নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকাঃ সারাদেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য ৪৯৩ উপজেলায় টেকনিকাল স্কুল এন্ড কলেজ স্থাপনের কাজ পর্যায়ক্রমে এগিয়ে নেয়া হচ্ছে। এউ টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শিক্ষক-প্রশিক্ষক ও কর্মচারীসহ মোট ৬ হাজার ৪০০টি স্থায়ী পদ সৃষ্টি এবং আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কাজ সম্পাদনের জন্য বিভিন্ন পদে ৪০০টি জনবলের জন্য পদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত কয়েক লাখ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সংবাদ সংস্থা বাসসের সাথে আলাপকাল শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব এবং কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এমনটাই জানিয়েছেন।
অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার জানান, বাংলাদেশের জনসংখ্যাকে সম্পদে পরিণত করতে দেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ স্থাপনের কাজ চলছে এবং প্রতিটি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে প্রায় ৭৫ জন শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। প্রতি স্কুলে ২০০ আসনে একটি করে ছাত্রী হোস্টেল, শিক্ষক ডরমেটরী, আধুনিক গবেষণাগার থাকবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন উপজেলায় কারিগরি শিক্ষার সুযোগ আরও প্রসারিত হবে এবং শিক্ষার্থীরা কর্মসংস্থানের জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণ পাবে।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থার বাইরে টেকনিক্যাল জ্ঞান সমৃদ্ধ জনশক্তি গড়ে তুলতে চাই। এজন্য কারিগরি শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরো কার্যকর করে গড়ে তুলতে যথোপযুক্ত পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার।’
তিনি বলেন, সারাদেশের প্রতিটি উপজেলায় একটি করে টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য সরকারের সিদ্ধান্তের অংশ হিসেবে এরই মধ্যে ৪৯৩ উপজেলায় টেকনিকাল স্কুল এন্ড কলেজ স্থাপনের কাজ পর্যায়ক্রমে এগিয়ে নেয়া হচ্ছে।
ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার জানান, বিভিন্ন জেলায় এরই মধ্যে ৮৫টি স্কুল তাদের শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়া শুরু করেছে। বাকিগুলোর জন্য দ্রুত জমি অধিগ্রহণ থেকে শুরু করে ভবন নির্মাণসহ শিক্ষক নিয়োগ কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আগে থেকে ১০০টি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের কার্যক্রম চলছিল। পরে আরো ৩২৯টির জমি অধিগ্রহণসহ সার্বিক কার্যক্রম এগিয়ে নেওয়ার জন্য নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আশা করছি কারিগরি অধিদপ্তর সেভাবেই তাদের কার্যক্রম এগিয়ে নিবে যাবে।
জানতে চাইলে কারিগরি ও মাদ্রাসা বিভাগের সচিব কেএম কবিরুল ইসলাম জানান, সারাদেশে প্রাথমিকভাবে বাস্তবায়নাধীন ১০০টি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজের মধ্যে ৭৫টির শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। ১৫টির কাজ শেষ হয়েছে এবং অবশিষ্টগুলোর কাজও প্রায় শেষ পর্যায়ে। ফলে আগামী শিক্ষাবর্ষে টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজগুলো কারিগরি শিক্ষায় যুক্ত হচ্ছে।
সচিব জানান, প্রতিটি টেকনিক্যাল স্কুলের জন্য তিন একর করে জমি অধিগ্রহণ করা হবে। এবং সেখানে মহিলা শিক্ষার্থীদের জন্য ১০০ শয্যা বিশিষ্ট হোস্টেল নির্মাণ করা হবে। এছাড়া শিক্ষকদের জন্য ডরমেটরি, প্রিন্সিপালের আবাসিক ভবন এবং একাডেমিক কাম ওয়ার্কসপ ভবন তৈরি করা হবে। ছাত্রদের জন্য কোনো হোস্টেল নির্মাণের বরাদ্দ না থাকলেও আগামীতে ছাত্র হোস্টেল নির্মাণের বিষয়ে সরকার আন্তরিক।
কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) শোয়াইব আহমাদ খান বাসসকে বলেন, প্রতিটি উপজেলায় টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে প্রায় ৮৪০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবে।
ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের প্রি ভোকেশনাল এবং নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত কমপক্ষে চারটি করে ট্রেডে পড়াশোনা করানো হবে। এছাড়া এসএসসি (ভোকেশনাল) এবং এইচএসসি (ভোকেশনাল) কোর্সসহ বিভিন্ন ট্রেডের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
প্রতিটি টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজে প্রায় ৭৫ জন শিক্ষক নিয়োগ করা হবে। প্রতি স্কুলে ২০০ আসনে একটি করে ছাত্রী হোস্টেল, শিক্ষক ডরমেটরী, আধুনিক গবেষণাগার থাকবে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন উপজেলায় কারিগরি শিক্ষার সুযোগ আরও প্রসারিত হবে এবং শিক্ষার্থীরা কর্মসংস্থানের জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণ পাবে।
মহাপরিচালক জানান, প্রতিটি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের চারটি ট্রেড, ল্যাব ও ওয়ার্কশপের যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র কেনা ও সরবরাহ, টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ৬ হাজার ৪০০টি স্থায়ী পদ সৃষ্টি এবং আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কাজ সম্পাদনের জন্য বিভিন্ন পদে ৪০০টি জনবলের জন্য পদ সৃষ্টি করা হচ্ছে। ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত কয়েক লাখ শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করবে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/০৪/০৭/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.