শনিবার, ২১শে সেপ্টেম্বর ২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ১১টি হলে নতুন প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নিয়োগ সংক্রান্ত চিঠি ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার সূত্রে জানা যায়।

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ডিনদের নিয়োগ চিঠি পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুন্সী শামস উদ্দিন আহম্মদ।

নিয়োগপ্রাপ্ত প্রভোস্টদের মধ্যে, শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলে উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. ফারুক শাহ, হাজী মুহম্মদ মুহসিন হলে নিয়োগ পেয়েছেন জিন প্রকৌশল বিভাগের শিক্ষক ড. মোহাম্মদ নাজমুল আহসান। সলিমুল্লাহ মুসলিম হলে জাপানিজ স্টাডিজের শিক্ষক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক ড. মোহাম্মদ নাজমুল হোসাইন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ইসলামিক স্টাডিজের শিক্ষক ড. মোহাম্মদ শামসুল আলম। বিজয় একাত্তর হলে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. স. ম. আলী রেজা।

রোকেয়া হলে রসায়ন বিভাগের শিক্ষক ড. হোসনে আরা বেগম, সুফিয়া কামাল হলে গণিত বিভাগের শিক্ষক ড. সালমা নাসরিন, কুয়েত মৈত্রী হলের সমাজ কল্যাণ বিভাগের শিক্ষক ড. মাহবুবা সুলতানা, শামসুন্নাহার হলে স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের শিক্ষক ড. নাসরিন সুলতানা।

এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ অনুষদে নতুন ডিন নিয়োগ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেজিস্ট্রার মুনসী শামস উদ্দিন আহম্মদ।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৩/০৯/২০২৪

নাটোরঃ সহকারী গ্রন্থাগারিক থাকা সত্ত্বেও মোটা অঙকের উৎকোচের বিনিময়ে একই পদে আরেকজনকে নিয়োগদানের অভিযোগ উঠেছে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ও তার মামা প্রভাষক জয়নাল আবেদীনের বিরুদ্ধে। গুরুদাসপুর পৌর সদরের নাজিম উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজে ঘটেছে ওই ঘটনা।

সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে একই সাথে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করছেন দুই ব্যক্তি। তবে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছেন ২০০৫ সালে নিয়োগ পাওয়া আলেয়া খাতুন। শিক্ষকদের মধ্যেও দেখা দিয়েছে দ্বিধা-বিভক্তি। অবৈধ ওই নিয়োগ বাতিলের দাবি জানিয়েছে মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সাংবাদিক সম্মেলন করেছেন গ্রন্থাগারিক পদে আগে নিয়োগ পাওয়া আলেয়া খাতুন।

ভুক্তভোগী আলেয়া খাতুন অভিযোগ করে বলেন, দীর্ঘ ১৪ বছর ধরে তিনি বিনা বেতনে সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে দায়িত্ব পালন করছেন। অথচ আওয়ামী লীগের দাপটে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন ও সাবেক অধ্যক্ষ জয়নাল আবেদীন একই পদে অন্য একজনকে অবৈধভাবে নিয়োগ দিয়েছেন। এ কারণে তিনি মানষিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। তিনি অবৈধ নিয়োগটি বাতিলের দাবি করেন।

বিদ্যালয় সূত্র জানিয়েছে ১৯৪১ সালে নাজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। সময়ের প্রয়োজনে ২০০৫ সালে স্কুলের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটিতে কলেজ শাখা চালু করা হয়। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে ওই বছরের ১৩ মার্চ বিভিন্ন পদে অন্তত ৩৬জন শিক্ষক কর্মচারী নিয়োগ করা হয়। এর মধ্যে ১৯৯৫ সালের নিয়োগ বিধি অনুযায়ী সহকারি গ্রন্থাগারিক পদে আলেয়া খাতুন নামের এক নারীকে নিয়োগ দেয় তৎকালিন পরিচালনা পর্ষদ।

মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস বলছে, ১৯৯৫ এবং সবশেষ ২০১৮ সালের নিয়োগবিধি মোতাবেক স্কুল অ্যান্ড কলেজে সহকারী গ্রন্থাগারিকের পদ একটি। ওই পদে কোনো নিয়োগ হয়ে থাকলে তা বাতিলপূর্বক পদ শূণ্য না করা পর্যন্ত নতুন করে নিয়োগ দেওয়ার সুযোগ নেই। অথবা একই পদে দুইজনকে নিয়োগদানের সুযোগও নেই।

নাজিম উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. জালাল উদ্দিন শুক্তি বলেন, সহকারী গ্রন্থাগারিক পদে দীর্ঘদিন ধরে চাকরি করছেন আলেয়া খাতুন। আলেয়া খাতুনের নিয়োগ বহাল রেখেই ১৪ বছর পর একই পদে ২০১৯ সালের ২৫ অক্টোবর তাসলিমা খাতুনকে নিয়োগ দিয়েছে তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদ। এখন দুজনই সহকারি গ্রন্থাগারিকের পদে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনিও বিব্রত।

নাম প্রকাশ না করার সর্তে প্রতিষ্ঠানের কয়েকজন শিক্ষক বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন প্রতিষ্ঠানটির সভাপতির দায়িত্বে আসেন। সে সময় নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে রোজী মোজাম্মেল মহিলা কলেজের প্রভাষক পদে চাকরিরত থাকা অবস্থায় বিধি ভঙ্গ করে জয়নাল আবেদীনকে নাজিম স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ করা হয়।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সেলিম আক্তার বলেন, সহকারী গ্রন্থাগারিকের পদে পদে দুই জনকে নিয়োগ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এমন ঘটনা ঘটে থাকলে তা দুঃখজনক। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।

তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জয়নাল আবেদীন বলেন, সহকারী গ্রন্থাগারিকের পদ ফাঁকা থাকায় সেখানে তাসলিমা নামের এক নারীকে নিয়োগ দিয়েছিলেন তিনি। একই পদে আগে দেওয়া নিয়োগের কথা তিনি জানতেন না।

পরিচালনা পর্ষদের সদ্য সাবেক সভাপতি আওয়ামী লীগ নেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, আলেয়া বেগমের নিয়োগপত্রে ত্রুটি থাকায় ২০১৯ সালে একই পদে অন্য একজনকে নিয়োগ ছিয়েছেন তিনি।

তবে তাসলিমা খাতুনের মোবাইল ফোন না ধরায় এব্যাপারে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নাজিম উদ্দিন স্কুল অ্যান্ড কলেজ পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা আক্তার বলেন, একই পদে দুই ব্যক্তির চাকরি করার সুযোগ নেই। তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৩/০৯/২০২৪

সাতক্ষীরাঃ সাতক্ষীরা সদরের বল্লী মো. মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক একেএম আজহারুজ্জামান মুকুলের বিরুদ্ধে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. জামিলুজ্জামানকে মারপিটসহ লাঞ্ছিত করে চেয়ার দখলের অভিযোগ উঠেছে।

একই সঙ্গে দুই দফায় প্রধান শিক্ষকের বসতবাড়িতে হামলা, লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। সম্প্রতি ওই প্রধান শিক্ষককে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দেওয়ার একটি ভিডিও ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী প্রধান শিক্ষক জামিলুজ্জামান সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, আর্মি ক্যাম্প কমান্ডার ও শিক্ষা বোর্ডসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

ভাইরাল হওয়া দুটি ভিডিওতে দেখা গেছে, স্কুল চত্বরে বহিরাগত কিছু লোকজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জামিউলুর রহমানকে মারপিট করে স্কুল থেকে বের করে দিচ্ছে। অপর একটি ভিডিওতে দেখা গেছে প্রধান শিক্ষকের রুমে অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক একেএম আখতারুজ্জামান মুকুল চেয়ার দখল করে উপস্থিত লোকজনকে বলছে, জামিল স্যারের ব্যাপারে কয়েকজন আমাকে কল দিয়েছে। আমি তাদের বলেছি আমার রাজ্যে আমি রাজা, কারোর কথা শোনার সময় আমার নেই। জামিল স্যারকে কি আমরা আর এই চেয়ারে বসতে দেব না। আমি বলে দিয়েছি তাকে স্কুলে না আসতে। স্কুলে আসার আগে আকড়াখোলা ব্রিজ পার হলেই তাকে কবরে পাঠানো হবে।

জানা গেছে, অভিযুক্ত একেএম আজহারুজ্জামান মুকুল প্রতিষ্ঠানটির সহকারী শিক্ষক পদে থাকলেও তিনি দীর্ঘ ১২ বছর বিদ্যালয়ে অনিয়মিত ছিলেন। বিদ্যালয়ে অনিয়মিত থেকেও বেতন-ভাতা তোলার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সম্প্রতি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটলে তিনি বল্লী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদকের পদে থাকায় এলাকায় নানাবিধ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িয়েছেন। লুটপাটসহ নানাবিধ হয়রানির অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে। এদিকে, প্রধান শিক্ষক মো. জামিলুজ্জামানকে প্রকাশ্যে হত্যার হুমকি দিয়েছে আজহারুজ্জামান মুকুল। তেমনই একটি ভিডিও ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় রীতিমতো ভাইরাল হয়েছে।

ঘটনার অনুসন্ধানে জানা যায়, মো. জামিলুজ্জামান বল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ২০০২ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে চাকরিপ্রাপ্ত হন। পরবর্তীতে ২০২২ সালে যথারীতি নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষার মাধ্যমে সহকারী প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন এবং এমপিওভুক্ত হন।

বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য থাকায় বিধি মোতাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে তিনি যথাযথ দায়িত্ব পালন করে আসছেন। এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরদিন অর্থাৎ ৬ আগস্ট ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. জামিলুজ্জামান অফিসে দায়িত্ব পালন করছিলেন।

এমন অবস্থায় সহকারী শিক্ষক আজহারুজ্জামান মুকুলের নেতৃত্বে বেশ কিছু বহিরাগত বিদ্যালয় প্রবেশ করে প্রধান শিক্ষককে কক্ষ থেকে বাহিরে এনে মারপিট করেন এবং প্রকাশ্যে শিক্ষার্থীদের সামনে লাঞ্ছিত করেন। একইসঙ্গে পর্যায়ক্রমে দু-দিন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে ভাঙচুরসহ লুটপাট করেন।

এ ঘটনার পরে সহকারী শিক্ষক আজহারুজ্জামান মুকুল অবৈধভাবে ও নিয়ম বহির্ভূতভাবে মো. জামিলুজ্জামানকে প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে নিজেকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। সমস্ত বিষয়টি লিখিতভাবে ভুক্তভোগী শিক্ষক সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক, সেনাবাহিনীর ক্যাম্প কমান্ডার, শিক্ষা বোর্ডসহ সরকারি বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দিয়েছেন।

এ বিষয়ে বল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আব্দুল আলীম বলেন, সরকার পতনের পরেরদিন স্কুলে যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটা রীতিমতো লজ্জাজনক। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক যথারীতি অফিসে কাজ করছিলেন আকস্মিক সহকারী শিক্ষক আজহারুজ্জামান মুকুলসহ বেশ কিছু বহিরাগত স্কুলে প্রবেশ করে প্রধান শিক্ষককে টেনেহিঁচড়ে বাইরে এনে মারপিটসহ লাঞ্ছিত করেন।

তিনি বলেন, পরবর্তীতে প্রধান শিক্ষকের বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। এরপরে সহকারী শিক্ষক আজহারুজ্জামান মুকুল নিজেকে প্রধান শিক্ষক দাবি করে অফিস বসছে। যেটা সম্পূর্ণ নিয়ম পরিপন্থি। একজন দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকের সঙ্গে যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটা সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। আমরা চাই একটি সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।

সিনিয়র শিক্ষক সাইদুর রহমান বলেন, সম্পূর্ণ ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে অপমান অপদস্থ এবং লাঞ্ছিত করা হয়েছে। এই সমস্ত কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দিয়েছেন সহকারী শিক্ষক আজহারুজ্জামান মুকুলসহ বেশ কয়েকজন বহিরাগত লোকজন।

তিনি বলেন, সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখেছি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এখন আজহারুজ্জামান মুকুল কিন্তু খাতা-কলমে কিংবা নিয়ম অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক হলেন জামিললুজ্জামান জামিল। একই সঙ্গে গত ২২ আগস্ট থেকে ছয়জন শিক্ষককে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে দেওয়া হচ্ছে না। এ বিষয়ে সশরীরে হাজির হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা শিক্ষা অফিসারকে অবহিত করা হয়েছে। বিষয়টা তারা দেখবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।

ভুক্তভোগী বল্লী মো. মুজিবুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মো. জামিলুজ্জামান বলেন, সরকারিবিধি অনুযায়ী ২০০২ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে এই প্রতিষ্ঠানে আমি যোগদান করি। পরবর্তীতে ২০২২ সালে পরীক্ষার মাধ্যমে যোগ্যতার ভিত্তিতে সহকারী প্রধান শিক্ষক হয়েছি। যেহেতু প্রতিষ্ঠানটিতে প্রধান শিক্ষকের পদ শূন্য, সেক্ষেত্রে সরকারি প্রধান শিক্ষকই ভারপ্রাপ্ত প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। যেটি আমি দীর্ঘদিন পালন করে আসছি।

তিনি বলেন- সরকার পতনের পরের দিন বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আজহারুজ্জামান মুকুল ও বেশ কিছু অপরিচিত মানুষ আকস্মিক এসে আমাকে অফিস থেকে টেনে বের করে প্রচণ্ড মারপিট করে এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সামনে লাঞ্ছিত করে। একই সঙ্গে আমার বাড়িতে দুই দফায় ভাঙচুর চালায় তারা। বিদ্যালয়ে গেলে আমাকে মেরে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে সহকারী শিক্ষক আজহারুজ্জামান মুকুল, যে ভিডিও ফুটেজ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এ বিষয়ে শিক্ষা বোর্ড, ডিসি, সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আমাকে এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তসহ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছেন।

তিনি আরও জানান, অভিযুক্ত সরকারি শিক্ষক আজারুজ্জামান মুকুল বল্লী ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সাধারণ সম্পাদকের পদে রয়েছেন। তিনি এই পদকে ব্যবহার করে ইতোমধ্যে অনেক অসামাজিক কার্যকলাপ পরিচালনা করেছেন। সেই ঘটনার অংশ বিশেষ আমাকে মারপিটসহ কর্মস্থল ত্যাগ করতে বাধ্য করেছেন। আমাকে বিদ্যালয় থেকে মারপিট করে বের করে নিজেকে প্রধান শিক্ষক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে অফিসে বসছেন। যে শিক্ষকরা তাকে মানতে চাই না তাদের বিরুদ্ধে তিনি ষড়যন্ত্র করছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত একেএম আজহারুজ্জামান মুকুল বলেন, হামলা ও লুটপাটের ঘটনার সঙ্গে আমি কোনোভাবে জড়িত নই। তবে যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সেটি আমার।

এসব বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা জামায়াত ইসলামের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান বলেন, বল্লী ইউনিয়ন জামায়াত ইসলামের সাধারণ সম্পাদক আজহারুজ্জামান মুকুলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগটি পেয়েছি সেটি নিঃসন্দেহে সংগঠন শর্ত ভঙ্গ করে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখার মত। তদন্তে যদি সত্যতা মেলে সেক্ষেত্রে অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শোয়াইব আহমাদ বলেন, বল্লী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন শিক্ষক সশরীরে এসে বেশ কিছু বিষয় অভিযোগ জানিয়েছেন। অভিযোগের মধ্যে একটি হলো তাদেরকে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করতে দেওয়া হচ্ছে না। আগামী রোববার ওই বিদ্যালয়ে যাবো এবং উভয় পক্ষকে নিয়ে বসা হবে। পরীক্ষার রিপোর্ট বোর্ডে পাঠানো হবে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৩/০৯/২০২৪

সুভাষ বিশ্বাস, নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চরম অমিয়ম, অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি আর আত্নিয় করনের কারনে কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়েছে নীলফামারী কিশোরগঞ্জের কিশামত বদি উচ্চ বিদ্যালয়। প্রধান শিক্ষক দীর্ঘ ১৬ বছরে কিসামত বদি উচ্চ বিদ্যালয়টিকে পরিবার তন্ত্রে রূপান্তরিত করার একটি তালিকা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তে সেটি ভাইরাল হওয়ায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।

এরপর থেকেই উঠে আসতে শুরু করেছে বিদ্যালয়টির বিভিন্ন অনিয়মের তথ্য । জানা গেছে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার রণচন্ডি ইউনিয়নের কবিরাজের বাজারে অবস্থিত কিশামত বদি উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক থেকে আয়া পর্যন্ত সবাই প্রতিষ্ঠানটিতে একমাত্র ইসলাম ধর্মের একজন শিক্ষক মুসলিম রয়েছেন। তিনি ছাড়া বাকি সবাই সনাতম (হিন্দু) ধর্মের।

নীলফামারী ৩ আসনের তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকারের সংসদ সদস্য অধ্যাপক গোলাম মোস্তফা ও প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমার ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে এমন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়ন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। কিসামত বদি উচ্চ বিদ্যালয়টি ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০০২ সালে এমপিওভুক্ত হয় বিদ্যালয়টি । এসময় প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি হিসাবে জমিদাতা কুলোদা মোহন রায়কে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি করে

অন্তত কুমারকে প্রধান শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ দেন। প্রতিষ্ঠানে নিজেদের আধিপত্য বিস্তারের জন্য কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে নিজের ভাই, স্ত্রী, ভাইয়ের স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্য ও নিকট আত্নিয় দের নিয়োগ দেন প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমার।
প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কুলোদা মোহন রায়ের মৃত্যুর পর প্রধান শিক্ষক নিজের আধিপত্য ধরে রাখার জন্য প্রতিষ্ঠাতা সভাপতির ছেলে বিমল চন্দ্র রায়কে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্বে দেন।পরে সভাপতি ও প্রধান শিক্ষক দুজনে মিলে দুই পরিবারের লোকজনদের নিয়োগ প্রদান করেন।

বর্তমানে ওই প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক থেকে শুরু করে আয়া পর্যন্ত মোট ১৮ জন কর্মরত রয়েছেন। তার মধ্যে শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মের একজন শিক্ষক ছাড়া বাকিরা সকলেই সনাতন (হিন্দু) ধর্মের। এর মধ্যে ১২ জন প্রধান শিক্ষকের পরিবারের।

প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমারের স্ত্রী সহকারী প্রধান শিক্ষক ববিতা রানী রায় ঘটনাটি সত্যতা স্বীকার করে বলেন আমার স্বামী এই বিদ্যালয়ের প্রধান। আমার ভাসুর অন্নদা মোহন রায়। দেবর রঘুনাত চন্দ্র রায় ও তুলারাম রায়। তারা সকলে আপন ভাই। এছাড়াও ভাইয়ের স্ত্রী, ভাগিনা, ভাগিনার বউও নিয়োগ পেয়েছেন নিয়ম মেনেই।

প্রধান শিক্ষক অনন্ত কুমার বিদ্যালয়ে উপস্থিত ও মোবাইল ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।  তবে একটি গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, আমি যা করেছি নিয়ম মেনে করেছি। আপনার নিয়মের মধ্যে বাইরের কোনো প্রার্থী নিয়োগের জন্য উপযুক্ত ছিল কিনা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমাকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তার কার্যালয়ে আমাকে ডাকছেন বলে তিনি দ্রুত চলে যান।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফ-উজ-জামান সরকার বলেন, আমি এখানে নতুন এসেছি। এ বিষয়ে আমার জানা নেই। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি তালিকা দেখেছি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মৌসুমী হক বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া শিক্ষকের নামের তালিকা দেখে প্রধান শিক্ষককে ডেকেছিলাম। এ বিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে, নীলফামারী জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান শিক্ষাবার্তা'কে বলেন, আমার জানামতে ১৯৯৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় ২০০২ সালে এম পি ও ভুক্ত হয়। এই ১৬ জন শিক্ষক নিজেদের মেধা শ্রম দিয়ে তিল তিল করে গড়ে তুলেছেন প্রতিষ্ঠানটি এটা সত্য । তবে এখন দেখা যাচ্ছে প্রতিষ্ঠানটির সকলেই প্রধান শিক্ষকের আত্মীয়।

নীলফামারী ৩ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক গোলাম মোস্তফার মুঠোফোন বন্ধ ও পলাতক থাকায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হলো না

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৩/০৯/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকদের জোর করে পদত্যাগ করাতে নানাভাবে হেনস্থা করা হচ্ছে বলে শোনা যাচ্ছে। তবে এ ধরনের হেনস্তার ঘটনা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ এ ধরনের কর্মকাণ্ডে উদ্বোগ প্রকাশ করেছেন। শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলছে, দুর্নীতি ও অপকর্মের অভিযোগে অভিযুক্ত শিক্ষক-কর্মকর্তাদের তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর শৃঙ্খলাভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে জারি করা এক আদেশে এসব তথ্য জানানো হয়। উপসচিব সাইফুর রহমান খান স্বাক্ষরিত ওই আদেশটি সব জেলা প্রশাসকদের কাছে পাঠানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, দেশের বিভিন্ন স্থানে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও স্কুলের প্রধান বা অন্য আধিকারিকগণকে বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে পদত্যাগ বা অপসারণের ঘটনা ঘটায় মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ থেকে বিদ্যমান পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট অংশীজন প্রতিনিধিদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সার্বিক সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার বিষয়টি তদারকি এবং প্রয়োজনে এ বিভাগকে অবহিত করার জন্য জেলা প্রশাসকদের অনুরোধ করে পত্র জারি করা হয়। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এখনও শিক্ষকদের জোরপূর্বক পদত্যাগ ও নানাভাবে হেনস্তা করার ঘটনা ঘটছে, যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ বিষয়ে শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এবং এ ধরনের কার্যক্রম বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন।

আদেশে আরও বলা হয়, উপদেষ্টা মহোদয় আরো নির্দেশনা প্রদান করেছেন যে, যেসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অপকর্মের অভিযোগ আছে তা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ তদন্তপূর্বক যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। বেআইনী ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে অংশগ্রহণকারী এবং শৃঙ্খলাভঙ্গকারীদের চিহ্নিত করে প্রচলিত আইন অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ইতোমধ্যে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।

শিক্ষার্থীদের নিজেদের স্বার্থেই নিজ নিজ শিক্ষাঙ্গনে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা প্রয়োজন। এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের এবং সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

এর আগে দুপুরে শিক্ষকদের জোরপূর্বক পদত্যাগ ও হেনস্তা বন্ধের আহ্বান জানান শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। তিনি বলেন, লক্ষ্য করা গেছে যে দেশের বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহে এখনও শিক্ষকদের জোরপূর্বক পদত্যাগ ও নানাভাবে হেনস্তা করার ঘটনা ঘটছে যা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে হবে। যেসব শিক্ষক ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অপকর্মের অভিযোগ আছে তা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ যথাযথ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবে।শৃঙ্খলাভঙ্গকারীদের চিহ্নিত করে প্রচলিত আচরণবিধি অনুযায়ী তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রশাসনকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। বেআইনি ও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড সংগঠিত হলে তার প্রতিকারের জন্য ইতোমধ্যেই স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীদের নিজেদের স্বার্থেই নিজ নিজ শিক্ষাঙ্গনে সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষা করতে হবে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৩/০৯/২০২৪

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অতিরিক্ত সচিব ড. উত্তম কুমার দাশের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের চুক্তির অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।

মঙ্গলবার মন্ত্রয়াণালয়ের বৈদেশিক নিয়োগ ও চুক্তি শাখার উপসচিব কানিজ ফাতেমা স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে তার নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করা হয়।

ড. উত্তম কুমার দাশকে এর আগে গত বছরের ৩০ নভেম্বর এই পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। অতিরিক্ত মহাপরিচালক পদে নিয়োগ পাওয়ার আগে তিনি একই দপ্তরের পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

একই প্রজ্ঞাপনে  জার্মানি, ইরাক ও জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতসহ প্রশাসনের ২৪ কর্মকর্তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করেছে সরকার।

তারা হলেন, শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব ফন্টটিয়ার টেকনোলজির প্রাথমিক অবকাঠামো নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক (পিডি) সৈয়দ জহুরুল ইসলাম, রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের অতিরিক্ত সচিব সৈয়দ বেলাল হোসেন, জার্মানিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া, বাংলাদেশ টেলিযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের কমিশনার (প্রকৌশলী) শেখ রিয়াজ আহমেদ, ইরাকে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. ফজলুল বারী, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ, বাংলাদেশ টেলি যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের কমিশনার (ব্যবস্থাপনা ও প্রশাসন) মো. দেলোয়ার হোসাইন, বাংলাদেশ রাবার বোর্ডের চেয়ারম্যান সৈয়দা সারোয়ার জাহান, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের প্রকল্প পরিচালক মো. আফতাব উদ্দিন তালুকদার, এক্সপোর্ট কম্পিটিটিভনেস ফর জব প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. মনছুরুল আলম, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সদস্য মোহসিনা ইয়াসমিন ও তথ্য কমিশনের সচিব জুবাইদা নাসরিনের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে।

এছাড়া চুক্তির অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করা কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন- বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের মহাপরিচালক মো. কামরুজ্জামান, জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জি এস এম জাফরুল্লাহ, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান সারওয়ার মাহমুদ, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক উত্তম কুমার দাস, জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মুনির চৌধুরী, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সার্বক্ষণিক সদস্য সত্যেন্দ্র কুমার সরকার, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের সচিব শ্যামল চন্দ্র কর্মকার, মৌজা প্লট ভিত্তিক জাতীয় ডিজিটাল ভূমি জোনিং প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. কফিল উদ্দিন, এস্টাব্লিস্টমেন্ট অব ডিজিটাল ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের প্রকল্প পরিচালক মো. জহুরুল হক, কবি নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক এ এফ এম হায়াতুল্লাহ এবং বঙ্গবন্ধু দারিদ্র বিমোচন ও পল্লী উন্নয়ন একাডেমির মহাপরিচালক মোহা. বোরহানুল হক।

ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে গত ‌৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। ওইদিনই বিলুপ্ত হয় মন্ত্রিসভা। পরদিন ৬ আগস্ট দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি।

এরপর গত ৮ আগস্ট শপথ নেয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এ সরকার আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে দেওয়া চুক্তিভিত্তিক সব নিয়োগ বাতিল করছে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৩/০৯/২০২৪

ঢাকাঃ দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের ১১ জেলায় বন্যায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৭১ জনে দাঁড়িয়েছে। মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে বন্যার সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, এই ৭১ জনের মধ্যে ফেনীতে ২৮, কুমিল্লায় ১৯, নোয়াখালীতে ১১, চট্টগ্রামে ৬, খাগড়াছড়িতে ১, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১, লক্ষ্মীপুরে ১, কক্সবাজারে ৩ এবং মৌলভীবাজারে ১ জন মারা গেছেন। নিখোঁজ আছেন ১ জন (মৌলভীবাজার)।

দেশের ৬৮টি উপজেলা বন্যাকবলিত, ৫০৪টি ইউনিয়ন-পৌরসভা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে পাঁচ লাখ ৮২ হাজার ১৫৫টি পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।

বন্যার সর্বশেষ পরিস্থিতি সম্পর্কে জানানো হয়, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, হবিগঞ্জ, সিলেট, ব্রাহ্মণবড়িয়া ও কক্সবাজারের বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। মৌলভীবাজারের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে এবং ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুর জেলার বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।

মন্ত্রণালয় আরও জানায়, পানিবন্দি ও ক্ষতিগ্রস্ত মানুষকে আশ্রয়দানের জন্য তিন হাজার ৬১২টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা আছে এবং বর্তমানে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে দুই লাখ ৮৫ হাজার ৯৯৬ জন এবং ৩১ হাজার ২০৩টি গবাদি পশু রয়েছে।

এ ছাড়াও, ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা প্রদানে বর্তমানে ৪৬৯টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৩/০৯/২০২৪

কুমিল্লাঃ জেলার চৌদ্দগ্রামে জলাবদ্ধতার কারণে ৮২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। তার মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় ৭০টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৭টি ও ৫টি মাদ্রাসার পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের ভবনের মেঝেতে, মাঠে ও রাস্তায় পানি রয়েছে বলে উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে।

সম্প্রতি ভারি বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে স্বরণকালের বন্যায় উপজেলার একটি পৌরসভা ও ১৩টি ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে যায়। এ সময় ১৭০টি প্রাথমিক, ৫৪টি মাধ্যমিক, ৪৮টি মাদ্রাসা, ১টি কারিগরি স্কুল অ্যান্ড কলেজ ও ১১টি কলেজসহ ২৮৯টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠে যায়। এ ছাড়া চারপাশে পানি উঠে যাওয়ার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বহুতল ভবনগুলোতে মানুষ আশ্রয় নিয়েছিলেন। এতে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠদান বন্ধ হয়ে যায়।

মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) দুপুরে সরেজমিনে দেখা যায়, আলকরা ইউনিয়ন বাককগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এখনো পানি আছে। ফলে এখনো বিদ্যালয়ে ক্লাস শুরু করা সম্ভব হয়নি।

এদিকে চারপাশে এখনো পানি থৈ থৈ অবস্থায় সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাতেও অনেক অভিভাবক চিন্তা করছেন। অনেক শিক্ষার্থীর বইপত্র পানিতে নষ্ট হয়ে গেছে। তারা পড়াশোনা করতে পারছে না। কিছু এলাকায় বাড়ির উঠানে এবং রাস্তায় পানি থাকার কারণেও অনেক শিক্ষার্থী আসতে পারছে না। ফলে পাঠদান শুরু হলেও শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম হচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ছাকিনা বেগম বলেন, উপজেলার ১৭৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ১৭০টিতে পানি উঠেছে। এখনো ৭০টি বিদ্যালয়ের ভবনের মেঝেতে, মাঠে ও রাস্তায় পানি রয়েছে। ওই বিদ্যালয়গুলোতে পাঠদান বন্ধ রয়েছে। এ ছাড়া ৬৭টি বিদ্যালয়ের কিছু বেঞ্চ, টয়লেট ও ফ্লোর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যে প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে পানি নেমে গেছে ওইসব বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু হয়েছে, তবে চতুর্দিকে পানি থাকার কারণে উপস্থিতি একদম কম বলে তিনি জানান।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা একেএম মীর হোসেন জানান, পানি থাকার কারণে উপজেলার ৭টি স্কুল ও ৫টি মাদ্রাসায় পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠদান শুরু হয়েছে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৩/০৯/২০২৪

পাবনাঃ শিক্ষক স্বামী ব্যস্ত থাকেন চেয়ারম্যানের কাজকর্মে। রাজনীতিতেও সময় দিতে হয় তাকে। তাই স্কুলে সময় দেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। স্বামীর বদলে স্কুলে ক্লাস নেন তার স্ত্রী। অবশেষে জানা গেল সহকারী শিক্ষক পদে আকতার চেয়ারম্যানের নিয়োগও অবৈধ। এমন অভিযোগ উঠেছে পাবনার চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আক্তার হোসেনের বিরুদ্ধে।

আক্তার চেয়ারম্যান উপজেলার চরসেনগ্রামের মৃত আমজাদ হোসেনের ছেলে। তিনি উত্তরসেনগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক, বিলচলন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের একজন সক্রিয়কর্মী। চাহিদামতো শিক্ষাগত যোগ্যতা না থাকলেও সরকারি বিধি লঙ্ঘন করে নিয়োগ নিয়ে তিনি দীর্ঘদিন যাবত বেতন-ভাতার সরকারি অংশ উত্তোলন করে আসছেন। পাশাপাশি নিচ্ছেন ইউপি চেয়ারম্যানের সম্মানী ভাতাও। স্থানীয় আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে জড়িত থাকায় এবং চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনে ব্যস্ত থাকায় তার বদলে বিদ্যালয়ে ক্লাস নেন তার বউ। এমন চাঞ্চল্যকর ঘটনা দীর্ঘদিন যাবৎ চলে এলেও হয়রানির ভয়ে কেউ কখনো মুখ খোলেনি।

জানা গেছে, পাবনা-৩ এলাকার সাবেক এমপি আলহাজ মো. মকবুল হোসেনের ঘনিষ্ঠজন এবং রাজনৈতিক অনুসারী আকতার হোসেন। বিগত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে বিলচলন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর স্কুলে ক্লাস নেননি তিনি। তার বদলে স্কুলে ক্লাস নিতেন তার স্ত্রী আঞ্জুমান আরা রেবা।

মাসের শেষ দিকে স্কুলে গিয়ে বেতন-ভাতার শিটে এবং হাজিরা খাতায় সারা মাসের স্বাক্ষর করে এই চেয়ারম্যান তুলতেন বেতন-ভাতার সরকারি অংশ। স্থানীয় এমপির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকায় আকতার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস পাননি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বা অন্য কেউই। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পরও স্কুলে ক্লাস নিতে যান তার স্ত্রী। এ সময় স্থানীয়রা আকতার চেয়ারম্যানের স্ত্রীকে ক্লাস থেকে বের করে দেন।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালের ১৫ মার্চ স্কুলটির স্থানীয় ম্যানেজিং কমিটির মাধ্যমে প্রথম নিয়োগ নেন আকতার হোসেন। প্রতিষ্ঠানটির তৎকালীন সভাপতি ২০০০ সালের ২০ জুন একটি জাতীয় পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন এবং ২০০০ সালের ১০ আগস্ট পত্রিকায় নিয়োগ বৈধকরণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে সহকারী শিক্ষক পদে কাম্য যোগ্যতা (স্নাতক পাস) উল্লেখ থাকলেও তৃতীয় বিভাগে এসএসসি এবং এইচএসসি পাস করা আকতার হোসেন ২০০০ সালের ২১ আগস্ট সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ নেন। নিয়োগের প্রায় তিন বছর পর ২০০৩ সালে তিনি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বিএসএস পাস করেন।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম জানান, গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর আকতার হোসেন নিয়মিত স্কুলে আসছেন। চেয়ারম্যান হিসেবে সে হয়তো ব্যস্ত থাকায় তার স্ত্রী মাঝে মাঝে এসে স্কুলে ক্লাস নিয়েছেন। সাবেক এমপির তিনি কাছের লোক ছিলেন তাই আমার পক্ষে অনেক কিছুই বলা সম্ভব হয়নি। তার নিয়োগের বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান।

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি আজাদ হোসেন খলিফা জানান, আমি বিদ্যালয়টির তৎকালীন সভাপতি ছিলাম। আমার জানা মনে তার কোনো বৈধ নিয়োগ হয়নি। শুনেছি সে এইচএসসি পাস, তাহলে সে কীভাবে স্নাতক পাসের বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক পদে নিয়োগ পান।

চাটমোহর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মগরেব আলী জানান, বিষয়টি আমার জানা নেই। কেউ যদি আমার নিকট এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দেয় তাহলে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত শিক্ষক আকতার হোসেন জানান, আমার বিরুদ্ধে ভুয়া নিয়োগের অভিযোগটি মিথ্যা। আমি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ঢাকায় যাওয়াসহ উপজেলা পর্যায়ের বিভিন্ন মিটিংয়ে থাকাকালীন কিছু দিন বিদ্যালয়ে যেতে পারিনি। সেক্ষেত্রে আমার স্ত্রী তখন স্কুলে গিয়ে ক্লাস নিয়েছেন। এখন আমি নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছি।

চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও বিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত সভাপতি রেদুয়ানুল হালিম বলেন, উনার বিষয়ে কেউ আমার নিকট কোনো অভিযোগ দেয়নি। কেউ অভিযোগ দিলে যথাযথ তদন্তপূর্বক বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৩/০৯/২০২৪

কুড়িগ্রামঃ জেলার চিলমারীতে নানা অনিয়মের অভিযোগ তুলে শরীফের হাট এম ইউ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলনে নেমেছে শিক্ষার্থীরা। গত- ৩১ আগস্ট থেকে আন্দোলন করছে তারা।

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে প্রতিষ্ঠানটির সাবেক শিক্ষার্থী মাসুদ মিয়ার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানটি থেকে ব্যানার হাতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপজেলা পরিষদ চত্বরে সমাবেশ করে। এ সময় পদত্যাগ চেয়ে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত করে পরিষদ প্রাঙ্গণ।

প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক আব্দুর রউফ তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে পদত্যাগ করবেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোষণা দেয়ার পরও আন্দোলন কেন বিষয় প্রকাশ করেন তিনি।

তিনি আরো বলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিনহাজুল ইসলাম স্যারের সাথে কথা হয়েছে। তিনি ছুটিতে রয়েছেন। তিনি ছুটি শেষে আসলে শিক্ষার্থীদের অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করবেন। তদন্তে আমি দোষী প্রমাণিত হলে পদত্যাগ করবো। তবে আমি নির্দোষ।

স্কুলটির সাবেক শিক্ষার্থী মাসুদ মিয়া বলেন- আব্দুর রউব স্যারের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা, নিয়োগ বাণিজ্যে, রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। তিনি প্রতিষ্ঠানটিকে দুর্নীতির আখরায় পরিণত করেছেন। আমরা তার পদত্যাগের দাবি করছি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি মিনহাজুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থীদের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৩/০৯/২০২৪

সালমান ইস্পাহানী সাইমন, নোবিপ্রবি প্রতিবেদক:  নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) একযীগে প্রশাসনিক দায়িত্বে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে প্রক্টরসহ তিন হল প্রভোস্ট।

মঙ্গলবার ( ৩ সেপ্টেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ তামজীদ হোছাইন চৌধুরী স্বাক্ষরিত আলাদা আলাদা বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বিজ্ঞাপ্তিতে বলা হয়, কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে সংশ্লিষ্ট সকলের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারিজ এন্ড মেরিন সায়েন্স বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক এ. এফ. এম আরিফুর রহমান কে সাময়িক সময়ের জন্য প্রক্টর পদে নিয়োগ দেয়া হলো।

এছাড়াও আলাদা আলাদা বিজ্ঞাপ্তিতে তিন হল প্রভোস্টদের সাময়িক সময়ের নিয়োগের বিষয়টি জানানো হয়।

সদ্য নিয়োগ পাওয়া তিন হল প্রভোস্টরা হলেন,‘বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক উকিল হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর সরকার, ভাষা শহীদ আব্দুস সালাম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হানিফ,হযরত বিবি খাদিজ হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক ড.মো.মামুন অর রশিদ।

এর আগে, গত ৯ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নোবিপ্রবির দেওয়া ৪৮ ঘন্টার আল্টিমেটামের মধ্যে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেছিলেন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা প্রক্টর, প্রভোস্টসহ ৯ জন।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৩/০৯/২০২৪

সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, আবুল কাসেম ফজলুল হক, রাশেদা কে চৌধূরী, আনু মুহাম্মদ ও সোহরাব হাসানঃ ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মধ্যে দেশে যে যুগান্তকারী পরিবর্তন এসেছে, তাকে সর্বস্তরের মানুষ স্বাগত জানিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে দীর্ঘ সময়ে জনগণের ওপর চেপে থাকা স্বৈরশাসনের অবসান হয়েছে, সুবর্ণ সুযোগ এসেছে গণতান্ত্রিক ধারায় দেশকে এগিয়ে নেওয়ার।

ইতিমধ্যে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করে বিগত সরকারের আমলে সংঘটিত দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ করার পাশাপাশি এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছে। এটি জনমনে আশার সঞ্চার করেছে।

কিন্তু আমরা উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি, ক্ষমতার পালাবদলের সুযোগে একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী শিক্ষাঙ্গনগুলোতে অস্থিরতা সৃষ্টি করছে। তারা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের স্কুল ও কলেজের শিক্ষক পদাধিকারীদের চাপ সৃষ্টি করে পদত্যাগে বাধ্য করছে। তাঁদের মধ্যে উপাচার্য, অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষক যেমন আছেন, তেমনি আছেন সাধারণ শিক্ষকও।

এই স্বার্থান্বেষী মহল শিক্ষকদের পদত্যাগে বাধ্য করার পাশাপাশি তাঁদের শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করছে, কোনো কোনো শিক্ষক সন্ত্রাসী হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হয়েছেন। এমনকি নারী শিক্ষকও আক্রমণ থেকে রেহাই পাননি। বিচলিত হওয়ার বিষয় হলো, স্বার্থান্বেষী মহল তাদের এই হীন স্বার্থ উদ্ধার করতে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ব্যবহার করছে।

আমাদের মনে রাখতে হবে, শিক্ষকেরা জাতি গঠনের কারিগর। তাঁদের ওপর এই হামলার ঘটনাগুলোতে আমরা ভীষণ ব্যথিত, লজ্জিত বোধ করছি।

আমরা বিশ্বাস করি, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো নেতা-কর্মী, যাঁদের সাহসী ও দৃষ্টান্তরহিত গণ-অভ্যুত্থানে স্বৈরাচারী শাসকের পতন হয়েছে, তাঁদের কেউ শিক্ষক লাঞ্ছনার মতো অপকর্মে লিপ্ত হতে পারেন না।

তাহলে কারা এই একের পর এক শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনা ঘটিয়ে শিক্ষাঙ্গনে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করছে? আমরা বিশ্বাস করি, এই ঘটনা তারাই ঘটাচ্ছে, যারা চায় না শিক্ষাঙ্গনে স্থিতিশীলতা ফিরে আসুক।

ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষকদের জোর করে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে। কেউ কেউ নিগৃহীতও হয়েছেন। এর মধ্যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু শিক্ষকেরাও রয়েছেন। বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ছাত্র ঐক্য পরিষদের নেতারা সংবাদ সম্মেলন করে জানিয়েছেন, ৪৯ জন ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু শিক্ষককে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়েছে।

এটা অত্যন্ত দুঃখজনক যে শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বারবার আবেদন ও আহ্বান জানানো সত্ত্বেও শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনা বন্ধ হয়নি। গত শনিবার তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলোচনাকালে বলেছেন, ‘চর দখলের মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো দখল হয়ে যাচ্ছে। শিক্ষকেরা লাঞ্ছিত ও অপমানিত হচ্ছেন।’

শিক্ষকদের প্রতি এই অপমান ও লাঞ্ছনা জাতির জন্য চরম লজ্জাজনক। আমরা এই বিষয়ে সব রাজনৈতিক দল, নাগরিক সংগঠনের প্রতি আহ্বান জানাব, তারা যেন শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষক লাঞ্ছনার কর্মকাণ্ড বন্ধে কার্যকর ও টেকসই ভূমিকা নেয়। শিক্ষকদের প্রতি এ রকম লাঞ্ছনা ও নিগ্রহ চলতে থাকলে জাতি হিসেবে আমরা বিশ্বের দরবারে মুখ দেখাতে পারব না।

অস্বীকার করার উপায় নেই যে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে দলীয় বিবেচনায় স্বেচ্ছাচারী কায়দায় নিয়োগ, পদায়ন ও পদোন্নতি হয়েছে। অনেক মেধাবী শিক্ষককে পেছনে ফেলে অপেক্ষাকৃত কম মেধাবীদের পদোন্নতির দেওয়া হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুর্নীতি হয়েছে। এসব কারণে শিক্ষকদের একাংশের মধ্যে বঞ্চনাবোধ ও ক্ষোভ জন্ম হওয়া অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু একটি অন্যায়ের প্রতিকার তো আরেকটি অন্যায় দিয়ে হতে পারে না। আইনি পথেই এর প্রতিকার খুঁজতে হবে। এখানে গায়ের জোর দেখানোর সুযোগ আছে বলে মনে করি না।

এ বিষয়ে আমরা প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, তিনি যেন শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষক লাঞ্ছনা বন্ধ করতে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র নেতৃত্ব সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে যেই আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে গণ-অভ্যুত্থান সংঘটিত করেছে, তা আমরা ম্লান হতে দিতে পারি না। অতএব, অবিলম্বে শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষক লাঞ্ছনা ও ‘চর দখলের লড়াই’ বন্ধ করা হোক। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ন্যায়ের, বৈষম্যের বিরুদ্ধে সাম্যের, অন্ধকারের বিরুদ্ধে আলোর এবং মূঢ়তার বিরুদ্ধে যুক্তির পথে চলার সংগ্রাম জারি থাকুক।

● সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী ইমেরিটাস অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; আবুল কাসেম ফজলুল হক অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; রাশেদা কে চৌধূরী সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা; আনু মুহাম্মদ শিক্ষক, লেখক এবং ত্রৈমাসিক জার্নাল সর্বজনকথার সম্পাদক; সোহরাব হাসান যুগ্ম সম্পাদক, প্রথম আলো।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৩/০৯/২০২৪

magnifiermenu linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram