ৬ শিক্ষার্থীকে ঘটনা সংঘটিত হওয়ার ৬ ঘণ্টার মধ্যে প্রক্টরিয়াল টিমের সহায়তায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছে এবং বর্তমানে জেল হাজতে আছে।

১৯ তারিখ সকালেই হল প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে একটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।

ঘটনার ২০ ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় এবং উক্ত কমিটি ইতিমধ্যে একটি রিপোর্ট প্রদান করেছেন। রিপোর্টের ভিত্তিতে হল প্রশাসন অভিযুক্ত ৮ শিক্ষার্থীর আসন বাতিল করেছে।'

এতে আরো বলা হয়, 'বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অভিযুক্ত ৮ শিক্ষার্থীকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে। অন্য কোনো শিক্ষার্থী জড়িত আছে কিনা তা জানার জন্য আরো একটি কেন্দ্রীয় তদন্ত কমিটি গঠন করার উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এর পাশাপাশি পুলিশ প্রশাসনও প্রচলিত আইনে তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে।

জরুরি সিন্ডিকেট সভায় এরকম ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকানোর জন্য পরবর্তী পদক্ষেপ ও করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।'

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২১/০৯/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের প্রাইমারি টিচার্স ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (পিটিআই) লাগোয়া পরীক্ষণ বিদ্যালয়ের শিক্ষক (১০ম গ্রেড) পদে সংরক্ষিত প্যানেল/অপেক্ষমাণ মেধা তালিকা থেকে প্রার্থী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

 বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, পরীক্ষণ বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে প্যানেল থেকে ২৫ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নির্বাচিত প্রার্থীদের রেজিস্ট্রেশন নম্বর পিএসসির ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

নিয়োগের আগে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ প্রার্থীদের সব সনদ, ডকুমেন্টস ও কাগজপত্রের সত্যতা যাচাই করে চূড়ান্ত নিয়োগ দেবেন।

সাময়িকভাবে মনোনিত এসব প্রার্থীর পরবর্তীকালে কোনো যোগ্যতার বা কাগজপত্রাদির ঘাটতি ধরা পড়লে, দুর্নীতি, সনদ জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়া গেলে, অসত্য তথ্য প্রদান করলে বা কোনো উল্লেখযোগ্য ভুলত্রুটি পাওয়া হলে উক্ত প্রার্থীর সাময়িক মনোনয়ন বাতিল বলে করা হবে। ক্ষেত্রবিশেষে প্রার্থীকে ফৌজদারি আইনে সোপর্দ করা হবে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২১/০৯/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) কর্তৃক প্রণীত ও মুদ্রিত সব পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনে সমন্বয় কমিটি গঠন করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। গত ১৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সহকারী সচিব (সরকারি মাধ্যমিক-২) মো. ইয়ানুর রহমান স্বাক্ষরিত অফিস আদেশ থেকে এ তথ্য জানা যায়।

অফিস আদেশে বলা হয়, সমন্বয় কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. খম কবিরুল ইসলামকে এবং সদস্যসচিব করা হয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব মো. ইয়ানুর রহমানকে।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—শিক্ষা গবেষক রাখাল রাহা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন, ঢাবির বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, ঢাবির সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সামিনা লুৎফা নিত্রা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাসুদ আখতার খান, এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান, এনসিটিবি শিক্ষাক্রমের সদস্য অধ্যাপক রবিউল কবীর চৌধুরী এবং এনসিটিবি প্রাথমিক শিক্ষাক্রমের সদস্য অধ্যাপক এ এফ এম সারোয়ার জাহান।

কমিটির কার্যপরিধিতে বলা হয়েছে, পাঠ্যপুস্তকে শিক্ষাক্রমের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রতিফলিত হয়েছে কি না, তা যাচাই; প্রণীত পাণ্ডুলিপিতে প্রয়োজনীয় সংশোধন, সংযোজন ও পরিমার্জন; বিষয়বস্তু, লেখার উদ্দেশ্য, লেখার মান, রচনার পরিমাণ, ভাষা ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করে পাণ্ডুলিপিকে প্রকাশযোগ্য ও মানসম্পন্ন করে তোলা; রাষ্ট্রীয় দর্শন, ইতিহাস ও ঐতিহ্য, সামাজিক মূল্যবোধ, ধর্মীয় মতাদর্শ ও নৈতিক মূল্যবোধ যথাযথ আছে কি না, তা যাচাই করা।

এ ছাড়া শিক্ষাক্রমের নিরিখে প্রদত্ত বা নির্দেশিত শিখন-শেখান কৌশলের সঙ্গে পাঠ্যপুস্তকে প্রদত্ত টাস্ক, অ্যাক্টিভিটি প্রভৃতির সামঞ্জস্য পর্যবেক্ষণ; পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তু এবং প্রদত্ত ছবি, চার্ট, ডায়াগ্রাম, তথ্য ইত্যাদি সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে স্পর্শকাতর বলে প্রতীয়মান হলে সেগুলো চিহ্নিত করে তার বিপরীতে মতামত প্রদান; পাঠ্যপুস্তক সংশোধন ও পরিমার্জনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব কার্যক্রম সমন্বয় করা।

এর আগে, গত ১ সেপ্টেম্বর নানা কারণে আলোচিত-সমালোচিত নতুন শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নযোগ্য নয় বলে এক প্রজ্ঞাপনে জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে ২০২৬ সাল থেকে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রমের আলোকে পাঠদান করানো হবে বলে জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, শিক্ষাবিদ, শিক্ষাক্রম বিশেষজ্ঞ, প্যাডাগগ, মূল্যায়ন বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশেষজ্ঞ, সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রশাসক, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও অভিভাবক প্রতিনিধিগণের সহযোগিতায় ২০২৫ সালে পরিমার্জিত শিক্ষাক্রম চূড়ান্ত করা হবে, যা ২০২৬ সাল থেকে পরিপূর্ণরূপে কার্যকর করা হবে।

একই সঙ্গে, শিক্ষার্থীদের পাঠদান ও মূল্যায়ন শিক্ষাক্রম-২০১২-এর আলোকে করারও ঘোষণা দেওয়া হয়। এর ফলে শিক্ষাক্রম পরিমার্জন হওয়ার আগ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের আগের মতো সৃজনশীল পদ্ধতিতে দেওয়া হবে পাঠদান, পরীক্ষায় বসতে হবে শিক্ষার্থীদের।

গত বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে শিক্ষাক্রম-২০২২ বাস্তবায়ন করা হয়। এই শিক্ষাক্রম নতুন শিক্ষাক্রম হিসেবে পরিচিত। গত বছর প্রথম, ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে এ শিক্ষাক্রম বাস্তবায়ন করা হয়। আর চলতি বছর বাস্তবায়ন করা হয় দ্বিতীয়, তৃতীয়, অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে। এই শিক্ষাক্রমের মূল্যায়ন পদ্ধতিতে বছর শেষে পরীক্ষার ব্যবস্থা ছিল না।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২১/০৯/২০২৪

জামাল উদ্দীন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদকঃ অবিলম্বে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ভিসি নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও মহাসড়ক অবরোধ করে সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১ টায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা থেকে মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় প্রায় পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী মিছিলে অংশ নেয়।

পরে মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটক সংলগ্ন কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে। সেখানে তারা প্রায় দুই ঘন্টা অবস্থান করে। এতে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক দীর্ঘ ১০ কিলোমিটার পথ যানজটের সৃষ্টি হয়।

বিক্ষোভ সমাবেশে- রেকর্ড দেখে ভিসি দিন দুর্নীতির খবর নিন, ক্লিন ইমেজের ভিসি চাই, ক্লাস চাই পরীক্ষা চাই অবিলম্বে ভিসি চাই, সেশনজটের কবর চাই, সংস্কার মনা ভিসি চাই, সৎ ও সাহসী ভিসি চাই, ইবির আঙিনায় দুর্নীতির ঠাঁই নাইসহ বিভিন্ন প্ল্যাকার্ড নিয়ে অংশ নেন শিক্ষার্থীরা।

এসময় শিক্ষার্থীরা বলেন, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হলেও ইবিতে এখনো কেন দেওয়া হলো না? সরকারকে বলে দিতে চাই কিভাবে দাবি আদায় করতে হয় সেটা ছাত্রসমাজ ভালো করে জানে। সুতরাং আমাদেরকে আরো কঠোর আন্দোলন যেতে বাধ্য করবেন না। অতি শীঘ্রই একজন যোগ্য, সৎ, ন্যায়পরায়ণ ও একাডেমিশিয়ান, দুর্নীতিমুক্ত এবং শিক্ষার্থীবান্ধব উপাচার্য নিয়োগের দাবি জানাচ্ছি।

সমন্বয়ক এস এম সুইট বলেন, আমরা অনতিবিলম্বে উপাচার্য নিয়োগের দাবি জানাচ্ছি। তবে স্পষ্ট করে বলে দিতে চাই, যে উপাচার্য শিক্ষার্থীদের বিরোধীতা করবে এমন উপাচার্য আমরা চাই না। এখন সংস্কারের সময় পিছনে তাকানোর সুযোগ নেই। এমনকি দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত কেউ উপাচার্য হলে তাকে ক্যাম্পাসে ঢুকতে দেওয়া হবে না। উপাচার্য নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত আমরা এই আন্দোলন চালিয়ে যাবো।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/২১/০৯/২০২৪

magnifiermenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram