ঢাকাঃ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন বলেছেন, আমরাতো আজও স্কলার বা বিজ্ঞানীর মর্ম বুঝলাম না। আমরা এই যুগে এসেও নারীরা ঘর থেকে বের হতে পারবে কিনা বা নারী পুরুষের অধিকার সমান কিনা এইসব নিয়ে কুতর্কে নিয়োজিত থেকে আমাদের সুপ্ত পোটেনশিয়ালকে ধ্বংস করছি। এই এআই যুগে এসে দিনরাত কাইজ্যা যারা করে তাদের চেয়ে অসভ্য জাতি পৃথিবীতে আর নেই। এইসব বাদ দিয়ে আসুন শিক্ষা ও গবেষণায় বরাদ্দ বাড়াতে সরকারকে বাধ্য করি। ব্রেইন ড্রেইনকে রিভার্স করতে সরকারকে বাধ্য করি। দেশে বিশ্বমানের গবেষণা ইনস্টিটিউট খুলতে বাধ্য করি।
শনিবার নিজের ফেরিফাইয়েড ফেসবুক আইডির এক পোস্টে তিনি এ কথা বলেন।
ঢাবির এই অধ্যাপক বলেন, দীর্ঘ এক দশকেরও বেশি সময় যুক্তরাষ্ট্রে কাটানোর পর, পারমাণবিক পদার্থবিজ্ঞানী লিউ চ্যাং প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি ছেড়ে এখন বেইজিংয়ের পেকিং ইউনিভার্সিটিতে যোগ দিয়েছেন। একজন বিজ্ঞানীর ইমপ্যাক্ট বা এর মাজেজাটা কতটা গভীরে সেটিই আজকে লিখবো। এর মাধ্যমে বুঝতে পারবেন একজন বড় বিজ্ঞানীর ইমপ্যাক্ট কতটা সুদূরপ্রসারী হতে পারে।
তিনি আরো বলেন, লিউ চ্যাং মূলত প্লাজমা পদার্থবিদ্যা ও নিউক্লিয়ার ফিউশন নিয়ে গবেষণা করেন। বিশেষ করে, ম্যাগনেটিক কনফাইনমেন্ট ফিউশন ডিভাইস-এ “রানঅ্যাওয়ে ইলেকট্রন” (এক ধরনের শক্তি অপচয়) এবং অন্যান্য উচ্চ-শক্তিসম্পন্ন কণার সমস্যা সমাধানের ওপর তার গবেষণা কেন্দ্রীভূত ছিলো। অর্থাৎ চীন খুব ভেবে চিন্তে এই মানুষটিকে হান্ট করেছে। এই নিয়োগের গুরুত্বটা কী? নিচের লেখাটি পড়লেই বুঝবেন।
অধ্যাপক মামুন বলেন, নিউক্লিয়ার ফিশন ও নিউক্লিয়ার ফিউশন দুটি মৌলিক প্রক্রিয়া যা পরমাণুর নিউক্লিয়াস পরিবর্তন করে শক্তি উৎপন্ন করে। তবে এদের কার্যপ্রণালী, শক্তি উৎপাদনের মাত্রা এবং পরিবেশগত প্রভাব—বিশেষ করে রেডিওঅ্যাকটিভ বর্জ্যের পরিমাণ—এর মধ্যে বিশাল পার্থক্য রয়েছে।
নিউক্লিয়ার ফিশন বর্তমানে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত হয়। এই প্রক্রিয়ায় ভারী পরমাণুর নিউক্লিয়াস (যেমন ইউরেনিয়াম-২৩৫ বা প্লুটোনিয়াম-২৩৯) বিভক্ত হয়ে ক্ষুদ্র অংশে পরিণত হয় এবং প্রচুর পরিমাণে শক্তি নির্গত করে। যদিও এটি একটি কার্যকর শক্তি উৎপাদন পদ্ধতি, তবে এর একটি বড় সীমাবদ্ধতা হলো উচ্চমাত্রার রেডিওঅ্যাকটিভ বর্জ্য উৎপাদন। এই পদ্ধতি ব্যবহার করেই আমরা রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বানাচ্ছি।
অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন বলেন, অপরদিকে, নিউক্লিয়ার ফিউশন হলো সেই প্রক্রিয়া যেই প্রক্রিয়ায় আমাদের সূর্য তার শক্তি উৎপন্ন করে। নিউক্লিয়ার ফিউশন হলো হালকা পরমাণুর নিউক্লিয়াস (যেমন ডিউটেরিয়াম ও ট্রিটিয়াম) একীভূত হয়ে ভারী নিউক্লিয়াস তৈরি করে এবং বিপুল শক্তি নির্গত করে। ফিশনের তুলনায় ফিউশনের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এটি খুবই কম রেডিওঅ্যাকটিভ বর্জ্য উৎপন্ন করে। তাহলে কি দাঁড়ালো?
অধ্যাপক মামুন আরো বলেন, গবেষণা ও প্রযুক্তিগত উন্নতির ফলে, নিউক্লিয়ার ফিউশন আগামী দিনে সাশ্রয়ী, টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব শক্তি উৎপাদনের প্রধান পদ্ধতি হয়ে উঠতে পারে। বাণিজ্যিকভাবে সফল হলে এটি হবে মানব সভ্যতার জন্য চূড়ান্ত শক্তি সমাধান, যেখানে প্রায় অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত বিশাল পরিমাণ শক্তি উৎপন্ন করা সম্ভব হবে, অথচ তেজস্ক্রিয় বর্জ্য হবে ন্যূনতম। নিউক্লিয়ার ফিউশন মেকানিজম ব্যবহারের জন্য কিছু চ্যালেঞ্জ আছে।
শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৬/০৩/২০২৫
Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম
Subscribe to get the latest posts sent to your email.