এইমাত্র পাওয়া

পাঠ্যবইয়ে জুলাই অভ্যুত্থানে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের আত্মত্যাগ অন্তর্ভুক্তির দাবি

ঢাকাঃ শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলামি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের আত্মত্যাগ সুস্পষ্টভাবে জুলাই অভ্যুত্থানের ইতিহাসে অন্তর্ভুক্ত করা ও বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনে কারিকুলামে এনজিও ফান্ডিং বন্ধ করাসহ একগুচ্ছ দাবি জানিয়েছে মাদ্রাসা শিক্ষকরা।

আজ শনিবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে ঢাকার কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে (আইডিইবি) জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সম্মেলনে এমন দাবি জানান তারা।

শিক্ষকরা বলেন, শিক্ষার আমূল সংস্কার করতে অতি দ্রুত শিক্ষা সংস্কার কমিশন গঠন করতে হবে এবং সংস্কার কমিশনে আলেমদের অন্তর্ভুক্ত করতে। নতুন পাঠ্যসূচিতে জুলাই বিপ্লবের ইতিহাসে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অবদানকে কৌশলে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। বৈষম্য দূরীকরণে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ, শিক্ষক সমাজের ন্যায্য দাবি আদায় করতে হবে।

এ ছাড়াও প্রাইমারি ও হাইস্কুলের পাঠ্যবইগুলো থেকে সব অপ্রাসঙ্গিক ছবি, যৌন শিক্ষার আপত্তিকর ভাষা, অনৈসলামিক বিষয় ও বিপজ্জনক দিক পরিহার করতে হবে। প্রথম কারফিউ ভেঙে রাজপথে নেতৃত্ব দেয়া রাজনৈতিক দল ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং সংগঠনের সিনিয়ার নায়েবে আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম শায়খে চরমোনাইয়ের নাম পাঠ্যপুস্তকের জুলাই অভ্যুত্থান ইতিহাস অংশে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মো. নাছির উদ্দিন খান মাদ্রাসা শিক্ষকদের পক্ষে দাবিগুলো তুলো ধরেন।

শিক্ষকদের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করতে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মত স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদ্রাসাসহ সব এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করতে হবে। শিক্ষাখাতে জিডিপির কমপক্ষে ৫ দশমিক ৫ শতাংশ বরাদ্দ দিতে হবে। জাতীয়করণের ঘোষণা ও বাস্তবায়নের আগ পর্যন্ত শিক্ষক ও কর্মচারীদেরকে শতভাগ উৎসব ভাতা, ৪৫ শতাংশ বাড়ি বাড়া ও সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো চিকিৎসা ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিতে হবে।

শিক্ষকদের স্বতন্ত্র উচ্চতর বেতন কাঠামো নির্ধারণ ও শিক্ষক সুরক্ষা আইন প্রণয়নের মাধ্যমে মেধাবীদের শিক্ষকতা পেশায় আকৃষ্ট করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আলিয়া মাদ্রাসা নতুন পাঠ্যবইগুলো থেকে ইসলামিক কালচার বহির্ভূত ছবি, ভাষা পরিহার করতে হবে এবং মাদ্রাসার স্বকীয়তা বজায় রেখে কারিকুলাম ও সিলেবাস প্রণয়নের লক্ষ্যে স্বতন্ত্র কারিকুলাম বোর্ড গঠন করতে হবে।

বিগত কারিকুলাম ও সিলেবাস বাস্তবায়নে পতিত ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগিতাকারী অসাধু কর্মকর্তা ও সুবিধাভোগীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে এবং বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষাবোর্ডসহ মাদ্রাসা শিক্ষাসংশ্লিষ্ট সব প্রশাসনিক দপ্তরে মাদ্রাসা শিক্ষিতদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে। দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। ইসলাম ধর্মের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড- আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া থেকে পাস করা মাস্টার্স সমমান সনদ প্রাপ্তদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে হবে।

এ ছাড়াও অন্য দাবিগুলো হল রয়েছে-

১. প্রাইমারি ও হাইস্কুলের পাঠ্যবই থেকে সব অপ্রাসঙ্গিক ছবি, যৌন শিক্ষার আপত্তিকর ভাষা,   অনৈসলামিক বিষয় ও বিপজ্জনক দিক পরিহার করতে হবে।
2. প্রাইমারি স্কুলের সহকারী শিক্ষকদের ১০ গ্রেডে উন্নীতকরণ এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে  জ্যেষ্ঠ প্রভাষকের পরিবর্তে সরাসরি সহকারী অধ্যাপক এবং সহযোগী অধ্যাপক থেকে       অধ্যাপক পদে উন্নীতকরণের ঘোষণা দিতে হবে।
3. কালো টাকা ও পেশি শক্তিরোধ করতে পিআর সিস্টেমের নির্বাচন পদ্ধতি চালু করতে হবে।
4. নৈতিক অবক্ষয়রোধ, ইভটিজিং, কিশোর গ্যাং, ডিভাইস আসক্তি ও মাদকের ভয়াবহতা   থেকে আগামী প্রজন্মকে রক্ষা করতে শিক্ষার সর্বস্তরে ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে   হবে।

শিক্ষাবার্তা ডটকম/এএইচএম/১৮/০১/২০২৫


Discover more from শিক্ষাবার্তা ডট কম

Subscribe to get the latest posts sent to your email.