শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দেশের ১০টি ব্যাংক দেউলিয়া হওয়ার মত খারাপ অবস্থায় চলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।

তিনি বলেছেন, সরকার সেসব ব্যাংককে বাঁচানোর চেষ্টা করছে। আমাদের সময় দেন, আমরা সব ব্যাংককে দাঁড় করানোর ব্যবস্থা করবো।

দেউলিয়া পর্যায়ে থাকা ব্যাংকগুলোকে ঘুরে দাঁড়াতে বাংলাদেশ ব্যাংক টেকনিক্যাল, অ্যাডভাইজরি ও লিকিউডিটি সুবিধা দেবে বলেও জানান তিনি।

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

গভর্নর বলেন, আগামী ১০ দিনের মধ্যে টাস্কফোর্স কাজ শুরু করবে। টাস্কফোর্সের মাধ্যমে ব্যাংক খাতের সমস্যা নিরূপণ এবং আগের নীতিমালাগুলো রিভিউ করা হবে। যে কোনো নীতিমালা শুধু গুটিকয়েক ব্যবসায়ীর জন্য করা হলে সেটা বাতিল হবে, আর যদি প্রয়োজন হয় তাহলে সেটা থাকবে। ব্যাংক খাতের পরিবারতন্ত্র ভাঙা হবে।

তিনি বলেন, আমানত বিমা স্কিমের আওতা দ্বিগুণ করে ব্যাংকের ৯৫ ভাগ আমানতকারীকে সম্পূর্ণভাবে নিরাপদ করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কোনো ব্যাংক দেউলিয়া হয়ে গেলেও সঙ্গে সঙ্গে এই স্কিম থেকে ব্যাংকটির ৯৪ দশমিক ৬ শতাংশ আমানতকারীর সম্পূর্ণ টাকা ফেরত দেওয়া হবে।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমানতকারীদের আশঙ্কার কিছু নেই। তাদের ধৈর্যের সঙ্গে ব্যাংক খাত সংস্কারের ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানান তিনি।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৮/০৯/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ড. মোহাম্মদ আব্দুর রশিদের স্থায়ী অব্যাহতির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বিভাগের শিক্ষার্থীরা। অধ্যাপক আব্দুর রশিদের বিরুদ্ধে একাডেমিক চৌর্যবৃত্তি, নিপীড়ন, দুর্নীতি, এবং নৈতিক ও চারিত্রিক স্থলনের অভিযোগ উত্থাপন করেছেন শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টায় ঢাবির অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসজুড়ে বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং সকাল ১১টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খানের কাছে একটি স্মারকলিপি জমা দেন।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, অধ্যাপক আব্দুর রশিদ ক্লাস ও ভাইভা বোর্ডে শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন, অসদাচরণ, পক্ষপাতিত্ব, এবং চাকরির ভাইভায় স্বজনপ্রীতি ও অঞ্চলপ্রীতির মাধ্যমে একাডেমিক ক্ষতিসাধন করেছেন। এছাড়া, ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি থাকাকালীন সময়ে আর্থিক কেলেঙ্কারি, স্বেচ্ছাচারিতা ও দুর্নীতিতে যুক্ত থাকার অভিযোগও তার বিরুদ্ধে রয়েছে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, ড. আব্দুর রশিদের কর্মকাণ্ড দেশের ইসলামী শিক্ষা ও উচ্চশিক্ষার সুনামের প্রতি হুমকিস্বরূপ। আমরা গত ১৬ আগস্ট থেকে অসহযোগ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি এবং তার অব্যাহতির পূর্ব পর্যন্ত বিভাগের সকল কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।

মানববন্ধনে নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থী আব্দুর রহমান আল ফাহাদ জানান, ড. আব্দুর রশিদের বৈষম্য ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করছি। দাবি আদায় না হলে আমরা ক্লাসে ফিরবো না।

নারী শিক্ষার্থীদের সাথে অশোভন আচরণের অভিযোগে শিক্ষার্থী সুমাইয়া বলেন, একজন শিক্ষক যখন নানা অপকর্মে জড়িত থাকেন এবং ছাত্রীদের সাথে অশোভন আচরণ করেন, তখন তার থেকে কীভাবে শিক্ষা গ্রহণ করা সম্ভব? আমাদের নিরাপত্তার স্বার্থে তার অব্যাহতি দাবি করছি।

শিক্ষার্থীরা উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপিতে আগামী ৫ কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব না পেলে প্রশাসনের প্রতি আস্থা হারানোর কথা উল্লেখ করেছেন।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৮/০৯/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ মানসম্মত শিক্ষায় জাতিসংঘ ও এর বিশেষায়িত সংস্থাগুলোর সহায়তাকে স্বাগতম জানাবেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। জাতিসংঘসহ চার সংস্থা বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে সহায়তা করতে প্রস্তুত বলে উপদেষ্টাকে জানানো হয়।

রবিবার (০৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে উপদেষ্টার নিজ কার্যালয়ে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বাংলাদেশে জাতিসংঘের অন্তবর্তীকালীন আবাসিক সমন্বয়ক এবং বাংলাদেশে ইউএনএফপির এজেন্সি প্রধান ক্রিস্টিন ব্লখুস, বাংলাদেশে ইউনেস্কোর প্রতিনিধি সুসান ভাইজ এবং বাংলাদেশে ইউনিসেফের ডেপুটি প্রতিনিধি এমা ব্রিগহাম উপস্থিত ছিলেন।

প্রতিনিধিরা শিক্ষা ক্ষেত্রে বর্তমান সরকারের উদ্যোগকে বাস্তবসম্মত বলে মনে করেন এবং তারা শিক্ষাখাতে যেকোনো ধরনের সহায়তা করতে প্রস্তুত বলে শিক্ষা উপদেষ্টাকে জানান। তারা শিক্ষাক্ষেত্রে সংস্কারের ওপর জোর দেন। বিশেষত শিক্ষানীতি ২০১০ হালনাগাদ করা দরকার বলে মতামত দেন তারা।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৮/০৯/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ অতিরিক্ত জেলা জজ, যুগ্ম জেলা জজ, সিনিয়র সহকারী জজ ও সহকারী জজ পদমর্যাদার ১৬৮ জন বিচারককে বদলি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে সিনিয়র সহকারী জজ ও সহকারী জজ পদমর্যাদার ১১৪ জন, ৪৭ জন অতিরিক্ত জেলা জজ ও ৭ জন যুগ্ম জেলা জজ রয়েছেন।

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) এ বিষয়ে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগ থেকে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

আইন ও বিচার বিভাগ জানায়, সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের এ কর্মকর্তাদের বদলি করা হয়েছে।

তালিকা দেখতে এখানে ক্লিক করুন 

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বদলি করা অতিরিক্ত জেলা জজদের জেলা ও দায়রা জজ/মহানগর দায়রা জজ/দপ্তর প্রধান মনোনীত কর্মকর্তার কাছে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর বর্তমান পদের দায়িত্বভার অর্পণ করে অবিলম্বে বদলি করা কর্মস্থলে যোগদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।

বদলি হওয়া সিনিয়র সহকারী জজ ও সহকারী জজদের জেলা ও দায়রা জজ/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বা দপ্তর প্রধান মনোনীত কর্মকর্তার কাছে আগামী ১২ সেপ্টেম্বর এবং প্রশিক্ষণ/ছুটিতে থাকা বিচারকদের প্রশিক্ষণ/ছুটি শেষে কর্মস্থলে যোগদানের তারিখে বর্তমান পদের দায়িত্বভার অর্পণ করে অবিলম্বে বদলি করা কর্মস্থলে যোগদানের জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।

বদলি করা যুগ্ম জেলা জজদের জেলা ও দায়রা জজ/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মনোনীত কর্মকর্তার কাছে আগামী ১০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে বর্তমান পদের দায়িত্বভার অর্পণ করে বদলি করা কর্মস্থলে যোগদানের নির্দেশ দেওয়া হয়।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৮/০৯/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিভাগের যুগ্ম সচিব (প্রশাসন-১) ও সুপ্রিম কোর্টের সাবেক রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী।

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) আইন মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আইন ও বিচার বিভাগের যুগ্মসচিব (প্রশাসন-১) মো. গোলাম রব্বানীকে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিবের চলতি দায়িত্ব প্রদান করা হলো। যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এ আদেশ জারি করা হলো। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

গত ১ জুলাই সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানীকে বদলি করা হয়। ওই সময় চট্টগ্রামের জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে নিয়োগ করা হয় তাকে। পরে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বিচারক মো. গোলাম রব্বানীকে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব হিসেবে পদোন্নতি দেয় অন্তর্বর্তী সরকার।

গত বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ারকে ওএসডি করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের সঙ্গে পরামর্শক্রমে রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) তাকে উক্ত বিভাগের সংযুক্ত কর্মকর্তা করা হয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৮/০৯/২০২৪

ঢাকাঃ অন্তর্বর্তী সরকারের একমাস-পূর্তিতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এ সময় এই সরকারের কাছে নিজেদের প্রত্যাশা এবং মতামত তুলে ধরেন শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আন্দোলন রাজনীতির অংশ উল্লেখ করে এক নারী সমন্বয়ক বলেন, এ রাজনীতিটা ক্যাম্পাসের বাইরে থাকবে। সবার রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকতে পারে, সেটা শিক্ষক কিংবা শিক্ষার্থী হোক। সেটা থাকবে চায়ের চুমুকে। পাঠদানের সময় তিনি শুধুই শিক্ষক। কোনো ট্যাগধারী ছাত্র ও শিক্ষককে ক্যাম্পাসে দেখতে চাই না।

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি। এ সময় কৃষকদের সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর দাবি করেন এ নারী সমন্বয়ক। এ ছাড়াও অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি আগামীতে ভোটাধিকার নিশ্চিতের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের দাবি করেন তিনি।

সরকারি হাসপাতালের অনিয়মের বিষয়ে গুরুত্ব দিয়ে আন্দোলনের সমন্বয়ক ও মেডিকেল শিক্ষার্থী বলেন, যত দ্রুত সম্ভব কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে, রোগীদের যাতে হেনস্তা না হতে হয়, সেই ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। আমরা চাই, চিকিৎসা সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা হোক। যেখানে শুধুমাত্র চিকিৎসক না, রোগীদেরও সেবা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করা হয়ে থাকে।

তিনি বলেন, সিভিল সার্ভিস, জুডিশিয়ারি সার্ভিসের মতো বাংলাদেশ হেলথ সার্ভিসের অধীনে সব মেডিকেল শিক্ষার্থী ও চিকিৎসকদের যদি এর অধীনে আনা যায়, তাহলে অনেক স্বচ্ছতা ও সেবার মান বৃদ্ধি পাবে।

দেশের মেধাপাচারের ওপর গুরুত্ব দিয়ে আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক বলেন, হাজার হাজার কোটি টাকা পাচারের চেয়েও মেধাপাচার ভয়ংকর। মেধা পাচার না হলে প্রতি বছরই দুই-একজন ড. ইউনূস বের হতো। বিদেশি পিএইচডি করতে যাওয়াদের দেশে ফিরিয়ে এনে পলিসি লেভেলে নিয়োগ দেওয়ার অনুরোধ করেন তিনি।

মব জাস্টিস নিয়ন্ত্রণ করার অনুরোধ করে এক নারী সমন্বয়ক বলেন, এই মুহূর্তে প্রধান কাজের মধ্যে এটি একটি। মব জাস্টিস যদি সমাজের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে যায় এবং কুচক্রী মহল এই দুরবস্থার সুযোগ নিয়ে আমাদের ভেতর প্রবেশ করে- তাহলে এই ঐক্য নষ্ট করার চেষ্টা করবে। তাই এ বিষয়ে সজাগ দৃষ্টি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ করেন তিনি।

আরেক সমন্বয়ক বলেন, যে রক্ত ঝরেছে তার ঋণ শোধ করার দায় আমাদের কাঁধে। এ দায়িত্ব পালনে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এ দায়িত্ব পালন করতে পারলে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম আমাদের স্মরণ করবে। আমাদের দায়িত্বের গুরুত্ব ও ভার বুঝতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের তরুণ সমাজ ও ছাত্রদেরকে দায়িত্ব পালনে উপযুক্ত হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করবেন। আমাদের সংগ্রাম চলমান থাকবে।

পরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, ‘যে যতই পরামর্শ দিক না কেন, এটা থেকে বেরিয়ে আসবে। সে পরামর্শ তোমরা গ্রহণ কর না। তোমাদের চিন্তাই স্বচ্ছ ও সঠিক- এটা মুঠো থেকে ছাড়বে না। যদি আমরা এ স্বপ্ন থেকে দূরে সরার কোনও কাজ করি, স্মরণ করিয়ে দেবে। আমাদের কারও কোনও ইচ্ছা নেই- এ স্বপ্ন থেকে বাইরে যাওয়ার। এ স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা আমাদের সার্বক্ষণিক কাজ।’

তিনি বলেন, ‘ভুলক্রমে আমরা যদি সীমা অতিক্রম করি, তাহলে আমাদের সঙ্গে সঙ্গে জানাবে। এ শপথ নিয়ে আমরা সবাই একত্র হলাম। যারা আজকে উপস্থিত হতে পারে নাই, তাদের জানিয়ে দিও- আমরা একযোগে, একসঙ্গে এ কাজে নামলাম। এটাকে সফল করবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্ম থেকে ৫৩ বছরে এ সুযোগ আর আসে নাই। যে সুযোগ তোমরা আমাদের দিয়েছ। এ সুযোগ যেন হাতছাড়া না হয়। এ সুযোগ হাতছাড়া হলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ থাকবে না। এটা কোনও রাষ্ট্র আর থাকবে না। এটা যেন শুধু রাষ্ট্র নয়, পৃথিবীর সম্মানিত রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। যেহেতু তরুণরা এটার ঢাল ধরেছে। এ কারণে এটা ইউনিক, অন্যন্য দেশ আমরা তৈরি করতে চাই।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘দুনিয়ার মানুষ তোমাদের কাছে শিখতে আসবে। তোমাদের নিয়ে যাবে- বলবে কী মন্ত্র দিয়ে এটা করেছো? এ মন্ত্রটা তারা শিখতে আসবে। সে মন্ত্রটা তোমরাও টের পাচ্ছ না, এটা কীভাবে আসলো? কিন্তু একটা বিরাট মন্ত্র তোমরা আবিষ্কার করেছো। সেটাকে ধরে রাখবে। এ মন্ত্র যদি শিথিল হয়ে যায়- তাহলে আমাদের কপালে অশেষ দুঃখ আছে। সেই দুঃখ যেন আমাদের দেখতে না হয়।’

সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল; বন, পরিবেশ ও জলবায়ু উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার, তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম এবং যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৮/০৯/২০২৪

ড. এম জুবের রহমান ও ড. এম জাবির রহমানঃ বিগত কয়েক বছরে বাংলাদেশে সিজারিয়ান ডেলিভারির হার আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে চলেছে। যদিও কিছু ক্ষেত্রে সিজারিয়ান পদ্ধতি জীবন বাঁচাতে অপরিহার্য, তবে অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। তাই কেন সিজারিয়ান ডেলিভারির হার এত বাড়ছে এবং এর পেছনের কারণগুলো কী, তা বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

সম্প্রতি 'R2' ইনস্টিটিউট অফ ডেটা সায়েন্স অ্যান্ড ইনফরমেশন টেকনোলজি একটি গবেষণা পরিচালনা করেছে, যেখানে ২০১৭ সালের ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে (DHS) থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এই গবেষণায় উঠে এসেছে সমাজের বিভিন্ন দিক এবং চিকিৎসার ইতিহাস কীভাবে সিজারিয়ান ডেলিভারির হারকে প্রভাবিত করে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এ সংক্রান্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।

গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সিজারিয়ান ডেলিভারির হার একরকম নয়। খুলনা (৪৪.৫৯%) এবং ঢাকা (৪৪.০৯%) অঞ্চলে সিজারিয়ান পদ্ধতির হার সবচেয়ে বেশি, যেখানে সিলেট (২৫.৪৬%) এবং বরিশাল (২৬.৭৪%) অঞ্চলে এই হার তুলনামূলকভাবে অনেক কম। এই পার্থক্যের মূল কারণ হিসেবে স্বাস্থ্যসেবার অবকাঠামো, চিকিৎসা সুবিধার প্রাপ্যতা, এবং স্থানীয় স্বাস্থ্যনীতির বিভিন্নতা থাকতে পারে।

শহরাঞ্চলে বসবাসকারী নারীদের মধ্যে সিজারিয়ান ডেলিভারির হার গ্রামীণ নারীদের তুলনায় অনেক বেশি। শহরের ৪২.৭২% মা সিজারিয়ান পদ্ধতিতে সন্তান জন্ম দেন, যেখানে গ্রামের হার ২৭.৭২%। এটি বোঝায় যে, শহরের মেয়েদের কায়িক শ্রমের স্বল্পতা ও আর্থিক সক্ষমতা হয়তো সিজারিয়ান ডেলিভারির হারে প্রভাব ফেলছে।

নারীর শিক্ষাগত যোগ্যতাও সিজারিয়ান পদ্ধতি বেছে নেওয়ার একটি বড় কারণ। গবেষণায় দেখা গেছে, উচ্চশিক্ষিত নারীদের মধ্যে সিজারিয়ানের হার প্রায় ৬০%, যেখানে মাধ্যমিক বা তার চেয়ে কম শিক্ষিত নারীদের মধ্যে এই হার কম। শিক্ষিত নারীরা হয়তো সন্তান জন্মদানের সময় ভীত থাকেন এবং জটিলতা এড়াতে চিকিৎসকদের কথা মত সিজারিয়ান পদ্ধতি বেছে নেন। গবেষণায় আরও দেখা গেছে যে, ধনী নারীদের মধ্যে সিজারিয়ানের হার প্রায় ৬৫%, যেখানে দরিদ্র নারীদের ক্ষেত্রে এটি প্রায় ২০%। অর্থনৈতিকভাবে সচ্ছল পরিবারগুলোর সিজারিয়ান অপারেশন এর ব্যায়ভার বহনের সামর্থ্য সিজারিয়ানের সিদ্ধান্তে ভূমিকা রাখতে পারে।

যেসব নারীদের আগে গর্ভপাত হয়েছে, তাদের মধ্যে সিজারিয়ান ডেলিভারির হার তুলনামূলকভাবে বেশি (৩৮.০৬%)। পূর্বের গর্ভপাতের কারণে ভবিষ্যৎ গর্ভধারণে জটিলতা বাড়তে পারে, যা সিজারিয়ানের সম্ভাবনা বাড়ায়। যেসব নারীর পূর্বে সিজারিয়ান ডেলিভারি হয়েছে, তাদের প্রায় ১০০% পরবর্তী সন্তান জন্মের সময়ও সিজারিয়ান পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন। এটি মূলত চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী করা হয়, কারণ পূর্বে সিজারিয়ান হওয়া মায়েদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক প্রসব জটিলতার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। নারীদের বিবাহের বয়সও সিজারিয়ান ডেলিভারির হারকে প্রভাবিত করে। যারা ২৫-২৯ বছর বয়সে বিয়ে করেছেন, তাদের মধ্যে সিজারিয়ানের হার সবচেয়ে বেশি। ২০ বছরের নিচে বা ৩০ বছর বা তার বেশি বয়সে বিয়ে করা নারীদের মধ্যে সিজারিয়ান ডেলিভারির হার তুলনামূলকভাবে কম।

বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে সিজারিয়ান ডেলিভারি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে। গবেষণার ফলাফল থেকে স্পষ্ট হয় যে, সিজারিয়ান ডেলিভারির হার কেবল চিকিৎসাগত নয়, বরং সামাজিক এবং অর্থনৈতিক অনেকগুলো বিষয় দ্বারা প্রভাবিত হয়। স্বাস্থ্যসেবা সহজলভ্য করা, নারীদের মাঝে গর্ভধারণ এবং সন্তান জন্মদানের সঠিক তথ্য প্রচার করা, এবং অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান এড়াতে জনসচেতনতা বাড়ানো প্রয়োজন। সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে আমরা মাতৃমৃত্যু এবং শিশুমৃত্যুর হার কমাতে পারি এবং সিজারিয়ানের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারি।

সিজারিয়ানের অপ্রয়োজনীয়তা কমানোর একটি সম্ভাব্য সমাধান হল আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তির ব্যবহার। যুক্তরাষ্ট্রের সিডারস-সিনাই হাসপাতালে গবেষকরা একটি নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছেন, যা প্রসবের ধরন পূর্বাভাস দিতে পারে। এই পদ্ধতিটি মেশিন লার্নিং-এর উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, যেখানে কম্পিউটার রোগীর ডেটা থেকে প্যাটার্ন বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সহায়তা করে।

ডা. মেলিসা ওং, সিডারস-সিনাইয়ের একজন প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ, জানান, এই পদ্ধতির মাধ্যমে আগেভাগেই বোঝা যাবে রোগী কি স্বাভাবিকভাবে সন্তান জন্ম দিতে পারবে, নাকি সিজারিয়ানের প্রয়োজন হবে। ফলে, অপ্রয়োজনীয় সিজারিয়ান এড়ানো সম্ভব হবে। অনেক সময় চিকিৎসকরা দীর্ঘ সময় ধরে স্বাভাবিক প্রসবের জন্য চেষ্টা করেন, অথচ রোগীর অবস্থা সিজারিয়ানের প্রয়োজনীয়তা নির্দেশ করে। মেশিন লার্নিং মডেলটি এই ধরনের পরিস্থিতি নির্ধারণে সহায়ক
হবে।

সিডারস-সিনাইয়ের গবেষণায় ২০১৩ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে জন্ম দেওয়া ৯,৩৮৫ জন নারীর তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। গবেষকরা দেখেছেন, এই মডেলটি ৮৭% সঠিকভাবে পূর্বাভাস দিতে সক্ষম ছিল যে, একজন নারী কীভাবে সন্তান জন্ম দেবেন। মডেলটি প্রসবের সময় এবং জরায়ুর প্রসারণের মতো ক্লিনিকাল তথ্য বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত নেয়, যা সাধারণত চিকিৎসকরাও ব্যবহার করেন।

ডা. কিম্বার্লি গ্রেগরি, সিডারস-সিনাইয়ের ম্যাটার্নাল-ফিটাল মেডিসিন বিভাগের প্রধান, বলেন, "এই মডেলের বিশেষত্ব হলো এটি বাস্তব সময়ে কাজ করতে পারে। অন্যান্য মডেলগুলো রোগী হাসপাতালে আসার পর তার ঝুঁকির ওপর ভিত্তি করে কাজ করে, কিন্তু এটি প্রসব চলাকালীন চলমান তথ্য বিশ্লেষণ করে সিদ্ধান্ত দেয়।" এই পদ্ধতি সরাসরি হাসপাতালের ইলেকট্রনিক মেডিক্যাল রেকর্ডের সাথে সংযুক্ত করা যেতে পারে, যা চিকিৎসকদের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়ক হবে। ডা. মেলিসা ওং বলেন, "প্রায় এক-তৃতীয়াংশ নারী সিজারিয়ান ডেলিভারির মাধ্যমে সন্তান জন্ম দেন। আমাদের লক্ষ্য এই হার কমিয়ে আনা, কারণ সিজারিয়ান অনেক ক্ষেত্রেই মাতৃ ও নবজাতকের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে।"

বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার এমন ব্যবহারের সম্ভাবনা অনেক। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতের উন্নয়নে, বিশেষ করে সিজারিয়ান ডেলিভারির হার কমানোর জন্য, 'AI'-এর ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। এর মাধ্যমে রোগী ও চিকিৎসকদের মধ্যে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ তৈরি হবে, যা মাতৃ ও শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে। সিজারিয়ান ডেলিভারির হার কমাতে সঠিক স্বাস্থ্যনীতি এবং জনসচেতনতা কার্যক্রম যেমন প্রয়োজন, তেমনি 'AI'-এর মতো আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ও এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। 'AI'-এর মাধ্যমে চিকিৎসা সেবায় সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া আরও সহজ এবং কার্যকর হবে, যা মাতৃমৃত্যু এবং শিশুমৃত্যুর হার কমাতে সহায়ক হতে পারে।

লেখক: ড. এম জুবের রহমান ও ড. এম জাবির রহমান, দুজনেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যথাক্রমে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স বিশেষজ্ঞ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিসাবে কর্মরত আছেন।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৮/০৯/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহীঃ ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ জানিয়েছেন, আসন্ন দুর্গাপূজায় ঝুঁকিপূর্ণ মন্দিরগুলো মাদরাসা ছাত্ররা পাহারা দেবে। সঙ্গে স্থানীয় জনগণও পাহারা দেবে।

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার প্রেমতলী গৌরাঙ্গ বাড়ি কালীমন্দির পরিদর্শন ও অসহায়-দরিদ্রদের মধ্যে সহায়তা সামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা জানান।

তিনি বলেন, পূজামণ্ডপে যদি বিশৃঙ্খলা করা হয় সে যেই হোক ছাড় দেব না। ধর্মীয় উপাসনালয়, পূজামণ্ডপে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হলে তা কঠোর হাতে দমন করা হবে।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, রাজশাহী বিভাগের সনাতন ধর্মের ভাই-বোনেরা যাতে উৎসাহ-উদ্দীপনায় পূজা উৎসব পালন করতে পারে এ ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি। আপনারা যদি মন্দিরে হামলার আশঙ্কা করেন তাহলে স্থানীয়দের সম্পৃক্ত করবেন। আমরা সেন্ট্রালি বলে দিয়েছি, যে মন্দিরগুলো ঝুঁকিপূর্ণ সেখান মাদরাসা ছাত্ররা পালাক্রমে মন্দিরগুলো পাহারা দেবে। সঙ্গে স্থানীয় জনগণও থাকবে।

তিনি আরও বলেন, ভারতের মথুরায় শ্রীকৃষ্ণের মন্দির লালন-পালনের (সেবা) ব্যবস্থা আছে। যারা মন্দিরের সেবা করে। যাদের মা-বাবা নেই তাদের খাবার ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। আমি আশা করব, এই শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের ট্রাস্টি বোর্ড মানবিক একটা পরিকল্পনা নিতে পারেন। ধর্ম চর্চা, ধর্ম অনুশীলনের পাশাপাশি অসহায় মানুষদের খাবার ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারেন।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, এ ক্ষেত্রে আমরা আপনাদের পাশে আছি। আপনারা আমাদের হাতকে শক্তিশালী করবেন। আমরা দেশকে একটি অসাম্প্রদায়িক, বৈষম্যহীন রাষ্ট্রে পরিণত করতে চাই।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৮/০৯/২০২৪

কক্সবাজারঃ জেলার রামু উপজেলার কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবছার উদ্দীন স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করলেও তা কার্যকর করছেন না অভিযোগ উঠেছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) বিরুদ্ধে। তবে অভিযোগের বিষয়টি সত্য নয় বলে দাবি করেছেন ইউএনও।

এইদিকে রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) পদত্যাগের বিষয়টি কার্যকর করার দাবিতে স্কুল প্রাঙ্গণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করে।

শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, আবছার উদ্দিন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রধান শিক্ষকের শ্যালকে প্রভাবের কারণে স্কুলের বিভিন্ন অর্থনৈতিক অনিয়মে জড়িত। এসবের মধ্যে রয়েছে স্কুলের ফি ও জোর পূর্বক কোচিং বাণিজ্য, দোকান ভাড়ার টাকা আত্মসাৎ, স্কুলের জমি বিক্রি সংক্রান্ত অনিয়ম, নিয়মিত ক্লাস না নেওয়া, এবং দীর্ঘদিন ধরে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করে আসছে । শিক্ষার্থীরা আরও জানান স্কুলের জমি ক্রয় করার টাকার হিসাবও প্রদান করা হয়নি।

বিক্ষোভ চলাকালে শিক্ষার্থীরা স্কুলের পরিচালনায় অনিয়মসহ ১০টি অভিযোগ তুলে ধরে একদফা দাবিতে স্লোগান দেন এবং মিছিল করেন। তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে আবছার উদ্দিন পদত্যাগ টা কার্যকর করা দাবি জানান। শিক্ষার্থীরা আরও জানান, তাদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাস বর্জন কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

শিক্ষার্থী মো. এহেসান জানান, কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে প্রধান শিক্ষকের নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে মানববন্ধন করি। প্রধান শিক্ষক আবছার উদ্দিন পদত্যাগ চেয়ে এক দফা দাবিতে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়।

শিক্ষার্থী হুমাইয়া জান্নাত জানান, দীর্ঘদিন ধরে ওই শিক্ষকের অনিয়মের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছি। গত মঙ্গলবার দাবি ছিল একদফা। দুর্নীতিবাজ শিক্ষকের পদত্যাগ। পরে দাবি অনুসারে তিনি পদত্যাগ পত্র ম্যানেজিং কমিটি বরাবর জমা দেয়।

স্কুলের অন্যান্য শিক্ষকরা জানান, তারা শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে চেষ্টা চালাচ্ছেন। আবছার উদ্দীন ছাত্রদের আন্দোলনে মুখে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করার পরেও আবারো স্কুলের সুষ্ঠ পরিবেশকে অশান্ত করার পায়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।

রোববার সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হলে কচ্ছপিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি ও রামু উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) মো.রাশেদুল ইসলাম বলেন, ছাত্র-ছাত্রীর দাবীতে প্রধান শিক্ষক তার দায়িত্ব থেকে পদত্যাগ করেছে। তার পদত্যাগ পত্রও পেয়েছি। তবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা না পাওয়ায় ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি।

তিনি আরো বলেন, ওই বিদ্যালয়ে অন্য একজনকে শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

ইউএনও'র বক্তব্য সূত্র খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দায়িত্ব দেয়া ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকও বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছে। যার কারনে শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) সকালে ওই প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এতে শাহ সোজা রোড় প্রায় ২ কি.মি.সড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে এক পর্যায়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন রামু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নুরুল ইসলাম। পরে বিকেলে শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়ে ম্যানেজিং কমিটির কাছে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে পদত্যাগ চেয়ে আবেদন পত্র জমা দেন ওই শিক্ষক। তিনি স্বেচ্ছায় প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

পরে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য শিক্ষা অফিসার নিজে হ্যান্ড মাইক হাতে নিয়ে বলেন, আজকে থেকে এই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করবেন সহকারি প্রধান। লিখিত অভিযোগ হাতে পেয়েছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৮/০৯/২০২৪

চাঁদপুর: সারা দেশে যখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের পদত্যাগ করানোর হিড়িক পড়েছে তখন এর উল্টো ঘটনা ঘটেছে চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলায়। জোর করে কর্মবিরতিতে যেতে বাধ্য করা প্রধান শিক্ষককে ফিরিয়ে এনে চেয়ার বসিয়েছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) উপজেলার নাউরী আহাম্মদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকেরা প্রধান শিক্ষক এ কে এম তাজুল ইসলামকে সম্মানের সঙ্গে বরণ করে নেন।

এদিন সকাল ১০টার দিকে প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে প্রবেশ করলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ফুলের মালা গলায় দিয়ে বরণ করে নেয়। ওই সময় শিক্ষার্থীরা প্রধান শিক্ষকের পা ধরে ক্ষমা চায় এবং আবেগাপ্লুত হয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

এর আগে গত ২৪ আগস্ট শনিবার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে জোর করে কর্মবিরতিতে যাওয়ার স্বাক্ষর নিয়েছিল একদল বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী।

এ খবর ছড়িয়ে পড়লে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দা জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করে বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন স্তরের মানুষ। জোর করে কর্মবিরতি করানোর খবর শুনে ক্ষোভে ফেটে পড়ে ছাত্র-জনতা।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৮/০৯/২০২৪

পটুয়াখালীঃ ‘বউয়ের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে চলে গেলাম’ এমন চিরকুট লিখে স্কুল শিক্ষক নজরুল ইসলাম আম গাছের সঙ্গে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সকালে আমতলী উপজেলার হরিদ্রাবাড়িয়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।

নজরুল ইসলাম আমতলী সদর ইউনিয়নের উত্তর টিয়াখালী ছোবাহান বিশ্বাস মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন।

জানা গেছে, উপজেলার হরিদ্রাবাড়িয়া গ্রামের মো. খালেক খাঁনের ছেলে নরজরুল ইসলামের সঙ্গে গত দের বছর আগে একই গ্রামের দুলাল ভুইয়ার মেয়ে খাজিদার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহ চলছিল এমন দাবি তার পরিবারের। ওই দম্পতির এক বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। শুক্রবার দিবাগত রাতে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। শনিবার সকালে স্ত্রী খাজিদা বেগম তার ভাসুর ফেরদৌস খানকে বলেন, আমি আমার বাবার বাড়ী চলে গেলাম আপনার ভাই আমাকে মারধর করেছে। এ কথা বলে স্ত্রী খাজিদা বেগম বাবার বাড়ী চলে যায়। ওই দিন বেলা সাড়ে ১০ টার দিকে স্থানীয়রা শিক্ষক নজরুল ইসলামকে একটি আম গাছের সঙ্গে গলায় ফাঁস দেয়া অবস্থায় দেখতে পায়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে তার মরদেহ উদ্ধার করে। পরে ময়না তদন্তের জন্য তার মরদেহ বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়ে।

এসময় পুলিশ নজরুলের পরিধানের কাপড়ে পেঁচানো একটি চিরকুট উদ্ধার করেছে। এ ঘটনায় আমতলী থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ঘটনার পরপর স্ত্রী খাজিদা বেগম গা-ঢাকা দিয়েছেন।

নিহতের বড় ভাই ফোরদৌস খাঁন বলেন, আমার ভাইকে তার স্ত্রী বিয়ের পর থেকেই নানাভাবে নির্যাতন করে আসছে। তার নির্যাতন সইতে না পেরে আমার ভাই গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আমি আমার ভাইয়ের হত্যাকারীর শাস্তি দাবি করছি।

আমতলী থানার ওসি কাজী সাখাওয়াত হোসেন তপু বলেন, মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বরগুনা মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৮/০৯/২০২৪

ঢাকাঃ কোটা সংস্কার আন্দোলনে সহিংসতার পর নিয়মের তোয়াক্কা না করেই দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করেন অধ্যাপক আলমগীর। অবশেষে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) থেকে পদত্যাগ করেছেন।

তিনি সংস্থাটির সদস্য হলেও চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে শীর্ষ পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। ‘অলিখিতভাবে’ তিনিই ছিলেন ইউজিসির চেয়ারম্যান।

রবিবার  (৮ সেপ্টেম্বর) সকালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. শেখ আব্দুর রশীদের কাছে তিনি পদত্যাগপত্র জমা দেন। অধ্যাপক আলমগীর নিজেই  এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

পদত্যাগপত্রে তিনি লিখেছেন, ‘২০২৩ সালের ১৬ জুন থেকে আমি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পূর্ণকালীন সদস্য পদে দ্বিতীয় মেয়াদে কর্মরত। ব্যক্তিগত কারণে এ পদে আমার পক্ষে দায়িত্ব পালন সম্ভব হচ্ছে না। তাই আমি ৮ সেপ্টেম্বর সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করছি।

একই সঙ্গে তিনি তার পূর্বের কর্মস্থল খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে অধ্যাপক (গ্রেড-১) (মূল পদ) পদে আগামী ৯ সেপ্টেম্বর পুনরায় যোগদান করতে চান। এজন্য তার পদত্যাগপত্র গ্রহণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।

গত ১৬ জুলাই রাতে হঠাৎ এক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে ইউজিসি। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনার সৃষ্টি হয়। ইউজিসি তদারককারী সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধে এমন ঘোষণা দিতে পারে না বলে প্রতীয়মান হয়। বিষয়টি খোদ ইউজিসির কর্মকর্তারাও স্বীকার করেন।

বিষয়টি নিয়ে অধ্যাপক আলমগীর অবশ্য সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীকে দুষছেন। তিনি বলেন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো লিখিত নির্দেশনা আমাদের কাছে ছিল না। মন্ত্রী (মহিবুল হাসান চৌধুরী) ফোন করে বললেন, বন্ধ করে দিতে হবে। আমরা বাধ্য ছিলাম, সেটা মানতে। আইনের ব্যত্যয় হয়তো হয়েছে। তবে আমাদের কিছু করার ছিল না।

magnifiermenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram