শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বার্তা ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য সংবিধানসহ জাতীয়ভিত্তিক কিছু সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। সুষ্ঠু নির্বাচনব্যবস্থা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠাকে কেন্দ্রে রেখে ইতোমধ্যে প্রাথমিকভাবে ছয় জনকে প্রধান করে ৬টি কমিশন গঠন করা হয়েছে। এসব কমিশন আগামী ১ অক্টোবর থেকে কাজ শুরু করবে।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষ্যে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস এ কথা জানিয়েছেন।

সংস্কারের লক্ষ্যে গঠিত ৬ কমিশনের প্রধান যারা:

নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ড. বদিউল আলম মজুমদার, পুলিশ প্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে কাজ করবেন সরফরাজ চৌধুরী, বিচারবিভাগ সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন বিচারপতি শাহ আবু নাঈম মমিনুর রহমান, দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন ড. ইফতেখারুজ্জামান, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান হিসেবে ড. শাহদীন মালিক দায়িত্ব পালন করবেন।

ড. ইউনূস আরও জানিয়েছেন, এসব কমিশনের অন্য সদস্যদের নাম কমিশন প্রধানদের সাথে আলোচনা করে ঠিক করা হবে। কমিশনগুলোর আলোচনা ও পরামর্শসভায় উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, ছাত্র-শ্রমিক-জনতা আন্দোলনের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।

তিনি বলেন, পূর্ণাঙ্গভাবে গঠিত হওয়ার পর কমিশন আনুষ্ঠানিকভাবে তার কাজ আগামী পহেলা অক্টোবর থেকে শুরু করতে পারবে বলে আশা করছি এবং এটি পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে সম্পন্ন হবে বলে আমরা ধারণা করছি। কমিশনের রিপোর্টের ভিত্তিতে সরকার পরবর্তী পর্যায়ে প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে পরামর্শসভার আয়োজন করবে। চূড়ান্ত পর্যায়ে ছাত্র সমাজ, নাগরিক সমাজ, রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি, সরকারের প্রতিনিধি নিয়ে ব্যাপকভিত্তিক তিন থেকে সাত দিনব্যাপী একটি পরামর্শসভার ভিত্তিতে সংস্কার ভাবনার রূপরেখা চূড়ান্ত করা হবে। এতে এই রূপরেখা কীভাবে বাস্তবায়ন হবে তার একটি ধারণাও দেওয়া হবে।

তিনি আরও বলেন, এই আয়োজন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বার্তা বাস্তবায়ন এবং রাষ্ট্র পুনঃনির্মাণ তাগিদের ঐক্যবন্ধনে গোটা জাতিকে শক্তিশালী ও আশাবাদী করে তুলবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১১/০৯/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের (কলেজ) এমপিওভূক্ত ল্যাব সহকারী পদের গ্রেড বৈষম্য দূরীকরণ (১৪ তম গ্রেড দাবি) এবং যৌক্তিক কর্ম নীতিমালা প্রনয়ণের দাবিতে শিক্ষা উপদেষ্টা ও শিক্ষা সচিবের নিকট স্বারকলিপি প্রদান করেছেন  বাংলাদেশ ল্যাব সহকারী ঐক্য পরিষদ।

বুধবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ ও শিক্ষা সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদ এর নিকট স্বারকলিপি পেশ করে সংগঠনটি। স্বারকলিপি প্রদানকালে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ল্যাব সহকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি পরিতোষ রায় এবং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুর রশিদ।

আরও পড়ুনঃ বেসরকারি কলেজের ল্যাব সহকারীদের প্রাপ্য ছুটিতেও বৈষম্য

স্বারকলিপিতে তারা জানান, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ নিয়ন্ত্রনাধীন বেসরকারি এমপিওভূক্ত কলেজের ১৮তম গ্রেড ভূক্ত ল্যাব সহকারী (পদার্থ বিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান, আইসিটি) বিষয়ে কর্মরত আছি। প্রথমেই আমরা পরম শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দেশের জন্য যেসব ছাত্র- জনতা জীবন দিয়ে দেশকে বৈষম্য মুক্ত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। আপনার সদয় অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, সর্বশেষ জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা- ২০২১ অনুসারে এমপিওভুক্ত কলেজের ল্যাব সহকারীদের বেতন গ্রেড ১৮তম হলেও মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে ল্যাবরেটরি সহকারীদের বেতন গ্রেড যথাক্রমে ১০ম, ১১তম, ১৪তম এবং বিভিন্ন অধিদপ্তর ও মন্ত্রনালয়ের ল্যাব সহকারীদের সর্বনিম্ন বেতন গ্রেড ১৬তম যা চরম বৈষম্য লক্ষনীয়। অন্যদিকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ কর্তৃক জারিকৃত সর্বশেষ পরিপত্র যাহার স্মারক নং- ৩৭,০০,০০০০,০৭৪.০০২.০০২.২০১৬.১০৬, তারিখ- ১০/০১/২০১৪ খ্রিঃ অনুযায়ী ল্যাব সহকারীদের ৩য় শ্রেণিতে অর্ন্তভূক্ত করা সত্ত্বেও সর্বশেষ জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা- ২০২১ এখনও সংশোধন করে গ্রেড নির্ধারণ করা হয়নি। এতে করে ল্যাব সহকারীরা চরম বৈষম্যের স্বীকার হচ্ছে। আবার অন্যদিকে আমাদের সঠিক কর্ম নীতিমালা না থাকার কারনে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ল্যাব বহির্ভূত অনেক কাজ করানো হচ্ছে। এতে করে ল্যাবের কাজে ব্যঘাত ঘটছে। অতএব মহোদয়ের সমীপে আকুল আবেদন এই যে, আমাদের এই বৈষম্য দূর করে যথাযথ বিবেচনা করে নিচে বর্ণিত দাবি সমূহ দ্রুত বাস্তবায়ন করার জন্য আপনার নিকট বিনীতভাবে অনুরোধ করছি।

আরও পড়ুনঃ নানা বৈষ্যমের শিকার এমপিওভুক্ত কলেজের ল্যাব সহকারীরা

স্বারকলিপিতে তারা নিন্মলিখিত দাবি সমূহ উল্লেখ করেন। 

১। বিভিন্ন অধিদপ্তরের সাথে সমন্বয় করে ল্যাব সহকারীদের নূন্যতম বেতন গ্রেড-১৪ প্রদান করা।
২। বিভিন্ন অধিদপ্তরের সাথে সমন্বয় করে ল্যাব সহকারীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা নূন্যতম এইচ,এস,সি পাস করা।
৩। ল্যাব সহকারীদের জন্য প্রযোজ্য সম্মান জনক কর্ম নীতিমালা প্রদান ।
৪। আমরা যে একাডেমিক তা কর্ম নীতিমালায় উল্লেখ করা।
৫। ইতোপূর্বে নিয়োগ প্রাপ্ত সকল ল্যাব সহকারীদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে সমপর্যায়ের গ্রেড প্রদান করা।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১১/০৯/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নতুন মহাপরিচালকের (ডিজি) দায়িত্ব পেয়েছেন ড. মো. আব্দুল হাকিম। একই সঙ্গে আবু নূর মো. শামসুজ্জামানকে অধিদপ্তরটির অতিরিক্ত মহাপরিচালকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তাকে এ পদে পদায়ন করা হয়। এতে সই করেছেন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মোহাম্মদ মামুন শিবলী।

প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নতুন ডিজি আব্দুল হাকিম জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) ছিলেন। আর অতিরিক্ত মহাপরিচালক হওয়া আবু নূর মো. শামসুজ্জামান শ্রম ও কর্মসংস্থা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের দায়িত্বে ছিলেন।

এর আগে দুপুরে অধিদপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের টানা ১৫ দিনের আন্দোলনের মুখে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের (ডিজি) পদ থেকে মো. আব্দুস সামাদকে সরিয়ে দেয় সরকার। বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে তাকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়।

উপসচিব মো. আলমগীর কবিরের সই করা প্রজ্ঞাপনে তাকে ওএসডি করা হয়। জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।

জানা গেছে, গত ২৭ আগস্ট থেকে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবদুস সামাদের অপসারণের দাবিতে আন্দোলন করছিলেন অধিদপ্তরের পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী।

তাদের অভিযোগ, গত জুলাই মাসে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হিসেবে যোগদানের পর থেকেই আবদুস সামাদ কর্তৃত্ববাদী আচরণ ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। এতে অধিদপ্তরের সম্মানহানি ও মর্যাদা ক্ষুণ্ন হচ্ছিল।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১১/০৯/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ শিক্ষক নিয়োগের বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের ফল প্রত্যাশী প্রার্থীরা। তারা বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি জারি প্রস্তাবকে ‘অবৈধ’ ও অযৌক্তিক আখ্যা দিয়ে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করে ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি জারি দাবি জানিয়েছেন।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজুভাস্কর্যের সামনে মানববন্ধন করে এ দাবি জানান ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের ফল প্রত্যাশী প্রার্থীরা।

এ মানববন্ধনে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার ফল প্রত্যাশীদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন সাদিক, মিলন, মুন্নাসহ আরও অনেকে। তারা বলেন, বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ) ১-১২তম মেয়াদোত্তীর্ণ সনদধারী এবং ৩৫ ঊর্ধ্ব লোকদের নিয়োগের জন্য যে বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তির অযৌক্তিক প্রস্তাব করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন প্রার্থীদের সার্কুলার চলমান রেখে আরেকটি গণবিজ্ঞপ্তি সুপারিশ করা সম্পুর্ন অবৈধ এবং এনটিআরসিএর আইনের বিরোধী।
প্রার্থীরা খুব দ্রুত ১৮তমদের লিখিত পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে মৌখিক পরীক্ষা সম্পন্ন করে ষষ্ঠ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার দাবি জানায়।

প্রার্থীরা বলেন, তরুণ সমাজকে উপেক্ষা করে যদি কোন বিজ্ঞপ্তি দেয় তাহলে ৫ আগস্টের কথা স্মরণ করতে হবে।

প্রার্থীরা জানান, বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি জারির প্রস্তাব প্রত্যাহারের দাবিতে দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ এবং বিভাগীয় শহরসহ রংপুর, বরিশাল, বগুড়া, দিনাজপুর,ময়মনসিংহ, কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন করেছেন ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধনের ফল প্রত্যাশীরা।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১১/০৯/২০২৪ 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্তমানের ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাক্রম পরিবর্তন করা হয়েছে। বই সংশোধন এবং পরিমার্জনের কাজ শেষ পর্যায়ে আছে। এ সংস্কারের কাজ অব্যাহত থাকবে।তরুণ প্রজন্মের ভবিষ্যত যেনো উজ্জ্বল হয় সেটা নিশ্চিত করতে শিক্ষা ব্যবস্থার দিকে আমাদের পূর্ণ নজর রয়েছে।

বুধবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। গত ৮ আগস্ট সরকার গঠনের পর এটি তারা দ্বিতীয় বার জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ।

এরই ভাষণে পরিবর্তিত পরিস্থিতি, বন্যা পরিস্থিতি, বিদ্যামান বিভিন্ন কালা কানুন, গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিরতা উদ্যাদি বিষয়ের পাশাপাশি সরকারের আগামী দিনের কিছু পরিকল্পনাও তুলে ধরেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ইতোমধ্যে প্রথম শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বর্তমানের ত্রুটিপূর্ণ শিক্ষাক্রম পরিবর্তন করা হয়েছে। বই সংশোধন এবং পরিমার্জনের কাজ শেষ পর্যায়ে আছে। এ সংস্কারের কাজ অব্যাহত থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর উচ্চ প্রশাসনিক পদগুলো পূরণ করে শিক্ষা কার্যক্রম স্বাভাবিক করার কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিচালনা বোর্ডে দখলদারিত্বের রাজনীতি বন্ধ করার ব্যবস্থাও নেয়া হয়েছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের প্রথম মাসে দেশের প্রায় সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্য মহোদয়গণ পদত্যাগ করেছেন। উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে এটা বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি করেছে। প্রথম মাসে আমরা ক্রমাগতভাবে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য এমন উপাচার্য এবং উপ-উপাচার্য নিয়োগ দেয়ার কাজ শুরু করেছি। এর ফলে সকল সরকারি এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নতুন উদ্যমে কাজ শুরু করার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, অতীতে শুধু আওয়ামী মতাদর্শী না হওয়ার কারণে ২৮তম থেকে ৪২তম বিসিএস পর্যন্ত বিপিএসসি কর্তৃক সুপারিশকৃত অনেক প্রার্থী নিয়োগ বঞ্চিত হয়েছেন। ৮ আগস্ট পরবর্তী সময়ে এর মধ্যে ২৫৯ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

সরকার প্রধান বলেন, সংবাদমাধ্যম ও মত প্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা ইতোমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে। আমরা সবাইকে বলে দিয়েছি, আপনারা মন খুলে আমাদের সমালোচনা করেন। আমরা সবার মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। মিডিয়া যাতে কোনো রকম বাধা বিপত্তি ছাড়া নির্বিঘ্নে তাদের কাজ করতে পারে সেজন্য একটি মিডিয়া কমিশন গঠন করা সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন। আরো যে-সব কমিশন সরকারসহ অন্য সবাইকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পারে, আমরা তাদের পুনর্গঠন ও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি যাতে তারা আরো শক্তিশালী হয়, জনকল্যাণে কাজ করে।

লুটপাট ও পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে একটা ব্যাংকিং কমিশনও গঠন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। ব্যাংকিং খাতে এই একমাসে বিরাট পরিবর্তন এসেছে। আপনারা নিশ্চয় সেটা লক্ষ্য করেছেন। আমরা এই খাতে নিয়ম নীতি প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। আরও অনেক কাজ বাকি রয়ে গেছে। প্রথম মাসের কাজ হিসেবে শুধু প্রধান কাজগুলো করেছি তার সঙ্গে রয়েছে আরো অনেক পরবর্তী কাজ।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকার লুটপাট করার জন্য নতুন করে ষাট হাজার কোটি টাকা ছাপিয়ে বাজার ছাড়ার কারণে মুদ্রাস্ফীতির শিকার হয়েছে দেশের মানুষ। এই অতুলনীয় মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে পলিসি সুদের হার বৃদ্ধি করে ৯ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি থেকে সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার উদ্দেশে ওএমএস, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিসহ সুলভ মূল্যে প্রান্তিক মানুষের কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহ চলমান রাখা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় চলতি অর্থবছরে চাল ও গম আমদানির জন্য ৫,৮০০ কোটি টাকা, অভ্যন্তরীণ সংগ্রহের জন্য ৮,৯০০ কোটি টাকা এবং খাদ্য ভর্তুকির তিনটি প্রোগ্রামের জন্য ৭,৩৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সাথে সভা করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে করণীয়সমূহ চিহ্নিত করা হচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয় যৌক্তিক পরিমাণে হ্রাস করার জন্য কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। কৃষিপণ্য উৎপাদনের জন্য সার আমদানির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহ নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। প্রকৃত চাষিগণ যাতে কৃষিঋণ পেয়ে থাকেন তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি কৃষিঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে।

মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারকে বাজারভিত্তিক করা হয়েছে। কালো টাকা সাদা করার অনৈতিক অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বাজেট সাপোর্ট চাওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে অতিরিক্ত ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, বিশ্ব ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, জাইকা থেকে অতিরিক্ত ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদানের অনুরোধ করা হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের অগ্রিমের অর্থ পরিশোধ এবং বকেয়া পাওনা নিয়ে রাশিয়ান ফেডারেশনের সাথে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আলোচনা চলছে।

ড. ইউনূস বলেন, পাইপলাইনে থাকা ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক সহায়তা ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মেগাপ্রকল্পের নামে লুটপাট বন্ধের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উপর চাপ কমানোর লক্ষ্যে রাশিয়া এবং চীন থেকে প্রাপ্ত ঋণের সুদের হার কমানো এবং ঋণের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। সকল উন্নয়ন সহযোগীদের সাথে সম্পর্ক আরও নিবিড় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সকল অর্থনৈতিক সূচক এবং পরিসংখ্যানের প্রকৃত মান বা সংখ্যা প্রকাশের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। জিডিপি, মূল্যস্ফীতি ইত্যাদির সঠিক উপাত্ত সংগ্রহ, প্রাক্কলন এবং প্রকাশের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং অর্থ বিভাগের রাজস্ব আয় সম্পর্কিত উপাত্তের মধ্যে পার্থক্য নিরসনে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রীর সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখার নিমিত্ত ব্যবসায়ী, শিল্প মালিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনের সাথে সভা করা হয়েছে এবং তাদের মতামতের ভিত্তিতে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। বিদ্যমান মজুদ ও ঘাটতি মূল্যায়ন করে ও ভবিষ্যৎ চাহিদা পর্যালোচনা করে স্থানীয় উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি আমদানি পর্যায়ে বিভিন্ন জটিলতা দূরীকরণ, বন্দর ও বড় মোকামসহ পরিবহন ব্যবস্থার বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়, দফতর, বিভাগকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ ও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এজন্য তেল, চিনি, ডিম ও মাংস উৎপাদনকারী বৃহৎ প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে সভা ও মতবিনিময় করা হয়েছে।

নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু দ্রব্যাদি, যেমন পেঁয়াজ, আলু এসবের দাম আরো কমানোর জন্য বিদ্যমান শুল্কহার হ্রাসের বিষয়ে এনবিআরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান ড. ইউনূস।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১১/০৯/২০২৪

ঢাকাঃ সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আপনার মন খুলে আমাদের সমালোচনা করেন। সংবাদমাধ্যম ও মতপ্রকাশের পূর্ণ স্বাধীনতা ইতোমধ্যে নিশ্চিত করা হয়েছে।

বুধবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ কথা জানান তিনি।

তিনি বলেন, আমরা সবাইকে বলে দিয়েছি, আপনারা মন খুলে আমাদের সমালোচনা করেন। আমরা সবার মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, মিডিয়া যাতে কোনো রকম বাধা বিপত্তি ছাড়া নির্বিঘ্নে তাদের কাজ করতে পারে সেজন্য একটি মিডিয়া কমিশন গঠন করা সরকারের সক্রিয় বিবেচনাধীন। আরও যেসব কমিশন সরকারসহ অন্য সবাইকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে পারে, আমরা তাদের পুনর্গঠন ও সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি যাতে তারা আরও শক্তিশালী হয়, জনকল্যাণে কাজ করে।

ড. ইউনূস বলেন, চলমান এবং প্রস্তাবিত সকল উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর যাচাই-বাছাই করার কাজ ইতোমধ্যে আমরা শুরু করেছি। প্রকল্প বাস্তবায়নের পর্যায় বিবেচনা করে বাকি কাজে ব্যয়ের সাশ্রয় এমনকি প্রয়োজনবোধে তা বাতিল করার কথা বিবেচনা করা হবে। দেশের মানুষকে আর ফাঁকি দেওয়া চলবে না। কর্মসংস্থান তৈরি করবে এমন প্রকল্পগুলোকে আমরা অগ্রাধিকার দেব।

লুটপাট ও পাচার হয়ে যাওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আর্থিক খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে একটা ব্যাংকিং কমিশনও গঠন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। ব্যাংকিং খাতে এই একমাসে বিরাট পরিবর্তন এসেছে। আপনারা নিশ্চয় সেটা লক্ষ্য করেছেন। আমরা এই খাতে নিয়ম নীতি প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। আরও অনেক কাজ বাকি রয়ে গেছে। প্রথম মাসের কাজ হিসেবে শুধু প্রধান কাজগুলো করেছি তার সঙ্গে রয়েছে আরো অনেক পরবর্তী কাজ।

তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী সরকার লুটপাট করার জন্য নতুন করে ষাট হাজার কোটি টাকা ছাপিয়ে বাজার ছাড়ার কারণে মুদ্রাস্ফীতির শিকার হয়েছে দেশের মানুষ। এই অতুলনীয় মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে পলিসি সুদের হার বৃদ্ধি করে ৯ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি থেকে সাধারণ মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার উদ্দেশে ওএমএস, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিসহ সুলভ মূল্যে প্রান্তিক মানুষের কাছে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সরবরাহ চলমান রাখা হয়েছে। মূল্যস্ফীতি মোকাবিলায় চলতি অর্থবছরে চাল ও গম আমদানির জন্য ৫,৮০০ কোটি টাকা, অভ্যন্তরীণ সংগ্রহের জন্য ৮,৯০০ কোটি টাকা এবং খাদ্য ভর্তুকির তিনটি প্রোগ্রামের জন্য ৭,৩৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বিভিন্ন স্টেকহোল্ডারদের সাথে সভা করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে করণীয়সমূহ চিহ্নিত করা হচ্ছে।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, পরিচালন ও উন্নয়ন ব্যয় যৌক্তিক পরিমাণে হ্রাস করার জন্য কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। কৃষিপণ্য উৎপাদনের জন্য সার আমদানির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহ নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। প্রকৃত চাষিগণ যাতে কৃষিঋণ পেয়ে থাকেন তা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়ার পাশাপাশি কৃষিঋণের পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে।

মার্কিন ডলারের বিপরীতে টাকার বিনিময় হার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় হারকে বাজারভিত্তিক করা হয়েছে। কালো টাকা সাদা করার অনৈতিক অনুমতি বাতিল করা হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি করতে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগীদের কাছ থেকে বাজেট সাপোর্ট চাওয়া হয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল থেকে অতিরিক্ত ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, বিশ্ব ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার, জাইকা থেকে অতিরিক্ত ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার প্রদানের অনুরোধ করা হয়েছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্পের অগ্রিমের অর্থ পরিশোধ এবং বকেয়া পাওনা নিয়ে রাশিয়ান ফেডারেশনের সাথে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আলোচনা চলছে।

ড. ইউনূস বলেন, পাইপলাইনে থাকা ৪৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক সহায়তা ব্যবহারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মেগাপ্রকল্পের নামে লুটপাট বন্ধের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের উপর চাপ কমানোর লক্ষ্যে রাশিয়া এবং চীন থেকে প্রাপ্ত ঋণের সুদের হার কমানো এবং ঋণের মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। সকল উন্নয়ন সহযোগীদের সাথে সম্পর্ক আরও নিবিড় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সকল অর্থনৈতিক সূচক এবং পরিসংখ্যানের প্রকৃত মান বা সংখ্যা প্রকাশের জন্য নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। জিডিপি, মূল্যস্ফীতি ইত্যাদির সঠিক উপাত্ত সংগ্রহ, প্রাক্কলন এবং প্রকাশের জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড এবং অর্থ বিভাগের রাজস্ব আয় সম্পর্কিত উপাত্তের মধ্যে পার্থক্য নিরসনে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

তিনি বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সামগ্রীর সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক রাখার নিমিত্ত ব্যবসায়ী, শিল্প মালিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনের সাথে সভা করা হয়েছে এবং তাদের মতামতের ভিত্তিতে বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। বিদ্যমান মজুদ ও ঘাটতি মূল্যায়ন করে ও ভবিষ্যৎ চাহিদা পর্যালোচনা করে স্থানীয় উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি আমদানি পর্যায়ে বিভিন্ন জটিলতা দূরীকরণ, বন্দর ও বড় মোকামসহ পরিবহন ব্যবস্থার বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়, দফতর, বিভাগকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ ও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এজন্য তেল, চিনি, ডিম ও মাংস উৎপাদনকারী বৃহৎ প্রতিষ্ঠানসমূহের সাথে সভা ও মতবিনিময় করা হয়েছে।

নিত্যপ্রয়োজনীয় কিছু দ্রব্যাদি, যেমন পেঁয়াজ, আলু এসবের দাম আরো কমানোর জন্য বিদ্যমান শুল্কহার হ্রাসের বিষয়ে এনবিআরকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান ড. ইউনূস।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১১/০৯/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ মাধ্যমিক পর্যায়ে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের তিন ঘণ্টার বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। এতে ৭০ নম্বরের প্রশ্নপত্র থাকবে। বাকি ৩০ নম্বর দেওয়া হবে শিক্ষার্থীর শিখনকালীন মূল্যায়নের ভিত্তিতে। নতুন কারিকুলামের বইয়ের ওপর এ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করা হবে।

‘২০২৪ সালের শিখনকালীন মূল্যায়ন ও বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণের নির্দেশিকায়’ এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ চারটি শ্রেণির ৫০ লাখের বেশি শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবক এ নির্দেশনা ও সিলেবাসের অপেক্ষায় ছিলেন।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) এ নির্দেশিকা জারি করেছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। একই সঙ্গে চারটি শ্রেণির পূর্ণাঙ্গ সিলেবাসও প্রকাশ করা হয়েছে। এনসিটিবির ওয়েবসাইট থেকে শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা এ সিলেবাস ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

নির্দেশিকায় এনসিটিবি জানায়, ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন কার্যক্রমে শিখনকালীন মূল্যায়ন এবং বার্ষিক পরীক্ষা দুটি ভাগে অনুষ্ঠিত হবে। ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম এবং নবম শ্রেণির শিখনকালীন মূল্যায়ন ও বার্ষিক পরীক্ষা জাতীয় শিক্ষাক্রম ২০২১ এর আলোকে প্রণীত পাঠ্যপুস্তকের বিষয়বস্তুর ভিত্তিতে সম্পন্ন হবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব তত্ত্বাবধানে শিক্ষকদের দ্বারা শিখনকালীন মূল্যায়ন কার্যক্রম পরিচালনা এবং প্রদত্ত প্রশ্নপত্রের নমুনা অনুসরণ করে বার্ষিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়ন করবেন। তবে কোনোক্রমেই নমুনা প্রশ্নপত্র হুবহু ব্যবহার করা যাবে না। প্রণীত প্রশ্নের সাহায্যে নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের বার্ষিক পরীক্ষা গ্রহণ করবেন।

যেভাবে বার্ষিক মূল্যায়ন
প্রতিটি বিষয়ের মূল্যায়ন কার্যক্রমের মোট নম্বর হবে ১০০। এর মধ্যে শিখনকালীন মূল্যায়নের গুরুত্ব হবে ৩০ শতাংশ ও পরীক্ষার গুরুত্ব হবে ৭০ শতাংশ। বার্ষিক পরীক্ষার ফলাফল প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে বিষয়ভিত্তিক জিপি বা গ্রেড পয়েন্ট নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।

শিখনকালীন মূল্যায়ন যেভাবে

প্রতিটি বিষয়ের পাঠ্যপুস্তকে নির্দেশিত একক কাজ, জোড়ায় কাজ, পোস্টার প্রেজেন্টেশনসহ যাবতীয় কার্যক্রম শিখনকালীন মূল্যায়নের ‘মূল্যায়ন আইটেম’ হিসেবে বিবেচিত হবে। শিখনকালীন মূল্যায়ন পরিচালনার জন্য বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনাগুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।

সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচির আওতাধীন শিখনকালীন মূল্যায়নের যেসব কার্যক্রম এরই মধ্যে সম্পন্ন হয়েছে এবং যেগুলো সামনে সম্পন্ন হবে, সেগুলোর রেকর্ড যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে হবে। শিখনকালীন মূল্যায়নের যাবতীয় কার্যক্রম বার্ষিক পরীক্ষা শুরুর আগে সম্পন্ন করতে হবে।

বার্ষিক পরীক্ষা হবে যেভাবে

বার্ষিক পরীক্ষা সংক্ষিপ্ত পাঠ্যসূচি অনুযায়ী প্রতিটি বিষয়ে ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। লিখিত পরীক্ষার মোট সময় হবে তিন ঘণ্টা। লিখিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্র প্রণয়নের নির্দেশিকা, প্রশ্নের কাঠামো, মানবণ্টন ‘বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনায়’ বিস্তারিত দেওয়া আছে। বিষয়ভিত্তিক নির্দেশনায় প্রদত্ত নমুনা প্রশ্নপত্র দেওয়া আছে। লিখিত পরীক্ষার উত্তর লেখার জন্য পূর্বের ন্যায় বিদ্যালয় কর্তৃক প্রয়োজনীয় খাতা সরবরাহ করতে হবে।

গ্রেড পয়েন্ট নির্ধারণ

শ্রেণি উত্তরণের জন্য ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের বার্ষিক ফলাফল প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে প্রতিটি বিষয়ের মোট নম্বর হবে ১০০। এ ১০০ নম্বরের মধ্যে ধারাবাহিক বা শিখনকালীন মূল্যায়নের গুরুত্ব হবে ৩০ শতাংশ এবং লিখিত বার্ষিক পরীক্ষার গুরুত্ব হবে ৭০ শতাংশ।

যেহেতু প্রত্যেক বিষয়ে ধারাবাহিক বা শিখনকালীন মূল্যায়নের জন্য বরাদ্দ নম্বর ৩০ এবং লিখিত পরীক্ষায় বরাদ্দ নম্বর ১০০, সেহেতু একজন শিক্ষার্থীর একটি বিষয়ের বার্ষিক ফলাফল প্রস্তুত করার ক্ষেত্রে ওই বিষয়ের ধারাবাহিক বা শিখনকালীন মূল্যায়নে তার প্রাপ্ত নম্বরের সঙ্গে লিখিত বার্ষিক পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ৭০ শতাংশ যোগ করে ওই বিষয়ের বার্ষিক ফলাফল বা গ্রেড নির্ণয় করতে হবে।

গ্রেডিং নির্ণয়

কোনো বিষয়ে মূল্যায়নে মোট ৮০ থেকে ১০০ নম্বর পেলে A+ বা ৫ পয়েন্ট, ৭০ থেকে ৭৯ নম্বর পেলে A বা ৪ পয়েন্ট, ৬০ থেকে ৬৯ নম্বর পেলে A- বা ৩ দশমিক ৫ পয়েন্ট, ৫০ থেকে ৫৯ পেলে B বা ৩ পয়েন্ট, ৪০ থেকে ৪৯ পেলে C বা ২ পয়েন্ট, ৩৩ থেকে ৩৯ পেলে D বা ১ পয়েন্ট ও ০০ থেকে ৩২ পেলে F বা ০ পয়েন্ট পাবেন শিক্ষার্থীরা।

যেভাবে পরের শ্রেণিতে প্রমোশন

একটি বিষয়ে সর্বনিম্ন D গ্রেড পেলে ওই বিষয়ে শিক্ষার্থীকে উত্তীর্ণ বলে বিবেচনা করা হবে। তিন বা ততোধিক বিষয়ে কোনো শিক্ষার্থী D গ্রেড পেলে সে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হতে পারবে না।

তবে বিষয় শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে প্রতিষ্ঠানপ্রধান বিশেষ বিবেচনায় তাকে পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তরণের সুযোগ দিতে পারেন। বিশেষ বিবেচনার বিষয়টি শুধু ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রযোজ্য হবে।

জানা গেছে, নতুন কারিকুলামে মাধ্যমিক পর্যায়ে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণিতে পরীক্ষা ছিল না। শিখনকালীন মূল্যায়ন ও বাৎসরিক সামষ্টিক মূল্যায়নের ভিত্তিকে শিক্ষার্থীদের এক শ্রেণিতে আরেক শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করার নিয়ম ছিল। এ নিয়ে শুরু থেকে অনেক অভিভাবক প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। যে কারিকুলামই হোক না কেন, তাতে পরীক্ষা রাখার দাবি ছিল তাদের।

আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করে। এ সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা দায়িত্ব নেওয়ার পরই বিদ্যামন কারিকুলাম বাতিল করে আগের কারিকুলামে (সৃজনশীল) ফেরার কথা জানান।

এছাড়া শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, নতুন কারিকুলাম বাস্তবায়নযোগ্য নয়। এজন্য আগের সৃজনশীল কারিকুলামে ফেরা হবে। তবে চলতি বছরের যেহেতু আট মাস পেরিয়ে গেছে, সেজন্য এ বছর নতুন কারিকুলামের বইয়ের ওপর বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া হবে। আগামী বছর থেকে পাঠ্যবই সংশোধন ও পরিমার্জন করে সৃজনশীল কাঠামোতে ফেরা হবে।

বআওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রণীত জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা ২০২১ গত বছর থেকে বাস্তবায়ন শুরু হয়। এ বছর প্রাথমিকের তিনটি এবং মাধ্যমিকের চারটি শ্রেণিতে নতুন এ কারিকুলাম বাস্তবায়ন করা হচ্ছিল। এরমধ্যে ষষ্ঠ থেকে নবমে ৫০ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী এ কারিকুলামে ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নে অংশও নিয়েছিল।

তবে কয়েকটি পরীক্ষা হওয়ার পরই কোটা সংস্কার আন্দোলনের কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়। সরকার পতনের পর কারিকুলামই বাতিলের সিদ্ধান্ত আসায় সেই মূল্যায়ন আর শেষ না করে বাতিল ঘোষণা দেওয়া হয়।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১১/০৯/২০২৪

ঢাকাঃ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) অধীনে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছিল। তবে সুনির্দিষ্ট কোনো পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ মেলেনি। ফলে অভিযোগ ওঠা পরীক্ষাগুলো বাতিল হচ্ছে না।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) পিএসসিতে এক সভায় এ সংক্রন্ত একটি প্রতিবেদন পেশ করা হয়।

পিএসসি চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, তদন্ত কমিটি প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের প্রমাণ পায়নি। এখন এ প্রতিবেদন আমরা সরকারের কাছে পাঠাব। সভায় তদন্ত প্রতিবেদন সদস্যদের পড়ে শোনানো হয়। সে-সব অভিযোগ আনা হয়েছিল, তা প্রমাণিত হয়নি।

জানা যায়, বিসিএস প্রিলি–লিখিতসহ গুরুত্বপূর্ণ ৩০ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়। এ তথ্য একাধিক সংবাদমাধ্যমে প্রচার হয়। ঐ সংবাদে পিএসসি ক্যাডার ও নন–ক্যাডারসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ করা হয়। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিন সদস্যের একটি তদন্ত দল গঠন করে পিএসসি। কমিটির আহ্বায়ক করা হয় সরকারি কর্ম কমিশনের যুগ্ম সচিব আবদুল আলীম খানকে। কমিটির সদস্য পিএসসির পরিচালক দিলাওয়েজ দুরদানা। তদন্ত কমিটির সদস্যসচিব করা হয় পিএসসির পরিচালক মোহাম্মদ আজিজুল হক।

এ কমিটি দীর্ঘদিন প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে তদন্ত করে। ইতোমধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করা হয়েছে। তদন্ত কমিটি কোথাও কোনো পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের প্রমাণ পায়নি। প্রতিবেদনটি খুব দ্রুত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানা গেছে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১১/০৯/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ বাতিল করা হয়েছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটি। একইসঙ্গে নয় সদস্যের ‘এডহক’ কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপজেলা নির্বাহী অফিসার এডহক কমিটির আহ্বায়ক এবং উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সদস্য সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন।

কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন- উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার, ইন্সট্রাক্টর, উপজেলা রিসোর্স সেন্টার; উপজেলা প্রকৌশলী ও নিকটস্থ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুইজন প্রধান শিক্ষক (উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনোনীত একজন পুরুষ ও একজন নারী শিক্ষক)।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কমিটি গঠন সংক্রান্ত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ২০১৪ সালের ১২ মার্চের প্রজ্ঞাপনটি বাতিল করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। পরবর্তি আদেশ না দেয়া পর্যন্ত এডহক কমিটি বলবৎ থাকবে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১১/০৯/২০২৪

ঢাকাঃ কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং পরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর স্থগিত হওয়া এইচএসসি ও সমমানের ছয়টি পরীক্ষা বাতিল করা হয়। এসব পরীক্ষার ফল তৈরি করা হবে সাবজেক্ট ম্যাপিং পদ্ধতিতে। সেজন্য পরীক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় কিছু তথ্য ও কাগজপত্র সংগ্রহ করেছে শিক্ষা বোর্ড।

শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তারা জানান, যে ছয়টি পরীক্ষা বাতিল হয়েছে যেসব বিষয়ের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিং করা হবে। অর্থাৎ জেএসসি এবং এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের গড় করে ফল তৈরি হবে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে জেএসসিতে প্রাপ্ত নম্বরের ২৫ শতাংশ ও এসএসসিতে প্রাপ্ত নম্বরের ৭৫ শতাংশ যোগ করে ওই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের নম্বর দেওয়া হবে। যেমন কোনো একটি বিষয়ে জেএসসিতে ১০০ নম্বর পেয়ে থাকলে সেখান থেকে ২৫ এবং একই বিষয়ে এসএসসিতে ১০০ নম্বর পেয়ে থাকলে ৭৫ নম্বর নেওয়া হবে। এ দুটি নম্বর যোগ করলে এইচএসসিতে ওই বিষয়ে শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বর হবে ১০০।

আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের সমন্বয়ক ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর তপন কুমার সরকার গণমাধ্যমকে বলেন, করোনাভাইরাসের সময় পরীক্ষা বাতিল করা হয়। পরে পূর্বের পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিং প্রক্রিয়ায় ফল প্রকাশ করা হয়। এবার সেই পদ্ধতিতে ফল তৈরি করা হবে। সেই প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। সিদ্ধান্ত এলে দ্রুত সময়ের মধ্যে ফল প্রকাশ করা হবে।

বোর্ড সংশ্লিষ্টরা জানান, করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা না হওয়ায় সব পরীক্ষার্থীকে অটো পাস করানো হয়। তখন এসএসসি, জেএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলের ভিত্তিতে এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের গড় মূল্যায়ন করে ফল প্রকাশ করা হয়েছিল। পরের বছর কয়েকটি বিষয়ের পরীক্ষা নিয়ে বাকি বিষয়ের ফল একইভাবে তৈরি করেছিল শিক্ষা বোর্ড।

জানা গেছে, গত সপ্তাহে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে ফল প্রকাশ সংক্রান্ত প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হয়েছে। প্রস্তাবটি যাচাই-বাছাই চলছে। শিগগির এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেবে মন্ত্রণালয়।

এ বছর এইচএসসি পরীক্ষা শুরু হয়েছিল ৩০ জুন। ১৬ জুলাই পর্যন্ত পরীক্ষা ঠিকভাবেই হয়েছে। কোটা আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রথমে ১৮ জুলাইয়ের পরীক্ষা এবং পরে ২১, ২৩ ও ২৫ জুলাইয়ের পরীক্ষা স্থগিত হয়। মাঝে সরকার পরিবর্তনের মতো বড় ঘটনা ঘটে গেছে।

বিভিন্ন থানায় হামলার কারণে সেখানকার প্রশ্নপত্রের ট্রাঙ্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সামগ্রিক পরিস্থিতির ভিত্তিতে বাকি পরীক্ষাগুলোর তারিখ বেশ কয়েকবার পরিবর্তন করা হয়। সম্প্রতি নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয় আগামী ১১ সেপ্টেম্বর। এর মধ্যে একদল শিক্ষার্থী স্থগিত পরীক্ষাগুলো বাতিল করার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। ২০ আগস্ট সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভবনের নিচে এক দল শিক্ষার্থী বিক্ষোভ করেন। পরে এসব পরীক্ষা বাতিল করা হয়।

চলতি বছর ৯টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, কারিগরি বোর্ড ও মাদ্রাসা বোর্ডের অধীনে মোট পরীক্ষার্থী ছিল ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৭৯০ জন।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১১/০৯/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আব্দুস সামাদকে ওএসডি করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (অতিরিক্ত সচিব) হিসেবে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়েছে।

বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন নিয়োগ-১ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। এতে সই করেছেন উপসচিব মো. আলমগীর কবির।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।

এদিকে প্রাথমিক অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) আব্দুস সামাদের অপসারণ দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। সহকর্মীদের সঙ্গে অসদাচরণসহ নানা অনিয়ম ও বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়ানোসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ২৭ আগস্ট থেকে ধারাবাহিক আন্দোলন-কর্মসূচী পালন করে আসছেন তারা।

বিক্ষুব্ধ কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা সম্পর্কে ন্যূনতম কোনো ধারণা না থাকা এ কর্মকর্তা বর্তমানে প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগের বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছেন। এ কারণে তাকে প্রাথমিক শিক্ষার মহাপরিচালকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পদ হতে দ্রুত অপসারণ করে শিক্ষাবান্ধব ও অভিজ্ঞ কর্মকর্তাকে পদায়নের দাবি জানান তারা।

কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার দায়িত্বগ্রহণের পর ২০ আগস্ট প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে আসেন। সেদিন মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সভায় মহাপরিচালক তার নির্বাচিত কিছু ব্যক্তিকে নিয়ে গোপনে সব আয়োজন শেষ করেন। এছাড়া সভায় তিনি তার পছন্দের মাত্র ছয়জন ব্যক্তিকে বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেন। যাদের সবার কাছ থেকেই সভার দিন সকালবেলা বক্তব্যের স্ক্রিপ্ট জমা নেন।

সাবেক সংসদ সদস্য ও যুবলীগ নেতা মাইনুল হোসেন খান নিখিলের সুপারিশে মহাপরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পান আব্দুস সামাদ। বিতর্কিত, দুর্নীতিবাজ ও পদলোভী কিছু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে তিনি তার মহাপরিচালক পদ ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন বক্তারা।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১১/০৯/২০২৪

ফরিদপুরঃ জেলার নগরকান্দায় প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ আবদুস সামাদ 'ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারের দোসর' উল্লেখ করে তার  অপসারণের দাবীতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে উপজেলায় কর্মরত শিক্ষক ও কর্মকর্তারা।

বুধবার বেলা সাড়ে বারোটায় উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের সামনে এ নগরকান্দা উপজেলায় কর্মরত শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণ মানববন্ধনে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মোঃ আবদুস সামাদের অপসারন দাবি করেন। এ সময় বক্তারা বলেন প্রাথমিক শিক্ষার ডিজি মোঃ আবদুস সামাম ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের এজেন্ট হিসেবে কাজ করেছে। সে শিক্ষক ও কর্মকর্তাদেরকে নানা ভাবে হয়রানি করে আসছে।

সরকারের সকল দপ্তরে ডিজি পদে পরিবর্তন আসলেও প্রথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এখনো স্বপদে বহাল রয়েছেন। তারা অনতিবিলম্বে এই দূর্নীতিবাজ ডিজির অপসারণ দাবি করেন।

নগরকান্দা উপজোলা শিক্ষা কর্মকর্তা রওনক আরা বেগম আওয়ামী লীগের দোসর দূর্নীতিবাজ ডিজি মোঃ আবদুস সামাদ এর প্রতি সমর্থন জানিয়ে মানববন্ধনে উপস্থিত না হওয়ায় মানববন্ধনে উপস্থিত শিক্ষক- কর্মকর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ বজলুর রহমান, উপজেলচ রিসোর্স সেন্টারের ইনস্ট্রাক্টর সাধন কুমার সাহা,সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার অসিম কুমার দাস, জাহিদ হোসেন মোল্যা সহ উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষক বৃন্দ।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১১/০৯/২০২৪

magnifiermenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram